--:: ব্যাথা সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২০১ ▌ কাঁধে ব্যথা হলে:
আঘাত এবং ব্যবহার জনিত ক্ষয় ও আঘাতের জন্য বয়স্কদের কাঁধে ব্যথা হয় । গঠনগতভাবে কাঁধ তিনটি হাড় দ্বারা গঠিত এবং ত্রিশটি মাংসপেশী জোড়ায় বিভিন্ন ধরনের নড়াচড়া করায়। কাঁধে দুই ধরনের ব্যথা হয় - দূরের ব্যথা বা রেফার্ড পেইন (জবভভবৎবফ চধরহ) ও স্থানীয় ব্যথা বা লোকাল পেইন (খড়পধষধরুবফ চধরহ)। রোগের লক্ষন সমূহ ১. কাঁধের উপরিভাগে হালকা ব্যথায় হাত উপরে বা পাশে তুলতে ব্যথা বেড়ে যায় ২. জামা পরিধানের জন্য হাত পিছনে নিলে ব্যথা হয় বা হাত পিছনে নেওয়া যায় না ৩. ব্যথা যুক্ত কাঁধে কাত হয়ে ঘুমানো যায় না ৫. বিশ্রাম অবস্থায় কাঁধে ব্যথা হয় ৬. হাত উপরে বা পাশে তুলতে না পারা ৯. হাত দিয়ে কোন কিছু তোলা বা বহন করা যায় না ১০. আর্থাইটিসের কারনে জয়েন্ট ফুলে যায় । চিকিৎসা বা প্রতিকার: অধিকাংশ কাঁধের রোগসমূহ মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো হয়। কনজারভেটিভ চিকিৎসায় ভালো না হলে অপারেশন করাতে হয়।
হেল্থ টিপস্-২০২ ▌কামর ব্যথা সারাতে ৯টি পরামর্শ:
১) ভারী কোনো জিনিস নিচ থেকে ওপরে তোলার সময় সামনে না ঝুঁকে হাঁটু ভাঁজ করে বসে তুলুন। তবে কোনো ভারোত্তোলন না করাই শ্রেয়। ২) শরীরের ওজন বাড়াবেন না। অর্থাৎ এমন খাবার খাবেন না, যাতে শরীরের ওজন বাড়ে। ৩) নরম বিছানায় না শুয়ে শক্ত শয্যায় শোবেন। ফোম বা গদিযুক্ত বিছানা ছাড়–ন। ৪) নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করুন। হালকা ব্যায়াম করুন। ৫) সংসারের কাজÑ ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া, মশলা বাটা, ঝাড়– দেয়া ইত্যাদি কাজের সময় কোমর সোজা রাখুন। ৬) উপুড় হয়ে শোবেন না। ৭) আধা ঘণ্টার বেশি দাঁড়িয়ে থাকবেন না। উঁচু গোড়ালির স্যান্ডেল বা জুতো পরবেন না। ৮) ঘাড়ে বা পিঠে কোনো ভারী কিছু বহন করবেন না। ৯) কোমর ব্যথার জন্য ঘন ঘন ব্যথানাশক বড়ি খাবেন না। এটা এক প্রকার বিষ, যা আপনার কিডনি নষ্ট করে দিতে পারে।
হেল্থ টিপস্-২০৩ ▌বুকে ব্যথার প্রধান পাঁচটি কারণ:
১.বুকের ব্যথা-বুকে ব্যথার প্রধান কারণ হল কার্ডিয়াক উৎপত্তি যা মেডিক্যাল ভাষায় 'এনজিনা' এই ক্ষেত্রে, বুকের ব্যথা কাঁধ অঞ্চলে অনুভূত হয় এবং এই ব্যথা হাত ও পা পর্যন্ত ছড়াতে পারে। ২.টেনশন-টেনশনের থেকেও বুকে ব্যথা হতে পারে। যখন ধমনীতে রক্তচাপের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা ফুসফুসে রক্ত বহন করে, এটা বুকের ব্যথার কারণ হতে পারে। ৩. অ¤¬তা- অ¤¬তা বা বুকে জ্বালা কিছু সাধারণ কারণ। এর সাথে বারংবার ঢেঁকুর তোলা, বুক ভার ও কাঁধ অঞ্চলে ব্যথা অনুভবও হতে পারে।৪. ফুসফুসের সমস্যা-পালমোনারি এম্বোলিজম একটি ফুসফুসের ব্যাধি যেখানে ফুসফুসের ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধে, ফুসফুসের টিস্যুতে রক্ত প্রবাহের বাধা সৃষ্টি করে এবং এইভাবে বুকের ব্যথা ঘটায়। ৫. চাপ-যখন শরীর চাপের মধ্যে থাকে, হৃদ¯পন্দন বেড়ে যায়, এবং রক্তচাপ দ্রুত হয় যা সংবহনতন্ত্র প্রভাবিত করে, ফলে বুকে ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
হেল্থ টিপস্-২০৪ ▌ বাতের ব্যথা:
অস্থিসন্ধিতে যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা হওয়াকে বাত বলে। সাধারণত জিনগত এবং পরিবেশগত কারণে এই সমস্যা হলেও মূলত হাড়ের জয়েন্টে ইউরিকঅ্যাসিড জমা হলে বাতের ব্যথা হয়। বাড়তি ওজন, ডায়াবেটিস, কিডনির অসুখ ওঅ্যালকোহল সেবনের ফলেও বাতের ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও ভিটামিন এবং ক্যালসিয়ামেরঅভাবেও এই রোগ হতে পারে। সাধারণত হাত এবং পায়ের ছোট গাঁটে ব্যথা হতে দেখা যায়। এছাড়াওকনুইয়ের গাঁট, ঘাড়ের গাঁট, কাঁধের গাঁট, হাঁটুর গাঁট ইত্যাদিতে ব্যথা হতে পারে। বাতের রোগীদের লেবু, টমেটো, আমড়াজাতীয় ফল না খাওয়াই ভালো। আবার লবণ, ময়দা এবং সাদা চিনিও ব্যথা-বেদনা বৃদ্ধি করে। লবণে যে সোডিয়াম থাকে, তা বাতের রোগীদের পা ফোলা বা রস নামানোর জন্য দায়ী হতে পারে। বীজ বা শিকড়জাতীয় খাবার, লাল মাংস ও পালংশাক ইত্যাদিতে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ থাকে অনেক বেশি, যা বাতের ব্যথার রোগীদের জন্য ভালো নয়।
হেল্থ টিপস্-২০৫ ▌ গেঁটে বাত হলে কী করবেন:
গেঁটে বাত একপ্রকার সিনড্রোম, যা ইউরেট নামের একধরনের লবণদানা জমে জোড়া বা সঞ্চিত সৃষ্ট প্রদাহ, যা শরীরের রক্তের প্লাজমায় অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডের উপস্থিতির ফলে ঘটে থাকে। গেঁটে বাত স্বল্পকালীন তীব্র প্রদাহ বা দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ এই দুই প্রকারের হতে পারে। নারীদের তুলনায় পরুষদের এই রোগ পাঁচ গুণ বেশি। গেঁটে বাত সাধারণত কম বয়সী পরুষ ও বেশি বয়সী নারীদের হয়ে থাকে। গিঁটের ব্যথা ও অন্যান্য বাতের ব্যথা সহজেই আলাদা করা যায়। যেমন পায়ের গোড়ালির জয়েন্ট ফুলে যাওয়া, তীব্র ব্যথা হওয়া ইত্যাদি। মজার বিষয় হলো, যদি গিঁটের বাতের রোগীকে চিকিৎসা না দেওয়া হয়, তাহলে দেখা যাবে প্রথম প্রথম তিন থেকে সাত দিন বা দশ দিনের মধ্যে ব্যথাটি চলে যাবে। ফোলাটাও কমে আসবে। এত তীব্র ব্যথা হয় যে ব্যথানাশক ওষুধ দিতেই হবে। আক্রান্ত জয়েন্টে বরফ লাগাতে হবে এবং বিশ্রামে রাখতে হবে।
হেল্থ টিপস্-২০৬ ▌হাটু ব্যাথার কারণ ও করণীয়:
হাটু ব্যাথা সমস্যা পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি হয়। মহিলাদের বয়স ৪৫ পার হলে এর প্রকোপ বাড়ে। যে সব কারণে হাটু ব্যাথা হতে পারে: - অষ্টিও আর্থাইটিস বা বাত। - আঘাত জনিত কারন। - অষ্টিও পেরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়। - কন্ড্রো-মেলেসিয়া পেটেলা। - টেন্ডিনাইটিস। - লিগামেন্ট ও সেনিস্কাস ইনজুরি। - মাংশ পেশীর সমস্যা। ১। যদি হাটু ফোলা থাকে তাহলে সর্ব প্রথম কাজ ঔষধ এর মাধ্যমে ফোলা কমানো। ২। যদি হাটুর তাপমাত্রা বেশি থাকে তাহলে বরফ ও তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে গরম শেক দিতে হবে। ৩। হাঁটু ফোলা থাকলে হাটাহাটি কম করে পূর্ণ বিশ্রামে থাকুন এবং চিকিৎসকের সরনাপন্ন হোন। প্রতিরোধ: ১। নিয়মত হাটুন। ২। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ৩। পর্যাপ্ত ভিটামিন, মিনারেলস্ এবং আশ যুক্ত খাবার খান। নিয়মত হালকা ব্যায়াম ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে হাঁটু ব্যাথা নিরাময় করে সুস্থ থাকুন।
হেল্থ টিপস্-২০৭ ▌ হাতের কব্জির ব্যথা:
নানা কারণে হাতের কব্জিতে ব্যথা হতে পারে, যেমন- আঘাত পাওয়া, দীর্ঘক্ষণ কব্জির মাধ্যমে কোন কাজ করা, ডিকোয়ারবেইনস ডিজিজ, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, গাঁউট ও অন্যান্য বাতজাতীয় রোগ। বাতজাতীয় রোগে হাতের কব্জিতে ব্যথা হলে তা সাধারণত বিশ্রাম নিলে ও সকালে বেড়ে যায়, কাজ করলে কিছুটা কমে আসে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বাত রোগটি নির্নয় করা জরুরি ও সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করা দরকার। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কব্জিতে ব্যথা হলে তা সাধারণত বিশ্রাম নিলে কমে, কাজ করলে বাড়ে। তবে আক্রান্ত হাতের কব্জিকে বিশ্রামে রাখতে হবে। ব্যথানাশক অষুধ, যেমন- প্যারাসিটামল বা এনএসএআইডি দেয়া যেতে পারে। তবে কোনোভাবেই জেল দিয়ে মালিশ করা যাবে না। অল্প গরম পানিতে হাতের কব্জিকে ডুবিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে নড়াচড়া করালেও বেশ উপকার হয়। যে কাজ করতে হলে হাতের কব্জিকে বারবার ঘুরাতে হয় সে ধরনের কাজ করা যাবে না।
হেল্থ টিপস্-২০৮ ▌মেরুদন্ড ব্যথার কারণসমূহ ও প্রতিকার:
গঠন অনুযায়ী মেরুদন্ড মাথার খুলির নীচে ঘাড়ের ৭টি হাড়, পিঠের ১২টি হাড় এবং সবার নিচে কোমরের ৫টি হাড় নিয়ে গঠিত। মেরুদন্ডের ব্যথা বিভিন্ন কারনে হতে পারে। মেরুদন্ডের হাড়গুলির ভিতর দিয়ে মাথার খুলি থেকে নেমে আসা রগ বা ¯পাইনাল কর্ডে দুই হাড়ের মধ্যবর্তী ডিস্কের কোন অংশ বের হয়ে গিয়ে চাপের সৃষ্টি করলেই ব্যথাটা হয়। ডিস্কের স্থানচ্যুতি বা সরে যাওয়ার মাত্রার উপর এর জটিলতা নির্ভর করে। তাই সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া লক্ষনসমুহ: ঘাড়ের ব্যথা ০ দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় ব্যথা অনুভব করা। ০ ব্যথা ঘাড় হতে হাতে ছড়িয়ে পড়া। ০ দাঁড়ানো ও বসা থাকা অবস্থায় পিঠে ব্যথা করা। ০ দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় কোমরে ব্যথা অনুভূত হওয়া। ০ ব্যথা কোমর থেকে ক্রমান্নয়ে পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়া। প্রতিকার সমুহ: কোমর ব্যথাজনিত সমস্যার অত্যাধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে ফিজিওথেরাপিও ফার্মাকোথেরাপি।
হেল্থ টিপস্-২০৯ ▌পায়ের গোড়ালি ব্যথায় কী করবেন?:
ঘুম থেকে উঠে শুরু হয় গাড়োলি ব্যথা। পা রাখা যায় না মাটিতে। খানিকক্ষণ চলাফেরা এ আবার কমতে শুরু করে। বসা থেকে উঠলেও একই ব্যাপার । অর্থাৎ চলাচলের মধ্যে হলে ব্যথা সহ্যসীমায় থাকে। বিশ্রামের পর শুরু করতে গেলেই মুশকিল। ব্যথার পা সহ্য হয় এমন গরম জলে ডুবিয়ে রাখুন। বিশেষ করে রাত্রে শোওয়ার আগে। দিনে দু’বার ৮ - ১০ মিনিট করে টিপ টো ব্যায়াম করুন । অর্থাৎ পায়ের আঙুলের উপর। ভর দিয়ে গাড়োলি উঁচু করে দাঁড়ান। আবার পা পেতে দিন। বারবার করুন। -হিলতালো জুতো পরা বারণ। নরম আরামদায়ক ফ্ল্যাট চটি বা জুতো পরুন । - ব্যথা না কমলে এক্সরে এবং দু - একটি রক্ত পরীক্ষা করতে হবে । অনেক সময় গাড়োলির হাড় বাড়ার দরুণ এরকম হয়। যাকে বলে ক্যালকেনিয়ান স্পার । ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ব্যথার ওষুধ খেয়ে এই ব্যথা তেমন কমে না । নিয়ম মেনে চললেই অবস্থা আয়ত্বে থাকে।
হেল্থ টিপস্-২১০ ▌ কাঁধে ব্যথা হলে:
আঘাত এবং ব্যবহার জনিত ক্ষয় ও আঘাতের জন্য বয়স্কদের কাঁধে ব্যথা হয় । গঠনগতভাবে কাঁধ তিনটি হাড় দ্বারা গঠিত এবং ত্রিশটি মাংসপেশী জোড়ায় বিভিন্ন ধরনের নড়াচড়া করায়। কাঁধে দুই ধরনের ব্যথা হয় - দূরের ব্যথা বা রেফার্ড পেইন (জবভভবৎবফ চধরহ) ও স্থানীয় ব্যথা বা লোকাল পেইন (খড়পধষধরুবফ চধরহ)। রোগের লক্ষন সমূহ ১. কাঁধের উপরিভাগে হালকা ব্যথায় হাত উপরে বা পাশে তুলতে ব্যথা বেড়ে যায় ২. জামা পরিধানের জন্য হাত পিছনে নিলে ব্যথা হয় বা হাত পিছনে নেওয়া যায় না ৩. ব্যথা যুক্ত কাঁধে কাত হয়ে ঘুমানো যায় না ৫. বিশ্রাম অবস্থায় কাঁধে ব্যথা হয় ৬. হাত উপরে বা পাশে তুলতে না পারা ৯. হাত দিয়ে কোন কিছু তোলা বা বহন করা যায় না ১০. আর্থাইটিসের কারনে জয়েন্ট ফুলে যায় । চিকিৎসা বা প্রতিকার: অধিকাংশ কাঁধের রোগসমূহ মেডিকেল বা কনজারভেটিভ চিকিৎসায় ভালো হয়। কনজারভেটিভ চিকিৎসায় ভালো না হলে অপারেশন করাতে হয়।
হেল্থ টিপস্-২১১ ▌কোমর ব্যথা:
বাতজনিত কারণেই কোমরে ব্যথা বেশি হয়ে থাকে। বয়স বাড়লে সাধারণত লাম্বার ¯পনডাইলোসিস নামক বাত জাতীয় রোগের জন্য কোমরে ব্যথা হয়ে থাকে। এখানে বার্ধক্যজনিত কোমরে ব্যথা নিয়ে আলোচনা করব। মেরুদন্ডের নিচের হাড়ের মধ্যবর্তী তরুণাস্থি বা ডিস্কের বার্ধক্যজনিত পরিবর্তনের ফলেই এ রোগের সূত্রপাত হয়। উপসর্গÑ▪ প্রথম দিকে এ ব্যথা কম থাকে এবং ক্রমাম্বয়ে তা বাড়তে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে এ ব্যথা কিছুটা কমে আসে। ▪ কোমরে সামান্য নাড়াচাড়া হলেই এ ব্যথা বেড়ে যায়। ▪ অনেক সময় ব্যথা পায়ের দিকে নামতে পারে এবং অবশ অবশভাব বা ঝিন ঝিন অনুভূতিও হতে পারে। চিকিৎসা: এ রোগী শক্ত ও সমান বিছানায় বিশ্রামে থাকবেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ধরনের বিশ্রামে ব্যথা উপশম হয়। সাধারণ কোমরের ব্যথা তিন থেকে সাত দিন বিশ্রাম নিলে ভালো হয়ে যায়।
হেল্থ টিপস্-২০৯ ▌পায়ের গোড়ালি ব্যথায় কী করবেন?:
ঘুম থেকে উঠে শুরু হয় গাড়োলি ব্যথা। পা রাখা যায় না মাটিতে। খানিকক্ষণ চলাফেরা এ আবার কমতে শুরু করে। বসা থেকে উঠলেও একই ব্যাপার । অর্থাৎ চলাচলের মধ্যে হলে ব্যথা সহ্যসীমায় থাকে। বিশ্রামের পর শুরু করতে গেলেই মুশকিল। ব্যথার পা সহ্য হয় এমন গরম জলে ডুবিয়ে রাখুন। বিশেষ করে রাত্রে শোওয়ার আগে। দিনে দু’বার ৮ - ১০ মিনিট করে টিপ টো ব্যায়াম করুন । অর্থাৎ পায়ের আঙুলের উপর। ভর দিয়ে গাড়োলি উঁচু করে দাঁড়ান। আবার পা পেতে দিন। বারবার করুন। - হিলতালো জুতো পরা বারণ। নরম আরামদায়ক ফ্ল্যাট চটি বা জুতো পরুন । - ব্যথা না কমলে এক্সরে এবং দু - একটি রক্ত পরীক্ষা করতে হবে । অনেক সময় গাড়োলির হাড় বাড়ার দরুণ এরকম হয়। যাকে বলে ক্যালকেনিয়ান ¯পার । ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ব্যথার ওষুধ খেয়ে এই ব্যথা তেমন কমে না । নিয়ম মেনে চললেই অবস্থা আয়ত্বে থাকে।
--:: ¯স্নায়ুরোগ সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২১০ ▌ পেশি টান থেকে রেহাই পাবেন যেভাবে:
হঠাৎ করে কারো যদি কখনো পেশিতে টান ধরে যায় তা হলে তৎক্ষণাৎ তাকে এক-দুই গ্লাস পানি পান করে নিতে হবে। এতে পেশি টানের ভাবটা ধীরে ধীরে কমে যাবে। পেশি টান বা মাসল স্ক্রা¤প অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও কষ্টের। শরীরে খনিজ উপাদান পটাসিয়াম ও পানির অভাব হলে বিশ্রাম নেয়ার পর অথবা সকালে ঘুমের শেষে কখনোবা হঠাৎ আড়মোড়া ভাঙলে মাসল স্ক্রা¤প বা পেশি টান ধরে। শীতে এই সমস্যাটা বেশি হয়। কয়েক সেকেন্ড থেকে শুরু করে প্রায় ঘণ্টাখানেক স্থায়ী থাকে এই ব্যথা। পেশি টান বা মাসল স্ক্রা¤প প্রতিরোধে পটাসিয়াম এবং পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি পেশি ও ¯œায়ুর মধ্যে যোগাযোগ রাখতে সাহায্য করে। প্রোটিনেরও ভালো ভূমিকা রয়েছে পেশি টান প্রতিরোধে। পর্যাপ্ত পানি পান এবং পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার যেমন কলা, মিষ্টিআলু, শিম, বাদাম প্রভৃতি বেশি বেশি খাওয়া উচিত।
হেল্থ টিপস্-২১১ ▌সমস্যার নাম ভ্যারিকোস ভেইন:
পায়ের চামড়ার নিচে আঁকাবাঁকা শিরার ফুলে ওঠা সমস্যার নাম ভ্যারিকোস ভেইন। জন্মগতভাবে শিরার ভালভ দুর্বল থাকলে এমন হতে পারে। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তি এবং অতিরিক্ত মোটা, গর্ভবতী নারী, পেটে টিউমার বা পানি জমার মতো রোগ হলেও এমন সমস্যা হতে পারে। একে তখন সেকেন্ডারি ভ্যারিকোস ভেইন বলে। শুরুতে তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। পা ভারী ভারী লাগে, পায়ের শিরায় টান লাগে, বিশেষ করে ঘুমের মধ্যে। দাঁড়িয়ে থাকলে বা ভ্রমণ করলে পা ফুলে যায়, যা আবার পরে কমেও যায়। রক্ত জমাট বেঁধে রক্তনালি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, রক্তক্ষরণ হতে পারে। এমনকি আলসার বা ক্ষতও হতে পারে। পায়ের শিরা নীল হয়ে ফুলে উঠলে রোগটি দেখেই চেনা যায়। দীর্ঘ সময় একটানা দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না। ওজন কমাতে হবে। ঘুমানোর সময় পা উঁচু করে ঘুমালে ভালো। বর্তমানে লেজার পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা সম্ভব।
--:: রক্তচাপ সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২১২ ▌উচ্চ রক্তচাপ করণীয় কি:
▪ মাথা ঘোরা ▪ বুক ধড়ফর করা ▪ মনোযোগের অভাব ▪ ক্লান্তি ▪ পা ফোলা ▪ বুক ব্যথা। এই ধরনের রক্তচাপ সাধারণত বংশানুক্রমে চলে আসে। সামান্য কিছু মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্নু অসুখের দরুণ রক্তচাপ বাড়তে পারে। যেমন কিডনি বা এন্ডোক্রিন গ্ল্যান্ডের কিছু অসুখ, কোয়ার্কশেন অফ এওরটা, পরফারিয়া, হাইপার ক্যালসিমিয়া ইত্যাদি। উচ্চ রক্তচাপ কিছুটা যায়। যেমন, ▪ ওজন ঠিক রাখা। বিশেষ করে বাচ্চাদের। ছোটো বয়সে ওজন বেড়ে গেলে পরে আয়ত্তে আনা খুব মুশকিল। এবং দেখা গেছে এদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। ▪ খাবার নুনের পরিমাণ কম রাখা। কাঁচা নুন বাদ দেওয়া, রান্নায় কম নুন ব্যবহার করা এবং যে সমস্ত খাবারে নুনের পরিমাণ বেশি থাকে, যেমনÑ চানাচুর, চিপস, পাঁপড়, আচার, সসেজ, ফাস্টফুড, মুড়ি ইত্যাদি খাওয়ার পরিমাণ কমানো। ▪ ওজন ঠিক রাখা। নিয়মিত ব্যায়াম করা। ▪ খুব বেশি রাগারাগি করবেন না।
হেল্থ টিপস্-২১৩ ▌নিম্ন রক্তচাপ হলে করণীয়:
রক্তচাপ ১২০/৮০-র নিচে থাকলে আমরা ভাবি নি¤œœ রক্তচাপ হয়েছে। কিন্তু এই রক্তচাপ নিয়েও কেউ যদি তার দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারেন, সেটা তার স্বাভাবিক রক্তচাপ হিসেবেই ধরে নিতে হবে। তবে এদের ক্ষেত্রে ডায়েরিয়া, বমি, অতিরিক্ত ঘাম ইত্যাদির ফলে শরীর থেকে প্রচুর পানি এবং লবণ বেরিয়ে গেলে সমস্যা হতে পারে। তবে চিন্তিত হবেন তখন, যখন হঠাৎ করে রক্তচাপ বেশ খানিকটা কমে যায়। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার পিছনে তখন লুকিয়ে থাকে বড়ো কোনো অসুখ। কী করবেন? হঠাৎ রক্তচাপ কমে গেলে কী করবো? ▪ মাথায় বালিশ না দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে পড়–ন। ▪ ঘাম হতে থাকলে পাখা চালিয়ে দিন। জামাকাপড় আলগা করে দিন। ▪ লবণ এবং পানি খেতে হবে। বেশি করে বিট লবণ বা এমনি লবণ দিয়ে একগ্লাস শরবত বানিয়ে খান। ▪ রক্তচাপ যদি কমতে থাকে, নাড়ির গতি বাড়তে থাকে স্যালাইন চালানোর প্রয়োজন হবে।
--:: টিউমার সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২১৪ ▌ ¯স্নায়ু রোগ/ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ:
লক্ষণ-* হঠাৎ অস্বাভাবিক মাথা ব্যথা * বমি * খিঁচুনি * যে কোনো চোখের পাতা ঝরে পড়া * দৃষ্টিশক্তির তারতম্য। যেসব কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে * দুর্ঘটনা * আঘাত * উচ্চ রক্তচাপ। যেসব টিউমার হতে পারে-* পিটুইটারি টিউমার * ব্রেইন টিউমারকরণীয়-* রোগ নির্ণয় হলে ডাক্তারের পরামর্শ মতো পরের ধাপগুলো গ্রহণ করা ভালো।
হেল্থ টিপস্-২১৫ ▌ ব্রেন টিউমার হলে কি করবেন:
টিউমারের উপসর্গ মাথাব্যথা। যেমন অসহ্য মাথাব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙা, সঙ্গে বমি ভাব, ব্যথার চুড়ান্ত পর্যায়ে বমি হয়ে যাওয়ার পর ব্যথা খানিকটা কমে। অনেক সময় ভোররাত্রে ঘুম ভেঙে যায় ব্যথার চোটে। অজ্ঞানও হয়ে যান কেউ কেউ। চোখে কম দেখা, কপাল ব্যথা, পড়াশানো বা চোখের কাজ করলে ব্যথা দেখা দেওয়া বা বাড়া, কখনও একটা জিনিসকে দুটো করে দেখা দেয়। খাবার গিলতে কষ্ট, কানে কম শোনা, মাথা ঘোরা, ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা হওয়া, মহিলাদের মধ্যে হঠাৎ করে বুকে দুধের সঞ্চার হওয়া, আচমকা ঋতুবন্ধ হয়ে যাওয়া, এমনকি বেশি বয়সে হঠাৎ করে মৃগী রোগের সূত্রপাত হলেও ভাবতে হয় এর পিছনে ব্রেন টিউমারের হাত আছে কি-না। সব ব্রেন টিউমারই অপারেশন করা উচিত। মাথায় ছোটো ফুটো করে অপারেশন করা যায়, কখনও বাইরে থেকে রেডিয়েশন পাঠিয়ে টিউমার পুড়িয়ে দেওয়া হয়। রেডিওথেরাপিতে ভাল ফল হয়।
--:: স্টোক সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২১৬ ▌ স্ট্রোক সনাক্ত করার উপায়:
সহজ উপায়ে স্ট্রোক সনাক্ত করার উপায়, সহজ তিনটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন-
ঝ – ঝসরষব রোগীকে হাসতে বলুন।
ঞ – ঞধষশ রোগীকে আপনার সাথে সাথে একটি বাক্য বলতে বলুন। উদাহরণ: আজকের দিনটা অনেক সুন্দর।
জ – জধরংব যধহফং. রোগীকে একসাথে দুইহাত উপরে তুলতে বলুন। এর কোনো একটিতে যদি রোগীর সমস্যা বা কষ্ট হয়, তৎক্ষণাৎ দেরি না করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এবং চিকিৎসককে সমস্যাটি খুলে বলুন। সনাক্তকরণের আরেকটি উপায় হচ্ছে, রোগীকে বলুন তার জিহবা বের করতে। যদি তা ভাঁজ হয়ে থাকে, বা অথবা যদি তা বেঁকে যেকোনো একদিকে চলে যায়, সেটাও স্ট্রোকের লক্ষণ। তৎক্ষণাৎ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
হেল্থ টিপস্-২১৭ ▌স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেড়ে যায়:
বয়স সাধারণত ৫০-এর ওপরে হলে, বংশে স্ট্রোক রোগী থাকলে, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে, উচ্চ কোলস্টেরল লেভেল থাকলে, ধূমপায়ী হলে, ডায়াবেটিস থাকলে, ইতোপূর্বে একবার স্ট্রোক করলে, এলকোহলিক হলে, রক্তের নালিকাতে কোনো সমস্যা থাকলে। স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়: উচ্চ রক্তচাপ স¤পর্কে জানা, রক্তনালীর কোনো ধরনের সমস্যা থাকলে তার চিকিৎসা করা, ধূমপান বন্ধ করা, কোলস্টেরল, সোডিয়াম এবং ফ্যাটের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা, চর্বি ও শর্করা জাতীয় খাবার (যেমন- ফাস্টফুড, মাখন, ঘি, মিষ্টি, পোলাও, গরু-খাসির গোস্ত, চিংড়ি, ডিমের কুসুম ইত্যাদি) কম খাওয়া, এলকোহল সেবন থেকে বিরত থাকা, ডায়াবেটিসের সঠিক চিকিৎসা করা, নিয়মিত ৪৫ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম করা, অতিরিক্ত ওষুধ সেবন না করা।
হেল্থ টিপস্-২১৮ ▌স্ট্রোক হলে কি করবেন:
রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্ক প্রয়োজনীয় অক্সিজেন এবং গ্লুকোজের সরবরাহ পায়। কোনো কারণে এই সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটলে সে অংশের কোষগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটিই ব্রেইন স্ট্রোক নামে পরিচিত। শরীরের কোনো অংশ স্ট্রোকের কারণে অচল হয়ে গেলেও তা আবার ধীরে ধীরে সেরে উঠতে পারে। রোগীর যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকে, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগ থাকে তবে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেশি বেড়ে যায়। করণীয় : * রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা। * স¤পৃক্ত চর্বি যেমনÑ প্রাণিজ তেল, ডিমের লাল অংশ, ঘি, মাখন, য কোনো তেল খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। * মাছ এবং মাছের তেলও উপকারী। * সতর্কভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা * নিয়ম করে হাঁটা বা হালকা দৌড়ানো। * দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা। রোগী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এমনিতেই ভালো হয়ে যেতে পারে।
হেল্থ টিপস্-২১৯ ▌মিনি স্ট্রোকে কি করণীয়:
অল্প কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টার জন্য হাত বা পা অবশ, কথা জড়িয়ে যাওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা বা অন্ধকার দেখা ইত্যাদি আর তারপর নিজে নিজেই সব ঠিক হয়ে যাওয়াÑএ রকম অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ট্রানসিয়েন্ট ইসকেমিক অ্যাটাক। অনেকে বলেন মিনি স্ট্রোক। যদিও এতে স্ট্রোক বা পক্ষাঘাতের মতো দীর্ঘমেয়াদি অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় না। আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠলেও এই মিনি স্ট্রোক একটি সতর্কবার্তা। কেননা, প্রতি তিনজন মিনি স্ট্রোকের রোগীর মধ্যে অন্তত একজন অদূর ভবিষ্যতে পূর্ণাঙ্গ স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। কেন হয়? বয়স বৃদ্ধি, পারিবারিক ইতিহাস, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল, ধূমপান, হৃদরোগ ইত্যাদি হলো এর কারণ। ▪ লবণ খাওয়া কমান। চর্বি ও তেলযুক্ত খাবার পরিহার করুন। শাকসবজি ও ফলমূল খান। ▪ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। ▪ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ▪ ওজন কমান, নিয়মিত হাঁটুন।
হেল্থ টিপস্-২২০ ▌হিট স্ট্রোক হলে:
গরমের চোটে জ্ঞান হারানোকে বলে হিট স্ট্রোক। এরকম হলে রোগীকে সেখান থেকে সরিয়ে কোনো ঠা-া জায়গায় নিয়ে আসুন। মাথার দিক খানিকটা নিচু করে শুইয়ে দিন। পাখা চালিয়ে মাথা ধুইয়ে দেওয়া যেতে পারে । ▪ হিটস্ট্রোক দু - ধরনের। ক্লাসিক্যাল বা নন এক্সারশনাল হিট স্ট্রোক। এক্সারশনাল হিট স্ট্রোক। প্রথমটিতে আক্রান্ত হন সাধারণত বয়স্ক মানুষেরা। হার্ট বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী ঘুমের ওষুধ বা মানসিক রোগের ওষুধ যাঁরা নিয়মিত খান বা নিয়মিত মদ্যপানে অভ্যস্ত, তাদের মধ্যে এ ধরনের হিটস্ট্রোক বেশি হয়। দ্বিতীয় ধরনের হিটস্ট্রোক যে কারও হতে পারে। একটানা অনেকক্ষণ চড়া রোদে কাজ করাই এর মূল কারণ। সর্দি শুকিয়ে দেওয়ার কিছু ওষুধ আছে যা খেয়ে চড়া রোদে বেরোলে এর সম্ভাবনা বাড়ে। পরামর্শ-▪ একটানা বেশিক্ষণ চড়া রোদের নিচে থাকবেন না। ▪ খালোমেলা সুতির পাশোক পরুন। ▪ ছাতা, রোদে - চমশা ব্যবহার করুন। ▪ বাইরে বেরানোরে সময় সঙ্গে নুন-চিনির শরবত রাখুন। াঝেমধ্যে দু-এক ঢোকে খেয়ে নেবেন।
হেল্থ টিপস্-২২১ ▌ স্ট্রোকজনিত প্যারালাইসিস:
বিভিন্ন কারণে ব্রেন বা মস্তিষ্কের স্ট্রোক হতে পারে। যেমন- * অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ * অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস * হাইপারলিপিডেমিয়া বা আথেরোস্কেলরসিস * অবেসিটি বা অধিক ওজন * ধূমপান * মানসিক দুশ্চিন্তা * নিদ্রাহিনতা * এথেরএম্বলিজম বা কারডিওএম্বলিজম * ব্রেন টিউমার * হেড ইনজুরি বা আঘাতজনিত * মেনিনজাইটিস * এইচআইভি * হেমাটোলজিকাল ডিস-অডার। উপসর্গÑ* রোগীর এক পাশের হাত এবং পা আংশিক বা পুরোপুরি পারালাইজড হয়ে যায়। চিকিৎসা: যত দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন, ততই ভালো। কেননা, স্টেরয়েড বা অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শুরু করলেই সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়া চিকিৎসক বিশেষ ধরনের ব্যায়াম শিখিয়ে দেবেন, যা দিনে কয়েকবার করতে হবে। খাবার খেতে সমস্যা হলে ধীরে ধীরে তরল বা আধা তরল খাবার খেতে হবে।
হেল্থ টিপস্-২২২ ▌ হঠাৎ মুখ বেঁকে যাওয়া:
একদিন ঘুম থেকে জেগে দেখলেন হঠাৎ মুখের এক দিক বেঁকে গেছে। কথা বলতে গিয়ে বা হাসতে গেলে ঠোঁটটা বিশ্রীভাবে একদিকে ঝুলে পড়ছে, মুখের এক দিক আর নাড়তে পারছেন না। এমন অবস্থাকে সবাই বলে থাকেন যে ‘মাইল্ড স্ট্রোক’ হয়েছে। আসলে স্ট্রোক এর কারণে যখন দেহের একটি দিক পুরোপুরি প্যারালাইসিস হয়ে যায় তখন এর সঙ্গে মুখও আক্রান্ত হয়। কিন্তু পক্ষাঘাত ছাড়াও এমন ঘটনার কারণ ¯œায়ুগত সমস্যা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর নাম ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো হারপিস ভাইরাস সংক্রমণ। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, স্ট্রোক ইত্যাদি কারণেও ফেশিয়াল নার্ভ অকার্যকর হতে পারে। বেলস পালসি আরো বিভিন্ন কারণে হতে পারে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-* এপসটিনবার ভাইরাস * মধ্য কর্ণে ইনফেকশন * অনেক ঠা-া লাগলে * আঘাতজনিত কারণ * মস্তিষ্কের স্ট্রোকজনিত কারণ * ফেসিয়াল টিউমার * হার্পিস ভাইরাস * চিকেন পক্স এবং সিঙ্গেলস ভাইরাস * ইনফ্লুয়েঞ্জা, সাইটোমেগালো এবং মা¤পস ভাইরাস ইত্যাদি।
হেল্থ টিপস্-২২৩ ▌পক্ষাঘাত বা প্যারালিসিস:
প্যারালাইসিস হল একটা অবস্থা যেখানে শরীরের কিছু বা সমস্ত অঙ্গের সাময়িক বা স¤পূর্ণ সঞ্চালণ বন্ধ হয়ে যায়। এটা হয় মস্তিষ্ক এবং শরীরের পেশিসমূহের মধ্যে সংকেতপ্রেরণ পদ্ধতির আদান-প্রদানগত সমস্যার কারণে। এটি হতে পারে কোনও রোগের কারণে, যেমন পোলিও ¯œায়ুর ব্যাধি অথবা অন্য কারণের জন্য। উল্লেখযোগ্য হচ্ছেÑব্রেইন স্ট্রোক, ¯পাইনালকর্ড ইনজুরি, নার্ভ ইনজুরি, এমায়েট্রপিক লেটেরাল স্কে¬রোসিস, বটুলিজিম যা এক ধরনের টক্সিসিটি, মালটিপল স্কে¬রোসিস, জিবিএস। তাছাড়া মাংসপেশির রোগ মাসকুলার ডেসট্রপি হলেও প্যারালাইসিস হয়ে থাকে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, হাইপোসাইথেমিয়া, বংশগত কারণেও প্যারালাইসিস হতে পারে। চিকিৎসা : প্যারালাইসিসের জন্য রোগীর ওষুধের চেয়েও বেশি দরকার হলো পরিচর্যার এবং প্রশিক্ষণের।
-:: কিডনি সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২২৪ ▌কীভাবে কিডনি ভালো থাকবে?:
ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের মতো রোগ যথাসময়ে নির্ণয় করা এবং চিকিৎসার মাধ্যমে সুনিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। বয়স ৪০ পেরোনোর পর প্রত্যেকেরই উচিত রক্তে শর্করা, রক্তচাপ ও প্রস্রাবে আমিষ ইত্যাদি পরীক্ষা করা। ধূমপান বর্জন করুন। ওজন যেন না বাড়ে। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট হাঁটুন। খাবারে লবণের পরিমাণ কমান। আমরা প্রতিদিন প্রায় ১০ গ্রামের মতো লবণ খাই, কিন্তু ৬ গ্রামের বেশি খাওয়া উচিত নয়। অনেকের ইউরিনেশনের পরিমাণ বেশি হয়। ডায়াবেটিস না থাকা সত্ত্বেও রাতে উঠতে হয় ইউরিনেশনের জন্য। কিডনি ফাংশন যথাযথ না থাকলে শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় ফ্লুইড বের হয় না। ফলে এসব ফ্লুইড হাঁটু, পা, পায়ের পাতা, মুখ ও হাতে জমা হয়। যাকে আমরা বলি হাত, পা, মুখ ফুলে যাওয়া। কিডনি যদি স্বাভাবিক না থাকে তবে আক্রান্ত ব্যক্তির এনিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। ফলে শরীর হয়ে উঠে দুর্বল ও অলস।
হেল্থ টিপস্-২২৫ ▌কিডনি কেন নষ্ট হয়? :
কিডনির অকার্যকারিতা দুই ধরনের। একটা হলো, স্বল্প সময়ে কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়া। কোনো কারণে কিডনিতে রক্তপ্রবাহ হঠাৎ কমে গেলে, যেমন: মারাত্মক ডায়রিয়া বা পানিশূন্যতায় এমন ঘটতে পারে। এর মূলে রয়েছে সুপেয় ও নিরাপদ পানির অভাব। পানিবাহিত রোগবালাই (যেমন: ডায়রিয়া, কলেরা ইত্যাদি) হলো এ ধরনের কিডনি অকার্যকারিতার প্রধানতম কারণ। টাইফয়েড বা ডেক্সগুজ্বর, অকারণ অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশকজাতীয় ওষুধ সেবনের কারণেও হঠাৎ কিডনির সমস্যা হতে পারে। গ্রামাঞ্চলে অনিরাপদ উপায়ে প্রসবের কারণে অতি রক্তক্ষরণ হয় বা বিলম্বিত প্রসবের কারণেও কিডনির সমস্যা হতে পারে। আরেক ধরনের কিডনি অকার্যকারিতা হয় ধীরে ধীরে। একে বলে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চরক্তচাপ এবং কিডনির নিজস্ব কিছু রোগ এমন সমস্যার জন্য প্রধানত দায়ী।
হেল্থ টিপস্-২২৬ ▌ কিডনি রোগ করণীয় কি:
কারণ-*দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ। *দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস। *কিডনি প্রদাহ। *ডায়রিয়ার পর অতিরিক্ত পানিশূন্যতা। *এন্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ওষুধ অথবা অন্য যে কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। *দীর্ঘমেয়াদি মূত্রনালিতে প্রদাহ। *কিডনিতে পাথর, মূত্রনালিতে পাথর, কিডনি অথবা মূত্রনালির জন্মগত ত্রুটি কিংবা অন্য কোনো কারণে মূত্রনালি সরু হয়ে প্রস্রাবের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে। *বংশগত কিডনি রোগ থাকলে। প্রতিরোধ: ১. কায়িক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়াম করা। ২. উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা। ৩. সুপ্ত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা। ৪. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ। ৫. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা। ৬. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ সেবন না করা। কিডনি বিকল হলে নিয়মিত হমোডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজন করতে হয়।
হেল্থ টিপস্-২২৭ ▌ কিডনিতে পাথর, কি করবেন?
কিডনিতে পাথর হয় যে কারণে- ▪ লো-প্রেসার হওয়া। ▪ অতিরিক্ত পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা। ▪ কম পানি খাওয়া। ▪ অধিক পরিমাণ আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ। ▪ অতিরিক্ত লবণ খাওয়া। ▪ অতিরিক্ত লবণ শরীর হতে বেরিয়ে যাওয়া। ▪ অন্যান্য কিছু অসুখে। উপসগর্-কখনো কখনো কয়েক বছর কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে। পাথর যখন মূত্রনালিতে আটকে যায় তখন ব্যথা শুরু হয়। ব্যথা পিঠের দিক হতে সামনের তলপেটে এবং তার চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যথা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। ▪ রোগীকে ফ্যাকাসে দেখায় ▪ ঘাম হতে থাকে ▪ কখনো কখনো বমি হয় ▪ প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয় ▪ প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। করণীয়- ▪ অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। ▪ যন্ত্রের মাধ্যমে পাথর ভেঙে পাথর বের করা যায় এতে পেট কাটার প্রয়োজন পড়ে না। ▪ পাথর না ভেঙে পেট কেটে পাথর বের করে আনা যায়।
হেল্থ টিপস্-২২৮ ▌ কিডনির অসুখে ডায়ালিসিস না কিডনি প্রতিস্থাপন?
যখন দুটি কিডনিই আস্তে আস্তে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, অর্থাৎ কিডনির স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ১৫ শতাংশ নেমে গিয়ে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়, তখন রেনাল রিপ্লেসমেন্টের দিকে যেতে হয়। রেনাল রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দু’ ধরনের ১) ডায়ালিসিস এবং ২) কিডনি প্রতিস্থাপন। এই দুটির মধ্যে কোনটা ভালো? নিশ্চিতভাবেই কিডনি প্রতিস্থাপনই ভালো। কারণ, ডায়ালিসিস সপ্তাহে এক থেকে তিন দিন করতে হতে পারে। ফলে একজন রোগীকে তার স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে বেরিয়ে এসে ডায়ালিসিসে অনেকটা সময় দিতে হয়। হাতে সুচ ফুটিয়ে যন্ত্রের সামনে শুয়ে। অন্যদিকে, একবার কিডনি প্রতিস্থাপন হয়ে গেলে রোগীর জীবনযাত্রার মান একেবারেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। ডায়ালিসিসে খাবার-দাবারে কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকে, কিন্তু প্রতিস্থাপনের পর সেরকম কোনো বিধিনিষেধ নেই।
হেল্থ টিপস্-২২৯ ▌ কিডনি সুস্থতার ৬ নিয়ম:
পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করুন: পানি কিডনিকে সচল ও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দৈনিক ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে কিডনি ভালো থাকবে। কোমল পানীয়, কফি, চা : কোমল পানীয়, কফি, চাসহ বিভিন্ন ক্যাফেইন তাৎক্ষণিকভাবে শারীরে ক্লান্তিভাব দূর করে। তবে পানিস্বল্পতা তৈরি করে। শরীরে পানিস্বল্পতা হলে কিডনি স্টোনের সমস্যা হতে পারেন। ধূমপান: ধূমপান শুধু নিজের জন্য না অন্যের জন্য ক্ষতিকর। পেইন কিলার: কিডনির কোষের অতিরিক্ত ক্ষতি করে পেইন কিলার। ব্যথা একান্ত অসহ্য হলে তবেই তা খান। লবণ: কিডনি অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীর থেকে বের করতে পারে না। ফলে বাড়তি লবণের সোডিয়ামটুকু রয়ে যায় কিডনিতেই। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি। প্রস্রাব আটকে রাখা: বাইরে বেরোলে আটকে রাখেন প্রস্রাব? এমন অভ্যাস কিডনির জন্য খুব ক্ষতিকর।
.--:: ক্যানসার সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২৩০ ▌ ক্যান্সার বা কর্কটরোগ:
আমাদের শরীরের কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। এই পুরনো কোষগুলোর জায়গায় নতুন কোষ এসে জায়গা করে নেয়। যখন এই কোষগুলো কোনো কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। একেই টিউমার বলে। অনেক ক্যান্সার প্রথমে টিউমার হিসাবে শুরু হয়। পরিহার করুন ৫টি বিষয়-১. চর্বিযুক্ত খাবারে স্তন, অন্ত্র ও প্রোস্টেট ক্যান্সার হতে পারে। ২. ফুসফুস ও মূত্রথলির ক্যান্সারের প্রধান কারণ ধূমপান। ৩. তামাক, জর্দা, সাদাপাতা, গুটকা, গুল সেবন বন্ধ করুন। মুখ, মাড়ি ও গলনালির ক্যান্সার হয়ে থাকে তামাকজাতীয় দ্রব্য থেকে। ৪. লিভার ও পাকস্থলীর ক্যান্সার হয়ে থাকে মদপানে। ৫. আচার, কাসুন্দি, শুঁটকি ও লবণ দেয়া মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ এর দ্বারা অন্ননালি ও পাকস্থলীর ক্যান্সার হয়।
হেল্থ টিপস্-২৩১ ▌ ক্যানসারের প্রতিরোধের উপায়:
ক্যানসার রোগীর প্রতি পাঁচজনের একজনই হচ্ছে ধূমপায়ী। বিষাক্ত তামাকের ধোঁয়া যে শুধু ফুসফুসের ক্যানসারের জন্যই দায়ী তা নয়। ◊ অতিরিক্ত ওজন মৃত্যুর কারণও হতে পারে:ক্যানসার হওয়ার নানা কারণের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অতিরিক্ত ওজন এবং ইনসুলিনের মাত্রা বেশি থাকা। ইনসুলিনের মাত্রা বেশি হলে তা কিডনি, গলব্লাডার, খাদ্যনালীর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত মোটা মহিলা দের শরীরের মেদের কারণে খুব সহজে জরায়ু এবং স্তন ক্যানসার হতে পারে। ◊ আলসেমি নয়, সোফা থেকে উঠে পড়–ন-যারা সারাক্ষণ শুয়ে বসে থাকেন অর্থাৎ হাঁটা-চলা কম করেন, তাদের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ব্যায়াম বা খেলাধুলা টিউমার হওয়ার পথে বাধার সৃষ্টি করে। ◊ রেড-মিট বা গরু বা ভেড়ার মতো প্রাণীর মাংস ক্যানসার হতে সহায়তা করে; অন্যদিকে মাছ খেলে হয় ঠিক তার উল্টোটা।
হেল্থ টিপস্-২৩২ ▌ যেসব লক্ষণে বুঝবেন মুখের ক্যান্সার:
মুখের মধ্যে কোনো ঘা বা ক্ষত যে কোনো বর্ণের হোক, ব্যথা হোক বা না হোক যদি দীর্ঘ সময় রয়ে যায় তাহলে সেটিকে অবহেলা করা যাবে না। সাধারণত মুখের ক্যান্সার মুখের ভিতর সাদা বা লাল বর্ণের ক্ষত হয়ে শুরু হতে পারে বা কোথাও ফুলে যেতে পারে, কোথাও ব্যথা হতে পারে। মুখের ক্যান্সারের তিন প্রকার চিকিৎসা রয়েছে- প্রথমত সার্জারি, দ্বিতীয়ত কেমোথেরাপি, তৃতীয়ত রেডিওথেরাপি। যখন ক্যান্সারের আকার অনেক ছোট থাকে তখন সার্জারি বেশি ফলপ্রসূ। এজন্য উচিত প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সারের চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা। কিন্তু ক্যান্সারটি অনেক বড় হয়ে যায় এবং সার্জারির পর্যায়ে না থাকে তখন কেমোথেরাপি দিয়ে বা রেডিওথেরাপি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু সারিয়ে তোলা সম্ভব নয়।ওরাল ক্যান্সার কেন হয় * পান, সুপারি, গুল, জর্দা, সিগারেটসহ অন্যান্য তামাক বা তামাকজাত পণ্য গ্রহণ। * বেশিমাত্রায় অ্যালকোহল পান।* বংশগত কারণ।* সূর্যের আলোতে অতিরিক্ত অবস্থান, বিশেষত অল্প বয়সে। * ঠোঁট বা মুখে দীর্ঘদিনের ঘা।
হেল্থ টিপস্-২৩৩ ▌ ব্লাড ক্যান্সার মানেই মরণব্যাধি নয়:
ব্লাড ক্যান্সার হলো রক্ত বা অস্থিমজ্জার ভেতর শ্বেত রক্ত কণিকার (হোয়াইট ব্লাড সেল/ডব্লিউবিসি) অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। ব্লাড ক্যান্সারের কারণ কী-এর প্রকৃত কারণ জানা নেই। তবে রেডিয়েশন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল, কীটনাশক বা পেস্টিসাইড, ভেজাল খাবার, হেয়ার ডাই, লুব্রিকেন্টস, বার্নিশ, কেমোথেরাপি ড্রাগস ও কিছু জেনেটিক অসুখ দায়ী থাকতে পারে। লক্ষণ কী- * রক্তস্বল্পতার জন্য দুর্বলতা, খাবারের অরুচি, বুক ধড়ফড়, পায়ে পানি জমে যাওয়া, ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। * দীর্ঘদিনের জ্বর বা ঘনঘন জ্বর। * অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ (শরীরে র্যাশ, দাঁতের গোড়া প্রস্রাব-পায়খানা কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া, মাসিক বেশি হওয়া ইত্যাদি)। * গ্লান্ড ফুলে যাওয়া, লিভার-প্লীহা বড় হওয়া। * হাড়ে ব্যথা। সাধারণত কেমোথেরাপি দিয়ে ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়। ব্লাড ক্যান্সার সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা নিলে অনেক ব্লাড ক্যান্সার ভালো হয় ও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
--:: ডায়াবেটিস সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২৩৪ ▌ ডায়াবেটিস কী, কত প্রকার?:
ডায়াবেটিস অসুখে রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি হয়ে যায়। ডায়াবেটিস প্রধানত দু’প্রকার। টাইপ ১ ডায়াবেটিস এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস। টাইপ ১ ডায়াবেটিস: সাধারণভাবে ৩০ বছরের নিচে হয়। অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডির কাজের ফলে কোনো কারণে বিটা সেলগুলো স¤পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। তার ফলে ইনসুলিনের ঘাটতি হয়ে গেলে কোষের মধ্যে গ্লুকোজ প্রবেশ করতে পারে না এবং এনার্জি তৈরি হয় না। টাইপ ২ ডায়াবেটিস: এ ক্ষেত্রে ইনসুলিন কমে যায় এবং বিটা সেল নষ্ট হয়ে যায়। তবে টাইপ ১ এর মতো পরিমাণে নয়। এ ক্ষেত্রে যেটা হয়, ইনসুলিন কোষের মধ্যে প্রবেশের জন্য যে রিসেপ্টরটি লাগে, সেটি নষ্ট হয়ে যায়। তার ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ইনসুলিনের মাত্রা কমে না ঠিকই কিন্তু কোষের রিসেপ্টর নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ইনসুলিন কাজ করতে পারে না। যার ফলে ইনসুলিন কোষের মধ্যে গ্লুকোজকে প্রবেশ করাতে পারে না।
হেল্থ টিপস্-২৩৫ ▌ ডায়াবেটিসের পাঁচটি ক্লাস্টার :
ডায়াবেটিস রোগীদের পাঁচটি সুনির্দিষ্ট ক্লাস্টারে ভাগ করা যায়। ▪ ক্লাস্টার ১ - টাইপ ১ ধরনের ডায়াবেটিস,এই ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ইনসুলিন তৈরি হয় না। ▪ ক্লাস্টার ২ - এদেরকে শুরুতে ক্লাস্টার ১ এর রোগীদের মতোই মনে হয়। এরা তরুণ কিন্তু ইনসুলিন উৎপাদনে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ▪ ক্লাস্টার ৩ -এরা সাধারণত অতিরিক্ত মোটা। এরা শরীরে ইনসুলিন তৈরি করছে, কিন্তু এদের শরীর সেই ইনসুলিনে সাড়া দেয় না। ▪ ক্লাস্টার ৪ - এটি হালকা-ধরনের ডায়াবেটিস, যা স্থূলকায় মানুষের মধ্যে দেখা যায়। এ ধরনের মানুষ স্বাভাবিক মানুষদের কাছাকাছি। ▪ ক্লাস্টার ৫ - হালকা ধরনের ডায়াবেটিস, যা ওই ধরনের মানুষদের হয়, যখন তাদের বয়স বেড়ে যায়। এদের ডায়াবেটিসের মাত্রা কম। ক্লাস্টার ২ রোগীদের অন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, আর ক্লাস্টার ৩ রোগীদের বেশি ঝুঁকি কিডনি স¤পর্কিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ।
হেল্থ টিপস্-২৩৬ ▌ডায়াবেটিস হলে করণীয়:
ডায়াবেটিস হলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে, দেহের ওজন কমে যেতে পারে, বারবার তেষ্টা পেতে পারে, ঘনঘন বাথরুম যেতে হতে পারে, খিদে বেড়ে যেতে পারে এবং তার সঙ্গে হাত-পা ঝিনঝিনও করতে পারে। বিশেষ করে পায়ে পিন ফোটানোর মতো ঝিনঝিন করে। এ ছাড়াও ফোঁড়া, ফুসকুড়ি হওয়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিস সারাতে চিকিৎসা পদ্ধতি কী? টাইপ ১ ডায়াবেটিসের একমাত্র চিকিৎসা হচ্ছে ইনসুলিন। কারণ সেখানে ইনসুলিনের অভাব থাকে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ইনসুলিন আছে কিন্তু কাজ করতে পারছে না সেক্ষেত্রে প্রথমে ওষুধ দেওয়া হয়। সেগুলো যদি কাজ না করে তখন ইনসুলিন নিতে হয় রোগীকে। যাঁদের সুগার ২০০-২৫০ এর মধ্যে তাঁদের ওষুধ, ডায়েট, শারীরিক পরিশ্রম করার উপদেশ দেন চিকিৎসকেরা। তারপরও ব্লাড সুগার বাড়লে সেক্ষেত্রে ইনসুলিন দেওয়া হয়।
হেল্থ টিপস্-২৩৭ ▌ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে কী কী সমস্যা হতে পারে?:
শরীরের মধ্যে ব্লাড সুগার বেড়ে গেলে তখন পেটের মধ্যে থাকা ফ্যাট ভাঙতে থাকে। সেই জন্য মানুষ রোগা হয়ে যায়। রক্তনালি সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ার ফলে যে হারে রক্ত সঞ্চালন হতো, সেই হারে হয় না। এতে শরীরের প্রধান চারটি অঙ্গ- ব্রেন, হার্ট, কিডনি, লিভারে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে শরীরে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগলে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যেতে পারে। কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চোখের ক্ষেত্রে রেটিনোপ্যাথি কিংবা অন্ধত্বও আসতে পারে। পায়ের মধ্যে যদি রক্ত সঞ্চালন কমে যায় সে ক্ষেত্রে পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ হতে পারে। পা অবশ হয়ে গেলে কোথাও ধাক্কা লাগলে তা অনুভূত হয় না। ডায়াবেটিস রোগীদের পা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একে ডায়াবেটিক গ্যাংগ্রিন বলা হয়। ডায়াবেটিস হওয়ার সময়কাল যত বাড়বে জটিলতা বাড়তে থাকে। তাই নিয়মিত ইনসুলিন গ্রহণ করতে হয়।
হেল্থ টিপস্-২৩৮ ▌ ওজন কমিয়ে ডায়াবেটিস সারানো সম্ভব:
টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। ফলে শরীরে দিন দিন বাড়ে গ্লুকোজের পরিমাণ। ফলে এদের দৃষ্টিশক্তি সমস্যা, হৃদরোগ এবং অঙ্গহানির মতো শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয়। স্কটল্যান্ডের প্লাসগো শহরের গবেষণা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে দুই বছর ধরে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খেয়ে ওজন কমিয়ে নিয়মিত ব্যায়াম করে তার টাইপ-টু ডায়াবেটিস নিরাময় হয়ে গেছে ১৫০ জনের, তাও কোনো ওষুধ ছাড়াই। ১৫০ জন মানুষ ১২ থেকে ৩০ সপ্তাহ কম ক্যালরির খাবার খাওয়ার কর্মসূচিতে অংশ নেন। ওজন কমার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের ধীরে ধীরে আবার সাধারণ খাবার খেতে দেয়া হয়। এক বছর পর দেখা গেল এদের মধ্যে ৬৯ জন রোগমুক্ত হন। মাত্র ৪ শতাংশ রোগীকে শর্করা কমাতে ওষুধের সাহায্য নিতে হয়। আর দুবছর পর এদের মধ্যে ৫৩ জন রোগমুক্ত থেকে যান এবং তাদের কোনো রকম ওষুধ খেতে হয় না।
হেল্থ টিপস্-২৩৯ ▌ডায়াবেটিস রোগীর চোখে সমস্যা:
ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে যেমন, চোখের পাতা নিচে নেমে যেতে পারে। চোখে ছানি হয়ে যেতে পারে। কতদিন ধরে রোগী ভুগছেন, এটি প্রধান একটি বিষয়। একজন ডায়াবেটিস রোগীর দু-তিন মাস, ছয় মাস ধরে যদি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকে, এটা যত না বেশি ক্ষতিকর, সুনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ১০ বছর থাকা আরো বেশি ক্ষতিকর। যে লোকটি দেখা গেল চশমা পরে আছে, তার যদি ঘনঘন পাওয়ার পরিবর্তন হয়, বুঝতে হবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত নেই। আরো খারাপ হলে আস্তে আস্তে চোখটা বেঁকে যায়। যেটাকে আমরা ট্যারা বলি। যে ¯œায়ুটি চোখকে সোজা রাখার জন্য দায়িত্ব পালন করে, সে দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে এটি নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায় ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে। আবার পাতাটা নিচে নেমে চলে আসে। অর্থাৎ চোখটা ঢেকে যায়। ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রিত থাকলে ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে এটি ঠিক হয়ে যায়।
হেল্থ টিপস্-২৪০ ▌ডায়াবেটিস ও দাঁতের সমস্যা:
ডায়াবেটিস রোগীদের দন্ত রোগ বেশি হয় এর কারণ হচ্ছে মুখের ভেতর শুকনা থাকা। এই ড্রাই কন্ডিশনের জন্য মুখের ভেতর এসিড ফরমিং ব্যাকটেরিয়াগুলো কার্যকর হয়। যারা পান খান এবং খুব জোরে অনেক সময় নিয়ে ব্রাশ করেন এবং তাদের যদি ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে তাদের দাঁতের আবরণ(এনামেল) দ্রুত ক্ষয় হতে থাকে। এ রকম অবস্থায় প্রথমে শির শির করে তারপর দাঁত ব্যথা শুরু হয়। আবার মুখের ভেতর শুকনো থাকার কারণে দুই দাঁতের মাঝখানে এবং মাড়িতে খাদ্যকণা জমাট বেঁধে তৈরি করে হলুদ-সাদা শক্ত আবরণ, যা শুধু ব্রাশের মাধ্যমে পরিষ্কার হয় না। এর ফলে মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, মুখে দুর্গন্ধ হওয়া প্রভৃতি হয়। এতে দাঁতের মাড়ি দুর্বল হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে দাঁত নড়া শুরু হয়। প্রতিবার খাদ্য গ্রহণের পর কুলকুচি করে মুখ সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হবে। দাঁত ব্রাশ করার পর অন্তত এক মিনিট আঙ্গুলের সাহায্যে মাড়ি মালিশ করা প্রয়োজন।
হেল্থ টিপস্-২৪১ ▌ডায়াবেটিসে কিডনি রোগ:
প্রথম কারণ, ডায়াবেটিস। দ্বিতীয়, উচ্চ রক্তচাপ। তৃতীয়, গ্লুমারো নেফরাইটিস। এই তিনটি কারণে আমাদের দেশে ৮০ ভাগের বেশি ক্ষেত্রে কিডনি বিকল হয়ে থাকে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের শতকরা ৪০ ভাগ লোকের আশঙ্কা আছে কিডনি আক্রান্ত হয়ে বিকল হওয়ার। যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাহলে কিডনির সমস্যা একেবারেই হবে না, এটা বলা যাবে না। তবে নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে কিডনির ৭ে০ থেকে ৮০ ভাগ সমস্যা কমিয়ে আনা যায়। কিডনি যখন ৭০ থেকে ৮০ ভাগ নষ্ট হয়ে যায়, প্রথমেই দেখা যায়, চোখ-মুখ ফুলে যায়। আস্তে আস্তে তার খাওয়ার রুচি কমে যায়। তারপর একসময় বমি বমি ভাব দেখা যায়, বমি শুরু হয়। এরপর শরীরে পানি জমে জমে একসময় বুকে পানি জমে, সে জন্য শ্বাসকষ্ট হয়। তার ¯œায়ুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেখা যায়, তার পায়ে-হাড়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা শুরু হয়। এগুলো প্রাথমিকভাবে দেখলে মনে করতে পারি কিডনি আক্রান্ত হয়েছে।
হেল্থ টিপস্-২৪২ ▌ ডায়াবেটিসের রোগীর পায়ে সমস্যা :
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রধান সমস্যা হলো পায়ের ¯œায়ুবৈকল্য, রক্ত সঞ্চালন কমে যাওয়া ও সংক্রমণজনিত সমস্যা। পৃথিবীতে যত রোগীর পা কাটা লাগে তার মধ্যে ৮৪ শতাংশ হলো ডায়াবেটিসজনিত। যা করা উচিত-পা কখনো শুকনো খসখসে রাখা যাবে না, প্রয়োজনে লোশন বা ভ্যাসলিন ব্যবহার করতে হবে। # পায়ের আঙুলের মাঝে যাতে ভেজা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। # বেশি গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখা বা পরিষ্কার করা উচিত নয়। # জুতা অবশ্যই নরম, পায়ের মাপমতো হওয়া জরুরি। # মোজা অবশ্যই সুতা বা উলের হওয়া উচিত এবং মোজার ওপরের দিকের রাবার খুব বেশি আঁটসাঁট হওয়া উচিত নয়। # কখনোই খালি পায়ে হাঁটা উচিত নয় # সরু প্রান্তবিশিষ্ট জুতা ব্যবহার করা যাবে না # পায়ের নখগুলো খুব বেশি ছোটো করা ঠিক নয়। বিশেষ করে নখের কোণা গভীর করে কাটা উচিত নয়।
হেল্থ টিপস্-২৪৩ ▌ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ:
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের হৃদরোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। যে বিষয়গুলো ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত, যেমন: অতি ওজন, ধূমপান, মন্দ খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা বা বংশগতি। এগুলো হৃদরোগেরও ঝুঁকি। তাই এ দুটো সমস্যা পর¯পরের হাত ধরেই চলে। একটির ঝুঁকি কমালে অপরটির ঝুঁকিও কমে আসে। কারণ, মাইক্রোভাসকুলার পরিবর্তন হতে হতে রক্তের নালিগুলো সংকুচিত হতে থাকে। হার্ট তো মূলত একটি পা¤প। এই যে রক্তের পা¤প, তা সারা শরীরে রক্ত সরবরাহ করছে, পা¤প যে করনারি আর্টারি দিয়ে প্রবাহ পাচ্ছে, সেই করনারি আর্টারিগুলো যদি সংকুচিত হয়ে যায়, তাহলে অক্সিজেন ও রক্ত সরবরাহ কম হবে, একটি পর্যায়ে হার্ট অ্যাটাকের মতো অবস্থা তৈরি হবে। প্রতি ৩ জন ডায়াবেটিস রোগীর ২ জন হৃদরোগে মারা যায়। ডায়াবেটিস আমাদের স্লায়বিক অনুভূতিকে ভোঁতা করে দেয়, যার ফলে হৃৎপিণ্ডে সমস্যা হলে উপসর্গগুলো ছাড়াই তাঁদের হার্ট অ্যাটাক হওয়া বিচিত্র নয়। একে নীরব হার্ট অ্যাটাক।
হেল্থ টিপস্-২৪৪ ▌ডায়াবেটিসে উচ্চ রক্তচাপ:
ডায়াবেটিস হলে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। রক্তচাপ কমানোর জন্য ৩০ থেকে ১২০ মিনিট জগিং, দৌড়ানো, সাঁতার কিংবা সাইকেল চালানো উপকারী। এর ফলে দেখা গেছে, উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের রক্তচাপ ওষুধ ছাড়াই গড়পড়তা ১১/৬ মি: মি: পারদচাপ কমে গেছে। কিন্তু ব্যায়াম বন্ধ করে দিলে ২ সপ্তাহের মধ্যে রক্তচাপ আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। তবে হঠাৎ অনভ্যস্ত কেউ খুব ভারী ব্যায়াম করলে তার রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে সহসা মৃত্যু হওয়া অস্বাভাবিক না। এজন্য উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ব্যায়াম শুরু করার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। যে কোনো ধরণের ব্যায়াম একটানা ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট ধরে সপ্তাহে কম পক্ষে তিনবার করতে পারলে সেটাই একজনের জন্য শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম। তবে ব্যায়ামটা হতে হবে অ্যারোবিক; যেমন: হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা অথবা জগিং।এটাকে জীবনযাত্রার অংশ করে নিতে হবে।
হেল্থ টিপস্-২৪৫ ▌ ইনসুলিন ব্যবহারে যা জানা প্রয়োজন:
যারা ইনসুলিন নেন তাদের ৫টি বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকতে হয়। যেমন- প্রথমত, ইনসুলিন সংরক্ষণ সঠিকভাবে করতে হবে। তা না হলে এর কর্মক্ষমতা কমে যাবে। সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ উত্তম। তবে ডিপ ফ্রিজে নয়। দ্বিতীয়ত, ইনসুলিন বোতল বা পেন ব্যবহারের সময় জোরে ঝাঁকুনি দেয়া যাবে না। বরং দুই হাতের তালুতে নিয়ে কয়েকবার ঘুরিয়ে নিতে হবে, বিশেষ করে প্রিমিক্সড ইনসুলিন কিংবা প্রিমিক্সড এনালগের ক্ষেত্রে। তৃতীয়ত, ইনসুলিন সিরিঞ্জ ব্যবহারের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে, এটা ৪০ আইইউ না ১০০ আইইউ পরিমাপের। কারণ ইনসুলিন বোতল ও সিরিঞ্জ অবশ্যই একই পরিমাপের হতে হবে। চতুর্থত, হাইপোগ্লাইসেমিয়ার উপসর্গ ও করণীয় স¤পর্কে সু¯পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার হাতের কাছে রাখতে হবে। পঞ্চমত, ডায়রিয়া, জ্বর হলে ওই দিনও ইনসুলিন নিতে হবে। গরম আবহাওয়া, চুলার কাছে ইনসুলিন রাখা যাবে না।
হেল্থ টিপস্-২৪৬ ▌ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য-পথ্য:
ভাত ও রুটির মধ্যে গুণগত তেমন কোনো পার্থক্য নেই। দুটিই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য। আর দুটোর ক্যালোরি মূল্যও মোটামুটি সমান। রুটির সুবিধা হলো এতে ডায়েটারি ফাইবার ভাতের তুলনায় বেশি থাকে। রুটি দুবেলা হলে ভালো। রুটি খেতে কষ্ট হলে দুবেলা ভাত কিংবা একবেলা ভাত, একবেলা রুটি খাওয়া যাবে। মনে রাখা উচিত, ভাত বেশি খেলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া রান্নার সময় ভাতের মাড় ফেলে দিলে ভাতের পুষ্টিমাণ অনেক কমে যায়। ডায়াবেটিসে ি কুসুম বাদ দিয়ে ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন। রক্তে কোলেস্টেরল স্বাভাবিক মাত্রায় থাকলে সপ্তাহে ২-১ দিন কুসুমসহ ডিম খাওয়া যায়। ডিম খেলে সেদ্ধ করে খাওয়া উচিত, ভেজে বা ওমলেট বানিয়ে নয়। যারা নিরামিষ খান, তাদের ডিমের বিকল্প হলো দুধ, দই এবং ডাল। চা-কফিতে বাধা নেই। তবে দিনে দু-তিন কাপের অধিক নয়। দুধও মেশানো যেতে পারে।
হেল্থ টিপস্-২৪৭ ▌যে ৪টি খাবার ডায়বেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর:
১) সাদা চাল-সাদা চালের ভাত যতো খাবেন, ততো বেশি টাইপ-২ ডায়বেটিসের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। প্রায় ৩,৫০,০০০ মানুষের উপর গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিন সাদা চালের ভাত নিয়মিত খাওয়ার ফলে প্রায় ১১% টাইপ-২ ডায়বেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। ২) চাইনিজ খাবার-চাইনিজ খাবারে রয়েছে অনেক বেশি ফ্যাট, ক্যালরি, সোডিয়াম, কার্বোহাইড্রেট যা হুট করেই দেহের সুগারের মাত্রা অনেক বেশি বাড়িয়ে তোলে। ৩) বোতলজাত ফলের জুস-বোতলজাত ফলের জুস পান করা এবং সোডা পান করার মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। কারণ ফলের জুসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চিনি ও ক্যালরি, যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ৪) কলা ও তরমুজ- কলা এবং তরমুজের মতো ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি যা রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়ায়। তাই এইগুলো থেকে দূরে থাকাই ভালো।
হেল্থ টিপস্-২৪৮ ▌ডায়াবেটিস রোগীদের কোন্্ ফল খেতে বাধা নেই?:
আপেল- আপেল-এর ফাইবার ডায়াবেটিস-এ আক্রান্তদের জন্য দারুণভাবে উপকারী। পেয়ারা-এই ফলটি ডায়াবেটিস এর ক্ষেত্রেও ভীষণভাবে উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। পাকা পেঁপে-এর খাদ্য উপাদান অসাধারণভাবে কাজ করে ডায়াবেটিস-এর বিরুদ্ধে। কমলালেবু-কমলালেবুর ভিটামিন সি ও ম্যাগনেসিয়াম থাকার জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আমলকি- ইনসুলিন এবং শর্করার মাত্রাও ঠিক রাখে। কালো জাম-কালোজামে থাকা বিভিন্ন উপাদান রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। আনারস-আনারসের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটরিয়াল উপাদান ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও বেশ কার্যকরী। ডালিম-ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে সুগারের নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে ডালিম। জামরুল- জামরুল রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। আমড়া- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলটি খুবই উপকারী।
হেল্থ টিপস্-২৪৯ ▌ডায়াবেটিস-এ যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত:
▪ হোয়াইট ব্রেড, পাস্তা, সাদা ভাত এড়িয়ে চলুন। এগুলো রক্তে শর্করা বাড়ায়। ▪ যে কোনো প্যাকেটবন্দি পানীয় যেমন ফ্রুট জুস বা সফট ড্রিঙ্কস এড়িয়ে চলুন। ▪ বেকড ফুড এবং পেস্ট্রি, আইসক্রিম, কাপকেক, পেস্ট্রি, কুকিজ আপনার রসনাকে তৃপ্ত করবে ঠিকই, কিন্তু রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিবে বহুগুণ? ▪ দই খেতে হলে ঘরে পাতা দই খান। বাজার থেকে ক্রয় করা নানা রকম ফ্লেভার দেওয়া দই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। ▪ জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত তেল মশলাদার খাবার, চাউমিন, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ইতিমধ্যেই 'হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্স-এর তকমা পেয়েছে। রক্তে শর্করা বাড়বে হু হু করে। ▪ মধু, জ্যাম, জেলি, বাজারচলতি আচার, চাটনিতে থাকে 'আর্টিফিশিয়াল সুগার', যা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভাল নয়। ▪ তেলে ভাজা চিপস বা ¯œ্যাকস আপনার শরীরের বারোটা বাজাচ্ছে? ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
হেল্থ টিপস্-২৫০ ▌ ডায়াবেটিস কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন:
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমাদের মূল কিছু জিনিস রয়েছে। যেমন- ডায়েট (খাদ্যাভ্যাস), ড্রাগ (ওষুধ) এবং ডিসিপ্লিন (নিয়মানুবর্তিতা), একসাথে এই তিনটিকে বলা হয় ডিডিডি। ডায়েট মানে হলো খাবার, আপনি কোন জিনিসগুলো খাবেন, আর কোন জিনিসগুলো খাবেন না- এটি। এক নম্বর হলো, আপনি কখনো চিনি জাতীয় জিনিস খাবেন না। আর কিছু খাবার আমরা কম খেতে বলি। এর মধ্যে একটি হলো শর্করা। শর্করা মানে ভাত, রুটি। শর্করাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রেখে সবজি বাড়িয়ে খাবেন। আর ডিসিপ্লিন হচ্ছে নিয়মিত হাঁটা। যেই গ্লুকোজগুলো আপনার শরীরে সংরক্ষিত অবস্থায় আছে সেগুলোকে পোড়ানোর জন্য হাঁটতে হবে অন্তত ৪৫ মিনিটের কিছু বেশি। একটু গতি বেশি রাখতে হবে। তবে নির্দিষ্ট একটি সময়ে।
হেল্থ টিপস্-২৫১ ▌ গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কাদের বেশি?:
১. পারিবারে কারো ডায়াবেটিস থাকলে। ২. আগে অধিক ওজনের (চার কেজি বা বেশি) সন্তান অথবা ক্রুটিযুক্ত সন্তান জন্মদানের ইতিহাস থাকলে। ৩. পেটে অথবা জন্মের পরপরই সন্তান মারা যাওয়ার ইতিহাস থাকলে। ৪. বারবার সন্তান নষ্ট হওয়ার (অ্যাবরশন) ইতিহাস থাকলে। ৫. গর্ভাবস্থায় সন্তানের পানির পরিমাণ (অ্যামনিয়াটিক ফ্লুইড) অতিরিক্ত হলে। ৬. গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন ইনফেকশনের লক্ষণ, যেমন- তলপেটে ব্যথা, চুলকানি, চর্মরোগ ইত্যাদি দেখা দিলে। ৭. বয়স ৩০ বছরের অধিক বা শরীরের ওজন অতিরিক্ত হলে। ৮. পূর্ববর্তী গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে। ডায়াবেটিসে মা ও গর্ভস্থ শিশুর সম্ভাব্য জটিলতা-১. অ্যাবরশন বা প্রথম তিন-চার মাসের মধ্যে সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়া, গর্ভাবস্থায় সন্তান মারা যাওয়া। ২. রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে প্রি-একলা¤পসিয়া নামক জটিলতা। ৩. ঘন ঘন ইনফেকশন হওয়া ও সময়ের আগেই পানি ভাঙ্গা ইত্যাদি
--:: দাঁত ও মুখ সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২৫২ ▌ দন্ত বিষয়ে সবার জন্য সাধারণ কিছু তথ্য:
* ফ্লুরাইড দেয়া যে কোনো টুথপেস্ট দাঁতের জন্য উপকারী। দু-তিন মাস পর টুথপেস্ট ও ব্রান্ড বদলাবেন, কারণ বিভিন্ন পেস্টে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে। * যেসব জায়গা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করা সম্ভব নয় সেসব জায়গায় ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করবেন। * কয়লা, গুল, টুথ পাউডার, ছাই, মাটি, গাছের ডাল ইত্যাদি ব্যবহার নিষেধ। * অত্যধিক পান-সুপারি খাবেন না-এতে দাঁত ক্ষয় হয়ে যায় এবং ক্যান্সার হয়। * বিড়ি-সিগারেট খাবেন না- এতে মুখ ও দাঁতের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। * বিশেষ বিশেষ খাদ্য যেমন- পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, টফি লজেন্স, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়ার পর উত্তমরূপে দাঁত পরিষ্কার করবেন। * ঘুমানোর আগে ভালো করে দাঁত পরিষ্কার করে ফেলবেন। * আঁশালো ও শক্ত খাদ্য যেমন-গাজর, পেঁয়ারা, আমড়া, আখ, আনারস, নাশপাতি, আপেল, নারকেল ইত্যাদি দাঁত ও মাড়ি সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
হেল্থ টিপস্-২৫৩ ▌আপনার টুথব্রাশে কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া:
আপনি কি জানেন, আপনার পুরনো টুথব্রাশটিতে ১ কোটিরও বেশি ব্যাকটেরিয়া স্বাধীনভাবে ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে ! আপনার ব্যবহৃত ব্রাশটি ব্যাকটেরিয়া টানার জন্য চুম্বকক্ষেত্রের মতোই কাজ করে। আর তার মধ্যে রয়েছে ই. কোলি ও স্ট্যাফ জাতীয় ভয়াবহ ব্যাকটেরিয়া। আমরা যখন বেসিনে হাত-মুখ ধুই, তখন ছিটে যাওয়া পানি কিংবা ফ্লাশ করা টয়লেটের ঢাকনা খোলা থাকলে, সেখান থেকে ব্যাকটেরিয়া আপনার দাঁতের ব্রাশটিতে গিয়ে সেটিকে দূষিত করে তোলে। বাতাসে ও মেঝেতে থাকা সব ব্যাকটেরিয়াকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে আপনার প্রিয় ব্রাশটি। তাই ব্রাশটি যথাসম্ভব পরিষ্কার ও ক্যাপ পরিয়ে রাখুন এবং ৩ বা ৪ মাস পর ব্রাশ পরিবর্তন করুন। প্রয়োজনে টুথব্রাশটি নিরাপদ স্থানে রাখুন। মুখ ধুয়ার সময় ব্রাশ যেখানে-সেখানে রাখবেন না। প্রয়োজনে টিস্যু পেচিয়ে রাখুন।
হেল্থ টিপস্-২৫৪ ▌দাঁত ব্রাশের সঠিক নিয়ম জেনে নিন:
১: ভালো মানের টুথব্রাশ ব্যবহার করুন, যার শলাকাগুলো বেশি শক্ত বা বেশি নরম নয়। ছোটোদের জন্য ছোটো আকারের ব্রাশ দরকার, যা ওদের মুখে সহজে আঁটে। ২: পরিমিত মাত্রায় পেস্ট নিয়ে সকালে নাশতার পরে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করুন। সম্ভব হলে ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। শিশুদের জন্য কম ঝাঁঝাল টুথপেস্ট বেছে নিন। ৩: ব্রাশের শলাকাগুলো দাঁতের সঙ্গে ৪৫ ডিগ্রি কোণাকুণিভাবে ধরে ওপর পাটির দাঁত ওপর থেকে নিচে এবং নিচের পাটির দাঁত নিচ থেকে ওপরে ব্রাশ করুন। ৪: দাঁতের ভেতরে ও বাইরের অংশে সমান সময় নিয়ে ব্রাশ করুন। তাড়াহুড়া করবেন না। কমপক্ষে দুই মিনিট সময় নিয়ে ব্রাশ করুন। ৫: তিন মাস অন্তর টুথব্রাশ পরিবর্তন করা উচিত। ৬: দিনে কমপক্ষে একবার ব্রাশ করার পাশাপাশি অন্য সময় চকলেট কিংবা মিষ্টিজাতীয় আঠালো খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দাঁত ব্রাশ করুন।
হেল্থ টিপস্-২৫৫ ▌'মাড়ি থেকে রক্ত পড়লে যা করবেন:
১) যে সমস্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে, সেই সমস্ত খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। লেবু জাতীয় ফল যেমন, কমলালেবু কিংবা মুসুম্বি লেবুতে ভিটামিন সি থাকে। মাড়ির কোষকে সুস্থ রাখতে এগুলি খুবই উপকারী। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া প্রতিরোধ করে। ২) প্রচুর পরিমাণে বেটা ক্যারোটিন থাকে অ্যাপ্রিকটে। যা আমাদের শরীরে ভিটামিন এ জোগায়। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া প্রতিরোধ করে ভিটামিন এ। এর জন্য পালংশাক এবং গাজর একদম উপযুক্ত খাবার। ৩) প্রত্যেকদিন যদি অন্তত ২ গ্লাস করে দুধ খান, তাহলে মাড়ি থেকে রক্ত পড়া প্রতিরোধ সম্ভব। দুধ আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম জোগায় এবং মাড়িকে আরও শক্তিশালী করে। ৪) ডায়েটের তালিকায় কাঁচা সবজি অবশ্যই রাখুন। কাঁচা সবজি রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। একই সঙ্গে মাড়ির স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।
হেল্থ টিপস্-২৫৬ ▌ স্কেলিং কেন দরকার?:
দাঁত ও মাড়ি থেকে জীবাণুরাশি (জীবাণু-প্রলেপ) দূরীভূত রাখাই দাঁত ও মাড়ির সুস্থতার প্রধান চাবিকাঠি। সুষ্ঠু ও স¤পূর্ণভাবে দাঁত পরিষ্কারের জন্য ব্রাশ, খিলাল, ফোসিং, কুলি করা ও মাড়ি মর্দন করা প্রয়োজন। তাছাড়া প্রতি ছয় মাস অন্তর একবার এবং মুখে ব্যথা, ঘা, বা রক্তক্ষরণ হলেই দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজন হলে চিকিৎসক স্কেলিং করতে উপদেশ দেবেন। দাঁতে পাথর জমলে বা মাড়িতে পকেট হলে অবশ্যই স্কেলিং দরকার। স্কেলিং করলে দাঁত নড়ে যায় বা মাড়ি ফাঁকা হয়ে যায় বলে অনেকে অভিযোগ করেন। এটা স্কেলিংয়ের জন্য হয় না বরং দাঁতের গায়ে জমে থাকা পাথরই ইহার জন্য দায়ী। পাথর দাঁতের গায়ে জমে জমে মাড়িকে দাঁতের পাশ থেকে সরিয়ে দেয়। ইহার ফলে দাঁত ফাঁকা ফাঁকা হয়ে যায় এবং দাঁতের ভিত নষ্ট হয়। একই কারণে স্কেলিংয়ের পর দাঁত শির শির করতে পারে। তবে অচিরেই এসব অসুবিধা দূর হয়ে দাঁত মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
হেল্থ টিপস্-২৫৭ ▌কোন কোন ক্ষেত্রে দাঁত তুলে ফেলা জরুরি:
যদি সঠিক সময়ে অ¯হায়ী দাঁত অর্থাৎ দুধ দাঁত না পড়ে থেকে যায়, সেক্ষেত্রে ¯হায়ী দাঁত ঠিকমতো উঠতে পারে না অথবা উঠলেও বিশ্রী দেখায়। সেজন্য থেকে যাওয়া এই অতিরিক্ত অস্থায়ী দাঁতকে ফেলে দিতে হয়। আবার গাম ডিজিজ অর্থাৎ মাড়িতে কোনো ইনফেকশন হলেও দাঁত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দাঁতের টিস্যু ও অ¯িহকে এতটাই আক্রান্ত করে ফেলে যে দাঁত ফেলে দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায়ই থাকে না। এ ছাড়া দাঁতে কোনো ফাটল অর্থাৎ ফ্র্যাকচার দেখা দিলে দাঁত ফেলে দিতে হতে পারে। আবার কোনো কোনো সময় আক্কেল দাঁত বা উইজডোম টিথ এমনভাবে মাড়িতে থাকে যে দাঁত ফেলে দেয়া লাগে। দাঁত ফেলে দেয়াকে ডেন্টাল সার্জনরা দুভাগে ভাগ করে থাকেন। যেমন-সি¤পল ও সার্জিক্যাল এক্সট্রাকশন। সি¤পল এক্সট্রাকশনে সেই দাঁতটিকে ফেলে দেয়া সম্ভব হয়, যা মাড়ির ওপর থেকেই দেখা যায়।
হেল্থ টিপস্-২৫৮ ▌ দাঁত তুললে কি চোখের সমস্যা হয়?:
দাঁত তুললে কি চোখের কোনো সমস্যা হবে? আর সে দাঁত যদি হয় ওপরের মাড়ির, এ ধরনের প্রশ্ন হবেই। যেসব কারণে দাঁত ফেলে দিতে হয়, তার মধ্যে প্রদাহ রোগটি অন্যতম। ওপরের মাড়ির দাঁতে যদি এই প্রদাহ হয়, তাহলে ব্যথাটি অতিদ্রুত চোখের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এটিই মূলত ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য অনেকেই মনে করেন, দাঁতের সঙ্গে চোখের স¤পর্ক আছে। দাঁত ও চোখ দুটির আলাদা ¯œায়ুতন্ত্র বিদ্যমান। এদের ¯œায়ুপ্রবাহ ও রক্তপ্রবাহ দুটিই আলাদা। তাই চিকিৎসার প্রয়োজনে দাঁত তুললে চোখের সমস্যা হবে, এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। ▪ গর্ভাবস্থায় অন্তত দুবার মুখ ও দাঁত পরীক্ষা করানো উচিত। ▪ প্রধান খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। করলে সংগে সংগে কুলি ও ব্রাশ করতে হবে। ▪ ধূমপান, পান সুপারি জর্দা খাওয়া বন্ধ করা।
হেল্থ টিপস্-২৫৯ ▌ দাঁতের মাড়ি রোগ:
দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া, রক্তপড়া, মুখে দুর্গন্ধ হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ প্রমাণ করে দাঁতের মাড়ির অসুস্থতা। ধূমপান দাঁতের মাড়ির মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে থাকে। কারণ ধূমপানের ফলে নিকোটিন ডেন্টাল প্ল্যাক জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং মাড়ির রোগ সৃষ্টি করে। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মুখগহ্বরে ৪০০ জাতের ৬ বিলিয়নের বেশি ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে। এদের মধ্যে স্ট্রেপটোমিউটেনস, মিউটেনস ডেন্টাল ক্যারিজ এবং নানা রকম এনারোবিক ব্যাকটেরিয়া দাঁতের মাড়ির রোগ সৃষ্টি করে, যার প্রধানতম মাধ্যম হলো ডেন্টাল প্ল্যাক। মূলত ডেন্টাল প্ল্যাক হলো ব্যাকটেরিয়ার বাসা। যেখানে মিষ্টিযুক্ত খাদ্য কার্বোহাইড্রেট প্রবেশ করলেই দাঁত ও মাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়ে। লক্ষণগুলো হলো: ▪ মাড়ির রং বদলে গিয়ে লাল রং ধারণ করা। ▪ খাবার কিংবা ব্রাশ করার সময় মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া।▪ মাড়ি ফুলে যাওয়া ও ব্যথা অনুভব করা। ▪ মাড়ি দিয়ে পুঁজ পড়া। প্রতিরোধ: নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা।
হেল্থ টিপস্-২৬০ ▌দাঁতের ব্লিচ কাদের করতে হয়? :
১। বিবর্ণ দাঁত। ২। দাঁতে পানের দাগ থাকলে (দীর্ঘদিন যাবৎ পান খাবার ফলে সৃষ্ট বিবর্ণ দাঁত)। ৩। মৃত দাঁত। ৪। বিবর্ণ দাঁত যাতে রুট ক্যানেল করা হয়েছে। ৫। ফ্লুরেসিসের ফলে দাঁত হলদে হলে। ৬। বয়স বাড়ার সাথে সাথে দাঁতের রং ধীরে ধীরে গাঢ় হলুদ থেকে কিছুটা বাদামি রূপ নিতে থাকে। তখন সৌন্দর্য রক্ষায় দাঁতে ব্লিচ করা যায়। ৭। তরুণ-তরুণীরা হলদে দাঁতকে অধিক সাদা ও চকচকে করতে ব্লিচ করতে পারেন। ▪ ফিলিং- দাঁতে গর্ত হওয়া শুরু হলে ফিলিং করতে হয়। ▪ ক্রাউন- দাঁত ব্যাপক ক্ষয়ের ক্ষেত্রে এটা করা হয়। ডাক্তার প্রথমে ক্ষয়ে যাওয়া গর্তে ছিদ্র করেন। তারপরে উপাদান দিয়ে বানানো টুপি বা ক্রাউন ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতের ওপরে রাখেন। ▪ রুট ক্যানাল- দাঁতের স¤পূর্ণ ক্ষয় হলে এবং সংক্রমণ মাড়ি পর্যন্ত ছড়িয়ে গেলে রুট ক্যানাল করা হয়। মাড়ি থেকে সংক্রামিত ম-ু ও ক্ষতিগ্রস্ত ¯œায়ু তারপরে, ফিলিং করে এই ম-ু প্রতিস্থাপিত করে।
হেল্থ টিপস্-২৬১ ▌ পেরিকরোনাইটিস ( দাঁত ব্যথায় মুখ ফুলে যাওয়া):
দাঁত ব্যথা হচ্ছে এবং মুখ ফুলে গিয়ে খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। মুখ খুলতে পারছে না। আমাদের দেশে সাধারণত ১৮-২৫ বছরের যুবক-যুবতীরা এ জাতীয় সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। দাঁতের এই সমস্যাকে পেরিকরোনাইটিস বলা হয়। সাধারণত দাঁত গজানোর সময় বা আংশিক গজানো অবস্থায় দাঁতের উপরস্থ বা পার্শ্বস্থ টিস্যুর সংক্রমিত অংশ পেরিকরোনাইটস নামে পরিচিত।লক্ষণ: ১. আপনার বয়স যদি হয় ১৮-৩০ বছর। ২. কয়েকদিন যাবৎ নিচের চোয়ালের সর্বশেষ প্রান্তে চাপা চাপা ব্যথা অনুভব করছেন। ৩. খাবার সময় বা দাঁত ব্রাশ করার সময় ঐ স্থানে ব্যথা অনুভব হচ্ছে।৪. মুখে দুর্গন্ধ হচ্ছে। ৫. ধীরে ধীরে মুখ ফুলে যাচ্ছে। চিকিৎসা: এক্ষেত্রে ঐ দাঁতের এক্স-রে করতে হবে। এতে যদি দেখা যায় দাঁতের গতি ভাল তাহলে দাঁতের উপরস্থ অপারকুলাম টিস্যুগুলো ছোটো একটি অপসারণ করলে দাঁতটি স্বাভাবিক গতিতে গজাতে পারবে।
হেল্থ টিপস্-২৬২ ▌ সামনের ফাঁকা দাঁতের চিকিৎসা:
কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুদাঁতের মাঝে কিছুটা ফাঁকা থাকতে পারে। এই ফাঁকাটি যদি আমাদের সামনে দুটো দাঁতের মাঝখানে হয়, তবে তা সৌন্দর্য রক্ষায় বড়ো একটা খুঁত হিসেবে দেখা দেয়। দাঁতের এই বিশেষ ফাঁকার কারণে মেয়েদের কপালপোড়া, অভাগী ইত্যাদি নানান সব অসংলগ্ন ভূষণে আখ্যায়িত করা হতো। অনেক শাশুড়ি হবু বউ দেখতে গিয়ে আঁতকে বের হয়ে আসতেন। বলতেন এ মেয়ে ঘরে নিলে আমার ছেলের সর্বনাশ হবে। ডেন্টাল সার্জনরা ডায়াস্টিমা সমস্যা সমাধানে বেশকিছু চিকিৎসা পদ্ধতি দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে একটি হলো-অর্থোডোনটিক চিকিৎসা পদ্ধতি। যেখানে ব্রেসেস নামক বন্ধনীর সাহায্যে এই বিশেষ ফাঁকা জায়গা কমিয়ে আনা যায়। এটি একটু ব্যয়বহুল। তবে পোরসেলিন ভেনিয়ার অপেক্ষাকৃত স্বল্পমুল্যের চিকিৎসা পদ্ধতি, যাকে ইনস্ট্যান্ট অর্থোডোনটিক চিকিৎসা বলা হয়। অনেক সময় এটি পোরসেলিন ভেনিয়ার থেকে বেশি কার্যকর।
হেল্থ টিপস্-২৬৩ ▌ আঁকাবাঁকা দাঁতের চিকিৎসা:
৬-৭ বছর বয়সের সময় দুধ দাঁত পড়ার পর প্রথম স্থায়ী দাঁত দেখা গেল আঁকাবাঁকা হয়ে উঠছে। শঙ্কিত বাবা-মাকে মনে করেন একসময় ঠিক হয়ে যাবে। ঠিক হয়েও যায় কিছু ক্ষেত্রে, কিন্তু বিপত্তি ঘটে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। সময় হয়ে ওঠে না কোনো অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার। এরপর দেখা গেল অবস্থা খারাপ। বিষয়টা চিকিৎসকের জন্যও কঠিন হয়ে পড়ে। সেজন্য দাঁত ওঠার আগে ও পরে কিছু সতর্ককতা, অভ্যাস ও নিয়মকানুনসহ অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললেই আঁকাবাঁকা দাঁত ও মুখাবয়বের অসমাঞ্জস্যতা রোধ করা সম্ভব। শিশুর যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে: ০ পুষ্টিকর সুষম খাবার নিশ্চিত করা, যা স্থায়ী দাঁতসহ চোয়ালের হাড়ের সঠিক গঠনে সহায়ক। ০ ি আঙুল, ঠোঁট ও কাঠি ইত্যাদি চোষা বন্ধ করা যা পরে চোয়াল, দাঁত উঁচু-নিচুসহ বিভিন্ন বিকৃতি ঘটাতে পারে। ০ শিশুর প্রথম দাঁত ওঠার পর থেকে পরিচর্যা করতে হবে।
হেল্থ টিপস্-২৬৪ ▌ দাঁত ব্যথা: ফিলিং না রুট ক্যানেল:
দাঁতে তিনটি স্তর থাকে। প্রথম স্তর এনামেল, দ্বিতীয় স্তর ডেন্টিন এবং সর্বশেষ এবং মাঝের স্তরের নাম পাল্প বা দন্তমজ্জা। যখন দাঁতে ক্যারিজ বা দন্তক্ষয় হতে শুরু করে তখন প্রথমে তা এনামেল দিয়ে শুরু করে যথাক্রমে নিচের দিকে বিস্তার লাভ করে। এই দন্তক্ষয় যখন ডেন্টিন পর্যন্ত পৌঁছায় তখন দাঁতে ফিলিং দিয়ে দাঁতটি সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। যদি দেখা যায় দাঁতটি বেশি ঝবহংধঃরাব -এর প্রায় দন্তমজ্জার কাছাকাছি তখন দাঁতে ফিলিং এর নিচে ঝঁননধংব হিসাবে একরকম সধঃবৎরধষ দেয়া হয় যাতে ঠা-া, গরম এবং অন্যান্য খাবারের অনুভূতি বেশি না হয়। কিন্তু যদি দেখা যায় দাঁতের সংক্রমণ ডেন্টিনকে ছাড়িয়ে চঁষঢ় বা দন্তমজ্জাকে ছুঁয়ে গেছে সেক্ষেত্রে আর ঋরষষরহম করা চলবে না। যদি কেউ ফিলিং দেয়, তবে সেখানে ব্যথা আরো বেশি হবে এবং ঝরহপঁং দিয়ে তার পুঁজ বের হয়ে আসবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দাঁতে জড়ড়ঃ ঈধহধষ করতে হবে। এটা হচ্ছে ঐ দাঁতের উপযুক্ত চিকিৎসা।
হেল্থ টিপস্-২৬৫ ▌ দাঁত শির শির করা সমস্যা:
দাঁতের শির শির করা অবস্থাকেই বলা হয় ডেন্টাল ইরেশান বা এন্ট্রিশন। যখনই কোনো কারণে এই এনামেল ক্ষয়প্রাপ্ত হয় তখন দাঁতের পরবর্তী অংশ ডেন্টিন বেরিয়ে আসে যেহেতু ডেন্টিনের নিচের অংশেই নার্ভ, আর্টারি, ব্রাড ভেসালস ইত্যাদি থাকে সেহেতু দাঁতটি খুবই ¯পর্শকাতর হয়ে পড়ে এবং তখনই ঠা-া বা গরম কিছু তরল পদার্থ লাগার সাথে সাথেই দাঁতটি শির শির করে। এই এনামেল ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় প্রধান কারণগুলোর মধ্যে আছে : ১। দাঁত ভেঙে যাওয়া। ২। অতিরিক্ত দাঁত ব্রাশ-এর ঘর্ষণে এনামেল ডেন্টিন ক্ষয় হয়ে যাওয়া। চিকিৎসা ▪ প্রথমেই মাড়ি ও দাঁতের সংযোগস্থল থেকে সমস্ত পাথর বা ডেন্টাল প্লাক পরিষ্কার করা প্রয়োজন। ▪ ক্ষয়ে যাওয়া অংশটুকু বা ভেঙে যাওয়া অংশটুকু ফিলিং দিয়ে ভর্তি করে দেয়া ▪ দাঁত ব্রাশের সঙ্গে স্ট্রনিয়াম ক্লোরাইড সংযুক্ত টুথ পেস্ট ব্যবহার করলে ৬ মাসে দাঁতের শির শির কমে আসতে পারে। এ পেস্ট দীর্ঘদিন ব্যবহার করা নিরাপদ না।
হেল্থ টিপস্-২৬৬ ▌ দাঁতের সমস্যা থেকে মাথা, চোখ ও কানের ব্যথা:
মুখের ভিতরের যে সব কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে সেগুলোর মধ্যে মাড়ির প্রদাহ বা পেরিওডেন্টাল ডিজিজ অন্যতম। দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ এর কারণে প্রদাহজনিত রোগ, পালপাইটিস ও আক্কেল দাঁতের অসমান অবস্থানের কারণে জটিলতা, মুখের ভিতরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষত বা ঘা, আঘাতজনিত কারণে চোয়ালের বা দাঁতের ফ্রেকচার বিভিন্ন ধরনের মিছ এবং টিউমার অনেক সময় কানে বা গলার ব্যথার কারণ হতে পারে। তবে বিশেষ যে একটি রোগ-এর কারণে মাথার ব্যথা বেশি হয় সেটি হলো আক্কেল দাঁত তার সঠিক অবস্থানে না থেকে বাঁকা হয়ে কখনো পাশের দাঁতের উপর চাপ সৃষ্টি করে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এই মাথা ব্যথা থেকে মুক্ত থাকতে আমাদের ডেন্টাল ক্যারিজ মাড়ির প্রদাহ ও মুখের ক্ষত বা ঘা এর মতো রোগকে গুরুত্ব সহকারে ফিলিং স্কেলিং ও অন্যান্য কারণসমূহকে নির্মূল করতে হবে।
হেল্থ টিপস্-২৬৭ ▌দাঁতের রুট ক্যানেল:
দাঁত যে মাড়ির সঙ্গে লেগে থাকে, সেটি একটি শেকড়ের সঙ্গে লেগে থাকে। দাঁতের মাড়ির শেকড়ের একটি ক্যানেল থাকে। ওই ক্যানেলের যে সংক্রমণ বা প্রদাহ থাকে, দাঁতের ভেতরে যে পাল্প টিস্যু বা দন্ত্যমজ্জা বলি, সেটার চিকিৎসা করাকেই সাধারণত রুট ক্যানেল বলা হয়। এছাড়া অনেক সময় সড়ক দুর্ঘটনা হয়ে কোনো সমস্যা হলে বা দাঁতে যেকোনো ধরনের আঘাত পেলে, তখনও দাঁতের রুট ক্যানেল করতে হয়। এখন অনেক অ্যানেসথেশিয়া রয়েছে, যেগুলো রুট ক্যানেল করার আগে দেয়া হয়। এতে ব্যথামুক্তভাবে রুট ক্যানেল করা যায়। এই চিকিৎসায় অনেক সিটিং লাগে। প্রতিরোধ -নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করুন, দিনে একবার অবশ্যই ফ্লসিং করুন, তাহলে দাঁত ভালো থাকবে। আমরা কিন্তু ফ্লসিং সাধারণত করি না এবং ব্রাশও করি খুবই আলসেমি করে। সকালবেলা নয়, আসলে রাতে খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করতে হয় এবং সকালবেলা নাশতার পর দাঁত ব্রাশ করতে হয়।
হেল্থ টিপস্-২৬৮ ▌ দাঁতের ক্যাপ ("ক্রাউন") কি এবং কেন?:
এ হলো স্থায়ী দাঁতের হারানো আকৃতির স¤পূর্ণ বা বেশিরভাগ অংশের স্থায়ী পুনঃপ্রতিষ্ঠাকরণের পদ্ধতি। ক্যাপ কেন করা হয়: ১। ডেন্টাল ক্যারিজের কারণে দুর্বল হয়ে যাওয়া দাঁত রক্ষা করার জন্য। ২। ভাঙা বা ক্ষয় হয়ে যাওয়া দাঁতের জন্য। ৩। ডেন্টাল ব্রিজ তৈরি করার জন্য। জন্মগতভাবে ত্রুটিযুক্ত বা কালো / মরা দাঁতের জন্য। ৪। অসমান, উঁচু-নিচু, ফাঁকা দাঁত ঠিক করার জন্য। কী কী ধরনের ক্যাপ করা হয়: ১। স্টেইনলেস স্টিল- বাচ্চাদের দুধদাঁত রক্ষার্থেও স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি করা হয় কারণ এটি অস্থায়ী। ২। মেটালিক ক্যাপ- তৈরি করা হয় গোল্ড এলয়, নিকেল- ক্রোমিয়াম এলয়, প্যালাডিয়াম এলয় দিয়ে। এটি স্থায়ী। ৩। পোরসেলিন ফিউসড টু মেটাল- এর ভিতরে থাকে মেটাল এলয় আর উপরে থাকে পোরসেলিন। যা দেখতে অবিকল সাধারণ দাঁতের মতো। ৪। সিরামিক ক্যাপ ৫। জিরকোনিয়া ক্যাপ ৬। টেমপোরারি ক্যাপ।
হেল্থ টিপস্-২৬৯ ▌ টুথ ক্যাভিটি বা দাঁতের গর্ত:
ব্যাকটেরিয়ার জন্য দাঁতের এনামেলের ক্ষয়ের ফলে দাঁতের গর্ত হয়, যাকে ডেন্টাল ক্যারিস এবং টুথ ডিকে বলে। শর্করা, কার্বোহাইড্রেট এবং ¯œ্যাক্স, চিজ, চকোলেট খাওয়ার অভ্যাস দাঁতের গর্ত হবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কমোথেরাপি চলছে, যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তামাক সেবনকারী, ধুপাপায়ীরা, অ্যালকোহল ও ড্রাগে আসক্তরাও ক্যাভিটিতে আক্রন্ত হতে পারে। উপসগ- ▪ গরম এবং ঠা-া খাবার এবং মিষ্টির প্রতি দাঁতের সংবেদনশীলতা। ▪ দাঁতে ব্যথা। ▪ দাঁতে গর্ত তৈরি হয়। ▪ মাড়ি থেকে রক্ত পড়া। ▪ দুর্গন্ধ। ▪ মাড়িতে পুঁজ হওয়া। ▪ দাঁতে ফোঁড়া। ▪ ব্যথা যা কান এবং মাথাতে ছড়ায়। প্রতিরোধ- ▪ দাঁতের সঠিক পরিষ্কার এবং ফ্লুরাইড জেল দিয়ে ব্রাশ করলে সমস্যা আটকায়। ▪ খাদ্যাভ্যাস বদলানো এবং খাবার থেকে শর্করা বাদ দিলে দাঁতের গর্তের প্রতিরোধ সম্ভব। প্রতিবার খাবার খাওয়ার পরে ভালো করে দাঁত পরিষ্কার করা দরকার।
হেল্থ টিপস্-২৭০ ▌ দাঁতে পাথর হওয়া ও তার প্রতিকার:
সঠিক নিয়মে ব্রাশ, ফ্লসিং ও মুখের পরিচর্যা না করলে খাওয়ার পর খাদ্যকণা জমতে থাকে। প্রথমে নরম থাকে, পরবর্তীতে সেটা শক্ত প্রলেপ হয়ে যায়, যেটাকে প্রচলিত ভাষায় পাথর বলা হয়। দীর্ঘদিন যাবত দাঁতে ক্যালকুলাস/পাথর জমে থাকলে তা থেকে- ১। মাড়ির প্রদাহ। ২। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া। ৩। মুখে দুর্গন্ধ। ৪। দাঁত শিরশির করা। ৫। দীর্ঘদিন পাথর জমে থেকে মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দাঁত পড়েও যেতে পারে। পরিত্রাণের উপায়: ১। সঠিক নিয়মে ও সঠিক ব্রাশের মাধ্যমে ব্রাশ করা। ২। ফ্লসিং করা। ৩। মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা। ৪। মিষ্টি, টফি জাতীয় খাবার পরিহার করা। ৫। ক্যালকুলাস থাকলে স্কেলিং ও পলিশিং করিয়ে নেয়া।
--:: চর্মরোগ সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-১৭১ ▌ চুলকানি হলে কি করবেন:
স্ক্যাবিস বা চুলকানি অসুখটি হয় বিশেষ ধরনের কীটাণু বা মাইটের আক্রমণে। একসঙ্গে অনেক মানুষ যেখানে থাকেন বা জড়ো হন যেমনÑহোস্টেলে বা স্কুলে, একজনের থেকে আরেকজনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রোগ। # স্ক্যাবিস ছাড়া আরও নানান কারণে চুলকানি হতে পারে, যেমনÑ # শীতকালে চামড়া শুকিয়ে গেলে। # বিশেষ ধরনের জামাকাপড় পরলে বা সুগন্ধি ব্যবহার করলে। # কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়। # বাড়াবাড়ি রকমের ডায়াবেটিসে # থাইরয়েডের সমস্যায় ও গর্ভাবস্থায় # লিভার বা কিডনির অসুখে। হলে কী করব? ▪ খেয়াল করে দেখুন আঙুলের ফাঁকে, নাভি বা যৌনাঙ্গের চারপাশে ফুসকুড়ি দেখা দিয়েছে কি-না। দেখা দিলে বুঝতে হবে স্ক্যাবিস হয়েছে। সেক্ষেত্রে রাত্রিবেলা পারমেথ্রিন জাতীয় লোশন গলা থেকে পা অবধি সারা শরীরে মেখে, শুকিয়ে গেলে ঘুমোতে যান। এক সপ্তাহ পরে আবার এভাবে লোশেন লাগাতে হবে সারা শরীরে। বাড়িসুদ্ধ সবাই ওষুধ লাগাবেন।
হেল্থ টিপস্-২৭২ ▌ব্রণ:
ব্রণ যে শুধু বয়ঃসন্ধিতে হয় তা কিন্তু নয়। একদম কচি বাচ্চাদেরও ব্রণ হতে পারে যাকে বলে নিওনেটাল একনি। মায়ের হরমোনের প্রভাব বাচ্চার শরীরে যতদিন থাকে, ৮-৯ মাস বয়স পর্যন্ত, বাচ্চার মুখে ব্রণ হতে পারে। আবার তার দেখা মেলে বয়ঃসন্ধিতে। এ সময় শরীরে হরমোনের পরিমাণ এবং সেনসিটিভিটি বেড়ে যাওয়াই এর মূল কারণ। যার ফলে সিবেসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে অতিরিক্ত তেল বেরোয়। তার উপর ব্যাকটেরিয়া পি.একনির সংক্রমণে দেখা দেয় ব্রণ। ২৫-৩০ বছর বয়সে বা তার পরেও ব্রণ দেখা দিতে পারে। হলে কী করবো? ▪ সাধারণ পরিচর্যা হিসেবে দিনে ৩-৪ বার পানি দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। গরমকালে বার দুয়েক, শীতে একবার, নন অয়েলি, নন কমেডোজেনিক লেখা আছে কি-না দেখে তবে প্রসাধনী কিনুন। রোদে বেরোবার সময় তৈলাক্ত সানব্লক ক্রিম লাগালে আবার বিপদে পড়বেন। অয়েল ফ্রি ক্যালামাইন বা সাধারণ পাউডার ব্যবহার করুন সানস্ক্রিন হিসেবে।
হেল্থ টিপস্-২৭৩ ▌ ব্রণ হলে কী কী করবেন না?
▪ ব্রণ খুঁটবেন না। অনেকে খুঁটে খুঁটে ব্ল্যাকহেডস্্গুলো পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন বা গরম পানির সেঁক দিয়ে টিপে ব্রণের পুঁজ বার করে দেন। এর ফলে ব্রণে সংক্রমণ হয়ে রোগ বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যেতে পারে। এমনকি সেপটিক হয়ে মুখে সেলুলাইটিস পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। গভীর কালো দাগ দেখা দিতে পারে মুখে। ▪ তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ বেশি হয় বলে অনেকে বারবার সাবান দিয়ে মুখ ধুয়ে নেন। চন্দন, মুলতানি মাটি, শাঁখের গুঁড়ো ইত্যাদি ব্যবহার করেন। এতে উল্টো ফল হয়। উপর থেকে চামড়া শুকিয়ে যাওয়ায় বিসেবিয়াস গ্ল্যান্ডগুলো আরো সক্রিয় হয়ে উঠে বেশি পরিমাণে তেল নিঃসরণ করতে শুরু করে। ▪ ব্রণ সারাতে কখনোই স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করবেন না। স্টেরয়েড ব্যবহার করলে ব্রণ মিলিয়ে যায় অনেক সময়। কিন্তু পরে প্রচুর ব্রণ ভয়ানক চেহারা নিয়ে একসঙ্গে ফিরে আসতে পারে। একে বলে স্টেরয়েড একনি। মুখে লোমও বেড়ে যায় প্রচুর।
হেল্থ টিপস্-২৭৪ ▌ঘামাচি হলে:
ঘামাচি সাধারণত তখনই হয় যখন ঘর্মগ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ঘাম বের হয় না এবং ত্বকের নিচে ঘাম আটকে যায়। এর ফলে ত্বকের উপরিভাগে ফুসকুড়ি এবং লাল দানার মতো দেখা যায়। কিছু কিছু ঘামাচি খুব চুলকায়। ঘামাচি সাধারণত এমনিতেই সেরে যায়। তবে ঘামাচি সারানোর জন্য ত্বক সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে এবং ঘাম শুকাতে হবে। ▪ এড়ানোর উপায়- * অতিরিক্ত গরমে প্রচুর পানি পান করা উচিত।* প্রতিদিন কমপক্ষে দুবার গোসল করা প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত একবার গোসলের সময় সাবান মাখতে হবে। * ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে। ▪ ঘামাচি হলে কী করবেন- * পাউডার ব্যবহার করলে পরদিন অবশ্যই ভালোভাবে সাবান লাগাতে হবে। * ঘামাচি হলে ঠা-া জায়গায় থাকা আবশ্যক। আক্রান্ত ব্যক্তি অন্তত ২৪ ঘণ্টা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকলে ঘামাচি উপশম হবে। *কিছু বরফ টুকরা নিয়ে ঘামাচি আক্রান্ত এলাকায় ৫-১০ মিনিট ধরে লাগাতে পারেন।
হেল্থ টিপস্-২৭৫ ▌ ফোঁড়া, ফুসকুড়ি, পাঁচড়া:
অনেকে ফোঁড়া, ফুসকুড়ি, পাঁচড়ার জীবাণু বহন করেন এবং আশপাশের মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে দেন। এঁদের বলে কেরিয়ার। এঁদের নিজেদের কিন্তু রোগ হয় না। ▪ বাচ্চারা এই সমস্যায় খুব বেশি ভোগে। স্কুল, হোস্টেল বা খেলার মাঠে রোগী অথবা কেরিয়ারের সংস্পর্শে আসাই এর মূল কারণ। ▪ খুব বেশি ধুলোবালি বাা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকলে জীবাণু সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ▪ বাড়িতে একজনের হলে অন্যদের মধ্যে রোগ ছড়াতে পারে। ▪ ডায়াবেটিস রোগীদের এই জাতীয় সংক্রমণ বেশি হয়। ▪ ওজন বেশি হলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। হলে কী করবো?-▪ আক্রান্ত অংশে টপিকাল অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম দিনে দু-তিনবার করে লাগাতে হবে। ▪ আক্রান্ত জায়গা খুঁটবেন না। ফোঁড়া ফাটাবার চেষ্টা করবেন না। ▪ রোগটা ছোঁয়াচে। কাজেই যাঁর হয়েছে তিনি তাঁর জামাকাপড়, বিছানার চাদর, বালিশের ওয়াড়, তোয়ালে কদিন একটু আলাদা করে রাখবেন।
হেল্থ টিপস্-২৭৬ ▌ দাদ হলে করনীয়:
শরীরের যে-কোনো স্থান ফাংগাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একে দাদ বলে। এই আক্রমণ মাথার চামড়ায়, হাত-পায়ের আঙুলের ফাঁকে কিংবা কুঁচকিতে হতে পারে। এটা ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্ত স্থান চাকার মতো গোলাকার হয় এবং চুলকায়। মাথায় আক্রান্ত স্থানে চুল কমে যায়। প্রতিকার পেতে সাবান ও পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান প্রতিদিন ধুতে হবে। এছাড়া আক্রান্ত স্থান শুকনো রাখা জরুরি। অনেক সময় ব্যবহৃত সাবান থেকেও দাদ হতে পারে, সেক্ষেত্রে সাবান ব্যবহার কিছুদিন বন্ধ রাখতে হবে। প্রতিরোধ: ▪ ক্ষতস্থান শুকনো রাখার চেষ্টা করা, যতটা সম্ভব তেল সাবান না লাগানো ভাল। ▪ সংক্রমণের জায়গাটা যতটাসম্ভব খোলা রাখতে হবে এবং গেঞ্জি, মোজা, আন্ডারওয়্যার প্রতিদিন পরপর পরিষ্কার করতে হবে। ▪ উষ্ণ গরম পানি ও সাবান দিয়ে ভালভাবে ধৌত করে শুকিয়ে ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।
হেল্থ টিপস্-২৭৭ ▌একজিমা:
একজিমা হলো ত্বকের এমন একটি অবস্থা যেখানে ত্বকে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। একেক ধরনের একজিমার লক্ষণ একেক রকম হয়। তবে সাধারণভাবে লালচে, প্রদাহযুক্ত ত্বক, শুষ্ক, খসখসে ত্বক; ত্বকে চুলকানি; হাত ও পায়ের ত্বকের মধ্যে ছোটো ছোটো পানির ফুসকুড়ি ইত্যাদি হলো একজিমার লক্ষণ। একজিমার কারণ-▪ সাধারণত শুষ্ক বা রুক্ষ ত্বক একজিমার জন্য দায়ী, কারণ- এ ধরনের ত্বক ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারে না। ▪ বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য, ডিটারজেন্ট, সাবান বা শ্যা¤পু থেকে এ রোগের সংক্রমণ হতে পারে। ▪ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘর্মগ্রন্থি বন্ধ হয়ে এটির সৃষ্টি হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক বা হরমোন জাতীয় ওষুধ সেবন এবং স্টেরয়েড জাতীয় ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। করণীয়- ▪ সবসময় নরম ও আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে। ▪ আক্রান্ত স্থান চুলকানো যাবে না। ▪ কাপড় পরিষ্কারের জন্য ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে।
হেল্থ টিপস্-২৭৮ ▌ ছৌদ বা ছুলি:
এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। গরমকালে এ রোগে রোগী বেশি আক্রান্ত হয়, শীতকালে আবার এমনিতেই যেন মিলিয়ে যায়। আবার গরম এলে গায়ের চামড়া ভিজে থাকে, তখনই আবার দেখা দেয়। হালকা, বাদামি, সাদা গোলাকৃতি দাগ দেখা যায়। বুকে, গলার দুই পাশে, ঘাড়ের পেছনে, পিঠে, বগলের নিচে, এমনকি সারা শরীরেও হতে পারে। সাধারণত ৬-৩০ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে ছুলি দেখা যায়। ছুলির কারণ- ▪ পরিবারের কারো ছুলি থাকলে অন্যদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ▪ ত্বক শুষ্ক হলে এবং ত্বকে র্যাশের কারণেও ছুলি হতে পারে। ▪ অ্যাজমা এবং এলার্জি ছুলির অন্যতম আরেকটি কারণ। ছুলি সাধারণত কয়েক মাস থেকে বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং একাই সেরে যায়। এটি ক্ষতিকারক নয় এবং সংক্রামকও নয়, সুতরাং এ থেকে ভয়ের কিছু নেই। এটি ত্বকের রঞ্জকের অভাবের ফল। ছুলি দূর করার জন্য বিভিন্ন ক্রিম বাজারে দোকানে পাওয়া যায়। এগুলো বেশ কার্যকর।
হেল্থ টিপস্-১৭৯ ▌খুশকি কেন হয়? কী করবেন?:
খুশকি চুল পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। শীতে এ সমস্যা আরো ভয়াবহ হয়ে ওঠে। খুশকি একবার হলে তা একেবারে দূর করা মুশকিল হয়ে পড়ে। যেসব কারণে হয় : চুলে অতিরিক্ত ময়লা হয় বা নিয়মিত না ধোয়া হয়, তবে খুশকি হয়। তাই যাঁরা নিয়মিত বাইরে যান, তাঁদের খুশকি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। ▪ ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হলেও খুশকি হয়। বেশ কয়েক দিন চুল ধোয়া না হলে আর মাথার ত্বক ঘেমে থাকলে ফাঙ্গাস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ▪ অনেকের মাথার ত্বক তৈলাক্ত থাকে। আবার যাঁরা অনেক বেশি ঘামেন, তাঁদের মাথায় খুশকি হতে পারে। ▪ খুশকিযুক্ত জিনিসপত্র তোয়ালে বা চিরুনি অন্য কেউ ব্যবহার করলে খুশকি হতে পারে। খুশকি প্রতিরোধ- পুরনো তেঁতুল পানিতে গুলে নিন। গোলানো তেঁতুল চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগান। ১০-১২ মিনিট অপেক্ষা করে চুল শ্যা¤পু করে ধুয়ে ফেলুন। * নিয়মিত চুল আঁচড়ান। এতে খুশকি হবার সম্ভাবনা কমে যাবে।
হেল্থ টিপস্-২৮০ ▌শ্বেতী রোগের কারণ:
আমাদের রং যে কালো এটা তৈরি করার জন্য শরীরে মেলানোসাইট নামে একটি কোষ আছে। শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যখন ওই রং কোষগুলোকে চিনতে পারে না; মনে করে সে বাইরের কেউ। তখন রোগ প্রতিরোধক্ষমতাগুলো একে ধ্বংস করে দেয়। তখন ওই জায়গায় রং তৈরি করতে পারে না কোষগুলো। ধীরে ধীরে সাদা হয়ে যায়। শ্বেতী রোগের চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ, পুরোপুরি না-ও সারতে পারে। দেহের লোমশ অংশের চিকিৎসা অনেকটাই সফল হয়। কিন্তু যেসব জায়গায় লোম থাকে না, যেমন আঙুল, ঠোঁট ইত্যাদির চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। প্রয়োজনে ত্বক প্রতিস্থাপন করা যায়। আরেকটি চিকিৎসা পদ্ধতি হলো- ন্যারো বেনইউভিবি, এটাতে ওষুধ খেতেও হয় না, লাগাতেও হয় না। একটি লেজারও আছে, যাকে এক্সিমা লেজার বলে। ছাতা ব্যবহার করতে হবে। সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে হবে। সকাল ৯টা থেকে ১০টার যে রোদটা রোগিদের জন্য ভালো।
হেল্থ টিপস্-২৮১ ▌আঁচিল:
আঁচিল যা চামড়ার উপর অনেকটা গুটির মতো দেখা যায়, অথবা শক্ত ফোস্কার মতো দেখায়। সাধারণত হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস দ্বারা আঁচিল হয়ে থাকে। চিকিৎসা করা না হলে আঁচিল সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার অনেক সময় চিকিৎসা না নিলেও আঁচিল ভালো হয়ে যায়। তবে একবার ভালো হয়ে যাওয়ার পরও আবার হতে পারে এবং কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। আঁচিল আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস, নখের আঁচড়ে এ ভাইরাস ছড়ায়। এ ছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন রোগের কারণেও আঁচিল হতে পারে। দুই-এক মাসের মধ্যে আঁচিল ভালো না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। এর মধ্যে স্যালিসিলিক এসিড স¤পৃক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি অধিক কার্যকর। এছাড়া ক্যারাটোলাইসিস, ক্রায়োসার্জারি, ইলেকট্রোডেসিকেশান, লেজার চিকিৎসাও অধিক জনপ্রিয়।
হেল্থ টিপস্-২৮২ ▌চুলপড়া সমস্যা ও তার সমাধান:
অ্যান্ড্রোজেনের কারণে চুল পড়া: অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন যেমন টেস্টোস্টেরন, অ্যান্ড্রোস্ট্রেনডিয়ন, ডিএইচটি হরমোনগুলো সাধারণত পুরুষের বেশি ও মহিলাদের কম পরিমাণে থাকে। যাদের এসব হরমোনের প্রভাব বেশি তাদের বেশি করে চুল পড়ে। দীর্ঘদিন মানসিক দুশ্চিন্তায় থাকলে বা দুশ্চিন্তা কাটিয়ে উঠতে না পারলে অনেক বেশি চুল পড়ে যেতে পারে। দৈনিক ১০০টা পর্যন্ত চুল পড়া স্বাভাবিক। চুলের গোঁড়ায় হেয়ার ফলিকল থাকে। ভাইব্রেশনের মাধ্যমে যদি ফলিকল উদ্দীপিত করা যায় তবে নতুন চুল গজানো সম্ভব। বাজারে ভাইব্রেটিং ম্যাসেজার কিনতে পাওয়া যায়। খাদ্যাভ্যাস: ০১. প্রোটিন: নতুন চুল গজানোর নিয়মিত খেতে হবে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সয়াবিন, মটরশুঁটি, কলা, বাদাম ইত্যাদি ০২. আয়রন আর জিঙ্ক: মটরশুঁটি, বাদাম, কলিজা, মাংস, দুধে জিংক আর আয়রন। ০৩. ভিটামিন সি: পেয়ারা, লেবু, কমলা, আনারস, কামরাঙা, কাঁচা মরিচ।
--:: নাক-কান-গলা সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২৮৩ ▌কানে কিছু ঢুকলে কি করবেন?:
▪ কানে কিছু ঢুকলে, কান পরিষ্কার করতে গিয়ে তুলো বা পোকামাকড়, একটুও খোঁচাখুঁচি করবেন না। তুলো বা নির্জীব বস্তু হলে ঠেলার চোটে আরো ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। জ্যান্ত পোকা হলে তো কথাই নেই। কানের ডাক্তারের কাছে যান। তিনি তাঁর যন্ত্রপাতি দিয়ে জিনিসটি বার করে দেবেন। ▪ পোকা কানের মধ্যে ছটফট করতে থাকলে খুবই অস্বস্তি এবং যন্ত্রণা হতে থাকে। এর হাত থেকে মুক্তি পেতে কানে কয়েকফোঁটা সরষে বা নারকেল তেল ঢেলে দিন। পোকা তাতে ডুবে মরলে ভালো। সড়সড়ানির হাত থেকে মুক্তি পাবেন। এরপর ডাক্তারের কাছে যান। ▪ কানের পোকা কখনো মাথায় যায় না। এ থেকে মৃত্যু তো দূরস্থান কোনো বিপদ ঘটারও কারণ নেই।
হেল্থ টিপস্-২৮৪ ▌গলায় কাঁটা বিঁধলে
▪ আলু, ভাত বা কলা খান। নেমে যেতে পারে।
▪ গলায় আঙুল দিয়ে, চিমটে দিয়ে কাঁটা বার করার চেষ্টা করবেন না। কাঁটা আরো ভেতরে ঢুকে যেতে পারে।
▪ গলার মধ্যে ক্রমাগত খচখচ করতে থাকলে বেশি দেরি না করে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
▪ অনেক সময় কাঁটা বেরিয়ে যাওয়ার পরও খচখচানি কমে না। মনে হতে পারে কাঁটা রয়ে গেছে। কাঁটার আঘাতে ক্ষত সৃষ্টি হওয়ার জন্য এরকম হয়। চিন্তা করার কিছু নেই। দু-একদিনের মধ্যেই অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
হেল্থ টিপস্-২৮৫ ▌ ‘থাইরয়েডের সমস্যা’:
গলায় শ্বাসনালির সামনের দিকে অবস্থিত থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নির্গত হরমানে শরীরের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো কারণে হরমানে নিঃসরণ বেড়ে গেলে বিপাক ক্রিয়ার হার বেড়ে যায়, নিঃসরণ কমে গেলে হার কমে, তার ফল নানা উপসর্গ দেখা যায়। যেমন-▪ খিদে বেড়ে যাওয়া। ▪ পেটখারাপের প্রবণতা ▪ গর্ভপাতের সম্ভাবনা ▪ বুক ধড়ফড় অতিরিক্ত গরম বোধ ▪ হাত-পা কাঁপা। ▪ খিটখিটে মেজাজ ▪ চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসা ইত্যাদি। ▪ ক্লান্তি ▪ ঘুমঘুম ভাব ▪ কাজে মন না লাগা। ▪ ওজন বাড়া। ▪ কোষ্ঠকাঠিন্য ▪ গলার আওয়াজ বসে যাওয়া ▪ চুল পড়া । ▪ চামড়ায় রুক্ষভাব ▪ অতিরিক্ত শীতবোধ ▪ ব্যথাবেদনা বাধে বেড়ে যাওয়া । ▪ পিরিয়ডের গ-গোল ▪ শারীরিক ইচ্ছে কমতে থাকা ▪ গর্ভসঞ্চারে অসুবিধে হওয়া । ▪ অল্প বয়সে এই রোগ দেখা দিলে স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে। চিকিৎসা : নিয়মিত ওষুধপত্র খেলে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
হেল্থ টিপস্-১৮৬ ▌গলা ভাঙলে কি করবেন:
ঠাণ্ডা লেগে গলা ভাঙে। আবার স্বরযন্ত্রের ক্যানসার থেকেও স্থায়ীভাবে গলার আওয়াজ বদলে যেতে পারে। তবে ▪ প্রধান কারণ কিছু ভাইরাসের সংক্রমণ। ▪ সামান্য কিছু ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দরুণ গলা ভাঙতে পারে। ▪ খুব জোরে জোরে প্রচুর কথা বললে। অনেক সময় এর ফলে গলায় মটরদানার মতো ছোটো মাংসপি- দেখা দেয়। ফলে ব্যবস্থা না নিলে স্থায়ীভাবে গলা ভাঙে। একে বলে সিঙ্গারস নডিউল। ▪ স্বরযন্ত্রে টিউমার হলে। গলায় সংক্রমণ বা গলায় পলিপ হয় অনেক সময়। স্থায়ী গলাভাঙার এও এক কারণ। কী করবেন? ▪ ঠা-া লেগে গলা ভাঙলে দিনে তিন-চারবার গরম পানির ভাপ টানতে পারেন। কথা বলা বন্ধ করুন যথাসম্ভব। সব ধরনের ঠা-া জিনিস এড়িয়ে চলুন। খাবার খান গরম গরম। শীতকালে গলায় মাফলার বেঁধে রাখুন। অন্য সময় জড়িয়ে রাখুন পাতলা কাপড়। ▪ চেঁচিয়ে গলা ভাঙলে বিশ্রাম দিতে হবে গলাকে। কথাবার্তা পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে।
হেল্থ টিপস্-১৮৭ ▌গলাব্যথা, ঢোঁক গিলতে কষ্ট? কি করবেন:
খাবার বা কোনো কিছু গিলতে অসুবিধা বোধ করাকে ডিসপেজিয়া বলে। পরীক্ষা করে দেখতে হবে কোনো গ্ল্যান্ড বা টিউমার আছে কি-না বা থাইরয়েড ফুলে গেছে কি-না। ▪ গলবিল ও শ্বাসনালী পরীক্ষা করে ভোকাল কর্ড এ দুর্বলতা, জিহ্বার গোড়ায়, হাইপো-ফ্যারিংসে কোনো কিছু বড়ো হয়েছে কি-না তা দেখতে হবে। ▪ এপিগ্যাস্ট্রিক টেনডারনেস বড়ো হয়েছে কি-না তা পেটে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ▪ রোগীর পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন আছে কি-না দেখতে হবে। রোগীর ওজন দেখতে হবে। কি করবেন: প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। বারবার কুলি করতে হবে। সাধারণ স্যালাইন বা লবণ মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে বারবার কুলি করতে হবে। লেবু বা আদা চাও খেতে পারেন। গলায় ঠা-া লাগানো যাবে না। ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হতে পারে।
হেল্থ টিপস্-২৮৮ ▌নাক ডাকা সমস্যায় কী করবেন:
নাকের নালি আংশিক সংকুচিত থাকা এবং জিহ্বার পেছনে বায়ুপথ সংকুচিত থাকা। মাঝ বয়সে নাকের পর্দা বাঁকা বা নাকে পলিপের কারণেও এ সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া ওজন বাড়লে বাতাস চলাচলের পথের পাশে চর্বি জমে। এতে করে পথটি নরম ও সরু হয়ে যায়। সহজ কিছু সমাধান: ওজন কমাতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, যেমন- হাঁটা, সাঁতার কাটা ইত্যাদি করতে হবে। সরু গলা, তালুতে ফাটল, বড়ো এডেনয়েড এধরনের কোনো সমস্যা থাকলে তার জন্য চিকিৎসা নিতে হবে। একদিকে কাত হয়ে ঘুমানো, প্রয়োজনে পিঠের নিচে কিছু দিয়ে নিতে হবে। বালিশ ৪ ইঞ্চি উঁচু করা। শুতে যাওয়ার ২ ঘন্টা আগে থেকে ক্যাফেইন, দুধ বা অন্য কোন ভারী খাবার না খাওয়া। অতিরিক্ত পরিমাণে মশলাযুক্ত খাবার কমিয়ে আনা। বিছানাপত্রে বেশি ধুলাবালি থাকলে, নাকের নালিতে ধুলা-ময়লা সংক্রমিত হয়ে নাকের পেশি ফুলে উঠতে পারে এবং নাক ডাকা শুরু হতে পারে।
হেল্থ টিপস্-২৮৯ ▌নাক দিয়ে রক্ত পড়া:
সামান্য কারণেই নাক দিয়ে প্রচুর রক্ত পড়তে পারে। ভয় পাবেন না। দু-চারটে সাবধানতা মেনে চললে মিনিট দশেকের মধ্যে অধিকাংশ রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়। কেন পড়ে- ▪ বেশিরভাগ সময় মূল কারণ নাক খোঁটা বিশেষত শীতকালে। ▪ বয়স্কদের মধ্যে রক্তচাপ খুব বেড়ে গেলে অনেক সময় নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। ▪ নাকে পলিপ বা টিউমার হলে। ▪ ঠা-া লেগে যদি নাকে কোনো সংক্রমণ হয়। ▪ রক্তের কিছু কিছু অসুখে রক্তপাত হতে পারে। কী করবো? ▪ নাকের সামনের অংশটা দু-আঙুলে টিপে রাখুন। ▪ নাকের উপর বরফ বা ঠা-া কাপড় চাপা দিয়ে রাখুন মিনিট দশেক। ▪ মিনিট দশেক ধরে ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে শ্বাস নিন। ▪ ১০ মিনিটের মধ্যে রক্ত পড়া বন্ধ না হলে যে রকমভাবে নাকে ঠা-া কাপড় চাপা দিয়ে বসেছিলেন ঠিক সেভাবে কাছাকাছি কোনো ডাক্তার দেখান। ▪ শুয়ে পড়বেন না। শুলে বরং রক্ত পড়া কমতে দেরি হবে। ▪ নাক খোঁটার অভ্যেস ত্যাগ করুন।
হেল্থ টিপস্-২৯০ ▌ নাকের পলিপ:
নাকের পলিপ হলো দীঘমেয়াদি এলার্জি। নাকের যে ঝিল্লি আছে, মিউকাস মেমব্রেন, এর মধ্যে পানি/চর্বি জমে যায়। যা অনেকটা আঙ্গুর ফলের মতো ফুলে যায়। কীভাবে বুঝবেন-তার নাক বন্ধ থাকবে। নাক দিয়ে পানি আসবে। মাথা ব্যথা করতে পারে। পলিপের দুই রকম ভাগ আছে। একটি হলো ইথময়েডাল পলিপ। আরেকটি হলো, অ্যানথ্রোকরনাল পলিপ। নাকের দুই পাশে যে সাইনাস আছে। ইথময়েডাল সাইনাসে দেখা যায়, নাকের ওপর থেকে উঠে নিচের দিকে পলিপগুলো আসে। আর অ্যানথ্রোকরনাল যেটা, মেক্সিলারি সাইনাস থেকে নাকে ডান বা বাম পাশে উঠে। ¯পর্শ করলে সাথে সাথে হাঁচি উঠবে। পলিপ হয়ে গেলে অস্ত্রোপচার লাগবে। বিকল্প চিকিৎসাও আছে। প্রতিরোধ: এলার্জি এড়িয়ে যেতে হবে। ঘরের পর্দা, কার্পেট ব্যবহার না করা। চাদর বালিশ কভার সপ্তাহে দুবার বদলানো দরকার। ঘরের ধুলাবালি, বাইরের ধুলাবালি, পরিবেশ দূষণ থেকেও এলার্জি হতে পারে।
হেল্থ টিপস্-২৯১ ▌বধিরদের চিকিৎসা :
একজন বধির শিশুর সবময়ই বোবা হয়। সে কথা বলতে পারে না। কারণ কথা বলা শিখার জন্য শোনার প্রয়োজন হয়। কাদের জন্য এই সার্জারি প্রয়োজন: যে শিশু জন্ম থেকেই বধির তাকে ২ বৎসরের পূর্বে ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্টি লাগিয়ে দিলে স্বাভাবিক নিয়মে সে বড়ো হতে থাকে এবং ভাষা শিখতে থাকে। যারা জীবনের কোন পর্যায়ে হঠাৎ করে স¤পূর্ণ বধির হয়ে গেছে তাদের শ্রবণ শক্তি ফিরিয়ে দেবার জন্য এই ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট জরুরি। কী কারণে শিশুরা বধির হয়: প্রকৃতির খেয়ালে প্রতি ১০ হাজার শিশুর মধ্যে একজন জন্মগ্রহণ করে জন্মবধির হয়। বিশেষ করে নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে হলে এই সমস্যা বেশি হয়। তাছাড়া গর্ভকালীন সময়ে মা যদি রুবেলা, হাম, মামপস বা এই জাতীয় ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় বিশেষ করে গর্ভের প্রথম তিন মাসের মধ্যে, তবে শিশু বধির সম্ভাবনা বেশি থাকে। প্রসবকালীন সময় যদি বাচ্চার অক্সিজেন কমে যায়,তাহলেও বধির হতে পারে।
হেল্থ টিপস্-২৯২ ▌ কানব্যথা কেন হয়?:
▪ বহিঃকর্ণ অর্থাৎ কানের পর্দার বাইরের অংশে কোনো অসুবিধে দেখা দিলে কানে ব্যাথা হয়। যেমন, ▪ খোঁচানোর ফলে কানে সংক্রমণ হলে। ▪ কানে প্রচুর পরিমাণে খোল জমে গেলে। ▪ কানে পোকা, পিঁপড়ে বা অন্য কোনো কিছু প্রবেশ করলে। ▪ মধ্যকর্ণ অর্থাৎ পর্দা থেকে কানের ভেতরের অংশের কোনো সমস্যা হলে। ▪ কানের পুুঁজ দীর্ঘদিন থেকে গেলে,কানের পিছনে ম্যাসটয়েড হাড়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে মারাত্মক কানব্যথা শুরু হতে পারে। ▪ মাথা, মুখ, গলা ইত্যাদি অংশের কোনো অসুখেও কান ব্যথা হতে পারে। ব্যথা হলে কী করবো? ▪ কাপড় গরম করে শুকনো সেঁক দিতে পারেন কানে। ▪ কান পরিষ্কার করার বাতিক ত্যাগ করুন। প্রাকৃতিক নিয়মে নিজে থেকেই কান পরিষ্কার হয়ে যায়। খোঁচাখুঁচি করলে ময়লা ও সংক্রামক বেশি জমে। ▪ কানে যেন পানি না ঢোকে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। ▪ ঠা-া লেগে গলায় বা নাকে যাতে সংক্রমণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
হেল্থ টিপস্-২৯৩ ▌কান পাকা রোগে করণীয়:
কানের পর্দায় ছিদ্র হয়ে গেলে তখন পুঁজ পড়ে। তবে পর্দা ছিদ্র হওয়া ছাড়া বহিঃকর্ণে অনেক সময় পুঁজ পড়তে পারে। সেই ক্ষেত্রে বেশি পুঁজ পড়ে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেই সঙ্গে কানের পর্দার ছিদ্রও বন্ধ হয়ে যায়। যদি পর্দার ছিদ্রটা বড়ো হয় এবং যদি বারবার পুঁজ পড়ে, যদি তিন মাসের মধ্যে তার পর্দাটা জোড়া না লাগে, কানে কম শোনে, তাহলে কিন্তু একটা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাইক্রো সার্জারি করে পর্দা জোড়া লাগিয়ে দেয়া যায়। কানের পেছনে চামড়া নিয়ে, কানের মধ্যে মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে লাগানো হয়। এই অস্ত্রোপচারকে টিমপ্যানোপ্লাস্টি বলে। এই অস্ত্রোপচার করতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগে। এক রাত হাসপাতালে থাকলেই যথেষ্ট। আর আরেক ধরনের কান পাকা আছে, যেটাতে দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ হয়, এগুলো সাধারণত অনেকদিন ধরে চলতে থাকে, জটিলতা হতে পারে। এরকম হলে ভেতরের পুঁজ বের করে কানের অস্ত্রোপচার করা হয়।
হেল্থ টিপস্-২৯৪ ▌কানে শোঁ শোঁ শব্দ হলে করণীয়:
নিজের কানে অস্বাভাবিক এক রকম শব্দ শোনাই হলো 'টিনিটাস'। টিনিটাস তিন রকম হতে পারে ▪ সাবজেকটিভ: বাইরের কোনো কোলাহল ছাড়া রোগী যখন কোনো অর্থহীন শব্দ শুনতে পান। এ শব্দটির তীব্রতা নানা রকম হতে পারে, ২৪ ঘণ্টা একটানা অথবা একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর। ▪ অবজেকটিভ: এক ধরনের অস্বাভাবিক শব্দ, যেটি রোগীর নিজের শরীর থেকে অনুভূত হয়। যেমন, বাতাস প্রবাহের শব্দ। মাথার মাংসপেশির সংকোচন, কানের মাংসপেশির সংকোচন। ▪ অডিটরি হ্যালুসিনেশন: অনেক সময় রোগী নির্দিষ্ট সময় পরপর কথা বলার শব্দ অথবা কোলাহল শুনতে পান। যার বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। নানা কারণে হয়-কানের ময়লা বা খৈল। মধ্যকর্ণে পানি জমা। মনিয়ার্স ডিজিজ, শব্দ দূষণজনিত বধিরতা, অন্তঃকর্ণের প্রদাহ ইত্যাদি। শোঁ শোঁ শব্দের কারণ বের করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়। প্রয়োজনে কানে যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে।
হেল্থ টিপস্-২৯৫ ▌ গলগ- রোগ হলে:
গলার সামনে মাঝামাঝি ¯হানে অবস্থিত থাইরয়েড গ্লান্ড ফুলে যাওয়াকে গলগ- বলে। বড়োদের ক্ষেত্রে থাইরয়েড হরমোন-এর অভাবে মিক্সইডিমা ও হরমোন অধিক হলে থাইরট ক্সিকোসিস রোগ হয়। ১. সাধারণ বা সি¤পল গলগ-। এক্ষেত্রে থাইরয়েড গ্লান্ডটি ফুলে যায়। ২. মাল্টি নডুলার গলগ-- এখানে থাইরয়েড গ্লান্ডটিতে ছোটো-বড়ো অসংখ্য চাকা থাকে। ৩. সলিটারি থাইরয়েড নডিউল-এক্ষেত্রে থাইরয়েড গ্লান্ডে একটি মাত্র চাকা থাকে। ৪. টিউমার গলগ-। টিউমারজনিত কারণে এই গলগ- হতে পারে। ৫. থাইরয়েড গ্লান্ডের ক্যানসার ৬. ইনফেকশনজনিত গলগ-। ৭. স্বাভাবিক গলগ-। গলগন্ডের কারণ কী? ১. খাদ্যে আয়োডিনের অভাব অন্যতম কারণ। ২. শরীর গঠন বা অধিক বৃদ্ধির সময় স্বাভাবিক গলগ- সৃষ্টি হতে পারে। * চিকিৎসা: থাইরয়েড গ্লান্ডটি ফুলে গেলে যদি স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে না আসে, তখন অপারেশনের প্রয়োজন হয়। নয়তো ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
-:: চক্ষু রোগ সম্পর্কীত ::--
হেল্থ টিপস্-২৯৬ ▌চোখের গ্লুকোমা রোগ :
এটা চোখের এমন একটি রোগ, যাতে চোখের চাপ বেড়ে গিয়ে, পেছনের ¯œায়ু অকার্যকর হয়ে ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি চলে যায়। জন্মের সময় বেশ বড়ো চোখে এবং উচ্চ চক্ষুচাপ নিয়ে জন্মালে, একে কনজেনিটাল গ্লকোমা বা জন্মাগত উচ্চ রক্তচাপ বলে। তরুণ বয়সেও হতে পারে, একে বলে জুভেনাইল গ্লুকোমা। বেশির ভাগ গ্লুকোমা রোগ ৪০ বছরের পর হয়। এদের প্রাথমিক গ্লুকোমা বলে। বেশি বয়সজনিত চোখের গঠনে পরিবর্তন, চোখ লাল হওয়া, ডায়াবেটিসজনিত চোখের রক্তহীনতা, ছানি পেকে যাওয়া ইত্যাদি কারণে গ্লুকোমা হতে পারে। চাপ বাড়ার ফলে শিশুর চোখ বড়ো হয়ে যায়। এই চোখকে বলা হয় বুফথ্যালমাস। চোখ দিয়ে পানি পড়া এবং আলোতে চোখ খুলতে পারে না। চিকিৎসা- শিগগিরই অপারেশনের মাধ্যমে চোখের প্রেশার কমানোর জন্য চিসিৎসা করতে হয়। এর কোনো উপসর্গ থাকে না। আস্তে আস্তে দৃষ্টি পরিসীমা কমে যায় এবং একপর্যায়ে রোগী দৃষ্টিশক্তি হারায়।
হেল্থ টিপস্-২৯৭ ▌চোখ ওঠা:
সারা বছরই চোখ ওঠার সমস্যা থাকে অনেকেরই। তবে শীতের শুরুতে বা গরমের শুরুতে অর্থাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে এর প্রকোপ বাড়ে। কীভাবে বুঝবেন- * চোখ লাল হওয়া * চোখ জ্বলা এবং চোখে অস্বস্তি হওয়া * চোখ থেকে পানি বা শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থ বের হওয়া * অতিরিক্ত পিচুটি বের হতে থাকা। কেন চোখ ওঠে-ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, কোনো রাসায়নিক পদার্থ বা অ্যালার্জির কারণে চোখ উঠতে পারে। ভাইরাসজনিত কারণে হলে অনেক সময় এক চোখ আক্রান্ত হয় এবং তার সঙ্গে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণও থাকতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে চোখ উঠলে কিছুটা হলদে রঙের পুঁজের মতো নিঃসরণ হবে চোখ থেকে। পরিষ্কার পানিতে তুলা বা কাপড় ডুবিয়ে চোখে আলতোভাবে চেপে ধরতে পারেন। আক্রান্ত ব্যক্তির তোয়ালে, কাপড়ও অন্যদের ব্যবহার করা উচিত নয়। এগুলোকে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পরিষ্কার করতে হবে। চোখে চোখ রাখলেই চোখ ওঠে না।
হেল্থ টিপস্-২৯৮ ▌ট্যারা চোখ:
ট্যারা চোখের তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করে ব্যাপারটা সারিয়ে না ফেললে পরবর্তীকালে অপারেশন করেও আর লাভ বিশেষ হয় না। কেন হয়? -চোখের মণিকে চারদিক থেকে তার নিজস্ব জায়গায় আটকে রেখেছে যে সমস্ত মাংসপেশি। বিভিন্ন কারণে তাদের এক বা একাধিক দুর্বল হয়ে গেলে চোখের মণি একদিকে ঘুরে যায়। বয়স্কদের বেলায় কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক কিছু সমস্যার দরুণ এরকম হতে পারে। যেমনÑ উচ্চ রক্তচাপ। ডায়াবেটিস, গালে বা কপালে কোনো ফোড়া বা টিউমার যা চোখের নার্ভে চাপ দিচ্ছে, ভাইরাল ফিভার ইত্যাদি। চিকিৎসা :যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা হলে ৩ - ৬ মাসের মধ্যে অবস্থা আয়ত্তে চলে আসবে। * ল্যাটেন্ট স্কুইন্টের বেলায় চোখের কিছু ব্যায়াম এবং চোখ পরীক্ষা করে সঠিক পাওয়ারের চশমা দিলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমস্যা মিটে যায়। ছোটো বয়সে অপারেশন করালে চোখের কার্যক্ষমতা পুরাপেুরি ফিরে আসে।
হেল্থ টিপস্-২৯৯ ▌'চোখের যত্নে প্রতিদিন করবেন যে ৫টি কাজ:
১। পর্যাপ্ত আলোতে কাজ করুন: কম আলো বা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি আলো দুটোই চোখের জন্য খারাপ। তাই খেয়াল রাখুন আপনার কাজের পরিবেশের আলো পর্যাপ্ত কিনা। ২। ক¤িপউটার বা টেলিভিশনের স্ক্রিনের দিকে অপলক থাকিয়ে থাকবেন না: ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকেন মনিটর বা টেলিভিশনের স্ক্রিনের দিকে থাকাবেন না। কিছুক্ষণ কাজ করে চোখকেও বিশ্রাম দিন। ৩। সবুজ শাক-সবজি খান: মৌসুমী শাক-সবজি, ফলমূল রাখুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। প্রচুর মাছ খাবেন। ৪। সূর্য থেকে রক্ষা করুন চোখ: রোদে বাইরে গেলে ছাতা রাখুন সাথে আর ব্যবহার করুন সানগ্লাস। ৫। চোখের ব্যায়াম করুন: ঘুম থেকে উঠে চোখ ১০ বার ডামদিকে, ১০বার বামদিকে, এবং ২০ বার মিট মিট করে চোখ বন্ধ করুন এবং খুলুন। এবং দূরে সবুজ গাছ পালার দিকে একটানা কয়েক মিনিট তাকিয়ে থাকুন।
হেল্থ টিপস্-৩০০ ▌চোখে কিছু পড়লে:
*চোখে ধুলাবোলি, ধার টুকরো, উড়ন্ত পোকা ইত্যাদি পড়লে পরপর কয়েকটি জিনিস। * চোখ খোলা রেখে ভাল করে চোখে পানির ঝাপটা দিন। * চোখের পাতা উল্টে দেখে নিন জিনিসটি সেখানে গেঁথে আছে কি-না। থাকলে ওই অবস্থায় বারবার পানির ঝাপটা দিন।* নোংরা রুমাল বা ধারালো কিছু দিয়ে বার করার চেষ্টা করবেন না। * চোখ একেবারে রগড়াবেন না। জিনিসটি চোখের মধ্যে গেঁথে যেতে পারে। অথবা রগড়ানোরে চোটে মণি ছিঁড়ে যেতে পারে। * অসহ্য অবস্থা হলে চোখ রুমাল দিয়ে বেঁধে ডাক্তারের কাছে যান। কারণ চোখে ধারালো কিছু ঢুকলে সামান্য চোখের পাতার ওঠানামাতেই চোখের মধ্যে কেটে যেতে পারে। *চোখে অ্যাসিড, অ্যালকালি, ব্লিচিং পাউডার ইত্যাদি পড়লে রোগীকে চিত করে শুইয়ে। চোখের পাতা টেনে খুলে, মগ বা কেটলি দিয়ে প্রচুর পানি ঢালুন চোখে।