অনুষ্ঠানের ঘোষণাপত্র
ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী ও নৃবিজ্ঞানী পিয়েরে বুর্দোর মতে, প্রতিটি মানুষ ‘হ্যাবিটাস’ দিয়ে পরিচালিত হয়। হ্যাবিটাস হলো, সমাজের ভেতরে বেড়ে ওঠার ফলে মানুষের মধ্যে অবচেতনভাবে গড়ে ওঠা অভ্যাস ও মানসিকতা। অর্থাৎ ব্যক্তি যত বড়ই হোক না কেন, চিন্তাচেতনায় তাঁর কিশোরকাল প্রভাব থাকবেই। অর্থাৎ আপনি আমি কোন ঘরে জন্ম নিয়েছি, তা দিয়ে নয়, তার বেড়ে ওঠার পরিবেশ দিয়ে পরিচালিত হয়। বেড়ে ওঠার পরিবেশ যদি আনন্দময়, সংস্কৃতিময় ও শিক্ষাসমৃদ্ধ করা যায়, তাহলে প্রতিটি মানুষের জীবন সুখী, সার্থক ও সম্ভাবনাময় হবে।
কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকরা বলছেন, শৈশবে অবহেলা, বঞ্চনা ও প্রতিকূলতায় ভরা জীবন মানুষের মস্তিষ্ক ও আচার-আচরণ বিকাশে বিরূপ প্রভাব ফেলে। গবেষকরা দেখিয়েছেন ‘রোমানিয়ান হেল হোল’ বা রোমানিয়ার নরকের গহ্বর খ্যাত অনাথ আশ্রমের শিশুদের মস্তিষ্ক স্ক্যান করে দেখা গেছে শৈশবে অবহেলার শিকার এই দত্তক শিশুদের মস্কিষ্কের আকার সবচেয়ে ছোট, তারা দুর্বল মস্তিষ্কের এবং তাদের আইকিউ সবচেয়ে কম। অন্যদিকে ইহুদি কমিউনিটির বাচ্ছাদের, যারা সমাজে আদর, মনযোগ আর আনন্দের মধ্যে বড় হচ্ছে, তাদের মস্কিষ্কের আকার সবচেয়ে বড় এবং তাদের আইকিউ সবচেয়ে বেশি। অস্ট্রিয়ার চিকিৎসক আলফ্রেড অ্যাডলার তত্ত্ব মতে, ব্যক্তির আইকিউ , এমনকি জীবনে সফলতা ও ব্যর্থতার শর্তও তৈরি হয় শৈশবেই। সুতরাং আমরা যদি আমাদের সন্তানদের শৈশবকে আনন্দময় এবং আদর যত্নময় পরিবেশের মধ্যে বেড়ে তুলতে পারি, তাহলে তাদের জীবন সার্থক ও সম্ভাবনাময় হবে।
আমাদের দেশে সন্তানদের এমন শৈশব যে আমরা তৈরি করতে পারি তা দেখিয়ে দিয়েছেন, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার সেনুয়া বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল মাজেদ। শতবর্ষী এই বিদ্যালয়ে একসময় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও রেজাল্ট কোনটাই আশানুরূপ ছিল না। এই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শৈশব মোবাইলের মোহে হারিয়ে যাওয়া থেকে সরিয়ে আনার জন্য বেশি করে সহশিক্ষার উপর জোর দেন। এই স্কুলের শিক্ষার্থী্দেরকে তিনি সংগীতচর্চা, নাচ, অভিনয়, কুইজ, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা, ছবি আঁকাসহ নানা কার্যক্রমে সংপৃক্ত করেন। নিয়মিত প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বিজয়ী এবং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়, ফলাফল হয় বিস্ময়কর। শুধু স্কুলে নয়, এসব শিক্ষার্থীরা উপজেলা থেকে শুরু করে জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায় পর্যন্ত সে্রা স্কুলের পুরস্কার পায়। অজপাড়া গায়ের একজন গণিতের শিক্ষক আবদুল মাজেদের প্রচেষ্টায় যদি একটি শতবর্ষী অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া বিদ্যালয় জেলা ও বিভাগের সেরা বিদ্যালয় হিসেবে পরিণত হতে পারে, তাহলে সকল সুযোগ সুবিধা থাকা আমাদের স্কুলকে আমরাও শিক্ষার একটি রোল মডেল করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। সবাইকে ধন্যবাদ।
================
পরীক্ষাকেন্দ্রিক পড়াশোনা আর সার্টিফিকেট অর্জন শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রের উপযোগী করে তুল্ছে না। বিষয়ভিত্তিক নির্ধারিত যোগ্যতা অর্জন না করলে পরবর্তী শ্রেণিগুলোতেও ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীকে পিছিয়ে পড়তে হয়। সুতরাং শিক্ষাব্যবস্থায় নম্বরভিত্তিক পরীক্ষার পাশাপাশি যোগ্যতাভিত্তিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা দরকার। প্রথমে মঞ্চে কথা বলতে আসছেন এই অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থা সুনাগরিক সংঘ এর নির্বাহী পরিচালক জনাব আবু ওবাঈদ
====
আমরা সেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কথা বলতে চাইছি, যার কারিকুলামের মধ্যে থাকবে চেতনা ও মনুষ্যত্ব তৈরির পথনির্দেশনা। আমাদের শিক্ষা নীতি ভালো ফলাফলের ছকে ফেলে, ভালো মানুষ তৈরির পথ বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে সার্টিফিকেটধারী অমানুষ আর দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি তৈরি হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, একমাত্র সুশিক্ষাই পারে সার্টিফিকেটধারী অশিক্ষিত দুর্নীতিবাজদের সামনে দেয়াল তুলতে। সুশিক্ষার প্রথম ও জরুরি পাঠ হতে হবে স্কুল থেকে।আপনাদের সামনে এখন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তুলে ধরবেন…
----
আমেরিকা মহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দেশ চিলি। এই চিলিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ছাত্র বিক্ষোভ ২০১১ থেকে ২০১৩ সালে। এই ক্ষোভের কারণ ছিল চিলির অন্যায্য শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষার্থীরা খেয়াল করেন, ধনী শিক্ষার্থীরা সেরা স্কুলগুলিতে পড়ার সুযোগ পান। অথচ দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ থাকে জরাজীর্ণ কিছু স্কুল। থাকে না পর্যাপ্ত রাষ্ট্রীয় তহবিল। তাই বিনা মূল্যে মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থার দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করে ছাত্ররা। এটি দ্রুতই লাভ করে জনসমর্থন। লাখো শিক্ষার্থী-জনসাধারণ রাস্তায় নামেন। আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র ছিলেন ছাত্রনেত্রী কামিলা ভ্যালেজো। এই আন্দোলনের ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সংস্কার করা হয়। বৃদ্ধি করা হয় শিক্ষার জন্য সরকারি তহবিল। ফলে চিলি ছেলে-মেয়েরা শিক্ষায় পৃথিবীর গর্ব। এখন মঞ্চে আপনাদের সামনে বক্তব্য তুলে ধরবেন জনাব……।
======
দক্ষিণ আফ্রিকায় তখন চলছিল শ্বেতাঙ্গদের শাসন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সরকার পরিচালিত সব স্কুলগুলোতে সব বিষয় পড়ানো হবে আফ্রিকান ভাষায় যার নাম আফ্রিকানাস। অথচ বেশির ভাগ কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন উপজাতির অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তখন আফ্রিকান এই ভাষা তারা বলতে পারতেন না। ফলে এটিকে অত্যাচারীর ভাষা হিসেবে দেখতেন কৃষ্ণাঙ্গরা।১৯৭৬ সালের ১৬ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার হাজার হাজার স্কুলের শিক্ষার্থী প্রতিবাদ জানাতে নেমে আসে সোয়েটো শহরের রাস্তায়। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে গুলি চালায় পুলিশ। নিহত হয় শত শত শিক্ষার্থী। ফলে তীব্রতর হয় প্রতিরোধ। এই আন্দোলনই পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্যবাদী শাসনের পতনে ভূমিকা রাখে। মুক্তি পায় দেশের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা।এবার মঞ্চে আসছেন……।
=========
বাংলাদেশে শিক্ষায় মাধ্যমিক স্তর শেষ করার আগেই প্রায় অর্ধেক মেয়ের শিক্ষা জীবন শেষ হয়ে যায়। নারী শিক্ষার অগ্রগতির ক্ষেত্রে এ প্রবণতাকে মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। সরকারি হিসেবে দেখা যায় ৪৫.৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক স্তর থেকে ঝরে পড়ছে। মাধ্যমিকে এসেই আমাদের হোঁচট খেতে হয় তার বড় কারণ হলো মাধ্যমিক স্কুলের প্রায় ৯৭ ভাগ বেসরকারিভাবে পরিচালিত। সরকার এই মাধ্যমিক স্কুলগুলোর পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব নিলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার রোধ করা সম্ভব। এবার মঞ্চে কথা বলার জন্য আসছেন……
=====
শিক্ষা একটি জাতির উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। প্রতিটি দেশ তাদের নিজস্ব প্রেক্ষাপটে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলে, যা তাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর ওপর নির্ভর করে। ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি ও পরাশক্তি হওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় প্রভাবক ছিল শিক্ষা। ১৮৫০-এর দশকে প্রায় শতভাগ শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে পেরেছিল তারা। যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত নমনীয় এবং সেখানে শিক্ষার্থীদের পছন্দ ও স্বাধীনতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষা ও গ্রেডের চাপ তুলনামূলকভাবে কম থাকে। কারণ তাদের মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় প্রকল্প, ক্লাস পারফরম্যান্স, গবেষণা এবং অন্যান্য কার্যক্রম যুক্ত থাকে। এবার মঞ্চে বক্তব্য তুলে ধরবেন…।
===
যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা থেকে উপকরণ নিয়ে নিজেদের শিক্ষা কাঠামো ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করার জন্য জাপান সরকার ১৮৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে পাঠিয়েছিলেন এক কূটনীতিক। ২৫ বছর বয়সী ওই কূটনীতিকের নাম ছিল আরিনরি মোরি। পশ্চিমা অভিজ্ঞতা নিয়ে জাপানের শীর্ষ শিক্ষা সংস্কারক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি। দেশে ফিরে এসে এক ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশকে তৃতীয় শ্রেণীর তালিকা থেকে দ্বিশ্বের সব দেশের মধ্যে শীর্ষ আসনে আসীন হতে হবে। এটা করার সর্বোচ্চ উপায় হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার ভিত মজবুতকরণ।’ পরবর্তী কয়েক দশকের মধ্যে জাপানের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে সাফল্য দেখাতে পেরেছে জাপান। এবার মঞ্চে কথা বলার জন্য আসবেন জনাব…।
=====
জাপান কীভাবে আজকের পৃথিবীতে একটি অন্যতম নম্র, ভদ্র, সভ্য ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠেছে? জাপানের স্কুলগুলো হলো আজকের জাপান তৈরির কারিগর। জাপান তার স্কুলের কাছে জানিয়েছে সে কেমন নাগরিক চায়, স্কুলগুলোকে সাজিয়েছে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী, উপযুক্ত যোগ্যতার শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে, শিক্ষায় সর্বোচ্চ বিনিয়োগ নিশ্চিত করেছে যার দরুন আজকের জাপান জ্ঞানে, বিজ্ঞানে, আদব কায়দায়, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশ্বের কাছে এক আশ্চর্যের নাম জাপান। জাপানিরা নিজে অন্যের কাজ করে দিয়েও অন্যকে ধন্যবাদ বলে। এইযে ভদ্রতা, এটা জাপানিরা স্কুলে শেখে। আমাদের স্কুল কী আমাদের দুঃখিত বা ধন্যবাদ বলতে শেখায়? জাপানে ৭ বছরের শিশুরা ঘর মুছতে শিখে, স্কুলে। রান্না করতে শেখে স্কুলে। ফসল আবাদ করতে শেখে স্কুলে। বাসন ধুতে শেখে স্কুলে। প্রাইমারি লেবেল তো দূরের কথা আমাদের ক্লাস টেন পাস একজন শিশু কি জীবন দক্ষতা নিয়ে স্কুল ত্যাগ করে? এবার মঞ্চে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে আসছেন জনার…।।
=====
বাংলাদেশের যে কোনো সরকারি অফিস আদালতে সেবা নিতে গেলে দারোয়ান থেকে সর্বোচ্চ কর্তা পর্যন্ত সেবা গ্রহীতার সঙ্গে যে অসৌজন্যমূলক, অভদ্র ও অসম্মানজনক আচরণ করে তা কি কেবলই ঘুষ বা উৎকোচ পাওয়ার জন্য? না, একদমই না; একজন সেবাগ্রহীতাকে সালাম আদাব বিনিময় করা, বসতে বলা, সমস্যার কথা জানতে চেয়ে তার সমাধানের পথ বাতলে দেয়ার মতো সভ্য আচরণ কোনো পুস্তক থেকে পাওয়া যায় না। এগুলো শিখাতে হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে । যেহেতু সেইপথ আমরা তৈরি করতে পারিনি তাই কর্কশ, রুক্ষ ও অপমানজনক আচরণের মতো এক ক্ষত জেঁকে বসেছে প্রতিটি চেয়ারে; কারণ জ্ঞান-বিজ্ঞানে উৎকর্ষতা অর্জন তো দূরের কথা, যেই শিক্ষা নিজের ভাষায় নিজের মানুষের সঙ্গে একটু সুন্দর ও বিনয়ী আচরণ করতে শেখায় না সেই শিক্ষাকে ব্যর্থ বলা কি ভুল? এবার মঞ্চে কথা বলতে আসছেন জনাব---
===========
যে শিক্ষকের ছাতার হাতল ভাঙা, পোশাকে আলগা হাতের সেলাই, জুতার পট্টির কারণে পায়ে ফোস্কা পরছে এরকম একটা সিস্টেম যে বিলুপ্ত না হয়ে টিকে আছে, সেটাই পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য হওয়ার দাবি রাখে! কেউ যদি বলে বাংলাদেশের চেহারা যেমন, তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চেহারাও তেমন, তাহলে তার অ্যালগরিদমে কিঞ্চিৎ ভুল হবে। কারণ গাড়ি ইঞ্জিনকে চালায় না, ইঞ্জিন গাড়িকে চালায়; তাই দেশের ইঞ্জিন তথা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা আমূল সংস্কার করা একান্ত পরিহার্য। এবারে মঞ্চে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য উপস্থাপন করবেন জনা……
=========
প্রাথমিক শিক্ষায় গলদ থাকলে সে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। বেতন ও সুবিধাদি বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের অব্যাহত প্রশিক্ষণের মধ্যে রাখতে হবে। খারাপ চিকিৎসকের কাছে সন্তানের চিকিৎসার দায়িত্ব দিয়ে যেমন নিরাপদ বোধ করা যায় না তেমনি খারাপ শিক্ষকের কাছেও শিশুদের শিক্ষার ভার দিয়ে নিরাপদ থাকা যায় না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের পর পিটিআই থেকে ১৮ মাসের ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন সম্পন্ন করতে হয়। এটা ভালো উদ্যোগ। এর পরও প্রশিক্ষণের ধারাবাহিকতা থাকা উচিত এবং বছরে অন্তত ১০ দিন হলেও শিক্ষকদের আবাসিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে এবার মঞ্চে আসবেন----
=====
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের প্রতিযোগিতা করতে শেখায়। তোমার সঙ্গে আমার, আমার সঙ্গে ওর। ছোট ছোট শিশুরা বন্ধু হয় না, হয় একে অপরের প্রতিযোগী। একজন আরেকজনকে টপকে যাবে, পেছনে ফেলবে, মনে প্রাণে এই চেষ্টা। শিশুদের সঙ্গে যুক্ত হয় মা-বাবা। এক লজ্জাহীন উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে পড়ে সন্তান, মা, বাবা। এতে হয়তো একটা এ প্লাস আসে। কিন্তু শিশুর জীবন থেকে মাইনাস হয়ে যায় বন্ধুত্ব, অন্যের প্রতি ভালোবাসা, মানবতাবোধ, মমত্ব। নৈতিকভাবে অতি দুর্বল হয়ে বেড়ে ওঠে শিশুরা। সিস্টেম শিশুকে অসহনশীল করে তোলে। এর ফলাফলে সামগ্রিক জাতি হিসেবেই আমরা ক্রমেই অসহনশীল, অসহিষ্ণু হয়ে উঠছি। এবার মঞ্চে কথা বলতে আসছেন জনাব---