রোজ এক কাঁধে ভারী ব্যাকপ্যাক!
মানবদেহ মেরুদণ্ড থেকে সমভাবে দ্বিখণ্ডিত। তাই দুটি কাঁধ একসঙ্গেই কোনো ওজন বহন করতে পারে। কিন্তু লাগাতার একটি কাঁধেই যদি ওজন বহন করা হয়, তা হলে সেখানে চাপ সৃষ্টি হয়। তার ফলে সময়ের সঙ্গে কাঁধে আর্থ্রাইটিসও হতে পারে। এক কাঁধে ওজন বহন করা ফলে কারও কারও ক্ষেত্রে কাঁধে ব্যথা হতে পারে।
সময়ের সঙ্গে সেই ব্যথা কাঁধ থেকে মেরুদণ্ডেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে কাঁধের পেশিতে প্রদাহ তৈরি হতে পারে। কাঁধের ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে। এক কাঁধে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মেরুদণ্ড কোনো একটি নির্দিষ্ট দিকে বেঁকে যেতে পারে। তার ফলে ঘাড়ের পেশি শক্ত হয়ে গিয়ে ব্যথা শুরু হতে পারে।
যা খেয়াল রাখা উচিত
সব সময়ে পিঠে হালকা ওজনের ব্যাকপ্যাক নেওয়া উচিত।
কোনোভাবেই ব্যাকপ্যাক এক কাঁধে বহন করা চলবে না।
ব্যাকপ্যাকের দুটি হাতলের ভেতরে যেন নরম প্যাডিং থাকে তা দেখে নেওয়া উচিত।
ব্যাগে যদি একাধিক ভাগ (চেন বা পকেট) থাকে, তা হলে ওজনের সমবণ্টন হবে।
ব্যাকপ্যাকের আকার যেন কোনোভাবেই পিঠের আকৃতিকে ছাড়িয়ে না যায়, তা খেয়াল রাখতে হবে।
চোখের যত্নে করণীয়
গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের শতকরা ৭৫ ভাগ মানুষ দৃষ্টিশক্তিজনিত কারণে চশমা ব্যবহার করে।
তাই চোখের প্রতি যত্নবান হতে হবে। দেখে নেওয়া যাক চোখের যত্নে কী করবেন-
খাবার
গাজর, বীট, পেঁপে, মাছ ও সবুজ শাকসবজি খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। লাল রঙের ফল ও সবজিতে ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই থাকে যা চোখের জন্য উপকারী। প্রচুর জল পান করুন এবং তাজা ফল ও সবজি খান। এর ফলে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে এবং দৃষ্টিশক্তিরও উন্নতি হবে।
পানির ঝাপটা দিন
বায়ু দূষণে চোখের বেশি ক্ষতি হয়ে থাকে। বায়ু মন্ডলের ক্ষুদ্র ধূলিকণা, বিষাক্ত ধোয়া চোখে চুলকানি সৃষ্টি করে, জল আসার সমস্যা সৃষ্টি করে এবং দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দেয়। বাইরে থেকে এসে চোখে ঠাণ্ডা জলের ঝাপটা দিন। সকালে ঘুম থেকে উঠেও জলের ঝাপটা দিন চোখে। এর ফলে চোখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ হবে।
চোখের ব্যায়াম
চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য সহজ কিছু ব্যায়াম আছে। এই ব্যায়ামগুলো যেকোনো সময়ই করা যায়। সোজা হয়ে বসে ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে চোখ ঘুরান। এভাবে ৫-১০ মিনিট করুন এবং তারপর চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন।
আরেকটি সহজ ব্যায়াম হচ্ছে, চোখ থেকে ১২ ইঞ্চি দূরে এবং চোখ বরাবর একটি বস্তু রেখে তার দিকে তাকিয়ে থাকুন যতক্ষণ না চোখের পাতা পড়ে। কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে পুনরায় ব্যায়ামটি করুন। দিনে ২-৩ বার এই ব্যায়ামটি করতে পারেন।
বিশ্রাম দিন
টিভি দেখা বা কম্পিউটারে কাজ করার সময় বেশ কয়েকবার বিরতি নিন। একাধারে কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে কম্পিউটার ভিসন সিনড্রোম তৈরি হয়। ২ ঘণ্টা পর পর ১০-১৫ মিনিটের বিরতি নিন। চোখের সতেজতার জন্য আপনার ডেস্কে কিছু ফুল রাখতে পারেন। যদি আপনি জানালার পাশে বসেন তাহলে বাইরের দিকে তাকাতে পারেন। এর ফলে চোখের চাপ কমবে এবং চোখ কিছুটা রিলাক্স হতে পারবে।
সুরক্ষিত রাখুন
বাহিরে যাওয়ার সময় সানগ্লাস পরুন। সুইমিং পুলে সাঁতারের সময় সুইম গিয়ার পরুন যাতে ক্লোরিনযুক্ত জলের সংস্পর্শ থেকে চোখ সুরক্ষিত থাকে।
ভিটামিন ডি কেন এত প্রয়োজন?
আমরা জানি, সুস্থ হাড় ও দাঁতের জন্য ভিটামিন ডি প্রয়োজন। এ ছাড়াও বিভিন্ন জীবাণু থেকে রক্ষা পেতেও সাহায্য করে ভিটামিন ডি।
খাবারের পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপায়ে সূর্যের আলো থেকেই আমরা ভিটামিন ডি পেয়ে থাকি।
ভিটামিন ডি কেন আমাদের প্রয়োজন
• শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধিতে কাজ করে
• বয়স্কদের হাড় জনিত ক্ষয়রোগ থেকে রক্ষা করে
• ক্যালশিয়ামের শোষণ ও ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
• ঠান্ডা লাগা, সর্দিকাশি ভালো হয়
• তীব্র রোদে মাত্র কয়েক মিনিটেই দুর্বল হয়ে সংক্রামক জীবাণু।
শরীরে ভিটামিন ডি’র অভাব দেখা দিলে
• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়
• কোথাও কেটে গেলে ঘা শুকাতে বেশি সময় লাগে
• স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চুল পড়ে
• দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়।
ভিটামিন ডি বাড়ানোর উপায়
• সানস্ক্রিন না মেখেই দিনে ১০-১৫মিনিট রোদে কাটান
• ড্রাইভ করার সময় গাড়ির জানলা খোলা রাখুন যাতে রোদ এসে লাগে
• চা-কফির মগ হাতে নিয়ে বারান্দায় চলে যান যেখানে রোদ আসে। এ ছাড়া ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ গরুর দুধ, মাশরুম, ডিম, পালং শাক, টকদই ও কমলা রাখুন প্রতিদিনের খাবারের তালিকায়।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভিটামিন ডি’র ওষুধ খাওয়া যাবে না।
সকালে ফুরফুরে মেজাজ পেতে
* সকালে ঘুম থেকে উঠে অন্তত এক ঘণ্টা মোবাইল বা ল্যাপটপ থেকে নিজেকে দূরে রাখা উচিত। ডিজিটাল পর্দা থেকে নির্গত নীল আলো রেটিনা এবং দেহে মেলাটোনিন ক্ষরণের তারতম্য ঘটায়, তার ফলে মস্তিষ্ক সকালের সময়টিকে দুপুর ভাবে এবং সেই মতো চিন্তা করতে শুরু করে। তার ফলে উদ্বেগ, হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি পায়, যা দিনের শুরুর ছন্দপতন ঘটায়।
* সকালে উঠে খালি পেটে অনেকেরই কফি পানের অভ্যাস রয়েছে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দেহে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। তবে কফির মধ্যে উপস্থিত ক্যাফিন তাতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তার ফলে অনেক সময়েই এনার্জির মাত্রা কমে যেতে পারে। তাই ঘুম থেকে ওঠার কমপক্ষে এক ঘণ্টা পর কফি পান করা উচিত।
* রাতে ঘুমোনার পর শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হয়। চিকিৎসকদের মতে, সকালে ঘুম ভাঙার পর মস্তিষ্ক এবং কিডনির সকলের আগে পানির প্রয়োজন হয়। কারণ, মস্তিষ্কের নির্দেশে পানির সাহায্যে দেহ থেকে দূষিত পদার্থগুলো বার করে। তাই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বেশি ক্ষণ পানি পান না করলে মাথাব্যথা, মুড সুইং এবং চিন্তার ধারা ব্যাহত হতে পারে। ঘুম ভাঙার পর তাই অন্তত এক গ্লাস পানি পান করা উচিত
‘সুপার ফ্রুট’ পেয়ারা
নানা পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য পেয়ারা ‘সুপার ফ্রুট’ নামে পরিচিত। অন্যান্য ফলের চেয়ে পেয়ারার পুষ্টিগুণ বেশি। বিশেষ করে ভিটামিন ‘সি’ এর পরিমাণ এত বেশি যে আমলকী বাদে অন্য কোনো ফলে এত ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায় না।
১। পেয়ারাতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ আছে। ১০০ গ্রাম পেয়ারায় ১৮০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। ফলটি ঠাণ্ডা কাশির পথ্য। তাছাড়া শ্বাসতন্ত্র, গলা ও ফুসফুসকে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে সুরক্ষা করে। রক্তসঞ্চালন ঠিক রাখে তাই হার্টের রোগীরা পেয়ারা খেতে পারেন।
২। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। যা দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তারা পাকা পেয়ারা খেতে পারেন।
৩। পেয়ারায় যে পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ থাকে তা শরীরে গেলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
৪। যেকোনো ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বা পেটের গোলযোগে কার্যকরী। এই ফলটিতে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট ও অ্যান্টি-মাইক্রোবাল উপাদান থাকে যা পাকস্থলির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া ত্বক ভালো রাখার সঙ্গে সঙ্গে ত্বককে টানটান রাখে।
৫। পেয়ারা ডায়াবেটিস, ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসার মতো রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। পেয়ারা ডায়রিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে পারে। তাই নিয়মিত পেয়ারা খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে অনেকটা। পেয়ারার আছে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা।
ক্যালোরি পোড়াতে যেভাবে হাঁটবেন
হাঁটলে সারা শরীরের ব্যায়াম হয়। খোলা হাওয়ায় হাঁটলে মন ভালো হয়। পায়ের পেশি মজবুত হয়, হৃদযন্ত্র ভালো থাকে। তবে বুঝে নিতে হবে কোন পদ্ধতির হাঁটায় আপনার লাভ।
পাওয়ার ওয়াকিং
স্বাভাবিক গতির চেয়ে দ্রুত গতিতে হাঁটার নাম হলো ‘পাওয়ার ওয়াকিং’। অর্থাৎ, এমন ভাবে হাঁটতে হবে যেন হার্ট রেট বা হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যায়। তবেই ক্যালোরি ঝরবে। একটানা এভাবে হাঁটলে অনেক সময়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে। তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
ইনক্লায়িং ওয়াকিং
পাহাড়ি বা খাড়াই পথে হাঁটা বা ‘ইনক্লায়িং ওয়াক’ দ্রুত ক্যালোরি ঝরাতে সাহায্য করে। পায়ের বা ঊরুর পেশির গঠন মজবুত করতেও সাহায্য করে।
ইন্টারভাল ওয়াকিং
একটানা দ্রুত গতিতে হাঁটলেন মিনিট চারেক। তার পর হাঁটার গতি কমিয়ে দিলেন। মিনিট দুয়েক এভাবে হাঁটলেন। শরীরের অবস্থা বুঝে আবার গতি বাড়িয়ে দিলেন। এভাবে হাঁটলেও কিন্তু ক্যালোরি পোড়ে। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
হাঁটলে এন্ডরফিন নামে হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। মেজাজ ভালো রাখতে এই হরমোন সাহায্য করে বলে একে ‘হ্যাপি হরমোন’ বলা হয়। এজন্য সুস্থ থাকতে চাইলে হাঁটুন।
কাঁচা ছোলা খাওয়া
পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন সকালে কাঁচা ছোলা খাওয়া একটি ‘সুপার হেলদি হ্যাবিট’। বিশেষ করে ভেজানো ছোলা খেলে পুষ্টিগুণ আরও বৃদ্ধি পায় এবং তা সহজে হজম হয়।
রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণে রাখে:
ছোলায় থাকা কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজ ছাড়ে, ফলে শর্করার লেভেল হঠাৎ করে বাড়ে না। টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এটি দারুণ কার্যকর।
কাঁচা ছোলায় রয়েছে ভিটামিন A, B6, জিঙ্ক এবং ম্যাঙ্গানিজ, যা চুলের গোড়া শক্ত করে, চুলের আগা ফাটা এবং অকালপক্কতা রোধ করে। নিয়মিত খেলে চুল হয় ঘন, মজবুত ও ঝলমলে।
রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমায়:
ছোলায় থাকা পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রক্তনালীর দেয়ালকে সুস্থ রাখে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হার্টও ভালো থাকে। ছোলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে পারে।
হিমোগ্লোবিন বাড়ায়, রক্তশূন্যতা রোধ করে:
আয়রনে ভরপুর কাঁচা ছোলা রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। এটি অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক এবং গর্ভবতী নারীদের জন্যও এটি উপকারী একটি প্রাকৃতিক খাবার।
ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না:
ছোলায় থাকা ম্যাঙ্গানিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বলিরেখা ও ফাইন লাইনস কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ছোলা খেলে ত্বক হয় তরতাজা, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।
প্রাকৃতিক শক্তি আর সুস্থতার সহজ উৎস:
কাঁচা ছোলা কোনো বিলাসবহুল খাবার নয়। কিন্তু এটি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীর ও মন- দুটোই থাকবে সতেজ। এক মুঠো ছোলায় পাওয়া যাবে প্রাকৃতিক প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজের মিশ্রণ, যা আপনাকে রাখবে দিনভর সক্রিয়।
সকালের শুরুটা যদি হয় ভেজানো কাঁচা ছোলায়, তাহলে সেটা শুধু পেট নয়- সারা দিনের শক্তি ও সুস্থতার বিনিয়োগ হিসেবেও ধরা যায়। তাই আজ থেকেই এই ছোট্ট, উপকারী অভ্যাসটা গড়ে তুলুন।
ব্ল্যাক কফি খেলে কী হয়?
দুধ-চিনি ছাড়াই খাঁটি কফির স্বাদ ও গন্ধ যেন এক ধরনের নেশা তৈরি করে! শুধু স্বাদের জন্য নয়, প্রতিদিন এক কাপ ব্ল্যাক কফি আমাদের শরীর ও মনের জন্য হতে পারে আশীর্বাদ স্বরূপ, বলছেন পুষ্টিবিদরা।
শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়ায়:
ব্ল্যাক কফিতে থাকা ক্যাফেইন আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে এবং অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে শরীর আরও বেশি কর্মক্ষম হয়। বিশেষ করে যারা ওয়ার্কআউট করেন, তাদের জন্য এক কাপ ব্ল্যাক কফি হতে পারে প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি:
ব্ল্যাক কফি স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে কার্যকর। এতে থাকা ক্যাফেইন নিউরোট্রান্সমিটার যেমন ডোপামিন ও নোরেপাইনফ্রিনের মাত্রা বাড়ায়, যা মস্তিষ্ককে সজাগ ও সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। পরীক্ষার প্রস্তুতি হোক বা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ প্রেজেন্টেশন- এক কাপ ব্ল্যাক কফিই হতে পারে আপনার গোপন অস্ত্র!
ওজন কমাতে সহায়ক:
ব্ল্যাক কফিতে ক্যালোরি প্রায় নেই বললেই চলে। এটি বিপাকীয় হার বাড়ায় এবং ক্ষুধা দমন করতে সাহায্য করে। ফলে এটি ওজন কমানোর ডায়েটের অংশ হিসেবে কার্যকরভাবে কাজ করে। তবে অবশ্যই এটি সুষম খাদ্যাভ্যাসের পরিপূরক হিসেবেই গ্রহণ করা উচিত।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের আধার:
ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও পলিফেনলের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর ব্ল্যাক কফি আমাদের শরীরকে সুরক্ষা দেয় নানা ধরনের ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে। এটি শুধু শরীর নয়, ত্বকের বার্ধক্য রোধেও সহায়তা করে। অর্থাৎ, সৌন্দর্য রক্ষায়ও ভূমিকা রাখে এক কাপ কফি!
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ব্ল্যাক কফি পান করলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, পার্কিনসন, এমনকি কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে। এছাড়াও এটি লিভার ফাংশন উন্নত করে, ফ্যাটি লিভার এবং সিরোসিস প্রতিরোধে সহায়তা করে।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নে কফি:
ব্ল্যাক কফি শুধু শরীর নয়, মনকেও সতেজ রাখে। এটি হতাশা কমাতে সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ হ্রাস করে মনকে রাখে সক্রিয়। যাদের নিয়মিত মন-মেজাজ খারাপ থাকে, তারা পরিমিত মাত্রায় ব্ল্যাক কফি খেতে পারেন।
আলঝাইমার ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি হ্রাস:
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক রোগের আশঙ্কাও বাড়ে। তবে আশার কথা হলো, নিয়মিত ক্যাফেইন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ স্নায়ু সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে। ফলে ব্ল্যাক কফি নিয়মিত খেলে আলঝাইমার ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যেতে পারে।
তবে সব ভালো জিনিসেরই একটা সীমা থাকে। ব্ল্যাক কফির ক্ষেত্রেও তাই। দিনে দুই থেকে তিন কাপের বেশি কফি খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন ঘুমের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ এবং গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যাও তৈরি করতে পারে। তাই সুস্থতা ও সতেজতার জন্য পরিমিত পরিমাণে খাঁটি ব্ল্যাক কফি আপনার ডায়েটের অংশ হতে পারে।
ভাজাপোড়া খেয়ে সুস্থ থাকার উপায়
ভাজাপোড়া খাওয়ার অভ্যাসে ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরেল, উচ্চ রক্ত চাপের মতো রোগ হতে পারে। মাঝে মধ্যে ভাজাপোড়া খাওয়া যেতেই পারে। আর সেজন্য মানতে হবে কিছু নিয়ম ও শর্ত।
বেশি ভাজাপোড়া খাওয়ার পর অস্বস্তি হতে পারে, এজন্য ৩০- ৪০ মিনিট পর হালকা গরম পানি খেয়ে নিন। ভাজাপোড়া খাওয়ার পর একদম ঘুমাতে যাবেন না; এতে অস্বস্তি বাড়ে। হজমেও সমস্যা শুরু হয়।
যেকোনো ভারী খাবার খাওয়ার পর সবচেয়ে ভালো উপকার হয় টক দই খেলে।
ভাজাপোড়া খাওয়ার সঙ্গে আইসক্রিম বা ঠাণ্ডা পানীয় খাবেন না। এই সব খাবার হজম প্রতিক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে, ফলে অস্বস্তি আরও বাড়ে।
টক্সিক মানুষ কীভাবে এড়িয়ে চলবেন
আত্মীয়-পরিজন, সহকর্মী, বন্ধুদের মধ্যেও এমন অনেক মানুষ থাকেন, যাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে ইচ্ছে হয় না। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে যোগাযোগ রাখতে হয়। তাদের টক্সিক ব্যবহার আপনার মেজাজ নষ্ট করে দেয়। কিন্তু এই ধরনের মানুষের থেকে কী ভাবে দূরত্ব বজায় রাখবেন, ৩ টি টিপস আপনার জন্য-
টক্সিক মানুষেরা কী কথা বলল, আপনাকে নিয়ে কী ভাবছে, এই সব নিয়ে বেশি মাথা ঘামাবেন না। তাদের কোনও কথা মনে রাখবেন না।
যখন টক্সিক মানুষের সঙ্গে দেখা হবে, তখন তাদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। তাদের সঙ্গে বেশি কথা বলবেন না। কোনও ব্যক্তিগত তথ্য, আনন্দের খবর কিছুই শেয়ার করবেন না। যতটা সম্ভব কম কথা বলুন এবং শান্ত থাকার চেষ্টা করুন। এই ধরনের মানুষেরা আপনাকে উত্যক্ত করার চেষ্টা করবে, কিন্তু আপনার শান্ত থাকতে হবে।
টক্সিক মানুষেরা আপনার সব বিষয়ে খুঁত ধরবে। আপনি যতই ঠিক হন, আপনার মধ্যে তারা ভুল খুঁজে পাবেই। তাদের এই টক্সিক ও নেগেটিভ আচরণের প্রভাব নিজের মধ্যে ফেলতে দেবেন না। পজিটিভ থাকার চেষ্টা করুন।
প্রতিদিন খালি পেটে বিটরুটের জুস খেলে
এই জুস পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা শক্তির মাত্রা বাড়ায়, সামগ্রিক সুস্থতা উন্নত করে এবং এমনকী দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে। খালি পেটে বিটরুটের জুস পান করা বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে, এতে পুষ্টির সর্বোত্তম শোষণ হয়।
. রক্তচাপ কমায়
খালি পেটে বিটরুটের জুস পান করলে নাইট্রেট রক্তনালীতে দ্রুত শোষিত হয়। বিটরুটের রস নাইট্রেট দিয়ে ভরপুর, যা রক্তনালীকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে, রক্ত প্রবাহ উন্নত করে। জার্নাল অফ হিউম্যান হাইপারটেনশন-এ প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে, নিয়মিত বিটরুটের জুস পান করলে তা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তচাপ কমাতে কাজ করে।
২. হজমশক্তি উন্নত করে
খালি পেটে বিটরুটের জুস হজম স্বাস্থ্যের জন্য অতিরিক্ত উপকারিতা দেয়। এর কার্যকারিতার রহস্য কী? এর রসে থাকা ফাইবার উপাদান অন্ত্রের গতিবিধিকে উদ্দীপিত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং নিয়মিত মলত্যাগে সাহায্য করে। সকালে এটি পান করলে তা পাচনতন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যার ফলে পুষ্টির শোষণ এবং হজমশক্তি উন্নত হয়।
৩. শক্তি বৃদ্ধি করে
সকালে বিটরুটের জুস পান করে প্রাকৃতিক শক্তি বৃদ্ধি দিয়ে আপনার দিন শুরু করুন! বিটরুটের রসে থাকা নাইট্রেট পেশীতে রক্ত প্রবাহ এবং অক্সিজেন সরবরাহ উন্নত করে আশ্চর্যজনকভাবে কাজ করে, যার অর্থ আরও স্ট্যামিনা এবং কম ক্লান্তি। আপনি জিমে যান বা আপনার দৈনন্দিন কাজ করুন না কেন, বিটরুটের জুস আপনাকে সহজেই শক্তি অর্জনে সহায়তা করবে।
৪. ডিটক্সিফিকেশন
খালি পেটে বিটরুটের জুস পান করলে শরীরের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবারে ভরপুর বিটরুটের রস বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। বিটরুটের জুস আপনার সকালের রুটিনের অংশ করে নিন। এতে আপনি শরীরকে সতেজ করে তুলতে পারবেন।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বিটরুটের জুস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং অসুস্থতা থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অত্যাবশ্যক। তাই নিয়মিত খালি পেটে এর জুস খাওয়ার অভ্যাস করুন।
নেকের জীবনধারা এমন যে দিনের বেশিরভাগ সময় কেটে যায় বসে কাজ করে। বিশেষ করে অফিসকর্মী বা ঘরে বসে কাজ করা মানুষদের দৈনন্দিন জীবনে শারীরিক নড়াচড়া খুব সীমিত থাকে। অথচ গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘসময় বসে থাকা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা এমনকি অকালমৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।
বসে থেকেও শরীর সচল
সবসময় উঠে দাঁড়ানো সম্ভব হয় না। তবে চেয়ারে বসে থেকেও কিছুটা নড়াচড়া করা যায়। কাঁধ ঘোরানো, গলা প্রসারিত করা, কবজি ও আঙুলে হালকা ব্যায়াম এর মধ্যে পড়ে।
লরি ডিয়ামস বিশেষভাবে সুপারিশ করেছেন ‘সোলিয়েস পুশ-আপ’ বা বসা অবস্থায় গোড়ালি তোলা-নামানো। গবেষণায় দেখা গেছে, এভাবে নড়াচড়া করলে দেহের বিপাকক্রিয়া সক্রিয় হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
প্রতি ঘণ্টায় দাঁড়ানো
এখন স্মার্ট ঘড়ি বা মোবাইলে নোটিফিকেশন আসে প্রতি ঘণ্টায় উঠে দাঁড়াতে। অনেকেই বিরক্ত হয়ে এ ফিচার বন্ধ করে দেন। তবে লরি ডিয়ামস মনে করিয়ে দেন, “প্রতি ৪৫ থেকে ৬০ মিনিট পর উঠে দাঁড়িয়ে কয়েক মিনিট হাঁটা, শরীর টানটান করা বা ভঙ্গি পরিবর্তন করা জরুরি। এটি রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে ও মনোযোগ বাড়ায়।” তিনি আরও বলেন, “এক-দুই মিনিটের জোরালো হাঁটা বা তেজি নড়াচড়া উচ্চমাত্রার ব্যায়ামের প্রায় সমান উপকার এনে দেয়।”
দৈনন্দিন কাজে বাড়তি কষ্ট
সবাই জানি বাজারে বা অফিসে যাওয়ার সময় গাড়ি একটু দূরে রেখে হাঁটলে বাড়তি কদম জমে। তবে তারাহ ডি লিয়ন মনে করেন, এর বাইরেও অনেক উপায় আছে। যেমন- একবারে সব বাজারের ব্যাগ না তুলে একাধিকবার আসা-যাওয়া করা, কাপড় সিঁড়ি বেয়ে কয়েকবারে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। লরি ডিয়ামস যোগ করেন, “হাঁটার সময় গতি পরিবর্তন করা বা নিরাপদ জায়গায় উল্টো, পাশ দিয়ে বা আড়াআড়ি হাঁটার মতো ভিন্নতা আনলেও শরীর নতুনভাবে চ্যালেঞ্জ পায়।“
কাজের তালিকায় নড়াচড়া যোগ
প্রতিদিনের কাজগুলো একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে নড়াচড়া বাড়ানোর অনেক সুযোগ আছে। যেমন- সন্তানের খেলার সময়ে বসে না থেকে হাঁটা, টেলিভিশন দেখার সময় ‘স্ট্রেচিং’, বই বা গান শোনার সময় হাঁটা বা সাইকেল চালানো। তারাহ ডি লিয়নের মতে, “সচেতনভাবে খুঁজলে প্রতিদিনই নড়াচড়া করার নতুন নতুন উপায় পাওয়া যায়।”
বসে থাকার বিকল্প
লরি ডিয়ামস বলেন, “শরীর এক জায়গায় চুপচাপ বসে থাকার জন্য নয়, বরং নড়াচড়ার জন্য তৈরি।” তাই সম্ভব হলে দাঁড়িয়ে কাজ করার ডেস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্যদিকে, চেয়ার বদলে বড় বল বা ভারসাম্য রাখার বিশেষ কুশন ব্যবহার করলে শরীর সামান্য দুলে বা নড়েচড়ে সক্রিয় থাকে। এতে মনোযোগও বাড়ে।
বেশি পানি পান
শরীরের সুস্থতার জন্য পানি পান করা যেমন জরুরি, তেমনি এটি নড়াচড়া বাড়ানোর সহজ কৌশলও। লরি ডিয়ামস বলেন, “যতবার পানি পান করবেন, ততবার বোতল বা গ্লাস ভরতে উঠতে হবে। আবার প্রস্রাব করতে গেলেও শরীর নড়বে।” ফলে সারাদিনে অনেকবার প্রাকৃতিকভাবে নড়াচড়ার সুযোগ তৈরি হয়।
নিজের শরীরের ওজন কাজে লাগানো
অফিসে বা ঘরে বসেই শরীরের ওজন ব্যবহার করে হালকা ব্যায়াম করা সম্ভব। যেমন- দেয়ালে ভর দিয়ে বুকডন, চেয়ারে বসে হাতের ভর দিয়ে ওঠা, স্কোয়াট, লঞ্জ বা বসা থেকে দাঁড়ানো-ওঠা।
লরি ডিয়ামস বলেন, “চেয়ারের হাতল, দেয়াল বা দরজার ফ্রেমকেও ব্যায়ামের কাজে লাগানো যায়। মূল লক্ষ্য হল অলসতা ভেঙে ফেলা, অজুহাত না বানানো এবং যতটুকু সম্ভব শরীর সচল রাখা।”
যে ভিটামিনের ঘাটতি হলে অতিরিক্ত ঘুম পায়
সারারাত ঘুমিয়ে সকালে উঠতেই ক্লান্তি অনুভব হয় অনেকের। সকালের নাস্তা সারতেই চোখে ঘুম যেন জেঁকে বসে। এছাড়া, আড্ডা কিংবা ঘরে অলস সময় পার করলেও ঘুম পায় অনেকের। ঘুম পাওয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয়গুলোর মধ্যে পড়ে, তবে কী কারণে মাত্রাতিরিক্ত ঘুম পায় জানেন কি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন ‘বি’, বিশেষ করে বি-১২ হলো সেই অন্যতম প্রধান ভিটামিন যার অভাবে ক্লান্তি বাড়ে ও ঘুম বেশি পেতে থাকে। এছাড়া, রক্তস্বল্পতার কারণে ক্লান্তি পেতে পারে, যা অতিরিক্ত ঘুমের দিকে পরিচালিত করে।
লোহিত রক্তকণিকা এবং ডিএনএ উৎপাদনের জন্য ভিটামিন বি১২ অপরিহার্য। এটি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতার জন্যও অপরিহার্য। যখন আপনার শরীর পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২ পায় না তখন আপনি সারাক্ষণ ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। এটি দুর্বলতাও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীর পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২ না পেলে আপনি সারাক্ষণ ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। এমনকি ঘুম ঘুম বোধ হতে পারে।
তাই সতর্ক হোন। মনে রাখবেন আমাদের শরীরে এই ভিটামিন তৈরি হয় না। খাদ্য থেকে এটি আহরণ করতে হয় শরীরকে। ভিটামিন বি১২ এর খাদ্য উত্স হলো মাছ, মাংস, ডিম,
দিনে কয়টি কলা খাবেন
পুষ্টিবিদদের মতে, কলাতে গ্লুকোজ ও ক্যালোরি থাকে। কলা অনেক সময় ধরে পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে দিনে কয়টা করে কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বিশেষজ্ঞদের কথায় কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম রয়েছে। তাই কলা বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মাঝারি সাইজের কলা প্রাপ্তবয়স্করা দিনে দুই থেকে তিনটি করে খেতে পারে। তবে শিশুদের দিনে একটি করে কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অন্যদিকে কলা অনেক সময় গাছপাকা হয় না। কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়। তাই অতিরিক্ত কলা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। প্রচুর পরিমাণে কলা খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। একটি মাঝারি সাইজের কলাতে ১০৫ ক্যালরি শক্তি থাকে। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে তাহলে তাদের দৈনিক একটা বেশি কলা খাওয়া ভালো নয়। কলায় টাইরামইন থাকে, যা মাইগ্রেনের কারণ।
কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে। রক্তে পটাসিয়াম বেড়ে গেলে ক্লান্ত অনুভূত হয়। হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। তাই প্রচুর পরিমাণে কলা খাওয়া ঠিক নয়। কলায় প্রচুর শর্করা থাকে। এটি দন্তক্ষয়ের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের কথায় চকোলেটের থেকেও বেশি শর্করা থাকে কলায়।
ছিপছিপে থাকতে কাঁচা পেঁপে খান
পেঁপে কাঁচা অবস্থায় খেলে বেশি সুফল মেলে। তার মানে এই নয় যে, পাকা পেঁপের স্বাস্থ্যগুণ নেই। তবে কাঁচা পেঁপে খেলে বাড়তি কিছু উপকার পাওয়া যায়। সেগুলো কী?
* হজমের গোলমাল ঠেকায়
হজমের গোলমাল ঠেকাতে কাঁচা পেঁপে উপকারী। পেঁপেতে থাকা প্যাপেইন বিপাকহার বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়াও পেঁপেতে থাকা ফাইবার পেটের গোলমালের ঝুঁকি কমায়। হজম সংক্রান্ত সমস্যায় পেঁপে ওষুধের মতো কাজ করে।
* ত্বকের খেয়াল রাখতে
পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি এবং ই। এ ছাড়াও এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টেরর মতো উপাদান। ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ত্বককে ভেতর থেকে সতেজ এবং সজীব রাখে। ত্বকের পুষ্টিদায়ক উপাদান কোলাজেন বাড়াতেও সাহায্য করে পেঁপে। নিয়ম করে পেঁপে খেলে ত্বক ঝলমলে হবে।
* ওজন নিয়ন্ত্রণে
ছিপছিপে থাকতে ভরসা রাখতে পারেন কাঁচা পেঁপের ওপর। পেঁপেতে রয়েছে ফাইবার, যা ওজন ধরে রাখতে দারুণ উপকারী। পেঁপেতে থাকা ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি রাখতে সাহায্য করে। ফলে ঘন ঘন খাবার খাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় না। ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও কমে।
সকাল আর দুপুরের খাবারের বিরতিতে পেঁপে খেতে পারেন। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, নিম্ন রক্তচাপের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে সেসঙ্গে ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখে। পেঁপে শরীরের জন্য অনেক বেশি ভালো হলেও কয়েকজনের ক্ষেত্রে পেঁপে ক্ষতিকর হতে পারে। কিছু নির্দিষ্ট সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষের ক্ষেত্রে পেঁপে খাওয়া ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
বুক ধড়ফড় করা
পেঁপে খাওয়া হার্ট সংক্রান্ত অসুখের ঝুঁকি কমাতে পারে, তবে আপনি যদি এরই মধ্যেই অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে পেঁপে এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যে পেঁপেতে অল্প পরিমাণে সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড, অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে যা মানুষের পাচনতন্ত্রে হাইড্রোজেন সায়ানাইড তৈরি করতে পারে। যদিও উৎপাদিত যৌগের পরিমাণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে এর অতিরিক্ত মাত্রায় হৃদস্পন্দনের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের উপসর্গ আরও খারাপ করে দিতে পারে। হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওপরও এটি একই প্রভাব ফেলতে পারে।
গর্ভবতী নারী
শিশুর সঠিক বৃদ্ধি ও গর্ভবতী নারীর সুস্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তবে, পেঁপে এমন একটি ফল যা এ সময়ে বাদ দেওয়া উচিত। মিষ্টি ফলের মধ্যে ল্যাটেক্স থাকে যা জরায়ুকে সংকোচন করতে পারে আর যার ফলে ঘন ঘন প্রসাব হয়। পেঁপেকে যে প্যাপেইন রয়েছে তা ঝিল্লিকে দুর্বল করে দিতে পারে। এছাড়া পেঁপের বীজ,পাতা, শিকড় গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আধা-পাকা পেঁপেতে এ সমস্যা হয়।
কিডনিতে পাথর
পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে পেঁপেতে। তবে, ভিটামিন সি অধিক পরিমাণে খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ভিটামিন ‘সি’ অত্যধিক গ্রহণের ফলে ক্যালসিয়াম অক্সালেট কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। এমনকি এটি পাথরের আকার বাড়িয়ে তুলতে পারে। আর এতে করে প্রসাবে সমস্যা তৈরি হয়।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া আক্রান্ত
ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য পেঁপে একটি উপযুক্ত ফল মনে করা হয় কারণ এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু যারা এরই মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ মিষ্টি জাতীয় ফলে অ্যান্টি-হাইপোগ্লাইসেমিক বা গ্লুকোজ-হ্রাসকারী প্রভাব রয়েছে। এটি হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাকে বিপজ্জনক স্তরে নিয়ে যেতে পারে, যার ফলে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা এবং দ্রুত হৃদস্পন্দনের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
অ্যালার্জির সমস্যা
অ্যালার্জিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও পেঁপে থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। এটি ঘটে কারণ পেঁপেতে কাইটিনেস নামক এনজাইম থাকে। এনজাইম ল্যাটেক্স এবং এ জাতীয় খাবারের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। যার ফলে হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং চোখ পানি আসে। অনেকের আবার পেঁপের গন্ধেও সমস্যা হতে পারে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে যা খাবেন
রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে নিয়ন্ত্রিত ওজন, এজন্য প্রয়োজন পরিমিত খাবার ও নিয়মিত ব্যায়াম।
• ওটস বা যব এর স্বাস্থ্যগুণের গোপন উৎস দ্রবণীয় আঁশ, যা কোলেস্টেরলকে শরীর থেকে ধুয়ে বের করে দেয়। আড়াইশ গ্রাম দুধে ৩৫ গ্রাম ওটস দিয়ে তিন মিনিট রান্না করে নিয়ে সহজেই সারতে পারেন সকালের নাস্তা।
• বিশেষ করে গরুর মাংস না খাওয়ার কথা বলা হয়। তবে কখনো একটু ইচ্ছে হলে দুই এক পিস খেতে পারেন। মাংস খাওয়ার পর টক দই খেয়ে নিন।
• ঘি, ডালডা শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়, এর পরিবর্তে রান্নায় ভেজিটেবল ওয়েল, অলিভ বা সানফ্লাওয়ার অয়েল ব্যবহার করুন।
• কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে খাদ্য তালিকায় পালংশাক রাখুন
• প্রতিদিন একমুঠ পরিমাণ চিনাবাদাম, আখরোট, কাজুবাদাম যেকোনোটি খেতে পারেন
• নিয়মিত আমলকির জুস খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে।
• গ্রিন-টি আমাদের শরীরকে সতেজ ও উৎফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। এটি হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়। নিয়মিত গ্রিন-টি পান করলে শরীরের ওজন ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
• এছাড়াও লাল আটার তৈরি রুটি, রসুন, মেথি, শিম, বিভিন্ন ডাল খাবারে রাখুন।
• ডুবু তেলে ভাজা বাইরের মুখরোচক খাবার না খেয়ে টাটকা দেশি ফল খান
• ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ খেলেও উপকার পাবেন।
ব্যায়াম:
আধাঘণ্টা করে ফ্রি-হ্যান্ড এক্সসারসাইজ, হাঁটা-দৌঁড়ানো-সাইকেল চালানো-সাঁতার কাঁটা যেটা করতে ভালো লাগে সপ্তাহে পাঁচদিন করুন।
মসুর ডাল বেশি খেলে হতে পারে যে সমস্যা
অন্যান্য ডালের চেয়ে মসুর ডালে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। তাছাড়া ডাল উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। পুষ্টিবিদরা বলেন, এক কাপ সেদ্ধ মসুর ডাল থেকে পাওয়া যায় ১৮০ ক্যালোরি। এতে প্রোটিনের পরিমাণ প্রায় ১০ গ্রাম এবং ফাইবার রয়েছে ছয় গ্রাম। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে দুই বেলা দুই বাটি ডাল খেলেও প্রোটিনের ঘাটতি মেটানো যায়। নিরাপদ ভেবে মসুর ডাল বেশি খেয়ে ফেললেও কিন্তু বিপদ।
প্রোটিনের পাশাপাশি মসুর ডালে রয়েছে পিউরিন নামক একটি উপাদান। এই উপাদানটিই রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। আর্থ্রাইটিস ছাড়া অস্থিসন্ধির ব্যথা বেড়ে যাওয়ার পেছনে কিন্তু মুসুর ডালের ভূমিকা রয়েছে।
যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাদেরও মসুর ডাল খেতে বারণ করেন পুষ্টিবিদরা। অতিরিক্ত মুসুর ডাল খেলে অক্সালেটের পরিমাণ বেড়ে যায়। কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়ার মূল উপাদান হলো অক্সালেট।
অনেকেরই ডাল খেলে অ্যালার্জি হয়। তেমন সম্ভাবনা থাকলে কিন্তু ডাল না খাওয়াই ভালো। না হলে গায়ে র্যাশ বেরোতে পারে, সারা গা ফুলে যেতে পারে। কারও কারও আবার চুলকানির সমস্যাও দেখা যায়। অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছলে শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হতে পারে।
ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জন্য ডায়েট
কী খাবেন:
• পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান
• খাদ্য তালিকায় অন্তত তিন ধরনের তাজা সবজি থাকতে হবে
• প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খান
• কম ফ্যাটযুক্ত দুধ পান করুন
• প্রতিদিন কম করে ২০-২৫ গ্রাম কাঁচা পেঁয়াজ খান
• খানিকটা দারুচিনি খেতে পারেন
• নিয়মিত পরিমাণমতো তাজা ফল খেতে হবে
• মনে রাখতে হবে যতটা সম্ভব হারবাল চা পান করতে হবে, ক্যাফেইন চায়ের পরিবর্তে।
খাবেন না বা কম খাবেন:
• কখনও বেশি পরিমাণে খাওয়া চলবে না
• যেসব খাদ্য বা পানীয়তে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে সেসব বর্জন করতে হবে
• কাঁচা লবণ নয়
• বেশি ভাজা ও তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যাবে না
• প্রতিদিন দু কাপের বেশি চা বা কফি
• দুধ খেতে হলে ফ্যাট কমিয়ে খেতে হবে
• পনির খেতে হবে ফ্যাট ছাড়া
• ভাত, আলু, কলা এবং গাজর রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়ায়। সুতরাং যত কম খাবেন, তত ভালো।
মিউজিক থেরাপি
২১ জুন বিশ্ব সংগীত দিবসের আবির্ভাব। বর্তমানে ১২০টিরও বেশি দেশে এই দিবস উদযাপিত হয় পৃথিবীতে শান্তি ও ইতিবাচক চিন্তা ছড়িয়ে দিতে। মিউজিক থেরাপি ঠিক এমনই একটি উপায়, যা সংগীতের মাধ্যমে মন ভালো রাখা এবং মানসিক সুস্থতা ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেয়। এ থেরাপি উদ্বেগ, বিষণ্নতা বা অন্যান্য মানসিক চাপে থাকা মানুষের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
মানসিক চাপ
রোগীকে রিলাক্সেশন থেরাপি দেওয়া হয়, যেখানে মিউজিক থেরাপির সঙ্গে বিভিন্ন ছবি দেখানো হয়। এভাবে রোগীকে শান্ত করা হয় যাতে তিনি নিজের সমস্যার কথা অবলীলায় চিকিৎসকের কাছে প্রকাশ করতে পারেন।
অটিজম
মিউজিক থেরাপি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর মন অনেকটা শান্ত করে এবং অন্য মানুষের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই সমস্যা শৈশবেই ধরা পড়ে, তাই যত কম বয়স থেকে মিউজিক থেরাপি আরম্ভ করা যায় তত ভালো।
ডিমেনশিয়া
বয়স্ক রোগী অকারণে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ডিমেনশিয়ার ক্ষেত্রে রোগীর হার্ট বা সেরিব্রাল স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মিউজিক থেরাপি এই সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে এবং রোগীর মধ্যে সহযোগিতা করার মনোভাব জাগে।
অবসাদ
বয়স্কদের এবং নারীদের ক্ষেত্রে এই রোগ সারাতে মিউজিক থেরাপি খুবই কার্যকর।
স্লিপ ডিজঅর্ডার
যাদের সহজে ঘুম আসে না, তাদের ক্ষেত্রে মিউজিক থেরাপি কার্যকরী। ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে থেকে আলো নিভিয়ে বা হালকা আলো জ্বালিয়ে, কোনো হালকা সুরে মিউজিক শুনলে মন শান্ত হয়ে যায় এবং ঘুম আসে। এ ছাড়া যেসব শিশুর আইকিউ লেবেল কম, যেসব রোগীর হাইপ্রেশার বা শারীরিক ব্যথা-তাদের জন্য মিউজিক থেরাপি কার্যকর।
আমড়া খান, সুস্থ থাকুন
শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ কিংবা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আমড়া খেতে পারেন।
আমড়াতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। ফলে সহজেই সুস্থ থাকতে পারবেন। এ ফলটিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি, লোহা, ক্যালসিয়াম আর আঁশ পাওয়া যায়।
আমড়া হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশুদের দৈহিক গঠনেও এ ফলটি খুব দরকারি। রক্তস্বল্পতাও দূর করে। আমড়া খেলে স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। আমড়া রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
আমড়াতে প্রচুর আয়রন থাকায় রক্তস্বল্পতা দূর করতে বেশ প্রয়োজনীয়। আমড়া পিত্তনাশক ও কফনাশক।
মানবদেহে পেশির দুর্বলতা কাটিয়ে শক্তিশালী করে আমড়া। আমড়া খেলে অরুচিভাব দূর হয়। মুখে রুচি ফিরে আসে, ক্ষুধা বাড়ায়।
বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যরোধ করে আমড়া। রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা বাড়ায়। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এছাড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কাজ করে আমড়া। এ ফলটি খেলে দূর হবে মুখের ব্রণও।
লিচু খাওয়ার উপকারিতা-অপকারিতা
লিচুতে যে পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়
প্রতি ১শ গ্রাম লিচুতে জলীয় অংশ ৮৪ দশমিক ১, খাদ্যশক্তি ৬১ কিলো ক্যালোরি, শর্করা ১৩ দশমিক ৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ গ্রাম ও ভিটামিন সি ৩১ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়।
লিচুর উপকারিতা
* শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করতে কাজ করে লিচু।
* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে।
* লিচুতে ভিটামিন, নানা খনিজ উপাদান রয়েছে, যেগুলো রক্তের উপাদান তৈরিতে সহযোগিতা করে।
* ত্বকের বলিরেখা দূর কর।
* বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না এবং ত্বক উজ্জ্বল করে।
* লিচুতে ভিটামিন ও নানা খনিজ উপাদান থাকায় এ ফল রক্তের উপাদান তৈরিতে সহযোগিতা করে। এ ফলটির যেমন ভালো দিক আছে, তেমনি বেশি খেলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
* মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।
* লিচু ওজন বৃদ্ধি করে।
* লিচুতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, জরুরি ফ্যাটি এসিড নেই। ফলে বেশি পরিমাণে লিচু খেলে তা শরীরের স্বাভাবিক ব্যালেন্স নষ্ট করে।
* খালি পেটে লিচু খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
* রক্তের গ্লুকোজ কমে যায়।
তাই খেতে সুস্বাদু হলেও ইচ্ছেমত লিচু খাওয়ার সুযোগ নেই। দিনে ১০-১২টি লিচু খাওয়া যেতে পারে। বয়স, শরীর, অসুস্থতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পরিমিতভাবে লিচু বা যে কোনো ফল খেতে হবে।
কর্মস্পৃহা ধরে রাখতে খান কমলা
রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কমলালেবু। প্রতিদিন কমলালেবু খেলে ছোটখাটো রোগবালাই এমনকি বড় রোগও ঘেঁষবে না ধারেকাছে।
কমলায় আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। ত্বকের বলিরেখা দূর করে তারুণ্য ধরে রাখে।
আমাদের হৃৎপিণ্ডের ফাংশন ভালো রাখতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ৬, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের জুড়ি নেই। এসব উপাদান একসাথে কমলালেবুর মধ্যে পেয়ে থাকি। তাই হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে হলে কমলালেবু খেতে হবে প্রতিদিন ।
শরীরে মাঝেমধ্যে ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি দেখা দেয়। তখন শরীর হয়ে পড়ে নির্জীব। কমলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। ত্বকের সজীবতা ও শরীরে প্রাণশক্তি এবং কর্মস্পৃহা ধরে রাখতে কমলা খান প্রতিদিন।
কমলায় ভিটামিন ‘সি’র পাশাপাশি রয়েছে ভিটামিন বি-৬ ও ম্যাগনেসিয়াম। এই উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
ব্রেস্ট ক্যানসার, কোলন ক্যানসার ও স্কিন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় কমলা।
অনেকে চোখের সমস্যায় ভোগেন। কমলায় রয়েছে ভিটামিন ‘এ’। এই ভিটামিন শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
কমলায় আছে প্রচুর আঁশজাতীয় উপাদান, যা ব্লাডসুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।
শরীর সুস্থ রাখতে কাঁঠালের উপকারিতা
এটি হজমে সহায়তা, পানিশূন্যতা রোধ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো ও ওজন নিয়ন্ত্রণসহ নানা দিক থেকে শরীরের উপকার করে।
প্রাকৃতিকভাবে শক্তি বাড়ায়
কাঁঠালে থাকে সুক্রোজ ও ফ্রুকটোজের মতো প্রাকৃতিক চিনি, যা শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়।
এতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণও বেশি, ফলে গরমে শরীরকে সক্রিয় ও শক্তিশালী রাখতে এটি দারুণ কার্যকর।
হজমে সহায়তা করে
কাঁঠালে থাকা উচ্চমাত্রার আঁশ হজমে সাহায্য করে। এটি মল সহজে বের হতে সাহায্য করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। ফলে হজমনালী পরিষ্কার থাকে এবং অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকারিতা বজায় থাকে।
পানিশূন্যতা ও ক্লান্তি দূর করে
কাঁঠালের পাকা অংশে প্রায় ৮৯.৮৫% জলীয় উপাদান থাকে, যা গরমে ঘামের মাধ্যমে হারানো পানি পূরণে সহায়ক। এতে থাকা ইলেকট্রোলাইট শরীরের জলীয় ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং মাথাব্যথা বা ক্লান্তির ঝুঁকি কমায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কাঁঠাল শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। গরমকালে ঠাণ্ডা, সর্দি বা ভাইরাল সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি, প্রদাহ কমাতেও সহায়তা করে।
ত্বকের জন্য উপকারী
কাঁঠালের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের ভেতরের অক্সিডেটিভ চাপ কমায়, ফলে ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল থাকে। এর উচ্চ জলীয় উপাদান গ্রীষ্মের রুক্ষতা, ব্রণ ও ত্বকের নির্জীবতা দূর করতে সহায়তা করে, ত্বক করে তোলে সতেজ ও কোমল।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
মিষ্টি হলেও কাঁঠালে ক্যালরি ও চর্বির পরিমাণ কম। এতে থাকা আঁশ পেট ভরাট রাখতে সাহায্য করে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
হাড় মজবুত করে আনারস
জেনে নেওয়া যাক আনারসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
ওজন কমায়:
শুনতে বেশ অবাক লাগলেও আনারস আমাদের ওজন কমানোয় বেশ সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার রয়েছে এবং অনেক কম ফ্যাট। সকালের যে সময়ে ফলমূল খাওয়া হয় সে সময় আনারস এবং সালাদে আনারস ব্যবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। তাই ওজন কমাতে চাইলে আনারস খান।
হজমশক্তি বাড়ায়:
আনারস আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন যা আমাদের হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
হাড়ের সুস্থতায়:
আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাংগানিজ। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ম্যাংগানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পুষ্টির অভাব দূর করে:
আনারস পুষ্টির বেশ বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে আনারস খেলে দেহে এ সব পুষ্টি উপাদানের অভাব থাকবে না।
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়:
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এ রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার শঙ্কা অনেকটা কমে যায়। এতে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।
দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়:
আনারসের ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং দাঁত ঠিক থাকে।
সতর্কতা:
আনারস খালি পেটে খাওয়া এড়ানো উচিত।
অতিরিক্ত খাওয়া পেটের অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন।
চিয়া বীজ কী, কেন খেতে হবে!
• প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩, প্রোটিন ও ফাইবার রয়েছে যা হার্টের জন্য ভালো
• রয়েছে আয়রন এবং ক্যালসিয়ামও
• চিয়া সিডে পাওয়া যায় ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মস্তিষ্কের কোষ মেরামত এবং নিউরনের কার্যক্রম বাড়ায়।
• ওজন কমাতে বা রক্তে সুগারের সমস্যায়ও খেতে পারেন চিয়া বীজ
• এক আউন্স বা ৩০ গ্রাম (প্রায়) চিয়া বীজে রয়েছে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন, ৮.৫ গ্রাম ফ্যাট, ১১ গ্রাম ফাইবার, ১৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট (যার মধ্যে ১১ গ্রাম হল ফাইবার)।
দিনে ১ টেবিল চামচ (১০ গ্রাম) করে চিয়া বীজ খেতে পারেন। টকদই এর ওপর ছড়িয়ে বা সালাদের সঙ্গে খেতে পারেন। আবার পানিতে ভিজিয়েও (একটু জেলের মতো হবে )পান করতে পারেন উপকারী চিয়া বীজ।
টানা কাজ করতে করতে মাথা ধরলে কী করবেন?
সহজ সমাধান
বেশি করে পানি পান করুন
শরীরে পানির অভাব দূর করতে পর্যাপ্ত পানি খান। ডিহাইড্রেশনের কারণে হওয়া মাথাব্যথা প্রায় আধ ঘণ্টার মধ্যেই উপশম পেতে শুরু করে।
পানিযুক্ত ফল খান
তরমুজ, শসা বা কমলালেবুর মতো ফল খেলে শরীরে পানির ঘাটতি দ্রুত পূরণ হয়।
অল্প বিরতি নিন ও মাথায় ম্যাসাজ দিন
কাজের ফাঁকে কয়েক মিনিটের বিরতি নিয়ে হালকা মাথা ম্যাসাজ করলে রক্তসঞ্চালন বাড়ে, ব্যথা কমে।
ঠান্ডা সেঁক বা পানি দিয়ে ঝাপটা দিন
বাড়িতে থাকলে বরফ কাপড়ে মুড়িয়ে কপাল ও ঘাড়ে সেঁক দিন। অফিসে থাকলে ঠান্ডা পানিতে মুখ, চোখ ও ঘাড় ধুয়ে নিন—ফ্রেশ লাগবে, ব্যথা উপশম হবে।
আদা চা পান করুন
আদার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথাব্যথা কমাতে কার্যকর। বমি ভাব থাকলেও উপকার পাবেন।
তেঁতুলে ভেষজ ও পুষ্টিগুণ
তেঁতুল দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগীদের জন্য খুব উপকারী
রক্তের কোলেস্টেরল কমায়
শরীরের মেদ কমাতেও কাজ করে তেঁতুল
পেটে গ্যাস, হজম সমস্যা, হাত-পা জ্বালায় তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী
খিদে বাড়ায়
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করে
মুখের লালা তৈরি হয়
তেঁতুলপাতার ভেষজ চা ম্যালেরিয়া জ্বর কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়
শিশুদের পেটের কৃমিনাশক
তেঁতুল ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে
পাইলস চিকিত্সার জন্য ব্যবহার করা হয়
মুখে ঘাঁ ও ত্বকের প্রদাহ সারাতে সাহায্য করে
তেঁতুল রক্ত পরিষ্কার করে
বাত বা জয়েন্টগুলোতে ব্যথা কমায়
ভিটামিন সি’র বড় উৎস
পুরনো তেঁতুল খেলে কাশি সারে
পাকা তেঁতুলে খনিজ পদার্থ অন্য যেকোনো ফলের চেয়ে অনেক বেশি খাদ্যশক্তিও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ১৭ গুণ বেশি
আর আয়রনের পরিমাণ নারিকেল ছাড়া সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ২০ গুণ বেশি।
কাঁঠালের বিচির জাদুকরী উপকারিতা
অনেকেই কাঁঠালের বিচি ভেজে, ভর্তা করে বা মাছ-মাংসের সঙ্গে রান্না করে খেতে পছন্দ করেন। জানেন তো, কাঁঠালের বিচির উপকারিতা কিন্তু অনেক।
এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। খেতেও সুস্বাদু। প্রতি ১শ গ্রাম বিচি থেকে শক্তি পাওয়া যায় ৯৮ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট ৩৮ দশমিক ৪ গ্রাম, প্রোটিন ৬ দশমিক ৬ গ্রাম, ফাইবার ১ দশমিক ৫ গ্রাম, চর্বি শূন্য দশমিক ৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম শূন্য দশমিক ৫ থেকে শূন্য দশমিক ৫৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস শূন্য দশমিক ১৩ থেকে শূন্য দশমিক ২৩ মিলিগ্রাম, আয়রন ১ দশমিক ২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম ও পটাসিয়াম ৪ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম রয়েছে। যেসব উপকারিতা মিলবে কাঁঠালের বিচি খেলে, আসুন জেনে নিই:
* কাঁঠালের বিচি আয়রনের একটি বড় উৎস। নিয়মিত এটি খেলে রক্তস্বল্পতা ও অন্যান্য রক্তরোগের ঝুঁকি দূর হয়। এছাড়া আয়রন মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্র সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে।
* হেলথলাইন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি আর্টিকেলে বলা হচ্ছে, কাঁঠালের বিচিতে ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদান রয়েছে। এর উপরিভাগ ছোট ছোট কণা দ্বারা আবৃত থাকে যা ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে। কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
* ফাইবার ও রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চসমৃদ্ধ কাঁঠালের বিচি খেলে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষুধা নিবারণ করা সহজ হয়। এরা শরীরে সহজে হজম হয় না। কিন্তু অন্ত্রে থাকা উপকারী
* ব্যাকটেরিয়াদের খাদ্য হিসেবে কাজ করে।
* রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় কাঁঠালের বিচি।
* স্টাইলক্রেজ ওয়েবসাইট বলছে, কাঁঠালের বিচিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলো ফ্রি র্যাডিকেলের সাথে লড়াই করতে পারে। এতে * *অকাল বার্ধক্য ও বলিরেখা থেকে দূরে থাকা যায়। ঠান্ডা দুধে কাঁঠালের বিচি পিষে ত্বকে লাগালে ত্বক টানটান থাকে।
* কাঁঠালের বিচি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়ায়।
* কাঁঠালের বিচিতে থাকা উচ্চ মানের প্রোটিন আমাদের পেশি তৈরিতে সাহায্য করে।
* কাঁঠালের বিচি বদহজম রোধ করে হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
* কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমে আসে।
* কাঁঠালের বিচি প্রোটিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস সমৃদ্ধ যা মানসিক চাপ কমায়।
* বলিরেখা দূর ও ত্বকের বিভিন্ন রোগ সারাতে সাহায্য করে।
* প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে কাঁঠালের বিচিতে। চোখের জন্য উপকারি ও রাতকানা রোগ কাটাতেও সাহায্য করে।
* চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে ও চুল পড়া কমে।
*নিয়মিত কাঁঠালের বিচি খেলে শরীরে আয়রনের মাত্রা বাড়বে। এটি খেলে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতাও দূর হবে।
খালি পেটে যা খাওয়া ঠিক নয়
খালি পেটে দই খাওয়া ঠিক নয়। খালি পেটে দই খেলে পাকস্থলীর থেকে নির্গত রসের সাথে দইয়ে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়া মিশে যায়। ফলে পেট খারাপ হতে পারে।
খালি পেটে টমেটো খেলে পেটে পাথর হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কলা খেলে শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম ভারসাম্য রক্তে নষ্ট হয়। তাই খালি পেটে কলা না খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।
সকালে কাজের তাড়া যখন খুব বেশি থাকে, অনেকেই নাস্তা সেরে নিই একমগ কফির সঙ্গে কেক বা বিস্কুট খেয়ে। কিন্তু এই খাবারগুলোতে চিনি থাকে, যা আমাদের ওজন বাড়িয়ে দেয়। আর অ্যাসিডিটির সমস্যাও হতে পারে।
জুস খেয়ে দিন শুরু? একগ্লাস ফ্রেশ জুস তৈরি করতে লাগে তিনটি কমলা। বাড়তি চিনি না দিলেও কমলায় থাকা চিনি রক্তের সুগার লেভেল বাড়িয়ে দেয়।
সসেজ, মিট বল ও বার্গার সকালের নাস্তায় না রেখে দেশি লাল আটার রুটি সঙ্গে সবজি-ডাল, ডিম সেদ্ধ রাখুন। এছাড়াও অতিরিক্ত তেল মসলায় রান্না করা খাবারও সকালে নাস্তায় খাওয়া উচিত নয়।
যে কারণে পান্তা ভাত খাবেন
শরীরের অনেক জটিলতা থেকে মুক্তি দেয় পান্তা ভাত।
পান্তা ভাতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়ামের পরিমাণ রান্না করা ভাতের তুলনায় বেশি থাকে। অন্যদিকে সোডিয়ামের পরিমান কম থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
আমেরিকা নিউট্রিশন অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা বলছে, ভাত পানিতে ভিজিয়ে রাখলে পাকস্থলী প্যানক্রিয়াটিক অ্যামাইলেজসহ আরও কিছু এনজাইমের কার্যকারিতা বহুগুণ বেড়ে যায়। ফলে পান্তা ভাতের জটিল শর্করাগুলো খুব সহজেই হজম হয়ে যায়।
পান্তা ভাতা ফার্মেন্টেশনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। কখনও রাতে গরম ভাত বানিয়ে তাতে পানি ঢেলে দেওয়া হয়। ওই ভাত পরদিন সকালে খাওয়া হয়। আবার অনেক সময় সকালের তৈরি গরম ভাতে পানি ঢেলে দেওয়া হয়। সেটা রাতে খাওয়া হয়। এই ফার্মেন্টেশনের ফলে পান্তা ভাতের পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। পান্তা ভাত খেলে যে উপকারিতা মিলবে, দেখে নিন এক নজরে।
* ফার্মেন্টেশনের ফলে পান্তা ভাতে ভিটামিন বি১২-এর মাত্রা বেড়ে যায়। এই পুষ্টি শরীরের ক্লান্তি ভাব কমাতে এবং দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি অনিদ্রার সমস্যা দূর করে।
* পান্তা ভাত শরীরকে ঠান্ডা করে। এই খাবারে যেহেতু তরলের পরিমাণ বেশি থাকে, তাই শরীরকে হাইড্রেটেডও রাখে পান্তা ভাত।
* ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রনের মতো পুষ্টি রয়েছে পান্তা ভাতে। তাই দিনে একবেলা পান্তা ভাত খেয়ে থাকলেও দেহে পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হবে না। এ ছাড়া এই খাবারে প্রোবায়োটিক রয়েছে, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে।
* দেহের পিএইচ স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে পান্তা ভাত। গ্যাস-অম্বল, অ্যাসিডিটি, আলসারের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় এই খাবার। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে পান্তা ভাত।
* উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মতো লাইফস্টাইল ডিজিজে ভুগলেও আপনি পান্তা ভাত খেতে পারেন। এই খাবার খেলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং, পান্তাভাত দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।
হালকা গরম পানি পানের উপকারিতা
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কুসুম গরম পানি পান করলে পেট পরিষ্কারসহ শরীরের অতিরিক্ত চর্বি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ত্বক থাকে প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১-২ গ্লাস, দিনের যেকোনো সময় খাবারের ৩০ মিনিট আগে বা পরে এক গ্লাস হালকা গরম পানি পান করা উচিত।
তারা আরও বলেন, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো একাধিক সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব, শরীর দ্রুত ডিটক্স হয়ে যায়। নিয়মিত হালকা গরম পানি পান করলে তারুণ্যকে ধরে রাখা যায়। এছাড়াও ত্বকে জমাট বাধা তেল, ধুলোবালি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
যেসব শারীরিক সমস্যায় গরম পানি খেলে উপকার পাওয়া যায় সেগুলো, মাইগ্রেন, উচ্চ রক্তচাপ, নিম্ন রক্তচাপ, হাঁটু, গোড়ালিতে ব্যথা, বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা, হুটহাট হৃৎস্পন্দন বাড়া-কমা, কাশি, পেটের সমস্যাসহ আরও অনেক জটিল রোগে গরম পানি বেশ কার্যকর।
শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমে গেলে সবাই অস্বস্তি বোধ করে। মেদ ঝরাতে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হয়। এর পাশপাশি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস হালকা গরম পানি পান করবেন। পানিতে লেবুর রস ও মধু দিতে পারেন। এক সপ্তাহেই দেখবেন মেদ কমবে ঝটপট। অন্যদিকে গরম পানি পানে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার সুযোগই থাকে না।
পিরিয়ডের সময়ে মেনস্ট্রয়াল ক্র্যাম্পের প্রকোপ কমাতে গরম পানির কোনো বিকল্প নেই। এই সময় গরম পানি পান করা শুরু করলে অ্যাবডোমিনাল মাসলের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে ব্যথা খুব কম সময়ে কমে যায়।
যারা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত হালকা গরম পানি পান করতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে হালকা গরম পানি পান করলে ব্রণ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া গরম পানি স্কিন সেলের ক্ষত সারিয়ে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে ত্বক টান টান হয়ে ওঠে এবং বলিরেখাও কমায়। ফলে বয়সের কোনো ছাপই ত্বকের ওপর পড়তে পারে না।
বালিশ যেভাবে স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে
এই দীর্ঘ সময়, অনেকেরই অভ্যাস উপুড় হয়ে বালিশে মুখ গুঁজে ঘুমানোর। কেউ কেউ একপাশ ফিরেই সারাটা রাত কাটিয়ে দেন।
আমাদের অনেকেরই ঘুমানোর একটি প্রিয় ভঙ্গি থাকে, কিন্তু আমরা খুব কমই জানি—এই ভঙ্গি আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।
শোয়ার ভঙ্গি সঠিক না হলে তা শুধু পিঠে বা ঘাড়ে ব্যথা নয় বরং হৃদরোগ, ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝেইমার মতো জটিল রোগের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।
ঘুম বিশেষজ্ঞ ড. ক্যাট লেডারলে বলেন, দিনের বেলায় আমরা যেভাবে চলাফেরা করি, তার প্রভাব পড়ে রাতের ঘুমের সময় শোয়ার ভঙ্গিতে।
যেমন যারা দীর্ঘ সময় বসে থেকে কাজ করেন, তাদের ঘুমের সময় শরীরে অস্বস্তি হতে পারে।
তিনি বলেন, পাশ ফিরে ঘুমানো সবচেয়ে প্রচলিত ভঙ্গি হলেও, ডান বা বাম পাশে ঘুমানোর আলাদা স্বাস্থ্য উপকারিতা ও ঝুঁকি রয়েছে। গর্ভবতী নারীদের বাম পাশে ঘুমানো উপকারী। অন্যদিকে, হৃদরোগীদের জন্য ডান পাশে ঘুমানো ভালো, কারণ এতে হার্টের ওপর চাপ কমে।
পিঠের ওপর চিৎ হয়ে ঘুমানো ঘাড় ও মেরুদণ্ডের জন্য ভালো হলেও এটি ঘুমের মাঝে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। উপুর হয়ে ঘুমানো সবচেয়ে ক্ষতিকর, কারণ এতে ঘাড় ও পিঠের চাপ বেড়ে যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়াও স্মার্টফোন-ট্যাব বা এ জাতীয় হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইসেই আমাদের অধিকাংশ সময় ব্যয় হচ্ছে। শোয়ার সময় এসব ব্যবহারে চাপ পড়ছে মেরুদণ্ডে, পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পিঠ-ঘাড়-চোখ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিভাইস থেকে দূরে যাওয়ার পর আমাদের মস্তিষ্ক স্থির হয়ে ঘুমের জন্য প্রস্তুত হতে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লেগে যায়। এজন্য ঘুমানোর সময়ের অন্তত এক ঘণ্টা আগেই হাতের ডিভাইসটি দূরে রাখুন।
ঘুমের ভঙ্গি বদলাতে চাইলে ধীরে ধীরে অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রথমে কয়েক মিনিট করে শুরু করে প্রতিদিন সময় বাড়ান।
যাদের ঘরে এয়ার কন্ডিশনার চলে, খেয়াল রাখবেন যেন তাপমাত্রা খুব কমানো না হয়।
এছাড়াও সুস্থ থাকতে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও ওঠার অভ্যাস করুন।
মনে রাখতে হবে, ঘুম শুধুই বিশ্রাম নয়, এটি আপনার ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্যের বিনিয়োগ।
মিষ্টির লোভ সামলানো কঠিন?
যদি মিষ্টি খেতেই চান, তবে স্বাস্থ্যকর অপশন বেছে নিন:
ছানার মিষ্টি
বাড়িতে দুধ জ্বাল দিয়ে ছানা করে নিন। এবার ছানার সঙ্গে মধু, কিছু কিশমিশ, বাদাম বা শুকনো ফল মিশিয়ে কয়েক মিনিট জ্বাল দিয়ে সন্দেশ তৈরি করে নিন।
মিষ্টি ফল
মিষ্টি ছাড়া একেবারেই চলে না যাদের, তারা খেতে পারেন মিষ্টি ফল। আম, কলা,আপেল, আঙুর, কমলা, খেজুর, স্ট্রবেরি বা তরমুজ যা খুশি।
ডার্ক চকলেট
চকলেট কার না পছন্দ! মিষ্টি বলে অনেকেই এড়িয়ে যেতে চান মজার এবং স্বাস্থ্যকর এই খাবারটি। তবে মিষ্টি হিসেবে ডার্ক চকলেটের তুলনা নেই। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ও রক্তের ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখে।
আমন্ড-খেজুরের বরফি
আমন্ড বাদাম রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেজুরের সঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। এবার ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা হলে ছোট ছোট পিস করে কেটে নিন।
তবে ডায়াবেটিস থাকলে কিন্তু ইচ্ছেমতো এসব খাওয়া যাবে না। খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো।
কর্মক্ষেত্রে টয়লেট ব্যবহারের আদবকেতা
জীবাণু ও সংক্রমণ এড়াতে টয়লেট পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর রাখা অপরিহার্য। আসুন কর্মক্ষেত্রে টয়লেট ব্যবহারের আগে আদবকেতাগুলো জানি-
* টয়লেটে ঢুকে প্রথমে দরজা ভালোমতো বন্ধ করুন। কেউ ভুলে দরজা খুলে ফেললে দুইজনেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়বেন। টয়লেটের ভেতরে কেউ থাকলে বারবার নক করবেন না। অপেক্ষা করুন।
* ব্যবহারের পর যেন কমোড ভেজা না থাকে। অযথা পানি ফেলে টয়লেটের মেঝে ভেজাবেন না। অনেকেরই টয়লেট ব্যবহারের পর পা ধোওয়ার অভ্যাস থাকে। কিন্তু পাবলিক টয়লেটে এটা না করাই ভালো।
* টয়লেট ব্যবহাররের পর ফ্লাশ করুন। পানি না থাকলে কর্তৃপক্ষকে অবগত করুন।
* টয়লেট ব্যবহারের পর হাত পরিষ্কার করতে ভুলবেন না।
* প্রয়োজনের বেশি সময় টয়েলেটে বসে থাকবেন না।
* ফোনে কথা বলে টয়লেট আটকে রাখবেন না।
* টিস্যু বা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের পর কমোড বা বেসিনে ফেলবেন না। এতে পানি আটকে গিয়ে টয়লেট নোংরা হয়।
* বেসিন ব্যবহারের পর পানির কল অবশ্যই বন্ধ করুন। অন্য কেউ কল খুলে গেলেও আপনি দায়িত্ব নিয়ে বন্ধ করুন।
* টয়লেটে বসে ধূমপান করবেন না। অন্যদের দম বন্ধ লাগতে পারে। বদ্ধ জায়গায় বসে ধূমপানের ফলে দুর্ঘটনাও ঘটার আশঙ্কা থাকে।
* ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট থাকে অফিসে। সেটা লেখা বা ছবি দিয়ে বোঝানো হয়। তাই ভুল করে অন্যের টয়লেটে ঢুকে যাচ্ছেন কি না দেখে নিন। যদি এমন হয় যে আপনি একজন পুরুষ কর্মী, কোনো নারী নেই দেখে আপনি তাদের টয়লেটে গেলেন, সেটাও অন্যায়।
* নারী কর্মীদের খুব দরকার না পড়লে তাদের ব্যাগ টয়লেটে না নেওয়াই ভালো। এ ছাড়া দামি কোনো জিনিস টয়লেটে নেবেন না।
* টয়লেটে ঢোকার সময় টয়লেটের বাতাস বের করে দেওয়ার এগজস্ট ফ্যানটি অন করে দিন এবং বের হওয়ার সময় ফ্যান ও টয়লেটের বাতি নিভিয়ে বা অফ করে দিতে ভুলবেন না।
* টয়লেটের বেসিনে চুল বা সাবানের খোসা বা পানি আটকে রাখার মতো কিছু ফেলা থেকে বিরত থাকুন।
* কখনো যদি আপনি খেয়াল করেন যে টয়লেট নোংরা অবস্থায় আছে, তাহলে ক্লিনার ডেকে তা পরিষ্কারের উদ্যোগ নিন।
* কমোড হলে বসার জায়গা ভালো করে দেখে নিন। অনেক সময় অন্যের অসাবধানতায় সেখানে ময়লা বা পানি লেগে থাকতে পারে। নোংরা হলে পরিষ্কার করে তারপর সেখানে বসুন।
* মেয়েদের ক্ষেত্রে স্যানিটারি ন্যাপকিন কখনো ফ্লাশ করা ঠিক নয়।
* নোংরা ন্যাপকিন ডাস্টবিনে ফেলার আগে টিস্যু দিয়ে মুড়িয়ে ফেলুন।
লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে যে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন
অতিরিক্ত লবণ ব্যবহারে শুধু খাবারের স্বাদই নষ্ট হয় না, এটি শরীরের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিশেষ করে যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তাদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
রান্না করা খাবারের ওপর কাঁচা লবণ ছিটিয়ে খেলে উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য গবেষকরা। লবণের খনিজ উপাদান শরীরের জন্য উপকারী হলেও মাত্রা বেশি বা কম দুটোই শরীরের জন্য ভালো নয়।
স্বাস্থ্য গবেষকদের মতে, রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়া ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপরেও খারাপ প্রভাব ফেলে কাঁচা লবণ। রান্না করা খাবারে লবণ ছিটিয়ে খেলে ক্ষতি বেশি। ফলে শরীরে রক্তচাপ বাড়ে। কম লবণও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে মৃত্যু ঝুঁকিও থাকে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের স্বাস্থ্য গবেষকদের মতে, পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক দুই চা-চামচ লবণ খাওয়া দরকার।
লবণ কেন উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জন্য ক্ষতিকর?
উচ্চ রক্তচাপের রোগীর শরীরে লবণের মাত্রা বেড়ে গেলে সেখান থেকে বাড়তে শুরু করে হাইপারটেনশন। যে কারণে দেখা দেয় নানা ধরনের সমস্যা। এ ধরনের রোগীর লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত, নয়তো সমস্যা আরও বাড়তে থাকবে। সম্ভব হলে হিমালয়ান সল্ট কিংবা সৈন্ধব লবণ খেতে পারেন। এতে সোডিয়াম এবং মিনারেলস সঠিক মাত্রায় থাকে। সোডিয়াম ৮৪ শতাংশ এবং মিনারেলস থাকে ১৬ শতাংশ।
লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখবেন
* প্রতিদিন গ্রহণের জন্য ৫-৬ গ্রাম লবণ ঠিক আছে। এর বেশি হলে বাড়বে সমস্যা।
* বাইরের খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। সম্ভব হলে পুরোপুরি বাদ দিন। কারণ বাইরের খাবারে থাকে অতিরিক্ত লবণ।
* খেয়াল রাখুন লবণ খাওয়ার কারণে হার্টে কোনো সমস্যা দেখা দিচ্ছে কি না। অতিরিক্ত বা কাঁচা লবণ খাওয়া বন্ধ করুন।
ধূমপান ত্যাগ করলে শরীরে যে পরিবর্তন হয়
এ ছাড়া সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পর আমাদের শরীরে যেসব পরিবর্তন হয় সেগুলো-
* ধূমপান ত্যাগ করা ২০ মিনিটের মধ্যেই আমাদের রক্তচাপ কমে গিয়ে স্বাভাবিক হয়ে যায়। হাত ও পায়ে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।
* ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফুসফুসে জমে থাকা নিকোটিন শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। ফলে ঘ্রাণ ও স্বাদ বোধ বাড়বে।
* ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার তিনদিনের মধ্যে আপনার ব্রঙ্কিয়াল টিউব প্রসারিত হবে। ফলে অনেক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে পারবেন, এনার্জি ফিরে আসবে, স্ট্রেস কমবে।
* দুই সপ্তাহের মধ্যে শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়ে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে হাঁটাচলা করতে আগে যে হাঁফিয়ে উঠতেন, এই সময় থেকে তা কমে গিয়ে এনার্জি ফিরে পাবেন।
* ৩-৯ মাসের মধ্যে বুঝতে পারবেন আপনার আর নিশ্বাস নিতে বিশেষ কষ্ট হচ্ছে না। ধূমপানের কারণে যে খুকখুকে কাশি হতো তাও অনেক কমে এসেছে। এই সময় থেকে ব্রঙ্কিয়াল টিউবের ফাইবার আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে থাকে। যা ফুসফুস থেকে ব্যাকটেরিয়ার দূর করে পরিষ্কার রাখে।
* ধূমপান ছাড়ার ১ বছর পরও যারা কোনও দিন ধূমপান করেননি তাদের তুলনায় আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে দ্বিগুণ।
* সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার ৫ বছরের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। কোনও দিন ধূমপান না করলেও যে ঝুঁকি থাকে, ৫ বছর পর ঝুঁকির পরিমাণ ঠিক ততটাই কমে আসে।
* ধূমপানের ফলে ফুসফুসের যে ক্ষতি হয়, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর ১০ বছর সময় লাগে ফুসফুসের আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে।
ধূমপান ছাড়ার টিপস
দিনের মধ্যে কোন কোন সময়ে সিগারেট খেতেন সেদিকে খেয়াল করুন। এরপর সিগারেট খাওয়ার সময়টাতে মুখে দিন কয়েক দানা মৌরি। এর মানে এই নয় যে অতিরিক্ত মৌরি খাবেন। মৌরি সব সময় সঙ্গে রাখুন। তবে খাবেন নিয়ন্ত্রণ রেখে। কারণ যেকোনো মসলা আমাদের স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করে সেই মসলার প্রতি আসক্ত করে তুলতে পারে। শরীরের জন্য কোনো আসক্তিই উপকারী নয়।
নিকোটিনের আসক্তিকে কমাতে সাহায্য করে মিন্ট। সেজন্য সিগারেট ছাড়তে চাইলে সব সময় সঙ্গে রাখুন মিন্ট ফ্লেবারের চুইংগাম। বাজারে প্রচুর নিকোটিন গাম কিনতে পাওয়া যায়, ধোঁয়া এড়িয়ে কার্বন মনোক্সাইডের ক্ষতিকারক দিক সরাতে অনেকেই এগুলো বেছে নেন। কিন্তু এসব শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এর বদলে চিবুতে পারেন মিন্ট ফ্লেবারের চুইংগাম।
সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পর এর আকর্ষণ কমাতে পানি অত্যন্ত উপকারী। শরীরের প্রয়োজন বুঝে সঠিক পরিমাণ পানি পান করতে হবে। আমাদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বজায় রাখতে কাজ করে পানি। এটি শরীরকে ভেতর থেকে আর্দ্র থাকতে সাহায্য করে। যে কারণে সিগারেট ছাড়ার পরে অস্থিরতার সৃষ্টি হলে তা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে পানি পানের অভ্যাস। তবে এ সময় ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন। কারণ তাতে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। শরীর শুষ্ক হলে স্নায়ু ও পেশি ক্লান্ত হয়। ফলে আবার সিগারেটের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হতে পারে।
টক জাতীয় সব ফলেই থাকে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি। কমলা ও লেবুর অ্যান্টি টক্সিন ক্ষমতা শরীরকে দূষণমুক্ত করে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে কমায় নিকোটিনের খারাপ প্রভাব। ড্রাই ফ্রুটসে ক্যালোরি থাকে বেশি। যে কারণে এটি খেলে বাড়ে শরীরের কার্যক্ষমতা। ফলে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরের পরিস্থিতি সামলানো সহজ হয়।
তরমুজ খেলে হার্ট থাকবে সুস্থ, কমবে ওজন
স্বাদের পাশাপাশি তরমুজ স্বাস্থ্যের ধন হিসেবেও স্বীকৃত। রক্তশূন্যতার ক্ষেত্রে তরমুজ যেমন উপকারী, তেমনই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও তা উপকারী। তরমুজের খোসায় থাকে রসালো ভাব, থাকে পানির পরিমাণ। যা শরীরকে ডিহাইড্রেড হতে দেয় না। এতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকায়, তা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
গরম পড়তেই বাজারে উঠছে তরমুজ। গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে এই রসালো ফলের দিকে ঝুঁকেছেন অনেকেই। দুপুরে তরমুজের জুসই হোক বা খাওয়ার পরের ফল হিসেবে, তরমুজের জুড়ি মেলা ভার। তাছাড়া শরীর ঠান্ডা রাখা থেকে শুরু করে, বহু রোগ থেকে সুরক্ষা দেয় তরমুজ।
হার্টের রোগ থেকে মুক্তি দিতে তরমুজ অপরিহার্য। কার্ডিওভ্যাসকুলার রোগ প্রতিরোধে, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে, রোগের ঝুঁকি কমাতে তরমুজের জুড়ি মেলা ভার।
তরমুজে বহু মিনারেল ও ভিটামিন থাকায় তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তরমুজে থাকা উপাদান চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
তরমুজে রয়েছে লাইকোপিন। যা ত্বকের উজ্জ্বলাত বাড়ায়। তরমুজে রয়েছে ভিটামিন ‘সি’ ও ভিটামিন ‘এ’। এছাড়াও রয়েছে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম। কিডনি ও লিভার সুস্থ রাখতে যা কার্যকরী। এছাড়াও তরমুজ মনকে শান্ত রাখে, প্রবল গরমে দেয় ঠাণ্ডার প্রভাব।
রক্তশূন্যতার ক্ষেত্রে তরমুজ যেমন উপকারী, তেমনই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও তা উপকারী।
তরমুজের খোসায় থাকে সিট্রুলাইন, যা রক্তনালির প্রসারে সাহায্য় করে। গবেষণা বলছে, এটি পেশিতে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। তরমুজের খোসায় থাকে রসালো ভাব, থাকে পানির পরিমাণ। যা শরীরকে ডিহাইড্রেড হতে দেয় না। এতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকায়, তা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়া লিবিডো বর্ধক অ্যামিনো অ্যাসিড সিট্রুলাইন।
কিছু গবেষণা বলছে, তরমুজের সঙ্গে খোসার কিছু অংশ মুখে চলে গেলেও সমস্যা নেই। এতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে তরমুজের খোসা। কমাতে পারে কোলেস্টেরলের সমস্যা। এছাড়াও শরীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়াতে তরমুজ গুরুত্বপূর্ণ।
শসার যত উপকার
শসাতে পানি আছে শতকরা ৯৫ শতাংশ। এটি শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং শরীরের ভেতরের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। শরীর শীতল রাখতে সহায়তা করে। শসায় ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। প্রতি ১শ গ্রাম শসায় আছে মাত্র ১৫ ক্যালরি। এতে কোনো সম্পৃক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই।
এই শসার খোসার গুণও খুব একটা কম নয়। খোসাসহ শসা খাবার অভ্যাস আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যকে কমিয়ে দেবে অনেকখানি এবং আপনার অন্ত্র থেকে দেহের জন্য ক্ষতিকর পদার্থগুলোকে বের করে দিয়ে অন্ত্রের ক্যানসারের মতো রোগ থেকে আপনাকে দেবে সুরক্ষা।
শসায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পটাশিয়াম আছে। এই পটাশিয়ামকে বিশেষজ্ঞরা হৃদযন্ত্রের বন্ধু বলে থাকেন। কারণ এটি রক্তচাপ কমিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
শসায় পানি এবং পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি মৃদু মাত্রার মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। এ উচ্চরক্তচাপ ও ওজন কমাতে শসার ভূমিকা বেশ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া খাদ্যতালিকায় শসাকে নিয়মিত রেখে আপনি আপনার দেহের ইউরিক এসিডকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কিডনি ও মূত্রথলির কতিপয় পাথর থেকে পেতে পারেন রেহাই।
শসায় বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন, ভিটামিন ‘সি, ভিটামিন এ, ল্যুটেইন প্রভৃতি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীরের সুরক্ষায় বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে।
সৌন্দর্যচর্চায়ও আপনার সঙ্গী হতে পারে এই শসা। ত্বকের নানাবিধ সমস্যা, চোখের চারপাশের ফোলাভাবসহ ত্বকের সব ধরনের কান্তি দূর করে ত্বককে প্রাণবন্ত করে।
বহু গুণে ভরপুর এই শসাকে আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন আর উপভোগ করুন সুস্থ দেহ, সুন্দর জীবন।
অতিরিক্ত লবণ খাওয়া নানাবিধ ক্ষতির কারণ
আমাদের অনেকেরই খাবারের সঙ্গে বাড়তি লবণ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। খেতে বসে আগে লবণের পাত্রটি টেবিলে আছে কিনা এটা নিশ্চিত হন অনেকে। কিন্তু এই অনিয়মটির কারণে অনেক বেশি ক্ষতি হচ্ছে আমাদের কিডনি ও লিভারের।
পুষ্টিবিদরা বলেন, কিডনি অতিরিক্ত সোডিয়াম আমাদের দেহ থেকে নিষ্কাশন করতে পারে না। ফলে বাড়তি লবণের সোডিয়ামটুকু রয়ে যায় কিডনিতেই। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি। এমনকি কিডনি ড্যামেজ হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। আর লবণের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে আমাদের শরীরের তরলের। বেশি লবণ লিভারের কাজেও চাপ তৈরি করে। এজন্য লিভারে কোনো সমস্যা হলেও লবণ খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়।
অতিরিক্ত লবণ খেলে কখনো কখনো হাত-পায়ে পানি জমে ফোলা ফোলা ভাব দেখা দেয়। উচ্চ মাত্রার সোডিয়াম-এর কারণেই এটি হয়। এমন হওয়াটা কিডনি এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ।
অতিরিক্ত লবণ সবার জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশুদের এজন্য এটি অনেক বেশি ক্ষতি করে। শিশুদের কিডনি কর্মক্ষম হতে জন্মের পরেও চার মাস সময় লাগে। তাই শিশুদের খাবারে কোনোভাবেই যেন লবণ বেশি না হয়। এই বাড়তি লবণ শরীরে জমে শিশুর কিডনি, লিভার এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে, হতে পারে মৃত্যুও।
শরীরে লবণের পরিমাণ বেশি হলে অতিরিক্ত পানি শরীরে জমে যায়। বেরোতে পারে না। এই অতিরিক্ত পানি ধরে রাখার মাধ্যমে লবণ উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে, যা ক্ষতিকর। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ও ব্রেইন স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। এছাড়াও পাকস্থলীর ঘা এবং কোলন ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করে বাড়তি লবণ।
তবে লবণ আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনও। শরীরের অভ্যন্তরীণ কাজ ঠিকভাবে সম্পাদনের জন্য লবণের সোডিয়াম অংশটি অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এটি মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণেই যত বিপত্তি হতে পারে।
টিনজাত স্যুপ, সবজি, মাংস-মাছ, প্রক্রিয়াজাত পনির ও মাংস, হিমায়িত খাবার, বিভিন্ন ধরনের সস, শুঁটকি মাছে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। এগুলো পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।
একজন সুস্থ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন এক চা চামচ পরিমাণ লবণ খেতে পারবেন। এই লবণ তৈরি খাবারের মধ্যে থাকতে হবে। কোনোভাবেই পাতে বাড়তি লবণ নয়।
যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন মুড সুইং
স্কুল-কলেজ বা কাজ থেকে ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে ফিরছিলেন তিনি। মেয়েটির মতো যে কারোই হুটহাট করে মন-মেজাজ অদলবদল হতে পারে। এমনটা হলে চিকিৎসার ভাষায় একে মুড সুইংও বলা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীদের মধ্যেই মুড সুইং দেখা যায়। তবে পুরুষদের যে একেবারেই হয় না তা কিন্তু নয়। নারীদের মাসিকের সময়, গর্ভাবস্থা ও সন্তান জন্মের পরপরই এমন বেশি দেখা যায়। তবে মুড সুইং ঘটতে পারে যেকোনো সময়ে, যেকোনো কারণে। যদি টের পান আপনার মনমেজাজ ভালো নেই তাহলে যা করবেন:
* প্রথমেই খেয়াল করবেন আপনার ঠিকমতো ঘুম হয়েছে কি না। ঘুম না হলে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
* হালকা ব্যায়াম করতে হবে।
* প্রতিদিন একঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস করুন।
* সময় মেনে হেলদি খাবার খান।
* কমেডি বা রোমান্টিক মুভি দেখুন।
* প্রকৃতির কাছে যান, দুচোখ ও মন ভরে উপভোগ করুন প্রকৃতির রূপ।
* মন কেন বারবার খারাপ হচ্ছে যদি বুঝতে পারেন তবে বিশ্বস্ত কোনো বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করুন।
* পরিবার আর কাছের বন্ধুদের জানিয়ে দিন আপনার মুড সুইং করছে, তারা যেন কয়েকটা দিন আপনাকে মানসিক সাপোর্ট দেন।
মুড সুইং এক ধরনের মানসিক অবস্থা বা সমস্যা। তবে প্রাথমিকভাবে একে সরাসরি মানসিক রোগ বলা যায় না। বেশির ভাগ সময়ই মুড সুইং খুব অল্প সময়ে ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু যদি ঠিক না হয় বা মনে করেন এটি সমস্যা করছে প্রতিদিনের জীবনে-কাজে-সম্পর্কে তাহলে দেরি না করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
ভালো ঘুমের জন্য চাই আরামদায়ক বিছানা
ভালো ঘুমের জন্য চাই আমাদের আরামদায়ক বিছানা, বালিশ আর শান্ত পরিবেশ। বিশেষ করে বালিশ ঠিকঠাক না হলে অনেকেই শান্তিতে ঠিকমতো ঘুমোতে পারেন না। বিছানা খুব বেশি নরম কিংবা খুব বেশি শক্ত হওয়া যাবে না।
তোশক ও জাজিম একসঙ্গে ব্যবহার না করাই ভালো। তবে খাট বা বিছানার ওপর ভিত্তি করে দুটিই ব্যবহার করা যেতে পারে যদি সেটা সঠিক উপায়ে বানানো যায়। প্রথমে জাজিম বিছিয়ে তার ওপর শক্ত কাঠ বা হার্ডবোর্ড দিয়ে এর ওপর তোশক পাততে হবে। তোশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভালো মানের তুলা ব্যবহার করা উচিত। শিমুল তুলা ব্যবহার করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। দামে অন্যান্য তুলার চেয়ে একটু বেশি হলেও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে ভালো সিদ্ধান্ত হয় শিমুল তুলা ব্যবহার করলে।
জাজিম সাধারণত পাঁচ-সাত ইঞ্চি এবং তোশক তিন-পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার বানানো ভালো। ম্যাট্রেসের ক্ষেত্রে একটু শক্ত প্রকৃতির কেনাই উত্তম। বেশি নরম ম্যাট্রেস মেরুদণ্ডের হাড়ের গঠনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, এর ফলে পিঠে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শোয়ার সময় বিছানার কোনো অংশ যেন দেবে না যায় সেটা নিশ্চিত করে বিছানা কিনুন।
বালিশ কেমন হলে ঘুম ভালো হয়
* বালিশের উপকরণ প্রাকৃতিক হওয়া উত্তম।
* ফোম বা কৃত্রিম ফাইবারের বালিশ নরম হলেও ঘুমের জন্য একদমই আরামদায়ক নয়।
* তুলার তৈরি বালিশ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
* বেশি উঁচু বা নিচু বালিশ ব্যবহার করা উচিত নয়।
* বালিশের উচ্চতা এমন হবে যেন যাতে ঘাড় ও পিঠ সমান্তরালভাবে থাকে।
* তিন-পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার বালিশ সাধারণত আদর্শ উচ্চতা হিসেবে ধরা হয়।
* বালিশের মাপ খুব বেশি ছোট না হওয়াই ভালো। যেমন কুশন।
* বালিশের কভার বেশি খসখসে হওয়া যাবে না।
আরও যা মাথায় রাখতে হবে
* মেঝে বা সোফায় শোয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
* বিছানার আয়তন এমন হতে হবে যেন আরাম করে হাত-পা স্বাচ্ছন্দ্যে রেখে ঘুমানো যায়।
* একপাশ হয়ে ঘুমানো ভালো, তবে শরীর কুঁকড়ে না ঘুমানোই উত্তম।
* কোলবালিশের আয়তন এমন হওয়া যাবে না যাতে ঘুমাতে গেলে বেগ পেতে হয়।
* বিছানায় সুতির চাদর ব্যবহার করুন।
* ২/৩ বছর অন্তর অন্তর বালিশ এবং বিছানা পরিবর্তন করুন।
* ঘুমের সময় নাক ডাকা বা নিশ্বাস নিতে সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সাজানোর জন্য যা ব্যবহার করতে পারেন
* আরামের ঘুমের জন্য যেমন বিছানা বালিশ সঠিক হতে হয় তেমনি তার সাজানোর ধরনের উপরও নির্ভর করে রুচিশীলতা।
* সুন্দর করে সাজানো বিছানা মনের মধ্যে এক ধরনের ভালো লাগা সৃষ্টি করে যা ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
* বিছানার চাদর এবং বালিশের এক রংয়ের কভার কিংবা বিপরীত রংয়ের ব্যবহার করুন।
* বিছানা সাজানোর জন্য বালিশের পাশাপাশি বিভিন্ন আকারের কুশন ব্যবহার করতে পারেন।
* বিছানার এক পাশে সুন্দর নকশার কমফর্টার রাখতে পারেন।
* বিছানা জানালার পাশে হলে কার্টেইন বা পর্দা উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার করতে পারেন।
আঙুল ম্যাসাজেই মিলবে যেসব রোগের মুক্তি
নিয়মিত আঙুল ম্যাসাজে অ্যাজমা এবং হৃদরোগ, হজম সমস্যা, মাথাব্যথাসহ নানা সমস্যা থেকে বাঁচা যায়। আবার আবেগের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আঙুলের ম্যাসাজ।
জেনে নিন, কোন আঙুল ম্যাসাজে কোন রোগ থেকে মুক্তি মেলে-
কনিষ্ঠ
হৃদযন্ত্র ও ক্ষুদ্রান্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে হাতের কনিষ্ঠ আঙুল। তাই হার্টের বা হাড়ের সমস্যায় কনিষ্ঠ আঙুলের ম্যাসাজ ভালো কাজ করে। সেই সঙ্গে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, অনিশ্চয়তা এবং দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে।
অনামিকা
হাঁপানি, ত্বকের সমস্যা এবং হজমের সমস্যায় অনামিকা আঙুল ম্যাসাজ করুন। মানসিক উত্তেজনা কমাতেও কাজ করে অনামিকা ম্যাসেজ।
মধ্যমা
খুব রাগ হচ্ছে অথবা অনেক ক্লান্ত লাগছে? মধ্যমা আঙুল ম্যাসাজ করলে রাগ ও ক্লান্তি দূর হয়।
তর্জনী
হজম সমস্যা, মাংসপেশিতে ব্যথা, দাঁতে ব্যথা, ব্যাক পেইন প্রভৃতি সমস্যা ভুগে থাকেন তাহলে তর্জনীর ম্যাসাজ করুন নিয়মিত।
বৃদ্ধাঙ্গুলি
বৃদ্ধাঙ্গুলি ম্যাসাজে মানসিক উদ্বেগ এবং চাপ কমে। মাথাব্যথা কমাতেও বৃদ্ধাঙ্গুলি ম্যাসাজ করতে পারেন।
বেছে নিন ড্রাই ফ্রুটস
ড্রাই ফ্রুটসে আছে বেশি পরিমাণে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পলিফেনলস এবং ফোলেট। আরও আছে ভিটামিন সি।
আখরোট
ওমেগা ৩ থাকায় আখরোট উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। রক্তচাপ বেড়ে গেলে আখরোট ওষুধের মতো কাজ করে। হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষাতেও আখরোট দারুণ উপকারি। আখরোটে থাকায় ‘আলফা লিনোলেনিক’ অ্যাসিড প্রদাহজনিত সমস্যার সমাধান করে।
কাজুবাদাম
ড্রাই ফ্রুটসের মধ্যে কাজুবাদামের জনপ্রিয়তা কম নয়। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকরও বটে। সুস্থ থাকতে কাজু খেতে হবে। নিয়ম করে না হলেও কাজু খাওয়ার অভ্যাস বজায় রাখা জরুরি।
কাঠবাদাম
শরীর সুস্থ রাখতে কাঠবাদামের জুড়ি মেলা ভার। কাঠবাদামে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদান। এই প্রতিটি উপাদান শরীরের অন্দরে পুষ্টি জোগায়। রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কমায়।
কিশমিশ
ডায়াবেটিকদের কিশমিশ খেতে বারণ করেন চিকিৎসকরা। উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা চাইলে কিশমিশ খেতে পারেন। ‘আমেরিকান কলেজ অবকার্ডিওলজি’র সমীক্ষা জানাচ্ছে, দিনে তিনবার কিশমিশ খেতে পারলে কমবে রক্তচাপের মাত্রা।
পেস্তাবাদাম
পায়েস কিংবা ফ্রায়েড রাইসে দিলে সুগন্ধ ম ম করে চারিদিকে। রান্নায় স্বাদ এবং গন্ধ আনা ছাড়াও পেস্তা কিন্তু ড্রাই ফ্রুট হিসেবে মন্দ নয়। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ছাড়াও পেস্তায় রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মতো উপাদান। যা শরীরের যত্ন নেয় ভেতর থেকে।
খেজুর
প্রাকৃতিক শর্করা এবং ফাইবারের উৎস হলো খেজুর। কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখতে এই দুটি উপাদানের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। তাছাড়া খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম। হজম সংক্রান্ত সমস্যা হলে তা-ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
খোবানি
কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখতে নিয়মিত খেতে পারেন পানিতে ভেজানো খোবানি। ফাইবার এবং প্রাকৃতিক সর্বিটলে সমৃদ্ধ এই ফল শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
কয়েকটা ড্রাই ফ্রুটস খেলেই পেট ভরে থাকে। ফলে বেশি খেতে ইচ্ছে করবে না। এতে ওজন বাড়ার ভয়ও থাকে না। মনোযোগ বাড়াতেও শুকনা ফল বেশ সাহায্য করে। আখরোট, কাঠবাদামে আছে ওমেগা থ্রি, এই চর্বি মনোযোগের ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়ায়। তাই চেষ্টা করুন এ শুকনা ফলগুলো খাওয়ার।
মুখ ধোয়ার সময় যে ভুল করবেন না
তৈলাক্ত ত্বকের কারণেও অনেকেই দিনে চার-পাঁচ বার মুখ ধুয়ে থাকেন। তবে দিনে দু’বারের বেশি মুখ ধোয়া উচিত নয়। এতে ত্বকের ক্ষতি হয়। ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে। ত্বক পরিষ্কার করতে হলে সেই ক্ষেত্রে ‘ওয়েট ওয়াইপ্স’ দিয়ে মুখ মুছে নিতে পারেন।
অনেকেই আবার রাতে মুখ না ধুয়ে শুয়ে পড়েন। এতে ত্বকের সমস্যা বাড়ে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অবশ্যই মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন। তখন কিন্তু কেবল ক্লিনজার বা মেকআপ রিমুভার দিয়ে দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিলেই হবে না, ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতেও হবে।
মুখ ধোয়ার আগে সব সময় হাত ভালো করে পরিষ্কার করে নেওয়া জরুরি। নাহলে হাতে থাকা জীবাণু ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে। মুখ পরিষ্কারের সময় খুব বেশি খসখসে তোয়ালে ব্যবহার না করে নরম কাপড়ই ব্যবহার করা উচিত।
ফেস ওয়াশ কেনার সময় অনেকেই নিজের ত্বকের খেয়াল রাখেন না। নিজের ত্বকের ধরন বুঝে তবেই ফেস ওয়াশ কিনুন। সবার ত্বকে সব ফেস ওয়াশ ভাল কাজ না-ও করতে পারে। ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়ার পর কিন্তু অবশ্যই মুখে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
অনেকেই ত্বক বারবার স্ক্রাব করতে থাকেন। বেশি মাত্রায় এক্সফোলিয়েট করলে প্রয়োজনীয় তেল শুকিয়ে গিয়ে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়।
কাপড় আয়রন করার সঠিক পদ্ধতি
সঠিকভাবে কাপড় আয়রন করার কয়েকটি টিপস:
তাপমাত্রা অনুযায়ী পোশাকের তালিকা তৈরি করুন।
সিল্ক এবং সিনথেটিক কাপড় নিম্ন ও মাঝারি তাপমাত্রায় (প্রায় ৩৫০ ফারেনহাইট)।
পশমি কাপড় মাঝারি থেকে উচ্চ তাপমাত্রায় এবং সুতি কাপড় উচ্চ তাপমাত্রা ৪০০ থেকে ৪২৫ ফারেনহাইট তাপমাত্রায় আয়রন করুন।যেহেতু সঠিক তাপমাত্রা ঠিক করা কঠিন কাজ। তাই তাপমাত্রা পরিবর্তন করার পর কয়েক মিনিটের জন্য আয়রন মেশিনটি রেখে দিন।
আয়রন করার পর পরই কাপড় ভাঁজ করে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন।
গোল করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কখনোই আয়রন করবেন না। এতে কাপড়ের মধ্যে টান লাগতে পারে। আর লম্বালম্বিভাবে আয়রন করলে কাপড়ের ভাঁজ দূর করে।
অনেক বড় বা লম্বা কোনো কাপড় যেমন: পর্দা বা টেবিলকভার আয়রন করার সময় পাশে ২টি চেয়ার বসিয়ে নিন, যাতে কাপড়গুলোতে আপনার আয়রন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভাঁজ না পরে। টেবিলে তোয়ালে বিছিয়ে নিন যেন ইস্ত্রির গরমে আয়রন করার টেবিলটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
আয়রন সংবেদনশীল কাপড়ের ওপরে পরিষ্কার ছোট সুতির কাপড়, রুমাল বা গামছা দিয়ে আয়রন করুন। আয়রন সব সময় কাপড়ের উল্টো পাশে করুন এতে কাপড় ঝলসে যাবে না।
আপনার লোহার আয়রনের সঙ্গে একটা মাল্টিপ্লাগ ব্যবহার করা জরুরি। কম ওজনের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার না করাই ভাল। এতে আয়রন খুব গরম হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। নিশ্চিত হোন যে আপনি সঠিক মাপের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করছেন।
কাপড়ের শুরু থেকে শেষ, বাইরে থেকে ভেতরে এভাবে আয়রন করুন।
এবার আয়রন করা শেষ হলে কাপড়গুলো কয়েক ঘণ্টার জন্য ঠান্ডা হতে দিন।
দিনে কতটুকু গরু-খাসির মাংস খাওয়া নিরাপদ
মাংসের উপকারিতা
মাংস প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস, তা সবারই জানা। এ ছাড়াও অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান থাকে মাংসে। যা আমাদের দেহের বিকাশ ঘটাতে কাজ করে। ভেড়া, গরুর মাংস, খাসির মাংস অর্থাৎ লাল মাংস আয়রনের একটি উৎস। এটি রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করে।
সপ্তাহে একবার বা দুইবার লাল মাংস ডায়েটে রাখতেই পারেন। এতে শরীরের কোনো ক্ষতি হবে না। মাংসে থাকা উচ্চ প্রোটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। যার ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। গরু ও খাসির মাংসে আরও থাকে জিঙ্ক, ভিটামিন বি ১২, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, নায়াসিন, ভিটামিন বি ৬, আয়রন এবং রিবোফ্লেভিন।
জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফসফরাস দাঁত ও হাড়ের শক্তি বাড়ায়, আয়রন শরীরের পেশিগুলোতে অক্সিজেন প্রবাহে সহায়তা করেন এবং ভিটামিন বি১২ খাদ্য থেকে শক্তি যোগান দেয়।
মাংস কতটুকু খাওয়া নিরাপদ?
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন প্রায় ২১ গ্রাম লাল মাংস খান; তাদের তুলনায় যারা দিনে প্রায় ৭৬ গ্রাম লাল এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস খান, তাদের অন্ত্রের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) এর নির্দেশনা অনুযায়ী, যারা নিয়মিত ৯০ এর বেশি লাল বা প্রক্রিয়াজাত মাংস খায়; তাদের কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশেই বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো, ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। আনুমানিক একটা কম্পিউটারের মাউস বা একটি তাসের বান্ডিলের সমান টুকরো এই পরিমাণ মাংস খেতে পারবেন।
সেইসঙ্গে চর্বি ছাড়া মাংস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন- গরুর শরীরের ২টি অংশ আছে যাতে পাবেন চর্বি ছাড়া মাংস এবং এই অংশগুলোতে চর্বির পরিমাণ চামড়া ছড়ানো মুরগির থানের মাংসের চেয়েও কম। এই ২টি অংশ হলো রাউন্ড এবং সিরলইন।
এই অংশগুলোর মাংসে চর্বির পরিমাণ থাকে সর্বনিম্ন ৪.২ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৮.২ গ্রাম। যেখানে মুরগির থানের মাংসে অভ্যন্তরীণ চর্বির পরিমাণ থাকে ৯.২ গ্রাম। তাই আপনি গরু, খাসি বা মুরগি যে মাংসই খান না কেন তার থেকে দৃশ্যমান চর্বি আলাদা করে সলিড মাংস খেতে হবে। তাহলে সুস্থ থাকবেন।
প্রতিদিন মাংস খাওযার পরামর্শ কখনোই দেন না বিশেষজ্ঞরা। পুষ্টিবিদদের মতে, সপ্তাহে একবার বা দুইবার লাল মাংস রাখুন। পাশাপাশি শরীরে প্রোটিনের অভাব পূরণ করতে মাসের বিকল্প হিসেবে ডায়েটে রাখুন- মসুর, ছোলা, কিডনি বিন, মটর, মাখন, মটরশুটি, বেকড বিনস ইত্যাদি। পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া বাদ দিন। তাহলে শরীর থাকবে সুস্থ।
আদা সর্বরোগের মহৌষধ
আদাতে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যালার্জি প্রতিরোধক উপাদান।
রান্নায় আদা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা ছাড়াও আদার রস ও আদা চা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে প্রায় সব ঘরেই। এবার আদা চা বা আদার রসে কী কী গুণাগুণ রয়েছে তা একবার জেনে নিই চলুন।
* পেটে ব্যথা হলে আদা চা খেতে পারেন। আদাতে রয়েছে বেদনানাশক উপাদান যা সহজেই তাৎক্ষণিকভাবে পেটে ব্যথা কমায় ও আরাম দেয়।
* আদার রস শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যামিনো এসিড। প্রতিদিন আদার রস বা আদা চা খেলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ঠিক থাকে ও হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। আদার রস ধমনীতে চর্বি জমতে দেয় না। ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
* যাদের ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে ব্যথা হয়, তারা আদা সেদ্ধ পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে পেটে সেঁক দিতে পারেন। এ সময় আদা চায়ে মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। এতে করে মাসিক চক্র ঠিক থাকবে।
* জয়েন্টে বাতের ব্যথা কমাতে আদা খুব ভালো কাজ করে। আদার প্রদাহ ও ব্যথানাশক উপাদান বাতের ব্যথা খুব সহজেই নিরাময় করে। এক্ষেত্রে নিয়মিত আদা চা খান, পানিতে আদা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে স্নান সেরে নিন, আরাম পাবেন। এখন বাজারে আদার তেলও পাওয়া যায়। ব্যথাস্থানে সেই তেল মাসাজ করলেও আরাম পাবেন।
* আদা হজমে সহায়তা করে। ভারি খাবার খাওয়ার পর খানিকটা আদা চিবিয়ে খান। দেখবেন পেটের অস্বস্তিভাব কেটে যাবে। আদার রস খাদ্যের ভেতরকার পুষ্টিকে শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি পাকস্থলিতে এক প্রকার শ্লেষ্মা তৈরি করে যা আলসার হওয়ার সম্ভাবনা দূর করে।
* দূরের যাত্রাপথে বমিভাব হলে আদা খেতে পারেন। ব্যাগে আদা ছোট ছোট করে কেটে রাখুন। পুদিনা পাতা ও খানিকটা আদা চিবিয়ে খান। বমিভাব কেটে যাবে। এছাড়াও বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে মধু দিয়ে আদা চা খেয়ে বের হলে ভালো অনুভব করবেন।
* আদা শরীরের জীবাণু ধ্বংস করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিন খাওয়ার সময় দুই টুকরো আদা খান। এতে বুকে জমা কফ বেরিয়ে আসবে ও অসুখ-বিসুখ হওয়ার ঝুঁকি কমে যাবে অনেকাংশেই।
* আদায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান যা মুখের ভেতরে জীবাণুকে মেরে ফেলে ও দাঁতের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে।
* আদাতে রয়েছে অ্যান্টি-ফাংগাল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা শরীরের বাইরের অংশের ঘা ও সংক্রামণ রোগের বিনাশ করে।
* আদা চা মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে। সারাদিন পর এক কাপ আদা চা আপনাকে দেবে প্রশান্তি। এছাড়াও অফিস থেকে বাড়ি ফিরে আদা সেদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। এতে শরীর ঝরঝরে লাগবে।
* এতে রয়েছে অ্যান্টি-ক্যানসার প্রপার্টিজ। আদার উচ্চমানের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে ক্যানসারের সেল তৈরি হতে দেয় না। অনেক সময় শরীরে ক্যানসারের সেল তৈরি হলেও তা ছড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
* আদার রস রক্তনালীর প্রদাহ দমন করে। মাইগ্রেনের কারণে মাথাব্যথা হলে আদা পেস্ট করে কপালে লাগাতে পারেন। ধীরে ধীরে ব্যথা কমে যাবে।
* অতি প্রাচীনকাল থেকেই ঠান্ডা, কাশি ও ফ্লু-র ওষুধ হিসেবে আদার রস ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঠান্ডা বা কাশির সমস্যা সমাধানে আদার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ১০ সেকেন্ড গরম করে খান। শিগগিরই সেরে উঠবেন।
লেবু খেলে যে উপকার হয়
লেবু সাইট্রাস জাতীয় ফল। সাইট্রাস ফলের মধ্যে ভিটামিন সি বেশি থাকে, এটি একটি প্রাথমিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা কোষকে ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকল থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো
ভিটামিন সি সংবহনতন্ত্রের রোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি এবং রক্তচাপ কমাতে পারে। লেবু ভিটামিন সি এর একটি ভালো উৎস। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি লেবুর রসে প্রায় ১৮ দশমিক ৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সির পরিমাণ দৈনিক ৬৫ থেকে ৯০ মিলিগ্রাম।
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ
কেউ কেউ কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে করার জন্য প্রতিদিন সকালে লেবু পানি পান করেন। ঘুম থেকে উঠলে উষ্ণ লেবু পানি পান করা পাচনতন্ত্রকে সচল রাখতে সাহায্য করতে পারে। প্রাচীন আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র মতে, লেবুর টক স্বাদ শরীরের অগ্নিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে, যা খাবার আরও সহজে হজম করতে সহায়তা করে এবং ‘টক্সিন’ জমা হওয়া রোধ করতে সাহায্য করে।
ত্বক ভালো রাখা
লেবুতে প্রাপ্ত ভিটামিন সি ত্বকের বলিরেখা, বার্ধক্যজনিত শুষ্ক ত্বক এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। ত্বক যদি আর্দ্রতা হারিয়ে শুষ্ক হয়, তাহলে বলিরেখার প্রবণতা দেখা দেয়। সকালে এক গ্লাস লেবুপানি এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
মুখের গন্ধ কমায়
আপনি কি কখনও রসুনের গন্ধ বা অন্য কোনো তীব্র গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে হাতে লেবু ঘষেছেন? রসুন, পেঁয়াজ বা মাছের মতো তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে নিশ্বাসের দুর্গন্ধের ক্ষেত্রেও একই প্রতিকার প্রযোজ্য হতে পারে। খাবারের পরে এবং সকালে প্রথমে এক গ্লাস লেবু পানি পান করে নিশ্বাসের দুর্গন্ধ এড়ানো যেতে পারে। তাছাড়া লেবু লালাগ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে। ফলে মুখগহ্বর শুষ্ক হয় না ও ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট নিশ্বাসের দুর্গন্ধর আশঙ্কা কমে।
এক কোয়া রসুনের উপকারিতা
রসুনের বহু গুণ। চোখ ভালো রাখা থেকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ— নিয়মিত রসুন খেলে শরীরের বহু উপকার হয়।
কিন্তু সবচেয়ে বেশি উপকার হয় সকালে খালি পেটে রসুন খেলে। এক কোয়া রসুন হয় খালি পেটে খাওয়ার গুণ আরও বেশি, এমনই বলছে হালের গবেষণা।
আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব কানেক্টিকাট স্কুল অব মেডিসিন রসুন নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিল। সকালে খালি পেটে রসুন খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সেখানে কয়েকটি কথা বলা হয়েছে। দেখে নেওয়া যাক সেগুলো কী কী।
* যারা সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খান, তাদের হৃদরোগের আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, শরীর চট করে ক্লান্ত হয় না।
* রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে রসুন। বিশেষ করে রোজ যদি কেউ এক কোয়া রসুন খান, তার ডায়াবেটিসের আশঙ্কা কিছুটা কমতে পারে।
* অনেকেই সারা বছর সর্দি-কাশির সমস্যায় ভোগেন। ঠান্ডা লাগা কমতেই চায় না। তারা যদি নিয়মিত সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খান, তিন সপ্তাহেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
* সবচেয়ে বড় কথা, শরীরকে দূষণ মুক্ত করতে রসুন খুবই কার্যকর। সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেলে শরীরে জমা টক্সিন দ্রুত সাফ হয়ে যায়। সার্বিকভাবে সুস্থতা বাড়ে এর ফলে।
‘সুপারফুড’ ডিম
বিশেষজ্ঞরা বলেন, শরীরের সুষ্ঠু ও পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল প্রয়োজন। খাদ্যের মাধ্যমে গৃহীত কোলেস্টেরল মানব শরীরের রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় না। ৫০ গ্রামের একটি ডিমে রয়েছে প্রায় ২১২ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল।
প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, ফসফরাস, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজসহ সব উন্নত পুষ্টি উপাদান থাকায় ডিমের গুরুত্ব অনেক। সুপারফুড ডিম মাংসপেশি, মস্তিষ্কের টিস্যু গঠন ও মেধা বিকাশে সহায়তা করে।
ডিমের প্রোটিনে রয়েছে মানুষের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সকল সঠিক মাত্রার এমাইনো অ্যাসিড যা অতিরিক্ত ওজন কমাতে সহায়তা করার পাশাপাশি রক্তসঞ্চালন, দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধনে সহায়ক।
ডিমের কোলিন মস্তিস্ক কোষ গঠন ও সিগনালিং সিস্টেমে কাজ করে মানুষের স্মরণশক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। ডিমের কুসুমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ লিউটিন ও জিয়াজেন্থিন যা চোখে ছানি পড়াসহ রেটিনার কর্মক্ষমতা ক্ষয় সংক্রান্ত অসুখ ‘ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’ প্রতিরোধ করে দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করে।
সারাদিন কাজের ফাঁকে প্রায়ই ক্লান্তি চলে আসে, পেয়ে বসে তন্দ্রা। এই তন্দ্রা ও ক্লান্তি কাটানোর জন্য অনেকেই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, শরীরের সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে মানসিক অবসাদের সৃষ্টি হয়। ডিম সেরোটোনিন তৈরির ভালো উপাদান। এতে আরও রয়েছে ফলিক অ্যাসিড যা মুড বুস্টার হিসেবে কাজ করে।
ডিমপ্রিয় মানুষের জন্য আরও একটি সুখবর আছে। ডিমের অন্যান্য গুণের সঙ্গে টাইপ-২ ডায়াবেটিস দূর করার ক্ষমতা রয়েছে। ‘দ্য আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’ এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে চারটি ডিম টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
যারা সপ্তাহে একটি ডিম খান তাদের তুলনায় যারা সপ্তাহে চারটি ডিম খান তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৩৭ ভাগ কম।
পুষ্টি মেটাতে কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার
শিম, বরবটি এবং মটরশুঁটি অতি আঁশযুক্ত একটি খাবার। এগুলো শরীরের ওজন এবং রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া মলাশয় ক্যানাসার এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। আমেরিকার ‘দ্য ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব মেডিসিন’ মনে করে প্রতিদিন প্রত্যেকের খাবারে ২৫-৩৮ গ্রাম আঁশ খাওয়া উচিত। এক কাপ শিমে ১১-১৭ গ্রাম আঁশ থাকে।
জাম একটি আঁশযুক্ত ফল। সব ধরনের জামই কম শর্করাসমৃদ্ধ এবং বেশি আঁশযুক্ত, যা যে কোনও বয়সী মানুষের স্বাস্থের জন্য উপকারি। এটি স্মৃতি বাড়ায় এবং গবেষণা ও পড়ালেখায় উৎসাহ যোগায়। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির মতে, ফলটি ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
যারা সপ্তাহে কয়েক দিন বাদাম খান আর যারা খান না, এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাদাম খাওয়া ব্যক্তিরা ৩০ থেকে ৫০ ভাগ হার্ট এটাকের ঝুঁকিমুক্ত। সাথে সাথে অন্যান্য হৃদরোগ থেকেও ঝুঁকিমুক্ত। বাদাম চুলের জন্যও উপকারী।
সামুদ্রিক এ মাছটি ইউরোপ এবং আমেরিকান খাবার হিসেবেই পরিচিত। সাধারণভাবে যেকোনো মাছই বার্ধক্য রোধ করে, তবে এ মাছটি বেশি উপকারী। এ মাছে ওমেগা থ্রি নামে যে চর্বি থাকে তা হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিস্ক সুস্থ রাখে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
অপরিশোধিত দুধ যা সাধারণত ঘাস খাওয়া গরু থেকেই আসে। প্রাকৃতিক এ দুধ ক্যানসারের সাথে লড়তে পারে। দুধ যেমন শক্তিশালী ভিটামিনের উৎস, তেমনি এতে আছে খনিজ পদার্থ যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ঘাস খাওয়া গরুর মাংস এবং বাজারে বিক্রি হওয়া সাধারণ মাংসের নানা পার্থক্য রয়েছে। এর মাংসে এক ধরনের চর্বি আছে যা ক্যানসার রোধে সহায়ক। এটি প্রাণিজ আমিষ এবং ভিটামিন বি-১২ এর চমৎকার উৎস ।
বিভিন্ন দিক বিবেচনায় দেখা যায়, ডিম অন্যতম একটি পরিপূর্ণ খাবার। ডিমে আমিষ থাকে বেশি কিন্তু সে তুলনায় ক্যালরি থাকে স্বল্প পরিমাণে। ডিমের কুসুমে থাকা ‘কোলিন’ মস্তিষ্কের জন্য খুব উপকারী। এর মধ্যে আছে চোখের জন্য খুব দরকারি উপাদান। এটিও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া ডিমে আছে নানা ধরনের ভিটামিন, খনিজ এবং ক্যালসিয়াম।
আপেল যে শুধু খেতে সুস্বাদু তা নয়, এটি ক্যানসার এবং হাঁপানি রোধে সহায়তা করে। একটি আপেলে পাঁচ গ্রাম আঁশসহ নানা ধরনের উন্নত ভিটামিন থাকে। যেমন এতে আছে হাড় মজবুতকারী ভিটামিন ‘কে’। ফুসফুসের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণেও এটি সমানভাবে কাজ করে।
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজ এবং রসুন পাকস্থলি, প্রোস্টেটসহ বিভিন্ন ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। ফুলকপি, চা এবং পেঁয়াজ-রসুন এমন ধরনের খাবার, যা মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
গবেষকরা বেদানাকে ‘প্রাকৃতিক ভায়াগ্রা’ বলে অভিহিত করেছেন। এটি রক্তসঞ্চালনে যেমন সহায়তা করে, তেমনি দাঁতের ব্যাকটেরিয়াও দমন করে। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি টিউমারও প্রশমন করে।
যদিও সব ধরনের চা-ই আমাদের শরীরের জন্য ভালো, তারপরও সবুজ চা জীবনে আলাদা জায়গা করে নেবে শুধু ক্যানসার রোধের কারণে। এটি মূত্রাশয়, মলাশয়, অগ্ন্যাশয় এবং পাকস্থলির ক্যানসার রোধে কাজ করে। এছাড়া এটি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয়
হিটস্ট্রোকের লক্ষণ:
১. শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়া
২. গরমে অচেতন হয়ে যাওয়া
৩. মাথা ঘোরা
৪. তীব্র মাথা ব্যথা
৫. ঘাম কমে যাওয়া
৬. ত্বক গরম ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া
৭. শারীরিক দুর্বলতা ও পেশিতে টান অনুভব করা
৮. বমি হওয়া
৯. হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া
১০. শ্বাস কষ্ট
১১. মানসিক বিভ্রম
১২. খিচুনি
হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসা:
কারো হিটস্ট্রোক হলে বা অচেতন হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে যে কাজগুলো করতে হবে তা হলো-
১. হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিয়ে যেতে হবে। রোগীর শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় কাপড় খুলে ফেলতে হবে।
২. রোগীর শরীরে বাতাস করতে হবে। কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে গা মুছে ফেলতে হবে।
৩. শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বগল, ঘাড়, পিঠ ও কুচকিতে আইসপ্যাক ব্যবহার করতে হবে।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে মানতে হবে সাত নিয়ম
পর্যাপ্ত ঘুম: রাতে যদি ঘুম কম হয়, তবে তা বার্ধক্য প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে মস্তিষ্কে বাধার সৃষ্টি করে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরি। ঘুম না হলে মস্তিষ্ক প্রায় সাত বছর বেশি বুড়িয়ে যেতে পারে।
ঠাণ্ডা ঘর: গরমের চেয়ে ঠাণ্ডায় স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ তিন গুণ বেশি থাকে। এছাড়া ঠাণ্ডা ঘর মাথাকেও ঠাণ্ডা রাখে। তাই ঘরের তাপমাত্রা কখনো ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি রাখা ঠিক নয়।
গল্প শেষ থেকে শুরু করুন: একটি গল্প পড়া শেষে পুরো গল্পটা মনে রাখুন। এবার শুরু থেকে না করে শেষ বা পেছন থেকে গল্পটা মনে করতে থাকুন। এই পন্থা মস্তিষ্কের কোষগুলোকে সচল রাখার সঙ্গে সঙ্গে শক্তিশালীও করবে।
হাঁটাহাঁটি: নিয়মিত হাঁটাচলা বা জগিং শরীরকে ভালো রাখার সঙ্গে সঙ্গে ব্রেনকেও সুস্থ রাখে। সপ্তাহে দু-তিন দিন অন্তত ২০ মিনিট করে হাঁটলে বা জগিং করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
প্রতিদিনের অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুন: মস্তিষ্ক যেন নির্জীব হয়ে না যায়, সে জন্য ব্রেনকে সব সময় নতুন কিছু শিখতে দিতে হয়। তাই প্রতিদিনের রুটিন ভেঙে নতুন নতুন কাজ করার চেষ্টা করুন।
পায়ের আঙুলের ম্যাসাজ: প্রতিদিন পাঁচ মিনিট করে পায়ের আঙুলে ম্যাসাজ করুন। প্রথমে আঙুলের ওপর থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে টিপে টিপে নিচের দিকে যান। এই ম্যাসাজ মস্তিষ্কের কোষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করবে।
মস্তিষ্কের খাবার: আখরোটের ‘পলিফেনলস’ ব্রেনের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়াও সামুদ্রিক মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, পালংশাক, ডার্ক চকলেট, গ্রিন-টি, অলিভ অয়েল, শাকসবজি ইত্যাদি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যরক্ষায় খুবই জরুরি।
পিঠের পেশিতে টান ধরলে যা করবেন
কেন পেশিতে টান ধরে
মানবদেহে দুইটি পেশি আছে। একটি হলো ইচ্ছা মতো চলে, যেমন হৎপিণ্ড। আরেকটি ঐচ্ছিক পেশি। যাকে আমরা নিজেদের মতো করে চালাতে পারি। ঐচ্ছিক পেশির সহায়তায় আমরা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়া করে বিভিন্ন কাজ করে থাকি। এই পেশিগুলো সাধারণত সঙ্কুচিত বা প্রসারিত হয়। কিন্তু কিছু সময় পেশিগুলো স্থায়ীভাবে সঙ্কুচিত হয়ে থাকে প্রসারিত হতে পারে না। একেই বলে পেশিতে টান ধরে। যারা ক্রনিক কোনো রোগে ভুগছেন বা যাদের চোট-আঘাতজনিত সমস্যা আছে তাদের পেশিতে টান লাগা স্বাভাবিক। কিন্তু যাদের এই সমস্যা নেই তাদেরও কিছু কারণে লাগতে পারে পেশিতে টান।
যে কারণে পেশিতে টান ধরে
* শরীরের ক্ষমতা যতটা তার থেকে যদি বেশি শক্তি প্রয়োগ করা হয় তাহলে পেশির মধ্যে জমা হয় ল্যাক্টিক অ্যাসিড। যা আমাদের পেশিকে সঙ্কুচিত করে রাখে প্রসারিত হতে দেয় না।
* আমাদের শরীর ৯০ শতাংশই তরলে পূর্ণ। শরীরে তরলের পরিমাণ যখন সঠিক থাকে অঙ্গগুলোও ঠিক মতো কাজ করে। পানির পরিমাণ কম হলেই শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তখনই পেশির সঙ্কোচন দেখা যায়।
* সুস্থ থাকার জন্য ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের মতো বিভিন্ন মিনারেলস বা খনিজ পদার্থের প্রয়োজন। তেমনই প্রয়োজন বি-৬, বি-১২, বি-সি-র মতো বিভিন্ন ভিটামিনের। শারীরবৃত্তীয় কারণে যদি এসব ভিটামিন বা মিনারেলের তারতম্য হয় তবে পেশিতে টান লাগতে পারে।
যেভাবে এড়াবেন এই সমস্যা
* পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে।
* সারাদিনের আহার সময় মতো গ্রহণ করা প্রয়োজন। ব্যালান্স ফুড খাওয়া খুব জরুরি।
* এক নাগাড়ে কাজ না করে সাময়িক বিরতি নিতে হবে।
* ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল খেতে হবে।
* গর্ভাবস্থায় অনেক নারীর খনিজ পদার্থের ঘাটতি দেখা যায়। বারবার পেশিতে টান ধরলে অবিলম্বে চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এ উপায়গুলো অনুসরণ করলেই মিলবে সাময়িক স্বস্তি।
বেশি করে হাসুন, সুস্থ থাকুন
সুন্দর হাসি দিয়ে খুব সহজে সবার মন জয় করে নেওয়া যায়। তেমনি সুস্থ থাকতেও প্রয়োজন প্রাণ খোলাহাসি।
কারণ, হার্ট সুস্থ রাখতে হাসিকে বলা হয় ‘মহৌষধ’। হাসি সংক্রামক।
একজনকে হাসতে দেখলে অন্যদেরও হাসি পায়। ফলে সবার মনই ভালো থাকে আর আশেপাশের পরিবেশও হয়ে যায় উচ্ছল-প্রাণবন্ত। ফলে নিজেকে সুখী মনে হয়।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ সাধারণত প্রাণখোলা হাসির প্রতি বেশি সাড়া দেয়। হাসি আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়া হাসার সময় আমাদের মুখের অনেকগুলো মাসল কাজ করার ফলে রক্ত সঞ্চালন বেশি হয় এবং এর ফলে মুখের ত্বক উজ্জ্বল হয়। হাসলে মানসিক চাপ কমে।
আজকাল সুস্থ থাকতে লাফিং-ক্লাব খোলা হচ্ছে, প্রায়ই সকালে পার্কে প্রাত ভ্রমণে এসে বয়স্কদের দলবেঁধে হাসতে দেখা যায়। এই দলে যোগ দিতে পারেন তরুণরাও।
ফ্রিজে অতিরিক্ত বরফ জমা বন্ধ করার উপায়
• দেয়ালের সঙ্গে লাগিয়ে ফ্রিজ রাখবেন না। দেয়াল থেকে এক ফুট দূরে রাখুন। যেন ফ্রিজের কয়েল সহজে ঠান্ডা হতে পারে
• থার্মোস্টেট যদি সঠিক তাপমাত্রায় (শূন্য ডিগ্রি ফারেনহাইট) না থাকে, তাহলে অতিরিক্ত বরফ জমা হতে পারে ফ্রিজে। তাই প্রতি সপ্তাহে একবার থার্মোস্টেট পরীক্ষা করুন। আপনার ফ্রিজে থার্মোমিটার না থাকলে, তা বসান
• ফ্রিজ খোলার পর কাজ শেষে দরজা ভালোভাবে আটকে রাখুন। ভুলে খুলে রাখবেন না
• গরম খাবার ফ্রিজে রাখলে বেশি বরফ তৈরি হয়। এজন্য রান্না করার পর সঙ্গে সঙ্গে খাবার গরম থাকতে ফ্রিজে রাখবেন না। আগে ভালোভাবে ঠান্ডা করুন। এরপর ফ্রিজে রাখুন
• ফ্রিজ ওভেন, ওয়াটার হিটার বা চুলার পাশে রাখবেন না। কারণ বেশি গরমের মধ্যে থাকলে ফ্রিজে বরফও জমে বেশি
• এছাড়া নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্কার করতে হবে। মাঝে মাঝে ফ্রিজের সব খাবারের প্যাকেটগুলো এদিক-সেদিন করে রাখুন।
• বাইরের আবহাওয়ার সঙ্গে মিল রেখে ফ্রিজের টেম্পারেচার সেট করুন।
মাংসপেশিতে টান পড়লে
হঠাৎ ঘুমের মধ্যে পায়ের মাংসপেশিতে টান পড়ে। হাটুর নিচের পায়ের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়।
দুর্বলতা, অতিরিক্ত চাপ বা আঘাত পেলে মাসল পুল হতে পারে।
পেশিতে টান ধরার অন্যতম কারণ হলো শরীরে পানির পরিমাণ কমে যাওয়া। আপনি পানি কতটুক কম খাচ্ছেন যে, ঘাটতি পড়ছে পেশির স্থিতিস্থাপকতায়। রাতে পাশ ফিরে শোয়ার সময়ে বা হাঁটাহাঁটির সময়ে, বসে বা শুয়ে থেকে ওঠার সময়ে পেশিতে আঘাত লাগছে। পেশিতে ল্যাকটিক অ্যাসিড জমে গেলে বা ভিটামিন ও পটাসিয়ামের অভাব হলেও ঘন ঘন পেশিতে টান ধরতে পারে।
যেহেতু এটা ঘুমের সময়ে বেশি হয়, তাই শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে হবে। এছাড়াও ব্যায়াম করার আগে ওয়ার্ম আপ করতে হবে। ভারী বস্তু একা না তোলা, শরীরে বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণ, দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে না থাকা, এ বিষয়গুলোও লক্ষ্য রাখতে হবে।
পেশিতে টান পড়লে “RICE থেরাপি” প্রয়োগ করা হয়। এই RICE মানে কিন্তু ভাত বা চাল না। ‘RICE থেরাপি’ মানে হচ্ছে,
R- Rest, পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে হবে
I- Ice, বরফ দিয়ে সেঁক দিতে হবে
C- Compression, আক্রান্ত পেশিতে সহনীয় চাপ দিতে হবে
E- Elevation আক্রান্ত স্থানের নিচে বালিশ দিয়ে শরীরের তুলনায় কিছুটা ওপরে রাখতে হবে।
এভাবে ধাপগুলো মেনে চললে ব্যথায় কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। একেই RICE থেরাপি বলে।
রং চা পানের উপকারিতা-অপকারিতা
রং চা হার্টের রক্ত সরবরাহ বাড়ায়, হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে।
উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চায়ে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে মস্তিষ্ককে সচল রাখে ৷
শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করে। রক্ত চলাচল ভালো হয় ৷
কিডনি রোগের জন্য উপকারী। রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায়।
প্রতিদিন চা পান করলে ইউ ভি রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বকের কোষগুলো রক্ষা পায়। ফলে স্কিন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে রং চা উপকারী, কারণ এটি কোষ থেকে সাধারণের তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ বেশি ইনসুলিন নিঃসৃত করে এবং রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
রং চা-তে পলিফেনল, রাসায়নিক যৌগ রয়েছে যা উদ্ভিদকে অতিবেগুনি রশ্মি বা ক্ষতিকারক, রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে।
অপকারিতা
পরিমাণের বেশি অতিরিক্ত চা পান করলে বিপরীত প্রতিক্রিয়াও ঘটতে পারে। খাবার আগে বা খাওয়ার পরে পরেই চা পান করা উচিত নয়। এতে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। চা শরীর থেকে ভিটামিন ‘বি’ শোষণ রোধ করে যা বেরিবেরি রোগের অন্যতম কারণ।
অতিরিক্ত চা বা কফি পানের কারণে এগুলোর প্রতি আসক্তি তৈরি হয়। ফলস্বরুপ, একমুহূর্ত চা বা কফি ছাড়া থাকা যায় না, মাথাব্যথা ও ক্লান্তি অনুভব হয়।
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত চা ও কফি পান করা উচিত নয়। খালি পেটে চা পান করলে অ্যাসিডিটি হতে পারে।
হাজার গুণের এক পাতা
সুপারফুড হিসেবে বেশ জনপ্রিয় মরিঙ্গা। মূলত সজনেপাতা গুঁড়াকেই মরিঙ্গা পাউডার বলা হয়ে থাকে।
এতে ভিটামিন এ, বি, সি, ই, আয়রন এবং জিঙ্কসহ খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। ত্বক ও চুলের যত্নে মরিঙ্গা বহুল ব্যবহৃত।
* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
সজনেপাতা গুড়া বা মরিঙ্গায় ভিটামিন সি এর পর্যাপ্ততা রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বেশ কার্যকর। এ ভিটামিন শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে, যা সংক্রমণ ও রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এছাড়া মরিঙ্গাতে প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা প্রদাহ কমাতে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
* রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে মরিঙ্গাতে। এ উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সক্ষম। এছাড়া সজনেপাতায় বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ রয়েছে যা ইনসুলিন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে সাহায্য করে। তাইতো বলা হয়ে থাকে, নিয়মিত মরিঙ্গা বা সজনেপাতা খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের উপকার হতে পারে।
* হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে
মরিঙ্গা ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে। এমনকি অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে এবং অন্ত্রের জন্য উপকারি ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সহায়তা করে। মরিঙ্গাতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যও রয়েছে যা আলসার এবং গ্যাস্ট্রাইটিসের মতো হজম সংক্রান্ত সমস্যাগুলোকে প্রশমিত করতে পারে।
* মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল রয়েছে মরিঙ্গাতে। যা মস্তিষ্কের কোষকে ফ্রি র্যাডিকেল দিয়ে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। উদ্ভিদের নিউরোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্যও রয়েছে এতে। ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত মরিঙ্গা সেবন করলে অ্যালঝেইমার্স এবং পারকিনসনের মতো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
* কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
মরিঙ্গায় এমন যৌগ রয়েছে যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। উদ্ভিদটিতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ধমনীতে প্লেক তৈরিতে বাধা দেয়, এভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
* প্রদাহ কমায়
মরিঙ্গার প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা প্রদাহ কমাতে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
* ত্বক ভালো রাখতে
মরিঙ্গায় ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে, যা স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য কার্যকর পুষ্টি উপাদান। উদ্ভিদটিতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ব্রণ এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে। ময়শ্চারাইজিং এবং অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্যের কারণে মরিঙ্গা তেল ত্বকচর্চার নানা পণ্যে ব্যবহার করা হয়।
অনেক পুষ্টিবিদের মতেই, শুধুমাত্র সজনে পাতা সম্পূর্ণভাবে প্রোটিনের দৈনিক চাহিদা মেটাতে পারে না। সজনের সঙ্গে অন্য শাকসবজি, ডাল জাতীয় খাবারও রাখতে হবে। যদি কেউ সুষম আহার করতে অভ্যস্ত হন, তা হলে রোজকার খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট নির্দিষ্ট পরিমাণে রাখা দরকার। মাছ-মাংস, ডিম বা দুধ না খেলে তার জায়গায় সজনে পাতা ছাড়াও বিভিন্ন দানাশস্য (গম, ওটস, বাজরা, মিলেট ইত্যাদি), ফল, সবুজ শাকসবজি রাখতেই হবে।
সজনেপাতায় এত বেশি ফাইবার থাকে যে, খুব বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেললে হজমের সমস্যা হতে পারে।
পুষ্টিগুণে ভরপুর জলপাই
জেনে নেওয়া যাক জলপাই খাওয়ার উপকারিতাগুলো:
রক্তের কোলেস্টেরল কমায় ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
জলপাই-এর ভিটামিন ‘ই’ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
আয়রনের বড় উৎস, ফলে রক্তস্বল্পতা দূর করে
স্বাস্থ্যোজ্জ্বল মসৃণ ত্বক ও মজবুত চুলের জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ জলপাই নিয়মিত খান
জলপাই এর আঁশ হজমশক্তি বাড়িয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে
জলপাই–এর ভিটামিন ‘এ’ চোখের জন্যও ভালো
ভিটামিন ‘সি’ ত্বকের ইনফেকশন ও অন্যান্য ক্ষত সারাতে কার্যকর।
সুপারশপে সারা বছরই প্রক্রিয়াজাত জলপাই পাওয়া যায়, তবে শীতের সময় টাটকা জলপাই পাওয়া যায়। এখন জলপাই খান আর মৌসুম শেষ হওয়ার আগে সারা বছর খাওয়ার জন্য জলপাইয়ের আচার তৈরি করে রাখুন।
ভাত কত দিন ফ্রিজে রেখে খাওয়া যাবে?
পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, রান্না করা ভাত দুই থেকে তিন দিন অবধি ফ্রিজে রাখা যাবে। তবে তার বেশি নয়। এর বেশি দিন ফ্রিজে রান্না করা ভাত রেখে দিলে তাতে ব্যাক্টেরিয়া জন্মাবে। বাইরে থেকে দেখে হয়তো মনে হবে সেই ভাত টাটকাই আছে, কিন্তু তা পেটে গেলেই বিষক্রিয়া হতে পারে।
কী ধরনের পাত্রে ভাত রাখছেন তা-ও জরুরি। পুষ্টিবিদের কথায়, ঢাকনা দেওয়া বায়ুনিরুদ্ধ পাত্রে ভাত রাখলে তা দুই থেকে তিন অবধি তাজা থাকবে। কিন্তু বড় চওড়া গামলা বা পাত্রে ভাত রেখে তা খোলা অবস্থায় ফ্রিজে রেখে দিলে, এক দিনের মধ্যেই তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। হয় সেই ভাত থেকে পানি বেরোতে থাকবে, না হলে তাতে গন্ধ হয়ে যাবে। তাই ভাত সব সময়ে বায়ুনিরুদ্ধ পাত্রেই ফ্রিজে রাখা জরুরি।
ভাত রান্না হয়ে যাওয়ার পরে তা ঠান্ডা হলে তবেই ফ্রিজে ঢোকান। গরম ভাত ফ্রিজে রাখলে তা দ্রুত পচে যাবে। আবার খাওয়ার সময়ে তা আধ ঘণ্টা আগেই ফ্রিজ থেকে বার করে রেখে দিতে হবে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসার পরে সেই ভাত আরও এক বার ফুটিয়ে নিলে ভালো হয়। বারবার একই পাত্রে রাখা ভাত মাইক্রোওয়েভে গরম না করাই ভালো।
ফ্রিজ থেকে বার করার পরে যদি দেখেন ভাত নরম হয়ে আঠালো হয়ে গিয়েছে, কালো বা হলদেটে ছোপ পড়েছে, তা হলে বুঝতে হবে সেই ভাতে পচন ধরেছে। জীবাণু ও ছত্রাক বাসা বেঁধেছে তাতে। সেই ভাত ফেলে দেওয়াই উত্তম।
কোন খাবার কত দিন ফ্রিজে রেখে খাওয়া যাবে
এটা না জানার কারণে খাবারের পুষ্টিগুণ ও স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।
আসুন জেনে নেই
মাছ, মাংস
রান্না করা মাছ,মাংস সাধারণত চার দিন পর্যন্ত ফ্রিজে রাখতে পারেন। প্রতিদিনের জন্য ছোট ছোট বক্সে ঢাকনা দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখুন।
আর কাঁচা মাছ-মাংস অবশ্যই ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। এভাবে মাছ দুই সপ্তাহ, মুরগি এক মাস এবং গরু ও খাসির মাংস তিন মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। মাছ মাংস কেটে ধুয়ে, পানি ঝরিয়ে প্রতিবার যেটুকু রান্না করবেন, সেই পরিমাণে প্যাকেট করে রাখুন।
ডিম
১২ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।
দুধ
গরমে প্যাকেটজাত দুধ কেনার সময় অবশ্যই মেয়াদ দেখে নিন। ফ্রিজে সংরক্ষণ করলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই খাবেন।
সবজি
সবজি বাজার থেকে এনে ধুয়ে পানি শুকিয়ে ফ্রিজে রাখুন দুই থেকে তিন দিনের বেশি ফ্রিজে সবজি না রেখে টাটকা সবজি খান।
ফল
মৌসুমি ফল ২ থেকে ৩ দিন ভালো থাকে।
ফ্রিজে বেশিদিন খাবার রাখলে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। নিজের পরিবারের সবার স্বাস্থ্য তো ভালো রাখতে হবে। এজন্য ফ্রিজে খাবার রাখার সময় যেমন সচেতন হতে হবে, তেমনি ফ্রিজটিও নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে।
ভাত না রুটি, কোনটি বেশি উপকারী?
পুষ্টির দিক থেকে ভাত, আটা বা ময়দার গুণাগুণ প্রায় কাছাকাছিই।
পুষ্টি উপাদান:
গবেষণায় দেখা গেছে, ভাতের তুলনায় রুটিতে ক্যালরির পরিমাণ অনেক বেশি। এককাপ সিদ্ধ আটায় আছে ২২৮ ক্যালরি, যেখানে এককাপ ভাতে থাকে মাত্র ১৯৪ কিলোক্যালরি। একইসঙ্গে এক কাপ ভাত ও রুটিতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ যথাক্রমে ৪১ ও ৫১ গ্রাম। এছাড়াও রুটি ভাতের তুলনায় অনেক বেশি প্রোটিনসমৃদ্ধ।
এককাপ সিদ্ধ আটায় আছে সাত গ্রামের মতো প্রোটিন, যেখানে এক কাপ ভাতে ৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে। প্রোটিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ টিস্যু গঠনে সহায়তা করে। রুটির ওপর নির্ভরর্শীলতা মানে হৃৎপিণ্ডের উপযোগী ফাইবারের যোগান দেওয়া। এক কাপ ভাতে ফাইবারের পরিমাণ ১ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে প্রতি কাপ আটায় রয়েছে ৮ দশমিক ৫ গ্রাম ফাইবার।
যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের নির্ধারণ অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের শরীরে দৈনিক ফাইবারের প্রয়োজনীয়তা ২৩ শতাংশ ও নারীর ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ।
ভিটামিন:
ফাইবার, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটের মতো ভাত ও রুটির ভিটামিনের দিক থেকেও তারতম্য রয়েছে। ভাত ভিটামিন বি-৯ এর ভালো উৎস। ভিটামিন বি-৯ প্রেটিন জাতীয় খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক কাপ ভাতে ২১৫ মাইক্রোগ্রাম বা ৫৪ শতাংশ ভিটামিন বি-৯ রয়েছে, যেখানে এক কাপ সিদ্ধ আটায় থাকে ২৮ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি-৯।
আবার গমে নিয়াসিন বা ভিটামিন বি-৩ এর পরিমাণ ভাতের চেয়ে একটু বেশি। ভিটামিন বি-৩ শরীরে শক্তি উৎপাদন করে ও ত্বকে পুষ্টি যোগায়। এক কাপ সিদ্ধ আটায় ৩ দশমিক ৬ মিলিগ্রাম নিয়াসিন (ভিটামিন বি৩) থাকে। যেখানে এক কাপ ভাতে থাকে ৩ দশমিক ২ মিলিগ্রাম নিয়াসিন। ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দৈনিক একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ২৩ শতাংশ ও নারীর ২৬ শতাংশ নিয়াসিন নেওয়া প্রয়োজন।
মিনারেল:
ভাত ও গম দুটোই কপার ও আয়রনের ভালো উৎস। তবে গম ভাতের চেয়ে অনেক বেশি জিংক সমৃদ্ধ। এক কাপ আটায় রয়েছে ২ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম জিংক, যেখানে ভাতে জিংকের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৬ মিলিগ্রাম।
ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের পরামর্শ অনুযায়ী নারীদের দৈনিক ২৯ শতাংশ ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ২১ শতাংশ জিংকের প্রয়োজন। জিংক প্রোটিনের সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে জিনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও স্নায়বিক কার্যকলাপ অক্ষত রাখে।
কুমড়ার বীজ
কুমড়ায় ভিটামিন ‘এ’র পরিমাণ অনেক থাকে, যা কি না দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং চোখের জন্যও ভালো।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডসম্পন্ন এই বীজ খাদ্যতালিকায় যুক্ত করলে পাবেন বেশ উপকার।
* অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড়ের সমস্যা দূরীকরণে প্রয়োজন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংকের মতো উপাদান।
কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে পেয়ে যাবেন এই উপাদানগুলো। বাতের সমস্যায় আরাম পেতেও খেতে পারেন এই বীজ।
* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পটাসিয়াম। এই উপাদান কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে থাকে। এতে থাকা ফাইবার রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই বলা যায়, কুমড়ার বীজ হার্টের জন্যও ভালো।
* ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিডসম্পন্ন কুমড়ার বীজ দেহের অক্সিটোসিন হরমোন ক্ষরণে সহায়তা করে। পাশাপাশি মেলাটোনিন ও সেরোটোনিনও নিঃসৃত করে। যা মনের অবসাদ দূর করে শরীরকে তরতাজা করতে সাহায্য করে। আবার অনিদ্রার সমস্যা কাটানোর মতো উপাদান সেরাটোনিনও রয়েছে কুমড়ার বীজে।
* চুলের জন্যও বেশ উপকারী এই কুমড়ার বীজ। এতে বিদ্যমান ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন এ, বি, কে, জিংক, সালফার, কিউকারবিটিন চুলের জন্য বেশ উপকারী। এটি চুল উজ্জ্বল ও ঘন করে।
* কুমড়ার বীজে রয়েছে ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। তাই ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগ ঠেকাতে নিয়মিত খেতে পারেন এই বীজ।
মিষ্টি আলু খাবেন কেন?
মিষ্টি আলুতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, আয়রনসহ একাধিক উপকারী উপাদান। আর এ উপাদান কিন্তু শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যানসার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্যও রয়েছে।
মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন আছে, যা আমাদের দেহে ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়। এই ভিটামিন চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। বিটা ক্যারোটিনের অভাবে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। বিশেষ করে শিশু এবং প্রসূতিদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায়।
হৃদযন্ত্র ও স্নায়ুর সুস্থতা বজায় রাখে মিষ্টি আলু। ত্বক ও চুল ভালো রাখতে চাইলে নিয়মিত খান মিষ্টি আলু।
মিষ্টি আলুতে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সহায়তা করে। এতে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এতে কোনো ধরনের চর্বিজাতীয় পদার্থ নেই। আঁশজাতীয় মিষ্টি আলু খেলে ক্ষুধা লাগে না সহজে। ডায়েট চার্টে তাই এটি রাখতে পারেন সহজেই।
গর্ভবতী মায়ের জন্য মিষ্টি আলু খুবই উপকারী। এটি গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি সহায়ক। প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে মিষ্টি আলুতে। পটাশিয়াম হার্টের রোগ থেকে দূরে রাখে। পাশাপাশি মাংসপেশির যত্ন নেয়।
মিষ্টি আলুতে থাকা ফাইবার ব্লাড সুগার ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। কলার চেয়েও বেশি পটাশিয়াম পাওয়া যায় মিষ্টি আলু থেকে। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা খেতে পারেন এই আলু। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
মিষ্টি আলুতে ক্যারোটিনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা পেট, কিডনি এবং স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
এই আলুতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম, তাই ডায়াবেটিসের রোগীরাও খেতে পারেন। ফাইবার সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু খেলে ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
লেবু চা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি খারাপ
শরীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এখন অনেকেই দুধ চা এড়িয়ে চলেন। আবার অনেকের পেটে সমস্যার কারণও লেবু দিয়ে চা পান করতে পছন্দ করেন। কিন্তু কখনও জানার চেষ্টা করেছেন যে এই লেবু চা পান করা স্বাস্থ্যকর নাকি ক্ষতিকারক। লেবু খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়। তেমন অতিরিক্ত লেবু খাওয়া ক্ষতিকারক। লেবু চা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
শরীরকে চনমনে করে তুলতে লেবুর গুরুত্ব অপরিসীম। তাইতো লেবুর চায়ের বিকল্প হয় না। লেবুতে উপস্থিত সাইট্রিক অ্যাসিড হজমে সহায়তা করে এবং কিডনিতে স্টোন হওয়ার আশঙ্কাও কিছুটা কমায়।
লেবুর উপাদান যেমন শরীরের বিভিন্ন রোগ দূরে থাকতে সাহায্য করে তেমনই হার্টের সমস্যাও কমাতে এর পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হয়।
জ্বরে অনেকেই টক খেতে বারণ করেন। শরীরকে ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবমুক্ত করতে লেবু চা খাওয়ার কথা বলে থাকে অনেকে।
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা ত্বকের উন্নতিতে সাহায্য করে। এমনকি এজন্য ব্রণর প্রকোপও কমে।
লেবু সবাইকে সমানভাবে সাহায্য করে না। যাদের মাথায় টাক পড়ার সমস্যা আছে তাদের লেবু এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
আপেল সিডার ভিনেগারে যে উপকার
আপেল থেকে গাঁজন বা ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় আপেল সিডার ভিনেগার তৈরি করা। এ ভিনেগারে ৫-৬ শতাংশ অ্যাসেটিক এসিড থাকে। এটি শরীরের জন্য উপকারি। এছাড়াও আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও খনিজ লবণ।
ব্যাকটেরিয়া নিধন করতে সাহায্য করে আপেল সিডার ভিনেগার। তাই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত স্থান পরিষ্কার করতে এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া নখের ছত্রাক, আঁচিল, উকুন, কানের ইনফেকশন উপশম করতেও এ ভিনেগার ব্যবহার করা যায়। কয়েক হাজার বছর আগে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করার জন্য ভিনেগার ব্যবহার করা হতো।
খাবার সংরক্ষণ করতেও ব্যবহার করা হয় ভিনেগার। এতে খাবারে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক জন্মায় না। প্রাকৃতিকভাবে খাবার সংরক্ষণ করতে চাইলে ব্যবহার করতে পারেন আপেল সিডার ভিনেগার।
ব্রণসহ ত্বকে ব্যাকটেরিয়াজনিত বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে এ ভিনেগার খুব কাজের। ত্বকে দিতে হলে ভিনেগারের সঙ্গে অবশ্যই পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে নেবেন।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার খুবই উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ঘুমানোর আগে মাত্র দুই টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার খেলে, সকালে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ার গতি কমবে চার শতাংশ।
যাদের ডায়াবেটিস নেই, তারাও রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ ভিনেগার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। যারা ইতোমধ্যে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ খাচ্ছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভিনেগার খাওয়া তাদের জন্য ঠিক হবে না।
ওজন কমাতে সাহায্য করে আপেল সিডার ভিনেগার। শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পর ভিনেগার খেলে দিনের পরবর্তী সময়ে সহজে ক্ষুধা লাগে না। ওবেসিটি বা অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়া রোগে আক্রান্ত ১৭৫ জনকে নিয়ে গবেষণা করে দেখা গেছে, রোজ আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার অভ্যাস ওজন কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে কমে পেটের মেদ। অবশ্যই খাবার খাওয়ার পরিমাণও কমাতে হবে, শুধু ভিনেগারই ওজন কমাবে না।
বর্তমান বিশ্বে অকাল মৃত্যুর অন্যতম কারণ হৃদরোগ। রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়লে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। আপেল সিডার ভিনেগার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধী শক্তি। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এ ভিনেগার ক্যানসার কোষ নির্মূল ও টিউমার সারাতে ভূমিকা রাখে। এটি এখনো সর্বব্যাপী স্বীকৃত নয়। এ নিয়ে আরও গবেষণা চলছে।
যেভাবে ব্যবহার করবেন আপেল সিডার ভিনেগার
সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, রান্নায় এ ভিনেগার ব্যবহার করা। ঘরে মেয়োনিজ তৈরির সময় বা সালাদেও দিতে পারেন ভিনেগার। পানির সঙ্গে মিশিয়ে পানীয় হিসেবেও পান করা যেতে পারে এটি। যেমন, এক গ্লাস পানিতে ১/২ টেবিল চামচ (৫-১০ মিলিলিটার) আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করতে পারেন।
তবে শুরুতে অবশ্যই খুব অল্প পরিমাণ ভিনেগার খাওয়া উচিত। খুব বেশি পরিমাণ ভিনেগার খেলে গলা জ্বলতে পারে। ক্ষয় হতে পারে দাঁতের এনামেল। পানিতে না মিশিয়ে সরাসরি ভিনেগার খাওয়া কখনোই উচিত নয়। এ ভিনেগার রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে, এটা ঠিক। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে খাবার হজম হতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগে। ফলে দেখা দিতে পারে ক্ষুধামন্দা। ডায়াবেটিস ও অন্য বেশকিছু রোগের ওষুধের সঙ্গে ভিনেগার খেলে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ভালো করে জেনেশুনে নিশ্চিত হয়ে ভিনেগার ব্যবহার করা উচিত।
দুধের সঙ্গে যেসব খাবার খেলে মহাবিপদ!
এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো দুধের সঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। যদি কেউ দুধ পান করতে পছন্দ করে তাহলে তাকে এই খাবারের তালিকার কথা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
মনে রাখতে হবে, শরীরের পুষ্টির জন্য দুধ খাওয়া জরুরি। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক কাপ দুধ খাওয়া অবশ্যই দরকার। তবে ভুল করে যদি দুধের সঙ্গে কিছু খাবার খেয়ে থাকেন তবে অনেক শারীরিক সমস্যা হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক দুধের সঙ্গে কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে না।
দুধ ও কলা
স্বাস্থ্য সচেতনতা রয়েছে, এমন মানুষের কাছে প্রিয় পানীয় দুধ আর কলার মিল্কশেক। কিন্তু এই দুই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার একসঙ্গে খেলে পেট ফুলে যেতে পারে। দুধের সঙ্গে কলা হজম করা একটু কঠিন। তাই পরামর্শ দেওয়া হয় দুটো খাবার আলাদা করে খেতে।
দুধ ও মাছ
মাছ ও দুধ দুটোই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এটিও একসঙ্গে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। মাছ প্রাণিজ প্রোটিন হলেও দুধের সঙ্গে খেলে তা নষ্ট করে দিতে পারে শরীরের ভারসাম্য। কারণ কিছু মাছ রয়েছে, যেগুলো শরীর উষ্ণ করে দেয়। যা খেলে পেট ফোলা, অ্যালার্জি হতে পারে।
দুধ ও টক রসালো ফল
দুধের সঙ্গে টক জাতীয় ফল যেমন লেবু বা কমলালেবু খেতে বারণ করা হয়। এই জাতীয় ফলে সাইট্রিক অ্যাসিড ও ভিটামিন সি থাকে। এগুলো দুধের সঙ্গে মিশে অম্বল, বুক জ্বালা, পেট ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
দুধ ও ফুটি
ফুটি বা মেলন জাতীয় ফলও দুধের সঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। এই জাতীয় ফলে থাকে মূত্রবর্ধক উপাদান। এই ফল যদি দুধের সঙ্গে মিশ্রিত হয় তাহলে দুধে উপস্থিত ফ্যাট ও জোলাপ জাতীয় উপাদানের সঙ্গে মিশে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এই দুটো খাবার একসঙ্গে খেলে অ্যালার্জি ও ডায়রিয়া হতে পারে।
যেসব খেলে শরীরে টক্সিন প্রবেশ করে
উপকারী অনেক কিছুর সঙ্গে সঙ্গে আমরা ক্ষতিকর টক্সিন (ক্ষতিকর কোলেস্টরেল) গ্রহণ করি।
মাথাব্যথা, বদহজম, মুটিয়ে যাওয়া, বিষণ্নতাসহ ত্বকেরও ক্ষতি করে এটি।
যেসব খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীরে টক্সিন প্রবেশ করে:
• কফিতে থাকা অতিরিক্ত ক্যাফেইন নেওয়ার ফলে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির কার্যক্ষমতা কমে যায়
• সকালের নাস্তায় হোয়াইট ব্রেড থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এর মধ্যেও রয়েছে টক্সিন
• চিনি হজমে সমস্যা তৈরি করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এক্ষেত্রে কৃত্তিম সুইটনারও ক্ষতিকর
• যেকোনো ধরনের সফট ড্রিংকসেই টক্সিন থাকে। যা মাড়ি ও দাঁতের ক্ষতি করে
• ভাজাপোড়া খাবারে প্রচুর টক্সিন থাকে। যা গ্যাস্ট্রিকসহ, পেটেব্যথা ও ত্বকের ক্ষতি করে
• রেড-মিটেও শরীরের জন্য ক্ষতিকর টক্সিন রয়েছে।
সুস্থ রাখতে আমাদের শরীরকে টক্সিনমুক্ত রাখতে হবে। মজার বিষয় হচ্ছে খাবারের মাধ্যমেই শরীরে টক্সিন প্রবেশ করে, আবার কিছু খাবারের মাধ্যমেই এই ক্ষতিকর টক্সিন শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
টক্সিন দূর করতে যেগুলো খেতে হবে:
• পানি শরীরের ভেতর থেকে টক্সিন খুব সহজেই বের করে দেয় ও বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে
• আঙুরে আছে প্রচুর ফাইবার যা টক্সিন দূর করে
• কমলা ও বিটের রস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন যা উচ্চরক্তচাপ কমায়, শরীরের শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
• পুদিনার চা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর একটি পানীয়। এটি হজমে সহায়তা করে ও স্নায়ুতন্ত্রকে শীতল রাখে
• ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ বেদানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে, ক্যানসার প্রতিরোধ করে, হৃদরোগ ও প্রদাহজনিত সমস্যার সমাধান করে।
কেন খাবেন ছোট মাছ
উঠতি বয়সী শিশুদের জন্য ছোট মাছ খুবই উপকারী। তাই ছোট মাছ নিয়মিত খেলে যেসব উপকারিতা পাবেন—
* ছোট আমুদি মাছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ভিটামিন `সি আছে। এই মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।
* ফলিই মাছে একটু বেশি কাঁটা আছে ঠিকই। কিন্তু এই মাছে ভালো পরিমাণ প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ‘এ’ আছে। ফলিই খেলে রক্তাল্পতার সমস্যা দূরে থাকবে।
* মৌরলা মাছে আছে প্রোটিন ও আয়রন। অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য খুবই ভালো এই মাছ। মৌরলা খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় আয়রনের চাহিদা মিটতে পারে।
* কাচকি মাছ পছন্দ করেন অনেকেই। এই মাছে প্রোটিন ছাড়াও আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন। চোখ ভালো থাকে এই মাছ খেলে।
* ট্যাংরার ঝাল পছন্দ করেন? ডিম ভরা বড় ট্যাংরা নয় কিন্তু। ছোট দেশি ট্যাংরাতে থাকে ভরপুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও আয়রন। স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
* ছোট পুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ফসফরাস আছে। হাড় মজবুত করতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এই মাছ।
ফাস্টিং শুরুর আগে যা জানতে হবে
১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা উপোস করলেই হয়। বাকি সময় ‘ইটিং উইন্ডো’। নিজের সময়-সুবিধা মতো এই ডায়েট করা যায়, তাই এই পদ্ধতির জনপ্রিয়তা বেশি।
সম্প্রতি একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে, যারা এই ডায়েট মেনে চলেন, তাদের মধ্যে হৃদযন্ত্র এবং শিরা-ধমনীর অর্থাৎ কার্ডিওভাসকুলার রোগের বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং সবার উপযুক্ত নয়। তাই পুষ্টিবিদদের পরামর্শ ছাড়া ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করা উচিত নয়। এটি শুরু করার আগে যে বিষয়গুলো আপনার মাথায় রাখতে হবে, চলুন তা জানি-
উপোসের সময়সীমা
প্রত্যেক দিন উপোস করার সময়সীমা যেন নির্দিষ্ট থাকে। একদিন একটু কম সময় হলো বলে অন্যদিন ১৮ ঘণ্টা উপোস করে ফেললে কিন্তু হবে না। খাবার খাওয়ার সময়সীমা যেমন নির্দিষ্ট, তেমন উপোস করার সময়ও যেন ঠিক থাকে।
খাবার খাওয়ার উইন্ডো
দেহের ওজন কমাতে কম ক্যালোরির খাবার খাওয়াই ভালো। যে খাবারে ফাইবারের পরিমাণ বেশি, তা-ও ডায়েটে রাখা যেতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি পান
যে ধরনের ডায়েটই করুন না কেন, বিপাক হার ভালো রাখতে হলে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। শরীর হাইড্রেটেড থাকলে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং সংক্রান্ত অনেক বিপদই এড়ানো সম্ভব।
উঠুন, নয়তো শরীরটাই বসে যাবে
ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেয়ারে বসে কাজ করতে হয় কিন্তু এভাবে দীর্ঘসময় বসে থেকে শরীরের তো অবস্থা খারাপ হচ্ছে দিনদিন। হৃদরোগ, হাইপারটেনশন, ওবেসিটি, হজমের সমস্যা সঙ্গী হতে সময় নেবে না।
তাহলে এসব সমস্যা সমাধানের উপায়-
• শরীরকে যেভাবেই হোক সচল রাখতে হবে
• পারলে হেঁটে অফিস যাতায়াত করুন
• চা-কফি খাওয়ার মতোই হাঁটার জন্যও বিরতি নিন
• শরীর ও মন ভালো থাকবে, কাজেও উৎসাহ পাবেন
• মোবাইল ফোনে কথা বলার সময়টা কাজে লাগান
• বসে কথা না বলে দাঁড়িয়ে বা হাঁটতে হাঁটতে কথা বলুন
• অনেক সময়ই কাজের চাপে উঠে হাঁটার কথা খেয়াল থাকে না
• মোবাইলে ফোনে টাইম সেট করে নিন। নোটিফিকেশন পেলে তিন মিনিটের জন্য হলেও চেয়ার ছেড়ে উঠুন।
সারাদিনে বসে থাকার ফাঁকে সচল থাকুন এভাবে। এই নিয়ম আজ শুরু করলে এক মাস পর ফল পাবেন।
আকর্ষণীয় ফিগার পেতে স্কিপিং করুন দুই পদ্ধতিতে
প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ মিনিট স্কিপিং করলেই শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার সুযোগ থাকে না। স্কিপিংয়ের প্রকারভেদ রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে বেসিক জাম্প হলো মাথার ওপর দিয়ে দড়ি ঘুরিয়ে এনে লাফ দিয়ে পায়ের নিচ দিয়ে বের করা। এক্ষেত্রে দুই পা-ই একত্রে ওপরে ওঠাতে হয়।
অলটারনেট ফুট জাম্প হলো এক পা এক পা করে দড়ি পার করতে হয়। ক্রিস ক্রস হচ্ছে দুই হাতকে পরস্পরের বিপরীত দিকে নিয়ে দড়ি লাফ দেওয়া। এছাড়া সাইড উইং, ফ্রন্টব্যাক ক্রস, ডাবল আন্ডার ইত্যাদি দড়ি লাফও রয়েছে। ওজন কমাতে ও আকর্ষণীয় শরীর পেতে স্কিপিং করার দুটি সহজ পদ্ধতি দেওয়া হলো।
দুই পায়ে লাফ
দুই পায়ে লাফটা হলো সবচেয়ে সহজ ও সাধারণ পদ্ধতি। অর্থাৎ দুই পায়ে ক্রমাগত লাফাতে হবে একটানা ১০ মিনিট। এরপর স্ট্যামিনা থাকলে ধীরে ধীরে বাড়িয়ে নিতে পারেন সময়। তবে কয় দিন অভ্যাস করলে সময় বাড়ানো যায় সহজেই।
এক পায়ে লাফ
স্কিপিং রোপে দুই পায়ের মতো এক পা এক পা করে লাফাতে পারেন। এতে কোমরের মাংসপেশির ব্যায়াম হবে ভালো করে। এই পদ্ধতিতে ক্রমাগত দৌড়ানোর মতো করে মেঝেতে একবারে একটি করে পা ফেলতে থাকবেন। আর সেই সঙ্গে দড়িটাকে ব্যালেন্স করে ঘুরাতে হবে। এভাবে ক্রমাগত ১০ মিনিট করবেন।
উপকারিতা
অতিরিক্ত ওজন ও পেটের মেদ কমাতে মাত্র ৩০ মিনিট দড়ি লাফিয়ে আপনি ৩৫০ ক্যালোরি কমাতে পারবেন। ১০ মিনিট দড়ি লাফাতে যে শারীরিক পরিশ্রম হয়, তা আট মাইল দৌড়ানোর সমান। পুরো শরীরের অতিরিক্ত ওজন বা পেট যেটাই কমাতে চান, সেটা নিয়মিত স্কিপিংয়ের মাধ্যমে সম্ভব। তবে প্রথমদিকে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে যতটা স্কিপিং করা সম্ভব, ততটা স্কিপিং করুন। দম অনুযায়ী আস্তে আস্তে সময়টা বাড়ান।
হার্ট ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বহু গুণে বাড়িয়ে দেবে নিয়মিত দড়ি লাফের অভ্যাস। দম বাড়াতে, শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার ক্ষেত্রে দড়ি লাফ বেশ কার্যকর। শরীরে দ্রুত রক্ত সরবরাহ করবে, যা আপনার শরীরের বিভিন্ন অংশের টিস্যুগুলোয় প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও পুষ্টি-উপাদান পৌঁছে দেবে।
নিয়মিত স্কিপিংয়ের ফলে শরীরের ওপরের ও নিচের অংশ অর্থাৎ কোমর থেকে পায়ের পাতার মাংসপেশির গঠন সুন্দর ও দৃঢ় হয়। যেহেতু দড়ি লাফানোর জন্য হাত ও কাঁধ ব্যবহার করা হয়, তাই ওপরের অংশও বলিষ্ঠ হয়।
স্কিপিংয়ের সময় মস্তিষ্কের দুটি অংশই সমানভাবে সক্রিয় থাকে, ফলে মনোযোগ বাড়ে।
স্কিপিংয়ের ফলে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, হাড়ের ক্ষয় রোধ করে এবং অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যা হয় না।
দড়ি লাফের সময় শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে বিষাক্ত উপাদানগুলোর অনেকটাই বেরিয়ে যায়। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বৃদ্ধি পায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
কোথায় করবেন
দড়ি লাফ উঠান কিংবা ছাদেও করা সম্ভব। ওপরের দিকে যথেষ্ট পরিমাণে শূন্যস্থান থাকলে ঘরের ভেতরেও করা যায়।
সতর্কতা
পায়ের নিচ দিয়ে দড়ি আনার সময় যেন পায়ে পেঁচিয়ে না যায়। এছাড়া শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য দৃষ্টি সব সময়ই সামনে থাকবে। আরামদায়ক ফ্ল্যাট জুতা ব্যবহার করতে হবে।
বাড়িতেই তৈরি করুন মিনারেল ওয়াটার
আমরা অনেক সময় বাইরের কেনা মিনারেল ওয়াটার পান করি। আর ঘরে সাধারণত ফিলটার করা বা ফুটানো পানিতেই আস্থা রাখি।
আমরা কি জানি ফিলটার করা পানি থেকে শুধু ময়লা এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করা যায়। কিন্তু মিনারেল ওয়াটার নানারকম খনিজ যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদিতে সমৃদ্ধ।
কাজেই বুঝতেই পারছেন যে, মিনারেল ওয়াটার যদি নিয়মিত পান করা যায় তা হলে শরীরের নানা উপকারে তা লাগে। তবে একথাও ঠিক যে প্রতিদিন মিনারেল ওয়াটারের জার বা বোতল কেনা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে খুব অল্প খরচে বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন মিনারেল ওয়াটার।
কীভাবে, জেনে নিন
উপকরণ
ফিলটার করা পানি, বেকিং সোডা, এপসম সল্ট, পটাশিয়াম বাই-কার্বোনেট।
যেভাবে করবেন
একটি পরিষ্কার পাত্রে ফিলটার করা পানি -২ লিটার, বেকিং সোডা -চা-চামচের ১৪, ইপসম সল্ট চা-চামচের ১৪ এবং পটাসিয়াম বাইকার্বোনেট – চা-চামচের ১৪।
এবার সব উপকরণ খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর ছেঁকে বোতলে ভরে রাখুন আপনার বিশুদ্ধ-নিরাপদ পানি।
নিয়মিত মিনারেল ওয়াটার পানে পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তসঞ্চালন এবং হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
উচ্চতা অনুযায়ী স্বাভাবিক ওজন জেনে নিন
উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন কত হওয়া উচিত, আসুন জেনে নিন
উচ্চতা পুরুষ(কিলোগ্রাম) নারী(কিলোগ্রাম)
৫ ফুট ০ ইঞ্চি ৪৭-৫৮ ৪৩-৫৫
৫ ফুট ১ ইঞ্চি ৪৮-৬০ ৪৫-৫৭
৫ ফুট ২ ইঞ্চি ৫০-৬২ ৪৬-৫৯
৫ ফুট ৩ ইঞ্চি ৫১-৬৪ ৪৮-৬১
৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ৫৩-৬৬ ৪৯-৬৩
৫ ফুট ৫ ইঞ্চি ৫৫-৬৮ ৫১-৬৫
৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ৫৬-৭০ ৫৩-৬৭
৫ ফুট ৭ ইঞ্চি ৫৮-৭২ ৫৪-৬৯
৫ ফুট ৮ ইঞ্চি ৬০-৭৪ ৫৬-৭১
৫ ফুট ৯ ইঞ্চি ৬২-৭৬ ৫৭-৭১
৫ ফুট ১০ ইঞ্চি ৬৪-৭৯ ৫৯-৭৫
৫ ফুট ১১ ইঞ্চি ৬৫-৮১ ৬১-৭৭
৬ ফুট ০ ইঞ্চি ৬৭-৮৩ ৬৩-৮০