তথ্য-৩০১ ▌ আত্মঘাতী জঙ্গিবাদ :
বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা নকশাল বাড়ি আন্দোলন অনুসরণে সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির এবং জাসদের গণবাহিনীর রাজনৈতিক সন্ত্রাস প্রত্যক্ষ করেছি। ধর্মনির্ভর রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসের নতুন রূপ দেখা যায় নব্বইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে। ১৯৭৮ সালে ঃযব ঝধঁৎ জবাড়ষঁঃরড়হ-এর মাধ্যমে আফগানিস্তানে যখন বামপন্থী পিপলস ডেমোক্রাটিক পার্টি ক্ষমতায় আসে তখন এ সরকারকে উৎখাতের জন্য মুজাহিদিন বাহিনী গড়ে উঠে। পাকিস্তান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশ তখন এ মুজাহিদিন বাহিনীকে নানাভাবে সাহায্য করতে থাকে। ফলে পাশ্চাত্যের সহায়তায় আফগানিস্থানে সারা বিশ্ব থেকে মুসলিমরা যুদ্ধে অংশ নিতে থাকে। নাজিবুল্লাহ সরকারের পতন ঘটার পর বাংলাদেশ থেকে যারা যুদ্ধে গিয়েছিল তারা দেশে এসে আলকসন্ত্রাসনির্ভর, আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলে। তবে শিয়া ও সুন্নি মতের যত মাজহাব আছে তার কোথাও আত্মঘাতী বোমা হামলার ধারণা পাওয়া যায় না। আত্মঘাতী বোমা হামলার ধারণা বিশ্বে প্রথম আনে শ্রীলঙ্কার এলটিটিই।
তথ্য-৩০২ ▌নবরাত্রি উৎসব :
শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব হলো ভারতীয় নবরাত্রির বঙ্গদেশীয় সংস্করণ। তবে কিছু চারিত্রিক তফাৎ আছে। ভারতের গুজরাট ও মুম্বাইয়ে নবরাত্রি সর্বাধিক জাঁকজমক ও গুরুত্বসহকারে পালন করা হয়। এই সময় গারবা (এধৎনধ) নামে ঐতিহ্যবাহী এক নৃত্য পরিবেশন করে হিন্দু ধর্মাম্বলীরা। আধুনিক যুগে গারবার সঙ্গে মিশ্রণ হয়েছে আরেক নৃত্য ঐতিহ্য 'ডান্ডিয়া রাস' (উধহফরুধ জধধং)। এই দুই মিলে এখন হয়েছে রাস গারবা (জধধং এধৎনধ)। এই রাস গারবা বা ডান্ডিয়া নৃত্য বা ডান্ডিয়া খেলায় ব্যবহৃত হয় প্রায় ১৮" লম্বা একজোড়া কাঠি হিন্দিতে ডান্ডিয়া। নারী-পুরুষ দুই দলে বিভক্ত হয়ে এই ডান্ডিয়া খেলা বা নৃত্য করে। দুই হাতে দুটি ডান্ডিয়া ধরে একে অন্যের ডান্ডিয়াতে ছন্দের তালে তালে আঘাত করে। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজে উদ্দাম মিউজিক। এতে চক্রাকারে ঘূর্ণায়নের সঙ্গে আছে হাত ও পায়ের বহুমুখী সঞ্চালন বা নৃত্য ভঙ্গিমা। কুমারীত্ব বিসর্জন দেয়ার জন্য অনেকে ঠিক করে রাখে নবরাত্রির নিশিকে। ওয়েস্টার্ন কালচারের চলমান সামাজিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে গত এক যুগে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ডান্ডিয়া সেক্স কালচার।
তথ্য-৩০৩ ▌কীভাবে ধূমপান এলো :
৬ হাজার বছর আগে মধ্য আমেরিকাতে তামাকের চাষ শুরু হয়েছিলো। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দে প্রাচীন মিশরীয়রা “ক্যানাবিস” নামক এক ধরণের ধূমপানের প্রবর্তন করেছিল। “ক্যানাবিস” ধূমপানটা অনেকটা আমাদের দেশে হুক্কার যে ধরণ সেরকম ছিলো। খৃষ্টপূর্ব ১০০০ শতাব্দীর দিকে মায়ান সভ্যতার লোকজন ধূমপান এবং তামাক পাতা চিবানো শুরু করে। পরবর্তীতে মায়ানরা তামাক গাছকে ছড়িয়ে দেয় আমেরিকা জুড়ে। ¯েপনের নাগরিক রদ্রিগো ডি যেরেজ ইউরোপিয়ানদের মধ্যে প্রথম ধূমপান করেন। ১৪৪২ সালে রদ্রিগো ডি যেরেজ কিউবায় যান। পরবর্তীতে ¯েপনে ফিরে গিয়ে তিনি জনসম্মুখে ধূমপান করে মানুষকে চমকে দেন। ইউরোপিয়ানরা ১৫৩০ সালের দিকে ক্যরিবিয়ান অঞ্চলে বৃহৎ আকারে তামাক চাষ শুরু করে। ১৮৬৫ সালে ডিউক নামে এক আমেরিকান ব্যক্তি প্রথম হাতে তৈরি সিগারেট উদ্ভাবন করেন। উপমহাদেশে নবাবি ঘরানার প্রতীক হয়ে উঠেছিল হুক্কা ও ছিলিমের সাহায্যে তামাক সেবন। ১৯৫০ সালে প্রথম সিগারেটের ক্ষতিকর দিক স¤পর্কে প্রচারনা শুরু হয়।
তথ্য-৩০৪ ▌রবীন্দ্র-নজরুল সম্পর্ক :
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল একজন বিশ্বকবি, আরেকজন বিদ্রোহী কবি। তাদের মধ্যে ছিল গভীর সখ্য; গুরু-শিষ্য স¤পর্ক ছিল দৃঢ়। রবীন্দ্রনাথ যখন তাঁর গীতাঞ্জলি কবিতা প্রকাশ করছেন তখন নজরুল ১২ বছরের বালক, আর যখন নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন তখন নজরুলের বয়স মোটে ১৪! মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজী নজরুল যেমন পরম ভক্তি করে গেছেন রবীন্দ্রনাথকে, রবীন্দ্রনাথও সেভাবেই উজাড় করে ¯েœহ করে গেছেন ৩৮ বছরের ছোট নজরুলকে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে নজরুলের প্রথম দেখা হয়েছিল ১৯২১ এর অক্টোবর মাসে শান্তিনিকেতনে। তখন নজরুলের বয়স ২২ বছর। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁকে শান্তিনিকেতনে নিয়েছিলেন। এরপর নজরুল অনেকবারই শান্তিনিকেতনে যেতেন। হৈচৈ করে মাতিয়ে রাখতেন বলে তাকে “হৈহৈ কাজী” নামে ডাকতেন রবীন্দ্রনাথ। বিদ্রোহী কবিতা শুনে রবীন্দ্রনাথ নজরুলকে জড়িয়ে ধরে বলেন সত্যিই তুই আমাকে খুন করেছিস। “নজরুল ইসলাম বহু রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেন। নজরুলের স¤পাদনায় ধূমকেতু পত্রিকার জন্য বীন্দ্রনাথ ঠাকুর আশীর্বাদবাণী লিখে দেন।
তথ্য-৩০৫ ▌মরমী সাধনা হাসন রাজা :
দেওয়ান হাসন রাজা বাংলাদেশের একজন মরমী কবি এবং বাউল শিল্পী। মরমী এই সাধক বাংলাদেশে দর্শনচেতনার সাথে সঙ্গীতের এক অসামান্য সংযোগ ঘটিয়েছে। হাসন রাজার জন্ম ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী সুরমা নদীর তীরে লক্ষণছিরি -র তেঘরিয়া গ্রামে। তাঁর পিতা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। হাসন রাজা তাঁর তৃতীয় পুত্র। হাসন দেখতে সুদর্শন ছিলেন। হাসন রাজা দাপটের সঙ্গে জমিদারী চালাতে লাগলেন। কিন্তু এক আধ্যাত্মিক স্বপ্ন-দর্শন হাসন রাজার জীবন দর্শন আমূল পরিবর্তন করে দিল। বিলাসপ্রিয় জীবন ছেড়ে দিয়ে বিষয়-আশয়ের প্রতি তিনি নিরাসক্ত হয়ে উঠলেন। তাঁর মনের মধ্যে এলো বৈরাগ্য। সাধারণ মানুষের খোঁজ-খবর নেয়া হয়ে উঠলো তাঁর প্রতিদিনের কাজ। আর সকল কাজের উপর ছিল গান রচনা। তাঁর সকল ধ্যান ধারণা গান হয়ে প্রকাশ পেতে লাগলো। সেই গানে তিনি সুরারোপ করতেন। তিনি কতো গান রচনা করেছেন তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। 'হাছন উদাস' গ্রন্থে তার ২০৬ টি গান সংকলিত হয়েছে।
তথ্য-৩০৬ ▌ নেলসন ম্যান্ডেলা :
নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতি। ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার এমভেজোর এক অভিজাত পরিবারে ১৮ জুলাই, ১৯১৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশুনা করেন এবং জোহানেসবার্গে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি আফ্রিকান জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ১৯৪৩ সালে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৪৪ সালে ইয়ুথ লিগ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়। ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস করেন। কারামুক্ত হবার পর তিনি তাঁর দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সঙ্গে শান্তিআলোচনায় অংশ নেন। এর ফলশ্রুতিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। নোবেল জয়ী এ নেতা ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর মিারা যান।
তথ্য-৩০৭ ▌আইএমএফ আর বিশ্বব্যাংক :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধ শেষেই পৃথিবীজুড়ে স্বাধীন হতে থাকল ইউরোপীয় উপনিবেশগুলো। এই নতুন দেশগুলো ভীষণ গরীব। আবার ইউরোপও বিধ্বস্ত। এই দেশগুলোকে বাঁচাতে আমেরিকার নেতৃত্বে এগিয়ে আসলো আইএমএফ আর বিশ্বব্যাংক। এরা শুধু ঋণই দেয় না, ঋণের সাথে-সাথে দেয় একটা উন্নয়ণ পরিকল্পনাও। তার প্রতি ছত্রে লেখা থাকে দাতাগোষ্ঠীর অলঙ্ঘনীয় পরামর্শ। তাদের মূল কথা - সরকারের হাত যতটা পারো ছেঁটে দাও। সবকিছু প্রাইভেট করে দাও। সব উন্মুক্ত করে দাও। কিন্তু হতদরিদ্র দেশে প্রাইভেট কো¤পানি কই। তাতে অসুবিধা নেই, আছে মাল্টিন্যাশনাল কো¤পানি। তাঁরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাবে। লক্ষ লক্ষ লোকের চাকুরি হবে। সরকারের ট্যাক্স বেশি আদায় হবে। যেমন, গমের দাম যদি বেশি হয় আর অন্য দেশ কম দামে গম কিনবে। এভাবে সব চলে যাচ্ছে বিদেশী কো¤পানির হাতে। ছোট ছোট শিল্প ধ্বংস হয়ে বাজার ভরে গেছে বড় বড় কো¤পানির পণ্যে। ঋণ তো শোধ হয়ইনি, উল্টো বেড়েছে। এই দাতাগোষ্ঠী রয়েছে বিশ্বজুড়ে সিন্ডিকেট।
তথ্য-৩০৮ ▌‘মিনিমালিস্টিক এপ্রোচ’ :
পশ্চিমারা আজকাল ভোগবাদের স্থূল ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করছে। জীবনধারণের জন্য যতটুকু না হলেই নয়; ঠিক ততটুকু ব্যয় করছে তারা। বড় এপার্টমেন্ট বা দামি গাড়ি কিনে অযথা অর্থ লগ্নি করতে চাইছে না কেউ। এটাই মিনিমালিস্টিক এপ্রোচ। একটা ছোট এপার্টমেন্টের ¯েপসকে কীভাবে সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যায়; সে চেষ্টা করছে তারা। গাড়ি না কিনে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বা সাইকেলে যাতায়াতকেই যুক্তিসংগত মনে করছে। যাদের কাজ অনলাইন নির্ভর কিংবা অবসর নেয়া মানুষ গ্রামে বসবাসকেই পরিবেশবান্ধব মনে করছে। আগে পশ্চিমারা আমাদের মতো গাড়ি-বাড়ি আর সন্তানদের জন্য অর্থ সঞ্চয় করতেন। কিন্তু নতুন প্রজন্ম এসবকে ভুল চিন্তা বলেই চিহ্নিত করেছেন। তাদের ভাবনাটা এমন, সন্তানকে ভালো শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনের খানিকটা সুযোগ দিয়ে দিলেই যথেষ্ট; এরপর নিজের জীবন নিজেই গড়বে তারা। পক্ষান্তরে আমরা বাঙালিরা সম্পদ বাড়ানো এবং নিজ শুক্রকিটের জন্য সঞ্চয় করে মৌচাক তৈরি’ করছি। কষ্ট করে অর্জন না করলে সে কিন্তু মানুষ নয়, পশু হয়ে গড়ে উঠে।
তথ্য-৩০৯ ▌জাপানি মেয়েদের ওজন :
২৫ বছর ধরে বিশ্ব রেকর্ডে দীর্ঘায়ু হওয়ার শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছে জাপানি মেয়েরা। তারা প্রায় ৮৭ বছর বা তার বেশি সময় বাঁচে। পাশাপাশি ¯ি¬ম ফিগারের অধিকারীও হয়। এর পেছনে গোপন রহস্য হলো যেসব খাবার জাপানিরা নিয়মিত খায় তার তালিকার শীর্ষে থাকে সামুদ্রিক মাছ, শৈবাল (সিওইড) , ফল, সয়া, ভাত, সবজি এবং গ্রিন টি। এসব খাদ্য বস্তুর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি এইজিং বা বয়সরোধক উপাদান। যা ওজনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বেশ উপকারী। ‘ছোটবেলা থেকেই জাপানে শিশুদের শেখানো হয় খাবার ধীরে ধীরে খেতে এবং প্রতি কামড়কে উপভোগ করতে। এখানে নিয়ম হলো বাটি ভরে খাবার না খাওয়া। জাপানিরা সকালের খাবারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়। জাপানি নারীরা প্রচুর হাটে এবং চকোলেট, কুকিস, আইসক্রিম এবং কেক খুব কম খায়। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, মোটা মেয়েদের চাকরি হয় না, স্বাস্থ্য বাড়লে চাকরি যায়, সবাই হেয় করে জাপনি সমাজে। পরিবার ও সমাজে মোটা মানুষের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্ঠিভঙ্গির কারণে তারা মোটা হয় না।
তথ্য-৩১০ ▌নারীত্ব :
মেয়েরা তার স্বামীর বাবা-মাকে কম সহ্য করলেও নিজের বাবা-মাকে কখনো ছাড়তে চায় না এবং ছেড়ে যায় না। নিজের বাবা-মার দিকে তার মনের সমস্ত আবেগ আটকে থাকে। এটা নারী চরিত্রের বড় একটা দিক। এমন বহু কৃতী ছেলেকে পাওয়া যাবে, যারা বড় হয়ে কৃতী হয়ে মা-বাবার খোঁজখবর রাখে না। এমন বহু ছেলেকে পাবেন তারা কেউ কেউ বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে বিলেতে বা আমেরিকায় পড়তে গিয়ে আর ফেরেনি। বিয়ের কিছু বছর পর স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে যৌন স¤পর্ক ফিকে হতে শুরু করে। স্বামী থেকে পূর্ণ যৌন তৃপ্তি না পেলেও মেয়েরা মোটেও বিবাহবিচ্ছেদের পথ মাড়ান না। গবেষণায় দেখা গেছে ৬৫ শতাংশেরও বেশি মহিলা পরপুরুষে মজেছেন যৌন অতৃপ্তির কারণে। কিন্ত তারা মোটেও বিবাহবিচ্ছেদের পথ মাড়ান না। স¤পর্কের ক্ষেত্রে পুরুষরা নারীর শারীরিক সৌন্দর্যের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয় আর নারীরা আগ্রহী হয় পুরুষের সামাজিক মর্যাদার প্রতি। দীর্ঘ মেয়াদী স¤পর্কের জন্য নারীরা সামাজিক মর্যাদাপূর্ণ পুরুষদেরকে চায় এবং পুরুষরা চায় সুন্দরী নারীদের। মেয়েরা সামাজিক আর পুরুষেরা শারিরিক।
তথ্য-৩১১ ▌যন্ত্রের মধ্যে মানুষ বাচবে :
মানুষের মস্তিষ্ক জটিল বৈদ্যুতিক সার্কিটের মতো কাজ করে। এটি ক¤িপউটারেও একদিন তৈরি সম্ভব হবে। আর ওই ক¤িপউটার-এর মধ্যে মস্তিষ্কের সব স্মৃতি সংরক্ষণ করে মানুষের সত্তাকে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখা যাবে। যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হানা ক্লিচলো বলেন, মানুষের মস্তিষ্কের মতো কোনো ক¤িপউটারে এক লাখ কোটি সংযুক্তি থাকলে এর মধ্যকার কোনো প্রোগ্রামে মানুষের মস্তিষ্ক চালানো সম্ভব। গবেষকরা এরই মধ্যে মস্তিষ্কের বিভিন্ন ছোট অংশের কাজ স¤পর্কে জানতে পেরেছেন। মানুষের মস্তিষ্কের গড়পড়তা ওজন দেড় কেজি, যা শরীরের ওজনের মাত্র দুই শতাংশ। অথচ শরীর মোট উৎপাদিত শক্তির ২০ শতাংশই ব্যবহার করে মস্তিষ্ক। মস্তিষ্কের সব অংশেই সব সময় শক্তিপ্রবাহ বজায় থাকে। তবে কোনো নির্দিষ্ট কাজের জন্য মস্তিষ্কের নির্ধারিত অংশ কার্যকর হয়। গবেষক হানা ক্লিচলো বলেন, শিঘ্রই তৈরি হবে মস্তিষ্কের মতো জটিল বৈদ্যুতিক সার্কিট। তখন মানুষের চেতনাকে ক¤িপউটারের একটি প্রোগ্রামে নিয়ে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
তথ্য-৩১২ ▌তরুন প্রজন্ম :
বিয়ের ফাঁদে পড়তে চাইছে না তরুণ প্রজন্ম। কারণ ‘আইনের চোখে বিয়েটা যত সহজ, বিয়ে থেকে বেরিয়ে আসার ব্যাপারটা ঠিক ততটাই কঠিন! তারা ফেসবুকে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন অ্যান্টি-ম্যারেজ কমিউনিটি। বিয়ে নামের দায়িত্ব কাধে নিতে বন্ধুত্ব- প্রেমের স¤পর্কটাকেই ভেঙে চুরে ফেলা কিংবা গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ড স্ত্রী বা স্বামীরূপে অবতীর্ণ হলে কী কী ভয়াবহতা ঘটতে পারে, সেই আশঙ্কায় নতুন প্রজন্ম বিয়ের দরজা বন্ধই রাখছেন। তার চেয়ে বরং প্রেমটাই থাকুক। কিংবা কমিটমেন্টহীন লিভ-ইন। সিঙ্গল থাকলেই বা ক্ষতি কী? ভরপুর স্বাধীনতা। যেথা ইচ্ছে যাও, যা ইচ্ছে খাও, ফুর্তি করো। জীবন তো একটাই, আবার যৌবনটাও সংক্ষিপ্ত। কেবল একজনের সঙ্গেই প্রেম হবে, একজনকে দেখেই জীবন যাবে, এমনটা ভাবতে পারছে না তারা। কেবল অগুন্তি পুরুষ বা নারী বন্ধু রাখার লোভে বিয়ে ব্যাপারটাই এড়িয়ে চলছে আজকের প্রজন্মে। তাদের কমিটমেন্ট কেরিয়ারের প্রতি, নিজের উপভোগের প্রতি। ইন্টারনেটের খোলা উঠোনে অগুনতি স¤পর্কে জড়িয়ে পড়ছে তারা।
তথ্য-৩১৩ ▌শাড়ি ব্লাউজ তত্ত্ব :
একসময় নারী পুরুষ উভয়েই ধুতি পরতো। দক্ষিণ ভারতে পুরুষের মতো লুঙ্গিও পরতো নারীরা। প্রাচীন ভারতের নারীরা বুকের ওপর কিছুই পরতো না। কাপড়গুলোয় কোনো সেলাই ছিল না। হিন্দুদের মধ্যে সেলাইবিহীন কাপড় পরার চল ছিল। শাড়ির নাম তখন শাড়ি ছিল না, ছিল সাত্তিকা। সংস্কৃত শব্দ সাত্তিকা থেকে এলো সাতি, সাতি থেকে সাডি, সাড়ি থেকে শাড়ি। উড়িষ্যায় ‘মাছের লেজের স্টাইল’ এলো সতেরো শতকে। ‘দুটো পাকে ধুতি দিয়ে পেঁচিয়ে মাছের লেজের মতো কাঁধ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া, লেজটা আঁচল। মেয়েদের ধুতিটাই ধীরে ধীরে এভাবে শাড়িতে রূপান্তরিত হয়। ইংরেজ আমলে ব্লাউজ পেটিকোট পরা শুরু হয়েছে। মুসলমানরা ঘাগড়া নিয়ে এসেছিল। সেই ঘাগড়া দেখেই পেটিকোট তৈরি শুরু। বৌদ্ধ ও হিন্দুরা আমাদের পুর্বপুরুষ এবং পূর্বনারী। বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা একাত্তর সালে জন্ম নেইনি। বাঙালি হাজার বছরের পুরোনো জাতি। একসময় আমাদের পূর্বনারীদেরও পূর্বনারীরা ন্যাংটো থাকতো, জন্তুর চামড়া পরতো, তারপর শুরু করল কাপড় বোনা ও পরা।
তথ্য-৩১৪ ▌ বেগম রোকেয়া :
বেগম রোকেয়ার জন্ম ১৮৮০ সালে রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামে। তৎকালীন মুসলিম সমাজ ব্যবস্থা অনুসারে রোকেয়াকে ঘরে আরবি ও উর্দু শেখানো হয়। তবে বেগম রোকেয়ার বড় ভাই গোপনে রোকেয়াকে ঘরেই বাংলা ও ইংরেজি শেখান। ১৬ বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয় ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে। তাঁর স্বামী মুক্তমনা মানুষ ছিলেন। রোকেয়াকে তিনি একটি স্কুল তৈরির জন্য অর্থ দেন। রোকেয়া ১৯০২ সালে পিপাসা নামে প্রথম গল্প লিখেন। সামীর মৃত্যুর পর কলকাতায় এসে ১৯১১ সালের ১৫ই মার্চ তিনি সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল চালু করেন। প্রাথমিক অবস্থায় ছাত্রী ছিল ৮ জন। চার বছরের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪-তে। ১৯৩০ সালের মাঝে এটি হাই স্কুলে পরিণত হয়। ১৯১৬ সালে তিনি মুসলিম বাঙালি নারীদের সংগঠন আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনা ঝঁষঃধহধ’ং উৎবধস বা সুলতানার স্বপ্ন। তিনি বুঝেছিলেন, সমাজে নারীর উন্নয়নের জন্য প্রথমে দরকার কন্যাশিশুদের উন্নয়ন।
তথ্য-৩১৫ ▌জার্মান সংস্কৃতি :
জার্মানিতে এফ.কে.কে মানে হলো ‘ফ্রি বডি কালচার’। কোনো স্থানে এই লেখাটি থাকার মানে আপনি সেখানে পুরো নগ্ন হয়ে ঘোরাফেরা করতে পারবেন। যেকোনো বয়সের বা লিঙ্গের সবার ক্ষেত্রেই একই নিয়ম প্রযোজ্য। # রোববার মানে জার্মানিতে শব্দহীন দিন। এ দিনে শব্দ তৈরি হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। # ধরুন, আপনি জার্মানিতে কোনো বার-এ গিয়ে বিয়ার পান করছেন। ওয়েটার এসে যদি জিজ্ঞেস করে আপনার আরও বিয়ার চাই কিনা - তখন আপনি যদি বলেন ‘ডাংকে’, মানে ধন্যবাদ, তাহলে ওয়েটার বুঝে নেবে যে আপনি আর বিয়ার চান না। কিন্তু আপনি যদি বলেন ‘বিটে’, মানে প্লিজ, তাহলে ওয়েটার বুঝবেন হ্যাঁ, আপনার আরও চাই। # বাঙালিদের যেমন সবসময় গরম খাবার চাই, জার্মানদের বেলায় তেমনটি নয়। জার্মানরা শুধু দুপুরের খাবারটা চান গরম। রাতে কিন্তু তারা ঠা-া ব্রেড বা রুটির সঙ্গে শূকরের মাংস, পনির, চিজ বা সবজি দিয়ে খেয়ে ফেলেন। অনেক সময় শেষ পাতে থাকে নানা রকম ফলও। জার্মনিরা আচরণে বেশ ভদ্র এবং মানবিকতা রক্ষায় খুবই দায়িত্বশীল।
তথ্য-৩১৬ ▌বাংলায় সুফি প্রভাব :
বাংলাদেশে ইসলাম ধর্ম বিকাশের স্বার্থে শতকে ভারতে প্রথম সুফিদের প্রবেশ ঘটে। শাহ সুলতান রুমী ১০৫৩ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহে এসেছিলেন এবং বাবা আদম শহীদ সুফি ১১১৯ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার বিক্রমপুরে রাজা বল্লাল সেন কর্তৃক নিহত হন। তেরো শতকে সুফি-আগমনের ধারাটি বেশ প্রবল ছিল। বাংলায় চিশতিয়া তরিকাকে জনপ্রিয় করে তোলেন শেখ আখী সিরাজউদ্দিন। তিনি দিল্লির বিখ্যাত সুফি শেখ নিযাম-উদ-দীন-আউলিয়ার শিষ্য ছিলেন। চৌদ্দ শতকে বাংলায় রাজশক্তি রূপে মুসলমানদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলে এ দেশে সুফি আগমনের গতিধারা অনেক বৃদ্ধি পায়। রাজ পৃষ্ঠপোষকতা ধর্ম প্রচারের পথকেও প্রশস্ত করেছিল। বাংলায় মুসলিম আগমনের পরবর্তী ধারা শাসক মুসলমানদের আগমন। প্রশাসন পরিচালনার জন্য অবাঙালি শেখ সৈয়দ-পাঠান; তুর্কিস্থান, পারস্য, আফগানিস্থান, গজনী, উত্তর ভারত ইত্যাদি স্থান থেকে আগত মুসলমান আর সুফি-তৎপরতায় ধর্মান্তরিত মুসলমানদের সমন্বয়ে বাংলায় ক্রমে মুসলিম সমাজ ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটতে থাকে।
তথ্য-৩১৭ ▌স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরংঙ্গনা :
যুদ্ধের পর পর ধর্ষিত নারীদের ব্যাপারে বাংলাদেশে যে ইতিবাচক পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছিল, তা পৃথিবীর আর কোনো দেশের যুদ্ধের ক্ষেত্রে ঘটেনি। যেমন প্রথমত, স্বাধীনতার পরপরই এই ধর্ষিত নারীদের বীরাঙ্গনা খেতাব দেওয়া হয়েছিল। পৃথিবীর আর কোনো দেশে যুদ্ধে ধর্ষিত নারীদের এমন রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, এই নারীদের জীবন ও স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘গর্ভপাত’কে তখন আইনসিদ্ধ করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালে সারা পৃথিবীতেই গর্ভপাত ছিল একটি বিতর্কিত বিষয়। জোরপূর্বক গর্ভধারণের ক্ষেত্রে গর্ভপাতের পক্ষে আন্তর্জাতিক আইন হয়েছে সবেমাত্র ১৯৯০ সালে। তৃতীয়ত, যেসব যুদ্ধশিশু ইতিমধ্যে জন্ম নিয়েছিল, তাদের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে তখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পালক হিসেবে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সবশেষে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ধর্ষিত নারীদের নার্সিং, কুটির শিল্প ইত্যাদি নানা পেশায় পুনর্বাসন করা হয়েছিল। যুদ্ধে লাঞ্ছিত নারীদের নিয়ে এমন সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের উদাহরণ আর কোথাও নেই।
তথ্য-৩১৮ ▌জাপানি দর্শন :
# জাপানী বাচ্চারা স্কুলে তাদের শিক্ষকের সাথে প্রতিদিন ১৫/২০ মিনিট স্কুল পরিষ্কার করে। # বয়স্ক জাপানীরা বাসায় এক জাতের কুকুর পালেন। বেশি হাঁটাহাঁটি না করলে এসব কুকুরের পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়, আর তাই প্রভুগণ কুকুরদের হাঁটাতে ও নিজেরা হাঁটতে রাস্তায় বের হন। সংগে হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে যান। যেন কুকুরের পায়খানা ব্যাগে ভরে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে পারেন। # অবসরপ্রাপ্ত লোকজন যাদের কোনো কাজ নেই, তাঁরা দলবদ্ধভাবে স্বেচ্ছাসেবীর পোশাক পড়ে রাস্তা পরিষ্কার করতে নামে । # জাপানী জনগণ ট্রেনে, বাসে, রেস্টুরেন্টে, ফোনে কথা বলা থেকে বিরত থাকে। # মানুষের সাথে চলাচলের সুবিধার্থে, প্রাইমারী স্কুলের ১ম শ্রেণী থেকে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত জাপানী বাচ্চাদের নৈতিকতা শিক্ষা দেয়া হয়। # জাপানে কোনো কাজের আয়া বা বুয়া নাই। সন্তান এবং ঘরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব একমাত্র পিতা মাতার । # যদি কোন জাপানি বুফে রেস্টুরেন্টে যায়, নির্দেশ থাকে- দয়া করে যা যা খেতে পারবেন, তাই পাতে নেবেন। অতিরিক্ত নিয়ে খাবার নষ্ট করবেন না । এটাকে তারা খুবই মন্দভাবে দেখেন। # প্রতি বছরে ট্রেন লেটের হার মাত্র ৭ সেকেন্ড । জাপানীরা সময়কে মূল্য দেয় এমনকি সেকেন্ডের বেলাতেও ।
তথ্য-৩১৯ ▌সিঙ্গাপুরের দর্শন:
সিঙ্গাপুরে চারটি সরকারি ভাষা রয়েছে। ইংরেজি, মান্দারিন, মালয়ের সঙ্গে রয়েছে তামিল ভাষাও। সিঙ্গাপুরের নাগরিকরা বেশিরভাগ কথার শেষে 'লা' শব্দটি ব্যবহার করেন। যেমন 'ওকে' বলেন 'ওকে-লা', 'থ্যাঙ্কউ' বলেন 'থ্যাঙ্কউ-লা'। # পাঁচ বা তার বেশি লোকজনের ক্ষেত্রে কোথাও জড়ো হতে গেলে পুলিশের নানা কড়া নিয়মাবলি মানতে হয়। রাত দশটার পর দুজনের বেশি লোক জমায়েত হওয়া অবৈধ। # সিঙ্গাপুরিয়ানরা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটের মধ্যে ডিনার সেরে ফেলেন। # সিঙ্গাপুরে মাত্র একটাই দল রয়েছে। 'পিপলস অ্যাকশন পার্টি'। ১৯৫৯ সাল থেকে তারা ক্ষমতায় রয়েছে। # সমকামিতা এখানে বেআইনি, তবে জুয়া আইনসিদ্ধ। # সিঙ্গাপুরের নাগরিকরা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম হাঁটা মানুষ। ঘণ্টায় ৬.১৫ কিলোমিটার। সেখানে ভারতীয়দের হাঁটার গতি ঘণ্টায় গড়ে ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার। # অনুমতি না নিয়ে কাউকে জড়িয়ে ধরা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। # সিঙ্গাপুরের ডাক নাম ফাইন সিটি বা জরিমানার শহর। কারণ ছোট ছোট কারণেও এখানে জরিমানার ব্যবস্থা আছে।
তথ্য-৩২০ ▌নারী খৎনা:
'নারী খৎনার মত ভয়ঙ্কর প্রথা মূলত মুসলিম, খ্রিস্টান ও সর্বপ্রাণবাদীদের মধ্যে প্রচলিত। আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় ২৯টি দেশে প্রতি বছর ১২ কোটি নারী খৎনার শিকার হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নারী খৎনা হয় চার রকমের। পদ্ধতি ১: মেয়েদের সবচেয়ে ¯পর্শকাতর স্থান কাইটোরিস বা ভগাঙ্কুরের স¤পূর্ণ অগ্রভাগ বা লম্বালম্বি কেটে অপসারণ করা হয়। পদ্ধতি ২: এ পদ্ধতিতে স¤পূর্ণ কাইটোরিস বা ভগাঙ্কুর অপসারণ করা হয়। সেই সাথে লেবিয়া মাইনরার আংশিক বা স¤পূর্ণ অপসারণ করা হয়। পদ্ধতি ৩: এ পদ্ধতিটা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। লেবিয়া মেজরার ভেতরের অংশসহ কেটে ফেলা হয়। পরে সেলাই করে দেওয়া হয়। পদ্ধতি ৪: এ পদ্ধতিতে ভগাঙ্কুরে সুচ ফোটানো, এবং যোনিতে তৃণলতা প্রবেশ করানো হয়, যাতে রক্তপাত হয় এবং যোনিদ্বার চিকন হয়। খৎনার পর চল্লিশ দিন পর্যন্ত বালিকার দুই উরুকে একত্রিত কর বেঁধে রাখা হয়, যাতে যোনি মুখ ভালোমতো জুড়ে যেতে পারে। বিয়ের পর সেলাই কেটে যোনিমুখ ফাঁক করা হয়। তালাক পেলে বা বিধাব হলে আবার নতুন করে সেলাই পড়ে।
তথ্য-৩২১ ▌নারী ও বিবাহ :
যে সমাজে নারীর সংখ্যা বেশি, সেই সমাজে একই পুরুষের সঙ্গে বহু নারীর বিবাহ হয়। তখন নারীর জীবনে আসে জটিলতা। বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি যখন প্রবর্তন হয়নি, নারীর কারও ব্যক্তিগত স¤পত্তি ছিল না। ছিল সম্মতি সাপেক্ষে যৌন মিলনের প্রথা। প্রাচীনকালে নারী তার পছন্দমতো পুরুষকে ধারণ করত। কিন্তু আগুন আবিস্কার আনল নারীর জীবনের প্রথম পরিবর্তন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় পুরুষের শিকার কাজে নারী খুব একটা সাহায্য করতে পারত না। প্রসবের পর বাচ্চাদের বড় করে তোলা- যতদিন পর্যন্ত আবার শিকার ধরার মত শক্তপোক্ত না হয়, ততদিন নারী নির্ভরশীল হয়ে পড়ল পুরুষের। তখন পুরুষ তৈরি করে দিল তার আচরণবিধি। যখন ধর্মের উদ্ভব হল; তখন নারীর ভূমিকা ও আচরণবিধি লেখা হয়ে গেল ধর্মগ্রন্থে'র মধ্যে। ঈশ্বরের নির্দেশ বলে সেই নিদানগুলি মেনে নিতে হল নারীকে। কয়েক হাজার বছর ধরে গৃহবাস করে নারী তখন সেই বন্দি জীবনেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি তার যে যৌন স্বাধীনতাটুকু ছিল সেটাও কেড়ে নিয়ে তাকে এক পুরুষের যৌনদাসী করে ফেলা হল।
তথ্য-৩২২ ▌তিব্বত ও দালাইলামা :
৩ হাজার ৬শ' বছর আগে মানুষ প্রায় ৩ হাজার ৪শ' মিটার উচ্চতার তিব্বত মালভূমিতে বসবাস শুরু করে। পশু শিকার করতেই মানুষ প্রথমে হিমালয়ের উত্তরে তিব্বত মালভূমিতে যায়। গণচীনের একটি স্বশাসিত অঞ্চল এটি। তিব্বতীয়রা এই অঞ্চলকে গণচীনের অংশ মানতে রাজি নয়। ১৯৫৯ সালে গণচীনের বিরুদ্ধে তিব্বতিদের স্বাধিকার আন্দোলনে ব্যর্থ হয়। তখন দালাইলামার নেতৃত্বে অসংখ্য তিব্বতি ভারত সরকারের আশ্রয় গ্রহণপূর্বক হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় বসবাস শুরু করেন। সেখানে স্বাধীন তিব্বতের নির্বাসিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। তিব্বতের অধিকাংশ মানুষই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তিব্বতের বিভিন্ন মন্দিরের ভেতর সোনার তৈরি বড় বড় প্রদীপ জ্বালানো থাকে। ৪ হাজার ভরি ওজনের একটি প্রদীপও সেখানে রয়েছে। তিব্বতিরা অত্যান্ত ধর্মভীরু। তাদের প্রধান ধর্মগুরুর নাম দালাইলামা। ১৩৯১ সালে প্রথম দালাইলামার আবির্ভাব ঘটে। দালাইলামাকে তিব্বতিরা বুদ্ধের অবতার মনে করে থাকে। যখনই কেউ দালাইলামার পদে অভিষিক্ত হয় তখনই বুদ্ধের আত্মা তার মধ্যে আবির্ভূত হয়।
তথ্য-৩২৩ ▌জেরুজালেমে ইহুদি বসতি :
আজকের ইহুদি জাতির পূর্বপুরুষ যাযাবর হিব্রু গোত্রের মানুষরা যুগ যুগ ধরে মেসোপটিয়ামিয়ায় (আজকের ইরাক) প্রতিপক্ষ গোত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে হারিয়েছে হাজার হাজার প্রিয়জনকে। তারা একসময় আসে মিসরে। সেখানে ফারাওদের অত্যাচার থেকে প্রাণে বাঁচাতে পালিয়ে আসে জুডিয়ার পাহাড় এলাকায় (প্যালেস্টাইন) এবং স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করে। একসময় ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার স্থল বাণিজ্য পথের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠে এই জেরুজালেম নগরী। কাফেলার পর কাফেলা আসছে বা যাচ্ছে ইউরোপ, এশিয়া বা আফ্রিকার নানান দেশে। তাকে থামতে হচ্ছে, বিশ্রাম নিতে হচ্ছে এই নগরীতে। রোমান সম্রাটের খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ ও ইউরোপে খ্রিস্টধর্মের প্রসারের ফলে জেরুজালেমে ইহুদি আধিপত্যের অবসান ঘটে। দখলদার খ্রিস্টধর্মীদের অত্যাচার-নিপীড়ন থেকে বাঁচার জন্য তারা ছড়িয়ে পড়ে এশিয়া-ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশ-আমেরিকানদের সহায়তায় তারা আবার প্যালেস্টাইনে ফিরে আসে।
তথ্য-৩২৪ ▌মাদ্রাসা শিক্ষা :
১১৭৪ সালে মুহাম্মদ ঘোরীর রাজত্বকাল থেকে এবং সর্বশেষ মুঘলদের রাজত্ব কাল ১৭৫৭ সাল পর্যন্ত পার্শী ও আরবি ভাষায় ধর্ম শিক্ষা দেওয়া হতো। এই মুগল আমলে মসজিদ কেন্দ্রিক মক্তব গড়ে উঠে, এবং মাদ্রাসা শিক্ষার পাঠক্রম বর্ধিত করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা চালু করা হয়। সে আমলে পর্যায়ক্রমে জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত, ভূগোল, হিসাববিজ্ঞান, কৃষি, লোকপ্রশাসন, জীববিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা ও চারুকলা প্রভৃতি বিষয় মাদ্রাসা পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত ছিল। সিকদার লোদির সময়কালে হিন্দুরা মূলতঃ রাজকর্মচারী হওয়ার জন্য পার্শী শিখতে এই মক্তবগুলোতে আসতো। কারণ তখন রাজভাষা ছিল পার্শী। মাদ্রাসা শিক্ষা শুরু হয় সুলতানি আমলে (১২১০-১৫৭৬)। সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহ (১৪৯৩-১৫১৯) বহু মাদ্রাসা স্থাপন করেন। মওলানা আবু তাওয়ামা ১২৭৮ সালে সোনারগাঁয়ে একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেন। ১৮৬৬ সালে প্রথমে ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে পরিচালিত মাদ্রাসার সংখ্যা ১৬ হাজার ২২৬।
তথ্য-৩২৫ ▌নৃত্যকলা :
মিশরীয় দেয়াল চিত্রে খৃস্টপূর্ব ৩৩০০ সালের এবং ভারতের গুহা চিত্রে প্রাচীন নৃত্যকলার চিত্র রয়েছে। লিখিত বর্ণমালা প্রচলনের আগে নৃত্যকলার এই পদ্ধতির মাধ্যমেই আদিম লোককাহিনী বংশ পর¤পরায় চলে আসতো। নাচে দেহভঙ্গিমার মাধ্যমে ছন্দের তালে তালে ফুটে ওঠে প্রেম, রাগ, অনুরাগ, প্রতিবাদসহ সককিছু। ভারতীয় ক্লাসিক্যাল নাচে দুটি উপাদান : 'অভিনয়া' ও 'নৃত্যা'। 'নৃত্যা' ছন্দ ও শারীরিক নড়াচড়ার মাধ্যমে সঙ্গীতের ভাষার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়। অন্যদিকে 'অভিনয়া' অভিব্যক্তি এবং আবেগের মধ্যেই নিহিত। সিলেট অঞ্চলে প্রচলিত কাহিনী সম্বলিত নৃত্য হল ধামাইল নাচ। তিব্বতী সংস্কৃতির ছাম নৃত্য থেকে ছৌ নাচের উদ্ভব ঘটলেও মুখোশ থেকে নাচটির নামকরণ ছৌ হয়েছে। ওড়িশি নৃত্য হল পূর্ব ভারতের ওড়িশা রাজ্যের একটি শাস্ত্রীয় নৃত্যশৈলী। মোহিনীঅট্টম হচ্ছে দক্ষিণ ভারতের কেরল রাজ্যের একটি ধ্রুপদী নৃত্যশৈলী। মুগল ঐতিহ্য মুজরা এখন পাকিস্তানের সংস্কৃতির অংশ। ব্যালে নৃত্যে নাচ-মূকাভিনয় অভিনয় এবং সঙ্গীতের (কন্ঠ ও যন্ত্র) সমন্বয়ে শিল্প সৃষ্টি করা হয়।
তথ্য-৩২৬ ▌থ্রীসাম ম্যারেজ :
দুই স্বামী এক স্ত্রীর বিবাহিত জীবনকে থ্রীসাম ম্যারেজ বলে। আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া বা খুনের ঘটনা ঘটে স্বামী-স্ত্রীর অবৈধ স¤পর্ককে কেন্দ্র করেই। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকার থ্রীসাম লাইফে ঘটে স¤পূর্ণ উল্টো। সেখানে স্ত্রীর বয়ফ্রেন্ড বা প্রেমিক নিয়ে থ্রীসাম ম্যারেজ করে একত্রে জীবন-যাপন করে মানুষ। থ্রীসাম-এ শারিরীক সম্পর্ক চলাকালীন তারা একত্রে তিন থেকে চার ঘণ্টা কাটান। অন্য পুরুষের সঙ্গে নিজের স্ত্রীকে সহবাসে ভাগাভাগি করে আনন্দ অনুভব করেন তারা। এতে কোনোভাবেই স্বামীরদের যৌন জীবন বিঘিœত হয় না। বিশেষজ্ঞের মতে, থ্রীসামে ভিন্ন রকম আনন্দ অনুভব হলেও এতে দা¤পত্য জীবনের স্থায়িত্ব নষ্ট হতে পারে। মুলত যারা মনে করেন, এক জীবনে বহু জনের স্বাদ নিয়ে জীবনকে উপভোগ করা দরকার, তারাই থ্রীসাম ম্যারেজ করেন। পশ্চিমে আর এক ধরণের দলবদ্ধ দাম্পত্য যাপিত জীবন আছে। যাকে গ্রুপ লাইফ বলে। কিন্তু এই জীবনে কিছু সংকটও তৈরি হয়। বিশেষ কোন সুন্দরীর দিকে একাধিকের মাত্রারিক্ত চাওয়াকে কেন্দ্র করে হিংসা, মারামারি।
তথ্য-৩২৭ ▌অসুস্থতার কারণ জীবাণু :
সূর্যকে ঘিরে অন্য সকল গ্রহের মত পৃথিবীও ঘুরছে, এই মতবাদ প্রচারের জন্য কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও আর ব্রুনোকে কিরকমভাবে অত্যাচারের স্টিমরোলার চালানো হয়েছিল সে এক ইতিহাস। ব্রুনোকে তো পুড়িয়েই মারলো ইশ্বরের পুত্ররা। ষোড়শ শতকে সুইজারল্যান্ডের বেসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শাস্ত্র এবং ভেষজবিদ্যার অধ্যাপক ফিলিপ্রাস প্যারাসেলসাস ঘোষণা করলেন- মানুষের অসুস্থতার কারণ কোন পাপের ফল কিংবা অশুভ শক্তি নয়, রোগের কারণ হল জীবাণু। ওষুধ প্রয়োগে জীবাণু নাশ করতে পারলেই রোগ ভাল হয়ে যাবে। প্যারাসেলসাসের এই ‘উদ্ভট’ তত্ত্ব শুনে ধর্মের ধ্বজাধারীরা হা রে রে করে উঠলেন। সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক ধর্মবিরোধী মতবাদ প্রচারের জন্য প্যারাসেলসাসকে হাজির করা হয়েছিল ‘বিচার’ নামক এক প্রহসনের মুখোমুখি। ধর্মান্ধ বিচারকেরা ব্রুনোর মতই প্যারসেলসাসকে মৃত্যুদ-ে দন্ডিত করেছিলো। প্যারাসেলসাসকে সেদিন জীবন বাঁচাতে মাতৃভূমি ছেড়ে পালাতে হয়েছিলো।
তথ্য-৩২৮ ▌বংশধারা, রক্তধারা বা জিনতত্ত্ব :
গাধার পেটে কখনো ঘোড়া হয় না। ‘বংশগতি’ বলে কিছু যে হয়, তা আদিম যুগ থেকেই মানুষ পর্যবেক্ষণ করে এসেছে। বাবা-মায়েরা নিজের ছেলেমেয়ের মধ্যে নিজেদের বৈশিষ্ট্য খুঁজে বেড়াতেন তখনো। যে গরু বেশি দুধ দেয় তার বাচ্চাও যে বেশি দুধ দিতে পারে বা যে গাছের ফল বড় বড় হয় তার একই বীজ থেকে জন্মানো গাছের ফলও বড় হবে। বংশগতির এই জেনেটিক্সের তত্ত্ব নিয়ে বিজ্ঞানী বললেন, ‘দুর্বলকে সাহায্য করা ভালো, কিন্তু এটাও মনে রাখা উচিত যে, দুর্বল যদি বেঁচে থেকে বংশ বৃদ্ধি করতে থাকে তাহলে সমাজে দুর্বলের সংখ্যা বেড়ে যায়। এমনিতে মেধাবীদের সন্তান সংখ্যা একেবারেই কম (বিয়ে, সন্তান এসব তাদের অতি নিয়ন্ত্রিত), পক্ষান্তরে মেধাহীন সাধারণ মানুষের সন্তান হয় চক্রবৃদ্ধি হারে। অর্থাৎ সমাজে গরিবদেরই সন্তান-সন্ততি বেশি হওয়ায় সমগ্র সমাজে আস্তে আস্তে ‘খারাপ জিন’-ওয়ালা মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলবে। ১৮৮৩ সালে গাল্টন প্রতিভাবানদের বেশি সন্তান উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করতে আর ‘খারাপ’দের নিরুৎসাহিত করতে ‘ইউজেনিক্স’ নামে এক সামাজিক বিপ্লবের ডাক দেন।
তথ্য-৩২৯ ▌‘জিনগত ক্রুটি নির্মূল অভিযান :
আমেরিকায় ক্রমাগত ইউজেনিক সোসাইটি তৈরি হয়Ñ যারা ‘উন্নত পরিবার’দের পুরস্কৃত করত বেশি করে সন্তান উৎপাদনে। অপর পাশে ছিল ‘অনুন্নত’দের জোর করে জন্ম-নিয়ন্ত্রণ। ১৯০৭ সালে ইন্ডিয়ানা স্টেটে আইন করে অপরাধী, বোকাদের সমাজের স্বার্থে বন্ধ্যাত্বকরণ করানো বাধ্যতামূলক হয়। ১৯৪১ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় এরকম ষাট হাজার বন্ধ্যাত্বকরণ করানো হয়েছিল। এই ট্রেউ গিয়ে লাগে নাৎসি জার্মানিতেও। ১৯৩৩ সালে ক্ষমতায় আসার পরেই হিটলার মাত্র তিন বছরের মধ্যেই ২,২৫,০০০ মানুষের বন্ধ্যাত্বকরণ করল। নাৎসিদের রাজত্বের শেষদিকে দেখা গেল মোট ৪ লক্ষ মানুষের বন্ধ্যাত্বকরণ করা হয়েছে, অথচ তারা কারাগারে রাষ্ট্রের পয়সায় খেয়ে চলেছে। তাদের চিহ্নিত করা হলো ‘খাদ্য ধ্বংসকারী বলে। কিছুদিনের মধ্যেই নাৎসীরা এর পরিধি বিস্তৃত করে সমস্ত ইহুদি আর জিপসীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করলেন। আর এদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে তৈরি হলো গ্যাস চেম্বার। পরে বন্ধ্যাত্বকরণ কাজে মেয়েদেরকেই ব্যবহার করা হয়।
তথ্য-৩৩০ ▌জন্মসূত্র :
‘ছা পোষা বাঙালি’: বাঙালিরা নিজের জন্য নয়, শুধু বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ তৈরির জন্যই সে বেঁচে থাকে। এটা একদিকে যেমন কল্যাণকর, অন্যদিকে ক্ষতিকরও বটে। দেখুন, আপনার থেকে বের হওয়া লক্ষ কোটি শুক্রকিটের একটির অর্ধেক হচ্ছে আপনার সন্তান। আপনার বাকি লক্ষ কোটি শুক্রকিট বাঁচার জায়গা না পেয়ে মরে গেছে। আপনার সন্তানের মতো শত শত কোটি মানব সন্তান জন্ম নিয়েছে পৃথিবীতে। পৃথিবীতে আসা এ মানব সন্তানগুলো জন্মের সময় জন্মস্থান এবং জন্মদাতা বেছে নেবার সুযোগ কি পেয়েছিল? আপনি-আমি নিজেও কিন্তু অন্য অনেকের তুলনায় সুবিধাবঞ্চিত। যারা জন্ম নিয়েছে পৃথিবীর দুর্বল জন্মস্থান ও জন্মদাতার অধীনে, তারা করুণ জীবন-যাপন করছে। আমরা শুধু আমাদের শুক্রকিটের অর্ধেকাংশের সুবিধার কথা ভেবেছি আর অন্যদের বঞ্চিত করে চলেছি। এটা মানবিকতা নয়। যে কোনো মুহূর্তে পৃথিবী থেকে আপনাকে বিদায় নিতে হবে। ফলে অজস্র টাকা আর মরীচিকার পিছনে ছুটে জীবন শেষ করে বোকারাই, জ্ঞানীরা অন্যের সঙ্গে শেয়ার করে জীবন উপভোগ করে।
তথ্য-৩৩১ ▌চীনের মাকাও এবং হংকং :
প্রাচীনকালে চীন ছিল পূর্ব এশিয়ার আধিপত্য বিস্থারকারী সভ্যতা। এ অঞ্চলের অন্যান্য সভ্যতাগুলি, যেমন- জাপানি, কোরীয়, তিব্বতি, ভিয়েতনামীয়, এদের সবাইকে চীন প্রভাবিত করেছিল। তারা চীনের শিল্পকলা, খাদ্য, বস্তুসংস্কৃতি, দর্শন, সরকার ব্যবস্থা, প্রযুক্তি এবং লিখন পদ্ধতি গ্রহণ ও অনুসরণ করত। ৭ম শতাব্দী থেকে ১৪শ শতাব্দী পর্যন্ত চীন ছিল বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসর সভ্যতা। কাগজ, ছাপাখানা, বারুদ, চীনামাটি, রেশম এবং দিকনির্ণয়ী ক¤পাস সবই চীনে প্রথম উদ্ভাবিত হয় এবং সেখান থেকে বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। ইউরোপীয় শক্তিগুলি পূর্ব এশিয়ায় আগ নের ফলে চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল মাকাও মধ্য-১৬শ শতকে পর্তুগিজ নিয়ন্ত্রণে এবং কাছেই অবস্থিত হংকং ১৮৪০-এর দশকে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৯শ শতকে আভ্যন্তরীণ বিপ্লব এবং বিদেশী হ¯ক্ষেপের ফলে চীনের শেষ রাজবংশ কিং রাজবংশ দুর্বল হয়ে পড়ে। ১৯১১ সালে চীনা জাতীয়তাবাদীরা রাজতন্ত্রের পতন ঘটায়। ১৯৪৯ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি গৃহযুদ্ধে জয়লাভ করে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে।
তথ্য-৩৩২ ▌সাহারা মরুভূমি :
সাহারা মরুভূমি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মরুভূমি। এর বিস্তৃৃতি ৯৪,০০,০০০ বর্গ কিলোমিটার। উত্তর আফ্রিকার প্রায় সবটা জুড়েই এর বিস্থার। মিশর, মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, সুদান, নাইজার, মালি প্রভৃতি দেশ পর্যন্ত সাহারা মরুভুমি বিস্তৃত। সারা সাহারা মরুভূমি জুড়েই রয়েছে পাহাড়, মালভূমি, বালি ও অনূর্বর ভূমি। বেশ কিছু মরূদ্যান ও আছে সাহারাতে। এই সমস্ত মরুদ্যানেই সাহারার বেসির ভাগ লোক বাস করলেও কিছু কিছু যাযাবর উপজাতিরা বাস করে আরো দুর্গম অঞ্চলে। এদের সবাইকে নিয়ে সাহারা মরুভূমি জুড়ে এর লোকসংখ্যা ২০ লক্ষের বেশি হবে না। এদের মূল জীবিকা ছাগল, ভেড়া, ও উট পালন আর খেজুড়, গম, বার্লি ইত্যাদি চাষ করা। সাহারার আবহাওয়া মাত্রাতিরিক্ত গরম কিন্তু তা শুধু দিনের বেলাতে থাকে কিন্তু রাতে বেশ ঠান্ডা পড়ে। এমনকি কখনো কখনো পাহারের চুড়ায় বরফও জমতে দেখা যায়। সেখানকার প্রাণীদের মধ্যে উট, সাপ, গিরগিটি, শিয়ালের, এ্যান্টিলোপ, উট পাখি, গাজলা হরিণ, মরুছাগল ইত্যাদির নাম উল্লেখ করা যায়।
তথ্য-৩৩৩ ▌ইয়াবা:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে হিটলার তার মেডিকেল চিফকে আদেশ দিলেন দীর্ঘ সময় ব্যাপী যুদ্ধক্ষেত্রের সেনাদের যাতে ক্লান্তি না আসে এবং উদ্দীপনায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে বা বিমানের পাইলটের নিদ্রাহীনতা, মনকে উৎফুল, চাঙ্গা রাখার জন্য একটা কিছু আবিস্কার করতে। টানা ৫ মাস রসায়নবিদগণ চেষ্টা চালিয়ে মিথাইল অ্যামফিটামিন ও ক্যাফেইনের সংমিশ্রনে তৈরি করলেন ইয়াবা। ব্যাস! হিটলারের উদ্দেশ্য সফল। সেনারা মানসিক শক্তিতে বলিয়ান হল। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য দেশের যুদ্ধ ক্ষেত্রে দেশ মাতৃকার স্বার্থে অনেক সেনা প্রধান ইয়াবা ব্যবহার করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইয়াবার প্রভাব এত দূত ছড়িয়ে পড়বে ভাবতে পারেনি কেউ। মিয়ানমারে ওয়া এবং কোকাং নামের আদিবাসী সম্প্রদায় ইয়াবা এর সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী। বাংলাদেশের টেকনাফ বর্ডার দিয়ে মাদক হিসেবে ইয়াবা প্রথম প্রবেশ করে ১৯৯৭ সালে। কিন্তু ইয়াবায় সিটামিন মেশানো শুরু হলে (২০০১ থেকে) বাংলাদেশের অভিজাত এলাকাগুলোতে ইয়াবা তরুণ-তরুণীদের মানিব্যাগে স্থান করে নেয়।
তথ্য-৩৩৪ ▌ব্রিটেনের সবুজ আচরণ :
ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রণীত ব্রিটেনের সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ১৩ বছর বয়স হলে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের সঙ্গীর সঙ্গে দৈহিক মিলন করতে পারবে। পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠার জন্য, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যবান হওয়ার জন্য তা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এই বিষয়ে স্কুলের শিক্ষকরাও সহমত দিয়েছেন। ফলে তা এক ধরনের আইনেই পরিণত হল। এই নির্দেশিকা তৈরির পেছনে যুক্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে, ১৩ থেকে ১৭ বছরের ছেলেমেয়েরাও তার বিপরীত লিঙ্গের বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে গোপনে মিলিত হচ্ছে। তারা পর্নো দেখছে। অনলাইনে অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায় মেতে থাকছে। এতে তাদের মানসিক ও শারীরিক ঝুঁকি বাড়ছে। কিন্তু বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে মেলামেশা যদি স্বাভাবিক করে দেওয়া হয়, তবে তারা নিরাপদ বোধ করবে। পড়াশোনাও ভালো করবে। বিষয়টিকে‘সবুজ আচরণ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার হুঁশিয়ার করে বলছে, ১৮ বছরের আগে শিশুদের দৈহিক মিলন কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তথ্য-৩৩৫ ▌বাঙালি এখন বাংলাদেশিরাই :
বাঙালি বলতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখন বাংলাদেশের মানুষকে বোঝায়। ‘পৃথিবীর সব প্রান্তে, বিশেষ করে উন্নত দেশসমূহে, “বাঙালি” পরিচয়টির অর্থ বাংলাদেশের মানুষ।’ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা চাকরি খোঁজে, অক্সফোর্ড বা কেমব্রিজকেই তার জীবনের গন্তব্য মনে করে, কিন্তু দেশে হোক, কিংবা বিদেশে হোক, কঠোর শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করে না, তাই তাদের হাতে ব্যবসা করার পুঁজি আসে না, ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মানুষদের এখন দেখা যাচ্ছে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে, আবার রাস্তায় হয়তো ফেরিওয়ালার কাজও করছে কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের সেখানে খুঁজে পাওয়া যায় না। ইউরোপের প্রায় সব দেশেই চীনা-জাপানি বাদ দিয়ে সবচেয়ে পরিচিত এশীয় মুখটি হচ্ছে বাংলাদেশের।’ব্রিটেনে বাংলাদেশের মানুষেরা পাল্টা উপনিবেশ কায়েম করেছেন। ঊনবিংশ শতকের পালতোলা জাহাজের লঙ্গর হয়ে সিলেটের মানুষ লন্ডনে বসবাস শুরু করেন। শুধু ব্রিটেনে পাঁচ লক্ষ বাঙালি আর্থসামাজিক মাপকাঠিতে উপরে উঠে আসে।
তথ্য-৩৩৬ ▌শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক :
শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক, কলকাতার মেয়র (১৯৩৫), অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (১৯৩৭-১৯৪৩) এবং পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (১৯৫৪), পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী (১৯৫৫) এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের পদ (১৯৫৬-১৯৫৮)সহ বহু উঁচু রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বরিশাল শহর থেকে চৌদ্দ মাইল দূরে চাখার গ্রামে তার জন্ম। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্র। স্যার খাজা সলিমুল্লাহ ও নওয়াব নওয়াব আলী চৌধুরীর কাছে রাজনীতিতে তাঁর হাতেখড়ি হয়। তিনি বৃটিশ আমলে বঙ্গদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে স্থাপন করেছেন ঋণ সালিশী বোর্ড, পাস করেছেন প্রজাস্বত্ব আইন, পাস করেছেন মহাজনি আইন, প্রথমবারের মতো করেছেন পঞ্চম শ্রেণী জন্য অবৈতনিক শিক্ষা কার্যক্রম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আলীগড় বশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতাদের একজন তিনি। গড়লেন বাংলা একাডেমী। ২১শে ফেব্রুয়ারীকে শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা কৃষক, প্রজা, শ্রমিক দরদী এবং নারী ও শিশু শিক্ষার প্রতি যতœবান, মুসলিম অধিকার সচেতন ছিলেন তিনি।
তথ্য-৩৩৭ ▌ভাষাভিত্তিক জাতিসত্ত্বা :
বাংলাদেশের লিখিত ইতিহাসে স্বাধীন কোন রাষ্ট্রের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায় না। ১৯৭১ এর মুক্তি সংগ্রামের স্বাধীন রাষ্ট্রের স্থপতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান সবচেয়ে বড় আসনটি চিরদিন অধিকার করে থাকবেন । ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রদর্শনটি ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হলেও তাঁর সবটা প্রাণশক্তি এখনও শেষ হয়ে যায়নি। তাই ভাষাভিত্তিক জাতীয় রাষ্ট্র বাংলাদেশেও ধর্মীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জিগির লক্ষ্য করা যায়। পাকিস্তান ঘোষিতভাবে ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু ইসলামি ভ্রাতৃত্ববোধ পাকিস্তানের জাতীয় ঐক্যকে সূদৃঢ় করনি। সেখানে জাতিগত বিরোধ এমন প্রবল যে, মনে হয় এক দেশের মধ্যেই অসংখ্য টুকরো টুকরো কয়েকটি পাকিস্তান। বাংলাদেশই হচ্ছে যথার্থ অর্থে একটি রাষ্ট্র, যা ইউরোপের জাতীয় রাষ্ট্রসমূহের মত অনেকটা একই রকম বৈশিষ্ট্যের ধারকবাহক। আজ পর্যন্ত ভারত এবং পাকিস্তান সেসব দেশের সর্বসাধারণের বোধগম্য একটি জাতীয় ভাষা চালু করতে পারেনি। ভারতের শিক্ষিতজনরা ইংরেজির মাধ্যমেই পর¯পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন।
তথ্য-৩৩৮ ▌অমরত্বের চেষ্টা :
অমরত্বের চিন্তা থেকে প্রাচীন মিশরের রাজারা নিজেদের শরীরকে মমি করতেন। হয়তো তারা ভেবেছিলো যে আধুনিক বিজ্ঞানীরা তাদের জীবিত করতে পারবে? কিন্তু এমন ভাবনা বর্তমানের মানুষও ভাবছে এবং তারা মৃত্যুর পরে তাদের দেহ তরল নাইট্রোজেনে সংরক্ষণ করছে। তাদের আশা ভবিষ্যতে হয়তো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে তা সম্ভব হবে। ১৯৬২ থেকে ২০১৮ সাল পযন্ত ৩৭০ জন মানুষ তরল নাইট্রোজেনে দেহ সংরক্ষন করেছে ইউরোপ আমেরিকার কয়েকটি কো¤পানি ঈৎুড়ঢ়ৎবংবৎাধঃরড়হ করে থাকে যেমন অষপড়ৎ খরভব ঊীঃবহংরড়হ ঋড়ঁহফধঃরড়হ , ঞযব ঈৎুড়হরপং ওহংঃরঃঁঃব . ৪০০ডলার বছরে সদস্য ফী হিসেবে দিতে হয়। যখন আপনি মারা যাবেন তখন তারা প্রথমে তার মাথার খুলিতে ছিদ্র করে কিছু প্রোব বসায়। তারা শরীরের রক্তের সাথে প্রায় ১৮ ধরনের রাসায়নিক তারা ব্যবহার করে। যাতে শরিরের অঙ্গপ্রতঙ্গ অতি নিন্ম তাপে ঠান্ডা হবে কিন্তু বরফের কৃস্টাল হবে না। তারপরে ঐ দেহটিকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষনের জন্য তরল নাইট্রোজেনে রাখা হয়।
তথ্য-৩৩৯ ▌মাহম্মদ আলী জিন্না :
ভারতের গুজরাট প্রদেশের কাথিয়াবাড়ের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বাবা জেনাভাই। মুসলিম শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত খোজা সম্প্রদায়ের লোক তারা। গুজরাটের এই কাথিয়াবাড়ে ভারত মহাদেশের মহাত্মা গান্ধীর পিতৃভূমি। নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জেনাভাই একদিন করাচিতে আগমন করেন। করাচিতে ২৫ শে ডিসেম্বর ১৮৭৬ সালে জেনা ভাই ও মিঠিবাইয়ের একটি পুত্র সন্তান জম্মগ্রহণ করেন, নাম রাখা হয় মোহম্মদ আলী জেনাভাই (জিন্না)। ব্যাপক আর্থিক দুর্যোগের কারণে পিতার বন্ধু ফ্রেডরিকের সহযোগিতায় ইংল্যান্ডে যাওয়ার সুযোগ পান জিন্না। লন্ডনে তিনি দেখা পান দাদাভাই নওরোজীর। দাদাভাই নওরোজী ছিলেন সকল ধর্মের মানুষের কাছে পূজনীয় ব্যক্তি। দাদাভাই ব্রিটিশ হাউস অব কমনসের সদস্য হওয়ায় জিন্না নিয়মিত অতিথি হিসাবে সেখানে যেতেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দাদাভাইকে ভারতের জন্য কাজ করা দেখে তিনিও ইংল্যান্ডে রাজনীতি করার বিষয়ে উৎসাহী হয়ে উঠেন। ১৮৯৬ সালে ভারতে ফিরে এলেন। ম্যাজিস্ট্রেট হয়েও তিনি সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
তথ্য-৩৪০ ▌ওলন্দাজ নারী-পুরুষ:
ওলন্দাজরাই এখন বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘকায় জাতি আর নেদারল্যান্ডস সবচেয়ে দীর্ঘকায়দের দেশ। কিন্তু মাত্র দুই’শ বছর আগেও তাদের নাম ছিল খর্বকায় বা খাটো জাতির তালিকাতেই। এই দুই’শ বছরে এমন কী ঘটল যে, ওলন্দাজরা ধাই ধাই করে লম্বা হয়ে যাচ্ছে! মূল কারণ পুষ্টিতে সমৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মানের উন্নতি। গত দেড় ’শ বছরে ওলন্দাজ পুরুষদের গড় উচ্চতা বেড়েছে ৮ ইঞ্চি! এখন ওলন্দাজ পুরুষদের গড় উচ্চতা ৬ ফুটের কিছু বেশি আর নারীদের গড় উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। বেশি ক্যালরি ঠাসা মাংস ও দুগ্ধজাত খাবার-দাবার বেশি বেশি খায় তারা। লাইফলাইনস নামে অভিহিত এই তথ্যভান্ডারে দেখা যায় নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী যে মানুষদের সবচেয়ে বেশি সন্তান ছিল তাঁরা দীর্ঘকায় পুরুষ এবং তাঁদের স্ত্রীরা ছিলেন গড় উচ্চতার নারী। গত একশ বছর ধরে নারীরা খাটো মানুষের সাথে সংসার করলেও তাদের সন্তান ধারণ করতো না। আর এভাবে কয়েক প্রজন্মের মধ্যেই এমন একটা প্রজন্ম তৈরি হয়ে যেতে পারে যাদের বেশির ভাগই বেশি উচ্চতার নারী-পুরুষ।
তথ্য-৩৪১ ▌ হিন্দুসমাজে নারী:
হিন্দু সমাজে ঋষির পর ঋষি জন্ম নিয়েছে, তারা বিধান লিখেছে এবং সবাই মিলে নারীকে করে তুলেছে পুরুষের শিকার। হিন্দু আইনে নারীর কেনো মূল্য নেই, নারী অস্থাবর স¤পত্তি মাত্র; নারী কোনো স¤পত্তির মালিক হতে পারে না, পারে না স¤পত্তির উত্তরাধিকারী হতে। আবার এই হিন্দু বিধানে বিয়ে বাধ্যতামূলক নারীর জন্যে। একটি সূত্রে রয়েছে, কুমারী নারী মারা গেলেও তার মৃতদেহকে বিয়ে দিতে হবে, তারপরেই হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। ১৯৫৫ সালের ভারতীয় হিন্দু বিবাহ আইন’ ভারতে ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’কে অনুমোদন দিয়েছে। এতে শিক্ষিত, শহরবাসী হিন্দু নারীর অবস্থান আগের চেয়ে কিছুটা ভাল হয়েছে। কিন্তু অশিক্ষিত হিন্দু সমাজে পুরাকালের মুনি-ঋষিদের বিধানই বলবত আছে এখনও। বাংলাদেশের সনাতন হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ ও পুনঃবিয়ের স্বীকৃতি নেই। হিন্দু বিয়েতে কোনো চুক্তিনামা না থাকায় অনেক নারী নির্যাতন সহ্য করেও সংসার করেন। দেশে মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন থাকলেও হিন্দু নারীদের প্রতি এই চরম বৈষম্যের করুণ চিত্র মেনে নিয়ে দাসীর মতো জীবন কাটাচ্ছে হিন্দু নারীরা।
তথ্য-৩৪২ ▌তাহারুশ জামা-ই :
দল বেঁধে নারীর শ্লীলতাহানি অথবা ধর্ষণ করা। মিসরসহ আরব দুনিয়ায় জনপ্রিয় প্রস্তরযুগীয় এই খেলা‘তাহারুশ জামা-ই বা গণধর্ষণের খেলা। ভিড়ের আড়ালে কোনো নারীর শ্লীলতাহানি এমনকি ধর্ষণ করাই এই খেলার উদ্দেশ্য। পরিকল্পনা মাফিক শিকারকে ঘিরে ফেলে ভিড়বন্দি নারীর শরীর নিয়ে যা ইচ্ছে তাই করে থাকে। এর মধ্যে অবশ্য ১-২ জন পুরুষ নিগৃহীতার‘রক্ষকের ভূমিকায় থাকেন। তারা ওই মহিলাকে বাঁচানোর অভিনয় করেন। এভাবে নারী শরীর নিয়ে বর্বর খেলা তাহারুশ। যৌন লালসা কমানোর জন্য প্রায় ৮০ শতাংশ মিসরীয় নারীদের ভগাঙ্কুর কেটে ফেলে দেয়া হয়। কায়রোসহ মিশরের বিভিন্ন অঞ্চল, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন টিকে আছে নারী পাচার ও বাল্যবিবাহের ওপর ভিত্তি করে। দালালরা মোটা টাকার বিনিময়ে গরিব যুবতী মেয়েদের জন্য গ্রীষ্মকালীন মোহতা বিয়ের আয়োজন করে। এইসব গ্রীষ্মকালীন বিয়ে পর্যটকরা স্বল্প সময়ের জন্য করে থাকে। যাদের চাহিদা থাকে অল্প বয়সী মেয়ের সাথে যৌনাচার করা।
তথ্য-৩৪৩ ▌বাঙালি সংস্কৃতি :
আমরা মূলত সাংস্কৃতিক বলয়ের বাইরের কেউ নই। জন্মের সময় আমরা একটি জীব হয়ে জন্মাই। কিন্তু সংস্কৃতিই আমাদের মানুষে পরিণত করে। পরিণত করে সামাজিক জীবে। সংস্কৃতি দিয়েই মানুষ মূল্যবোধ, ধ্যান-ধারণার, মন-মানসিকতার অধিকারী হয়। আমরা বাঙালিরা সংস্কৃতিবান হয়েছি, এগিয়ে চলেছি সৃজন করে নয়, গ্রহণ করেই। আমাদের ধর্ম এসেছে উত্তর ভারত ও আরব থেকে। ভাষাটাও উত্তর ভারতের। প্রশাসনিক ঐতিহ্যও উত্তর ভারত, উত্তর এশিয়া ও ইউরোপ থেকে পাওয়া। আজকের ব্যবহারিক জীবনের সব উপকরণ এবং মানস জীবনের সব প্রেরণা এসেছে ইউরোপ থেকে। আর্য, শক, হুন্দল, পাঠান, মোঘল, ইংরেজ - বাঙালি কাউকেই দূরে সরিয়ে রাখেনি। সে সবাইকে গ্রহণ করেছে। সকলের সংস্কৃতি তিল তিল করে ধারণ করে সমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতি। এখানেই বাঙালি সংস্কৃতির অনন্যতা। বিদেশের সবকিছুই আমাদের জন্য অপসংস্কৃতি তা নয়। তবে বিদেশের কোন কিছুকে গ্রহণ করার আগে দেখতে হবে তা আমাদের জীবনকে সুন্দর ও উন্নত ও পরিশীলিত করছে কিনা।
তথ্য-৩৪৪ ▌ সৌদি আরবের গৃহকর্মী:
সৌদি আরবে বাসায় প্রায় প্রতি বছরই নতুন নতুন গৃহকর্মী আনা হয় ফিলিপাইন থেকে। সৌদি আরবের ঘরে ঘরে এদের নিয়ে সমস্যা। এসব ফিলিপাইনী গৃহকর্মীদের জন্য প্রতিটি পরিবারে অশান্তি লেগেই আছে। ফিলিপাইনী মেয়েরা কামকলা প্রশিক্ষণ নিয়েই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে চাকরীতে আসেন। তাই ফিলিপাইনী মেয়েদের অনেক ডিমা-। একটা মোটা আংকের টাকা ও বেতন অগ্রিম দিয়েই তাদের আনতে হয়। বেতনও বাংলাদেশীদের চেয়ে কয়েকগুন বেশি। সৌদি আরবে এক জরিপে দেখা যায়, শতকরা ৬১ ভাগ ফিলিপাইনী নারী বিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করতে সম্মত হন। অন্যরা কিছু হ্যান্ডক্যাশ নিয়ে বিধায় নেন। আরবে প্রতিনিয়তই দেখা যায় এসব ২০ বছরের মেয়ের সাথে ৭০ বছরের বুড়াদের বিয়ে হচ্ছে। কারণ বুড়ারাদের বিয়া করলে কম পক্ষে দেনমহর পায় ৪০-৭০ হাজার রিয়াল এবং বুড়া যদি মারা যায়, তাহলে তার স¤পত্তির কিছু অংশ। ইদানিং ফিলিপাইনী মেয়েরা কানাডার দিকে ঝুকছে। এই শূণ্য স্থানটা পূরণ করতে বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নেয়া হচ্ছে। কিন্তু বাঙালিরা তো এভাবে অভ্যস্থ নন।
তথ্য-৩৪৫ ▌মুহাজির ও ঘটি :
পশ্চিমবঙ্গ থেকে যারা মাইগ্রেট করে এপারে এসেছিল ওদেরকে 'ঘটি' বলে একসময় ঠাট্টা করতো এপারের লোকেরা। এখন সকলে একরকম মিলেমিশে গেছি। অবাঙালি যারা সেসময় মাইগ্রেট করে এসেছিল, তাদের বড় অংশ বিহার থেকে এসেছিল বলে এদেরকে সবাই বিহারী হিসেবেই চেনে। এছাড়া উড়িষ্যা, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ থেকেও এই মানুষগুলি এসেছিল। কেবল ধর্মীয় বিশ্বাসের মিল ছাড়া এদের সাথে আমাদের আর কোন মিল নাই। আর এই ধর্মীয় বিশ্বাস যে মানুষের মধ্যে আসলেই কোন অর্থবহ বা স্থায়ী ঐক্য গড়ে তুলতে পারে না তার মর্মান্তিক প্রমাণ হয়ে এই লোকগুলি আমাদের দেশে এখনো করুণ জীবনযাপন করছে। ১৯৪৭’র পর যেসব মুসলমান নয়া দেশ পাকিস্তানে ‘হিজরত’ করেছিল দ্বিজাতিতত্বের ভ্রান্তির শিকার হয়ে কি মূল্যই না ওরা দিচ্ছে! পাকিস্তানে মুহাজিরদেরও একই করুণ অবস্থা! পাকিস্তানে মুহাজিররা থাকে মূলত সিন্ধু প্রদেশের রাজধানী করাচীতে। পাকিস্তানে ওদেরকে ঠাট্টা করে ডাকা হয় 'গাদ্দার' 'মাক্কার' এরকম আরও নানারকম বিচিত্র নামে।
তথ্য-৩৪৬ ▌অদৃশ্য প্রচারণা শক্তি:
বর্তমানে স্বাধীনভাবে কোনো কিছু চিন্তা করার আগেই আমাদের চিন্তাশক্তিকে প্রভাবিত করা হয় । এ জন্য ক্ষমতাবান মিডিয়া, ধনবাদী বিশ্বের পিআর ফার্ম, টেক-জায়ান্টস, লবিস্ট ও নানা বুদ্ধিজীবীদের সংস্থার সমন্বয়ে এমন শক্তিশালী প্রচার জগৎ গড়ে উঠেছে যে, ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত ভাবেও মানুষ তার নিয়ন্ত্রণ এড়াতে পারে না। এই অদৃশ্য প্রচারণা শিল্পের কাজ হচ্ছে প্রতিনিয়ত ম্যানিপুলেট করে আমাদের বিশ্বাস ও চিন্তাশক্তিকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যাওয়া। একটা জনপ্রিয় থিওরী আছে যে, একটি মিথ্যাকে শতবার বললে ওটা সত্য হয়ে যায়। স্বার্থ হাসিল করতে বৃহৎ শক্তিগুলো এই সুত্রটি কাজে লাগাচ্ছে বহুকাল থেকে। উন্নতবিশ্বে হাজার হাজার শক্তিশালী পিআর ও এজেন্সি গড়ে উঠেছে, যারা শত মুখে একটি মিথ্যাকে সত্য বলে প্রচার করে। এইসব এজেন্সিগুলির আনেক শাখা-প্রশাখা আছে দেশে-বিদেশে। যেমন কোনো দেশের স্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের মধ্য থেকে লোক বেঁছে বের করে অর্থ বা অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা দিয়ে স্টাডি সার্কেল, রিসার্চ গ্রুপ ইত্যাদি নানা সংস্থা গড়ে তোলে তারা।
তথ্য-৩৪৭ ▌সমপ্রেম :
সমকামিতা কোনো মানসিক ব্যাধি নয়, বরং এটি যৌনতার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। প্রায় ১৫০০ প্রজাতিতে সমকামিতা বিরাজ করছে। হোমো সেপিয়েন্স (মানুষ) তো একটা প্রজাতি মাত্র। এছাড়াও লিজার্ড, ফড়িং, বাইসন, কুকুর, হাতি, শেয়াল, ডলফিন, ইমু, মুরগী, সিংহ, জিরাফসহ বিভিন্ন প্রজাতিতে লক্ষাধিক বছর ধরে সমকামিতা অস্তিত্বশীল। সমকামিতা কোনো পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির ফসল নয়। বরং মানব সমাজের সংখ্যালঘিষ্ট মানুষের যৌন-আচরণ এটি। যাদের সমকামী যৌন-প্রবৃত্তি জন্মগত, তাদের যৌন-প্রবৃত্তিকে পরিবর্তন করা যায় না, তা সে থেরাপি দিয়েই হোক, আর ঔষধ দিয়েই হোক। কারণ মানুষের মস্তিষ্কে হাইপোথ্যালামাস নামে একটি অঙ্গ রয়েছে, যা মানুষের সমকামী যৌন-প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রন করে। জুলিয়াস সিজারকে বলা হতো, তিনি প্রতিটি নারীর পুরুষ এবং প্রতিটি পুরুষের নারী। কারণ তিনি ছিলেন সমকামি। পৃথিবীতে শতকরা চৌদ্দ ভাগের মতো সমকামী রয়েছে। মজার বিষয় হল- প্রতিটি মেয়েই হয় সমকামী, নয় উভয়কামী।
তথ্য-৩৪৮ ▌সালোক সংশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাদ্য :
গাছ যেভাবে পাতার সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে নিজের খাবার নিজে তৈরি করে, ঠিক তেমনি ভবিষ্যতে মানুষও নিজের খাবার নিজেই তৈরি করতে পারবে! মার্কিন গবেষক মাইকেল বার্টন ও মিচিকো নিত্তা ‘অ্যালজিকালচার সিমবায়োসিস স্যুট’ প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের তৈরি প্রকল্প অনুয়ায়ী অ্যালজি বা শৈবাল থেকে উৎপন্ন খাবার সরাসরি মানুষের শরীর শোষণ করে নিতে পারবে। একটি বিশেষ স্যুট পরিধান করে রোদে বের হলে তা খাবার তৈরি করা শুরু করবে। এ প্রক্রিয়ায় মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস থেকে সংগৃহীত হবে কার্বন ডাই অক্সাইড। এ স্যুটটির আরও উন্নত করতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। প্রকল্পটি এমন একটি ভবিষ্যতে কথা জানায় যেখানে মানুষ তার শরীরের ভেতর শৈবাল উৎপন্ন করবে এবং সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করবে। ভবিষ্যতে মানুষ টিকে থাকার জন্য শরীরকে খাবার উৎপাদনের জন্যই কাজে লাগাতে গবেষণা এগিয়ে চলছে এবং এর সম্ভাবনা ও সাফল্য এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তথ্য-৩৪৯ ▌সম্রাট অশোক ও বৌদ্ধ ধর্ম :
গৌতম বুদ্ধ মৃত্যুবরণ করেন খ্রিস্টপূর্ব ৪৮৬ সালে। গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর ১৬৫ বছর পর অশোক এক শক্তিশালী সম্রাট হিসেবে ভারতবর্ষে আবির্ভূত হন। এই অশোকই বৌদ্ধ ধর্মকে নিয়ে যান দেশে বিদেশে। সম্রাট অশোকের পুত্র মহেন্দ্র ও কন্যা সংঘমিত্রা শ্রীলংকায় বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার করেন। এছাড়া চীন, কাশ্মীর, গান্ধার, মহারাষ্ট্র, আফগানিস্তান, নেপাল, থাইল্যান্ড, জাপান, প্রভৃতি দেশে এখনো আমরা যে সকল বৌদ্ধ ধর্মালম্বী দেখতে পাই এটা মূলত সম্রাট অশোকেরই অবদান । মগধ আর্যদেরই রাজ্য ছিল প্রথমে। বিহার এবং বাংলার অধিকাংশই মগধ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। এই মগধেই এক পর্যায়ে মৌর্য সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে, সম্রাট অশোকই ছিলেন এই মৌর্য সাম্রাজ্যের শেষ রাজা। লোহা উৎপাদনে বিখ্যাত ছিল মগধ। বিন্দুসারের ১৬ জন স্ত্রী ছিলো, এই ১৬ জন স্ত্রীর ছিলো সর্বমোট ১০০টি পুত্র। অশোক ছিলেন এই একশো জনের মধ্যে একজন। অশোক ৮৪ হাজার বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাছাড়া তৎকালীন প্রায় ৬০ হাজার বৌদ্ধ ভিক্ষুকে খাবার সরবরাহ করতেন।
তথ্য-৩৫০ ▌আমেরিকার যাযাবর জীবন:
আস্ত বাড়িটাকে নিয়ে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে দিন গুজরান করছে এমন মার্কিনির সংখ্যা নেহায়েত কম নয়, পাক্কা দুই কোটি! সাউথ ক্যারোলিনা রাজ্যে গেলে দেখা যাবে প্রতি পাঁচটি বাড়ির মধ্যে একটিই ভ্রাম্যমাণ। মানে চার চাকায় ভর করে ঘুরে বেড়াচ্ছে ওই পরিবারগুলো। দক্ষিণের আরো সাতটি রাজ্যের চিত্রটাও কমবেশি একই রকম। যুক্তরাষ্ট্রে মোট ভ্রাম্যমাণ বাড়ি আছে ৮৫ লাখ। এসব বাড়ির ৫৭ শতাংশ মালিকই চাকরিতে নিয়োজিত আর ২৩ শতাংশ গেছে অবসরপ্রাপ্ত। চাকা ছাড়াও কিছু বাড়িও আছে যেগুলো দেখে অবসর কাটানোর কটেজ মনে হতে পারে। এগুলোও এক ধরনের মোবাইল হোম। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় এ ধরনের বাড়ি নিয়ে রীতিমতো কয়েকটা পাড়া আছে। যেমন- ওক হ্যাভেন। ছোটখাটো অস্থায়ী বাড়িগুলো ওক কাঠের বানানো ভূস্বর্গের মতোই। ১৯৩০ সালের মহামন্দার সময়টাতে অনেকে বাধ্য হয়েছিল ঘরবাড়ি ছাড়তে। তখনই পরিত্যক্ত ও খালি পড়ে থাকা এলাকাগুলোতে গড়ে উঠতে থাকে ট্রেইলার পার্ক। ফেলে দেয়া গাড়িতে সংসার শুরু করে মানুষ।
তথ্য-৩৫১ ▌ পাকিস্তানের বালুচিস্তান :
১৯৪৭ সালে সেক্যুলার বালুচিস্তান অঞ্চল, যার পূর্ব নাম ছিল খালাত স্টেট, ইসলামিস্ট পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল সেনাবাহিনীকে আদেশ দিলেন খালাতে অভিযান চালাতে। সে কারণে বালুচিস্তান সার্বভৌমত্ব হারাল এবং বন্দুকের মুখে পাকিস্তানের একটি অংশে পরিণত হলো। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময় বাঙালিদের মতোই বালুচরা পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে ভোট দেয়নি। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির নেতৃত্বে বালুচ জাতীয়তাবাদীরা তখন সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়েছিল। তখন পাকিস্তান বালুচদের ম্যান্ডেট অস্বীকার করেছিল এবং সব কয়জন নির্বাচিত পার্লামেন্টারিয়ানকে জেলখানায় পুরেছিল। হাজার হাজার বালুচকে গৃহহারা করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়, যারা পার্শ্ববর্তী আফগানিস্তানে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। বালুচিস্তানের সমাজ উন্নয়নের অবস্থান এখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। পাকিস্তান বিরতিহীনভাবে বালুচিস্তানে সেনা অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য-৩৫২ ▌ইবনে বতুতা :
১৩০৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মরক্কোর তানজিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন পরিব্রাজক- ইবনে বতুতা। একজন সুন্নি মুসলিম চিন্তাবিদ, বিচারক হিসাবে তিনি আফ্রিকা থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য, ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং চীন পর্যন্ত বিস্তির্ন এলাকা ভ্রমন করেছেন। প্রায় ৩০ বছরের ভ্রমণ জীবনে পাড়ি দিয়েছেন ৭৩ হাজার মাইল। এই ভ্রমণপিপাসা তাকে মাত্র একুশ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পথে নামায়। ইবনে বতুতা নিজের লেখা ভ্রমন কাহিনীতে বাংলাকে অতিথিপরায়ণ একটি সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। এই ভ্রমণ কাহিনী হতে জানা যায় যে, সেসময় বাংলাদেশ ইসলাম ধর্ম প্রচারের একটি প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বহু দরবেশ, ফকির ও উলামা বাস করতেন। চতুর্দশ শতকে ইবন বতুতা যখন বাংলাদেশ পরিভ্রমণে আসেন তখন তিনি বাজারে দাস-দাসী ক্রয় বিক্রয় হতে দেখেন। তিনি লিখেছেন, “উপ স্ত্রীরূপে সেবা কর্মের উপযুক্ত একটি সুন্দরী যুবতীকে এক স্বর্ণ দিনারে আমার সম্মুখে বিক্রয় করা হয়। ১৩৬৯ সালে ইবনে বতুতা ইন্তেকাল করেন ।
তথ্য-৩৫৩ ▌আইসল্যান্ডের বিবাহরীতি :
বর্তমান বিশ্বের উন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ শতাংশ শিশুই বিবাহিত জীবন ছাড়াই জন্মেছে। এমনকি রক্ষণশীল তুরস্কেও এই সন্তানদের হার ৩ শতাংশ। বিবাহ প্রথা অনেকটাই বিলুপ্ত হয়ে গেছে আইসল্যান্ড নামক দেশটি থেকে। আইসল্যান্ডের ৭৩ শতাংশ শিশুরই পিতা-মাতার মধ্যে বিবাহ হয়নি। নর-নারীর স্বাভাবিক স¤পর্কের ভেতর দিয়েই তাদের জন্ম হয়েছে। পৃথিবীতে সর্বাধিক ফেমিনিস্ট সংগঠন আছে আইসল্যান্ডে। সন্তানসম্ভবা নারীদের জন্য রয়েছে সরকারি বিশেষ ব্যবস্থা। যারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চায়, আইসল্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী তারা বিয়ের আগেই একসঙ্গে কয়েক বছর থাকে এবং সন্তান পালনে সক্ষম হলেই তবে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আইসল্যান্ডে নর-নারী একসঙ্গে থাকার সূত্র হিসেবে একে অপরকে একটি আঙটি দিয়ে থাকে। ওই আঙটি হাতে থাকা মানেই তাদের স¤পর্কাবস্থার ভেতর থাকা। উল্লেখ্য যে, আইসল্যান্ডে কোনো ধর্ষণ, নারী নিগ্রহ এবং দুর্ণীতি নেই বললেই চলে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য ভালোবাসাই একমাত্র দরকার।
তথ্য-৩৫৪ ▌মির্জা গালিব :
“বাংলা সাহিত্যে রবীন্দনাথের যে গুরুত্ব, উর্দু সাহিত্যে মির্জা গালিবের গুরুত্ব তারচেয়ে অধিক বললে অত্যুক্তি হবে না। ভারত উপমহাদেশের চিরায়ত উর্দু এবং ফার্সি কবি মির্জা গালিব ৫০ বছর দিল্লী-আগ্রায় মোগলদের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। কিন্তু নিজের বসবাসের জন্যে একটি বাড়ি কিনেননি। সারা জীবন থেকেছেন ভাড়া করা বাড়িতে। আবার সারা জীবনই শুধু বই পড়েছেন। তার খ্যাতি আসে তার মৃত্যুর পর। নয় বছর বয়সেই গালিব ফার্সিতে কবিতা লিখতে শুরু করেন। তেরো বছর বয়সে গালিব মুঘল দরবারের এক আমীরের মেয়ে উমরাও বেগমকে বিয়ে করেন। তাঁদের সাতটি সন্তান জন্ম নিলেও একজনও বাঁচেনি। গালিব শুধু তাঁর কাব্যের জন্যই বিখ্যাত ছিলেন না।’ বিখ্যাত ছিলেন বেপরোয়া জীবনযাপন, মদ, নারী আর জুয়ার প্রতি তীব্র আসক্তির জন্যও। সাহিত্যাকাশে মির্জা গালিব পূর্ণ চাঁদের মতো- তাঁর কলংক আছে কিন্তু তাঁর জোছনার সৌ›ন্দর্যের কাছে সবাইকে হার মানতে হয়। ১৮৬৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি গালিব ইন্তেকাল করেন। দিল্লির নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মাজারের কাছে তাকে দাফন করা হয়।
তথ্য-৩৮৫ ▌কার্বন ন্যানোটিউব:
‘ন্যানো’ হলো পরিমাপের অতি ক্ষুদ্র একটি একক। ১ মিটারের একশ’ কোটি ভাগের ১ ভাগকে বলা হয় ১ ন্যানোমিটার, যা দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্যরে চেয়েও ক্ষুদ্র। আমাদের চুলের ব্যাস হলো ৫০,০০০ ন্যানোমিটার। এ থেকে মোটামুটি ধারণা করতে পারছেন, কত ক্ষুদ্র এই ন্যানোমিটার। কার্বন ন্যানোটিউব হলো সিলিন্ডার আকৃতিতে পেঁচানো গ্রাফিন। সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি তৈরিতে, চিকিৎসাবিজ্ঞানে, এমনকি টেক্সটাইল শিল্পেও কার্বন ন্যানোটিউবের ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। ইলেকট্রনিক্সের জগতে এ টিউবের ব্যবহার হচ্ছে। গবেষকরা মানুষের রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ন্যানোটিউব প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর নতুন সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছেন। কার্বন ন্যানোটিউব ব্যবহার করে জাপানি চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এমন একটি ন্যানো রোবট তৈরির দ্বারপ্রান্তে, যা মানুষের রক্তের মধ্যে ঘুরে বেড়াবে, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারসহ যে-কোন রোগের জীবাণু নির্মূল করবে। রোগ নির্ণয়ের জন্যও আর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে না। মুহূর্তে শরীরে অবস্থা ‘কম্পিউটার ও মোবাইলে’ জানাবে এই কার্বন ন্যানোটিউব।
তথ্য-৩৮৬ ▌গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে :
মহাবিশ্বের তুলনায় সৌরজগৎ কিছুই নয়, একেবারে বালির মতো। আর সে তুলনায় পৃথিবী তো অনেক ছোট। আমরা তো চাঁদে পা দিলাম, মঙ্গলে যান প্রেরণ শুরু হয়েছে। পৃথিবী ও মঙ্গল পৃথক পৃথকভাবে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। পৃথিবী ৩৬৫ দিনে এবং মঙ্গল ৬৮৭ দিনে সূর্যকে সম্পূর্ণ আবর্তন করছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা ২০২৫ সালের মধ্যে মানুষ মঙ্গলের মাটিতে পা রাখতে পারবে। সে লক্ষে হাজার হাজার মানুষকে মহাকাশে বেঁচে থাকার উপযোগী করে তৈরি করার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। মরুতৃষ্ণা নিয়ে হন্যে হয়ে বিজ্ঞানীরা জলভরা গ্রহ খুঁজে বেড়াচ্ছেন মহাবিশ্বের শত শত আলোকবর্ষ দূরে। বিংশ শতাব্দী ফুরোতে না ফুরোতেই এমনকিছু নক্ষত্রের কথা জানা গেল যাদের চারদিকে বড় গ্রহ ছাড়াও পৃথিবীর মতো গ্রহও রয়েছে। অন্য নক্ষত্রের চারদিকে গ্রহ খোঁজার গবেষণায় বলতে গেলে একটা ছোট-খাটো বিপ্লব এসেছে। আগামী বছরগুলোতে আমরা আরও অনেক নতুন গ্রহের খবর জানতে পারব। কে জানে হয়তো এদের মধ্যে কোথাও প্রাণের সন্ধানও পাওয়া যেতে পারে।
তথ্য-৩৮৭ ▌কন্সপিরেসি থিওরি :
যিশু খ্রিস্টের মৃত্যুর কয়েক বছর পরে বাতাসে ভেসে বেড়ায় এক নতুন গুপ্তসংঘের গুজব। এই গুপ্তসংঘের সদস্যরা বাচ্চাদের ধরে নিয়ে যায়। তারা জ্যন্ত অবস্থায় বাচ্চার রক্ত পান করে। প্রাচীন রোমে গরীব ঘরের শিশুদের না খাওয়াতে পেরে রোমানরা তাদের বাচ্চাদেরকে বন-জঙ্গলে ফেলে রেখে আসতো। খ্রিস্টানরা এ বাচ্চাগুলোকে পরবর্তীতে তুলে নিয়ে এসে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করে। তাদের মাথায় চিন্তা আসলো কেন একজন আরেকজনের বাচ্চাকে পেলেপুষে বড় করবে? তারা এত বাচ্চা দিয়ে করবেইটা কী? ফলে তারা বাচ্চা খেয়ে ফেলার মতো গুজব তৈরি করে। এভাবেই তৈরি হয় কন্সপিরেসি থিওরি। শতকরা ৯৯ ভাগ কন্সপিরেসি থিওরির সাথেই কোনো না কোনো গুপ্ত সংগঠন জড়িয়ে আছেন বলে মানুষ মনে করেন। এমনকি কন্সপিরেসি থিওরিস্টদের মতে, পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করার পেছনেও আছে ইলুমিনাটি এবং রথসচাইল্ড পরিবারের হাত। কন্সপিরেসি থিওরিতে বিশ্বাসীরা মনে করে, পৃথিবীর সব ঘটনার পেছনেই কোনো না কোনো কারণ আছে।
তথ্য-৩৮৮ ▌বিশ্ব সৃষ্টির রহস্য :
বিশ্ব প্রকৃতির রহস্যর উন্মোচনে যে মানুষটি প্রথম পথ দেখান তিনি পিথাগোরাস। তিনি প্রথম পৃথিবী তার অক্ষের চারদিকে আবর্তন করছে, এই ধারণা দেন। তারপর এলেন প্লেটো ও অ্যারিষ্টটল। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অ্যারিষ্টটল কোন পর্যবেক্ষন পরীক্ষা ছাড়াই একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছিলেন। তার ধারণা ছিল পৃথিবীর স্থির। পৃথিবীকে কেন্দ্র করে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, তারা একই পথে আবতির্ত হচ্ছে, চাঁদের নিজস্ব আলো আছে। অ্যারিষ্টটলের এইসব তত্ত্ব ও সূত্রগুলি প্রায় চৌদ্দশো বছর ধরে মানুষ অভ্রান্ত সত্য বলে মেনে নিয়েছে। যীশুর জন্মের পরবর্তীকালে যখন বাইবেল রচিত হল, বিশ্ব সৃষ্টির রহস্য সম্বন্ধে বাইবেল রচনাকারদের সামনে টলেমির সিদ্ধান্তগুলো বর্তমান চিল। তাই সেই সব অভিমতকেই বাইবেলের অর্ন্তভূক্ত করে নিল। অল্প দিনের মধ্যে তা ধর্মের অঙ্গ হিসাবে পরিগণিত হলো। পরবর্তীকালে মানুষ বাইবেলের প্রতিটি কথাকেই ধ্রুব সত্য বলে মনে নিল। কারো মনে এই নিয়ে কোন সন্দেহ রইলো না। ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ বলার চেষ্টা তরলে তার উপর নেমে আসত নির্যাতন।
তথ্য-৩৮৯ ▌মস্তিষ্কের ডাটা ট্রান্সফার:
যদি কোনোভাবে কারো মস্তিষ্ক কপি করে নেওয়া সম্ভব হয়, তাহলে আর কষ্ট করে পড়াশোনা করে শিক্ষিত হতে হবে না। কেননা সকল জ্ঞান বুদ্ধি, অনুভূতি সবই কপি করা হয়েছে তার মস্তিষ্কে। এই প্রযুক্তিকে সফল করার লক্ষ্যে ২০৪৫ ইনিশিয়েটিভ নামে একটি প্রোজেক্ট চলছে। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানীরা কেঁচোর ব্রেইন ম্যাপ থেকে একটি রোবট বানিয়েছেন। এতে রোবটটি সম্পূর্ণ কেঁচোর ব্রেইনে কাজ করছে। কেঁচোর মস্তিষ্কে ৩০২টি নিউরন থাকে এবং প্রত্যেকের মধ্যে ৭,০০০ নিউরন ইন্টারকানেকশন আছে। কিন্তু মানুষের মস্তিকের ১০০ বিলিয়ন নিউরন এবং এদের মধ্যকার ১০০ ট্রিলিয়ন কানেকশন। তবে যত কঠিনই হউক ২০৫০ সালের মধ্যে আমাদের কাছে মাইন্ড আপলোডিং প্রযুক্তি বা ইমর্টালিটি প্রযুক্তি বাস্তবে দেখা দেবে। ইতিমধ্যে বিজ্ঞানীরা দুটি মস্তিষ্কের মধ্যে কিছু তথ্য শেয়ার করার সফলতা পেয়েছে। যেমনÑ দুটি আলাদা রুমে দুইজনকে কম্পিউটারে বসিয়ে তাদের মধ্যে মস্তিষ্কের সংযোগ দিয়ে একজনের ইচ্ছায় অন্যজনের হাত-পা দিয়ে কাজ করিয়েছেন।
তথ্য-৩৯০ ▌দেবদাসী প্রথা:-
দেবদাসী মন্দির সেবিকা। বর্ধিত অর্থে মন্দিরাঙ্গনের বারাঙ্গনা, দেহোপজীবিনী বা গণিকা। এ-প্রথা রাজা, শাসক ও সর্দারদের পৃষ্ঠপোষকতায় দ্রুত বিকাশ লাভ করে। ভারতের রাজপুত্র, রাজা এবং জমিদারগণ দেবদাসীদের যখন থেকে নিজেদের ব্যক্তিগত স¤পত্তির মতো ব্যবহার করতে শুরু করে তখন থেকে তাদের অবস্থা একটি নতুন রূপ পরিগ্রহ করে। অনেক দেবদাসীকে নিঃসন্তান পরিবারে নিয়োজিত করা হতো অভিজাত লোকের সন্তান ধারণের জন্য যৌনমিলনের কাজে ব্যবহার করা হতো। এসব সন্তানরা পরবর্তীকালে ঠাকুরদাদার নাম ধারণ করে স¤পত্তির উত্তরাধিকারী হতো। দেবদাসী প্রথার ব্যাপক প্রচলন হয় অষ্টম শতাব্দীতে, পুন্ড্রবর্ধন নগরে, গৌড় ও বাংলায়। আধুনিক যুগেও ১৯৮২ সাল পর্যন্ত কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্রের ইয়াল্লামা, হনুমান এবং শিবমন্দিরে ২ লাখ ৫০ হাজার মেয়েকে নিয়োগ করা হয়। এখনো দক্ষিণ ভারতে, মহারাষ্ট্রে, ওড়িষায় এবং গুজরাটে দেবতাকে উৎসর্গ করার নামে দেবদাসীদের প্রধানত দেহভোগের কাজে ব্যবহার করা হয়। গরিব ঘরের মা-বাবা তাঁদের কুমারী মেয়েকে রজস্বলা হবার আগেই নিয়ে আসে মন্দিরে।
তথ্য-৩৯১ ▌দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করতে নিষিদ্ধপল্লীর মাটি লাগে কেন!:
পবিত্রতার প্রতিমূর্তি মা দুর্গার মূর্তি তৈরি করতে প্রথমেই লাগে বিশেষ কিছু জায়গার মাটি। রাজবাড়ির মাটি, চৌমাথার মাটি, গঙ্গার দুই তীরের মাটি ও তথাকথিত ‘অশুচি’ এলাকা নিষিদ্ধপল্লীর মাটি৷ এর সঙ্গে লাগে গাভীর মূত্র, গোবর, ধানের শিস, পবিত্র গঙ্গার জল। আচার পালন করা হয়ে চলেছে প্রাচীন কাল থেকে। কিন্তু কেন এই রীতি! কামাতুর পুরুষ যখন যৌনকর্মীর ঘরে প্রবেশ করেন, দরজার বাইরের পদধূলায় পড়ে থাকে তাঁর সারাজীবন ধরে সঞ্চয় করা সকল পুণ্য। কারণ তিনি সকল পুণ্য ঘরের বাইরে রেখে ঘরে প্রবেশ করছেন অন্যদিকে পুরুষের কামনা, বাসনা, লালসার গরল গ্রহণ করে তথাকথিত পতিতারা সমাজকে বিষমুক্ত করেন, নিষ্কলুষ রাখেন, পুণ্যার্জন করেন। তাঁদের পদধূলিও লেগে থাকে তাঁদের ঘরের দরজার বাইরের মাটিতে। তাই এ মাটি পবিত্রতম।
তথ্য-৩৯২ ▌যৌনতা নিয়ে অজানা তথ্য:
প্রাচীন ভারতের অবিবাহিতা নারীরা কোনো পুরুষের কাছে যৌন মিলনের কামনা করলে সেই পুরুষকে পূরণ করতেই হত। যদি নারীর সেই ইচ্ছা না মানা হয় তাহলে সেই পুরুষ ধর্মভ্রষ্ট হতেন। প্রাচীন ভারতে পরকীয়া ছিল অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। স্বয়ং কৃষ্ণও পরকীয়ায় মেতেছিলেন। প্রাচীন ভারতে প্রচলিত বেশিরভাগ খেলাধুলাই ছিল যৌনতায় ভরপুর। যেমন, 'ঘাটকাঞ্চুকি' এই খেলায় অংশগ্রহণকারী নারী ও পুরুষ উভয়েই সঙ্গমে লিপ্ত হতেন। পাপুয়া নিউগিনিতে সাত বছর বয়সের সময় থেকেই টরবিয়ান্ড শিশুরা তাদের যৌনতার সঙ্গীকে নিজেরাই নির্ধারণ করে নিতে পারে এবং যেকোনো সময় তাকে পরিত্যাগ করে আরেকজনকে গ্রহন করতে পারে। আফ্রিকার উদ-আবে গোত্রের মধ্যে একটি উৎসবে পুরুষেরা তাদের পারদর্শিতা এবং দক্ষতা নাচ গানের মাধ্যমে বিবাহ উপযুক্ত মেয়েদের সামনে উপস্থাপন করেন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মহিলারা তাদের প্রেমিক বা স্বামী নির্বাচন করে থাকে। আবার অনেক জুটি ভেঙ্গে গিয়ে নতুন জুটি তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়ায় অনেক পুরুষ প্রাপ্তি হিসেবে একাধীক স্ত্রী পেয়ে থাকেন। হাইতিতে ‘সউট ঢেও’ নামের একটি গোত্র আছে যারা প্রতি বছর জুলাই মাসে ভোডোডু উৎসবেরতিন দিনই মেয়েরা প্রকাশ্যে যে কারো সাথে শারীরিক স¤পর্ক করার অনুমতি পেয়ে থাকে ।
তথ্য-৩৯৩ ▌স্যাপিওসেক্সুয়াল:
মেধার টানেই যদি প্রেম জমে ওঠে তাহলে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় তাকে বলে স্যাপিওসেক্সুয়ালিটি। ধরুন, এমন একজন কাউকে আপনার পছন্দ হল যার কথা বলার ধরনই মুগ্ধ করে। সে দেখতে যেমনই হোক না কেন। ফটাফট আপনাকে রাজনীতি, কূটনীতি, খেলা, জ্ঞানবিজ্ঞান বুঝিয়ে দেবে। জেনারেল নলেজ একেবারে ঠোঁটস্থ। আপনার সঙ্গে জমিয়ে তর্কটাও করতে পারবে। বেশ গুছিয়ে টানটান করে নিজেকে পরিবেশন করবে। আপনিও বেশ বুঝবেন, পাকা মাথার মানুষ। বুদ্ধি-বিবেচনা আছে। মানে মস্তিষ্কে ষোলোআনা মালমশলা আছে। তেমন কাউকে যদি মনে ধরে, তাহলে আপনি স্যাপিওসেক্সুয়াল। মনোবিজ্ঞান বলছে, এমন অনেক স্যাপিওসেক্সুয়াল পুরুষ বা মহিলা রয়েছেন, যাঁরা বিপরীত লিঙ্গের মেধা দেখেই যৌনতার শিহরণ অনুভব করেন। শুধু তেমন মানুষের সঙ্গেই শারীরিক স¤পর্কে যেতে চান, যাঁর আইকিউ লেভেল বেশি।
তথ্য-৩৯৪ ▌কুম্ভমেলা:
একটি হিন্দু ধর্মের ঐতিহ্যবাহী উৎসব। প্রতি ছয় বছর অন্তর হরিদ্বার ও এলাহাবাদে অর্ধকুম্ভ মেলা বসে। প্রতি বারো বছর বা এক যুগ অন্তর অন্তর প্রয়াগ, হরিদ্বার, উজ্জ্বয়িনী ও নাসিকে পূর্ণকুম্ভ আয়োজিত হয়ে থাকে। হিসাব করলে দেখা যায় প্রতি তিন বছর পরপর চার জায়গার কোথাও না কোথাও কুম্ভমেলা বসবেই যদিও তা পূর্ণই হোক বা অর্ধ। কুম্ভমেলা চারটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে আয়োজিত হয়ে থাকে। এই চারটি স্থান নির্বাচিত হয় বৃহ¯পতি গ্রহ ও সূর্যের অবস্থান অনুযায়ী। ইলাহাবাদের মেলাটি হয় গঙ্গাÑযমুনা ও অন্তসলিলা সরস্বতীর সংযোগ স্থানে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন যে এই ¯œানের মধ্য পাপ এবং জন্ম ও পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্ত হওয়া যায়।
তথ্য-৩৯৫ ▌মায়া সভ্যতা:
প্রায় চার হাজার বছর আগে মধ্য আমেরিকার মেক্সিকো, গুয়াতেমালা,হন্দুরাস, বেলিজ, এবং এল সালভাদর, এই ৫ দেশে প্রায় তিন সহস্রাব্দীরও বেশি সময় জুড়ে গড়ে উঠেছিল মায়া সভ্যতা। যখনকার মানুষ কেবল আগুনের ব্যবহার বা আগুনে খাবার ঝলসে সিদ্ধ করে খেতে শিখেছিল, কিন্তু সেই যুগে মায়ানরা কি করে এত উন্নত সভ্যতা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি তা বর্তমান বিশ্বের একটি বিস্ময় ! তারা জঙ্গল পরিস্কার করে চাষাবাস করা, রাস্তাঘাট তৈরি, জলাধার নির্মান, বুনন , মৃত্তিকা শিল্প প্রভৃতিতেও ছিল সমান দক্ষ। মায়ানরা চাঁদ, তারা, গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে অর্থাৎ জ্যোতির্বিদ্যা নিয়ে চর্চা বা পড়াশুনা করত। তারা গান, কবিতা লিখত অর্থাৎ সাহিত্য চর্চা করত! পুরো আমেরিকা মহাদেশজুড়ে মায়ান সভ্যতাই একমাত্র প্রাচীন সভ্যতা, যাদের নিজস্ব লেখা ভাষা ছিলো, যারা সুন্দর করে পড়তে ও লিখতেও জানত। মায়ানদের চিকিৎসাবিদ্যা অনেক আধুনিক ছিলো। তারা শরীরের ক্ষত মানুষের চুল দিয়েই সেলাই করত, দাঁতের গর্ত পূরণ করা, এমনকি নকল পাঁ লাগাতেও পারদর্শী ছিলো।
তথ্য-৩৯৬ ▌ বিয়ের উদ্ভোব:
৩০ হাজার বছর আগে মানুষ ছিল উলঙ্গ, বন্য, পশুর মতো হিংস্র। কাজ ছিল খাদ্য সংগ্রহ, যৌনমিলন আর আত্মরক্ষার লড়াই। পশুশিকারের জন্য আদিম মানুষকে মাঝেমধ্যেই নিজের আশ্রয় ছেড়ে অনেক দূরে যেতে হত। এভাবে পুরুষেরা যখন দূরে থাকত, তখন নারী স¤পূর্ণ অসহায় ও রক্ষকহীন অবস্থায় থাকত। অপর কোনো পুরুষ বলপূর্বক তুলে নিয়ে গেলে যুদ্ধ ও রক্তপাতের সৃষ্টি হত। তাই প্রয়োজন হয়ে পড়ল মালিকানা। নারীর স্থায়ী দখলদার। অতএব এহেন রক্তপাত এড়াতেই মনুষ্য সমাজে বিবাহ দ্বারা স্ত্রী-পুরুষের সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। মানুষ যখন যৌনতাকে অবদমন করে, তখন মেজাজ ও স্বভাব-প্রকৃতি ওই চেষ্টা সাধনাকে গ্রহণ করতে পারে না। কারণ মানুষের মধ্যে টেস্টোস্টেরন হরমোন ক্ষরণের কারণে, তার মধ্যে যৌন-আবেগ ও চাহিদা প্রচ-ভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত তার যৌন-চাহিদা পূরণ না-হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত যে স্বাভাবিক হতে পারে না। প্রাচীন রোমে বিবাহ বলতে ছিল অভিজাত শ্রেণিদের মধ্যে রাজনৈতিক পুনঃবিন্যাস। সাধারণ মানুষ লিভ ইন করত; আর তাহাই ছিল বিবাহ। যৌনতার নির্মম সময় হচ্ছে মধ্যযুগ। নারীর সতীত্বের ধারণা, যৌনতার ক্ষেত্রে শালীনতার ধারণা, কৌমার্যের ধারণা, মনোগামী ও বহুগামী যৌনতার দ্বন্দ্ব সবই এই সময়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তথ্য-৩৯৭ ▌কৃত্রিম শুক্রাণু :
স্টেমসেল টেকনিক পদ্ধতিতে প্রথমে ইঁদুরের ভ্রুণ থেকে স্টেমসেল সংগ্রহ করেন। সেটিকে বিশেষ কিছু রাসায়নিক মিশ্রণে রাখা হয়। মিশ্রণে রাখার পর স্টেম সেলটি ভেঙে গিয়ে জার্ম সেলে রূপান্তরিত হয়। ল্যাবরেটরিতেই টেস্টিসের সমতুল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ওই টেস্টিকিউলার সেলের মধ্যে মেশানো হয় টেস্টোস্টেরন হরমোনও। এই পদ্ধতিতেতেই তৈরি হয় কৃত্রিম শুক্রাণু। যার মস্তকের অংশ শুক্রাণুর (¯পার্মের)মতো হলেও লেজের অংশটি থাকে না। এবং ¯পার্মাটিডস সাঁতার কেটে এগিয়ে যেতেও অক্ষম। এই ¯পার্মাটিডসকেই ইঁদুরের ডিম্বাণুর মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। তাদের আবিষ্কার যদি মানুষের ক্ষেত্রে নিরাপদ হয় এবং সফল প্রয়োগ করানো সম্ভব হয়, তাহলে বিশ্বজুড়ে যে বন্ধ্যাত্ব সমস্যা আছে তার সুরাহা সম্ভব হবে। গবেষকদলের আশা, পুরুষদের শুক্রাণুজনিত অক্ষমতার কারণে বন্ধ্যাত্বদূরীকরণ সম্ভব হবে এবং মহিলারা পুরুষের শরীরে সৃষ্টি শুক্রাণু ছাড়াই গর্ভধারণ ও সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম হবেন।
তথ্য-৩৯৮ ▌গোল্ডেন রেশিওর অনুপাতে সেরা সুন্দরী:
এটা হচ্ছে একটা গাণিতিক অনুপাত যা কোন চিত্রকর্ম, স্থাপত্যকলা ইত্যাদিতে প্রয়োগ করা হলে সেই চিত্রকর্ম ও স্থাপত্যের চমৎকারিত্ব বৃদ্ধি পায়। মিশরের পিরামিড, আগ্রার তাজমহল, আইফেল টাওয়ার, হোয়াইট হাউজ ইত্যাদিতে এই “গোল্ডেন রেশিও”র প্রয়োগ হয়েছে বলেই চমৎকারিত্বই ভিন্ন। উদাহরণ স্বরূপ: একটি মৌচাকে স্ত্রী মৌমাছির সংখ্যাকে পুরুষ মৌমাছির সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে কোন সংখ্যাটি আসবে জানেন? অবশ্যই ১.৬১৮। শামুকের প্রতিটি ¯পাইরালের ব্যাস পরেরটির সঙ্গে ১.৬১৮ অনুপাতে রয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের বীজ প্রতিটি চক্রাকারের ব্যাস ১.৬১৮। শুধু তা-ই নয়, গাছপালার পাতার বিন্যাস, পোকামাকড়ের বিভাজন সবগুলোই বিস্ময়করভাবে এই অনুপাত মেনে চলে। মানুষের শরীরের গড়নও এ অনুপাত মেনে চলে। যেমন আপনার মাথা থেকে পা পর্যন্ত মাপুন, তারপর মাটি থেকে আপনার নাভি পর্যন্ত মাপুন। প্রথম পরিমাপটির সঙ্গে দ্বিতীয় মাপটি ভাগ দিন। ফল পাওয়া যাবে ১.৬১৮। আপনার কাঁধ থেকে হাতের আক্সগুল পর্যন্ত মাপ নিয়ে তাকে আপনার বাহু থেকে আক্সগুল পর্যন্ত দূরত্বের সঙ্গে ভাগ দিন, কিংবা পা থেকে কোমরের মাপকে পা থেকে হাঁটু দিয়ে ভাগ করুন।পাওয়া যাবে ১.৬১৮। নিচের সংখাগুলোর দিকে একটু লক্ষ্য করুন, ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১, ৩৪, ৫৫, ৮৯, ১৪৪, ২৩৩, ৩৭৭, ৬১০, ৯৮৭, ১৫৯৭, ২৫৮৪, ৪১৮১ এই সংখ্যা গুলোতে দেখুন প্রতিটি সংখ্যা তার আগের দুইটি সংখ্যার যোগফলের সমান। প্রত্যেক সংখ্যাকে তার আগের সংখ্যা দ্বারা ভাগ করুন। ভাগ করতে করতে দেখবান প্রত্যেক ভাগফল ১.৬১৮। আমাদের ব্রেইন এই রেশিও খুব ভালো করে চেনে। তাই এই রেশিও ব্যবহার করে ডিজাইন করলে সেটা খুব ভালো ভাবে গ্রহন করে। বিখ্যাত কো¤পানির লোগো যেমন অঢ়ঢ়ষব, অফরফধং, ঐড়হফধ, ঞড়ুড়ঃধ, ঈড়পধঈড়ষধ, চবঢ়ংর গোল্ডেন রেশিও বা চঐও ব্যবহার করেছে। মানুষের মুখম-লের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ১.৬১৮০ (চঐও) ; ঠোঁটের দৈর্ঘ্য ও নাকের প্রস্থের অনুপাত , চোখের ২ প্রান্তের দুরুত্ব ও চুল থেকে চোখের মনির দুরুত্ব ও ১.৬১৮০ (চঐও) । মুখম-লেই পাওয়া যায় ৩০ টিরও বেশি রেশিও । যে মেয়ের যত বেশি রেশিও মিলবে সে তত সেরা সুন্দরী।
তথ্য-৩৯৯ ▌কম বয়সে বিয়ে কেন? দরকার?:
১) সাস্থ্যগত এবং মেধাগত। কম বয়স থেকে সেক্স শুরু করলে শরীরের হাড়, মাংসপেশি, গঠন এমন কি মস্তিষ্ক উন্নত থেকে উন্নততর হয়। ইউরোপীয়দের উন্নত শারীরিক গঠন ও মেধাগত উৎকর্ষতার পেছনে বাল্যকালে যৌনক্রিয়ার প্রভাব প্রমাণিত। অল্প বয়সে বিয়ে করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। বড় কোনো জটিল রোগ হয় ›,া চেহেরায় লাবণ্যতা থাকে, মন শান্ত থাকে। ২) ৩০ পার করে বিয়ে করলে বয়সের কারণে আপনার মধ্যে যে গাম্ভীর্য চলে আসবে, তার জন্য স¤পর্ক খুব বেশি মধুর ও রোমান্টিক হয় না, আবেগ কাজ করে না। ৩) যদি অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে অল্পতেই ভেঙে যায় তাহলে জীবনটাকে নতুন করে গুছিয়ে নেওয়ার দ্বিতীয় সুযোগ পাওয়া যায়, যা দেরিতে বিয়ে করলে সম্ভব হয় না। ৪) দেরিতে বিয়ে করলে সন্তান মানুষ করার বিষয়টিও পিছিয়ে পড়ে।
তথ্য-৪০০ ▌দ্য কলম্বিয়ান এক্সচেঞ্জ:
১৪৯২ সালে কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কারের পর ইউরোপ এবং আমেরিকার মাঝে রোগজীবাণু, খাদ্যশস্য এবং পশুপাখির যে পার¯পরিক স্থানান্তর সংঘটিত হয়, ইতিহাসে সেই ঘটনাই 'কলম্বিয়ান এক্সচেঞ্জ' নামে পরিচিত। তখন স্থানীয় আমেরিকানদের রোগবালাই ছিল না বললেই চলে। এমনকি সর্দি কাশি কী, তারা তাও জানত না। তাই সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে তাদের শরীরে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ছিল না। ইউরোপীয়রা নিজের অজান্তে জলবসন্ত, গুটিবসন্ত, হাম, টাইফয়েড, কলেরা, প্লেগ, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি সংক্রামক রোগের জীবাণু সঙ্গে নিয়ে আমেরিকায় যায়। ফলে এসব সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে থাকে লাখ লাখ স্থানীয় মানুষ। এক-দেড়শ' বছরের মধ্যেইএই ভুখ-ের ৮০- ৯৫% মানুষ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ১৫১৭ সালের মাঝেই মধ্য মেক্সিকোর জনসংখ্যা ১ কোটি ৫০ লক্ষ থেকে মাত্র ১৫ লক্ষে নেমে আসে। ইতিহাসবিদদের মতে, সবচেয়ে কম আক্রান্ত জনপদও ৮০% জনসংখ্যা হারিয়েছে! আমেরিকার খাদ্যশস্য যেমন- আলু, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা মরিচ, ভ্যানিলা, কোকো (যা থেকে চকলেট তৈরি হয়), শিম ইত্যাদি; ফলমূলের মধ্যে রয়েছে পেঁপে, আনারস ইত্যাদি কোনো কোনো দেশের খাদ্য প্রধান-খাদ্য হয়ে যায়। যেমন- আয়ারল্যা-ে আলু। চিলির এই আলু সারা বিশ্বের সমস্থ দুভিক্ষে মানুষকে বাঁিচয়েছে। আলু খাওয়ার দরুন ইউরোপের মানুষজন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে থাকল। মেয়েদের পিরিয়ডের সময়কাল এগিয়ে এলো এবং পুরুষদের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে গেল। অন্যদিকে বিশাল আমেরিকার মাটিতে ধান, গম, আখ, বার্লি ইত্যাদি ফসল ফলাতে ইউরোপীয়রা পঙ্গপালের মতো ঝাঁকে ঝাঁকে আমেরিকায় পাড়ি জমাতে থাকে। কিন্তু হাজার হাজার মাইল বিস্তৃত এই অনাবাদী জমি চাষাবাদ করার মতো জনবল কোথায়? নেটিভ আমেরিকানরা তো সংক্রামক রোগের মহামারীতে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে! তাই ইউরোপীয়রা আফ্রিকা থেকে ব্যাপকভাবে মানুষজন দাস হিসেবে ধরে নিয়ে আসতে শুরু করে। ১৫০২ থেকে ১৮৬০ সাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিনশ বছর ধরে আফ্রিকার প্রায় এক থেকে দেড় কোটির মতো নারী, পুরুষ ও শিশুকে দাস বানিয়ে ধরে আনা হয়েছিল। এই কলম্বিয়ান এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ইউরোপ-আমেরিকা সম্পদে, প্রাচুর্যে সারা পৃথিবীর প্রভু হয়ে বসে।