আপনি জানতেন কি?!?

ইংরেজি 1to 99 বানান করতে a, b, c, d এই চারটি অক্ষর একবারও ব্যবহার হয়না।হানড্রেড (100) লিখতে d প্রথম ব্যবহার হয়।
  1 to 999 বানান করতে a, b, c এই তিন অক্ষর একবারও ব্যবহার হয়না। থাউজেন্ড (1000) লিখতে a প্রথম ব্যবহার হয়।
  1 to 999999999 বানানে কোথাও b, c এ দুটি ব্যবহার হয়না। বিলিয়নে (billion) প্রথম b আসে।
  এবং ইংরেজি গননার বানানে কোথাও c ব্যবহার হয়না।

(পুনশ্চ: লাখ, কোটি এগুলো ইংরেজিতে ব্যবহার হয়না, হয় মিলিয়ন, বিলিয়ন, ট্রিলিয়ন)

খড়ম

খড়ম একপ্রকার কাঠের পাদুকা।  হিন্দি "খড়ৌঙ" শব্দটি থেকে বাংলায় "খড়ম" শব্দটির উৎপত্তি। সংস্কৃতে খড়ম "পাদুকা" নামে পরিচিত।  হিন্দুরা খড়মকে দেবতা ও সাধুদের পদচিহ্নের প্রতীকও মনে করেন।হিন্দুদের মহাকাব্য রামায়ণে খড়মের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

প্রাচীন কালে খড়মের উদ্ভব।  খড়ম পায়ে হাঁটা সহজ নয়। এছাড়াও খড়ম পায়ে হাঁটার সময় চটাশ্‌ চটশ্‌ বেশ শব্দ হয়।  

টোডা জাতি



টোডা জাতি বা জনগোষ্ঠী হলো একটি ছোট চারণ উপজাতি যারা দক্ষিণ ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন নীলগিরি পাহাড়গুলোয় বসবাস করে।  ২০ শতকে টোডাদের জনসংখ্যা ছিল মোটামুটি ৭০০ থেকে ৯০০ জন।  ভারতের মোট জনসংখ্যার নগণ্য অংশ হলেও ১৮শ শতক থেকেই টোডারা "তাদের প্রতিবেশীদের থেকে ভিন্ন রূপ, প্রথা ও রীতিনীতি"[১] এবং "অসামাজিক জাতিগত সংস্কৃতির কারণে মনোযোগ" আকর্ষণ করেছে।

টোডারা ঐতিহ্যগতভাবে মান্ড নামক বসতিতে থাকে। তিন থেকে সাতটি খড়-ছাওয়া বাড়ি নিয়ে একটি মান্ড গঠিত হয়। বাড়িগুলো অর্ধ-ব্যারেল আকৃতির এবং সেগুলো সাধারণত বানানো হয় তাদের মহিষ-চারণভূমির ঢালে আড়াআড়ি করে।  তাদের অর্থনীতি চারণভূমিভিত্তিক, মহিষ-নির্ভর, মহিষের দুগ্ধজাত খাদ্য তারা নীলগিরি পাহাড়ের অন্য লোকদের কাছে বিক্রি করতো।   টোডা ধর্মে পবিত্র মহিষের কথা বর্ণিত আছে; তাই  ধর্মীয় এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সমাধেশে সামাজিক নীতি অনুসারে, মহিষের প্রশংসায় কাব্যগান লেখা ও গাওয়া হয়।

ঐতিহ্যবাহী টোডা সমাজে কয়েক ভাইকে একসাথে বিয়ে করা ছিল বেশ সাধারণ ব্যাপার; ২১ শতকের শুরু থেকেই টোডা সমাজ ও সংস্কৃতিতে আন্তর্জাতিক আলোকপাত হয় ।  টোডাদের জমিগুলো এখন অঞ্চলটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অন্তর্ভুক্ত।

 

টোডা পোশাক হলো একপ্রস্থ কাপড়, যা পুরুষেরা শালের মতো করে ধুতির ওপর গায়ে জড়িয়ে নেয় এবং নারীরা নেয় স্কার্টের মতো করে এবং শাল জড়িয়ে।

টোডারা একসময় ভ্রাতৃ-বহুবিবাহ করতো, অর্থাৎ একজন নারী কোনো পরিবারের সব ভাইকে বিয়ে করতো।  এক্ষেত্রে সন্তানেরা সামাজিকভাবে বড়ভাইয়ের বলে গণ্য করা হতো। এই প্রথা এখন বাতিল হয়ে গেছে। আর এখনো তারা দুই পরিবারের শিশুদের বিয়ের আয়োজন করে থাকে। টোডাদের মধ্যে নারী ও পুরুষের অনুপাত তিন অনুপাত পাঁচ।

 

তাদের কুঁড়েঘরগুলোকে বলে ডগল যা ডিম্বাকৃতির ঢালু ছাদ দেয়া।  এগুলো বাঁশ দিয়ে তৈরি করে রাতান দিয়ে বাঁধা হয় এবং খড় ছাওয়ানো হয়।  কিছু আলগা পাথর দিয়ে প্রতিটি ঘর ঘিরে রাখা হয়।

খাদ্য-টোডারা নিরামিশাষী, তারা গোশত, ডিম এবং মাছ খায় না। তাদের মূল খাদ্য ভাত তারা নানাপদের তরকারি ও দুধ দিয়ে আহার করে।

ধর্ম-টোডাদের বিশ্বাসমতে, দেবী টাইকির্শি ও তার ভাই প্রথম সৃষ্টি করেন পবিত্র মহিষ এবং তারপর প্রথম টোডা মানব। প্রথম টোডা মানবের পাঁজরের ডানপাশের হাড় থেকে সৃষ্টি কথা হয় প্রথম টোডা নারী।

ভাষা-টোডা ভাষা দ্রাবিড় ভাষা পরিবারের সদস্য। ভাষাটি অক্ষরগতভাবে অপভ্রষ্ট এবং উচ্চারণ দুরূহ।

ৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃ

সৃজনশীল ভাবনার জন্ম হচ্ছে কই?

Riton Khan


  “একটি খাঁটি সত্যি কথা দিয়ে শুরু করি। বর্তমানে আমার পরিপার্শ্বে আমি যা সবচেয়ে ঘেন্না করতে শুরু করেছি তা হল, বাড়ির টেলিভিশন সেটটি। এমনই বিরক্তিকর হয়ে পড়েছে ওই বোকাবাক্স যে, টিভি না খুলে ক্রিকেট দেখতে শুরু করেছি ইউটিউবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খবর ও মতামত সবই আজকাল মোবাইল ফোনেই পাওয়া যায়। তার জন্য টিভির সামনে গুটিগুটি বসার প্রয়োজন নেই।

টিভি সম্পর্কে আমার ভীতির মূল কারণ বাংলা টেলিসিরিয়াল।
  আমেরিকা বা ইউরোপে অনেক চ্যানেল আছে, যেখানে পুরোপুরি পর্নোগ্রাফি বা খুনজখম দেখানো হয়, তবে তা সম্প্রচারের বিধি মেনে। কিন্তু আমাদের এখানে কন বিধি নেই। হিন্দি সিরিয়ালেও অপরাধ-ঘটিত গল্প প্রচুর। কিন্তু একটি বাংলা বিনোদন চ্যানেল বেশ কিছুদিন জনপ্রিয়তার শিখর স্পর্শ করেছে শুধুমাত্র একটি পরিস্থিতিকেই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখিয়ে। তা হল, কল্পিত কিছু যৌথ পরিবারের অন্দরে একগুচ্ছ খলনায়ক ও খলনায়িকার উপস্থিতি। সচরাচর খলনায়িকা ও মহীয়সী নায়িকা, দু’জনেই একই নায়কের শয্যাকক্ষে কখনও প্রবেশ করছেন প্ৰথমজন, কখনও দ্বিতীয়। শাশুড়িরা সচরাচর অত্যাচারী ও ষড়যন্ত্রকারী।  সব কাহিনিরই হিংসা, ঘৃণা, ঈৰ্ষা ও লোভ।

  মহিলারা ও সারাদিন ঘরবন্দি বয়স্ক পুরুষ— সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব হিংসা, ঘৃণা, ঈৰ্ষা ও লোভ-ক্ষোভের সিরিয়ালের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকেন। সেদিন এক চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে শুনলাম, রোগীর ভিড় নাকি শুরু হয় রাত ন’টায় একটি সিরিয়াল শেষ হওয়ার পরে। এই মহিলা ও বৃদ্ধ দর্শকেরা পৃথিবীর কোথাঊ কি হচ্ছে তা নিয়ে মোটেই চিন্তিত নয়। তাদের কাছে প্রাসঙ্গিক হল, খলনায়ক এবার কতটা নৃশংসতার পরিচয় দেবে বা খলনায়িকা কি এখন ধরা পড়তে চলেছে?  অ-চর্চিত মনের উপর এই অযৌক্তিক ও কুৎসিত কাহিনিগুলি প্রভাব বিস্তার করতেই পারে।

  =================

 

 

মৃত্যুও আগ মুহূর্তে স্বামী তার স্ত্রীকে বলছে, ওগো শুনছো-মৃত্যুর পূর্বে তোমাকে আজ কিছু সত্য কথা বলে যেতে চাই।

স্ত্রী আগ্রহ নিয়ে বলল-বলো, তুমি কী বলতে চাও।
  স্বামী বলল-তোমার সঙ্গে মিথ্যা কথা বলতে আমার একটুও ভাল লাগতো না। তবু কখনো কখনো মিথ্যা বলতে হয়েছে। খাটের নিচে একটা কাঠের বাক্স দেখতে পাবে। যখনই আমি তোমার সঙ্গে কোনো মিথ্যা কথা বলেছি তখনই আমি সেই বাক্সে একটা ডিম রেখেছি, যাতে তোমার সঙ্গে কতগুলো মিথ্যা কথা বললাম তার একটা হিসাব রাখতে পারি।

স্ত্রী আগ্রহ নিয়ে খাটের নিচে গিয়ে বাক্স খুলে দেখে তাতে মাত্র তিনটা ডিম আছে। সে খুশি হয়ে বলে-সারা জীবনে তুমি আমার সঙ্গে মাত্র তিনটা মিথ্যা কথা বলেছো, এটা কোনো ব্যাপারই না। অনেক মহামানবও তাদের স্ত্রীর সঙ্গে এর চেয়ে বেশি মিথ্যা বলেছে। যাও, আমি তোমাকে আনন্দ চিত্তে ক্ষমা করে দিলাম। আচ্ছা, বাক্সের ভেতর যে বড় একটা প্যাকেট পেলাম এটার ভেতর কী আছে?

স্বামী বলল-ওখানে এক লাখ টাকা আছে। যখনই এক হালি ডিম হয়েছে তখনই আমি তা বিক্রি করে দিয়েছি।

=====

এক মেয়ে স্বামী মারা যাওয়া কয়েকদিনের মধ্যেই তার দেবরকে বিয়ে করে ফেললো। দেবরকে বিয়ে করার দু’দিন পর তার এক বান্ধবী বেড়াতে এলো। দেয়ালে টাঙানো বড় ছবিটা দেখিয়ে বলল-এটা কার ছবি?

মেয়েটি বলল-এটা আমার ভাসুরের ছবি। কয়েকদিন আগে মারা গেছে।

==

Sujan Morgan

2 ঘণ্টা ·

এক বাঙালি ব্যক্তি মৃত্যুর পরে স্বর্গে স্থান পেলো।
  তো সে স্বর্গে গিয়ে দেখল একটা সুবিশাল কক্ষ লক্ষ লক্ষ দেয়াল ঘড়িতে পরিপূর্ণ।
  লোকটি স্বর্গের দূতকে জিঞ্জেস করল,

ব্যক্তিঃ এখানে এতগুলো ঘড়ি রাখা কেন?

স্বর্গের দূতঃ এগুলো হল মিথ্যা ঘড়ি।প্রত্যেক মানুষের জন্য একটা করে মিথ্যা ঘড়ি আছে।দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় কেউ যদি একটি মিথ্যা কথা বলে তাহলে ঘড়িটি একবার ঘুরবে,দুটি মিথ্যে কথা বললে দুবার ঘুরবে, এইভাবে যে যতবার মিথ্যা বলে তার ঘড়ি ততবার ঘুরে।

অতঃপর সেই ব্যক্তি সেই বিশাল কক্ষ ঘুরে ঘুরে অনেক ঘড়ি দেখতে লাগলেন।তাকে দেখে মনে হলো তিনি কিছু খুঁজছেন।

স্বর্গের দূতঃ আপনি কি কিছু খুঁজছেন?

ব্যক্তিঃ হুম,বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের ঘড়িগুলো কোথায়?

দূতঃ তাদের ঘড়ি গুলো আমাদের অফিসে রাখা আছে।ঐ ঘড়ি গুলোকে আমরা টেবিল ফ্যান হিসেবে ব্যবহার করি।

ৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃ

========

বর্তমান সময়ের সাফল্যের তত্ত্ব হচ্ছে, "তাল এবং তেল" তত্ত্ব। সময়মত তাল দেবেন আর জায়গামত তেল দেবেন। বাস, আপনাকে আর পায় কে? এ শিল্প আয়ত্ব করতে পারলেই, আপনার ভবিষ্যৎ ফকফকা!! আমাদের নৈতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক অধঃপতনের এটা হচ্ছে এক দুঃখজনক নজির।

======

মানুষের রসবোধের জুরি নেই। এইমাত্র একটা রসের গল্প দেখলাম ফেসবুকে। এক গেরুয়া পড়া বাউল মুদি দোকানে গিয়ে বলছে, বাবা তোমার দোকানে ভালো চাউল আছে? দোকানি বলল, আছে। বাউল আবার বলল, তোমার দোকানে ভালো ডাউল আছে? দোকানী আছে বললে বাউল বলল, দুইকেজি চাউল আর এককেজি ডাউল দেও বাবাজী। দোকানী চাল, ডাল মাপতে মাপতে বলল, আচ্ছা বাউল ভাই অন্য বাউলেরাও শুদ্ধ করেই কথা বলে কিন্তু আপনার ভাষাটা কেমন যেনো বেশী শুদ্ধ। চাল কে চাউল, ডালকে ডাউল বলছেন?

বাউল বলল, বাবারে সাধে কি আর বলি। চাল কে চাউল না বললে আর ডালকে ডাউল না বললে আমাকে তোমরা কি নামে ডাকবে। আমি যে বাউল!!!

=========

মেয়েরা

বমি করলে সুখবর

আর ছেলেরা বমি করলে মদ খাইছে

সক্রেটিসের বিরুদ্ধে এথন্সের নগর আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হলো। স্থানীয গন্যমান্য ও শিক্ষিত নাগরিকদের সেই অভিযোগপত্রে মামলার কারন হিসেবে বলা হয়, ‘সক্রেটিস নামক ব্যক্তিটি অসুস্থ মস্তিষ্কধারী। তার মানসিক বিকৃতি রয়েছে। সেই বিকৃতি এতটাই চরমে পৌছে গিয়েছে যে, সক্রেটিস প্রায়ই আমাদের মহান দেবতাদের ব্যাপারেও প্রশ্ন তুলে। উপরন্তু, সে নগরের যুবক সম্প্রদায়কে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে।’
  .
  নাগরিকদের সেই অভিযোগটি ছিল মূলত ব্লাসফেমি’র অভিযোগ। অর্থাৎ, তাদের বক্তব্য ছিল, সক্রেটিস আমাদের ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ দিয়েছে। সবকিছু মেনে নেওয়া যায় কিন্তু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকে মেনে নেওয়া চলে না। সুতরাং, সক্রেটিসকে শাস্তি পেতেই হবে। সক্রেটিসকে ডাকা হলো। অভিযোগের ব্যাপারটা তাকে বলা হলো। অভিযোগ শুনে সক্রেটিস হাসতে লাগলেন। কিছুক্ষন থেমে সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছো কি যে কিনা অশিক্ষিত ?’ বিচারকগন প্রথমে শান্ত থাকলেও এমন বাঁকা প্রশ্ন শুনে তারাও রাগান্বিত হয়ে উঠেন। অভিযোগকারী ও বিচারকগন একত্রে সমস্বরে বলে উঠলো, ‘সক্রেটিস, তুমিই তো আসল অশিক্ষিত। আর আমরা এখানে কেউই অশিক্ষিত নই, তোমার জানা উচিত এথেন্সের সবচেয়ে জ্ঞানীদের দলই এখানে উপস্থিত।’ সক্রেটিস যেন ঠিক এই জবাবটার অপেক্ষাতেই ছিল। সক্রেটিস বললো, আমি যে অশিক্ষিত সেটা তো আমি জানি, কিন্তু তোমরা যে অশিক্ষিত সেটা তো তোমরা নিজেরাও জানো না।’ যাইহোক, বিচারকগন সক্রেটিসের পক্ষে ও বিপক্ষে ভোট আহবান করলো। নগর কর্তৃপক্ষের সদস্যরা এমনিতেই সক্রেটিসের প্রতি মারাত্বক রাগান্বিত ছিল। দেখা গেল, ২৮১-২২০ ভোটে সক্রেটিস পরাজিত হন। সিদ্ধান্ত হয়, সক্রেটিসকে হেমলক বিষপানে মৃত্যু নিশ্চিত করা হবে। ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ এর অভিযোগে সক্রেটিসকে মরতে হয়েছিল। অথচ, সক্রেটিস সচেতনভাবেই প্রশ্ন তুলেছিলেন মূর্তিমান দেবতাদের সক্ষমতা নিয়ে।
  .
  সক্রেটিসের পরে পিথাগোরাস কোপার্নিকাস গ্যালিলিও গ্যালিলি জোয়ার্দানো ব্রুনো আল রাজি ওমর খৈয়াম সহ অগনিত প্রশ্ন উত্থাপনকারীকে নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়েছে। অতীতের ধারাবাহিকতায় বর্তমানেও প্রতিক্রিয়াশীল মানুষগুলোর উত্তজনা সমভাবে সক্রিয়।

Ansaree Muhammad Towfiq

স্টিফেন হকিং পেরেছেন, আপনি দমে যাচ্ছেন কেন?

:ইতি মল্লিক

আমরা, তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনেকেই জীবনের অনেক পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে চরম হতাশায় নিমজ্জিত। আমরা বেশিরভাগ সময়েই নেতিবাচক চিন্তা করি। চিন্তা করি না, কতটুকু-ই বা শেষ হয়েছে জীবনের! জীবনের কতটুকু দেখেছি আমরা? কতটুকুই বা কাজ করেছি জীবনকে সাজাতে! নিজের ছোট ছোট না পাওয়া আর অক্ষমতা নিয়ে যখন আমরা হতাশ, তখন কি কখনো চিন্তা করেছি, দুনিয়ায় আরও কষ্টে আছে মানুষ! কতজন কত সমস্যা নিয়েও জয় করছে বিশ্ব! সেরকম একজন বিশ্বজয়ী কিংবদন্তীতুল্য ব্যক্তিত্ত্ব স্টিফেন হকিং। সকল প্রতিকূলতাকে জয় করে যিনি বিশ্বের সকল হতাশাগ্রস্থ মানুষদের অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছেন।

স্টিফেন হকিংকে বর্তমান বিশ্বের অনন্য প্রতিভাধর ব্যক্তিত্বদের একজন বলে বিবেচনা করা হয়। তিনি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তার অসামান্য অবদানের জন্য বিখ্যাত। এই বিখ্যাত পদার্থবিদের জন্ম ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে। ছোটবেলায় গণিত বিষয়ে বেশি আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু কলেজে ওঠার পরে তিনি প্রকৃতি বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে শুরু করেন। এরপর, তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন প্রথম বর্ষের ছাত্র, বয়স মাত্র ২১ বছর, তখন তার শরীরে এএলএস (ALS-amyotrophic lateral sclerosis) নামক রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। এটা এক ধরনের মটর নিউরন রোগ, যে রোগে শরীরের সব অঙ্গ ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যায়। সেসময়, ডাক্তার স্টিফেন হকিংকে আড়াই বছরের আয়ুষ্কাল বেধে দেন।

বর্তমানে স্টিফেন হকিংয়ের বয়স ৭৪ বছর, আজও তিনি শিক্ষকতা ও গবেষণা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন,

যখন আমার এএলএস রোগ দেখা দেয়, তখন জীবন নিয়ে আমার প্রত্যাশা শূন্যতে নেমে আসে। তখন থেকে, জীবনে যা কিছু পেয়েছি, সবই একধরণের বোনাস।

অসাধারণ প্রতিভাধর স্টিফেন হকিং জীবনের এই কঠিন পরীক্ষায় হার স্বীকার করেন নি। এই দুরারোগ্য রোগ যা তার প্রায় পুরো শরীরকে অবশ করে দিয়েছে, আটকাতে পারেনি তার জীবন, শিক্ষা বা সাফল্যকে। ১২ টি সম্মানজনক ডিগ্রি রয়েছে হকিংয়ের। তিনি পৃথিবী, বিগ ব্যাং থিউরি এবং বিজ্ঞানের সব অজানা রহস্যের সন্ধানে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। হকিং কোন কথা বলতে পারেন না, চলাফেরা তো পারেনই না, একা একা নড়াচড়াও করতে পারেন না তেমন একটা। তার জীবন একটা হুইলচেয়ারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

কিছুদিন আগে লন্ডনের রয়্যাল ইন্সটিটিউটে দেওয়া এক বক্তৃতায়, হকিং হতাশাকে ব্লাকহোলের সাথে তুলনা করেন। তিনি বলেন যে, হতাশা এবং ব্লাকহোল কোনটি থেকেই মুক্তি পাওয়া অসম্ভব নয়। তার বক্তব্যের দেওয়া বার্তাটি ছিল, ব্লাকহোল যতটা কালো মনে হয়, আসলে ততটা কালো নয়। আগে মনে করা হতো, কোনোকিছু ব্লাকহোলের মধ্যে ঢুকলে আর সেখান থেকে বের হতে পারবে না। কিন্তু হকিংয়ের মতে, কোন বস্তু ব্লাকহোলের মধ্যে ঢুকলেও সেটা বের হওয়া সম্ভব। তাই যদি তুমি ভেবে থাকো যে তুমি ব্লাকহোলের মধ্যে পড়েছ, তাহলে হাল ছেড়ো না, সেখান থেকে বের হওয়ার কোন একটা পথ নিশ্চয়ই আছে।

খারাপ সময় আসতে পারে। কিন্তু সব অবস্থায়ই কিছু না কিছু করার সুযোগ থাকে, যেটাতে সফল হওয়া সম্ভব। যতক্ষণ জীবন আছে, ততক্ষণ আশা আছে।

তার মতে, শারীরিকভাবে অক্ষম হওয়াটা তোমার দোষ নয়, কিন্তু এর জন্য পৃথিবীকে দায়ী করা বা কেউ তোমাকে দয়া করুক এটা প্রত্যাশা করা ঠিক না।

তিনি দেখিয়েছেন যে মানসিক শক্তির কাছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তেমন কোন বড় বাধা নয়। কোন প্রতিবন্ধকতাই আমাদের আটকে রাখতে পারবে না, যদি মনের জোর থাকে।

পাওয়ার অফ পজিটিভিটি অবলম্বনে

ব্রুস লি- এক ক্ষণজন্মা সুপারস্টারের গল্প!

মোঃ সাইফুল্লাহ (সাইফ)

বয়স যখন বারো তখন রাস্তার বখাটে ছেলেদের হাতে তাকে একবার মার খেতে হয়েছিলো। এই ঘটনাটিই হয়তো তার জীবনকে পালটে দেয়। এরপরই তিনি মার্শাল আর্টে ঝুঁকে পড়েন। পরবর্তীতে চলচ্চিত্রেও মার্শাল আর্টকে রুপায়ন করা হয় তারই হাত ধরে। 

নাম তার ব্রুস লি। বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন বিংশ শতাব্দীর প্রভাবশালী একশ জন মানুষের একটি তালিকা করেছিলো। ব্রুস লি ছিলেন তাদের একজন। শুধু একজন মার্শাল আর্ট শিল্পী কিংবা অভিনেতা নন, তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক, একজন শিক্ষক, একজন আর্টিস্ট, একজন ফিল্মমেকার। তাকে ব্যাক্তিগতভাবে রোল মডেল মানতেন অগণিত মানুষ।

অনেকের ধারণা তার জন্ম চীনে। কিন্তু তার জন্ম হয়েছিলো সানফ্রান্সিসকোতে। বেড়ে ওঠা হংকংয়ে। তার দাদী ছিলেন একজন জার্মান ভদ্রমহিলা।

ব্রুস লি অসাধারণ নাচতে পারতেন। ১৯৫৮ সালে তিনি একটি নাচের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নও হন! তখন মাত্র হাই স্কুলে পড়তেন তিনি।

এত ক্ষীপ্র গতিতে তিনি হাত চালাতেন যে প্রতিপক্ষ আঘাত প্রতিহত করারও সময় পেত না! ১৯৬২ সালেই একটি ফাইটে তিনি মাত্র ১১ সেকেন্ডে তার প্রতিপক্ষকে পরাজিত করেন। এই ১১ সেকেন্ডে তিনি ১৫ টা ঘুষি আর একটা কিক করেছিলেন বেচারাকে।      

তিনি এমন এক পরিবারে জন্মেছিলেন যেখানে তার মা ছিলেন একজন ক্যাথলিক ধর্ম বিশ্বাসী। আর বাবা ছিলেন একজন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। ছোটবেলায় তাকে ক্যাথলিক স্কুলে পাঠানো হলেও এক পর্যায়ে তাকে ধর্ম নিয়ে আর কোনো চাপ দেয়া হয় নি। একবার একটি সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেন, তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী নন।  

ব্রুস লি সাঁতার পারতেন না, পানি দেখলেই তার ভয় করতো। বাইক, গাড়ি কোনোটাই তিনি চালাতে পারতেন না।

ব্রুস লি’র মৃত্যু নিয়ে এখনো গুঞ্জন চলে। হংকংয়ের কাউলুন টং এর বাড়িতে মারা যাওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন তারা মাথা ব্যথা। এজন্যে ঔষুধ খেয়েছিলেন। এরপরই রহস্যজনকভাবে মাত্র ৩২ বছর বয়সেই মানুষটার মৃত্যু হয়।

ব্রুস লির একটি অসাধারণ উক্তি দিয়ে লেখাটির সমাপ্তি টানছি।

সবসময় নিজস্বতা ধরে রাখো, নিজেকে প্রকাশ করো, নিজের উপর বিশ্বাস রাখো। সফল ব্যক্তিত্ব খুঁজে বেড়ানো আর তাদের নকল করে তাদের মতো হওয়ার চিন্তা বাদ দাও।

দ্য রিচেস্ট অবলম্বনে

 

এসকোবার- দ্য কিং অফ কোকেন

 মানিক চন্দ্র দাস

  কোকেন পাচারের জন্য কেনা সাবমেরিন।

 

এসকোবার কলম্বিয়ার সবচে ধূর্ত মাদক সম্রাটের নাম। আমেরিকায় কোকেন পাচারের জন্য এসকোবার গড়ে তুলেছিলেন ‘মেডেলিন কার্টেল’।

তিনি ১৯৭০ এবং ৮০-এর দশকে বাইরে থেকে আমেরিকার ভেতরে ঢোকা মাদকের শতকরা ৮০ ভাগ যোগান দিয়ে গেছে। আয় হতো মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। ৯০ এর দশকে এসকোবারের জ্ঞাত সম্পত্তির পরিমাণ ছিলো ৩০ বিলিয়ন ডলার। এত টাকা ব্যাংকে রাখা সম্ভব না, রাখলে নানাবিধ আইনি ফ্যাকরা। তাই এসকোবার গোটা কলম্বিয়া জুড়ে গর্ত করে মাটির নীচে রেখেছিলেন কাড়ি কাড়ি ডলার। শুধু মাটির নীচে রেখেই ক্ষান্ত দিয়েছিলেন না। বিশ্বের নানাপ্রান্তে চার শতাধিক ম্যানসন, ব্যক্তিগত বিমান আর নিজস্ব একটা চিড়িয়াখানাও তার ছিলো।

১৯৪৯ সালের পহেলা ডিসেম্বর। কলম্বিয়ার রিওনিগ্রো এলাকার নিম্নবিত্ত এক পরিবারে জন্ম নেন এসকোবার। সাত ভাইবোনের মাঝে তৃতীয় এসকোবারের বাবা কৃষক এবং মা ছিলেন প্রাইমারী স্কুল শিক্ষিকা।

কিশোর বয়সেই অপরাধজগতে হাতেখড়ি হয় এসকোবারের। শুরুটা হয়েছিলো কবরস্থানের নামফলক চুরির মাধ্যমে। কবরস্থানে যেসব কবরে আত্মীয়স্বজন কম আসতেন সেসব কবরের নামফলক চুরি করতেন এসকোবার। নামফলক পরে ঘষে পরিস্কার করে বিক্রি করে দিতেন স্থানীয় ব্যবসায়ীর কাছে। পাশাপাশি নকল লটারীর টিকেট, আর গাড়ি চুরি।

স্বপ্ন ছিলো ২২ বছর বয়সেই হবেন লাখপতি। পাশাপাশি পড়াশোনাটাও চলছিলো। কারন এসকোবারের আরেকটা স্বপ্ন ছিলো। হবেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট।  কিছুদিন পড়ার পর পাট চুকিয়ে ছোটা শুরু করেন টাকার পেছনে। প্রথমেই মেডেলিন এলাকার এক হোমরাচোমরার আত্মীয়কে কিডন্যাপ করে বড় দাঁও মারেন এসকোবার। মুক্তিপণ ১ লাখ ডলার। এরপরে পরিচয় হয় আলভেরো প্রিটোর সাথে। জানলেন কোকেন পাচারের অলিগলি।

কলম্বিয়ার মাটিতে প্রচুর পরিমাণে গাঁজা উতপন্ন হয়, তাই চাষটাও হয় ব্যাপক হারে। আমেরিকায় কলম্বিয়া থেকে প্রথমে পাচার হতো গাঁজা। পরে দেখা গেলো কোকেন তৈরীর কাঁচামাল কোকা পাতার কোকা গাছও কলম্বিয়ার মাটিতে বেশ ভালো বাড়ে। আবার দাম গাঁজার তুলনায় অনেক বেশি। শুরু হয় কোকা গাছের চাষ। কলম্বিয়ার ভৌগলিক অবস্থানও দারুন। দক্ষিন আমেরিকার একেবারে উত্তর প্রান্তে অবস্থিত কলম্বিয়া, উত্তরে আর অল্প এগুলেই আমেরিকা। মাদকদ্রব্যের বিশাল বাজার। 

কোকেনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা আর আকাশচুম্বী দামের কারনে এসকোবার ঝোঁকেন কোকেনের দিকে। ১৯৭৫ সালে মেডেলিন এলাকার কোকেন পাচারকারী ফ্যাবিও রেসত্রেপো খুন করে এসকোবার। রেসত্রেপো খুন হবার পর এসকোবার খুব দ্রুত তার জায়গা নিয়ে নেন।  এসকোবার শুরুতে একবারের জন্য বিপুল পরিমাণে কোকা পেষ্ট বিক্রি করেন বলিভিয়া আর পেরুর ব্যাবসায়ীদের কাছে। সেই ডলার দিয়ে গড়ে তোলেন ছোট্ট কিন্তু কুখ্যাত মেডেলিন কার্টেল।

১৯৭৬ সালে এসকোবার তার প্রেমিকা মারিয়া ভিক্টোরিয়া হেনাও কে বিয়ে করেন। এসময় এসকোবার এর বয়স ছিলো সাতাশ আর মারিয়ার মাত্র পনেরো। তাদের ঘর আলো করে আসে দুই সন্তান। ছেলে হুয়ান পাবলো এবং মেয়ে ম্যানুয়েলা।

মেডেলিন কার্টেলের মাথা হবার পর থেকেই নিত্যনতুন পন্থায় আর নতুন নতুন রুটে কোকেন পাচার শুরু করেন এসকোবার। প্রথমে চালান দেন গাড়ির টায়ারের ভেতরে করে।

পরে দেখল গাড়ির টায়ারে করে পাঠানো চালানে পোষাচ্ছিলো না। গাড়ির সাথে সাথে শুরু করলেন বিমানের চাকার ভেতরে করে পাচার। প্রতিবার চালান নিয়ে গেলে বিমানের পাইলটকে দেয়া হতো পাঁচ লাখ ডলার! মানুষের পেটে করে কোকেন পাঠানোর বুদ্ধিটা বেরিয়েছিলো তার মাথা থেকেই। এক্ষেত্রে এসকোবারের পছন্দ ছিলো গর্ভবতী মায়েরা। কারন গর্ভবতী মায়েদের ইমিগ্রেশনে খুব বেশি চেক করা হয়না।

আমেরিকায় রপ্তানি হয়, এমন কোন পণ্য এসকোবার বাদ রাখেননি। প্রতিটা পণ্যের সাথে আমেরিকায় কোকেন ঢুকেছে। পাচারের জন্য এসকোবার একটা সাবমেরিন পর্যন্ত কিনেছিলেন। আশির দশকের মাঝামাঝি দেখা গেলো আমেরিকায় যত কোকেন পাচার হচ্ছে তার শতকরা আশি ভাগ এসকোবারের দখলে। ধারণা করা হয় প্রতিদিন পাচার হতো প্রায় ১৫ টন। আর মেডেলিন কার্টেলের সাপ্তাহিক রোজগার ৪২০ মিলিয়ন ডলার!

প্রথম দিকে জাহাজের কার্গোতে করে ডলার আসতো কলম্বিয়াতে। কার্গোয় বিছানার জাজিমের ভেতর ছোবড়ার বদলে আসতো ডলার। দিন দিন পরিমাণ এতো বেড়ে যায় যে এই ডলার আনার জন্যে এসকোবার কিনে ফেলেন একটা লিয়ারজেট। এসকোবারের ডলারের বান্ডিল করার জন্য সারা মাসে ২৫০০ ডলারের শুধু রাবারব্যাণ্ড কিনতে হতো। এত টাকা ব্যাংকে রাখা যেতো না তাই বিকল্প হিসেবে ড্রামের ভেতরে বা ট্রাঙ্কের ভেতরে করে ডলার মাটিতে পুঁতে রেখেছিলেন এসকোবার। কোথায় কোথায় ডলার পুঁতে রাখা হচ্ছে এবং পরিমাণে কতো তার হিসেব রাখার জন্য একজন আলাদা লোক ছিলো। সেই লোকের কোডনেইম ব্ল্যাকবিয়ার্ড। এসকোবারের বিপুল পরিমাণের ডলারের নাকি দশভাগ ইঁদুরে খেয়েছে অথবা জলে ভিজে নষ্ট হয়েছে। এসকোবারের পলাতক জীবনের কোন এক সময় মেয়ের গা গরম রাখতে বাড়ির ফায়ারপ্লেসের কাঠের অভাবে কয়েক মিলিয়ন ডলার পোড়ানোর কাহিনীও শোনা যায়।

১৯৮০ সালে কলম্বিয়ান সরকার এসকোবারের ১৪২টি বিমান, ২০ টি হেলিকপ্টার, ৩২ টি ইয়াট এবং ১৪১ টি বাড়ি ও অফিস জব্দ করে। তাতেও অবশ্য এসকোবারের গায়ে তেমন একটা আঁচ লাগেনি।

এসকোবার তখন থাকেন নিজের এষ্টেট, ‘হেসিয়েন্দা নেপোলেস’ এ। এষ্টেটের আয়তন ২০ বর্গ কিলোমিটার। ভেতরে ব্যক্তিগত এয়ারপোর্ট, বুলরিঙ, গো-কার্ট ট্র্যাক আর ছিলো একটা চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানায় জলহস্তী, জিরাফ, অস্ট্রিচ, এন্টিলোপ সহ বিভিন্ন প্রাণী আর ছিলো নানা জাতের পাখী।

বিপুল এই সম্পদের একটা অংশ তিনি খরচ করেছিলেন গরীব দুঃখীদের জন্য। তাদের জন্য হাসপাতাল, চার্চ, খেলার মাঠ, পার্ক, ব্যারিও বানিয়ে দিয়েছিলেন। এর অবশ্য আরেকটা কারন ছিলো। সেই যে, প্রেসিডেন্ট হবার ইচ্ছা। দান খয়রাত করে নিজের ‘রবিন হুড’ সুলভ একটা ভাবমূর্তি গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন।

এরপর এসকোবার নামেন রাজনীতিতে। ১৯৮২ সালে হয়ে গেলেন কলম্বিয়ান কংগ্রেস মেম্বার। ভোটের সময় কাগজে কলমে তার বিশাল সম্পত্তির উতস দেখালেন প্রাইভেট ট্যাক্সির ব্যাবসা। বহিস্কৃত হন এসকোবার। বহিস্কারের পর আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন এসকোবার।। এর পরেই কংগ্রেসের আইনমন্ত্রী নিহত হন নিজের । পাচার করতে থাকেন আরো বেশি বেশি কোকেন।

আমেরিকায় যখন দেখা গেলো কোকেনের হাতবদল হওয়া ডলারের পরিমাণ তার বাতসরিক বাজেটের কয়েকগুন, তখন টনক নড়ে আমেরিকার। প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান আমেরিকার তরুন সমাজের উদ্দেশ্য করে ভাষন দেন। আমেরিকা শুরু করে এসকোবার গ্রেফতার অভিযান। সাথে কলম্বিয়ান সরকার।

গোটা আমেরিকাকে কোকেনের নেশাতে বুঁদ করে দেয়া এসকোবারকে যেকোন মূল্যে নিজের দেশে ধরে নিয়ে যেতে চাইছিলো আমেরিকা। লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান এসকোবার।

সপরিবারে এসকোবার

শুধু সরকারকে নাজেহাল করার জন্যে এসকোবারের নির্দেশে তার লোকেরা প্রায় ১০০০ পুলিশ হত্যা করে। এই তালিকায় আছেন একজন এটর্নি জেনারেল এবং বিচারকেরাও। বিচারকার্য চালানোর সময় দেখা গেলো বিচারকেরা মুখোশ পড়ে কোর্টে আসছেন যাতে তাকে চিনে ফেলে এসকোবারের লোকজন মেরে না ফেলে।

এর মাঝে ১৯৮৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন ল্যুইস কার্লোস গ্যালান। তিনি ধরায় ছিলেন বদ্ধপরিকর। গ্যালান প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহনের দিন প্রকাশ্যে নিহত হন মেশিনগানের ব্রাশফায়ারে।  

প্রেসিডেন্ট গ্যালানের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট  সিজার গ্যাভিরিয়া ট্রুইলোকে হত্যা করার জন্য বিমানে বোমা বিস্ফোরন ঘটান এসকোবার। এভিয়াঙ্কা ফ্লাইট রানওয়ে ছাড়ার পাঁচ মিনিটের মাথায় মাটি থেকে ১৩০০০ ফুট ওপরে বিস্ফোরিত হয়। এতে সিজার গ্যাভিরিয়া বেঁচে গেলেও মারা যায় নির্দোষ ১০৭ জন।

এরপরপরই গ্যাভিরিয়া প্রশাসন এসকোবারের সাথে সমঝোতা করে। আমেরিকার হাতে তুলে না দেয়া এবং অপরাধ কার্যক্রম কমিয়ে আনার শর্তে এসকোবার আত্মসমর্পনে রাজী হন। তাও সেই আত্মসমর্পন সরকারের কাছে না। তিনি থাকবেন তার নিজের তৈরী করা জেলের ভেতর বন্দী হিসেবে। গার্ড থাকবে তার নিজের এবং জেলের আশেপাশের দুই মেইল ব্যাসার্ধে সরকারী কোন বাহিনীর লোক দেখা যাবেনা, এই ছিলো শর্ত। গ্যাভিরিয়া প্রশাসন তা মেনে নেয়।

এসকোবার থাকতে শুরু করেন তার নিজের বানানো ‘লা ক্যাথেড্রাল’-এ। সে এল আলিশান ব্যাপার স্যাপার ছিলো। তার ব্যক্তিগত জেলের ভেতর টেলিফোন, টিভি, জিমনেশিয়াম, স্পা, ক্যাসিনো, স্যুইমিং পুল, ফুটবল খেলার মাঠ সব ছিলো। সরকার যখন টের পেয়ে গেলো জেলের ভেতরে থেকে এসকোবার তার কাজকর্ম আরো ভালো ভাবে চালাচ্ছে তখন লা ক্যাথেড্রালে অভিযান চালায়। নয় জন চ্যালা সহ সুড়ঙ্গ পথে পালায় এসকোবার।

১৬ মাস পর ব্রিগেডিয়ার হুগো মার্টিনেজ রেডিও ট্রায়াঙ্গুলেশন টেকনোলজি ব্যবহার করে এসকোবারের রেডিওটেলিফোন ট্রান্সমিশন ধরতে সমর্থ হন। দেখা গেলো এসকোবার দিব্যি লুকিয়ে আছে খোদ মেডেলিন এর লস ওলিভোস এলাকার মধ্যবিত্তদের থাকার জন্য বানানো এক কলোনীতে। সার্চ ব্লকের আনাগোনা টের পেতেই কলোনীর ছাদ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন এসকোবার। সাথে তার একমাত্র দেহরক্ষী লিমোনে। এসকোবারের পেটে, পায়ে আর কানে গুলি লাগে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে পুলিশের গুলি খাবার পর এসকোবার নিজেই নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন।

যে দুবাইয়ের গল্প আমাদের অজানা

মোঃ সাইফুল্লাহ (সাইফ)

পৃথিবীর অন্যতম আকর্ষনীয় শহরটার নাম দুবাই। কী নেই সেখানে? বিলাসবহুল আকাশছোঁয়া বিল্ডিংগুলো যেন চাঁদকে ছুঁয়ে ফেলবে। দামি দামি গাড়ি, সহজলভ্য স্বর্ণ, আয়েশী জীবনযাপন- ব্যস্ততম এই শহরে পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য যেন কোনো কিছুরই অভাব নেই। যে কেউ এই শহরে আসতে চাইবে।

কিন্তু, চকচকে ও ফিটফাট এই শহরের রাতারাতি বদলে যাওয়া ও বিশ্ববাসীর নজরকে তাক লাগিয়ে দেয়া সুযোগ–সুবিধার আড়ালেও ধারণ করে আছে কিছু গল্প, যা শুনলে নিশ্চিতভাবেই মনে হবে- চকচক করলেই সোনা হয় না!

১. শ্রমিকদের উপর অমানুষিক চাপ প্রয়োগ 

দুবাই প্রশাসন ট্যুরিস্টদের একটি পরামর্শ দেয়। সেটি হচ্ছে, দুবাইতে যখন তাপমাত্রা যখন ১২০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায় তখন যেন কোনো ট্যুরিস্ট সূর্যের আলোতে পাঁচ মিনিটের বেশি অবস্থান না করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি তারা এই নিয়মটি শ্রমিকদের বেলায় মানে না। ১২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় শ্রমিকরা প্রায় ১৪ ঘন্টা দৈনিক টানা কাজ করে!

২. জনসম্মুখে প্রিয় মানুষের হাত ধরাও অপরাধ 

না। এই শহরের মানুষরা স্বাধীনচেতা, মুক্ত মনের। এখানে পাবলিক প্লেসে প্রিয় মানুষের হাত ধরাও নিষেধ! যদি কেউ নিয়ম ভাঙ্গে, তবে তার জন্য রয়েছে বিশাল অংকের জরিমানার বিধান।

৩. রাতে পালটে যায় দুবাইয়ের খোলস 

সবচেয়ে প্রাচীন পেশা দেহব্যবসা দুবাইয়ে অর্থ কামানোর অন্যতম উপায়। প্রায় ৩০ হাজার দেহব্যবসায়ী রাতে দুবাইতে তাদের শরীর প্রদর্শনী করে, তাদের ঘন্টা প্রতি পারিশ্রমিক ৫০০ ডলার! পুলিশ স্বাভাবিকভাবেই রাতের এসময়টায় অন্ধ হয়ে যায়।

৪. তেলের মজুদ শেষ হলেই দুবাইয়ের খেলা শেষ

দুবাইয়ের তেলের মজুদ, যা তাদের অর্থের প্রধান উৎস। আগামী ২০ বছর পর তাদের কাছে আর পর্যাপ্ত তেল থাকবে না। তখন দুবাই টের পাবে ভবিষ্যৎ চিন্তা না করেই অর্থের এই নিদারুণ অপচয়

৫. বর্নবাদ আচরণের আখড়া 

এই শহরে যারা কাজ করতে আসে তাদের বেতনের মধ্যেও তফাৎ। ইউরোপ-অ্যামেরিকা থেকে যারা এখানে আসে, তারা একই কাজের জন্য তিনগুণ থেকে  দশগুণ  বেশি বেতন পায় অনুন্নত দেশের মানুষের তুলনায়। শরীরের রঙও বেতন নির্ধারণের মাপকাঠি এখানে!

৬. নেই বাকস্বাধীনতা 

দুবাই এমন এক শহর যেখানে যতক্ষণ আপনি সরকারের সুরে সুরে কথা বলবেন ততক্ষণই কথা বলার সুযোগ পাবেন, এর বেশি নয়। যখনই কেউ কোনো ইস্যু নিয়ে অথবা সমস্যা নিয়ে প্রতিবাদ করতে চায়, তাদের কাছে একটি ফোন কল আসে। “সিক্রেট পুলিশ অফ দুবাই” এই কল দেয়। তাদের কথাবার্তা খুবই স্পষ্ট। তার জন্য মাত্র দুইটা অপশন। ১. এখনই চুপ করো, অথবা ২. এত দিনে যা অর্জন করেছো তা হারাবার জন্য প্রস্তুত হও।

৭. সোনাপুর- দ্যা লেবার ক্যাম্প 

দুবাইয়ের আশেপাশেই সোনাপুর নামে একটি জায়গা রয়েছে যার কথা হয়তো অনেকেই শুনেনি। গরীব শ্রমিকেরা এখানে মানবেতর জীবনযাপন করে। অনুন্নত দেশ থেকে “জীবন বদলে যাবে একবার দুবাই গেলে”- এমন স্বপ্ন নিয়ে যাওয়া গরীব শ্রমিক এখানে অসহ্য যন্ত্রণার জীবন কাটায়। একটা ছোট খুপড়ি ঘর আট দশজনে শেয়ার করে থাকে। ১০০ জন মানুষের জন্য একটা বাথরুম। আর খাবার? দিনে একবেলা পাওয়াটাই যেখানে বড় সৌভাগ্যের!

৮. নকল চাকচিক্যের অন্তরালে 

এখানকার সব কিছুই নকল। গাছের পাতা থেকে শুরু করে মানুষের হাসি পর্যন্ত! এখানে ধনীরা দুবাইকে এমনভাবে তৈরি করেছে বাইরের মানুষরা এসে চাকচিক্য ও বিলাসবহুল সুবিধা উপভোগ করে নিজেকে রাজা মনে করবে। কিন্তু কিছুদিন গেলেই বুঝা যায় এই চাকচিক্য আর আরামের অনুভূতি শুধু টাকা দিয়ে কেনা নকল ইমোশন। এখানে যার টাকা নেই, তার জন্য আইনও কঠোর। এই শহরে শ্রমিকদের জন্য কিছু নেই, অথচ লাখ লাখ ডলার দিয়ে কেনা  বিএমডাব্লিউ গাড়ি অসুস্থ গতিতে চালিয়ে এক্সিডেন্ট করে মানুষ মারাও এখানে ফ্যাশন।

 (দ্য রিচেস্ট অবলম্বনে)

 

 

ইউরেকা ইউরেকাঃ আর্কিমিডিস
  লেখকঃ সাইদ আনোয়ার অনুজ

সাইরাকিউসের সম্রাট হিয়েরো এক স্বর্ণকারকে দিয়ে একটি সোনার মুকুট তৈরি করেছিলেন। মুকুটটি হাতে পাওয়ার পর সম্রাটের মনে হলো এর মধ্যে খাঁদ মেশানো আছে। কিন্তু স্বর্ণকার খাদের কথা অস্বীকার করল। তাতে সম্রাটের মনের সন্দেহ দূর হলো না, তার বারবার মনে হতে লাগল এতে খাঁদ মেশানো আছে। তিনি প্রকৃত সত্য নিরূপণের ভার দিলেন রাজদরবারের বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের ওপর। আর্কিমিডিসকে বলা হয় যে, এই মুকুটটি না ভেঙ্গে এতে খাঁদ আছে কিনা, তা বের করে দিতে।

মহা ভাবনায় পড়ে গেলেন আর্কিমিডিস। আর্কিমিডিস ভেবে পান না মুকুট না ভেঙে কেমন করে তার খাদ নির্ণয় করবেন। কয়েক দিন কেটে গেল, তিনি চিন্তা করছেন আর চিন্তা করছেন। কোন উপায় পাচ্ছেন না। ক্রমশই অস্থির হয়ে ওঠেন আর্কিমিডিস, তিনি কিছুতেই বের করতে পারছিলেন না কিভাবে না ভেঙ্গে মুকুটের খাদ বের করবেন!

একদিন দুপুরবেলায় মুকুটের কথা ভাবতে ভাবতে সমস্ত পোশাক খুলে চৌবাচ্চায় স্নান করতে নেমেছেন। পানিতে শরীর ডুবতেই আর্কিমিডিস লক্ষ করলেন কিছুটা পানি চৌবাচ্চা থেকে উপচে পড়ল। মুহূর্তে তার মাথায় এক নতুন চিন্তার উন্মেষ হলো। এক লাফে চৌবাচ্চা থেকে উঠে পড়লেন। তিনি ভুলে গেলেন তার শরীরে কোনো পোশাক নেই। সমস্যা সমাধানের আনন্দে নগ্ন অবস্থাতেই “ইউরেকা!! ইউরেকা!! এইতো পেয়েছি!!!” বলে চিৎকার করতে করতে ছুটে গেলেন রাজদরবারে।

পানির এই ধর্মকে ঘনত্ব পরিমাপে ব্যবহার করা সম্ভব। যেহেতু ব্যবহারিক কাজের জন্য পানি অসংকোচনশীল, তাই পানিতে নিমজ্জিত মুকুট তার আয়তনের সমান পরিমাণ পানি স্থানচ্যুত করবে। এই অপসারিত পানির আয়তন দ্বারা মুকুটের ভরকে ভাগ করে মুকুটের ঘনত্ব পরিমাপ করা সম্ভব। যদি সোনার সাথে অন্য কোন ধাতু মিশানো হয়ে থাকে তাহলে তার ঘনত্ব খাঁটি সোনার ঘনত্বের চেয়ে কম হবে।

কিন্তু, ঘনত্বের পার্থক্যের কারণে যে পরিমাণ পানি অপসারিত হবে সেটি সঠিকভাবে নির্ণয় করা একটি কষ্টসাধ্য কাজ। এজন্য তাঁকে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য আর্কিমিডিস একটি তত্ত্ব দেন। তাঁর এই তত্ত্বটি হচ্ছে: “কোন বস্তুর ওজন এটি দ্বারা অপসারিত তরলের ওজনের সমান”।
  তার এই তত্ত্বটির উপরই লোহার তৈরি জাহাজ বা অন্যান্য জলযান আবিস্কৃত হয় এবং পানিতে ভেসে থাকে।

আর্কিমিডিস তৎকালীন গ্রিসের সিসিলি দ্বীপের সাইরাকিউস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। আর্কিমিডিস পঁচাত্তর বছর বয়সে মারা যান, আনুমানিক ২৮৭ খৃস্টপূর্বাব্দে এই মহান পুরুষের জন্ম। “দ্য স্যান্ড রেকোনার” নামক দলিলে আর্কিমিডিস তাঁর বাবার নাম ফিডিয়াস বলে উল্লেখ করেন। ফিডিয়াস একজন জ্যোতির্বিদ ছিলেন। ঐতিহাসিক প্লুটার্খ আর্কিমিডিসকে সাইরাকিউসের রাজা দ্বিতীয় হিয়েরোর আত্মীয় বলে উল্লেখ করেন।

যৌবনে আর্কিমিডিস মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ায় পড়াশুনা করেছিলেন, যেখানে কোনোন অভ সামোস এবং এরাতোস্থেনেস অফ সিরেন তাঁর সহপাঠী ছিলেন। ২১২ খৃস্টপূর্বাব্দে দ্বিতীয় পিউনিক যুদ্ধের সময় আর্কিমিডিস নিহত হন, যখন রোমান সেনাপতি জেনারেল মার্কাস ক্লডিয়াস মার্সেলাস দুই বছর ধরে অবরোধের পর সাইরাকিউজ শহর দখল করেন। প্লুটার্খের বিবরণ অনুযায়ী, আর্কিমিডিস একদিন সমুদ্র পাড়ে একটা জ্যামিতিক সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি সমুদ্রের পারের বালুর মাঝেই আঙ্গুল দিয়ে ছবি আঁকছিলেন আর ভাবছিলেন। এক রোমান সৈন্য সেসময় তাঁকে কাজ বন্ধ করে জেনারেল মার্সেলাসের সাথে দেখা করতে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। আর্কিমিডিস তাঁর কাজ শেষ না করে যেতে অস্বীকৃতি জানালে ক্ষিপ্ত সৈনিক তার তলোয়ার দিয়ে তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে হত্যা করে। মৃত্যুর ঠিক আগে তাঁর শেষ উক্তি ছিল- “Kill me you rubbish! But don’t kill my diagram!”

আর্কিমিডিসের মৃত্যুর ১৩৭ বছর পর ৭৫ খৃষ্টাব্দে রোমান বক্তা সিসেরো সিরাকিউজের এগ্রিজেনটিন গেইটের কাছে ঝোপঝাড় পরিবেষ্টিত অবস্থায় আর্কিমিডিসের কবর আবিষ্কার করেন।

নিজের খেয়ে বনের মোষ চরানো

"এক কৃষকের সখ বিভিন্ন জাতের ঘোড়া সংগ্রহ করার।
  তার সংগ্রহ সম্পূর্ণ করতে এখন শুধু এক ধরনের ঘোড়ার প্রয়োজন, যেটা তার প্রতিবেশীর কাছেই রয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী সেটা বিক্রয় করতে ইচ্ছুক নয়। তারপরও সে প্রতিদিন তাকে বিরক্ত করেই যাচ্ছে ঘোড়াটা বিক্রি করার জন্য। শেষ পর্যন্ত সে তার প্রতিবেশীকে রাজী করাতে সক্ষম হয়, কিন্তু তার এই আনন্দও বেশী দিন সইল না.... এর এক মাস পরেই ঘোড়াটি অসুস্থ হয়ে পড়ল।
  পশু ডাক্তার এসে ঘোড়াটিকে দেখে বলল এটি একটি মারাত্মক ভাইরাসে আক্রান্ত। সে কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে বলল এগুলো তিন দিন ধরে খাওয়াতে হবে। এর মধ্যে সুস্থ না হলে তিন দিন পরে ঘোড়াটিকে মেরে ফেলতে হবে।
  ডাক্তার আর কৃষকের কথা গুলো এর মধ্যে একটি ছাগল আবার মনোযোগ দিয়ে শুনছিল। কিছুক্ষন পরে কৃষক এসে ঘোড়াটিকে ওষুধ খাইয়ে আবার নিজের কাজে গেল। তখন ছাগলটি এসে ঘোড়াটিকে বলল, শক্ত হও বন্ধু, তোমাকে সুস্থ হতেই হবে, না হলে ওরা তোমাকে মেরে ফেলবে।
  দ্বিতীয় দিনও কৃষক ঘোড়াটিকে ওষুধ খাইয়ে যাওয়ার পর ছাগলটি ঘোড়াটিকে বলল, ওঠো বন্ধু, তোমাকে কষ্ট করে হলেও হাঁটতে হবে, আসো আমি তোমাকে সাহায্য করছি।
  তৃতীয় দিন কৃষকের সাথে আবার সেই পশু ডাক্তার আসলো, ওষুধ খাওয়ানোর পরে ডাক্তার বলতে লাগলো, নাহ আর কিছু করার নেই, কালকে ঘোড়াটিকে মেরে ফেলতে হবে, নাহলে তোমার অন্য ঘোড়াগুলোও সংক্রমিত হতে পারে, কোন সুযোগ নেয়া ঠিক হবে না। কৃষকও নিরুপায় হয়ে তাতে সায় দিল।
  এবার তারা চলে যাওয়ার পর ছাগলটি এসে ঘোড়াটিকে বলল, আজকেই শেষ সুযোগ বন্ধু, উঠে দাঁরাও, তোমাকে পারতেই হবে, দৌড়াতে হবে, এইতো এইতো হচ্ছে, তুমি পেড়েছ, আর একটু, চমৎকার, তুমি পারবেই....
  অবশেষে ঘোড়াটি দৌড়াতে শুরু করলো। এমন সময় হঠাৎ কৃষক চলে এসে দেখতে পেল ঘোড়াটি দৌড়ুচ্ছে...
  কৃষক আনন্দে আত্মহারা হয়ে বলতে লাগলো, “অবিশ্বাস্য, আমার ঘোড়া সুস্থ হয়ে গেছে... কোথায় সবাই, এই আনন্দে আজকে পার্টি হবে, এই কে আছিস, ছাগলটাকে জবাই কর।“

শিক্ষা-নিজের খেয়ে বনের মোষ চরাতে যেও না, তাতে শুধু নিজেরি ক্ষতি হয়।

ৃৃৃৃৃৃৃৃৃ

 

মেধাবী শিক্ষক যেখানে আছে, শিক্ষার মান সেখানে উন্নত হবেই

উচ্চশিক্ষা বলতে আমি অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের পঠন-পাঠনের কথা বলছি।   দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিমাণ ছাত্র-ছাত্রী অনার্স এবং মাস্টার্স পর্যায়ে লেখাপড়া করে, তার চেয়ে অনেক বেশি ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উচ্চশিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে অনেকটা উদারনীতি গ্রহণ করেছেন। গ্রামে-গঞ্জের কলেজগুলোতেও অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স খুলে দেওয়া হয়েছে। অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স খুলে দেবার সঙ্গে সঙ্গে কলেজগুলো নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ’ বলে দাবি করছে। যদিও সে দাবির আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। এক সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন- ‘খাতা না দেখেই চূড়ান্ত ফল দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে তাদের শিক্ষার মান কেমন হতে পারে, তা সহজেই অনুমান করা যায়।’ তিনি জানিয়েছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের আত্মীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক। তিনি একবার অনার্সের খাতা নিলেও অসুস্থতার কারণে দেখতে পারেননি। তাই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানান দ্রুত যেন খাতা নিয়ে যাওয়া হয়। তার দ্বারা খাতা দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু মাসখানেক পার হলেও কেউ খাতার বিষয়ে খোঁজ নেয়নি। এর কিছুদিন পরেই ফলাফল দিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তখন অদেখা অবস্থায় কয়েকশ’ খাতা ওই শিক্ষকের বাসায় পড়ে ছিল। এই হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার অবস্থা।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি পরীক্ষার খাতা দুইজন করে পরীক্ষক খাতা পরীক্ষণ করে থাকেন। এটি নিঃসন্দেহে উন্নতমানের ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় পরীক্ষার্থীরা ন্যায়বিচার পেয়ে থাকে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভবত একজন পরীক্ষক দ্বারাই খাতা মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। সেই একজন পরীক্ষকের মূল্যায়ন ছাড়াই যদি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে উচ্চশিক্ষা মহাসংকটের সম্মুখীন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যে প্রক্রিয়ায় পরীক্ষাগুলোকে সেশনজট মুক্ত করার কাজ চলছে, তা খুব বাস্তবসম্মত নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সময়মত পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন, পঠন-পাঠনের দিকে তারা তাকাচ্ছেন না, এর ফলে সিলেবাসের অর্ধেকটা শেষ না হতেই পরীক্ষা হয়ে যাচ্ছে। এর মূল কারণ শিক্ষক সংকট। কলেজে বাংলার যে ক’জন শিক্ষক আছেন, তাদেরকে অনার্স, মাস্টার্স, ডিগ্রি, ইন্টারমিডিয়েট সবখানেই ক্লাস নিতে হয়। অনার্সেই পাঠ্যবই রয়েছে ৩২টি। চারজন শিক্ষককে এক বছরে অনার্সের ৩২টি বই পড়াতে হবে, মাস্টার্সের পাঠ্য ১৫টি বই পড়াতে হবে, ইন্টারমিডিয়েট এবং ডিগ্রি ক্লাসে আরো ১০টি বই পড়াতে হবে। অর্থাৎ বাংলার একজন শিক্ষককে এক বছরের মধ্যে মোটামুটি ১২টি বই পড়িয়ে শেষ করতে হবে। কলেজে নানারকম ছুটি থাকে। বছরে হয়তো সাত/আট মাস ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ের মধ্যে চারজন শিক্ষকের পক্ষে এক বছরের মধ্যে সিলেবাস শেষ করা অসম্ভব। এই পঠন-পাঠনের জন্য প্রয়োজন ৮/১০ জন শিক্ষক। কলেজে অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স খুলবার ক্ষমতা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে আছে কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে নেই। শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি মূলত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাতে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি কলেজের জন্য শিক্ষক বরাদ্দ রেখেছেন চারজন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি সেই কলেজে অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স খুলবার অনুমতি প্রদান করেন, সে ক্ষেত্রে শিক্ষার সংকট দেখা দিতেই পারে।

নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার চাহিদা পূরণে সক্ষম ছিল না পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ফলে প্রচুর শিক্ষার্থী নিজ খরচে ভারত বা অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করতে যেতো। বিদেশে যাবার প্রবণতা ঠেকানোর জন্য আমাদের দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মের পর প্রথম ১০/১২ বছর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বেশ ভালো ছিল। মাঝখানে পাঁচ/ছয় বছর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অত্যন্ত নেমে গিয়েছিল। এর মূল কারণ দেশের বিভিন্ন স্থানে শাখা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। শাখা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাধ্যমে দেশে শুরু হয়ে যায় শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য। সেই বাণিজ্য ঠেকাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ২০১০ সালে সরকারকে নতুন একটি আইন’ প্রণয়ন করতে হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরদারি অনেক কঠোর হয়েছে। এর শুভ ফল লক্ষ করা যাচ্ছে। উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে মেধাবী শিক্ষকের কোনো বিকল্প নেই।

মেধাবী শিক্ষক যেখানে আছে, শিক্ষার মান সেখানে উন্নত না হবার কোনো কারণ নেই। উন্নতমানের শিক্ষার জন্য বিশাল ক্যাম্পাস অপরিহার্য এমন কথাও বলা যাবে না। ভালো মানের শিক্ষক থাকলে ক্ষুদ্র ক্যাম্পাসেও উচ্চমানের শিক্ষাদান সম্ভব। আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গ্রামে-গঞ্জে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করাই ভালো। সেখানে ভালো মানের শিক্ষক পাওয়া যাবে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নতমানের পঠন-পাঠনের স্বার্থে  পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিজ্ঞ কিছু খণ্ডকালীন শিক্ষক রাখা অত্যন্ত জরুরি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে শিক্ষক সংকট সমাধান হবে। এর ফলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নত হবে।
  উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের সাতটি কলেজকে ঢাবি-র তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস অনুসারে কলেজগুলোতে অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স পঠন-পাঠন এবং ডিগ্রি প্রদান করা হবে। উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এটি নিঃসন্দেহে সহজ উদ্যোগ। উচ্চশিক্ষার বৃহত্তর স্বার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বাংলাদেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কেও এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমানে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা সম্ভবত ৩৮টি। এর মধ্য থেকে পুরাতন ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যদি দেশের ১০টি করে কলেজের দায়িত্ব গ্রহণ করে, সে ক্ষেত্রে দেশের ১০০টি কলেজকে উচ্চশিক্ষার সংকট থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

লেখক ড. আবদুল খালেক: সাবেক ভিসি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,

আমার ডানা মেলা ভাবনাগুলো

সুপ্রাচীন বাংলার সভ্যতার আলো বিকিরণ ঘটিয়েছে সর্বত্র। চীন, নেপাল, ব্রহ্মদেশ, শ্যাম, সিংহলে তা ছড়িয়েছে। ছড়িয়েছে সুমাত্রা, জাভাসহ সুদূর ইন্দোনেশিয়ায়। এ জনপদেই মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছেন। পায়ে হেঁটে প্রচার করেছেন ভারতজুড়ে অহিংসার অমিয় বাণী। তিনি বলেছেন, অহিংসা পরম ধর্ম, সর্বজীবে দয়া কর।

এ বাংলাতেই পাল রাজারা চার শতাধিক বছর রাজ্য শাসন করেছেন। প্রথম পালরাজ গোপাল গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে সবার সম্মতিতে নৃপতি নির্বাচিত হন। পাশ্চাত্যে গ্রিস ছাড়া বিশ্ব ইতিহাসে এমন কখনো হয়নি। পাল রাজারা বাংলাদেশের ঐতিহ্য, কৃষ্টি, মানবতাবাদ, অহিংসা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। শান্তি, সম্প্রীতি, ভালোবাসা, ক্ষমা ও মানবতার কথা বলেছেন। সে ছিল বিশ্বসভ্যতায় বাংলাদেশের তথা ভারতবর্ষের এক সুবর্ণ যুগ।

এই ভূখন্ডে একসময় ইসলাম প্রচারকরা অস্ত্রের বলে নয়, শান্তি ও মানবতার কথা প্রচার করে দলে দলে মানুষকে আকৃষ্ট করেছেন।সুফি-সাধক, পীর-আউলিয়ারা পবিত্র এই ধর্মের ক্ষমার মর্মবাণী তুলে ধরেছেন। আমাদের এই ভূমিতেই সত্যের সন্ধান করেছেন শ্রীচৈতন্য দেব। তিনি ভালোবাসা ও ক্ষমার বাণী প্রচার করেছেন। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ও স্বামী বিবেকানন্দ মানবতার ব্রত নিয়ে গোটা ভারতবর্ষ পরিভ্রমণ করেছেন।  বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার সন্তান ফকির লালন শাহ মানবতার সাধনা করেছেন। তার গানে ও গীতিতে যে দর্শন রয়েছে তার মূলকথা মানবতার উপরে কিছু নেই।

অসাম্প্রদায়িকতা, অহিংসা আমাদের আবহমানকালের ঐতিহ্য। এ চেতনা আবিষ্কার করি কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখায় ও কবিতায়। তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আইকন। তিনি বলেছেন, ‘হিন্দু না ওরা মুসলিম ওই জিজ্ঞাসে কোন জন? কা-ারি, বল মরিছে মানুষ। সন্তান মোর মার। ’ নজরুল আমাদের জাতীয় কবি। নজরুলের পুরো সাহিত্যকর্মে মানবতা ও সাম্য, অসাম্প্রদায়িকতা ও মুক্তির প্রতিফলন। আর এটাই তো ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আরেক মহান বাঙালি অগ্নিপুরুষ নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন আমাদের প্রেরণা। ভারত স্বাধীন করার ব্রত নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। ’ সশস্ত্র আজাদ হিন্দ ফৌজ তিনি গঠন করেছেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন। তার আজাদ হিন্দ বাহিনী বার্মা থেকে অভিযান চালিয়ে ভারতবর্ষে প্রবেশ করে ইম্ফল কহিমাসহ বিস্তৃত অঞ্চল মুক্ত করে। নেতাজির বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা ছিলেন ক্যাপ্টেন শাহনেওয়াজ।

হাজার বছর ধরে বাংলার সংস্কৃতি শান্তির, সম্প্রীতির। বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী, আদিবাসী সবার মাতৃভূমি। সবার দেশ বাংলাদেশ।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যুগ যুগ ধরে বাংলার জাতীয় বৈশিষ্ট্য।কিন্তু এই বাংলাদেশ আজ অশান্ত। চারদিকে অস্থিরতা, উত্তেজনা, ধর্মান্ধতা, জঙ্গি ও উগ্রবাদের উন্মাদনা। সামাজিক সংঘাত, ধর্ম ও জাতি-গোষ্ঠীগত ঘৃণা, সহিংসতা, হানাহানি। সন্ত্রাসবাদের বলগাহীন বিস্তার। স্থিতিশীলতা বিপজ্জনকভাবে বাধাগ্রস্ত। নীতি ও মূল্যবোধের প্রচণ্ড শূন্যতা। হিংসায় উন্মত্ত বাংলাদেশ।প্রতিনিয়ত মিডিয়ায় দেখছি ভিন্নমতের, ভিন্ন আদর্শের, ভিন্নপথের অনুসারীরা হত্যা হচ্ছে। মানুষের হিংসা, বিদ্বেষ, সীমাহীন লালসা, পারস্পরিক ঘৃণা, পশুত্বের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। পশুরাই আজ অনেক মানবিক। মানুষ পাশবিক।আমরা উটপাখির মতো আসন্ন সাইমুম ঝড়কে না দেখার ভান করে চোখ বন্ধ করে মাথা বালুর মধ্যে ঢুকিয়ে রাখলে ঝড়ের অস্তিত্ব মিথ্যা হয়ে যাবে না। ঝড়ও বন্ধ হবে না। জাতির কাছে আজ এ এক মহাচ্যালেঞ্জ। সব ভেদাভেদ ভুলে সব রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী মানুষ, বিজনেস কমিউনিটি, ছাত্র-শিক্ষক সবাইকে একত্রিত হতে হবে।দেশটি শুধু সরকারের নয়। দেশটি সবারআমি পজিটিভ থিংকিংয়ে বিশ্বাস করি। আমি স্বপ্ন দেখি। লে. জে. মাহবুবুর রহমান (অব.)সাবেক সেনাপ্রধান

বাঙালির সময়জ্ঞান

ইংরেজ আমলে এক যুবক ব্রিটিশ অফিসার বাংলাদেশে এল চাকরি নিয়ে। যুবক হওয়ার দরুন তাঁর আগ্রহের কমতি না থাকাটাই স্বাভাবিক। আগ্রহ থেকেই গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে কাজের ফাঁকে ফাঁকে বা ছুটির দিনে ঘুরে বেড়ান। একদিন কোনো এক দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন শেষে তিনি ট্রেন ধরার জন্য স্টেশনে এসেছেন। কিন্তু ট্রেন চলে গেল নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট আগেই। রেগেমেগে ওই ব্রিটিশ অফিসার মোবাইল কোর্ট বসালেন এর বিচার করার জন্য। স্টেশন মাস্টারকে ডাকা হলো। তাকে বলা হলো ট্রেন সময়ের কয়েক মিনিট আগেই ছেড়ে গেল কেন তার জন্য সন্তোষজনক কৈফিয়ত দিতে হবে, না পারলে চাকরি যাবে সঙ্গে শাস্তিও। ভয়ে ভয়ে স্টেশন মাস্টার বললেন, ট্রেনটা কয়েক মিনিট আগে ছেড়ে গিয়েছে ঠিকই স্যার, কিন্তু এই ট্রেনটা তো আজকের নয়, এটা ছিল গতকালের ট্রেন।

==========

গারো মাতৃতান্ত্রিক সমাজ  

প্রয়াত গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যান প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট প্রমোদ মানকিন এর ছেলে সন্তান জুয়েল আরেং কিভাবে হলো ।  তার ছেলে তো মানকিন হওয়াটাই স্বাভাবিক। গারো সমাজে মানে গারো আদিবাসি সমাজ একটি মাতৃতান্ত্রিক সমাজ।  সব সম্পত্তি উত্তরাধিকার সুত্রে মেয়ে সন্তানরাই পায়।  এমনও দেখা যায় কোন পরিবারে মেয়ে সন্তান না থাকলে পালক হিসাবে নিয়ে এসে মেয়ে সন্তান বানিয়ে তার জন্য সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয়। মিসেস মমতা আরেং প্রয়াত সমাজকল্যান প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট প্রমোদ মানকিন এর সুযোগ্য জীবন সঙ্গী উনার স্ত্রী। উনার টাইটেল হলো আরেং সুতরাং উনাদের যতজন সন্তান হবে সবাই আরেং টাইটেল অটোমেটিক ভাবেই এসে যায়।

 

খেয়ে এসেছেন নাকি গিয়ে খাবেন

ভাস্কর সরদার

‘খেয়ে এসেছেন নাকি গিয়ে খাবেন?’ কলকাতাবাসীরা নাকি বাড়ির অতিথিদের এই প্রশ্নটি আকছার করে থাকেন। এই অনুযোগটি মাঝে মধ্যেই আসে বাংলাদেশের বন্ধুদের কাছ থেকে।  সত্যিই কি কলকাতার মানুষ জেটগতির জীবনের সঙ্গে দৌড়াতে দৌড়াতে আতিথেয়তা ভুলে গেছে! নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্যকোনো আর্থ-সামাজিক কারণ।  

দুই বঙ্গে আতিথ্য নেওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে অতিথিদের নিয়ে আবেগ ‍বিশ্বসেরা। যে উদ্বেলতা আমি দেখেছি, তার থেকে আতিথেওতার বিষয়ে অনেক কম আবেগপ্রবণ কলকাতার মানুষ। নিঃসন্দেহে বিষয়টি স্বীকার করে কলকাতার মানুষও। তবে অবিভক্ত বঙ্গে কিন্তু এই পার্থক্যটি খুব বেশি ছলো না। তার প্রমাণ পাওয়া যায়, সেই সময়ের রচিত সাহিত্যের দিকে নজর রাখলে। কিন্তু আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির ক্রমবর্ধমান বদলের ফলে অতিথি অাপ্যায়নের চরিত্রে বদল হয়েছে।

 

এই বদল লক্ষ্য করা যায়, পরিবারের আয়তন বদলের মধ্যে দিয়ে। কলকাতায় যৌথপরিবার এখন প্রায় ইতিহাসের পাতায় স্থান নিয়েছে। সাত ঘর এক উঠানের দিন পেরিয়ে এখন ফ্ল্যাটবাড়ি। গড়ে একটি পরিবারে তিন থেকে চারজনের বেশি সদস্য প্রায় নেই। এর মধ্যে গৃহকর্তা ও গিন্নি দু’জনেই অফিসে বেরিয়ে যান। তাই আত্মীয় বন্ধুদের কাছে তাদের আবেদন বাড়িতে আসার আগে দয়া করে যেন তারা ফোন করে আসেন।  

বাস্তবক্ষেত্রে না জানিয়ে এলে যেমন পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে না থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে, তেমনই থাকলেও প্রস্তুতির অভাবে পরিবারের সদস্যদের বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়।

কিন্তু প্রস্তুতির অভাব কেন? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবে এসে যায়। বাড়িতে কি অতিথি আপ্যায়ন করার মতো খাবার থাকে না?
 
  কলকাতার মানুষ ‘টেকনোলজি’নির্ভর হলেও খাওয়ার ব্যাপারে কিন্তু টাটকা খাবার খেতে বেশি আগ্রহী। যাদের সম্ভব হয় তারা প্রতিদিনের বাজার প্রতিদিন করতেই পছন্দ করেন। যাদের সম্ভব নয়, তারা তাড়া পাড়ায় বিক্রি করতে আসা সবজি-মাছ বিক্রেতার কাছ থেকে কিনে নেন। যাদের একেবারেই সময় কম, তারা হয় কর্মক্ষেত্র থেকে ফেরার সময় বাজার করেন।

প্রতিদিনের বাজার প্রতিদিন করার কারণ যেমন একদিকে টাটকা খাবার প্রবণতা, অন্যদিকে কলকাতায় কম পরিমাণে কেনার সুবিধাও প্রতিদিন বাজার করার অন্যতম কারণ। উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। কলকাতায় যেকোনো বাজারে কেউ যদি চান ২শ গ্রাম মাছ-মাংস-মুরগি কেটে সহজেই কিনতে পারেন। অর্থাৎ যতটা প্রয়োজন। ফলে প্রতিটি পরিবার তাদের প্রয়োজন মতো জিনিস প্রতিদিন কিনে নেওয়াতেই অভ্যস্ত। বিশেষ করে কাঁচা সবজি, মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি। এই চিত্র কিন্তু ভারতের বেশিরভাগ শহরেই। এর একটি বড় কারণ, খাদ্য ও পণ্য মজুদ করে না রাখা। সেটি যেমন দোকানের ক্ষেত্রে, তেমনই সাধারণ মানুষও পণ্য মজুদ করা থেকে দূরে থাকে। ভারতে পণ্য মজুদ করার বিরুদ্ধে এসেনশিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট-১৯৫৫ খুব কড়াভাবে প্রয়োগ করা হয়।এর ফলে না জানিয়ে বাড়িতে অতিথি এলে তার জন্য মধ্যাহ্নভোজ বা নৈশভোজের ব্যবস্থা করা অনেক সময় অসুবিধার কারণ হয়ে ওঠে। এ প্রজন্মের পরিবারগুলো একটু অন্যভাবে একে অন্যের সঙ্গে সময় কাটায় ও খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টি  পালন করে। হয়তো একটি পরিবার যেখানে গৃহকর্তা ও গিন্নী দু’জনেই চাকরি করেন, কিন্তু ছুটির দিনে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটাতে চান। কিন্তু ছুটির দিনে আয়োজন মানে একটি পরিবারের উপর কাজের চাপ অনেক বেশি। তাই সবাই রান্নার দায়িত্বটা ভাগ করে নেন। একেকজন একটি খাবার নিয়ে আসেন। এর ফলে আড্ডার সময়েও ঘাটতি হয় না, একজনের উপর অতিরিক্ত কাজের চাপও পড়ে না। আসলে আন্তরিকতার অভাব নয়। আর্থ-সামাজিক অবস্থার পার্থক্যের জন্যই আতিথেয়তার ধরনের বেশ কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।  

 

অনুপ্রেরণা মূলক কিছু উক্তি :----

1. “ কাল আমার পরীক্ষা। কিন্তু এটা আমার কাছে বিশেষ কোন ব্যাপারই না, কারন শুধুমাত্র পরীক্ষার খাতার কয়েকটা পাতাই আমার ভবিষ্যৎ নির্ধারন করতে পারেনা॥ ”—টমাস আলভা এডিসন।

2. “ একবার পরীক্ষায় কয়েকটা বিষয়ে আমি ফেল করেছিলাম কিন্তু আমার বন্ধু সব বিষয়েই পাশ করে। এখন সে মাইক্রোসফটের একজন ইঞ্জিনিয়ার আর আমি মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা॥ ”—বিল গেটস।

3. “ আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেইস্বপ্নে আস্থা ছিল। আর আমি কাজটা ভালোবাসতাম। ফেসবুক বিফল হলেও আমার ভালোবাসাটা থাকত। জীবনে একটা স্বপ্ন থাকতে হয়, সেই স্বপ্নকে ভালোও বাসতে হয়॥ ”—মার্ক জুকারবার্গ।

4. “ আমি ব্যর্থতা কে মেনে নিতে পারি কিন্তু আমি চেষ্টা না করাকে মেনে নিতে পারিনা॥ ”—মাইকেল জর্ডান।

5. “ স্বপ্নপূরণই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়। তাই বলে, স্বপ্নকে ত্যাগ করে নয়, তাকে সঙ্গে নিয়ে চলো। স্বপ্ন ছাড়া জীবন অর্থহীন॥ ”—ব্রায়ান ডাইসন।

6. “ আমি বলবনা আমি ১০০০ বার হেরেছি, আমি বলবো যে আমি হারার ১০০০ টি কারণ বের করেছি॥ ”—টমাস আলভা এডিসন।

7. “ যারা কাপুরুষ তারাই ভাগ্যের দিকে চেয়ে থাকে, পুরুষ চায় নিজের শক্তির দিকে। তোমার বাহু, তোমার মাথা তোমাকে টেনে তুলবে, তোমার কপাল নয়॥ ”—ডঃ লুৎফর রহমান।

8. “ সময় বেশি লাগলেও ধৈর্য সহকারে কাজ কর, তাহলেই প্রতিষ্ঠা পাবে॥ ”—ডব্লিউ এস ল্যান্ডের।

9. “ মাত্র দুটি পন্থায় সফল হওয়া যায়! একটি হচ্ছে সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা, ঠিক যা তুমি করতে চাও। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া॥ ”—মারিও কুওমো।

10. “ যেখানে পরিশ্রম নেই সেখানে সাফল্যও নেই॥ ”—উইলিয়াম ল্যাংলয়েড।

Razik Hasan

13 ঘণ্টা ·

২৮ জুন ১৪৯১। ইংল্যান্ডের রাজপরিবারে জন্ম নেয় রাজা সপ্তম হেনরির দ্বিতীয় পুত্রসন্তান প্রিন্স হেনরি। বড়ভাই প্রিন্স আর্থার বিয়ের মাত্র অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে অজানা রোগে। রাজা সপ্তম হেনরির মৃত্যু হলে অষ্টম হেনরি মাত্র ১৮ বছর বয়সে সিংহাসনে বসে। সময়টা ১৫০৯। রাজা অষ্টম হেনরি রাজত্ব করে আমৃত্যু পর্যন্ত। ইতিহাসে রাজা হেনরি পরিচিতি লাভ করে ছয়টি বিয়ের কারণে। এছাড়াও রোমান ক্যাথলিক চার্চ থেকে চার্চ অব ইংল্যান্ডকে পৃথক করেও সে পরিচিতি লাভ করে ইতিহাসে। বলা হয় তার ৩৮ বছরের রাজত্বকালে প্রতিদিন গড়ে ৫ জনের শিরোচ্ছেদ হত ইংল্যান্ডে। এরমধ্যে ছিল দুজন রানীও।

২৮ জুলাই ১৫৪০। রাজা হেনরি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে লেডি ক্যাথরিন হাওয়ার্ডকে। এটি রাজা হেনরির পঞ্চম বিয়ে। রাজা হেনরির বয়স তখন ৪৯ বছর আর নববধূর বয়স মাত্র ১৬। ক্যাথরিনের সাথে বিয়ের পরই হেনরি পায়ের অসুখে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। প্রচন্ড ঘা জনিত রোগ আর ব্যাথা তার নিত্য সঙ্গী হয়ে ওঠে।

থমাস ক্যল্পপার। সম্ভ্রান্ত ইংরেজ যুবক। রাজা হেনরির ব্যক্তিগত ক্যুরিয়র। যার কাজ রাজা হেনরির চিঠিপত্র নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেয়া। ইতিহাসে ক্যল্পপারের বর্ণনা পাওয়া যায় এক সুদর্শন যুবক হিসাবে।

১৫৪১ সালের বসন্তে রাজা হেনরি তার প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য চিঠি ও কিছু উপহার সামগ্রী পাঠায় তার প্রিয় ক্যুরিয়র ক্যল্পপারের মাধ্যমে। প্রথম দর্শনেই সুদর্শন ক্যুরিয়রের প্রেমে পড়ে যায় রানী ক্যাথেরিন। এর একমাস পর রাজা হেনরি রানী ক্যাথেরিনকে গ্রিনউইচ ক্যাসেলে রেখে তার ডোভারের প্রমোদ ক্যাসেলে চলে যায়। হেনরির অবর্তমানে তারা প্রথম মিলিত হয় গ্রিনউইচ ক্যাসেলে। শুরু হয় চিঠির আদান প্রদান। তাদের মিলনের সহযোগী হয়ে দাঁড়ায় রানীর বিশ্বস্থ কিছু অনুচর।

ইংল্যান্ডের আইনানুসারে, রাণীর অসতীপনাকে বলা হয় অফেন্স এগেনস্ট থ্রোন বা হাই ট্রিজন। যার শাস্তি জনসমুক্ষে শিরোচ্ছেদ। আর এই অপরাধের অপরাধী হিসাবে গণ্য হবে রাণী ও তার প্রেমিক সহ সকল সহযোগী। অপরাধটি অবশ্যই প্রমাণিত হতে হবে ইংলিশ রয়্যাল কোর্টে।

তৃষ্ণার্ত হরিণ যেমন হিংস্র পশু বা শিকারীর আতঙ্ক জেনেও নিজেকে জল পানে বিরত রাখতে পারে না, ঠিক তেমনি নিশ্চিত শিরোচ্ছেদ জেনেও রাণী ক্যাথরিন ও ক্যল্পপার তাদের মিলনে বিরত থাকতে পারে নি। বিষয়টি ক্রমেই জানাজানি হয়ে যায়। এমন কি রাজা হেনরির কানেও যায়। রাজা হেনরি তার প্রিয় ক্যুরিয়র ক্যল্পপারকে গ্রেফতার ও পুরো বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয়।

রানীর একটি চিঠি প্রমাণ হিসাবে আসে; "yours as long as life endures." এরপর কোর্টে প্রমাণিত হয় কবে, কখন, কতবার, কোথায় এবং কাদের সাহায্যে রাণী ক্যাথরিন তার প্রেমিক ক্যল্পপারের সাথে মিলিত হয়েছিল। ক্যল্পপার নিজেও টর্চার সেলে রাণীর প্রতি তার ভালোবাসার কথা স্বীকার করে নেয়। ডিউক সমারসেট তাকে জানায় "You have said quite enough, Culpeper, to lose your head."

১০ ডিসেম্বর ১৫৪১। শীতের সকালে লন্ডনের টেমস নদীর তীরে জনসম্মুখে ক্যল্পপারের শিরোচ্ছেদ হয়। তার মাথা সর্বসাধারণকে প্রদর্শনের জন্য ঝুলিয়ে দেয়া হয় লন্ডন ব্রিজে।

রাণী ক্যাথেরিনের শিরোচ্ছেদ হয় ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৫৪২। যখন তাকে জনসম্মুখে আনা হয় তখন চারিদিকে "ট্রেইটর ট্রেইটর" ধ্বনিতে মুখরিত হতে থাকে। মৃত্যুর ঠিক আগে নিয়মানুসারে রাণীকে জনগণের উদ্দেশ্য কিছু বলতে আহ্বান করা হলে রাণী ক্যাথেরিন তার জীবনের শেষ কথা গুলো উচ্চারিত করে এই বলে, "প্রিয় ইংল্যান্ডবাসী, আজ আমি এখানে এসেছি মরতে, আমি এসেছি মরতে ইংল্যাণ্ডের রাণী হিসাবে। কিন্তু আমি অনেক সুখী হতাম যদি আজ মরতে পারতাম ক্যল্পপারের স্ত্রী হিসাবে।"

================

Tamanna Kodor

সমাজতন্ত্রী পুরুষের নারীভাবনা

নারীবাদের প্রবক্তা সিমোন দ্য বোভোয়ার ১৯৪৯ সালে যখন রচনা করেনদ্য সেকেন্ড সেক্সতখনো তিনি নিজেকে নারীবাদীর বদলে সমাজতন্ত্রীই বলতেন। কিন্তু জীবনের শেষ বেলাটিতে তিনি উপলব্ধি করেন; না, সমাজতন্ত্রও নারীকে মুক্তি দিতে অক্ষম।
 ১৪ জুন ১৯২৮ সালে জন্ম নেন চে গুয়েভারা। মৃত্যু বরণ করেন অক্টোবর ১৯৬৭ এ। বিপ্লবের প্রতীক, সাম্রাজ্যবাদ শোষক শ্রেণীর প্রতি কঠোর সমাজতন্ত্রী  বলিভিয়ার গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেবার সময় শিশুকন্যা অ্যালেইদাকে চিঠি লিখেন- ‘ আমার ছোট্ট অ্যালেইদা। তুমি অবশ্যই বড় হয়ে উঠবে এবং মাকে বাড়ির কাজে সাহায্য করবে। স্কুলে কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে না্এমনটি। পুত্র এরনেস্তো গুয়েভারাকে লিখেন, ‘তুমি বেড়ে ওঠ। বেড়ে ওঠার পরও যদি যুদ্ধ চলতে থাকে তবে আমি আর তুমি একসঙ্গে যুদ্ধ করবো। কিন্তু যদি যুদ্ধ থেমে যায় তবে আমি তোমাকে নিয়ে চাঁদে ছুটি কাটাতে যাবো।
  আর নয়টা দশটা সাধারণ পুরুষতান্ত্রিক বাবার চিঠি লিখার মতোই। অ্যালেইদা বড়ো হয়ে বাবার চিঠির কথা ভেবে পীড়িত হতেন। তিনি ভেবেছেন তার বাবা তাকে রান্নাঘরে বন্দী করে রাখতে চেয়েছেন আর ভাইকে নিয়ে চাঁদে বেড়াবার কথা ভেবেছেন। বাবা হয়তো ভাইটিকেই বেশী ভালোবাসতেন। তবে কিউবার মন্ত্রীসভার কক্ষে গিয়ে তিনি যখন দেখতে পান, মন্ত্রীসভার কেবিনেটে যেখানে চেবসতেন সেখানে টেবিলের কাঁচের নিচে টি ছবি, তার টিই চেএর সঙ্গে অ্যালেইদা তখন অ্যালেইদা ভাবেন বাবা তাকেই বেশী ভালোবাসতেন।
 বেশী ভালোবাসলেই মানুষকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দেয়া হয়ে যায় না। মানুষকে মানুষ হিসেবে ভাবার জন্যে থাকতে হয় শ্রদ্ধাবোধ কন্যা অ্যালেইদার প্রতি বাবা চেএর এমন অনুভূতি ছিলো না। ছিলো ভালোবাসা। লিঙ্গবৈষম্যের ধারণা থেকে বেরোতে পারলে চেনিশ্চয়ই সম্পূর্ণ বিপরীত ধারার দুটি চিঠি তার মেয়ে সন্তান আর ছেলে সন্তানকে লিখতে পারতেন না। নিজের মত চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে স্বৈরতন্ত্র, যেখানে শ্রদ্ধা থাকে না। মানুষকে মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হলে, মর্যাদা দিতে হলে ভালোবাসার সাথে অবশ্যই শ্রদ্ধার বিষয়টিও থাকতে হবে।কেমন ছিলো

সুত্র - ওয়েব সাইড

এক দেশে এক রাজা ছিল। একদিন তিনি রাস্তায় বের হয়ে দেখলেন যে সেখানে একটি বড় পাথর পরে আছে এবং এজন্য রাস্তায় হাটতে সমস্যা আছে। তিনি সেই পাথরের পেছনে লুকিয়ে রইলেন এটি দেখতে যে সেটি কেউ সরায় কিনা। দেশের সবচেয়ে ধনী কিছু ব্যবসায়ী পাথরটি দেখার পর তারা না সরিয়ে একটু ঘুরে হেটে গেল।
  এভাবে অনেকেই সেখান দিয়ে হেটে গেল এবং অনেকে আবার এই পাথর না সরানোর জন্য রাজাকে উচ্চ স্বরে গালি দিল। কিন্তু তাদের কেউ পাথরটি সরাতে কোন চেষ্টাই করলো না।
  একদিন এক কৃষক সেই পথ দিয়ে হাটছিল এবং তার মাথায় ছিল অনেক শাকসবজি। বড় পাথরটি দেখে কৃষকটি প্রথমে তার শাকসবজি মাথা থেকে মাটিতে নামিয়ে রাখলো এবং এরপর পাথরটি রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা করলো। অনেক চেষ্টার পর সে সফল হল।
  নিজের শাকসবজির কাছে যাবার পর কৃষক অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো, যেখানে পাথরটি ছিল সেখানে একটি থলে পরে আছে। থলের ভেতর অনেক স্বর্ণ মুদ্রা এবং সেই সঙ্গে রাজার কাছ থেকে একটি চিঠি। চিঠিতে লেখা ছিল যে এই স্বর্ণ মুদ্রা গুলো তার জন্য যে এই পাথরটি সরাবে।
  গল্পের শিক্ষণীয় বিষয়ঃ জীবনে প্রতিটি সমস্যা আসলে ভাল কিছুর সুযোগ হতে পারে। তবে যারা অলস তারা এ নিয়ে অভিযোগ করে এবং কিছুই করার চেষ্টা করে না। কিন্তু যারা ভাল কিছু করার চেষ্টা করে এবং সেই সমস্যার মোকাবেলা করে তারা তাদের ও অন্যদের জন্য ভাল কিছুর সুযোগ সৃষ্টি করে।

==========

 

ৃৃৃৃৃৃৃৃ

বাঙালি চরিত্র সম্পর্কে হুমায়ুন আজাদ :
  বাঙালি না ভেবে লাফ দেয়, এবং লাফ দেয়ার পর বার বার অনুশোচনা করে। প্রতিটি বাঙালির জীবন অসংখ্য অনুশোচনার ভান্ডার। বাঙালি যা হ’তে চায়, সাধারণত তা হয় না; এবং যা হয়, তা সাধারণত হ’তে চায়নি। তাই জীবন কাটে অনুশোচনায়। বাঙালি নিজেদের মনে করে অন্য জাতিদের থেকে উৎকৃষ্ট;- অন্য সমস্ত জাতিকেই দেখে পরিহাসের চোখে, এবং নিজেদের সব কিছুকে মনে করে অন্যদের সবকিছুর চেয়ে ভালো। তাই বাঙালি জাতিগর্বী। তার চোখে চীনা-জাপানি হাস্যকর, পাঠানপাঞ্জাবি উপহাস্যকর; পশ্চিমের মানুষেরা প্রায় অমানুষ। তবে এদের মুখোমুখি বাঙালি অসহায় বোধ করে, ভোগে হীনমন্যতায়। বাঙালি ভিক্ষা করতে লজ্জা বোধ করে না। দরিদ্ররা শুধু নয়, বাঙালি ধনীদের মধ্যেও রয়েছে ভিখিরির স্বভাব। বাঙালির স্বভাবের কোনো দৃঢ়তা নেই; বাঙালির প্রিয় দর্শন হচ্ছে বেশি বড়ো হোয়ো না ঝড়ে ভেঙে পড়বে, বেশি ছোটো হোয়ো না ছাগলে খেয়ে ফেলবে;- তাই বাঙালি হ’তে চায় ছাগলের সীমার থেকে একটু উচ্চ,- নিম্নমাঝারি।

বিশ্বের আধূনিক উদ্ভাবনগুলোতে বাঙালির কোনো ভূমিকা নেই। কোনো তত্ত্ব ও চিন্তার জনক নয় বাঙালি; বাঙালির সমস্ত তত্ত্বই ঋণ করা। বাঙালি সংঘ গড়ে তুলতে পারে না, তবে ভাঙতে পারে; এক সংঘকে অল্প সময়ের মধ্যে বহু সংঘে বিশ্লিষ্ট করার প্রতিভা রয়েছে বাঙালির। বাঙালি একদিন যা গ’ড়ে তোলে কিছুদিন পর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে তাতেই। বাঙালি যে-সংঘের প্রধান হ’তে পারে না, সে-সংঘ তার নিজের গড়া হ’লেও তাকে সে আর প্রয়োজনীয় মনে করে না। বাঙালি আমরণ প্রাধান্যে বিশ্বাস করে। তাই বাঙালি গণতান্ত্রিক নয়। বাঙালি সুবিধাবাদী; নিজের সুবিধার জন্যে সব করতে পারে।

======

শিল্পপতি রতন টাটা’র ট্যুইট থেকে….Shamim Foyez

জার্মানী একটি খুবই শিল্পোন্নত দেশ । আমরা অনেকেই চিন্তা করি , এখানকার মানুষ বিলাসী জীবন যাপন করেন । যখন জার্মানী’র হামবুর্গ শহরে আসি তখন আমার ‘ কলিগ ‘ আমাদের নিয়ে খাবারের জন্য একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে । সেটিতে বেশীর ভাগই টেবিলই ছিল ফাঁকা । একটি টেবিলে এক তরুন দম্পতি যুগল তাদের মিল খাচ্ছিল । মাত্র দুটি ডিশ ও দুই ক্যান বীয়ার । আমি অবাক এত সাধারন মানের খাবার কি করে রোমান্টিক হতে পারে ! ভাবছি মেযেটি না কৃপন সঙ্গীটিকে ছেড়ে চলে যায় । অপর এক টেবিলে কযেকজন বৃদ্ধা খাবারের অর্ডার দিয়ে অপেক্ষা করছিলেন । যেহেতু আমরা ক্ষুদার্থ ছিলাম , আমাদের স্থানীয় ‘ কলিগ ‘ বেশী করে খাবারের অর্ডার দিয়েছিলেন । তাই যখন আমরা খাবার শেষ করলাম , তখন প্রায় এক তৃতীয়াংশ খাবার টেবিলে পড়ে রইল । এক বৃদ্ধা এসে ইংরাজীতে কিছু কথা বললেন । বোঝা গেলো তিনি আমাদের এই খাদ্য ওয়েস্টিস করায় খুবই অখুশী । আমি বললাম ,  আমরা সব খাবারের টাকা দিয়েছি । কথাটি শুনে সব বৃদ্ধারা ক্ষিপ্ত হয়ে , তাঁদেরই একজন কাউকে ফোন কররেন । কিছুক্ষনের মধ্যেই ইউনিফর্ম পরা এক Social Security organization সদস্য উপস্থিত হলেন । তিনি অভিযোগ শুনে আমাদের 50 Euro জরিমানা কররেন । আমরা নিশ্চুপ রইলাম ।
  তিনি বললেন , “ যতটুকু খেতে পারেন , সেই পরিমানই অর্ডার দেবেন । টাকা আপনার . কিন্তু খাবার সমাজের । পৃথিবীতে বহু যায়গা আছে , যেখানে মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে । “ ধনী দেশটির এই চিন্তা , আমাদের লজ্জিত করলো !

============

ঐতিহাসিক সুজিত আচার্য ‘বাংলায় ইসলাম ধর্মের আদিপর্ব’ নামক রচনায় বলেছেন, এ দেশে ইসলাম ধর্ম বিস্তার লাভ করেছিল তরবারির জোরে নয়, বরং সুফি মতবাদী ধর্ম প্রচারকদের দ্বারা। তাঁদের মতবাদের সঙ্গে এই দেশের শোষিত নিম্নবর্ণের হিন্দুরা তাদের সহজিয়া মতবাদের অনেক সামঞ্জস্য খুঁজে পেয়েছিল। ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের অনেক আগেই  বৌদ্ধধর্মের সহজিয়া মতবাদ ও বেদবিরোধী লোকায়ত দর্শন জনমনে গভীরভাবে স্থান করে নিয়েছিল।

বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক মহাপুরুষ শ্রীচৈতন্য (জন্ম ১৪৮৬ সাল) এবং কবি চণ্ডীদাস ছিলেন সহজিয়া মতবাদের সগুণ ধারার প্রতিনিধি। শ্রীচৈতন্য নিজে ব্রাহ্মণ হলেও জাতিভেদের বিরুদ্ধে ছিলেন এবং তাঁর অনেক মুসলমান শিষ্য ছিল। কবি চণ্ডীদাসই বলেছিলেন, ‘সবার উপর মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই।’ সহজিয়া নির্গুণ ধারার প্রতিনিধি ছিলেন বাউল সাধকেরা। তাঁদের গানে কিছু আধ্যাত্মিক বিষয় থাকলেও মানবিক দিকটাই ছিল প্রধান। এবং তা ছিল হিন্দু-মুসলমানের মিলিত সংগীত সাধনা। বাউল সংগীতের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘এই গানের ভাষায় ও সুরে হিন্দু-মুসলমানের কণ্ঠ মিলেছে। কোরআন-পুরাণ ঝগড়া করেনি। (সংকলন হারামনির ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য)।

ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র কৃষক সংগ্রাম (যথা অষ্টাদশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধজুড়ে ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ), ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ, নীলকরবিরোধী কৃষক বিদ্রোহ, উনিশ শতকের প্রজা বিদ্রোহ—এই সবই ছিল এই দেশের সাধারণ কৃষক ও শ্রমজীবী হিন্দু-মুসলমানের মিলিত সংগ্রাম।

উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে হিন্দু পুনর্জাগরণবাদের প্রবাহ দেখা দিয়েছিল, যার প্রধান প্রবক্তা ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে প্রায় একই সময় নবাব আবদুল লতিফ প্রমুখের নেতৃত্বে মুসলিম জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ঘটে, যাঁরা জাতীয়তাবাদের উৎস খুঁজতেন দেশের বাইরে আরব, ইরান ও তুরস্কে। নবাব আবদুল লতিফ মুসলমানদের ইংরেজি শিক্ষার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তিনি মোহামেডান সোসাইটি গঠন করেছিলেন, যেখানে ইংরেজি ভাষার চর্চা হতো, কিন্তু বাংলা ভাষা নিষিদ্ধ ছিল। তখন থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তথাকথিত অভিজাত মুসলমানরা ঘরে উর্দু বলত। পরবর্তী সময়ে ভাষা আন্দোলন সেই আভিজাত্য ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল।

এসময় পাকিস্তান আন্দোলনের জোয়ারে সাময়িকভাবে হলেও ভেসে গিয়েছিল এই দেশের মুসলিম জনগণ। তারা ভুল বুঝেছিল। কৃষক ভেবেছিলেন জমিদারি শোষণ থেকে মুক্তি পাবেন। মধ্যবিত্ত ভেবেছিল তাদের শ্রেণিগত উন্নতি হবে। দ্রুতই তাদের স্বপ্নভঙ্গ ঘটেছিল।

ইংরেজ আমলে ফরায়েজি আন্দোলন ইতিহাসবিখ্যাত। ওয়াহাবি নেতা শহীদ তিতুমীর মুসলমান কৃষককে ধর্মশিক্ষা দিতেন, আরবি-ফারসি শব্দে নাম রাখা এমনকি দাড়ি রাখার গুরুত্বও তুলে ধরেছিলেন। ফরায়েজি  নেতা দুদু মিয়া পোশাকপরিচ্ছদে হিন্দু থেকে মুসলমানদের স্বতন্ত্র হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি ধুতিকে হিন্দুর পোশাক বলে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তাদের আন্দোলন জনপ্রিয় হয়েছিল এসব কারণে নয়। তাদের জমিদারবিরোধী সংগ্রামেই হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সব কৃষক ও গরিব মানুষ যোগদান করেছিল।

ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, আমাদের সংস্কৃতিতে ধর্মীয় চেতনা কখনোই প্রাধান্য বিস্তার করেনি। বরং অসাম্প্রদায়িক চেতনা, মানবিক মূল্যবোধ ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী।

হায়দার আকবর খান রনো:

 

আধুনিকতা থাকে মগজে, চিন্তায়, চেতনায়, বিজ্ঞানমনস্কতায়


জব্বার হোসেন

পুরুষের নষ্টামি, ভ্রষ্টামি, বদমাইশি, বজ্জাতিকে প্রশ্রয় দেয় সমাজ। তাদের অন্যায়, অপরাধ লুকোয়। ইভটিজিং তেমনি এক ধরনের অসভ্যতা। ইভটিজিংয়ের মতো অন্যায়, অসভ্যতাকে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট না বলে, রোমান্টিসাইজ করে ইভটিজিং বলে।

  চোখ টিপ দেয়া থেকে শুরু করে নিতম্বে চাপ দেয়া- সবই ইভটিজিংয়ের আওতাভুক্ত। সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট বলতে তবে আপত্তি থাকবে কেন? অথচ অনেকের আপত্তি তো আছেই, আছে রীতিমতো বিতর্কও। যদি প্রশ্ন করা হয়, পুরুষেরা এ ধরনের আচরণ কেন করে? তবে হাজারটা উত্তর পাওয়া যাবে। একটা নির্দিষ্ট বয়সের ছেলেরা করে, সে রকম কিছু না দুষ্টুমি, পরিবারের অশিক্ষা, এটা ছেলেদের মানসিক সমস্যা, বয়সের দোষ, এক ধরনের ফান- এমন অসংখ্য উত্তর পাওয়া যাবে, যায়। যার একটিও গ্রহণযোগ্য নয়।

 

পুরুষেরা ‘পুরুষ’। তারাই শ্রেষ্ঠ, উন্নত, উত্তম- এমন ধারণা তো তাকে দীর্ঘদিন দিয়ে আসছে এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ।  নারীকে চায় সে দমন করতে, অবদমনের মধ্যে রাখতে। সে নারীর মেধা, যোগ্যতা, প্রতিভাকে ভয় পায়। যদি অধীনস্ততা না মানে পুরুষের, তাহলে কী হবে! কাকে সে ঘরে রাখবে, যৌনদাসী বানাবে, নির্যাতন করবে, নিপীড়ন করবে।

আমাদের বাস যে তথাকথিত ভদ্রলোকের সমাজে, তা আদৌও কতটা ‘ভদ্র’, ‘শালীন’, ‘শোভন’- তা নিয়ে বিতর্ক আছে। আছে আপত্তি। সমাজ আসলে উৎকট পুরুষতান্ত্রিকতার অধীনেই আছে। পুঁজিবাদের কঠিন, কঠোর খপ্পরেই বসবাস করছে। যে সমাজে এখনো ফতোয়া চলে গ্রামে গ্রামে, সে সমাজ কেমন সমাজ! ডিজিটাল যুগে হলেও আমরা আদতে বাস করছি মধ্যযুগে। দালান কোঠা, শপিংমল, লেটেস্ট মডেলের গাড়ি, দামি আসবাব পত্র এসব আধুনিকতা নয়। আধুনিকতা থাকে মগজে, চিন্তায়, চেতনায়, বিজ্ঞানমনস্কতায়।

 

সত্যি বলতে, সমাজের অনেকাংশই এখনো নারীবিরোধী। লোকে তো আসলে চারপাশ থেকেই শেখে। শেখে একেবারে শৈশব থেকে। সমাজে নারী-পুরুষের সুন্দর সম্পর্ক নেই। বরং বৈষম্য আছে, বিষমভাবে। ছেলেমেয়েদের শৈশব থেকেই আলাদা করে রাখি আমরা। এক দলকে বোরকা পরাই, বন্দি করি, অন্য দলকে মুক্ত, স্বাধীন রেখে। মিশতে দেই না তাদের।  ছেলে এবং মেয়েতে স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ, সুন্দর সম্পর্ক না থাকাতে, নিষেধ থাকাতে, ছেলেরা বিকৃত উপায়গুলোই আশ্রয় করে কৌতূহল নিবারণ করতে। ফলে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয় না। বরং বিকৃতিই বাড়ে।

 

বাংলা ছবিতে প্রেম হয় ইভটিজিং থেকে। ইভটিজারদের আদর করে, আহ্লাদ করে, প্রশ্রয় দিয়ে পাড়ার ‘রোমিও’ বলি আমরা। আসলে পৃষ্ঠপোষকতা করি আমরা পুরুষতান্ত্রিকতার। অথচ মেয়েদের লুকোতে বলি, চাদর পরতে বলি, বোরখা পরতে বলি, অযৌক্তিকভাবে।  মেয়েরা কেবল আড়ালে থাকবে, আর বাঁচাও বাঁচাও বলবে- আর কতকাল? প্রতিকার হবে না এই পাশবিকতার???

 

@শিক্ষনীয় গল্প @
  একদিন প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র অধ্যাপক একটি সিরিয়াস টপিক নিয়ে তার ক্লাস শুরু করেছেন I যেই মুহূর্তে তিনি ব্ল্যাক বোর্ডের দিকে ফিরেছেন, তখন একটা ছেলে শিস দিল I
  তিনি ছাত্রদের দিকে ফিরলেন, পুরো ক্লাস দৃষ্টি প্রসারিত করে লক্ষ করলেন এবং কে শিস দিয়েছে তার নাম জানতে চাইলেন I কেউই এর দায় স্বীকার করলো না I

অধ্যাপক শান্তভাবে নিজের কলমটি বুক পকেটে রাখলেন, নিজের ব্যাগটা হাতে নিলেন এবং ছাত্রদের বললেন --the lecture ends here and that was enough for the day ...
  -বলে তিনি ক্লাসের দরজার দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন...কিন্তু ছাত্ররা এর জন্য কিছুমাত্র মনোক্ষুন্ন হলো না I
  অধ্যাপক তখন অকস্মাৎ দরজা থেকে ফিরে আবার ক্লাসে চলে এলেন, নিজের ব্যাগটি টেবিলে রেখে বললেন-- আমি আজ ক্লাসের বাকি সময়টুকু তোমাদের সাথে একটা বিষয় শেয়ার করবো I

এ কথা শুনে প্রত্যেকটি ছাত্র বেশ আগ্রহ প্রকাশ করলো I

অধ্যাপক তার গল্প শুরু করলেন ...
  গতকাল রাতে আমি ঘুমাবার অনেক চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছিল না I তখন আমি ভাবলাম, অযথা  বিছানায় গড়াগড়ি করে লাভ কি ? তার চেয়ে আমি যদি এখন আমার গাড়িতে পেট্রোলটা ভরিয়ে নেই, তাহলে কাল সকালে আমার অনেকটা সময় বাঁচবে I
  গাড়ির ট্যাংকিতে পেট্রল ফুল করার পর আমি গাড়ি নিয়ে উদ্দেশ্যবিহীনভাবে রাস্তায় ঘুরছিলাম এবং রাতের ট্রাফিক ফ্রি শহরের রাস্তায় মজা উপভোগ করছিলাম I হঠাৎ রাস্তার মোড়ে দেখলাম অত্যন্ত আকর্ষণীয়  সুন্দরী একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে I মেয়েটিকে দেখে মনে হচ্ছিলো সে হয়তো এইমাত্র কোন পার্টি থেকে ফিরছে I সৌজন্যবোধের খাতিরে আমি গাড়ি নিয়ে মেয়েটির কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম-- আমি কি আপনাকে কোন সাহায্য করতে পারি ?
  মেয়েটি অত্যন্ত বিনীতভাবে বললো—স্যার, খুবই উপকার হয়, যদি অনুগ্রহ করে আমাকে আমার বাড়িতে পৌঁছে দেন I
  বিনয়ী অনুরুধে আমি মেয়েটির কথায় সম্মত হয়ে গেলাম I তাছাড়া আমি আরো ভাবছিলাম যে বিনিদ্র রজনীর একটা মুহূর্ত এক সুন্দর মেয়ের সান্নিধ্যে কেটে গেলে মন্দ কি I
  সে গাড়ির সামনের সিটে অর্থাৎ আমার পাশের সিটে বসলো I আমরা কথা-বার্তা শুরু করলাম I কথা বলে মনে হল মেয়েটি খুব বুদ্ধিমতী ও মেধাবী এবং অনেক বিষয় সম্পর্কে মেয়েটির অগাধ জ্ঞান রয়েছে, যেটা আজকের যুব শ্রেণীর মধ্যে বিরল I
  যখন আমরা মেয়েটির ঠিকানায় পৌঁছলাম, মেয়েটি আমার courteous nature আর ব্যবহারের খুব তারিফ করে জানালো যে সে নাকি আমার প্রেমে পড়ে গেছে I আমিও মেয়েটির সৌন্দর্য্ আর মেধার তারিফ দকরলাম I আমি মেয়েটিকে আমার কর্মস্থল সম্পর্কে সব জানালাম  I
  মেয়েটি আমার ফোন নাম্বার চাইলো এবং আমিও সেটা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দিয়ে দিলাম I মেয়েটি আমাকে জানালো যে তার একটা ছোট ভাইও নাকি আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্লাসের ছাত্র এবং আমাকে অনুরোধ করলো, আমি যেন তার ভাইয়ের প্রতি বিশেষ কেয়ার নিই I
  আমি তখন মেয়েটির ভাইয়ের নাম জিজ্ঞেস করলাম I
  এর উত্তরে মেয়েটি বললো -- নাম জানা লাগবে না, আমার ভাইয়ের একটা বিশেষ গুনের জন্য আপনি ওকে সহজেই সনাক্ত করতে পারবেন I আমার ভাই খুব ভালো শিস বাজাতে পারে I
  যখন অধ্যাপক এই কথাটি বলছিলেন, তখন সমস্ত ক্লাসের চোখের দৃষ্টি গিয়ে একটা নির্দিষ্ট ছেলের উপর আবদ্ধ হয়ে গেল I শিস দাতা ছেলেটি সহজেই সনাক্ত হয়ে গেল I

অধ্যাপক তখন সেই ছেলেটির কাছে গিয়ে বললেন-- আমি কিন্তু গাধার পিঠে বসে আমার Ph D ডিগ্রীটা লাভ করি নি!

 

প্রতিক্রিয়াশীল বনাম প্রগতিশীল

Masud Rana

প্রগতি বা প্রগতিশীলতা কী? সাধারণভাবে প্রগতি শব্দের অর্থ হচ্ছে অগ্রগতি বা উন্নতি। অর্থাৎ, বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়া। আর, যে বা যা প্রগতির ধারক, সে বা তাই হচ্ছে প্রগতিশীল।

রাজনীতিতে 'প্রগতিশীল' কথাটার অর্থ হচ্ছে রক্ষণশীলতা অতিক্রম করে সংস্কার কিংবা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সমাজের উন্নয়নের সহায়ক বা সমর্থক। অর্থাৎ, 'প্রগতিশীল' ধারণাটির মধ্যে আছে বর্তমানের সীমাবদ্ধতার স্বীকৃতি এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনার আশাবাদ।

সংজ্ঞানুসারে, প্রতিক্রিয়াশীলেরা সংস্কার ও বিপ্লবের বিরুদ্ধ শক্তি, যারা সংস্কার কিংবা বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন বিধি-বিধান রচে ইতিহাসের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে।

------------

মানুষের জীবনী শক্তির অধিকাংশই শেষ হয়ে যায় শুধু পাশের মানুষের নেগেটিভ কথা শুনতে শুনতে। লক্ষ্য করে দেখবেন, আপনি যখন কোন ভালো কাজ করতে যাচ্ছেন, তখন একগাদা মানুষ জড় হয়ে আপনাকে নিরুৎসাহিত করবে। একটি কাজের শুরুতে অন্তত শতবার আপনাকে শুনতে হবে যে, এটা তুমি পারবে না, তোমার দ্বারা হবে না, তোমার দ্বারা সম্ভব না, এটা খুব কঠিন, এটা খুব অসম্ভব, এভাবে হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি। ফলে যে উদ্দিপনা নিয়ে আপনি কাজ শুরু করতে চেয়েছিলেন তার ২/৩ অংশই শেষ হয়ে যায়। মনে রাখা খুব জরুরী তা হল, কেউ যখন বলবে যে তুমি এটা পারবে না। তখন সে আসলে তার নিজের অপারগতাকেই উপস্থাপন করে। সে নিজে কখনো কাজটি করতে পারেনি বলেই সে বিশ্বাস করে আপনিও পারবেন না।

যদি সত্যিই ভালো কিছু করতে চান তবে এই ধরণের মানুষকে উপেক্ষা করার মত ক্ষমতা আপনার থাকতে হবে। এটা খুব জরুরী। যত তাড়াতাড়ি এই নেগেটিভ

-------------------

‘শুয়োরের বাচ্চাদের’ অর্থনীতি

শিরনাম দেখে ঘাবড়াবেন না। কাউকে গালি দেয়া  হয় নাই। ড. আকবর আলি খানের ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ বইয়ের একটা প্রবন্ধের নাম ওটা। সেই প্রবন্ধে তিনি বৃটিশ আমলের আসানসোলের মহকুমা প্রশাসক মাইকেল ক্যারিটের কথা লিখেছেন। মাইকেল ক্যারিট তার সাথে এক পাঞ্জাবী ঠিকাদারের কথোপকথনের বর্ননা করেছেন এভাবে- সেই পাঞ্জাবি ঠিকাদার বলেছিল ‘হুজুর এদেশে তিন ধরনের মানুষ আছে। যারা ঘুষ খায় না। যারা ঘুষ খায় এবং কাজ করে। আর তিন নম্বর দলে আছে কিছু শুয়োরের বাচ্চা, যারা ঘুষও খায় কিন্তু কাজ করে দেয় না।’ ‘শুয়োরের বাচ্চাদের’ অর্থনীতি হলো এটাই। মানে টাকা নিয়েও কাজ না করার অর্থনীতি।

দুর্নীতির ইঁদুর ফসল ঘরে ঢোকার আগেই সবটা সাবাড় করে ফেলে। অথচ সরকার সিস্টেম লস ঠেকাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয় না। সরকার দুর্নীতি দমনের পেছনে পয়সা খরচ করে না। সরকার টাকা পাচারকে হালকাভাবে নিতে শিখে গেছে। তাই ৭৫ হাজার কোটি পাচার হয়ে গেলেও সরকারের গায়ে লাগে না, অথচ ভ্যাটের পরিমাণ কমাতে গেলেই গা শিউরে ওঠে।

চিকিৎসার মান খারাপ থেকে খারাপ হয়েছে। শিক্ষার মান নিয়ে কথা তুললে কপাল চাপড়ে কাঁদতে বসতে হবে। জীবনযাপনের খরচ বেড়েছে। তবু সরকারের খরচ বাজেট থেকে বাজেটেএ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আমাদেরকে শুয়োরের বাচ্চাদের অর্থনীতি পেয়ে বসেছে।

============

ভাত রান্নায় এত বড় ভুল করেন? মৃত্যু কিন্তু কড়া নাড়ছে

স্রেফ চাল সেদ্ধ করেই তৈরি হয়ে যাচ্ছে ভাত। প্রতিদিন সেই ভাত খাচ্ছেনও। অথচ আপনি জানেনও না যে, প্রতিদিন অল্প অল্প করে আপনার কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। ব্রিটেনের কুইনস ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের গবেষকরা জানাচ্ছেন, চাষের কাজে বহু কীটনাশক ও রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়। তাই রান্না করার আগে খুব ভাল করে চাল না ধুয়ে রান্না করলে মারাত্বক বিষ প্রবেশ করে শরীরে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, এই বিষ রোধ করা একেবারেই সম্ভব নয়। তবে এর প্রভাব কমানো যেতে পারে। তাই রান্না করার আগে সারা রাত চাল ভিজিয়ে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সারা রাত চাল ভিজিয়ে রাখলে রাসায়নিক, টক্সিন এবং আর্সেনিকের মাত্রা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

-------------

পৃথিবীর সবচেয়ে বিষধর সাপের কামড়ে হাতি মারা যায়, কিন্তু একটা প্রাণী মরে না।:----

প্রাণীটির নাম ঘোড়া। সাপের কামড়ে কোনদিন ঘোড়া মরে না। তিনদিন অসুস্থ থাকে। তারপর সুস্থ হয়ে যায়। আর এই ঘোড়া থেকে আসে দুনিয়ার সব সাপের বিষের প্রতিষেধক "anti venom".

কোন একটি সাপ, ধরুন কিং কোবরা’র anti venom তৈরি করতে হলে যা করতে হয় তা হল, ওই সাপের বিষ ঘোড়ার শরীরে ঢুকিয়ে দিতে হয়। একটু বেশি পরিমাণ ঢোকালেও সমস্যা নেই। ঘোড়ার কিছু হবে না। কিছু হবে না বলতে, ঘোড়া মরবে না।

ঘোড়া তিনদিন অসুস্থ থাকবে। এরপর সুস্থ হয়ে যাবে। এই তিনদিনে ঘোড়ার রক্তে ওই সাপের বিষের anti venom তৈরি হয়ে যাবে।এবার ঘোড়ার শরীর থেকে কিছু পরিমাণ রক্ত নিয়ে তার লাল অংশ আলাদা করা হয়। সাদা অংশ অর্থাৎ ম্যাট্রিক্স থেকে অ্যান্টি ভেনাম আলাদা করা হয়। এরপর তা প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে পাঠানো হয়।

মানুষকে সাপে কামড়ালে সরাসরি ইনজেকশন দিয়ে পুশ করা হয়।

গাদা গাদা অ্যান্টি ভেনাম প্রস্তুতকারক কোম্পানি আছে। পালের পর পাল ঘোড়া তাদের মূল সম্বল। ঘোড়া না থাকলে সাপের কামড় খেয়ে মানুষের বাঁচার সম্ভাবনা থাকতো না। এক ছোবলে ডায়রেক্ট ওপরে।Farzana Ahmed

 

 

ফেসবুক = কোকেন’

চিররঞ্জন সরকার

ফেসবুক নয় আসলে নিজেকে নিয়ে মেতে থাকার এবং অন্যদের মাতিয়ে রাখার এমন সহজ উপায় আর দ্বিতীয়টি নেই বলেই আমরা এত আসক্ত। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক বছর তিনেক আগের একটি গবেষণায় দেখেছিলেন, নিজেকে নিয়ে কথা বলতে, নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতে মানুষ এতটাই ভালোবাসে যে সেটা করতে গিয়ে যদি কিছু আর্থিক ক্ষতি হয়, তাহলেও আপত্তি থাকে না।

কোকেন বা সেরকম কোনো নেশার দ্রব্যে মস্তিষ্কের যে অংশ জেগে ওঠে, নিজের সম্বন্ধে কথা বলতে গেলে মানুষের নিজেকে নিয়ে কথা বলতে গিয়েও মস্তিষ্কের সেই অংশই সক্রিয় হয়।

কে কোথায় কী খেল, কী রান্না করল, কী জামা কিনল, কোথায় বেড়াতে গেল, কীভাবে ঘুমোচ্ছিল, মানে সব ফেসবুকে তুলে দেওয়ার পেছনে কোনো যুক্তিবোধ থাকতে পারে? কিন্তু তারপরও আমরা সবাই প্রায় এমন হাজার হাজার পোস্ট দিচ্ছি ফেসবুকে৷। ‘লাইক’, ‘কমেন্ট’ও জুটছে দেদার। অনেকে কিছু না ভেবে নতুন কোনো পোস্ট দেখলেই লাইক দেয়, ওটা স্বভাব। এভাবে সারাক্ষণ ‘আমিত্ব’ নিয়ে মেতে থাকতে পারার মধ্যে দুর্দান্ত উত্তেজনা।

এতদিন মনে করা হত যে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের জগতের পরিধি বাড়ে। ক্ষুদ্র ভাবনা ছেড়ে বৃহৎ চিন্তার খোরাক পায় মানুষ। কিন্তু বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা অন্য কিছুর ইঙ্গিত দেয়। এক সমীক্ষায় প্রকাশ, ফেসবুক ব্যবহার করলে ক্ষুদ্রমনা হয়ে ওঠেন মানুষ। আমাদের মতের সঙ্গে মেলে এমন তথ্য ও মতামতই আমরা ফেসবুকে খুঁজি।  বিরুদ্ধ মত হলে অধিকাংশ মানুষই তা এড়িয়ে চলেন। গবেষকরা বলছেন, ‘কনফারমেশন বায়াসনেস’–এর কারণেই এমনটা হয়। মানে এমন কিছু বিষয়, যা আপনি প্রমাণ করতে চাইছেন। কিন্তু হাতের কাছে যুক্তি খুব কম বা জোরালো নয়। এই অবস্থায় সবচেয়ে সহজ হবে বিরুদ্ধ যুক্তিগুলো এড়িয়ে যাওয়া।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার, এর প্রতি আসক্তির ভালোমন্দ নিয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। এ ব্যাপারে ব্যাপক গবেষণা-সমীক্ষারও প্রয়োজন রয়েছে। সময় কিন্তু দ্রুতই ফুরিয়ে যাচ্ছে। ব্যাধি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগেই প্রয়োজনীয় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে জঙ্গিবাদের মতো ফেসবুক-আসক্তিও জাতির জন্য সীমাহীন ক্ষতির কারণ হতে পারে।

আত্মঘাতী জঙ্গিবাদ:

‘মৌলবাদী’ রাজনীতিতে যারা বিশ্বাস করেন তাদের কেউ কেউ মনে করেন নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় তাদের পক্ষে রাজনৈতিক লক্ষ হাসিল করা সম্ভব হবে না; তাই রাজনৈতিক লক্ষ হাসিল বা ক্ষমতা দখল করতে হবে সন্ত্রাসের মাধ্যমে। একথা শুধু মৌলবাদী রাজনীতির ক্ষেত্রেই নয়, বামধারার রাজনীতির ক্ষেত্রেও এ সন্ত্রাস-নির্ভরতা দেখা গেছে, তাদের রাজনৈতিক লক্ষ অর্জনের মাধ্যম হিসেবে।

১৯৭৮ সালে আফগানিস্তানে যখন বামপন্থী পিপলস ডেমোক্রাটিক পার্টি ক্ষমতায় আসে তখন এ সরকারকে উৎখাত করার জন্য মুজাহিদিন বাহিনী গড়ে উঠে। তৎকালীন আফগান প্রেসিডেন্ট নূর মোহাম্মদ তারাকি সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভকে মুজাহিদিন বাহিনীকে দমন করার জন্য সৈন্য পাঠাতে অনুরোধ করেন। প্রাথমিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে সৈন্য প্রেরণ করে। পাকিস্তান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশ তখন এ সরকারবিরোধী মুজাহিদিন বাহিনীকে নানাভাবে সাহায্য করতে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগান যুদ্ধকে তাদের ভিয়েতনাম যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার এক মহেন্দ্রক্ষণ হিসেবে দেখে। ফলে পাশ্চাত্যের সহায়তায় পাকিস্তান যাতে সারা বিশ্ব থেকে মুসলিমরা সোভিয়েতবিরোধী যুদ্ধে অংশ নিতে পারে তার ক্ষেত্র তৈরি করা হয়। যেটি হওয়ার কথা ছিল জাতীয় প্রতিরোধ যুদ্ধ, সারা বিশ্বের মুসলমানদের এ যুদ্ধে সম্পৃক্ত করার জন্য সেটিকে ‘জিহাদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, এবং মুসলিমদের উদাত্ত চিত্তে এ জিহাদে অংশগ্রহণের আহবান জানানো হয়।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ থেকেও অনেকে, বিশেষত যারা বিভিন্ন ‘ইসলামপন্থী’ দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল, এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে আফগানিস্তান যায়।

১৯৯২ সালে পাকিস্তান সমর্থিত মুজাহিদিন বাহিনীর হাতে কমিউনিস্ট নাজিবুল্লাহ সরকারের পতন ঘটার পর বাংলাদেশ থেকে যারা যুদ্ধে গিয়েছিল তারা দেশে ফেরত আসতে থাকে। আফগান যুদ্ধফেরত মুজাহিদিন বাহিনীর সদস্যরা দেশে এসে আলকায়েদার চিন্তাধারায় প্রভাবিত হয়ে ইসলামপন্থী রাজনীতিতে নতুন ধারা যোগ করে সন্ত্রাসনির্ভর, আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলার মাধ্যমে। মূলধারার ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্যদের বিশেষত তরুণ সদস্যদের মধ্যে সশস্ত্র পন্থায় আফগানিস্তানে সফলতা আসার পরে বিতর্ক শুরু হয় নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় বাংলাদেশে ‘ইসলামি বিপ্লব’ সফল করা সম্ভব কি না।

এতদিন পর্যন্ত জঙ্গিবাদী হামলার ধরন সন্ত্রাসবাদী হলেও সেখানে আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা ছিল না। আত্মঘাতী বোমা হামলা করে একটি জাতির মুক্তি আন্দোলন করা যায় কি না– সে প্রশ্নটি তখন নানা মহলেই উঠেছিল। শিয়া ও সুন্নি মতের যত মাজহাব আছে তার কোথাও আত্মঘাতী বোমা হামলার ধারণা পাওয়া যায় না। যে ওয়াহাবি/সালাফি মতের কথা অনেকে বলে থাকেন সেখানেও আত্মঘাতী হওয়ার কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। বিস্ময়ের ব্যাপার হল কোনো মাজহাবেই যার সমর্থন নেই এমন একটা বিষয়কে মুসলমান সমাজের কারো কারো কাছে আকর্ষণীয় করা গেল কীভাবে?

মুসলমান সমাজের একটা বৈশিষ্ট্য হল ধর্মকে তারা যতটা না জানেন তার চেয়েও ধর্মকে ভয় পান তারা বেশি, যাকে এককথায় বলা যায় ‘ধর্মভীরু’। আর এ ভীরুতা কাজে লাগিয়ে অনেক সুযোগসন্ধানী যুগে যুগে ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ সাধারণ মুসলমানের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেয়েছেন।

কোনো একটা বিষয় যখন ইসলামের নাম দিয়ে করা হয় তখন আলেম সমাজ সেটা ইসলাম সম্মত নয় বুঝলেও এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে ততটাই ইতস্তত করে।

এই ইতস্তত করার মূল কারণ হচ্ছে মুসলমান সমাজে মতবিরোধ হলেই কথায় কথায় নাস্তিক, মুরতাদ, বা ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে– এ ধরনের ফতোয়া দিয়ে দেওয়া। ফলে ইসলামের নামে কোনো অন্যায় হলেও প্রতিবাদ করে নাস্তিক, মুরতাদ ইত্যাদি তকমা যাতে গায়ে না লাগে এ ব্যাপারে অনেকেই সতর্ক থাকেন। আর এ দুর্বল জায়গাটার সু্যোগ নেন ধর্ম ব্যবসায়ী, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও সন্ত্রাসবাদী গোপন সংগঠনসমূহ।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দ্রুত উন্নয়নের ফলে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যে পরিবর্তন ঘটে চলছে পরিবর্তনশীল যে কোনো কিছুকেই এককথায় ‘ইসলামবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে দায় সারছে।

===

জাপানের অভাবনীয় উন্নতির পিছনে একজন

জাপানের অর্থনীতির এই অভাবনীয় উন্নতির শুরুটা হয় পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে। সমগ্র বিশ্ববাসী হতবাক! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত ও  ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশ কী করে এত দ্রুত নিজেদের ব্যর্থতার গ্লানি পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্রে দীক্ষিত হল?

‘এনবিসি টেলিভিশন’-এ কর্মরত রিপোর্টার লয়েড অ্যালেন ডোবিনস জাপানের এই বিস্ময়কর উন্নতির রহস্য উন্মোচনে সচেষ্ট হলেন। তিনি তাঁর গবেষণার অংশ হিসেবে সশরীরে জাপান গেলেন। ব্যাপক অনুসন্ধানের পরে তিনি যা আবিষ্কার করলেন তা ছিল আরও বিস্ময়কর! জাপানের এই অভাবনীয় অগ্রযাত্রার বীজ বপন করেছেন একজন আমেরিকান– উইলিয়াম এডওয়ার্ড ডেমিং!

যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের সিউক্স শহরে ডক্টর উইলিয়াম এডওয়ার্ড ডেমিংয়ের জন্ম হয় ১৯০০ সালে। ১৯২১ সালে তিনি উয়োমিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৫ সালে স্নাতকোত্তর এবং ১৯২৮ সালে বিখ্যাত ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগে একজন গাণিতিক পদার্থবিদ হিসেবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ডেমিং মার্কিন সমীক্ষা ব্যুরোতে পরিসংখ্যান বিষয়ক পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। তিনি সুদীর্ঘ কাল (১৯৪৬- ১৯৯৩) নিউ ইউর্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ব্যাবসা প্রশাসন ফ্যাকাল্টিতে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ড. ডেমিং বিভিন্ন সময়ে বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেছেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে মিত্র বাহিনী জাপানের পুনর্গঠনে সহায়তা প্রদানের অংশ হিসেবে একটি সমীক্ষা করার পরিকল্পনা করে। মার্কিন সেনাবাহিনীর অনুরোধে ড. ডেমিং এই সমীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব নেন। জাপানে তাঁর অবস্থানকালে স্থানীয় বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীদের তিনি সংখ্যাতাত্ত্বিক নিয়ন্ত্রণের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। ১৯৫০ সালের জুন থেকে অগাস্ট– এই তিন মাসে শত শত জাপানি প্রকৌশলী, ব্যাবস্থাপক ও বিভিন্ন পেশাজীবী পরিসংখ্যান প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ এবং মান নিয়ন্ত্রণপদ্ধতির উপর তার প্রশিক্ষণ লাভ করেন।

ওইসব প্রশিক্ষণা ড. ডেমিং বারংবার একটি বিষয়ের উপর জোর দেন: যা পণ্যের গুণগত মানবৃদ্ধি ও উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে ।

পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডেমিং একটি যুগান্তকারী তত্ত্বের অবতারণা করেন। তাঁর সেই তত্ত্বের চারটি প্রধান বিষয়: পদ্ধতিগত চিন্তা, তারতম্য  জ্ঞান তত্ত্ব এবং মনস্তত্ত্ব

যে কোনো পণ্য বা প্রক্রিয়ার উন্নতিকল্পে জ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই। শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হলে নিত্যনতুন গবেষণার উপর দিতে হবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ডেমিংয়ের মতে, পরিকল্পনা (plan), বাস্তবায়ন (do), চর্চা (study) ও ক্রিয়া (act)– এই চক্র সামগ্রিক জ্ঞানবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। যে কোনো প্রতিষ্ঠানের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে সেই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ বিশেষ করে তাদের প্রণোদনা, উৎসাহ ও উদ্দীপনার উপর।

উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জাপানি উদ্যোক্তা ড. ডেমিংয়ের তত্ত্বের সফল প্রয়োগ করেন। ফলে অর্জন করেন অভাবনীয় সাফল্য। তাদের সফলতার মূল মন্ত্র ছিল পণ্যের গুণগত মান ও উৎপাদনশীলতা, যার ফলে তারা সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন পণ্য ভোক্তার হাতে তুলে দিতে সক্ষম হন। সৃষ্টি হয় নতুন এক বাজার যা তাদের নিয়ে যায় উত্তরোত্তর সফলতার দিকে।

জাপানের এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের মতো এক উদীয়মান অর্থনীতির জন্য হতে পারে ভীষণ কার্যকরী।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘বিজনেস ইনসাইডার’ এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ‘এশিয়া মহাদেশের বাঘ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়াসহ আফ্রিকা মহাদেশের মিসর, কেনিয়া কিংবা নাইজেরিয়ার মতো বিভিন্ন দেশ হবে আমাদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমাদের যাত্রাপথ কুসুমাস্তীর্ণ হবে না, বরং আমাদের তৈরি হতে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের জন্যে। এ লড়াই হবে সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহের। ড. ডেমিং যে তত্ত্ব আজ থেকে ৬৭ বছর আগে জাপানিদের শিখিয়েছিলেন, আজ এতদিন পরেও তা আমাদের জন্য একইভাবে প্রযোজ্য।

 

---------

১৯৩৫ সালে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে আইনস্টাইনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, পড়াশোনা আর গবেষণা করার জন্য আপনার কি কি দরকার? তিনি বলেছিলে, একটি ডেস্ক,একটি পেনসিল, কিছু কাগজ এবং একটি ডাস্টবিন! যেখানে ভুল করা এবং ভুলে ভরা কাগজ সব ফেলবো

------

মূর্খ লোকের সাথে তর্ক করবেন না, এরা আপনাকে তাদের লেভেলে নামিয়ে নিয়ে যাবে।

যেখানে নারী নির্যাতন হওয়ার কোন সুযোগ নেই, একাধিক স্বামী রাখা বৈধ!

1

আমাদের দেশে যেখানে বাল্যবিবাহ রোধে আইন করতে হয়েছে। হিমালয়ের মৌস উপজাতীদের কাছে নারীর বিবাহ নিয়ে বাবা-

মা, এমনকি সমাজেরও কোনো ভাবনা নেই। সেখানে নারীরা বিয়ের জন্য চিন্তিত নন পরিবারের কেউই ।

নারীর সমতা রক্ষায় একদিকে পৃথিবী যখন এক প্রকার যুদ্ধে লিপ্ত ঠিক তখন হিমালয়ের উপত্যকায় বসবাসরত মৌস উপজাতী নারীদের দিয়েছে সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্ণ ক্ষমতা।

‘মৌস’ নামের এই উপজাতীদের মতে বিয়েতে আসলে কৃতিত্বের কিছু নয়। পুরুষ কখনোই নারীর সম্পূরক হতে পারে না। নারীরা সমাজের অন্যতম ধারক, সমাজের রক্ষক।

বলা হয়, পৃথিবীর সর্বশেষ নারীপ্রধান সমাজ এই মৌস উপজাতী। এরা লুগু লেকের চারপাশে বসবাস করে যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৭০০ মিটার ওপরে। এটাকে বলা হয়ে থাকে ‘কিংডম অব উইম্যন’ বা নারীর রাজত্ব।

এখানে পরিবারের নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক, মালিকানাসহ সকল প্রকার গুরু সিদ্ধান্তগুলো মহিলারা নিয়ে থাকেন।

মৌস উপজাতীর নারীরা বিয়ে করা বা না করার ক্ষেত্রে পুরোপুরি স্বাধীন। যেখানে নারী নির্যাতন হওয়ার কোন সুযোগ নেই, কোনো প্রকার চরিত্রহীনতার দায় ছাড়াই এখনে একাধিক স্বামী রাখা বৈধ।

শুধু তাই নয়, নারীরা সন্তানের পিতা ছাড়াও আলাদা সংসার করতে পারে, যেখানে সে থাকে সংসার প্রধান।

তাদের এই ঐতিহ্য শতাব্দীর পরে শতাব্দী ধরে প্রচলিত। এখানে ১৩ বছর বয়সি একটি মেয়ে তার প্রেমিক বেছে নিতে পারে এবং যাকে তার পছন্দ নয় তার সঙ্গে কোনো প্রকার সম্পর্কে জড়াতেও সে বাধ্য নয়।

মজার ব্যপার হলো, কেউ সন্তানের বাবার পরিচয় জানার অধিকার রাখে না এবং প্রত্যেক বয়স্ক পুরুষ চাচা বা মামা হিসেবে গণ্য হন। ঐতিহাসিকভাবে প্রগতিশীল এই গোত্রের পুরুষদের বলা হয় ‘এক্সিয়াস’।

তারা প্রধাণত মাছ শিকার ও পশু পালন করে থাকে।

বিভিন্ন ধর্মে বিয়ে

সুষুপ্ত পাঠক

সনাতন ধর্মপ্রেমীরা ইসলাম ধর্মের বহু বিবাহ আর হেরেম রাখাকে নিন্দা করে আত্মতৃপ্তি লাভ করলেও ভগবান রামের পিতা

দশরথের তিনশো একান্ন (৩৫১) জন স্ত্রীর ব্যাপারে কোন শব্দ করেন না। রাম যখন বনবাসে যান তখন দশরথ তার তিনশো একান্ন জন স্ত্রী সমেত রামকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন। স্বয়ং ভগবান রাম তার বিয়েতে একশো কন্যা যৌতুক পেয়েছিলেন। এ থেকে সে যুগে বড় বংশে বহু বিবাহের সত্যতা পাওয়া যায়।

ইহুদী ধর্ম মতে স্ত্রী যদি দশ বছর কাল অতিক্রম হওয়ার পরও সন্তান জন্ম দিতে না পারে, তাহলেই কেবল তাকে তালাক দিতে পারবে। খ্রিস্টান ধর্ম মতে কেবলমাত্র স্ত্রী ব্যাভিচারী হলেই তালাক দিতে পারবে। নতুবা স্ত্রী জীবিত থাকাকালে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে করার অপশন নেই। হিন্দু ধর্ম অনুসারে কোন নারী তার বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারবে না। তবে স্বামী একাধিক বিয়ে করতে সক্ষম। একেকজন ব্রাহ্মণ দেড়-দুহাজার করে এককালে বিয়ে করত। এই ব্রাহ্মণদের পেশাই ছিল বছরে একটিবার শ্বশুড়বাড়ি গিয়ে দক্ষিনা নিয়ে আসা…। আশার কথা যে পৃথিবী কোথাও আজকে ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দুদের ধর্মীয় আইন প্রচলিত নেই। এই ধর্মের অনুসারীও তাদের ধর্মীয় আইনের অধীনে বিয়ে বা সাংসারিক জীবন কাটানোর দাবী করে না।

তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু অধ্যুষিত ভারতের হিন্দু নারীরা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন। বহুবিবাহ বিরোধী আইন পাশ হয়েছে ভারতে। ইহুদী-খ্রিস্টানদের ধর্মীয় আইন কোন দেশেই কার্যকর নেই। এক্ষেত্রে মুসলিমরা ব্যাতিক্রম। তারা তাদের ১৪০০ বছর আগের ইসলামী আইন চায় নিজেদের জন্য।

সুরক্ষা? ইসলাম যদি নারীকে নিরাপত্তা আর সুরক্ষা দিতো, তাহলে বাংলাদেশের ‘মুসলিম পারিবারিক আইনে’ স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে করতে স্ত্রীর অনুমতি নেয়ার বাধ্যবাধকতা জুড়ে দিতো না। ইসলামী আইনে কোন পুরুষ দ্বিতীয় বিয়ে করতে তার স্ত্রীর কোন অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। তোমরা বিবাহ কর যত সংখ্যকই তোমাদের মন চাহে- দুইজন, তিনজন, চারজন (কুরআন, সুরা নিসা, আয়াত-৩)।এই চারজন স্ত্রী নিতে কোন মুসলমান পুরুষকে তার স্ত্রীর অনুমতি নেয়ার কোনই প্রয়োজন নেই। তবে বিয়ের আগে যদি শর্ত দিয়ে কোন নারী বিয়ে করেন যে, তার স্বামী আর নতুন করে কোন বিয়ে করতে পারবেন না, তাহলে এক্ষেত্রে ঐ স্ত্রী শর্ত খেলাপ করার কারণে তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবে। তার মানে কিন্তু এই না, স্বামীর শর্ত ভঙ্গ করে দ্বিতীয় বিয়ে ইসলামের চোখে অবৈধ। এমনকি এ কারণে ঐ পুরুষ দোষী হিসেবেও গোণ্য হবে না। স্রেফ শর্ত ভঙ্গ করার জন্য ভুক্তভোগী নারী স্বামীকে তালাক দিতে পারবে। কিন্তু বিয়ের আগে এরকম কোন শর্ত দেয়া না থাকলে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য স্বামীকে তালাক দেয়ার কোন অনুমতি নেই।

বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইন কুরআনের আইনের নারী নিরাপত্তাহীনতাকে ঢাকতে ‘মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১’- এর ধারা ৬-তে দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সালিশি পরিষদে (পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন থেকে) ২৫ টাকা ফি দিয়ে সাদা কাগজে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করতে হবে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট কিছু যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে যেমন, বর্তমান স্ত্রীর বন্ধাত্য, দৈহিক দৌর্বল্য, দাম্পত্য জীবন সম্পর্কিত শারীরিক অযোগ্যতা ইত্যাদি।

অথচ ইসলামী আইন অনুযায়ী একজন মুসলিম পুরুষ শত হাজার কোটি বিয়ে করতে পারবে এতে কোন বাধা নেই। তবে একত্রে সর্বোচ্চ চারজন স্ত্রী রাখা যাবে। অর্থাৎ চারজন স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ফের নতুন করে আরো চারজন স্ত্রী গ্রহণ করতে কোন বাধা নেই। এছাড়া দাসীদের রক্ষিতা হিসেবে রাখার অপশন তো রইলই।

পৃথিবী কোথাও ‘মুসলিম পারিবারিক আইন’ এক ও অভিন্ন ধারায় পরিচালিত হয় না। যেমন বাংলাদেশ আর ভারতের মুসলিম পারিবারিক আইন এক রকম না। ভারতে তিন তালাক মুখে বললেই তালাক কার্যকর হয়ে যায়। সম্প্রতি এই বর্বর আইনকে চ্যালেঞ্জ করে ভারতীয় মুসলিম নারীরা আদালতে গেলে মুসলিম সংগঠন ও নেতারা তিন তালাকের অধিকারের জন্য কোমর বেধে আন্দোলন শুরু করে। বাংলাদেশে কিন্তু মুসলিম পারিবারিক আইনে তিন তালাক বললেই তালাক কার্যকর হবে না। এটা করতে যথাযথ নিয়ম মেনে আদালতের মাধ্যমে নোটিশ পাঠাতে হবে। নানা রকম নারী সুরক্ষা নিশ্চিত করে তবেই তালাক সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু ইসলামী আইন অনুসারে একজন পুরুষ মুখে তালাক বলে একটা নির্দিষ্ট সময় (চার চন্দ্র মাস) অপেক্ষা করে থাকবে। এর মধ্যে যদি তার মন পরিবর্তন ঘটে তাহলে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। আর যদি মন পরিবর্তন না ঘটে তাহলে তালাক কার্যকর হতে আর কোনই বাধা নেই। যাহোক, চার মাযহাবের ইমামের ফতোয়া অনুসারে যদি এক বৈঠকে তিন তালাক উচ্চারণ করা হয়, তাহলে সেটাও কার্যকর হয়ে যাবে তাৎক্ষণিক। যদিও এই প্রক্রিয়ায় তালাক দেয়াকে নিন্দনীয় বলে মত দেয়া হয়েছে।


 

জিহাদ ও জঙ্গিবাদ

সুষুপ্ত পাঠক

—মধ্যপ্রাচ্যে তেলের খনি পাবার আগে জঙ্গিরা সব কোথায় ছিল? কুরআন হাদিস তো ১৪০০ বছর ধরেই আছে। কই? তেলের খনির আগে তো জঙ্গিবাদ দেখা যায় নাই! তেল ল্যটেপুটে নেবার জন্যই সবকিছু আমেরিকার তেলেসমাতি!

মুসলমানরা যখন মধ্য এশিয়া থেকে শুরু করে আফ্রিকা-ইউরোপ পর্যন্ত তাদের শাসন বিস্তৃত করেছেন, তখন মুসলমানদের ‘জিহাদ’ পুরোপুরি মুসলিম সেনাবাহিনীর উপর ন্যাস্ত থাকে। মুসলমান শাসকদের অনেকেই ধর্ম থেকে বেশি শিল্প-সাহিত্য, জ্ঞান চর্চার অনুরাগী ছিলেন। যুদ্ধের বদলে মৈত্রী চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে অমুসলিম শাসকদের সঙ্গে। ব্যক্তিগতভাবে অনেক শাসন অমুসলিম প্রজাদের প্রতি ছিলেন সহানুভূতিশীল। এমনকি অমুসলিমদের রাজসভায় স্থান পর্যন্ত দেয়া হয়েছিল, যা ছিল সম্পূর্ণ ইসলামী আইন বিরোধী। ফলে ইমাম বা ধর্মীয় নেতারা এসব কারণে বহু মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিয়েছে। ইতিহাসে এরকম বড় জিহাদের ডাক দিয়েছিলেন ইমাম গাজ্জালি। উদারচেতা, মুক্তমনা, মুতাজিলা মতবাদের বিরুদ্ধে নবী সালাফ ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার ডাক দেন গাজ্জালি। হাজার হাজার মুতাজিলা কবি, দার্শনিক, লেখক, বিজ্ঞানীর গলা কাটা হতে থাকে। কারাবন্দী থেকে শুরু করে দেশান্তরিত করা হতে থাকে মুতাজিলাদের।…ইতিহাসে এরকম ছোট-বড় আরো জিহাদী আন্দোলন ঘটেছিল— যাকে ‘ইসলামের পূণরুত্থান’ বলে মুসলমানরা অভিহত করে।

আচ্ছা, একটা কথার জবাব দাও তো, সারা পৃথিবীতেই নানাজাতি, সম্প্রদায় নিপীড়িত হচ্ছে— তার জবাবে তারা লড়াইও করছে। কিন্তু কেবল মুসলমানদেরকেই ‘জঙ্গি’ হতে দেখা যায় কেন?

কারন, ইসলাম কেবল নামাজ-রোজা পালন করার মধ্যে সীমাবদ্ধ ধর্ম নয়, ইসলাম বলে— সর্বত্র আল্লাহর শাসন কায়েম করতে। এটা তুমি খ্রিস্টান বা ইহুদী ধর্মে হিন্দু বৌদ্ধ ধর্মে পাবে না ।

·         সতীত্ব শরীরের হয় না, সতীত্ব হয় মনে

·        

  শর্বাণী দত্ত

একটা মেয়ে আত্মহত্যা করলে আমি যখন তার কাছের কাউকে জিজ্ঞাসা করি, কেনো নিজেকে শেষ করে দিলো অতটুকু মেয়েটি? উত্তর সাধারণত ওই একটিই হয়- ”কী করবে, একজনকে নিজের ‘সব’ দিয়ে দিয়েছিলো। সে ঠকিয়েছে। সেই লজ্জাটা নিতে পারেনি।” আমি অবাক হই। আবার জিজ্ঞাসা করি, “এই ‘সব’টা আবার কী?”

—‘আহা! একটা মেয়ে হয়ে বুঝতে পারছেন না? সতীত্ব।’






নাহ ভাই! আমি অত্যন্ত দু:খিত, কিন্তু সত্যিই ‘একটা মেয়ে’ হয়েও আমি বুঝতে পারছি না কী করে একজন রক্তমাংস ও বোধবুদ্ধি দিয়ে গড়া মানুষের ‘সব’ তার শরীরের একটি ‘টিস্যু’ দিয়ে নির্ধারিত হতে পারে! হাইমেন নামক এই টিস্যুর আবার গালভরা নামকরণও করা হয়েছে! ‘সতীপর্দা’! তাও আবার এমন একটি টিস্যু, যেটি অনেকের জন্মগত ভাবেই থাকে না, (সুতরাং তারা জন্মগতভাবেই অসতী), কারো কারো খেলতে গিয়ে, দৌড়াতে গিয়ে, সাইকেল চালিয়ে ছিঁড়ে যায়। এগুলো সত্যি বলতে গেলে সবার জানা কথা।

এখানেই আরেকটা কথা বলতে চাই— আমরা মেয়েরাও মানুষ। একেবারেই সাধারণ চাওয়া-পাওয়া, কামনা-বাসনায় পরিপূর্ণ মানুষ। আমাদেরও শারীরিক মানসিক ভালোবাসা পেতে সাধ হয়, যেমনটি সকল পুরুষের হয়। এর অর্থ আবার এই নয়, আমরা সর্বক্ষণ কামতাড়িত। যারা আশা করেন ‘ভালো মেয়ে’ মানেই ‘যৌনতা’হীন, সর্বক্ষণ  মুখে  কুলুপ আঁটা দেবী, তারা বোধহয় জানেন না সেই প্রতিটি ‘ভালো মেয়ে’র মনে অজস্র ‘মন্দ মেয়ে’ বসবাস করে।

আপনি যাকে ভালোবেসেছেন, এবং সম্পর্ককে আস্থার পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তার সঙ্গে আপনার শারীরিক ঘনিষ্ঠতা হয়েছে, এরপর আপনি কোনোভাবে বুঝতে পারলেন, আপনি ভুল লোককে ভালোবেসেছেন। কিংবা ধরুন, আপনি প্রতারিত হলেন। ফলে  সম্পর্কটি আর টিকলো না বলেই আপনার যদি মনে হওয়া শুরু হয় যে, আপনাকে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে ডাস্টবিনে- তাহলে আপনি একজন প্রচণ্ড মাত্রার পুরুষতান্ত্রিক মহিলা। যখন ভালোবেসে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন, সেই মুহূর্তগুলো কি একা আপনার সঙ্গী অনুভব করেছিলো? আপনি করেননি? পরে প্রেম ভেঙে গেলো বলে নিজেকে পণ্য ভাবতে শুরু করলেন?

হ্যাঁ, আমি জানি এমন মানুষ আশেপাশে আছে, যারা শুধু শরীরের টানে আসে এবং প্রতারণা করে সম্পর্কের ইতি ঘটায়। এরকম ছেলে যেমনি আছে, মেয়েও আছে। এজন্যই আবেগের সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধিকেও পাশে রেখে সঙ্গী বাছতে হয়। তবু এমন কেউ যদি আসেই বা জীবনে, প্রতারিত হয়ে যে মুহূর্তে আপনি বলছেন, ‘আমাকে ইউজ করে ছেড়ে দিলো ও’ সে মুহূর্তে আপনি নিজেই নিজের শরীরটিকে খাদযবস্তু বানিয়ে দিচ্ছেন।  সেই লোকটি প্রতারক, বেশ। কিন্তু আপনার শরীর কি কোনো খেলনাপুতুল, যা কেউ ইউজ করে ছুঁড়ে ফেলে দিলো? আর কেউ আর ওটা নিয়ে খেলতে চাইছে না?  নয় তো? তাহলে একটু ঝেড়ে কাশুন। সঙ্গী ভুল নির্বাচন করেছেন, অতটুকুই আপনার ভুল। এবার কেনো তাকে অত বিশ্বাস করেছিলেন সে ভেবে নিজেকে যন্ত্রণা দেবেন না। ‘সব শেষ’ না ভেবে বুদ্ধি খাটিয়ে ভাবুন,  যে পুরুষ প্রতারিত হয়, তাকে বলতে দেখেছেন তার শরীর ব্যবহার করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে? তাহলে আপনি কেনো ভাবছেন আপনার মূল্য শেষ হয়ে গেছে বা আপনার খুব বড় কিছু ক্ষতি হয়ে গেছে? আপনি যা ছিলেন তাই আছেন।




পিতৃতন্ত্রের জালে আমরা আটকা পড়ে আছি বহুকাল আগে থেকেই। সতীপর্দা নামক ধারণা তার মধ্যে অন্যতম একটি। তা ভুলে যাবেন না। আপনি পুরুষতন্ত্রকে না ছাড়লে পুরুষতন্ত্র আপনাকে ছাড়বে না।
  সতীত্ব শরীরের হয় না, সতীত্ব হয় মনের।

  শর্বাণী দত্ত: (Sharbani Datta), Student, Jadavpur University, Kolkata.

তিন বাবা-মায়ের মিলিত সন্তান নেওয়ার নীতিমালা প্রকাশ করল যুক্তরাজ্য

কালের কণ্ঠ অনলাইন

শেয়ার - মন্তব্য (14) - প্রিন্ট

অঅ-অ+


  সম্প্রতি পৃথক তিনজন পৃথক ব্যক্তির শুক্রানু ও ডিম্বাণু ব্যবহার করে একক সন্তান জন্মদানের বিস্তারিত নীতিমালা প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। এতে বাবা-মায়ের পাশাপাশি তৃতীয় কোনো ব্যক্তির ডিম্বাণু বা শুক্রাণু নেওয়ার বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এ নীতিমালা ২০১৪ সাল শেষ হওয়ার আগেই কার্যকর হবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
  চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পৃথক তিনজন ব্যক্তির শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিয়ে কোনো সন্তান উৎপাদন করা হলে তা বেশকিছু মারাত্মক বংশগত রোগ প্রতিরোধ করবে। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ এ বিষয়টিকে সমর্থন জানিয়েছে।
  সূত্র জানিয়েছে, এ পদ্ধতিতে সন্তান নিষিক্ত করার সময় বাবা-মায়ের শুক্রাণু-ডিম্বাণুর পাশাপাশি অন্য একজন নারীর ডিম্বাণু সংযোজন করা হবে। এটি ‘মাইটোকন্ড্রিয়া’ সংশ্লিষ্ট রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকর হবে। প্রতি সাড়ে ছয় হাজার শিশুর মধ্যে একজনের এ রোগ হয়।
  নতুন এ নীতিমালায় ডিম্বাণুদাতা নারীকে অন্যান্য অঙ্গদাতাদের মতো করে বিবেচনার কথা বলা হয়েছে।
  তবে সমালোচকরা এ পদ্ধতিকে কঠোর সমালোচনা করছেন এবং এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্য একটি বিপজ্জনক স্থানে চলে যাবে বলে দাবি করছেন।

 


  মাইটোকন্ড্রিয়াল গবেষণার অগ্রদূত, নিউক্যাসেল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ডউগ টার্নবুল বলেন, ‘এ নীতিমালা প্রকাশ করায় আমি খুবই আনন্দিত।’
  তিনি আরো বলেন, ‘এটা মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ রোগীদের জন্য খুবই সুসংবাদ। এটা এ রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।’

- See more at: http://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2014/03/02/57666#sthash.uXYk95Jf.dpuf

৩০ হাজার বছর পর আবার জেগে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাইরাস

কালের কণ্ঠ অনলাইন

শেয়ার - মন্তব্য (11) - প্রিন্ট

অঅ-অ+


  বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ার বরফের নিচে এক ধরনের ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন যার বয়স ৩০ হাজার বছর। ফ্রান্সের গবেষক দল তাদের ওই গবেষণার কথা প্রসেডিং অফ দ্যা ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসে প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন 'পিথোভাইরাস সাইবেরিয়াম' নামের ওই ভাইরাসের সন্ধান তারা পেয়েছেন প্রায় ১০০ফুট নিচের ভূমিতে।

 


  এই ভাইরাস ক্ষতিকর বলেও জানিয়েছে তারা। এই ভাইরাস আকারে এতোটা বড় যে, একে দেখতে মাইক্রোসকোপ লাগেনা। দৈর্ঘ্যে এটি প্রায় ১ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার। এ প্রসংগে প্রফেসর জিয়ান-মিশেল ক্লাভেরি বলেন, আবিস্কৃত ভাইরাসের মধ্যে এটিই আকারে সবচেয়ে বড়। তিনি আরও বলেন, প্রানীদেহ এর সংস্পর্শে এলে নানা রকমের রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে মানুষের স্মল পক্স হতে পারে।

- See more at: http://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2014/03/04/58488#sthash.WmT6KKRz.dpu==================

বৈধ পতিতাবৃত্তির বিশালতার সাক্ষী জার্মানির 'প্যারাডাইস'

কালের কণ্ঠ অনলাইন

শেয়ার - মন্তব্য (7) - প্রিন্ট

অঅ-অ+


  'স্বর্গে স্বাগতম'- এভাবে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পতিতালয় 'প্যারাডাইস'। জার্মানির সুৎগার্টে বেড়ে ওঠা এ বৈধ পতিতালয়ের বিশালতায় বোকা বনে যান অনেকে। ২০০২ সালে জার্মান সরকার প্রথম পতিতাবৃত্তিকে তাদের দেশে বৈধতা দেওয়ার পর থেকে বৈধ পতিতালয়ে পতিতারা কাজের খোঁজে আসতে থাকেন। খুব দ্রুত এ শহরে 'প্যারাডাইস' নেমে যে পতিতালয়টি গড়ে উঠেছে, তা এখন 'মেগা ব্রোথেল' নামে বিখ্যাত। পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন পেশায় জড়িতদের স্বর্গ এটি। এখানে চষে বেড়িয়ে বিশাল এক নিবন্ধ লিখেছেন দ্য টেলিগ্রাফের রবিবারের 'স্টেলা ম্যাগাজিন'র অ্যাসিস্টেন্ট এডিটর নিশা লিলিয়া দিউ।

  বারো তলার মূল ভবনটি বিশাল, তৈরি করা হয়েছে মরোক্কান থিমে। মনে হবে, স্বপ্নময় অ্যারাবিয়ান নাইটসের কোনো সুলতানের প্রাচুর্যপূর্ণ প্রাসাদে প্রবেশ করা হচ্ছে। ভিতরে বিলাসবহুল এক মদের বার। বারো তলা ভবনটি ছাড়াও এর চারদিকে রয়েছে নামহীন বহু অফিস ব্লক আর সীমাহীন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। এই ব্রোথেলে বছরে ১৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা!

  'প্যারাডাইস' চেইন শপের মতো, ঠিক যেমন খাবারের চেইন শপ পিজা হাট বা কেএফসি ইত্যাদি। পাঁচ-পাঁচটি বিশাল ব্রাঞ্চ রয়েছে এই ব্র্যান্ড পতিতালয়ের।  আরো তিনটি শাখা গড়ে উঠছে জাঁকজমকের সঙ্গে। এ ব্যবসার একজন অংশীদার মাইকেল বেরেটিন। তিনি যখন হাসিমুখে নিশা লিলিয়াকে স্বাগত জানালেন, তখন তার হাতে ঝিলিক দিয়ে উঠল অ্যাডুমারস পিগটের হাতঘড়ি, যার মূল্য এক লাখ পাউন্ড বা প্রায় দেড় কোটি টাকা। এ লোকটি খুব শিগগিরই আরেকটি ব্রোথেল খুলতে যাচ্ছেন। সাড়ে চার মিলিয়ন ইউরো খরচ করে ১৫ হাজার স্কয়ার ফুটের এ পতিতালয়ের নাম হবে 'প্যারাডাইস সারব্রুকেন'।

 







  মাইকেল বেরেটিন টানা ছয় তলা পর্যন্ত নিয়ে গেলেন লিলিয়াকে। এই ছয়টি তলায় ঘন বার্গেন্ডি রঙে উপচে পড়ছে। ঠিকরে আসা আলোয় বাইরে থেকে ভেতরটাকে লাল টকটকে ভেলভেটের কেকের মতো মনে হয়। আর ভেতরে মনে হবে, কেক তৈরির জ্বলন্ত চুলা। ওখানে সবাই ইচ্ছেমতো নগ্ন হতে পারেন।

  অনেকেই জানেন, আমস্টারডাম বোধহয় ইউরোপের পতিতালয়ের রাজধানী। কিন্তু জার্মানির এই শহরে আরো ঢের সংখ্যক পতিতা এবং খদ্দেরের সমাগম ঘটে যা ইউরোপ-আমেরিকার যেকোনো শহরের ব্রোথেলের চেয়েও বেশি। এমনকি এ সংখ্যা ব্যাংককের চেয়েও বড় অংকের। প্রায় এক যুগ আগের একটি হিসাব জানাচ্ছে, ব্যাংককে প্রতিদিন ৪ লাখ পতিতা প্রায় ১২ লাখ খদ্দেরকে সময় দেয়। ২০০২ সালে প্রথম জার্মানিতে বেশ্যাবৃত্তিকে বৈধতা দেওয়ার দুই বছরের মধ্যে এ ব্যবসা থেকে বছরে ৬ বিলিয়ন ইউরো  উপার্জন হয়। এই পরিমাণ অর্থ জার্মানির বিশ্বখ্যাত গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান পোর্শে বা অডির বাৎসরিক আয়ের সমান। এক যুগ না পেরোতেই প্রস্টিটিউশনে জার্মানিতে ১৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হচ্ছে। আর এ বিশাল অর্থের জন্যই জার্মান সরকার পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দিয়েছে, জানান বেরেটিন।

  জার্মানির সোশাল ডেমোক্রেট-গ্রিন কোয়ালিশনের চ্যান্সেলর গেরহার্ড শ্রোয়েডার অন্যান্য চাকরির মতো পরিচয় ঘটান পতিতাবৃত্তিকে। পতিতারাও অন্যান্য চাকরির জন্য চুক্তিবদ্ধ হতে পারবেন, পাওনা আদায়ে আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ইন্সুরেন্স করতে পারবেন যেখানে পেনশনসহ অন্যান্য সুবিধা থাকবে।


  'কিন্তু এগুলো কোনো কাজে আসেনি', জানালেন বেরেটিন। কারণ পতিতাদের কেউ চাকরি দেয় না।

  এখানে মূলত কী হয়? নিয়নে মোড়ানো গোটা ১২ তলা ভবনটি কোলনের গন্ধে পরিপূর্ণ। মাত্র ৫০ থেকে ১০০ ইউরোর বিনিময়ে এখানে যে কেউ সীমাহীন যৌনতা কিনতে পারেন। তা ছাড়া এখানকার বারে দামি-কমদামি মদে ডুবে যেতে পারেন, সোনা বারে উষ্ণতা উপভোগ করতে পারেন। সেইসঙ্গে রয়েছে রাজকীয় শোবার ঘর। তা ছাড়া পতিতাকে নিয়ে সময় কাটানোর জন্য রাস্তার দু'ধারে সারি সারি সাজানো রয়েছে কমমূল্যের ক্যারভান, যেগুলোকে বলা হয় 'সেক্স বক্স'।

 







  এ দেশে পতিতাবৃত্তি ব্যবসার ফুলে-ফেঁপে ওঠার হার সত্যিই বিস্ময়কর। এ ব্যবসায় বেরেটিন এবং তার আরেক অংশীদার জার্গেন রুডলফের মতো মানুষেরা হচ্ছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। আগামী এপ্রিলে প্যারাডাইসের আরেকটি শাখা খোলা নিয়ে দারুণ ব্যস্ত তারা। সারব্রুকেন শহরটি খুব ছোট। এখানে মাত্র ১৮ লাখ মানুষের বাস। এ শহরে পতিতালয়টি গড়ে উঠবে ফ্রেঞ্চ বর্ডার থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার ভেতরে এবং স্টারসবার্গের ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট থেকে মাত্র এক ঘণ্টা পথের দূরত্বে। এখানকার ব্রোথেলটি হবে এ যাবতকালের সবচেয়ে আকর্ষণীয়, আশা করছেন বেরেটিন।

 







  সারব্রুকেনের মেয়র চার্লোটি ব্রিৎজ বললেন, জার্মানির অন্যান্য শহরের মতো এখানেও পতিতাবৃত্তি বিস্মকর হারে বেড়ে যাচ্ছে। এর শুরু ২০০৮ সালে, যখন রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া ইউরোপিয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হয়। ছোট এ শহরেই রয়েছে একশোটির বেশি ব্রোথেল।

  পতিতাবৃত্তি বৃদ্ধির এই ব্যাপক হার কী সমস্যা সৃষ্টি করছে? লেখিকার প্রশ্নে মেয়রের উত্তর, 'সুপারমার্কেট, কার পার্কিং থেকে শুরু করে এক কাপ চা খেতে গেলে, এমনকি কোনো মৃতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতেও কোনো না কোনো পতিতার সামনে পড়তে হয়। বাস স্টপেজে, রাস্তা-ঘাটে এমনকি স্কুলের সামনে পড়ে থাকে ব্যবহৃত কনডম, বিরক্তির সঙ্গে জানালেন চিন্তিত মেয়র। সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ

- See more at: http://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2014/03/06/59152#sthash.geQUxlBR.dpuf

লম্বা মানুষ অন্যদের তুলনায় স্মার্ট হয়

কালের কণ্ঠ অনলাইন

শেয়ার - মন্তব্য (0) - প্রিন্ট

অঅ-অ+


  নারীরা এখন তাদের জন্য লম্বা পুরুষ পছন্দ করার ক্ষেত্রে আরেকটি যুক্তি খুঁজে পাবেন। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে লম্বা মানুষের ডিএনএ ও বুদ্ধিমত্তার ভেতর একটি সম্পর্ক রয়েছে। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
  গবেষণাপত্রটির লেখক রিকার্ডো ম্যারিওনি বলেন, ‘আমরা গবেষণা করছিলাম ডিএনএ-ভিত্তিক জেনেটিক মিলের সঙ্গে উচ্চতা ও বুদ্ধিমত্তার কোনো মিল আছে কি না। এতে দেখা যায় উচ্চতা ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে সামান্য কিছু মিল রয়েছে। যার অর্থ দাঁড়ায়, যারা লম্বা তারা কিছুটা স্মার্টও বটে।’
  এ গবেষণাটি ডিএনএ-ভিত্তিক এ ধরনের প্রথম গবেষণা, যেখানে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে মানুষের উচ্চতা বিবেচনা করা হয়। এ গবেষণায় ৬,৮০০ মানুষের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
  বিজ্ঞানীরা জানান, গবেষণায় আরো দেখা গেছে, উচ্চতা ও আইকিউ পরস্পর ভালো স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত।
  বিহ্যাভিয়ার জেনেটিক্স জার্নালে এ গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে।
  এ গবেষণার তথ্য অন্য আরো স্বাস্থ্যগত তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সূত্র আরো জানিয়েছে, আপনি যদি লম্বা না হন, তাহলেও চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ এ তথ্য অতি সামান্যই প্রভাবিত করে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

- See more at: http://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2014/03/10/60477#sthash.9YsfjfZs.dpuf

গর্ভপাত নয়, প্রয়োজন যৌন শিক্ষা

কালের কণ্ঠ অনলাইন

শেয়ার - মন্তব্য (7) - প্রিন্ট

অঅ-অ+


  মধ্যপ্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড কোন দেশকে বলা হতো জানেন? উত্তরটা হলো লেবানন। সৌন্দর্যের পাশাপাশি মানুষের মাঝে ছিল না কোনো কুসংস্কার। কিন্তু বর্তমানে গর্ভপাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় জটিলতায় পড়েছেন সেখানকার নারীরা।
  বিবাহের আগে যৌন সম্পর্ক এবং এ কারণে গর্ভধারণ লেবাননের সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়, কেননা তা ধর্মবিরোধী। একইসাথে সেখানে গর্ভপাত কেবল অবৈধই নয় একেবারে নিষিদ্ধ।
  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৯ বছর বয়সী এক নারী জানিয়েছেন, বিয়ের আগে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাই বাধ্য হয়ে দারস্থ হয়েছিলেন প্রাইভেট ক্লিনিকের। নিজের অর্থ না থাকায় বন্ধুদের কাছ থেকে ৩৭০ ইউরো জোগাড় করে ক্লিনিকের ব্যয় মেটাতে হয়েছিল। কিন্তু ক্লিনিকটি ছিল অপরিচ্ছন্ন এবং চিকিৎসক মোটেও অভিজ্ঞ ছিলেন না বলে জানান ঐ নারী। কিন্তু সমাজের ভয়ে গর্ভপাতে বাধ্য হয়েছিলেন।
  লেবাননের আইন অনুযায়ী, কেবল মার জীবন বাঁচানোর খাতিরে গর্ভপাত বৈধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈরুতের এক গাইনোকলোজিস্ট জানিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন থেকে চারজনের গর্ভপাত করিয়ে থাকেন তিনি।

  যৌন শিক্ষার অভাব
 লেবাননের প্রথম যৌনবিদ বা সেক্সোলজিস্ট সানদ্রিনে আতাল্লাহ মনে করেন, তাঁর দেশে যৌন শিক্ষার অভাবই নারীদের অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণের কারণ। তিনি জানান, লেবাননের কোনো অবিবাহিত মেয়ে কখনো গাইনোকলোজিস্টের কাছে যান না। আর স্কুলে কেবল জীববিদ্যা পড়ানোর সময় অল্পকিছু বিষয় থাকে, যা শিক্ষকরা বিস্তারিত পড়ান না, বরং এড়িয়ে যান।
  সানদ্রিনের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করেছেন লেবাননের গাইনোকলোজিস্ট মোনা হাশেম-বারুদ৷ মোনা জানান, গর্ভনিরোধক পদ্ধতি এবং যৌনতা নিয়ে নারীদের মধ্যে ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। মায়েরাও তাঁদের ভুল তথ্য দিয়ে থাকেন। মায়েরা মেয়েদের বলেন, গর্ভনিরোধক পদ্ধতি, যেমন পিল ব্যবহার করলে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

  শারীরিক ও মানসিক ক্ষত
 লেবাননের একটি ক্লিনিকে গর্ভপাত করাতে লাগে তিন শ থেকে ছয় শ ডলার। কিন্তু সরকারি হাসপাতালগুলোতে লাগে ৩ হাজার ডলার। তাই বেশিরভাগ নারী ক্লিনিকগুলোকেই বেছে নেন। এইসব ক্লিনিক স্বাস্থ্যসম্মত না হওয়ায় প্রায়ই শারীরিক অসুস্থতার শিকার হন নারীরা।
  লেবাননে গাইনোকলোজি সোসাইটির সভাপতি ডাক্তার ফয়সাল এল কাক জানালেন, তিনি এমন অনেক ঘটনা দেখেছেন, যেখানে গর্ভপাতের সময় জরায়ু ভালোমত পরিষ্কার না করায় রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকে। অনেক সময় জরায়ুতে সংক্রমণ হতে দেখা যায়। কোনো কোনো সময় এমন পরিস্থিতি দাঁড়ায় মেয়েটির জরায়ু অথবা তার জীবনের মধ্যে একটিকে বাঁচাতে হবে।
  কিন্তু সমাজে পরিবারের মুখ রক্ষার জন্য লেবাননের নারীরা এসব ঝুঁকি নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে শারীরিক সমস্যার সাথে সাথে মানসিক স্বাস্থ্যেনরও অবনতি হচ্ছে তাঁদের।
  কেবল যে সরকার এসব ঘটনায় ভ্রুক্ষেপ করছে না এমন নয়, বেসরকারি সংস্থাগুলোরও একই অবস্থা। তারা এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনো চেষ্টা করছে না।

- See more at: http://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2014/02/09/50384#sthash.4wqTwyQV.dpuf

সোনালী স্বপ্নের আশায় আমেরিকায় গিয়ে যৌনদাসী হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের মেয়েরা

কালের কণ্ঠ অনলাইন

শেয়ার - মন্তব্য (20) - প্রিন্ট

অঅ-অ+


  সোনালী স্বপ্নের অন্বেষনে স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় গিয়ে যৌনদাসী হচ্ছে এশিয়াসহ তৃতীয় বিশ্বের মেয়েরা। আমেরিয়ায় গিয়ে তৃতীয় বিশ্বের মেয়েরা একবিংশ শতকের যৌনক্রীতদাসের দুঃস্বপ্নে হারিয়ে যাচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। সোনালী স্বপ্ন অন্বেষণে আসা কত শত মেয়ে এ অন্ধকারের তলায় চাপা পড়ে যাচ্ছে তার হিসাব কী সত্যিই কেউ রাখে?
  ইন্দোনেশিয়ার শান্দ্রা ওয়োরুন্থ (২৫) শিক্ষিত এক সন্তানের জননী এ নারী দেশে ব্যাংকের চাকরি হারিয়েছিলেন হঠাৎ করেই। সংবাদপত্রে আমেরিকায় একটি কাজের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন পাঠান কাজের খোঁজে। মোটা  বেতনের চাকরির উত্তরও পেয়ে যান চটজলদি। ইচ্ছা ছিল স্বপ্নের দেশে ছয় মাস কাটিয়ে ফিরে আসবেন দেশে। উপার্জন করা অর্থে নিশ্চিত করবেন ছোট্ট মেয়ের ভবিষ্যৎ। সে আশাতেই চড়ে বসেছিলেন আমেরিকার বিমানে। কিন্তু জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে নামার পড়েই বদলে গেল সবটুকু। তাঁর নিয়োগকর্তাদের যারা শান্দ্রকে বিমানবন্দরে নিতে এসেছিল গাড়িতে ওঠার পরেই বদলে গেল তাদের চেহারাটা। শান্দ্রার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হলো নিউ ইয়র্কের পতিতাপল্লীর অন্ধকারে। আর তারপর? তারপরর কাহিনীটা শুধু রোজ রাতে হাত বদলানোর। ইচ্ছার বিরুদ্ধে একেরপর এক পুরুষের শয্যা সঙ্গিনী হতে বাধ্য হলেন শান্দ্রা। প্রাণের ভয়ে নিরুপায় হয়ে কাজটা করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
  তবে শান্দ্রা একা নন। তৃতীয় বিশ্বের মূলত এশিয়া আর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে শত শত মেয়ে জমা হন মার্কিনি মিথ্যা স্বপ্নের অন্ধকূপে। যৌন ক্রীতদাসে পরিণত করা হয় তাদের। মাঝেমধ্যে আমেরিকার বাইরেও বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয় তাদের। অমানবিক যৌন হিংসার কবলে নিজেদের মানুষ বলে ভাবতেই ভুলে যায় অনেকে। পড়ে থাকে শুধু শরীর আর সেই শরীরের বিশেষ কিছু অংশ।
  ২৫ বছরের শান্দ্রাই বয়সে এই মেয়েদের মধ্যে সব থেকে বড়। বেশির ভাগই সদ্য কিশোরী। এই কিশোরীদের মধ্যে অনেকে এতটাই ছোট যারা হয়তো ভাবতেই শেখেনি নারী হিসেবে তাদের ভিন্ন সত্ত্বা। শান্দ্রার বর্ণনায় নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন ক্যাসিনোতে সারি বেঁধে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় এই মেয়েদের। ক্রেতারা এক রাতের জন্য বেছে নেয় তাদের পছন্দমতো কিশোরীকে। তবে শুধু মেয়েরাই নয়। যৌন ক্রীতদাস হিসেবে দুঃস্বপ্নের মার্কিন মুলুকে পাচার হয় পুরুষরাও। ছাড়া পায় না শিশুরাও।
  ঘষা কাঁচের গাড়িতে এক ক্যাসিনো থেকে আর এক ক্যাসিনো, এক পতিতা পল্লী থেকে অপর পতিতা পল্লীতে ঠিকানা বদলায়। ইচ্ছা বিরুদ্ধ যৌন সঙ্গী বা সঙ্গিনী হওয়া ছাড়া বাইরের জগতের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে না কারোরই। দিন-রাত, সব টুকুই ঢাকা শুধু নিকষ অন্ধকারে। সময়ের হিসাব টুকুই কষতে ভুলে যান বেশির ভাগ।
  দোতলা এক হোটেলের বাথরুমের জানালা দিয়ে লাফ দিয়েছিলেন শান্দ্রা। সঙ্গে পেয়েছিলেন আরো এক মেয়েকে। অদ্ভুতভাবে বেঁচেও যায় তারা। তারপর বহু কষ্টে নিজেদের বাঁচিয়ে কোনো রকমে জনসমক্ষে শান্দ্রা নিজেদের কাহিনি তুলে ধরেন। গলা তুলেছেন সেই সব মেয়েদের জন্য যাদের আমেরিকান ড্রিম হারিয়ে গেছে পতিতাপল্লীর ঘুপচি গলির বাঁকে।
  শান্দ্রা পেরেছেন পালিয়ে আসতে। কিন্তু যারা পারলেন না। যাঁদের সত্তাটুকু যৌনক্রীতদাসের আবরণে আচ্ছন্ন হয়ে আছে, যাঁরা প্রতিদিন একটু একটু করে নিজেদের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলছেন, তাঁদের খোঁজ কেউ রাখে না। তাঁদের স্বপ্নের কবরের উপর শুধু ধূসর মাটি জমা পড়ে। আর আমেরিকান ড্রিমস আরো গভীরে, আরো অতলে অবরুদ্ধ মৃত্যুর সঙ্গে সখ্য পাতায়। সূত্র : জিনিউজ

দুর্ঘটনার ফলে বুদ্ধিমান হয়েছে মানুষ

কালের কণ্ঠ অনলাইন

শেয়ার - মন্তব্য (1) - প্রিন্ট

অঅ-অ+


  মানুষ কেমন করে বুদ্ধিমান প্রাণী হল, সে রহস্য অবশেষে ভেদ করা গিয়েছে বলে নতুন এক গবেষণার ভিত্তিতে মনে করছেন একদল বিজ্ঞানী। যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের গবেষণার ভিত্তিতে এক প্রতিবেদনে এই সময় জানিয়েছে, ৫০ কোটি বছর আগে জিনের সেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল।
  এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানিয়েছেন, ৫০ কোটি বছর আগে জিনের এক 'দুর্ঘটনা'র ফলেই মানুষের যুক্তি দিয়ে ভাবনাচিন্তা করার ক্ষমতা জন্মেছিল। অন্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদেরও বুদ্ধির উৎস এটাই। ওই গবেষক দলের বক্তব্য, বিবর্তনের পথে আমাদের পুর্বপুরুষদের মস্তিষ্কে জিনের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণেই তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অর্থাৎ আমরা বুদ্ধিমান হয়ে উঠেছি। আর সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার যেটা, তা হল- যে জিনগুলো আমাদের মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেছে, সেগুলোর জন্যই আবার নানা মস্তিষ্কের সমস্যায় আক্রান্ত হই আমরা।
  দীর্ঘ গবেষণায় জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ কোটি বছর আগে সমুদ্রে বসবাসকারী অতি সরল কোনো এক অমেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরে এমন একটা জিনের দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এর ফলে মস্তিষ্কের বিভিন্ন জিনের একাধিক প্রতিলিপি (কপি) তৈরি হয়ে যায়। আর ওই প্রাণীটির পরবর্তী প্রজন্ম সেই জিনগুলোর সুফল লাভ করে। ওই পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে রয়েছে আধুনিক মানুষসহ বিভিন্ন জটিল গঠনসম্পন্ন মেরুদণ্ডী প্রাণীও।
  বিজ্ঞানীদলের দাবি, মানুষের নানা ধরনের ব্যবহারিক অভ্যাসের মূলে রয়েছে ওই জিনের দুর্ঘটনাই। প্রধান গবেষক অধ্যাপক সেথ গ্রান্টের কথায়, ক্রমবিবর্তনের পথে মানুষের জটিল ব্যবহার কী ভাবে এল সেটা খুঁজে বের করাটা ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ।' বিজ্ঞানপত্রিকা 'নেচার নিউরোসায়েন্স'-এ এই নতুন সমীক্ষাটি দুটি গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগসৃষ্টির সম্পর্কটা ঠিক কেমন, এই গবেষণাপত্রে তারও একটা দিকনির্দেশ রয়েছে বলে দাবি। যে সংস্থা এই সমীক্ষার জন্য অর্থ জুগিয়েছে, তার তরফে জন উইলিয়ামস জানিয়েছেন, 'মানসিক রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই গবেষণা নতুন আলো দেখাবে।'
  মানুষ এবং ইঁদুরের মধ্যে বুদ্ধিমত্তার তুলনামূলক সমীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, দুই প্রাণীর বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রণ করে একটাই মাত্র জিন৷ যেসব কাজে মাথা খাটাতে হয় বেশি, মানুষ ও ইঁদুরের ক্ষেত্রে একই জিন সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই জিনগুলোর পরিবর্তন করে দেওয়া হলে বা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে, জটিল কাজ করার ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
  গ্রান্ট আরো বলেছেন, আমাদের সমীক্ষায় এটা পরিষ্কার বোঝা যায় যে, অত্যধিক বুদ্ধিমত্তা এবং জটিল ব্যবহারের অবধারিত ফলাফল হল মানসিক সমস্যা। সমীক্ষার অন্যতম গবেষক কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিম বুসি বলেছেন, মানসিক রোগীদের এ বার শুধু ওষুধ নয়, জিনবদলের মাধ্যমেও চিকিৎসা করার চেষ্টা করা যেতে পারে।

জ্ঞানের তিনটি স্তর


 1. যে প্রথম স্তরে প্রবেশ করবে, সে অহংকারী হয়ে উঠবে, যেন সব কিছুই সে জেনে ফেলেছে ।

  2. দ্বিতীয় স্তরে প্রবেশ করার পরসে বিনয়ী হবে।

  3. আর তৃতীয় স্তরে প্রবেশ করার পর সে নিজের অজ্ঞতা উপলদ্ধি করতে পারবে।

  ======================

মেয়েরা ওয়াইফাই, আর পুরুষরা ব্লুটুথ ডেভাইস !!

এক মহীয়ষী নারীর বক্তব্য/আবিষ্কার!! তিনি বলেছেন, "মেয়েরা ওয়াইফাই, আর পুরুষরা ব্লুটুথ ডেভাইস"।

  এর সপক্ষে তার যুক্তিঃ

  ১। মেয়েরা ওয়াইফাইঃ ওয়াইফাই এর কাজ হলো সবচেয়ে শক্তিশালী সিগন্যালকে ক্যাচ করা। আর মেয়েরা তাই করে। যার কাছে সবচেয়ে নিরাপদ থাকবে তাকেই সে ক্যাচ করে। এই শক্তির ডেফিনিশান অবশ্য শুধু অর্থ বা বিত্ত-বৈভব নয়, যেকোন অবস্থায় যেন তার পার্টনার তাকে নিরাপত্তা দিতে পারে এমন কাউকেই সে ক্যাচ করে।

  ২। পুরুষরা ব্লুটুথ ডেভাইসঃ পুরুষরা যখন বউয়ের পাশে থাকে তখন শুধু বউয়ের কথা বলে বা তার সাথে লিঙ্কড থাকে, বাইরে গেলেই সে অন্য মেয়েকে খোঁজে।

এরিস্টটল

১৩ ই মে, ২০১২ দুপুর ১২:৩৫

শেয়ারঃ

0 0 0

 

( একজন সত্যিকারের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বিজ্ঞানী বিশ্বাস করে যেকোন কিছু হয় বস্তু অথবা শক্তি দ্বারা তৈরী । এটা ঠিক যে, বস্তু এবং শক্তি একই মুদ্রার দুই পিঠ মাত্র । তো, বস্তু আর শক্তির দুনিয়া যিনি দেখেন, সেই বিজ্ঞানী যখন প্লেটোর দর্শন পড়েন তার কাছে খুবই মজার ঠেকে । বিশেষ করে সক্রেটিসীয় ঐতিহ্যে ধরে প্লেটোর সংলাপ নির্ভর লেখা । প্লেটো নিজের তরফে কিছু বলতেন না, সব কিছুর বরাত ছিলেন গুরু সক্রেটিস । সক্রেটিসের হেয়াঁলিপূর্ণ কথা-বার্তা তার কালের লোকজনকে মুগ্ধ করত, নিঃসন্দেহে এইকালের বিজ্ঞানীদেরও করে । তারা যখন প্লেটোর দি রিপাবলিক বইটি পড়েন, সক্রেটিসের মুখে বয়ানকৃত গুহার রূপক পড়ে চমৎকৃত হন বলে জানা যায় ।)


 তিনজন মনীষী গ্রিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সঐ্যতাকে সবচেয়ে প্রভাবিত করেছিলেন । তারা হলেন- সক্রেটিস, প্লেটো এবং এরিস্টটল । সক্রেটিসের সবচেয়ে প্রিয় ও বিখ্যাত শিষ্য ছিলেন প্লেটো । সক্রেটিস নিজে কিছু লেখেন নি। সক্রেটিসের কথা ও চিন্তা-ভাবনা সম্পর্কে আমরা জানতে পারি প্লেটোর লেখা থেকে। আর এরিস্টটল ছিলেন প্লেটোর শিষ্য । প্রায় ৪২ বছর বয়সে খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪২ সালে মেসিডোনিয়ার রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ তাঁর ১৩ বছরের ছেলে আলেক্সান্ডার- এর গৃহশিক্ষক হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান । এরিস্টটল এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন । এরিস্টটল তাঁর ছাত্র আলেক্সান্ডারকে সামরিক বিদ্যাসহ একজন ভাবী রাজার উপযোগী অন্যান্য বিদ্যায় পারদর্শী করে তোলেন । এরিস্টটলের পদার্থবিদ্যা প্রাচীনকালের বিষয় আর আধুনিক ভৌত বিজ্ঞানসমূহ আধুনিক যুগের বিষয়- এই পার্থক্যের চেয়েও বড় পার্থক্য হচ্ছে এরিস্টটলের পদার্থবিদ্যা ছিল দর্শন, যেখানে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান একটি ইতিবাচক বিজ্ঞান যা একটি দর্শনকে প্রথমেই সত্য বলে ধরে নেয়... এরিস্টটলের পদার্থবিদ্যা না থাকলে গালিলেওর জন্ম হতো না ।


 এরিস্টটল, বিশ্ববিখ্যাত গ্রিক বিজ্ঞানী ও দার্শনিক । তাকে প্রাণীবিজ্ঞানের জনক বলা হয় । শৈশবে তাঁর বাবা মারা যান, এবং ১৭ বছর বয়সে তার অভিভাবক প্রোক্সেনাস তাকে এথেন্সে জ্ঞানার্জনে পাঠিয়ে দেন । এথেন্স তখন বিশ্বে জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হিসেবে গণ্য হত । সেখানে তিনি প্লেটোর একাডেমিতে সরাসরি প্লেটোর অধীনে প্রায় বিশ বছর শিক্ষা গ্রহণ করেন । একসময় প্লেটো ও তার একাডেমিতে থাকাকালেই তিনি নিজেই ভাষাত্বত্ত নিয়ে লেকচার দিতে শুরু করেন । খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪৭ সালে প্লেটোর মৃত্যুর পর অ্যারিস্টটলই একাডেমির প্রধান হবার যোগ্য ছিলেন । কিন্তু প্লেটোর দর্শণের সাথে অ্যারিস্টটলের নিজের দর্শণের দূরত্বের দরুণ প্লেটোর আত্মীয় Speusippus কেই একাডেমির প্রধান হিসেবে বেছে নেয়া হয় । "এরিস্টটলের ফুজিকোস আক্রোয়াসেওস (ইংরেজিতে যে বইটি Physics নামে পরিচিত, আক্ষরিক অনুবাদ "প্রকৃতি বিষয়ক বক্তৃতামালা") গ্রন্থটি মূলত একটি বক্তৃতা যাতে তিনি এমন সব বস্তু নির্ণয়ের চেষ্টা করেছেন যারা নিজে থেকেই উদ্ভূত হয় ।


 এরিস্টটলের রচনাবলী শুধুমাত্র তার সময়েই প্রভাব বিস্তারকারী ছিলনা, বরং নিউটনের আগ পর্যন্ত, পরবর্তী দুই হাজার বছর ধরে সমস্ত বিজ্ঞানের ভিত্তিমূল হিসাবে স্বীকৃত ছিল । দর্শন, যুক্তি, জোতির্বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞানসহ অসংখ্য বিষয়ে লিখে গেছেন তিনি । যুক্তিবাদী হিসেবে তিনি ছিলেন সবচেয়ে শক্তিশালী । অন্যদিকে তার সবচেয়ে দুর্বল দিক ছিল প্রাকৃতিক দার্শনিক (বা বিজ্ঞানী) হিসাবে । গ্রীকদের চিন্তাভাবনার বেশীরভাগই সংরক্ষিত ছিল আলেকজান্দ্রিয়া শহরের লাইব্রেরীতে । এরিস্টটলের মৃত্যুর সময়কালীন সময়ে আলেকজান্দ্রিয়া পরিনত হয় সারাবিশ্বের জ্ঞানের তীর্থভূমিতে । আলেকজান্দ্রিয়ার এই লাইব্রেরী দুই দুই বার ধ্বংস করে দেয়া হয় । প্রথমবার করেছিল ক্রিশ্চান বিশপ থিওফিলাস ৩৯০ সালের দিকে । সপ্তদশ শতাব্দীতে একে দ্বিতীয়বারের মত ধ্বংস করে দেয় মুসলমানেরা । রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর পরই প্লেটোর ধারণাসমূহ জনপ্রিয় হয়ে উঠে । ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তা-চেতনা বড় ধরনের দুঃসময়ে পতিত হয় । প্লেটোর দর্শনের কারণে এরিস্টটলের অনেক ধারণাও মার খেয়ে যায় সেই সময় । প্লেটো ছিলেন মানবকেন্দ্রিক (Anthropocentric) ধারণার অনুসারী । তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব চরাচর পরম কোন সত্ত্বা সৃষ্টি করেছেন এবং তা তিনি নিয়ন্ত্রণ করে চলেছেন । এই বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডে মানুষের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বলে তিনি মনে করতেন ।


 এরিস্টটলের স্ত্রীর নাম ছিল পাইথিয়াস। তাঁদের এক কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে । পাইথিয়াস দীর্ঘদিন বাঁচেন নি । খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৩ সালে মহাবীর আলেক্সান্ডারের মৃত্যুর পর এরিস্টটল এথেন্স থেকে চলে যেতে বাধ্য হন এবং ইউবা দ্বীপের ক্যালসিস নামক স্থানে তার মায়ের জমিদারিতে অবস্থান নেন । সেখানেই তিনি পরের বছর পেটের পীড়ায় ৬৩ বছর বয়সে দেহত্যাগ করেন । প্লেটো এরিস্টটলের রাষ্ট্র ভাবনায় রয়েছে দুটি শ্রেণীর উপস্থিতি । এক, অভিজাত, দুই দাস । যাদের অস্তিত্ব হলো অভিজাতদের আরাম আয়েশের ব্যবস্থা করার জন্যে । এই দর্শনকে এখনো পড়ানো হয় এবং দর্শনের ভিত্তি বলা হয় । তাদের এই দর্শনকে বোঝাবার জন্যে কার্টুন ইলাস্ট্রেশন-এ দেখানো হয়েছিলো একটি পাহাড়, যার চূড়োটা সমতল । সেখানে বসে আছে আট দশজন অভিজাত শ্রেণীর মানুষ । আর পাহাড়ের নিচে আছে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ যারা কোনোরকমে কুঁজো হয়ে পাহাড়ের বোঝাটাকে বহন করে চলেছে । এটাকে অবিদ্যা ছাড়া আর কী বলা যায় । গ্রিক সভ্যতায় যে গণতন্ত্রের কথা বলা হয়, সে গণতন্ত্র হচ্ছে অভিজাত কিছু মানুষের গণতন্ত্র । সাধারণ মানুষের নয় ।