১৫০ স্বাস্থ্য গবেষণা
১৫০ স্বাস্থ্য গবেষণা
০০১ ▌হাত ধোয়া কেন দরকার:
অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় নাকে মুখে হাত দেয়া বা হাত ভালভাবে না ধুয়ে খাদ্য খেলে বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অন্যান্য জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। সঠিক হ্যান্ড ওয়াসিং পদ্ধতিতে ৮০ শতাংশ রোগ ঠেকানো যায়। যে কোন সাবান দুই হাতে লাগিয়ে ১০-১৫ সেকেন্ড সময় ধরে আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে, নখে, হাতের সামনে-পিছনে ও কবজিতে ভালভাবে ঘষা উচিত। হাত মোছার সময় কাপড় বা তোয়ালেটাও যেন পরিষ্কার থাকে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
০০২ ▌প্রতিদিন গোসল ও সাবান ব্যবহার নয়:
প্রতিদিন গোসল না করার পক্ষে আরও একটি যুক্তি দেখাচ্ছেন গবেষকরা। সেটি হল ব্যাকটেরিয়ার ধ্বংস হওয়া। শরীর তার নিজের প্রয়োজনে কিছু ভাল ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয়। যা টক্সিনের হাত থেকে ত্বককে বাঁচায়। কিন্তু প্রতিদিন গোসলের ফলে সেগুলোর মৃত্যু হয়। তাতে ক্ষতি হয় শরীরেরই। প্রতিদিন সাবান ব্যবহারও একেবারে অনুচিত।
০০৩ ▌সকালে খালি পেটে পানি পানের উপকারিতা:
১) খালি পেটে পানি খেলে সহজে পেট পরিষ্কার হয়। ২) সারা রাত ধরে যে রেচন পদার্থগুলো বা টক্সিনগুলো কিডনিতে জমা হয়, সকালে খালি পেটে পানি পান করলে সেই টক্সিনগুলো মলমূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। ৩) সকালে খালি পেটে পানি খিদে বাড়ায় এবং হজমশক্তিওবাড়ে। ৪) ঘুম থেকে উঠে অনেকের মাথাব্যথা করে। শরীরে পানির মাত্রা কমে যাওয়া মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। সারারাত শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি যায় না। তাই সকালে উঠে যদি খালি পেটে পানি পানে মাথার যন্ত্রণা দূর হয়। ৫) যারা ডায়েটের মাধ্যমে ওজন কমাতে চান, তারা অবশ্যই এই অভ্যাসটি বজায় রাখবেন কারণ বেশি পানি পানে শরীরে বাড়তি ফ্যাট জমবে না। ৬) ঘুমের ক্লান্তি কাটিয়ে শরীরে নতুন এনার্জির সঞ্চার হয়।
০০৪ ▌খাওয়ার মাঝে বা খাবার পর পর পানি পান ক্ষতিকর:
খাবার খেতে খেতে পানি পান করা ঠিক নয়। কারণ, আমরা যখন খাবার খাই তখন পাকস্থলী থেকে পাচক রস নির্গত হয়। পাচক রস খাদ্যকে ভেঙ্গে ফেলে আর হজম হতে সহায়তা করে। কিন্তু পানি খেলে রসটা পাতলা হয়ে যায় এবং এটি কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। খাবার ধীরে ধীরে গ্রহণ করা উচিত। সবচেয়ে ভালো খাওয়ার শুরুর ৫-১০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি খেয়ে নেয়া। খাওয়ার মাঝে এক-দুই চুমুক পানি পান করা ক্ষতির নয়, তবে গ্লাস গ্লাস পানি পান নিষেধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। খাবারের আধ ঘন্টা পর পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। খাবার খাওয়ার মাঝে বা খাওয়ার পর পর পানি খেলে শরীরের যেই সকল আ্যসিড দরকার আমাদের পাচন প্রক্রিয়ার জন্য, তা পাতলা ও দুর্বল হয়ে যায় এবং পেটে ঠিক করে পাচন হয় না-যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই অপকারী। আবার প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি পান করলে, রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যায়। এতে হতে পারে ব্রেন সোয়েলিংও।
০০৫ ▌ঠাণ্ডা পানি পানের অভ্যাস হতে পারে বিপদের কারণ:
০১. বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়ার পরে ঠা-া পানি পানের অভ্যাস অস্বাস্থ্যকর। কারণ, এর ফলে শ্বাসনালীতে অতিরিক্ত পরিমাণে শ্লেষ্মার আস্তরণ তৈরি হয়, যা থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ০২. মাত্রাতিরিক্ত ঠা-া পানি পানের ফলে রক্তনালী সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত ঠা-া পানি পানে আমাদের স্বাভাবিক পরিপাকক্রিয়াও বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে হজমের মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। ০৩. শরীরচর্চা বা ওয়ার্কআউটের পর ঠা-া পানি একেবারেই পান করা যাবে না। এই সময় ঠা-া পানি পান করলে শরীরের তাপমাত্রার সঙ্গে বাইরের পরিবেশের তাপমাত্রার সামঞ্জস্য বিঘিœত হয়। ফলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ০৪. অতিরিক্ত ঠা-া পানি পান করলে ভেগাস ¯œায়ু উদ্দীপিত হয়ে ওঠে। ফলে আমাদের হৃদযন্ত্রের গতি অনেকটা কমে যেতে পারে।
০০৬ ▌প্রয়োজনের তুলনায় বেশি লেবুপানি খেলে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে:
লেবুতে উপস্থিত সাইট্রাস এসিড দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এর জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সর্বদা স্ট্র ব্যবহার করে লেবু পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। লেবুর রস সরাসরি পান করলে তা কিন্তু পেটের ভেতর গিয়ে এসিডিটি সৃষ্টি করতে পারে। এর জন্য সর্বদা খাবারে মিশিয়ে লেবুর রস পানের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে তাদের লেবু এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ সাইট্রাস এসিড সমৃদ্ধ ফল গুলিতে টাইরামাইন নামক এক ধরনের পদার্থ থাকে যা শরীরে প্রবেশ করে মাইগ্রেনের সমস্যা বৃদ্ধি করে। অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু পানি পান করলে রক্তে ভিটামিন সি এর পরিমাণ বাড়বে। যে কারণে আয়রনের পরিমাণও বাড়বে। যা আসলে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
০০৭ ▌পেট ভালো রাখতে যা খাবেন, যা খাবেন না:
আমাদের খাদ্যনালিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো আমাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে থাকে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, সঠিক হজম, পুষ্টির শোষণ ইত্যাদি কাজে সাহায্য করে থাকে। তবে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে যায়। তাই খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে যতœবান হতে হবে। যেসব খাবার এড়িয়ে যাবেন: * প্রক্রিয়াজাত খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। * চিনি, আঠালো সকল খাদ্য, এবং দুধ খাওয়া যাবে না (মাখন এবং ঘি খাওয়া যাবে)। * ফলের রস এবং শুকনো ফল এড়িয়ে যাওয়া ভাল। * সয়া খাওয়া যাবে না তবে ছোলা এবং মসুর ডাল খাওয়া যাবে। * কলা, ভুট্টা, আলু ও মটর খাওয়া যাবে না। যা খাবেন: * গাজর, পেঁয়াজ, মূলা এবং মিষ্টি আলু ও বাধা কপি খাবেন। * কমলা, আপেল, জাম্বুরা ও টমেটো,বাদাম ও দই খাওয়া যাবে। * বাসমতী চাল, বাদামি চাল ও হলুদ খাওয়া যাবে।
০০৮ ▌ভাত খাওয়ার পর যে কাজগুলো করতে মানা:
১. খাবার খাওয়ার পরপরই অনেকে ফল খায়। এটা একদম ঠিক নয়। কারণ এতে বাড়তে পারে এসিডিটি। খাবার গ্রহণের দু’এক ঘণ্টা আগে বা পরে ফল খাওয়া ভাল। ২. অনেকে দেখা যায় খাবার শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই ধূমপান শুরু করে। এটা খুবই মারাত্মক খারাপ অভ্যাস। খাবার খাওয়ার পর ধূমপান করলে তা ১০ গুণ বেশি ক্ষতি করে। ৩. খাবার গ্রহণের পর পরই গোসল করবেন না। কারণ খাওয়ার পরপরই গোসল করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন মাত্রা বেড়ে যায়। যা পরিপাকতন্ত্রকে দুর্বল করতে পারে। ফলে খাবার হজমের স্বাভাবিক সময়কে ধীরগতি করে দেয়। ৪. খাবার পরপরই ব্যয়াম করা ঠিক নয়। ৬. ভাত খাওয়ার পরপরই ঘুমিয়ে পড়া খুবই খারাপ অভ্যাস। এর ফলে শরীরে মেদ জমে যায়। ৭. খাবার পরেই অনেকে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে বসে যান। চায়ে থাকে প্রচুর পরিমাণ টেনিক এসিড যা খাদ্যের প্রোটিনকে বাড়িয়ে তোলে।
০০৯ ▌রাতে যে কারণে কম খাওয়া উচিত :
সকালে খাবার হাওয়া উচিত রাজার মত, দুপুরের খাবার খাওয়া উচিত প্রজার মত, আর রাতের খাবার খাওয়া উচিত ভিক্ষুকের মত। এর মানে হল সকালের খাবার ভারী, দুপুরের খাবার হালকা আর রাতের খাবার একদম হালকা। রাতে খাবার পর কিছুক্ষণ পরেই আমরা শুয়ে পড়ি। তেমন কোন কাজ করি না। তার ফলে ক্যালোরিও কম পোড়ে। তাই ভারী খাবার থেকে ক্যালোরি বেশি হবার সম্ভবনা থাকে। যেটা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত লেট নাইটে বা অধিক রাতে খাবার খান, তাদের করনারি হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৫ ভাগ বেশি। রাতের খাবার অবশ্যই সন্ধ্যার মধ্যেই সেরে নেবেন। এর কারণ হলো আমাদের পূর্বপুরুষরা লক্ষ লক্ষ বছর দিনের বেলা খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়িয়েছে, কিন্তু সন্ধ্যা হলেই ভয়ে গুহায় আশ্রয় নিয়েছে। রাতে না খাবার এ সিস্টেমটা আমাদের ডিএনএ-তে সেট হয়ে আছে।
০১০ ▌ছোট মাছ কেন খাবেন:
ছাড়া ছোট মাছে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। আয়রন, প্রোটিন, ফসফরাস, লাইসনি ও মিথিওনিনেরও উৎস ছোট মাছ। তবে এতে আয়োডিনের পরিমাণ কম থাকে। ছোট মাছে প্রোটিন ও পানীয় অংশ বেশি বলে দ্রুত জীবাণুতে আক্রান্ত হয়। তাই এসব মাছ কেনার পর দ্রুত রান্না করে ফেলা উচিত। ফ্রিজ থেকে বের করে দীর্ঘ সময় বাইরে না রাখা ভালো। কম তাপে এসব মাছ রান্না করবেন। ভাপে রান্না করলে আরও ভালো। ফার্মের মুরগি কি বিষাক্ত: পোল্ট্রি খাদ্য হিসাবে এমবিএম সবচেয়ে সস্তা’ যা কসাইখানার বর্জ্য নারী-ভুড়ি, চামড়া, হাড়, পা ইত্যাদি জ্বালিয়ে নিয়ে পরে শুকিয়ে গুঁড়ো করা হয়। এসব খাদ্যে বিষাক্ত ক্রোমিয়াম থাকে যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই ঘন ঘন পোল্ট্রি মুরগি খাবেন না।এ ধরনের মাংস নিয়মিত খেলে তা অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। কারণ মুরগিকে দ্রুত বাড়ন্ত করতে এবং সংক্রামক প্রতিরোধে নিয়মিত অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়।
০১১ ▌কখন খাবেন ফল? খাবার আগে, নাকি পরে:
খালি পেটে ফল খেলে আপনার শরীরে সৃষ্টি হতে পারে নানান সমস্যা। দেখা দিতে পারে অ্যাসিডিটি এবং গ্যাসের প্রবণতা। ডায়েটেশিয়ানরা দিনে অন্তত একটা ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েই থাকেন। তাই যাঁরা ডায়েটিং করছেন তাঁদের ক্ষেত্রে ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চে একটা ফল মাস্ট। তবে একদম খালি পেট বা খুব ভারী কিছু খাওয়ার পর ফল না খাওয়াই ভালো। ফল-সবজি আগেই ভালোভাবে ধুয়ে কাটা উচিত। আগে কেটে পরে ধোয়া হলে পানির সাথে অনেক খাদ্য উপাদান বা ভিটামিন বের হয়ে যায়। পাতিলের মুখ খোলা রেখে রান্না করা ঠিক নয়, পরিমিত তেল-মশলা দিয়ে একেবারে রান্না চড়িয়ে ভালোভাবে ঢেকে রান্না করতে পারলে ভালো। অবশ্য চর্বিজাতীয় খাদ্য ঢেকে রান্না করা ঠিক নয়।
০১২ ▌ বাড়তি লবণ নিষেধ কেন?:
লবণের ৪০ শতাংশ জুড়ে থাকে সোডিয়াম। যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, কিডনি ও যকৃতের সমস্যা ইত্যাদি আছে তাদের কম খেতে হবে সোডিয়াম। বিশেষজ্ঞদের মতে দৈনিক ১৫০০ মিলিগ্রামের কম লবন হলে খুবই ভালো, তবে ২৩০০ মিলিগ্রামের ওপরে কখনোই নয়। তো ১৫০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম আছে পৌনে এক চামচ লবণে। ২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম খেতে হবে এক চামচ। তার মানে দাঁড়াল, সারাদিনে এক চামচ পরিমাণের বেশি লবণ খাওয়া যাবে না। গড়পড়তা আমরা নাকি দৈনিক ৩০০০ থেকে ৩৫০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম খেয়ে ফেলি। এর একটা বড় অংশ আসে প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে। এ ছাড়া লবণ মূলত যোগ করা হয় খাবারে স্বাদ বাড়াতে। আর কেউ কেউ তো পাতে এরপরও আলাদা লবণ নিয়ে খান। কখনো আমরা নিজের অজান্তেই খাবারে লবণ যোগ করে ফেলি অভ্যাসবশত। যেমন সালাদ তৈরির সময় বা কাঁচা ফল খাওয়ার সময়।
০১৩ ▌ঘি-খাওয়ার ৫ উপকার:
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ঘি রাখলে শরীর যেমন ভালো থাকবে তেমনি চেহারা হয়ে উঠবে ঝলমলে। উপকারিতার ১। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে: যেহেতু ঘি প্রয়োজনীয় ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন ডি, কে, ই,এ সমৃদ্ধ তাই এই উপাদানগুলো প্রতিরোধ-ক্ষমতাসহ আমাদের দেহের নানাবিধ কার্য স¤পাদন করে। ২। হজম শক্তি বাড়ায়: ঘি একটি শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড যা অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলো বাড়িয়ে তোলে। ৩। স্মৃতি শক্তি বাড়ায়: ঘিয়ের স্বাস্থ্যকর স্যাচুরেটেড ফ্যাটগুলো চিন্তাশক্তি বাড়িয়ে তোলে। ৪। ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর থাকে: ঘিয়ের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান বার্ধক্যকে বিলম্বিত করে,ত্বক এবং চুলে ঔজ্জ্বল্য নিয়ে আসে। ৫। এনার্জি যোগায় ও ওজন কমায়: ঘিতে আছে স্বাস্থ্যকর ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও হার্ট ভাল রাখতে, দৃষ্টি শক্তি উজ্জ্বল রাখতে, ক্যানসার প্রতিরোধে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়তা করে।
০১৪ ▌যেসব খাবার একসঙ্গে খেলে বিষক্রিয়া হয়!:
তরমুজ ও পানি : চা ও দই : দই ও ফল : মাংস ও দুধ : দুধ ও লেবু : দুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক : কোমল পানীয় ও পুনিদা পাতা : কলায় উচ্চ মাত্রার চিনি বিদ্যমান রয়েছে যা শরীরে শক্তি জোগাতে কাজ করে। কিন্তু সকালে কলাসহ কোনো ফলই খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। কাগজে মোড়ানো খাবার খেলে হতে পারে মৃত্যু!-সাধারণত খবরের কাগজে লেখা ছাপা হয় নানা রকম রাসায়নিক পদার্থে তৈরি করা কালি দিয়ে। সেই কালি সরাসরি পেটে গেলে শরীর খারাপ, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। খবরের কাগজে কালি কিছুটা মিশে যায়, কিছুটা আলগা থাকে। যখন কোনো রান্না করা খাবার কাগজে মুড়ে দেয়া হয়, তখন সেই আলগা কালি লেগে যায় খাবারের গায়ে। ফলে সরাসরি সেই মারাত্মক ক্ষতিকর কালি চলে যায় পেটে। দীর্ঘদিন ধরে খবরের কাগজে মোড়া খাবার খেলে শারীরিক ক্ষতি হওয়া নিশ্চিত।
০১৫ ▌অ্যালাজি থাকলে খাবেন না এই খাবারগুলি:
০১. দুধ: তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে আড়াই শতাংশ শিশুর গরুর দুধে অ্যালার্জি থাকে। ০২. গম: শিশুদের যদি গমে অ্যালার্জি থাকে, তাহলে বার্লি বা অন্যান্য দানাশস্যের ক্ষেত্রেও সেই অ্যালার্জি দেখা যেতে পারে। ০৩. সয়া: সয়াবিনস, সয়া মিল্কে অ্যালার্জি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ১০ বছর বয়সের পর থেকে কমে আসে। ০৪. ডিম: বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডিমের সাদা অংশে থাকা প্রোটিন থেকে এই অ্যালার্জি হয়। ০৫. ফল ও সবজি: বেগুন, গাজর, টোম্যাটো, পিচ, কলা থেকে অনেকেই অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন। ০৬. ট্রি নাটস: কাজু, পেস্তা, আমন্ড, আখরোট নাটে অনেকেরই অ্যালার্জি থাকে। ০৭. শেল ফিশ: চিংড়ি, কাঁকড়া, ওয়েস্টার, শামুক জাতীয় খাবার যার শক্ত খোল রয়েছে তার থেকেই অ্যালার্জি হয় বিশ্বের প্রায় ৬০% মানুষের। ০৮. চিনা বাদাম: শিশুদের মধ্যে প্রায়ই চিনা বাদামে অ্যালার্জি দেখা যায়।
০১৬ ▌ কি খাওয়া উচিত?:
ব্রিটিশ জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ইট ওয়েল গাইড নির্দেশিকা অনুসারে # দিনে কমপক্ষে ৫ ভাগ ফল এবং শাক-সবজি খান। # মূল খাবার হিসেবে উচ্চমাত্রায় আঁশস¤পন্ন এবং শ্বেতসারবহুল খাবার যেমন আলু, রুটি, ভাত কিংবা পাস্তা রাখা উচিত। # প্রোটিন ভুলে গেলে হবে না- চর্বিহীন মাংস, মাছ, সামুদ্রিক খাবার, ডাল, তফু কিংবা লবণহীন বাদাম খেতে হবে। # দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার থাকতে হবে। # উচ্চমাত্রায় চর্বিযুক্ত খাবার, চিনি কিংবা লবণ যত কমানো যায় ততই ভালো কিন্তু যারা নিরামিষভোজী তাদের নির্দিষ্ট কিছু পুষ্টি গ্রহণ স¤পর্কে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যারা মাংস, দুগ্ধজাত খাবার এবং মাছ খায় তারা পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২ পায় যা স্বাস্থ্যকর রক্ত এবং ¯œায়ুতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয়। উদ্ভিদ-জাত খাবার থেকে আয়রনও কম পাওয়া যায়। তাই যারা মাংস খান না, তারা নিয়মিত গমের রুটি, আটা, শুকনো ফল এবং ডাল খাবেন।
০১৭ ▌ ক্যালসিয়াম কীভাবে খাবেন:
আমাদের দৈনন্দিন নানা খাবারেও পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে। ক্যালসিয়াম নামের খনিজ উপাদানটি আমাদের হাড় ও দাঁত শক্ত করে, ক্ষয় রোধ করে। স্নায়ুর, হৃৎ¯পন্দন, মাংসপেশির কাজেও ক্যালসিয়াম দরকার হয়। এটির অভাবে হাড়ক্ষয় বা অস্টিওপোরাসিস রোগ হতে পারে। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারগুলো হলো- দুধ, দই, পনির, কাঁচা বাদাম, সয়াবিন, আখরোট, সামুদ্রিক মাছ, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ, কালো ও সবুজ কচুশাক, শজনে পাতা, পুদিনা পাতা, সরিষাশাক, কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, চিংড়ি শুঁটকি, ডুমুর ইত্যাদি হলো উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার। ১০০ গ্রাম দুধে ক্যালসিয়াম আছে ৯৫০ মিলিগ্রাম, একই পরিমাণ পাবদা মাছে ৩১০ মিলিগ্রাম, সামুদ্রিক মাছে ৩৭২ মিলিগ্রাম, শজনে পাতায় ৪৪০ মিলিগ্রাম, ট্যাংরা মাছে ২৭০ মিলিগ্রাম।
০১৮ ▌ফ্রিজের খাবার যেভাবে খাবেন:
দুধ জাতীয় খাবার বেশিদিন ফ্রিজে রাখা উচিৎ নয়। বেশিদিন এগুলো ফ্রিজে রাখলে খাবারগুলোতে পানি জমতে থাকে এবং বিস্বাদ হয়ে যায়। সব থেকে বড় কথা দুধ জ্বাল দেওয়ার পরেই ফ্রিজে রাখবেন না কিছুক্ষণ বাইরে রেখে ঠা-া হতে দিয়ে তবেই ফ্রিজে রাখবেন। ফ্রিজে সংরক্ষিত মাংস এবং মাছ, একবার ফ্রিজ থেকে বের করে তা আবার ফ্রিজে রাখা উচিত না। টাটকা শাকসবজি, ফলমূল ফ্রিজে অবশ্যই রাখুন। কিন্তু দু’ থেকে তিন দিনের বেশি নয়। তাহলে তার মধ্যে জন্মায় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। রান্না করা খাবার সংরক্ষণ করার জন্য রেফ্রিজারেটর অত্যন্ত উপকারী। তবে সেটা তিন থেকে চারদিনের বেশি নয়। আর একবার ফ্রিজ থেকে বের করা খাবার কখনোই দ্বিতীয়বার ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। রান্না করা খাবার বারবার ফ্রিজ থেকে বের করে গরম করে খেলে খাদ্যের পুষ্টিগুণ চলে যায় এবং পেঁয়াজ জাতীয় খাদ্য বার বার গরম করলে অনেক সময় ফুড পয়জনিং এর কারণ হয়।
০১৯ ▌ কারণে অকারণে খিদে পেলে করণীয়:
সময় অসময়ে খাই খাই ভাব শরীরে হরমোন জনিত সমস্যার পূর্বাভাস। কেউ দুঃশ্চিন্তায় ভুগলেও অতিরিক্ত খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১. একবারে পেট ভরতি করে ভাত না খেয়ে দুই, তিন ঘন্টা অন্তর অন্তর হেলদি খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। ২. খিদে পেলেই সঙ্গে সঙ্গে খাবার খাবেন না। বরং খিদে পেলে ১০ থেকে ২০ মিনিট পর খাবার খান। ৩. খেতে বসে কমপিটিশন নয় বরং কে কত আস্তে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন সেই অভ্যাস করুন। কারণ ঝটপট খেলে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। কিছুক্ষন পর আবার খিদে পেয়ে যেতে পারে। ৪. খাবার খাওয়ার আগে অথবা আধঘন্টা পরে পানি পান করু। এতে হজম প্রক্রিয়া ভালো হয়। আর খিদে পেলেই চিপস, চকলেট না খেয়ে হালকা কিছু পুষ্টিকর ¯œ্যাকস খেতে পারেন। ৫. অতিরিক্ত ফাস্টফুড না খেয়ে বাড়িতে মনপছন্দ কিছু বানিয়ে খান।
০২০ ▌খাবার দ্রুত খাচ্ছেন? জেনে নিন ক্ষতিকর দিক:
আস্তে আস্তে খেলে যেমন পরিতৃপ্তি পাওয়া যায় তেমনি স¤পূর্ণ পেট ভরার অনুভূতিও হয়। এতে করে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগেনা। বিষয়টি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক ধীরে সুস্থে খাওয়ার উপকারিতা। ১.আস্তে আস্তে খেলে পরিপাক ক্রিয়া সফল হয়। ফলে হজম হয় খুব ভালো। এতে পুষ্টিগুণও সঠিকভাবে যায় শরীরে। ২. খাদ্যের তৃপ্তি শান্ত মনের পরিবেশ এনে দেয়। ফলে আমাদের মানসিক চাপ কমে যায় অনেকটাই। ৩. আস্তে খেলে চিবাতে হবে বেশি। ফলে হজম স্বাভাবিক পথে হয়। ৪. আস্তে খেলে খাবার চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যেস বেড়ে যায়। এতে শক্তি ক্ষয় হয়ে থাকে। ৫. একসাথে প্রয়োজনের বেশি খাওয়ার অভ্যাসও থাকে না আস্তে খেলে। এতে ওবেসিটির একটা সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার কোনো জায়গা থাকে না।
০২১ ▌ মাছ-মাংস-ডিম বাদে কিসে প্রোটিন আছে?:
পুষ্টিবিদেরা বলেন, প্রতিদিনের ক্যালরি চাহিদার অন্তত ২০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রোটিন থেকে পূরণ করা উচিত। খাবারের এই উপাদান মানুষের মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে। শিশুদের শারীরিক বিকাশেও সাহায্য করে। প্রোটিন বা আমিষ মানেই মাছ-মাংস এমন ধারণা অনেকেরই আছে। আসলে মাছ-মাংস-ডিম-দুধ বাদে অন্য উৎস থেকেও প্রোটিন পাওয়া যায়। এগুলো তো প্রাণিজ আমিষ। পাশাপাশি উদ্ভিজ্জ আমিষ খেতে হবে। যেকোনো ধরনের ডাল ও বীজজাতীয় খাবারে প্রোটিন থাকে। শিমের বিচি, মটরশুঁটিও প্রোটিনের চমৎকার উৎস। সঙ্গে বাড়তি পাওনা এগুলোর মধ্যে আছে প্রচুর আঁশ, ভিটামিন বি ও আয়রন। দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে। বাদামও প্রোটিনের উৎস হিসেবে খুব ভালো। এই খাবারে আরও পাবেন উপকারী চর্বি (ওমেগা ফ্যাট) এবং আঁশ। তবে বাদাম লবণ ছাড়া খাওয়া ভালো।
০২২ ▌ যেসব খাবার ফ্রিজে রাখা উচিত নয়:
১) অনেকেই পাউরুটি ফ্রিজে রাখেন। এমনটা কিন্তু একদম করতে নেই। তা শক্ত হয়ে যায়।
২) ফ্রিজে কাটা কুমড়া রাখলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদি কাটা কুমড়ো রাখতেই হয়, তবে অবশ্যই তা কোনো প্লাস্টিকে মুড়ে রাখতে পারেন। ৩) অনেকে ফ্রিজে কলা রেখে দেন টাটকা থাকার জন্য। কিন্তু কলা ক্রান্তীয় এলাকার ফল। তাই তা ঠা-ায় সংরক্ষণ করা যায় না। ৪) ফ্রিজে রাখা টমেটোর সেই গুণ থাকে না, যা তাজা টমেটোর মধ্যে থাকে। ৫) আলু একেবারেই ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। তা ভীষণভাবে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। একইভাবে পিঁয়াজ কিংবা রসুনও কখনও ফ্রিজের মধ্যে রাখবেন না। ৬) নিজের কফির প্যাকেটটি ফ্রিজে রাখার অভ্যাস থাকলে কিন্তু বড় ভুল করছেন। কফি এমনই এক বস্তু যা পারিপার্শ্বিক সামগ্রীর দ্বারা খুব তাড়াতাড়ি প্রভাবিত হয়। এতে কফির সুগন্ধ নষ্ট হয়ে যায়। ৭) কলা ফ্রিজে রাখলে কালো হয়ে যায়।
০২৩ ▌অধিক রাতে খাবার খেলে বাড়ে রোগ:
যারা অধিক রাতে খাবার খান তাদের জন্য দুঃসংবাদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ। তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের হারভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর গবেষণা। একটানা ১৬ বছর যাবৎ গবেষণা চালিয়ে বিশেষজ্ঞগণ দেখেছেন, যারা নিয়মিত লেট নাইটে বা অধিক রাতে খাবার খান তাদের করনারি হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৫ ভাগ বেশি। শুধু রাতে দেরিতে খাওয়ার বিষয়টি নয়, বিশেষজ্ঞগণ রাতের খাবারে কি পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করা হচ্ছে তাও বিবেচনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
০২৪ ▌সকালে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা:
ডায়াবেটিসে উপকারী- ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইডেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ছোলা ভাল। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এছাড়া আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি- শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ছোলার ডায়াটারি ফাইবার খাবারে অবস্থিত পাতলা আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই শুধু রমজান মাস নয়, ১২ মাসেই ছোলা হোক আপনার সঙ্গী। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ- যে সকল অল্পবয়সী নারীরা ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার বা ছোলা খান, তাদের হাইপারটেনশনের প্রবণতা কমে যায়।এতে প্রচুর ফলিক অ্যাসিড থাকায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। মেরুদ-ের ব্যথা দূর করে- এছাড়াও এতে ভিটামিন ‘বি’ও থাকায় কমায় মেরুদ-ের ব্যথা, ¯œায়ুর দুর্বলতা।
০২৫ ▌ খালি পেটে যে খাবার উপকারের বদলে ক্ষতি করে:
দুধ-সয়াবিন মিল্ক- খালি পেটে দুধ খেলে দুধে থাকা প্রোটিন শরীর পুরোমাত্রায় গ্রহণ করতে পারে না। সবসময়ে পাউরুটি, বিস্কুটের সঙ্গে খান। চা-কফি- কখনই খালি পেটে এই চা-কফি খাবেন না। কারণ, চা-এর মধ্যে অ্যাসিডের উপস্থিতি আর কফিতে থাকে ক্যাফেইন। খালি পেটে খেলে এই অ্যাসিড এবং ক্যাফেইন পাকস্থলীর আস্তরণের ক্ষতি করে দেয়। খাওয়ার আগে অন্তত এক গ্লাস পানি খেয়ে নেবেন। কলা- খালি পেটে কখনও কলা খাবেন না। এতে শরীরে ম্যাগেনসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সোডা-কোল্ডড্রিংক- সোডা-কোল্ডড্রিংকে যে চিনি বা আর্টিফিশিয়াল সুইটনার থাকে, খালি পেটে খেলে সেগুলি শরীরের পক্ষে যথেষ্টই ক্ষতিকারক হতে পারে। মশলাদার খাবার- খালি পেটে মশলাদার খাবার খেলে পাকস্থলীর স্বাভাবিক অ্যাসিডগুলির উপর প্রভাব পড়ে। যার কারণে পেটে টান ধরা বা ব্যথা হতে পারে।
০২৬ ▌ কি খাবারে হয় হাড়ের ক্ষয়:
১। অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবারÑদেহ থেকে ক্যালসিয়াম বের করে দিয়ে হাড়কে দুর্বল করে দেয়। চিপস, বিভিন্ন ফাস্ট ফুড, কাঁচা খাবারে বা সালাদে মেশানো লবণ হাড়ের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ ছাড়াও খাওয়ার সময় খাবারের পাতে বাড়তি লবণ খাওয়াও হাড়ের জন্য বেশ ক্ষতিকর। ২। সফট ড্রিংকস বা নরম পানীয়-সফট ড্রিংকস প্রতিনিয়ত হাড় ক্ষয় করে চলেছে। এ সব নরম পানীয়তে রয়েছে ফসফরিক অ্যাসিড যা প্রসাবের মাধ্যমে দেহের ক্যালসিয়াম শরীর থেকে বের করে দেয়। যার ফলে অস্থি ক্ষয়ে যেতে থাকে। ৩। ক্যাফেইন- চা ও কফির ক্যাফেইনও হাড়ের ক্ষয়ের জন্য দায়ী। দিনে দু’কাপের বেশি চা-কফি পান করা একেবারেই উচিত নয়। ৪। অতিরিক্ত মাংস খাওয়া- অতিরিক্ত মাংস মানেই অতিরিক্ত প্রোটিন। এই প্রোটিন শরীরে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি করে, যাকে নিস্ক্রিয় করতে ক্যালসিয়াম কাজ করে থাকে। ফলে হাড়ে ক্যালসিয়াম কম পৌঁছে। এতে হাড়ের ক্ষতি হয়।
০২৭ ▌ কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, এড়িয়ে চলবেন যেসব খাবার:
১। কাঁচকলা-যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তারা কাঁচকলা খেলে ফলাফল খারাপ হবে। তবে পাকা কলায় যথেষ্ট ফাইবার থাকায় খাওয়া যেতে পারে। ২। মাংস-রেড মিট জাতীয় খাবার-অন্ত্রে বহুক্ষণ থাকে, হজম হতে সময় লাগে; কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। ৩। দুধ- দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (যেমন: পনির, আইসক্রিম ইত্যাদি) কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতে পারে অনেকের। কারণ এ ধরনের খাবারে ফাইবারের পরিমাণ খুব কম। তবে টক দই খুবই উপকারি। ৪। তেলে ভাজা-¯œাকস জাতীয় খাবার-ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, পটেটো চিপস বা ওই জাতীয় তেলে ভাজা খাবার অন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর। এগুলি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। ৫। হিমায়িত খাবার ও বেকারি পণ্য- সংরক্ষিত বা প্রক্রিয়াজাত খাবারে পানি শুকিয়ে ফেলা হয় এবং এই খাবারগুলিতে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
০২৮ ▌ ওমেগা-৩ কোন্ খাবারে পাবেন:
অনেকে নিয়মিত দোকান থেকে ওমেগা ৩ ক্যাপসুল কিনে খান। কয়েক ধরনের ওমেগা ৩ চর্বি আছে প্রকৃতিতে। এর মধ্যে আলফা লিনোলিক অ্যাসিড পাওয়া যায় কিছু উদ্ভিজ্জ খাবার বা তেলে। ইকোসা প্যান্টনোয়েক অ্যাসিড এবং ডোকোসা হেক্সোনোয়েক অ্যাসিড পাওয়া যায় সামুদ্রিক খাবারে। * উদ্ভিদ তেলে ওমেগা-৩ চর্বি আছে। এ বিষয়ে সবচেয়ে ভালো হলো তিসির তেল ও ক্যানোলা তেল। তবে সয়াবিন তেলেও আছে কিছুটা। *সামুদ্রিক মাছের তেল ওমেগা ৩-এর চমৎকার উৎস। দেশীয় মাছের মধ্যে ইলিশ, রুপচাঁদা ইত্যাদি মাছের তেলে এর পরিমাণ বেশি। *বিভিন্ন ধরনের বাদামে বেশ ওমেগা ৩ আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আছে ওয়ালনাট বা আখরোট, পেস্তা ইত্যাদি বাদামে। প্রতিদিন একটু বাদাম ওমেগা ৩ জোগাবে। *মাছের ডিমে ক্ষতিকর চর্বির সঙ্গে ওমেগা ৩ উপকারী চর্বিও আছে বেশ ভালো পরিমাণে। *কিছু বীজজাতীয় খাবারেও ওমেগা ৩ আছে।
০২৯ ▌বাসি খাবার খাচ্ছেন? হতে পারে যেসব সমস্যা:
এমন কিছু বিশেষ খাবার আছে, যা বাসি একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। ১. মুরগির মাংস : মুরগির মাংস রান্না করে ফ্রিজে রেখে দিয়ে বারবার গরম করলে এতে থাকা প্রোটিনের ক¤েপাজিশন অনেকটাই পাল্টে যায়। বদহজম হতে পারে এর থেকে। ২. ডিম সিদ্ধ : ডিমের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণে প্রোটিন থাকায় একবার গরম করে ফ্রিজে রাখলে তাতে টক্সিন তৈরি হতে পারে, যার ফলে আমাদের সহজেই বদহজম হতে পারে। ৩. আলু : আলু সিদ্ধ করে ফ্রিজে।রাখলে সে ঠা-া আলুতে তৈরি হয় এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া, যার নাম বটুলিজম? গরম করলে এই ব্যাকটেরিয়া অনেক বেড়ে যায়। এর থেকেই হতে পারে হজম, অম্বল ও পেটের নানা সমস্যা। ৪. ভাত : বারবার ভাত গরম করে খেলে সেই ভাতের মধ্যে বেসিলস সিরিয়াস ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হয়, যা আমাদের শরীরে ডায়রিয়া পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে।
০৩০ ▌কি খাবেন? ভাত না রুটি?:
ভাতে রুটির চেয়ে বেশি ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেট থাকে। অন্যদিকে, ভাতের তুলনায় রুটিতে প্রোটিন, ভিটামিন, সোডিয়াম, আঁশ ও মিনারেল বেশি থাকে। তাই যারা হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাদের জন্য ভাতের চেয়ে রুটিই ভালো। তাই যাদের ওজন বেশি তারা রুটির উপর নির্ভর করতে পারেন। যাদের বদহজম, ডায়রিয়ার সমস্যা আছে, তারা ভাতের উপর নির্ভর করতে পারেন। অন্যদিকে, ভাত ব্লাড সুগার বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ভাতের চেয়ে রুটিই উত্তম। রুটি ও ভাতে আয়রনের পরিমাণ সমান হলেও ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়ামের পরিমাণ রুটির তুলনায় ভাতে কম।চালের পুষ্টিমান ধান ছাঁটাইর সময় নষ্ট হয়, সর্বশেষ অপচয় হয় ভাতের মাড় নিংড়ানোর সময়। ভাতের মাড়ে ক্যালসিয়াম, লৌহ, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, মেলেনিয়াম-এ ছয়টি উপাদান রয়েছে। পুষ্টি বিবেচনায় আতপ চাল ও ডালের খিচুড়ি ও জাউ রান্নাই উত্তম।
০৩১ ▌ পেটপুরে’ ভাত খাওয়া কেন ভালো নয়:
পেটপুরে ভাত খাওয়াটা আসলে এমন মারাত্মক একটি অভ্যাস, যা আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে মৃত্যুর দিকে! কীভাবে? ১) সারাদিনে গুণে গুণে মাত্র ৩ বেলা খান। কিন্তু তবুও কমে না ওজন? ভাতে অন্যান্য খাবারের তুলনায় অনেক উচ্চ মাত্রার কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা আপনার শরীরে অযথাই অনেকগুলো ক্যালোরি যোগ করে ফেলে। এই বাড়তি ক্যালোরি বাড়তি ওজন হয়ে জমে যায় শরীরে। আর দুপুরে বা রাতে পেটপুরে ভাত খাবার পর ঘুমিয়ে গেলে তো কথাই নেই! শরীরের সর্বনাশ হয়ে যায়। চায়ের কাপে এক কাপ ভাত, যারা খুব পরিশ্রম করেন তাদের জন্য দুই কাপ ভাতই যথেষ্ট। সাথে খেতে হবে প্রচুর সবজি ও প্রোটিন। ভাতের হাই কার্বোহাইড্রেট প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট তৈরি করে দেহে, যা আপনার রক্তনালীগুলোকে ক্রমশ সংকুচিত করে ফেলে এবং এক পর্যায়ে ধমনীতে দেখা যায় ব্লক ও বন্ধ হয়ে যায় রক্ত সরবরাহ।
০৩২ ▌ খাবারের ফরমালিন দূর করবেন যেভাবে:
খাবার থেকে ফরমালিন অপসারণ করতে চাইলে পানির কল ছেড়ে তার নিচে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখতে হবে। কারণ কাঁচা সবজি ও ফলের ত্বকে অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র রয়েছে। আর পানিতে ডুবিয়ে রাখলে ফরমালিন আরো ভালোভাবে খাবারে মিশে যেতে পারে। ভিনেগার বা লেবুর রসে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রেখেও ফরমালিন দূর করা যায়।
০৩৩ ▌মোজায় দুর্গন্ধ দূর করতে যা করবেন:
১) সুতির মোজা ব্যবহার করুন। ২) যাদের এমন সমস্যা হয়, তাদের ঘন ঘন চা বা কফি না খাওয়াই ভাল। ৩) মশলাদার (¯পাইসি) খাবার এড়িয়ে চলুন ৪) সপ্তাহে অন্তত একবার জুতার ভিতরে সুগন্ধি পাউডার দিয়ে, ভাল করে কাপড় দিয়ে মুছে নিন। ৫) মাঝে মধ্যে জুতাগুলোকে রোদে দিন। ৬) একই মোজা দু’দিনে ব্যবহার করবেন না। ৭) নিয়মিত পা পরিষ্কার রাখুন। ৮) ভাল করে পা মুছে, ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
০৩৪ ▌ডিম পোচ না সেদ্ধ? কোনটায় উপকার বেশি?:
১) চিকিৎসকদের কথায় ডিমে প্রাকৃতিকভাবেই প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। সকালের নাস্তায় একটা সেদ্ধ ডিম দরকার। ২) ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি। যা কিনা শিশুদের দাঁত, হাড় শক্ত করে। গর্ভবতী নারীদেরও নিয়মিত খাওয়া উচিত সেদ্ধ ডিম। ৩) কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে সেদ্ধ ডিম। ৪) অনেকের ভ্রান্ত ধারণা ডিম খেলে নাকি মেদ বৃদ্ধি হয়। তবে চিকিৎসকরা বলছেন উলটো কথা। সেদ্ধ ডিম খেলে শরীর থেকে মেদ ঝরে দ্রুত। ৫) হঠাৎ করে ক্লান্ত বোধ করছেন বা প্রেসার কমে গেছে? এমন হলে শরীরে দ্রুত এনার্জি আনতে ডিম খান। তবে উপকারিতার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকরা সতর্কও করেছেন। তাদের মতে, সেদ্ধ ডিম খাওয়া শরীরের জন্য ভালো হলেও বেশি খাওয়া ভালো না। যারা উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন তাদের বেশি সেদ্ধ ডিম খাওয়া যাবে না।
০৩৫ ▌ দুধ চা ভালো, না লাল চা:
দুধ চা কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যাও বাড়ায়। দুধ চায়ে ট্যানিন থাকে যা আমাদের পেটের অ্যাসিড বাড়িয়ে দেয় এবং তার ফলে প্রায়শই কোস্টকাঠিন্য হয়ে থাকে। খালিপেটে চা আমাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনেও অস্বস্তির ভাব এনে দেয় এবং গ্যাস্ট্রাইটিস এর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। গ্রীন টি খেলে শুধু মন নয় শারীরিক নানান সমস্যার সমাধান হয়। এমনকি ত্বক ও চুল সুন্দর রাখতে এই চা খুবই কার্যকরী। আদা চা কমাবে, মানসিক চাপ: চায়ের সাথে যদি আদা যুক্ত হয় তা হলে এর উপকারিতা বাড়ে কয়েকগুণ। কারণ আদায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংস করে। জ্বরজ্বর ভাব, গলা ব্যথা ও মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে আদা-চা। আদা হজমেও সহায়ক। পাকস্থলীর নানা সমস্যা দূর করে আদা চা।
০৩৬ ▌হেঁচকি উঠলে কি করবেন:
বুক এবং পেটের সংযোস্থলে ডায়াফ্রাম নামের একটি পাতলা পর্দা রয়েছে, যা দু-দিকের প্রত্যঙ্গগুলোকে আলাদা করে রেখেছে। এই পর্দায় কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পর্দা দ্রুত সংকুচিত-প্রসারিত হতে শুরু করে। ফলে দেখা দেয় হেঁচকি। ▪ সাধারণ কারণ : খাবার খুব ঝাল বা টক অথবা ঝাঁঝালো হলে হেঁচকি উঠতে পারে। তবে এটা ক্ষণস্থায়ী। খানিকক্ষণের মধ্যে ব্যাপারটা স্বাভাবিক হয়ে যায়। হলে কি করবেন? ▪ ঠাণ্ডা পানি খান দু-এক গ্লাস। পারলে তাতে বরফ দিয়ে নিন। ▪ জোরে শ্বাস টেনে শ্বাস বন্ধ করুন। এবার খুব জোরে শ্বাস ছাড়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি করুন। শ্বাস ছাড়বেন না। দরকার হলে নাক-মুখ চেপে রাখুন। একে বলে ভালসালভা ম্যানিউভার।
০৩৭ ▌হঠাৎ ঘাড় শক্ত হলে করণীয়:
সকালবেলা একদিন ঘুম থেকে জেগে দেখেন ঘাড় শক্ত হয়ে গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে ঘাড়ের পেশি আকস্মিকভাবে টান খাওয়ার কারণে। কারণগুলো হচ্ছে- * ঘাড় বাঁকা করে শোয়া। * ভুল ভঙ্গিতে ঘাড় বাঁকা করে দীর্ঘসময় ধরে টিভি দেখা বা বই পড়া বা কম্পিউটারে কাজ করা। * কোনো আকস্মিক আঘাত (যেমন হঠাৎ ব্রেক কষার কারণে) * দীর্ঘসময় ধরে ঘাড় ও কাঁধের মাঝখানে ফোন ধরে কথা বলা ইত্যাদি। তবে বেশিরভাগ শক্ত ঘাড় এক-দুই সপ্তাহের মধ্যেই সেরে যায়। হঠাৎ এ সমস্যা দেখা দিলে ঘাড়ে ঠাণ্ডা সেঁক দেওয়া যেতে পারে। পাতলা বালিশ ব্যবহার করে শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন। অনেকক্ষণ ঘাড় নিচু করে কাজ করবেন না। ক¤িপউটারের মনিটরের উচ্চতা ঠিক করুন। শুয়ে কাত হয়ে টিভি দেখা, বই পড়ার মতো কাজ চলবে না।
০৩৮ ▌কাঁধ ব্যথা হলে করণীয়:
কাঁধের সন্ধিতে ব্যথা। হাত ওপরে তুলতে পারেন না। চুল আঁচড়াতে কষ্ট, পেছনে বোতাম লাগানো বা পেছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখা অসম্ভব হয়ে উঠছে। এই সমস্যার নাম ফ্রোজেন শোল্ডার। কোনো আঘাত বা অস্ত্রোপচারের পর কাঁধের নড়াচড়া কম করা হলে সন্ধিটা জমে যায়।তবে ৯০ শতাংশ ফ্রোজেন শোল্ডার ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে সেরে যায়। পরামর্শ ● হাতের পেন্ডুলাম মুভমেন্ট করুন। অনেকটা নৌকা বাওয়ার মতো ব্যায়াম। ● সুস্থ হাতটি দিয়ে আক্রান্ত হাতকে ধরে ওপর দিকে তুলুন, এবার মাথার পেছন দিকে নেওয়ার চেষ্টা করুন। এই ব্যায়ামটা দিনে কয়েকবারই করুন। ● আক্রান্ত হাত দিয়ে সামনে বাতাসে বৃত্ত তৈরি করুন। যতটা সম্ভব বড়ো পরিধির বৃত্ত তৈরি করতে চেষ্টা করুন।
০৩৯ ▌হাতে বা পায়ে ঝিঁঝি ধরা:
দীর্ঘক্ষণ বসা বা শোয়ার পর যদি হাত বা পা এমন অবস্থানে বেশ কিছুক্ষণ থাকে যেখানে সেটির ওপর লম্বা সময় ধরে চাপ পড়ে, তখন ঝিঁঝি ধরার সম্ভাবনা থাকে। আমাদের যে ধরনের ঝিঁঝি ধরার অভিজ্ঞতা হয়, তা সাময়িক এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। তবে বিভিন্ন কারণে দীর্ঘসময় ঝিঁঝি ধরার মতো ঘটনাও ঘটে থাকে। এছাড়া হাতে বা পায়ে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে ঝিঁঝি ধরতে পারে। ডায়বেটিসের কারণে হাত পায়ে ঝিঁঝি ধরে। দীর্ঘসময় ঝিঁঝি ধরার উপসর্গ থাকলে ডাক্তার দেখাতে হবে।
০৪০ ▌ হঠাৎ কেউ অজ্ঞান হলে কি করবেন?:
এক. প্রথম কাজ হবে জরুরি সেবাদানকারীকে ফোন করা। এখন ৯৯৯ নম্বরে কল করে জরুরি ব্যবস্থা সম্ভব। এ ছাড়া অনেক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস আছে। দুই. অজ্ঞান ব্যক্তিকে শুইয়ে দিন এক দিকে কাত করে, যাতে মুখে, গলায় যে লালা বা নিঃসরণ আছে, তা বেরিয়ে আসতে পারে। তিন. বুকের ওঠানামা থেকে লক্ষ করুন রোগী শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে কি না। যদি বাড়িতে বা আশপাশে কারও জানা থাকে কীভাবে মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস চালু করতে হয়, তবে তাঁকে ডাকুন। চার. পায়ের দিকটা একটু উঁচু করে দিন বা পায়ের নিচে বালিশ দিন। পাঁচ. ডায়াবেটিসের রোগী হলে রক্তে শর্করা কমে যেতে পারে, তাই মুখের ভেতর একটু চিনি দিয়ে দেওয়া ভালো। ছয়. রোগীর খিঁচুনি শুরু হলে আতঙ্কিত না হয়ে খিঁচুনি থামতে দিন। সবশেষ কথা, জ্ঞান ফিরে আসুক আর না আসুক তাকে প্রাথমিক পরিচর্যার পর যেকোনো হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে হবে।
০৪১ ▌পায়ের তলায় কড়া পড়েছে, কি করবেন:
পায়ের নিচের অংশের ত্বক শক্ত হয়ে যায় বা কড়া পড়ে অনেকের। সাধারণত অতিরিক্ত বা বারবার চাপ পড়ার কারণে চামড়ার কোনো অংশ এ রকম শক্ত হয়ে যায়। এতে ব্যথাও করতে পারে। ছোটো বা অসমতল জুতো পরে হাঁটলে কড়া পড়তে পারে। এ ছাড়া হাঁটাচলার অস্বাভাবিকতা, পায়ের ¯স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা, পায়ের অস্বাভাবিক আকৃতি, ডায়াবেটিস ইত্যাদি কারণেও কড়া পড়ে। বয়স্ক ব্যক্তিদের এই সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়। চিকিৎসা: গোসলের সময় হালকা গরম পানিতে ১০ মিনিট পা ডুবিয়ে রেখে পিউমিস স্টোন দিয়ে পুরু চামড়ার উপরের অংশটুকু ঘষে নিলে উপকার মেলে। ডায়াবেটিস ও স্লায়ুতন্ত্রের সমস্যা থাকলে চিকিৎসা নিতে হবে।
০৪২ ▌ হঠাৎ পা মচকে গেলে কী করবেন?:
পা ফুলে গেলে এবং প্রচ- যন্ত্রণা অনুভব হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিশ্রাম। যন্ত্রণা কমে গেলেও বিশ্রাম না নিয়ে হাঁটাহাঁটি, খাটাখাটুনি করলে গোড়ালির ফোলা থেকেই যাবে। তাই এ সময় ৫ থেকে ১০ দিনের বিশ্রাম নিন। পায়ের ফোলা ভাব কমাতে সবচেয়ে উপকারী বরফ। সরাসরি বরফ দেবেন না, একটা পরিষ্কার কাপড়ে বরফ পেঁচিয়ে সেটা দিয়ে সেঁক দেওয়াটা সঠিক উপায়। চোট পাওয়ার প্রথম ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা বা ফোলা না কমা পর্যন্ত প্রতি এক-দুই ঘণ্টা অন্তর ১০ থেকে ২০ মিনিট ধরে আইস প্যাক লাগান। এতে ফোলা ভাব অনেকাংশে কমে যাবে। পা যত নামিয়ে বা নিচে ঝুলিয়ে রাখবেন, তত ফোলা বাড়বে। তাই দিনে অন্তত দুই থেকে তিন ঘণ্টা পা ওপরে তুলে রাখুন। শোয়ার সময় হার্ট লেভেলের থেকে পা উঁচুতে রাখবেন। এতে খুব দ্রুত ফোলা ভাব কমে আসবে। কেবল জয়েন্টের চারপাশের টান লাগা মনে হলে; এ জন্য তেমন কোনো চিকিৎসারও দরকার নেই।
০৪৩ ▌পায়ের ক্লান্তি দূর করুন সহজেই:
এত হাঁটাহাটিতে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে পায়ের পাতায়। পায়ের এই ক্লান্তি কাটাতে কিছু ব্যায়াম। টো রেইজ: চেয়ারে বসে পায়ের পাতা মাটিতে রাখুন। এ বার গোড়ালি মাটির সঙ্গে লাগিয়ে রেখে টো উপর দিকে তুলুন। একই ভাবে টোয়ের উপরে ভর দিয়ে গোড়ালিও তুলুন। এ ভাবে দশ বার করতে হবে। টো ¯েপ্ল: গোড়ালি মাটিতে রেখে টো উপর দিকে তুলতে হবে। আঙুলগুলিকে ছড়িয়ে দিন এ বার। দশ থেকে পনেরো বার এই ¯েপ্ল করুন। পাঁচটা আঙুল মোটা রাবার ব্যান্ড দিয়ে বেঁধেও এই ব্যায়াম করতে পারেন। এতে আরাম বেশি পাবেন। টো এক্সটেনশন: বাঁ পায়ের উপরে ডান পা তুলে বসুন। হাত দিয়ে ডান পায়ের টো পায়ের উলটো দিকে ধরে টানুন। এ ভাবে পাঁচ বার করে পা বদল করুন। ডান পায়ের উপরে বাঁ পা তুলে বসুন। এর পরে বাঁ পায়ের টো উলটো দিকে ধরে টানুন। ব্যায়াম শেষে ঈষদুষ্ণ পানিতে মিনিটখানেক পায়ের পাতা ডুবিয়ে বসুন। পানি থেকে পা তুলে ভালো করে মুছে বিশ্রাম নিতে হবে।
০৪৪ ▌ হঠাৎ কাটা ছেঁড়ায় কি করবেন?:
কাটা জায়গাটা পরীক্ষা করে দেখুন, ক্ষত কতটা গভীর এবং ব্যাপক। যদি কোনো বস্তু বা কাচের টুকরা লেগে থাকে, সেগুলো উঠিয়ে নিন। এরপর জায়গাটা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। যদি দেখেন, রক্ত পড়া বন্ধ হচ্ছে না, তবে তুলা বা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে জায়গাটা প্রয়োজনমতো ১০ থেকে ১৫ মিনিট চেপে ধরে রাখুন। ক্ষতস্থান একটু উঁচু করে ধরে রাখলে তা রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে। খুব ছোটো ক্ষত হলে অ্যান্টিসেপটিক লাগিয়ে কাটা স্থান খোলা রাখতে পারেন। ক্ষত বড়ো হলে গজ দিয়ে ব্যান্ডেজ করে নেওয়া ভালো। মূলত এ ক্ষেত্রে শিশুদের ইমিউনোগ্লোবিউলিন (টিআইজি) ইনজেকশন দিতে হয়। আর কোনো ক্ষতে টিটেনাস ইনজেকশন লাগবে কি না, সেটা নির্ভর করে ক্ষতের প্রকৃতি, কত দিন আগে টিকা দেওয়া হয়েছিল ইত্যাদির ওপর। রক্ত পড়া বন্ধ না হলে, ক্ষত খুব গভীর হলে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে অজ্ঞান হলে হাসপাতালে যেতে হবে।
০৪৫ ▌ রক্তস্বল্পতায় করণীয়:
১) রক্তাল্পতায় আক্রান্ত ব্যক্তি অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠেন। সামান্য কাজ করলেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ২) অনেক সময় রক্তাল্পতায় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন অংশের ত্বক ফ্যাকাশে হতে শুরু করে। ৩) আয়রনের অভাবে রক্তাল্পতা হতে পারে। রক্তাল্পতায় আক্রান্ত ব্যক্তির আয়রনের অভাবে অতিরিক্ত চুল ঝরে যেতে শুরু করে। ৪) রক্তাল্পতায় আক্রান্তকে বিষণœতায় ভুগতে দেখা যায়। সর্বক্ষণ দুর্বলতা আর মাথাব্যথা হওয়ার কারণে রোগীকে ক্রমশ বিষণœতা গ্রাস করে। ৫) রক্তাল্পতার আর একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হলো, হৃদ¯পন্দন বেড়ে যাওয়া। রক্তাল্পতার কারণে হৃৎপি- পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত শরীরে সঞ্চালনের জন্য পা¤প করতে পারে না। ফলে হৃৎ¯পন্দন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে যায়। প্রতিকারের উপায় : আয়রনের ঘাটতির কারণে রক্তাল্পতা হলে আয়রনযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। কিছু পুষ্টিকর খাবার শাকসবজি, দুধ, মধু, বিভিন্ন ফল ইত্যাদি খাবার বেশি খেতে হবে।
০৪৬ ▌ বেশি ঘাম হওয়ার মোকাবিলা কীভাবে করবেন? :
▪ পরিবারে বংশপরস্পরায় অনেকের অতিরিক্ত ঘাম হয়। ▪ হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিস এই দুই রোগে বেশি ঘাম হয়। ▪ যেকোনো ধরনের মানসিক চাপ ও চিন্তাভাবনা থেকে ঘাম হয়। ▪ থাইরয়েড হরমোনের বেশি মাত্রায় ক্ষরণ হলে বুক ধড়ফড়, ঘাম, ডায়ারিয়া, রোগা হয়ে যাওয় ইত্যাদি উপসর্গ হয়। ▪ আপনি যত মোটা হবেন তত ঘাম বেশি হবে। ▪ বুকে চাপের সঙ্গে অস্বাভাবিক ঘাম কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। ▪ রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়াÑঅস্বাভাবিক ঘাম, সঙ্গে বুক ধড়ফড় ও ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়া হাইপোগ্লাইসিমিয়ার লক্ষণ। পরামর্শ- ১. প্রথমত, দিনে তিন থেকে চার বার গোসল করতে হবে। ২. বেশি করে পানিপান করতে হবে, বিশেষত, গরমকালে। ৩. খাদ্যতালিকায় মরশুমি ফল ও শাকসবজি রাখুন। গবেষণায় দেখা গেছে, হজম ভালো হলে ঘাম কম হয়। ▪ হাত ও পায়ের তালু ঘেমে গেলে সাধারণত লোশান লাগাতে হয়।
০৪৭ ▌ঘাম থেকে পায়ে দুর্গন্ধ হলে:
প্রতিদিন মোজা ধুয়ে বা পালটিয়ে পালটিয়ে ব্যবহার করুন। না হলে একই মোজা ব্যবহারের কারণে দুর্গন্ধ আরও বেশি হতে পারে। ভিনিগার মেশানো পানিতে বা লবণ পানিতে প্রতিদিন পা ডুবিয়ে রাখুন। বেকিং সোডা আর লেবুর মিশ্রণ পায়ে মাখিয়ে রাখুন। মধু ও চিনির মিশ্রণ পায়ের স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। জুতা পরার আগে বডি ¯েপ্র জুতোর মধ্যে দিন। জুতা পরার আগে পায়ে পাউডার মেখে নিন, যাতে ঘাম কম হয়। রোজ একই জুতা পরবেন না। মাঝে মাঝে জুতা পরিষ্কার করে রোদের মধ্যে রাখুন। এত কিছুর পরেও যদি কিছু কাজ না হয়, তা হলে অবশ্যই পার্লারে গিয়ে মাসে দুইবার পেডিকিওর করান।
০৪৮ ▌ মুখের দুর্গন্ধ কীভাবে দূর করবেন?:
মুখের অভ্যন্তরে যেসব কারণে দুর্গন্ধ হতে পারে সেগুলো হলো : (ক) মাড়ি রোগ : একিউট নেকরোটাইজিং আলসারেটিভ জিনজিভাইটিস বা পচনশীল ঘা-যুক্ত মাড়ির প্রদাহ। (খ) পেরিওডন্টাল রোগ : এ রোগে অসংখ্য অ্যানোরবিক ব্যাকটেরিয়া মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে থাকে। অভ্যাসগত যেসব কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে সেগুলো হলো : (ক) মুখের মাধ্যমে শ্বাস নেয়া। (খ) ধূমপান। (গ) নিয়মিত দাঁত ব্রাশ বা ফ্লসিং না করা। (ঘ) জিহ্বা পরিষ্কার না করা। * গলায় সংক্রমণ। * ফুসফুসে সংক্রমণ। ওষুধগুলো হলো- * বিষণœœতানাশক ওষুধ। * অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ। * অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ। মুখের দুর্গন্ধের আংশিক চিকিৎসা : (ক) পেরিওডন্টাল রোগ থাকলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। (খ) যেসব কারণে শুষ্ক মুখের সৃষ্টি হয়ে থাকে তার চিকিৎসা করতে হবে। (গ) দুর্গন্ধের চিকিৎসায় মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে হবে।
০৪৯ ▌ আঙুল ফুলে অবশ, ব্যথা?:
হাতের কবজি থেকে হাতের তেলো ও আঙুলগুলো অবশ হয়ে আসা, ঝিঁঝি করা, কখনো ব্যথা হওয়া বা ফুলে যাওয়াÑএই সমস্যার নাম কারপাল টানেল সিনড্রোম। মেয়েদের মধ্যে এই সমস্যার প্রবণতা তিন গুণ বেশি। বিশেষ করে, গর্ভাবস্থায় প্রায়ই এই সমস্যা প্রকট আকারে দেখা দেয়। কন হয়? কবজিতে একটা ছোট্টো টানেল বা গহ্বর আছে, যার নাম কারপাল টানেল। এই টানেল দিয়ে বিভিন্ন শিরা ও ¯œায়ু হাতে প্রবেশ করে। এর অন্যতম হলো সিডিয়ান নার্ভ। কোনো কারণে এই টানেলে এই নার্ভ চাপ খেলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ফুলে যাওয়া, পানি জমা বা চাপ পড়ার কারণে এমন হতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যা, ডায়াবেটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও লুপাস-জাতীয় রোগ এর ঝুঁকি বাড়ায়। কখনো একই ধরনের হাতের কাজ বারবার করার কারণে (যেমন সেলাই, বোনা, গলফ খেলা বা বেহালা বাজানো) টানেলের ওপর চাপ পড়ে। স্থূলতা একটি অন্যতম কারণ।
০৫০ ▌ অল্প পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে ওঠা:
ডিপিএলডি বা ডিফিউজ প্যারেনকাউমাল লাঙ ডিজিজ একটি জটিল রোগ, যাতে ফুসফুসের কার্যকারিতা ধীরে ধীরে বিনষ্ট হয়ে যায়। এই রোগের প্রধান দুটি লক্ষণ হলো শুকনো কাশি ও অল্প পরিশ্রমেই শ্বাসকষ্ট বা হাঁপিয়ে ওঠা। এই কাশি কোনো অ্যান্টিবায়োটিক বা ওষুধে সারতে চায় না। শ্বাসকষ্ট ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং একসময় স্থায়ী রূপ নেয়, তখন পরিশ্রম ছাড়াও কষ্ট হতে থাকে। এর সঙ্গে বাতব্যথার সমস্যাও থাকতে পারে। ফুসফুসে সিলিকা কণার দূষণ (সিলিকোসিস), কিছু দীর্ঘমেয়াদি রোগ (যেমন-রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস, সারকোয়ডোসিস), দেরিতে ধরা পড়া বা জটিল যক্ষ্মাসহ আরও নানা অজানা কারণে ডিপিএলডি হতে পারে। ডিপিএলডির চিকিৎসার চেয়ে তাই প্রতিরোধই উত্তম। যক্ষ্মা নির্ণয় ও চিকিৎসায় অবহেলা করা যাবে না মোটেও। তিন সপ্তাহের অধিক সময় কাশি বা জ্বর, ওজন কমতে থাকলে অবশ্যই সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা নিন।
০৫১ ▌কোলেস্টেরল কমাবেন কীভাবে?:
চর্বিমাত্রই খারাপ নয়, এর কাজ আছে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত চর্বি খারাপ। খারাপ চর্বি হলো প্রধানত এলডিএল, যা রক্তনালিতে জমা হয়ে হৃদরোগ, স্ট্রোক ইত্যাদি রোগের সৃষ্টি করে। আবার এইচডিএল হলো ভালো চর্বি, যা বেশি থাকা হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো। রক্তে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল ও এইচডিএলের মাত্রা নির্ধারিত পরিমাপের বেশি হয়ে গেলে তা নানা শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই রোগীকে শরীরের চর্বি কমাতে উপদেশ দেওয়া হয়। কেবল তেল-চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া কমালেই হবে না। আমিষ বা প্রোটিন, শর্করা ও চর্বিÑ সব উপাদানই শেষ পর্যন্ত রূপান্তরিত হয়ে শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হতে পারে। তাই মোট ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমাতে হবে, বিশেষ করে অতিরিক্ত শর্করা বা চিনি। গরু-খাসির মাংসের সঙ্গে লেগে থাকা চর্বি, ঘি, মাখন, ডালডা, মার্জারিন, ক্রিম ইত্যাদি খারাপ চর্বি। খাবার রান্নায় তেল কম ব্যবহার করুন। বারবার একই তেলে ভাজাভুজি করা স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
০৫২ ▌মোটা হওয়ার কিছু টিপস:
১. উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত ফল যেমন- আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পাকা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঁচা কলা ইত্যাদি ফল ও সবজি খেলে ওজন বাড়বে। ২. খাবারের পরিমাণ আপনাকে বাড়াতেই হবে। স্বাভাবিকভাবে যা খেয়ে থাকেন, তার ৪ ভাগের ১ভাগ পরিমাণ খাবার বাড়িয়ে খান প্রতিদিন। ৩. খাবার প্লেট পুরে খাওয়া হলে খাবারের ক্যালোরির অনেকটাই বাড়তি ওজন হয়ে শরীরে জমবে। ৪. ডুবো তেলে ভাজা খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে। ফলে সেটা ওজন বাড়াতে সহায়ক। ফাস্টফুটও খেতে পারেন। ৬. ওজন বাড়াতে চাইলে ভাতের ফ্যান না ফেলাই ভালো। ৭. রাতের বেলা ঘুমাবার আগে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার প্লেট ভরে খাবেন। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা না থাকলে এই খাবারগুলো খেতে পারেন অনায়াসে। যেমন- ঘি/ মাখন, ডিম, চিজ/ পনির, কোমলপানীয়, গরু-খাসির মাংস, আলু ভাজা, মিষ্টি জাতীয় খাবার, চকলেট, মেয়নিজ ইত্যাদি।
০৫৩ ▌ঘুম থেকে ওঠার পরেই মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে, কি করবেন:
সকালে উঠে কি মনে হয় জল খেতে হবে? জেরোস্টোমিয়া নামক একটি রোগের কারণে মুখের লালার অভাবে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। কোন কোন রোগের কারণে আমাদের এমন কিছু ওষুধ সেবন করতে হয়, যা আমাদের মুখ শুষ্ক করে দিতে পারে। বিশেষত হতাশা,ব্যথা অথবা পেশী শিথিলতার জন্য যে সম¯স্ত ওষুধ আমরা খাই তার ফলে এই শুষ্ক ভাব আসতে পারে আমাদের মুখে। অনেক সময় আমরা ঘুমিয়ে পড়লে মুখদিয়ে নিশ্বাস নিতে থাকি। এর প্রধান কারণ হতে পারে হাইপোসালিভেশন। আজই এটি ত্যাগ করতে চেষ্টা করুন। যদি আপনার মুখ শুষ্ক হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই একবার রক্ত পরীক্ষা করিয়ে ডায়াবেটিস আছে কিনা জেনে নেবেন। অতিরিক্ত ধূমপান-এর ফলে আমাদের মুখের লালা উৎপাদন কমে যায় যা মুখ শুষ্ক হতে পারে।
০৫৪ ▌সুস্বাস্থ্যের জন্য সূর্যের আলো:
১) দাঁতের চারপাশের হাড়ে যে লিগামেন্ট আছে তা ভিটামিন ডি এর অভাবে দুর্বল হয়ে যায়। ফলে দাঁত নরম হয়ে পড়ে। সূর্যের আলোতে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন ডি থাকে যা আমাদের দাঁতকে শক্ত করে। ২) সূর্যের আলোতে মাইক্রোবায়াল পেপটাইড, কেথেলিচিডিন এবং বিটা ডিফেঞ্চিন-২ পর্যাপ্ত পরিমানে থাকে। এসব উপাদান মুখের ব্যাকটেরিয়া ও মাড়ির রোগ দূর করে । ৩) সূর্যের আলো মাত্র ২০ মিনিটে রক্তের কনিকা থেকে নাইট্রিক এসিড নিঃসৃত করতে পারে যা স্ট্রোক,হার্ট অ্যাটাক এবং রক্ত জমাট বাঁধা দূর করে। ৪) ভিটামিন ডি এর উচ্চতর মাত্রা লিভার ডি-টোক্সিফিকেশন সিস্টেমকে ত্বরান্বিত করে। ৫) সূর্যের আলো স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। ৬) যারা সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকেন, তাদের অস্থি দুর্বল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঝুঁকি বেশি, চূড়ান্তভাবে যা অস্টিওপোরোসিসে রূপ নেয় বলে জনিয়েছেন চিকিৎসকরা। র সেলগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে।
০৫৫ ▌যে কারণে প্রতিনিয়তই কমছে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা:
অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খাওয়া-ইদানিং মানুষ ফাস্টফুডের নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে । কিন্তু অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খেয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায় । ফলে ঘন ঘন অসুস্থতা দেখা দেয়। হাত ধুতে আলসেমি করা-যাদের হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে আলসেমি আছে তাঁরা সাধারণত অন্যদের তুলনায় বেশি অসুস্থ হয় এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। দীর্ঘক্ষন বসে থাকা- কর্মক্ষেত্রে অথবা পড়াশোনার জন্য অনেকেরই দিনের অধিকাংশ সময় বসেই কাটিয়ে দিতে হয়। তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে ভূমিকা রাখে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ- প্রচন্ড মানসিক চাপে থাকলে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ে । একাকীত্ব-কোথাও আড্ডা দেয়ার কিংবা একসঙ্গে গল্প করে সময় কাটানোর জন্য আশে পাশে আপনার যদি কেউ না থাকে তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব দ্রুত কমে যাবে।
০৫৬ ▌ সর্বদা স্লিম থাকার ৪টি গোপনসূত্র:
১) ছোট ছোট চুমুক-পানি ছাড়া অন্য যেকোনো কিছু পান করার সময় ধীরে চুমুক দিন এবং ছোট ছোট চুমুক দিয়ে পান করুন। যেমন কমলার রস, বা যেকোনো ড্রিংকস ইত্যাদি। ২)সুগন্ধিযুক্ত খাবার খান-খাবারের সুবাস দ্রুত পেট ভরাতে সাহায্য করে। অল্প খেলেই খাবার ইচ্ছা কমে যায়। ৩)ছোট প্লেটের ব্যবহার- বড় প্লেটে খাবার খেলে স্বাভাবিকভাবেই আমরা একটু বেশি খেয়ে ফেলি। ছোট প্লেটে খাবার কম ধরলেও তা দেখতে বেশি লাগে। তাই এই কৌশলও প্রয়োগ করতে পারেন। ৪)আলো কমান, আওয়াজ কমান- গবেষণায় দেখা গেছে রেস্টুরেন্টের পরিবেশ মানুষকে বেশি খাওয়া থেকে বিরত রাখে। তাই বাড়িতেই রেস্টুরেন্টের পরিবেশ তৈরি করুন। খাবার খাওয়ার সময় যতটা সম্ভব আলো এবং আওয়াজ কম রাখুন। রেস্টুরেন্টের মতো মৃদু শব্দে মিউজিকও চালিয়ে রাখতে পারেন।
০৫৭ ▌ অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে সতর্কতা:
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বলতে বোঝায় অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাওয়া কেন রেজিস্টেন্ট হয়ে যায়? অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের শরীরে প্রবেশ করলে বিভিন্ন জীবাণু বা ভাইরাস অ্যান্টিবায়োটিক-এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। ফলে তারা সাময়িকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয় এবং আমাদের শরীর সুস্থ হতে শুরু করে। কিন্তু জীবাণু বা ভাইরাস তখনো শরীরে থেকে যায়। এখন আমরা যদি ঐ অবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করে দেই তাহলে জীবাণুগুলো পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে আসে এবং আবার রোগ সৃষ্টি করে। কিন্তু সমস্যা হলো আপনি যদি এখন আবার ঐ অ্যান্টিবায়োটিক খান তাহলে কিন্তু তা আর কাজ করবে না। তাই আমাদের করণীয় হলো যখনই অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হবে, অবশ্যই পুরো কোর্সটি সম্পন্ন করতে হবে।
০৫৮ ▌ গাড়িতে চড়লেই যাঁদের বমি হয়:
এ সমস্যার নাম ‘মোশান সিকনেস’। যানবাহন চলতে শুরু করলে অন্তঃকর্ণের তরল পদার্থে নড়াচড়া শুরু হয়। অন্তঃকর্ণ চলার সংকেত পাঠায় মস্তিষ্কে। কিন্তু গাড়ি চলন্ত অবস্থায় আপনার চোখের দৃষ্টি যদি থাকে গাড়ির ভেতরে, তখন আপনার চোখ বলে, আপনি চলছেন না, স্থির আছেন। এমন অবস্থায় আপনার মস্তিষ্ক, চোখ আর অন্তঃকর্ণের সংকেতের মধ্যে অসামঞ্জস্য তৈরি হয়। শুরু হয়ে যায় মোশান সিকনেস। কিছু পরামর্শ: ▪ চলন্ত অবস্থায় যানবাহনের ভেতরে দৃষ্টি নিবদ্ধ না রেখে জানালা দিয়ে বাইরে তাকান, প্রকৃতি দেখুন। ▪ সামনের দিকে বা জানালার কাছে আসন নিন, জানালাটা খুলে দিন। ▪ হালকাভাবে দুচোখ বন্ধ করে রাখুন অথবা একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব নিয়ে আসুন। ▪ যাত্রা শুরুর আগে ভরপেট খাবেন না বা পানি পান করবেন না। ▪ গাড়িতে বসে আদা কিংবা চুইংগাম চিবালেও উপকার পাওয়া যায়। ▪ ‘গাড়িতে উঠলেই অন্য চিন্তা করুন। যানবাহনের গন্ধ শিশু ও নারী (যারা গাড়িতে নিয়মিত যাতায়ত করে না তাদের কাছে) বিপাকীয় ক্রিয়া সৃষ্টি করে, ফলে বমি আসে। বেশ কয়েকবার গাড়িতে চলাচল করলে সমস্যা কেটে যায়।
০৫৯ ▌পুড়ে গেছে? কী করবেন:
জায়গাটা প্রথমে ঠান্ডা করুন এবং পর্যবেক্ষণ করুন। পোড়া অংশের পাশে বা উপরে কোন জামাকাপড় থাকলে তা সাবধানতার সাথে সরিয়ে ফেলুন। অহেতুক ঘষা যেন পোড়া অংশে না লাগে। এবার ঠান্ডা পানিতে ১৫-২০ মিনিট অব্দি পোড়া জায়গায় লাগান বা অই পোড়া অংশ ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা ভাল কিন্তু কোনভাবেই বরফ পোড়া জায়গায় লাগাবেন না। ঠান্ডা পানি লাগানোর ফলে আপনার পোড়া জায়গার ব্যথা কিছুটা হলেও কমবে। পুড়ে গেলে ফোসকা পড়বে না, এটা সাধারণত হয় না। কিন্তু একে সতর্ক হয়ে এর খেয়াল রাখা উচিত। অনেকেই মনে করেন ফোসকা ফাটিয়ে দিলে হয়তো ক্ষত তাড়াতাড়ি সারবে। কিন্তু বাস্তবে মোটেই তা হয় না। এতে আরও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
০৬০ ▌আঙুল ফোটানো ভালো না খারাপ? :
আমাদের অস্থিসন্ধিগুলোর চারপাশে এক ধরনের তরল থাকে, যেটাকে চিকিৎবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় সাইনোভিয়াল ফ্লুইড। যখন আমরা অস্থিসন্ধিগুলিকে তাদের স্বাভাবিক অবস্থান থেকে সরিয়ে নিয়ে আসি, এই তরলে এক ধরনের শূন্যতা বা ফাঁপা অংশের সৃষ্টি হয়। শূন্যস্থানে একটি বুদবুদের সৃষ্টি হয় যা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফেটে যায়। এই বুদবুদের ফাটার শব্দটাই আমাদের কানে পৌঁছায়। এটাই হল আঙুল ফোটানোর সময় শব্দের আসল কারণ। তবে এই অভ্যাসে নিয়ন্ত্রণ না থাকলে ক্রমশ আঙুলের অস্থিসন্ধিগুলো কিছুটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
০৬১ ▌রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফল খাওয়া কি ক্ষতিকর?:
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার তিন ঘণ্টা আগে ফল খাওয়া বেশি উপকারী। তবে খাবার খাওয়ার সময় ফল খাওয়া ঠিক না। কারণ এতে গ্যাস্ট্রিক রস উৎপন্ন হয় এবং তা পরে হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে।
০৬২ ▌শব্দ যেন হয় সহনীয়:
সুস্থ শ্রবণশক্তি নিয়ে জন্ম হওয়ার পর পরবর্তী জীবনে বধির হয়ে যেতে পারেন। তার মূল কারণ শব্দাঘাত। এই অতিমাত্রার শব্দআঘাতই আমরা শব্দদূষণ বলি। বিনা প্রয়োজনে গাড়ির হর্ন বাজানো, কানে হেডফোন বা ইয়ার প্লাগ লাগিয়ে মাত্রাতিরিক্ত শব্দে গান শোনা শ্রবণশক্তি হারানোর অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত এখন। বাড়িতে শব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্রপাতি, যেমন: টেলিভিশন, ওয়াশিং মেশিন বা ডিশওয়াসারের ব্যবহার ধীরে ধীরে কমিয়ে দিন। অতিরিক্ত ও দীর্ঘ সময় টিভি দেখা উচিত নয়। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনের ব্যবহার, হেডফোনের সাহায্যে গান শোনা, সামাজিক অনুষ্ঠানে লাউড¯িপকার বাজিয়ে দূষণ সৃষ্টি করা-ইত্যাদি অনাকাক্সিক্ষত আচরণ নিজেদেরই পাল্টাতে হবে। এক ঘণ্টার বেশি গান শোনা উচিত নয়।
০৬৩ ▌ দীর্ঘ সময় বসে কাজ করা স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়:
গবেষণায় দেখা গেছে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোমরে চর্বি জমা, রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, হার্টের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি সমস্যাগুলো যারা বসে কাজ করেন তাদের মধ্যে বেশি। এছাড়াও যারা ডেস্কে বসে বেশিক্ষণ কাজ করেন তারা কোমর ও ঘাড় ব্যথায় বেশি ভুগেন। কিন্তু জীবনের তাগিদে নিত্যদিনের কাজ ত্যাগ করা সম্ভব নয়। তাই প্রতিদিন কাজের ফাঁকে কিছু অভ্যাস তৈরি করা উচিত। যেমন এক ঘন্টা পর পর চেয়ার থেকে উঠে কিছুক্ষণ হাঁটা, লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি দিয়ে উঠা-নামার অভ্যাস করা, চেয়ারে সোজা হয়ে বসা। মনে রাখতে হবে আমাদের শরীর প্রতিদিন যেই পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করে, তা কাজে লাগাতে হবে। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি নাশতায় ভাজা পোড়া বা ফাস্টফুডের পর্রিবতে মৌসুমী ফল বা বাদাম জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
০৬৪ ▌ পাখি ও পায়রার মল থেকে অসুখ:
অনেকেই আছে, যারা শখ করে বাড়িতে নানা জাতের পাখি পুষে থাকে। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানে না যে পাখির মল বা বিষ্ঠা থেকে ৬০টির বেশি ধরনের ঘাতক রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, কাশি ও জ্বর ছাড়াও নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস বা ‘সিটাকোসি’ নামের এক ধরনের ফ্লু শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। এ ছাড়া ফুসফুসে সংক্রমণের ফলে ‘হিসটোপ্লাসমোসিস’ নামের প্রদাহজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাথাব্যথা, ত্বকের সমস্যা, ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে পাখির মল বা বিষ্ঠা থেকে। বাড়িতে বা ঘরের কোনো অংশে পাখির, বিশেষ করে পায়রার মল জমলে তা যত দ্রুত সম্ভব পরিষ্কার করতে হবে। আর পরিষ্কার করার আগে জায়গাটি ভিজিয়ে নিতে হবে পানি দিয়ে। পায়রার মল বা বিষ্ঠা পরিষ্কারের সময় নাক-মুখ ঢেকে নিতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয়, ফিনাইল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে জায়গাটি জীবাণুমুক্ত করা।
০৬৫▌পোষা বিড়াল থেকে ‘অসুখ:
অধিকাংশ বিড়ালের মধ্যেই দুটি রোগের জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন গবেষকরা। জীবাণুটির নাম টোক্সোপ্ল্যাজমা গোন্ডি। শৈশবে খেলার সঙ্গী প্রিয় পোষা বিড়ালটির ওই জীবাণুর সংক্রমণ ঘটতে পারে শিশুর মধ্যে এবং এক পর্যায়ে মারাত্মক মানসিক বৈকল্য সিজোফ্রেনিয়া বা বাইপোলার ডিসঅর্ডার দেখা দিতে পারে। শৈশবে শিশুরা বিড়ালের সঙ্গে যদি বেশি খেলাধুলো করে বা সময় কাটায়, জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে তা মানসিক বিকার সৃষ্টিতে অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষকরা বলছেন, এখন পর্যন্ত তিনটি গবেষণার ফলাফলে বলা হচ্ছে, এ ধরনের পরিবারগুলোর শিশুদের সিজোফ্রেনিয়া বা কঠিন মানসিক রেগে ভোগার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বিড়ালের সঙ্গে শৈশবের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করা। এ জীবাণুটি বেশির ভাগ বিড়ালের মলের মধ্যেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
০৬৬ ▌ বডি ম্যাসাজের ৪টি অসাধারণ উপকারিতা:
১। ব্যথা কমায়: ব্যথা কমাতে বডি ম্যাসাজের জুড়ি নেই। বডি ম্যাসাজের মাধ্যমে শরীরে রক্তচলাচল বৃদ্ধি পায় এবং ব্যথায় আক্রান্ত স্থানের টিস্যুগুলো স্বাভাবিক হয়ে আসে ধীরে ধীরে। ফলে ব্যথাও কমতে থাকে বেশ দ্রুত। আর তাই পিঠ ব্যাথা, ঘাড় ব্যথা, পা ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে বডি ম্যাসাজ বেশ কার্যকরী একটি উপায়। এছাড়াও রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ২। দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমায়: প্রচন্ড মানসিক চাপে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছেন? কিছুক্ষণ আরামদায়ক ম্যাসাজ আপনাকে করে তুলবে ঝরঝরে। বডি ম্যাসাজ করালে শরীরের স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের মাত্রা কমে মানসিক চাপ অনেকটাই দূর হয়ে যায়। ৩। নিশ্চিন্তে ভালো ঘুম হয়: সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন ভালো ঘুম। কিন্তু এপাশ ওপাশ করেও রাতে ভালো ঘুম হতে চায় না অধিকাংশ মানুষেরই। যাদের এধরণের সমস্যা আছে তাঁরা বডি ম্যাসাজ করিয়ে নিন।
০৬৭ ▌নতুন জুতায় পায়ে ফোস্কা! জেনে নিন সমাধান:
১) নতুন জুতা পরার আগে পায়ে ভাল করে সরষের তেল বা নারকেল তেল মেখে নিন। এতে পায়ে ফোস্কা পড়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। ২) জুতার যে জায়গাগুলো খুব শক্ত, পায়ে ঘষা লেগে ফোস্কা পড়তে পারে, সেই জায়গাগুলোতে টেপ দিয়ে ¯পঞ্জ লাগিয়ে দিন। এতে পায়ে ফোস্কা পড়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। ৩) জুতার চামড়ার যে জায়গাগুলো খুব শক্ত, পায়ে ঘষা লেগে ফোস্কা পড়তে পারে, সেখানে ভেসলিন লাগিয়ে রাখুন। এতে জুতোর ওই জায়গাগুলো কিছুটা নরম হয়ে যাবে। কমবে ফোস্কা পড়ার ঝুঁকিও। তবে নতুন জুতা পরে বেশিক্ষণ না হাটাই ভাল। ৪) ফোস্কার জায়গায় অ্যালোভেরা পানি লাগান। এতে পায়ের ফোস্কা খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে। ৫) ফোস্কার জায়গায় দিনে অন্তত ৩ বার মধু লাগিয়ে দেখুন। এতে ফোস্কা দ্রুত শুকিয়ে যাবে।
০৬৮ ▌প্রত্যেকদিন যে ভুলগুলো করে থাকেন বেশিরভাগ মানুষ:
১) সবচাইতে বড় ভুল আমরা যা করি, সেটা হলো তৃষ্ণায় পানি পান না করে পানীয় পান করা। এটা বাড়তি রঙ, প্রিজারভেটিভ ইত্যাদি তো শরীরে প্রবেশ করেই; একই সাথে অনেকটাই বাড়তি ক্যালোরি প্রবেশ করে দেহে। আর স্বভাবতই বৃদ্ধি পায় ওজন। ২) গোসল করেই ঘুমিয়ে যাওয়া: এতে চুলের গোঁড়া ভেজা রয়ে যায় ও বাড়ে চুল পড়ার হারও। ৩) কন্ডিশনার শুধুমাত্র চুলে লাগানোর জন্য মাথার ত্বকে লাগানোর জন্য নয়। মাথার ত্বকে কন্ডিশনারের ব্যবহারে চুলের ফলিকল নষ্ট করে দিতে পারে। ৪) পারফিউম কাপড়ে স্প্রে করার জন্য নয়। পারফিউম স্প্র করবেন দেহের ত্বকে। ৫) প্রসাধনী শুধুমাত্র মুখের ত্বকে নয়,গলার ত্বকেও ব্যবহার করতে হয়। ময়েসচারাইজারে অভাবে ত্বক শুকনো থাকে এবং কালচে হয়ে যায়। ৬) দিনে ২/৩ বার গোসল করা একটি ভুল কাজ। বারবার গোসল এবং সাবান ব্যবহার দেহের ত্বকের ক্ষতি করে।
০৬৯ ▌ সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠার উপকারিতা:
বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, কোনো ধরনের শারীরিক পরিশ্রম না করার চেয়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠা ভালো। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ হাঁটার চেয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আর যদি প্রশ্ন করেন হাঁটা না সিঁড়ি ভাঙা কোনটি ভালো। তাহলে উত্তর হবে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠা। এই গবেষণালব্ধ তথ্যটি দিয়েছেন কানাডার হ্যামিল্টনের ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মার্টিন গিবালা। এই বিশেষজ্ঞের মতে, হাঁটার চেয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে অধিক শক্তির প্রয়োজন হয়। এতে অধিক ক্যালরি বা খাদ্যশক্তি ক্ষয় হয়। এ কারণে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার উপকারিতা হাঁটার চেয়ে খানিকটা বেশি। কিন্তু আপনার ওজন যদি বেশি হয়, তাহলে বেশি সিঁিড়ি বাইলে হাঁটুর জয়েন্টে সমস্যা হতে পারে।
০৭০ ▌ জগিংয়ের উপকারিতা:
সকালে জগিং করার আগে ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে আধা গ্লাস পানি খেয়ে নিন। অনেকেই জগিংয়ের ফাঁকে প্রচুর পানি পান করে। এটা ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে শুধু গলাটা ভিজিয়ে নিতে হবে পানিতে। জগিংয়ের সময় কোনো বন্ধুকে সঙ্গে নিতে পারেন। এতে সময়টা ভালো কাটবে। জগিং করার শুরুতে ওয়ার্ম আপ বা গা গরম করে নিন। একেবারে বেশি বা একটানা জগিং করবেন না। পেশিতে টান পড়তে পারে। শুধু জগিং করলেই হবে না। নিজের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনুন। কার্বোহাইড্রেট ও হাই প্রোটিন এড়িয়ে চলুন। শাকসবজি বেশি খান। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বা ফল বেশি খান। এতে শরীরের চর্বি কাটে তাড়াতাড়ি। ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলুন। স্বাভাবিক নিয়মে প্রত্যেক মানুষকে কমপক্ষে তিন হাজার পদক্ষেপ নিতে হয় প্রতিদিন। এর চেয়ে কম হলে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। জগিং করার ফলে আপনার প্রতিদিনকার অপ্রয়োজনীয় ক্যালরি ক্ষয় হয়ে যায়।
০৭১ ▌শরীরের যে ৫স্পট ছোঁবেন না:
১) কানের ভেতরে হাত নয়: আঙুল দিয়ে বা অন্য কিছু দিয়েও খোঁচানোর চেষ্টা করবেন না। ২) অযথা গালে হাত দেবেন না: হাতে শুধু জীবাণুই নয়, তেলও থাকে। বারবার গালে বা কপালে হাত দিলে, ত্বকের ছিদ্রপথ আঙুলে থাকা তেলের কারণে বন্ধ হয়ে বিপত্তি ঘটতে পারে। ৩)পশ্চাতদেশ চুলকাবেন না: মলদ্বার শুধু সংবেদনশীলই নয়, নানাবিধ ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ারও আঁতুড়ঘর। খোঁটাখুঁটি করলে আঙুল থেকেই ব্যাকটেরিয়া শরীরের অন্যত্র চলে যেতে পারে। ৪) চোখেও হাত নয়: সকাল উঠে মুখ ধোওয়ার সময় চোখে পানি দেওয়া ছাড়া চোখে হাতে দেবেন না। কখনও চোখে হাত দেওয়ার প্রয়োজন পড়লে হাত ধুয়ে তবেই হাত দিন। ৫)খালি হাত নাকে-মুখে নয়: যখন-তখন নাকে-মুখে হাত দেবেন না। আঙুল থেকে নাক-মুখের অভ্যন্তরে জীবাণু চলে যায়। যারা খালি হাতে নাক খোঁটেন, তাদের নাসারন্ধ্রে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ৫১% বেড়ে যায়।
০৭২ ▌ চুলে তেল দেয়ার সঠিক নিয়ম:
১। চুলে তেল দেয়ার আগে তেল কিছুটা গরম করে নিন। কুসুম গরম তেল মাথার তালুতে ব্যবহার করুন। এটি মাথার তালুতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। ২।তেলটি হালকা হাতে চুলে ম্যাসাজ করুন। খুব বেশি জোরে তেল মাথায় ম্যাসাজ করবেন না এতে চুল আরও বেশি জট বেঁধে যাবে আর চুল ছিঁড়ে যাবে। ৩। তেল দেয়ার পর ভালোভাবে চুল আঁচড়ে বেঁধে নিন। তবে খুব বেশি টাইট করে চুল বাঁধবেন না। এতে আগা ফেটে যায়। ৪। সাধারণত সবাই চুল তেল দেওয়ার পর আঁচড়ে থাকেন। কিন্তু তেল দেয়ার আগে চুল আঁচড়ানো ভালো। তাই তেল দেয়ার আগে চুল আঁচড়ে নিন। ৫। তেল দেয়ার পর কমপক্ষে এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যা¤পু করে নিন। সবচেয়ে ভালো হয় তেল সারারাত মাথায় রাখুন। পরের দিন শ্যা¤পু করে ফেলুন।
০৭৩ ▌ জিভ পুড়ে গেলে যা করবেন:
অনেক সময় খাওয়ার সময় অসাবধানতাবশত অনেকেরই জিভ পুড়ে যায়। অনেকে সতর্ক থাকলেও খাবারটি কতটা গরম তা বুঝে উঠতে পারেন না বলে প্রথম কামড় বা চুমুকেই জিভ পুড়িয়ে ফেলেন। এতে জিভে জ্বালাও শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে অন্য কিছু খাওয়ার সময়ও জিভে জ্বালা ও ব্যথা করে। বেশি পুড়ে গেলে জিভের প্রদাহ থেকেই মুখে নানা সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাই পুড়ে গেলে তা অবহেলা না করে বরং স্বস্তি আনতে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করুন। মধু: অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল ও সংক্রমণ রুখে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে মধু। তাই জ্বালা কমাতে মধুর প্রলেপ দিন পোড়া জিভে। বরফ: বরফ রাখুন জিভের পুড়ে যাওয়া অংশে। এতে ঠা-া অনুভূতি হবে ও প্রদাহ সারবে দ্রুত। বরফ একান্তই না পেলে ঠা-া পানি কুলকুচি করুন বার কয়েক।
০৭৪ ▌যেসব কারণে অজান্তেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের মেরুদণ্ড:
১) আপনি কি সারা দিন এক জায়গায় বসে কাজ করেন? দীর্ঘদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ ভাবে কাজ করতে হলে শিরদাঁড়া বা মেরুদন্ডের সমস্যা হতেই পারে। ২) পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে যেমন শিরদাঁড়ার সমস্যা হতে পারে, তেমনই অতিরিক্ত বিশ্রাম, আলস্যের ফলেও মেরুদন্ডের সমস্যা হতে পারে। ৩) খুব ভারি ব্যাগ (যেমন, ল্যাপটপ ব্যাগ, বইয়ের ব্যাগ বা অন্যান্ত ভারি জিনিসপত্র) নিয়মিত পিঠে নিলে কাঁধে আর পিঠে অতিরিক্ত চাপ পড়ে মেরুদন্ডে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ৪) ঘুমানোর সময় অনেকেই অদ্ভুত ভঙ্গিতে শুয়ে থাকেন। অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে পিঠ, কোমর বেঁকিয়ে শোওয়ার অভ্যাস মেরুদন্ডের ক্ষতি করে। ৫) দীর্ঘক্ষণ ঝুঁকে বসে মোবাইলে চ্যাট বা ল্যাপটপে ব্যাস্ত থাকলে মেরুদন্ডে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। ৬) আচমকা খুব ভারী কোনও জিনিস তোলার চেষ্টায় টান পড়ে মেরুদন্ডে চোট লাগতে পারে। এছাড়া খুব শক্ত, অসমান বিছানায় দীর্ঘদিন ধরে শুলে মেরুদন্ডের সমস্যা হতে পারে।
০৭৫ ▌অতিরিক্ত শরীরচর্চা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর:
অতিরিক্ত শরীরচর্চার ফলে শরীরের পেশিগুলি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। অতিরিক্ত শক্তি ক্ষয় হয়ে গিয়ে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। অতিরিক্ত শরীরচর্চার ফলে হৃদযন্ত্রের পেশি ক্লান্ত পয়ে পড়তে পারে। বেড়ে যেতে পারে হার্ট-অ্যাটাকের ঝুঁকি। অনেক সময় দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। বেশি ব্যায়ামের ফলে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যাড্রিনালিন ক্ষরিত হয়। ফলে আমাদের মস্তিষ্ক উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে। এর ফলে সহজে ঘুম আসতে চায় না। তাই, ক্লান্তিও সহজে কাটতে চায় না। অনেক সময় দ্রুত অতিরিক্ত মেদ ঝরানোর তাগিদে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিম করার পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার পরিমাণও কমিয়ে দেন। ফলে অপুষ্টি, অবসাদের মতো সমস্যা শরীরে, মনে বাসা বাঁধতে পারে। গোড়ালি, হাঁটু, কব্জি বা কনুইয়ের জয়েন্টগুলির হাড় ক্ষয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অতিরিক্ত শরীরচর্চার ফলে মন, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে।
০৭৬ ▌হাই তোলা যে কারণে উপকারী:
১.গবেষণায় দেখা গেছে, হাই তোলা মস্তিষ্কের উত্তেজনা প্রশমিত করে। সেই সঙ্গে মানসিক দক্ষতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। হাই তোলা ¯œায়ুতন্ত্রের উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। হাই তুললে মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বা রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া হাই তোলার কারণে শরীরে, শিরায়-উপশিরায় অক্সিজেনের ঘাটতি দ্রুত পূরণ হয়। ২. হাই তোলার ফলে চোখের পাশের অশ্রুগ্রন্থির উপর চাপ পড়ে। এতে দৃষ্টি আরও স্বচ্ছ হয়। ৩. হাই তুললে শরীরে অনেক বেশি অক্সিজেন প্রবেশ করে। সেই সঙ্গে ফুসফুস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড দ্রুত বের হয়ে যায়। এতে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সঞ্চালন অনেকটা বৃদ্ধি পায়। ৪. হাই তোলা শরীর এবং মস্তিষ্কের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। গ্রীষ্মকালে শরীরের তাপমাত্রা শীতকালের তুলনায় অনেকটা বেড়ে যায়। এ কারণে গ্রীষ্মকালে শীতকালের তুলনায় অনেক বেশি হাই ওঠে।
০৭৭ ▌রগ কেটে গেলে করণীয়:
অনেকের ধারণা, কাটা রগ ভালো করা যায় না। তবে সময়মতো এবং দ্রুত এর চিকিৎসা দেওয়া গেলে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যেতে পারেন। কোনো কারণে যদি মাংসপেশির সঙ্গে সংযুক্ত রগ কেটে যায়, ক্ষতস্থানে কোনো ময়লা লেগে থাকলে তা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন এবং পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান ভালো করে চেপে ধরে হাসপাতাল, ক্লিনিক বা অর্থোপডিক সার্জনের কাছে যান। দুর্ঘটনা ঘটার ছয় ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতস্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে সেলাই করতে পারলে কাটা রগ এবং অস্থিসন্ধির কার্যক্ষমতা শতভাগ পাওয়া সম্ভব। এটিই কাটা রগের সর্বোত্তম চিকিৎসা। খেয়াল রাখতে হবে, রক্তনালি ঠিক আছে কি না। ছয় ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইনফেকশনের আশঙ্কা বাড়তে থাকে। এতে চিকিৎসার সুফল কমে আসতে থাকে। তথাপি দুর্ঘটনা ঘটার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা করা সম্ভব হলে অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।
০৭৮ ▌বদহজম, গ্যাস কেন হয়?
করণীয় কি: কখনো সমস্যা বাধায় অ্যাসিডের উপরে ঠেলে ওঠা, কখনো পাকস্থলি, খাদ্যনালি বা অন্ত্রে ক্ষত দেখা দেওয়ার জন্য এই জাতীয় সমস্যা দেখা দেয়। গলব্লাডারের সমস্যা বা লিভারের গোলমাল আবার কখনো সমস্ত পরিপাক ক্রিয়ার পদ্ধতিটা ধীর হয়ে গিয়েও সমস্যা দেখা দেয়। একে বলে ডিলেড গ্যাস্ট্রিক এম্্প্টিং। এক্ষেত্রে খাবার বহুক্ষণ ধরে পাকস্থলীতে থেকে যায়, পায়খানা পরিষ্কার হতে চায় না। ফলে পেট ভরা ভরা লাগে। গ্যাস, অম্বলও হয় কখনো। ▪ অতিরিক্ত তেল-মশলাদার খাবার, ভাজাভুজি, নিয়মিত হোটেলে খাওয়ার অভ্যেস, রাস্তাঘাটে চপ, ফুচকা, রোল ইত্যাদি খাওয়া যথাসম্ভব কমিয়ে আনুন। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খাবেন। ▪ চলতে ফিরতে টুকটাক স্ন্যাক্স খাওয়া বন্ধ করুন। ▪ সবসময়ই পেট খানিকটা খালি রেখে খান। ▪ খাবারের অন্তত ঘণ্টাখানেক পরে শুতে যান। ▪ দিনে অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি খান।
০৭৯ ▌ফুড পয়জনিং হলে কী করবেন?
যদি কোনো খাবার খেয়ে বারবার বমি, পাতলা পায়খানা, জ্বর, পেটব্যথা শুরু হয়, তাহলে বুঝতে হবে ‘ফুড পয়জনিং’ হয়েছে। অস্বাস্থ্যকর খাবার, জীবাণুযুক্ত খাবার, ময়লাযুক্ত থালাবাসনে খাবার খেলে এগুলো থেকে ফুড পয়জনিং হতে পারে। যদি সময়মতো এর চিকিৎসা করা না হয়, তবে এ থেকে পানিশূন্যতা হতে পারে। কিডনি অকেজো হয়ে পড়তে পারে। শরীরের যেকোনো অঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় এটি মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রতিরোধের উপায়: * রাস্তার খোলা খাবার খাবেন না। * যতটা সম্ভব টাটকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। কয়েক দিন ধরে ফ্রিজে রাখা আছে এমন খাবার খাওয়াও ঠিক না। * খাবার ঠিকমতো ঢেকে রাখুন, নয়তো বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ খাবারে বসে জীবাণু ছড়াতে পারে। আক্রান্ত হলে ডাবের পানি, স্যালাইন, শরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। অবস্থা বেশি খারাপ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
০৮০ ▌গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা করণীয় কি:
গ্যাস্ট্রিক বা আলসারকে পেপটিক আলসার বলে। পেটের ওপরের দিকে সারাদিন অল্প অল্প ব্যথা থেকে শুরু, হঠাৎ তীব্র ব্যথা পেপটিক আলসারের ব্যথা হিসেবে পরিচিত। যাঁরা নিয়মিত খাবার গ্রহণ করেন না কিংবা দীর্ঘ সময় উপোস থাকেন, তাঁদের পেপটিক আলসার দেখা দিতে পারে। ব্যথানাশক ওষুধের কারণে বেশি অ্যাসিড তৈরি হতে পারে। অনিদ্রা, অতিরিক্ত টেনশন, ভাজাপোড়া খাবার, ধূমপান ইত্যাদিও বাড়তি অ্যাসিড তৈরি করে। প্রতিরোধ: নিয়মিত খাবার গ্রহণ, ভাজাপোড়া খাবার পরিহার, দুশ্চিন্তা পরিহার, পর্যাপ্ত ঘুম, ধূমপান বন্ধ করতে হবে। ব্যথানাশক ওষুধ অর্থাৎ অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ সেবন থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসা: পেপটিক আলসারের রোগীরা সাধারণত অ্যান্টাসিড এবং এ জাতীয় ওষুধ সেবনে উপকৃত হন। সময়মতো চিকিৎসা না করালে ▪ পাকস্থলী ফুটো হয়ে যেতে পারে। ▪ রক্তবমি হতে পারে।
০৮১ ▌পেট খারাপ কেন হয়? হলে কী করবো?
▪ ভাইরাস অথবা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ। উৎস দূষিত পানি এবং খাবার। ▪ দিনে তিনবারের বেশি টয়লেটে যেতে হলে, ফুটিয়ে ঠা-া করা পানিতে ও আর এস পাউডার অথবা সাধারণ লবণ চিনি মিশিয়ে বারেবারে খেতে হবে। ▪ ভাইরাসের দরুণ পেট খারাপ হলে মোটামুটি ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবস্থা আয়ত্তের মধ্যে চলে আসার কথা। ▪ খাবার খাবেন ভালো করে খিদে পেলে, তবে শাক, বেশি সবজি, ভাজাভুজি, তেল-মশলাদার এবং তৈলাক্ত খাবার খাবেন না। হালকা মাছের ঝোল ভাত, চিকেন স্ট্যু, স্যুপ, টোস্ট, চিড়ে সিদ্ধ, মুড়ি, ফলের রস, ডাব, শরবত ইত্যাদি খেতে পারেন। ▪ পানি খাবেন ফুটিয়ে। ফ্রিজের খাবার না খেয়ে টাটকা তৈরি করে খাওয়াই ভালো। বাইরের খাবার মোটেই খাবেন না। কফি, কোল্ডড্রিঙ্কস, চকোলেট, আইসক্রিম ইত্যাদি ক-দিন বাদ থাকবে। কাঁচকলা, পেঁপে খাওয়া যেতে পারে। বাসনও গরম পানিতে ধুয়ে নেওয়া দরকার।
০৮২ ▌ খিদে কমে যাওয়া:
গ্যাস, অম্বল হলে, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে, সাধারণ থেকে জটিল জ্বরে অল্পবিস্তর খিদের কম-বেশি হয়েই থাকে। কেন খিদে কমে? ▪ জন্ডিস ▪ জ্বর ▪ গ্যাস অম্বল ▪ কোষ্ঠকাঠিন্য ▪ অবসাদ ▪ কিছু ওষুধ, অবসাদে ব্যবহৃত কিছু ওষুধ ▪ দুশ্চিন্তা, অশান্তি, উদ্বেগ ▪ ধূমপান ▪ কিছু মানসিক অসুখ ▪ পাকস্থলীর সমস্যা ইত্যাদি। খিদে কমলে কী করবো? ▪ অল্প পরিমাণে হলেও দিনের প্রতিটি খাবারই খাওয়ার চেষ্টা করুন। ▪ পানি, শরবত, ফলের রস, সু্যূপ ইত্যাদি তরল খাবার বেশি করে খাবেন। ▪ খিদে না হওয়ার সঙ্গে গা-গুলানো ভাব থাকলে প্রস্রাবের রং এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়েছে কি-না খেয়াল রাখুন। ▪ কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে রাত্রে খাবার খাওয়ার পর দু-তিন চামচ ইসবগুলের ভূষি পানিতে মিশিয়ে খান নিয়মিত। ▪ কোনো কারণে অশান্তি বা টেনশন বাড়ছে কিনা খেয়াল রাখুন।
০৮৩ ▌আমাশা হলে করনীয়:
▪ প্রথমদিকে তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা হয়। কোমর ব্যথাও সঙ্গে থাকে অনেক সময়। পায়খানার সঙ্গে আম পড়ে। বারেবারে পায়খানার বেগ হয়। কিন্তু গেলে সেভাবে হয় না। ▪ পরের দিকে পুরো তলপেট জুড়েই ব্যথা হতে থাকে। অনেক সময় পেটের ডানদিকে ঠিক অ্যাপেনডিসাইটিসের মতো তীব্র ব্যথা হয়। ▪ রোগ আরো বেড়ে গেলে বারেবারে পাতলা পায়খানা হতে থাকে, সঙ্গে আম থাকে প্রচুর। রক্তও পড়ে কখনো। হলে কী করবেন? ▪ সমস্যা চালাকালীন লো-রেসিডিউ ডায়েট অর্থাৎ কম ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে হবে। রুটি, শাকসবজি খাওয়া একটু কমিয়ে দেবেন কয়েকদিন। হালকা সহজপাচ্য খাবার, যেমন মাছ-ভাত, ছানা, দই, চিড়ে, মুড়ি, ফল ইত্যাদি খাবেন। ▪ পানি খাবেন ফুটিয়ে। ▪ বাসনপত্রও খাওয়ার আগে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধোবেন। ▪ শুধু আমাশা নয় যে কোনো পেটের অসুখ এড়াতে চাইলে বাজারের কাটা ফল, খোলা খাবার, বাসি খাবার ইত্যাদি বর্জন করতে হবে।
০৮৪ ▌ডায়রিয়ার লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায়:
শীতকালের তুলনায় গ্রীষ্মকালে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়। তাছাড়া রাস্তাঘাটের খোলা খাবার, আধাসিদ্ধ বা কাঁচা খাবার খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। লক্ষণ: ১. ২৪ ঘণ্টায় তিনবার বা এর বেশি পানিসহ পাতলা পায়খানা হওয়া। ২. ডায়রিয়া শুরুর প্রথম দিকে বমি হয়। পরে অনেক ক্ষেত্রে বমি কমে যায়। ডায়রিয়া হলে করণীয়: ১. রোগীকে বারে বারে খাবার স্যালাইনসহ তরল খাবার খাওয়ান এবং শিশুর ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ মতে জিংক ট্যাবলেট খাওয়ান। ২. রোগীকে স্বাভাবিক ও পুষ্টিকর খাবার খেতে দিন। ৩. শিশুকে মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি খাবার স্যালাইন খাওয়ান। ডায়রিয়া প্রতিরোধের উপায়: ১.খোলা ও বাসি খাবার পরিহার করুন। মাছি, ধুলাবালি ইত্যাদি থেকে খাবার ঢেকে রাখুন। ২. খাওয়ার আগে, পায়খানার পর ও খাবার পরিবেশেনের পূর্বে সাবান দিয়ে ভাল করে দু’হাত ধুয়ে নিন। ৩. পানি ফুটিয়ে পান করুন।
০৮৫ ▌ অর্শ হলে করণীয়:
পায়ুপথে বেশ কিছু রক্তবাহী শিরা উপশিরা ফুলে উঠে অর্শের জন্ম দেয়। ▪ বংশগত কারণে অনেকের মধ্যে অর্শের প্রবণতা থাকে। ▪ দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠবদ্ধতা চললে অর্শ হতে পারে। ▪ লিভার সিরোসিসেও অর্শ হয়। অর্শের চারটে পর্যায় আছে। ▪ প্রথম অবস্থায় শুধু রক্তপাত হয়। কোনো মাংসপি- বেরোয় না। ▪ দ্বিতীয় পর্যায়ে বেরোয় কিন্তু নিজে থেকে আবার ঢুকে যায়। ▪ তৃতীয় পর্যায়ে বেরোনোর পর হাত দিয়ে ঠেললে ঢুকে। ▪ চতুর্থ পর্যায়টিকে বলে প্রোলাপস পাইলস, মাংসপি- সর্বক্ষণ উৎপাতের মতো ঝুলতে থাকে শরীরের বাইরে। ব্যথাও থাকে খুব। কী করবেন? ▪ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার এবং পানি খান প্রচুর পরিমাণে। তৈলাক্ত, চর্বিযুক্ত খাবার বন্ধ করে দিন। প্রাণিজ প্রোটিন যেমন মাছ, মাংস, ডিম খেতে পারেন। তবে পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন যেমন ছোলা, ডাল, সয়াবিন, রাজমা ইত্যাদি খাওয়া বাড়ালে উপকার হবে বেশি। সবগুলের ভুষি খেতে পারেন।
০৮৬ ▌ কাষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয়:
নিয়মিত পেট পরিষ্কার না হলে খুব অস্বস্তি হয়। অস্বস্তির পথ পেরিয়ে দেখা দেয় কোষ্ঠকাঠিন্য। হলে কী করবো? ▪ শাকসবজি, ফল খান বেশি করে। ভাতের বদলে, সুপার সপ থেকে ‘ওটস’ বা লাল আটার রুটি খেতে পারেন। ডাল খান। চর্বিযুক্ত এবং অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার থেকে সমস্যা বাড়ে। কাজেই ভাজাভুজি, মটন, রান্নায় অতিরিক্ত তেলের ব্যবহার কমিয়ে দিন। পানি এবং তরল খাবারের পরিমাণ বাড়ান। দিনে অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি, ফ্রুট জ্যুস খেতে পারলে ভালো। এর সঙ্গে নিয়মিত ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার অভ্যেস করুন। ▪ রাত্রের খাবার কখনো বাদ দেবেন না। খুব বেশি পেট ভরেও খাবেন না। শুতে যাওয়ার ঘণ্টাদুয়েক আগে হালকা এবং সহজপাচ্য খাবার খান। ▪ ধূমপান পারলে ছেড়ে দিন। ▪ চা, কফির পরিমাণ কমান। ▪ হাঁটাচলার পরিমাণ বাড়ান। ▪ প্রতিদিন টয়লেট যাওয়ার অভ্যেস তৈরি করুন। ▪ মল খুব শক্ত হয়ে গেলে ফিসার হওয়ার আশংকা থাকে।
০৮৭ ▌প্রস্রাবে জ্বালা হলে কি করবেন:
▪ প্রস্রাবে জ্বালা অনেকটা মেয়েদের একচেটিয়া। পিরিয়ডের সময় অনেকক্ষণ ধরে প্যাড না বদলালে। ঠিকভাবে পরিষ্কার না করলে। নোংরা প্যান্টি থেকে। ▪ প্রস্টেটের সমস্যা দেখা দিলে প্রস্রাব আটকে যাওয়ার ফলে বয়স্ক পুরুষের মধ্যে জ্বালাযন্ত্রণা, সংক্রমণ দেখা দেয় অনেক সময়।▪ গরমকালে কম পানি খেলে অনেক সময় সাময়িকভাবে প্রস্রাবে জ্বালা হতে পারে। তবে কী করে বুঝবেন প্রস্রাবে জ্বালার কারণ সংক্রমণ? ▪ কী করবো? ▪ প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া শুরু করুন। অন্তত ৩/৪ লিটার। ▪ ডাক্তার দেখিয়ে একটা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করুন। ▪ অধিকাংশ ক্ষেত্রে দিনসাতেকের মধ্যে উপসর্গ পুরোপুরি কমে যায়।
০৮৮ ▌মূত্রনালির ইনফেকশ (প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা)কি করবেন?
লক্ষণ- ১. প্রস্রাবে দুর্গন্ধ। ২. প্রস্রাব গাঢ় হলুদ বা লালচে হওয়া। ৩. প্রস্রাব করার সময় জ্বালা বা ব্যথা করা। ৪. একটু পর পর প্রস্রাবের বেগ অনুভব করলেও ঠিক মতো প্রস্রাব না হওয়া। ৫. তলপেটে বা পিঠের নিচের দিকে তীব্র ব্যথা করা। ৬. বমি ভাব বা বমি হওয়া। ৭. সারাক্ষণ জ্বর জ্বর ভাব বা কাঁপুনি দিয়ে ঘনঘন জ্বর আসা। কি করবেন? ▪ প্রচুর পানি খাবেন। ▪ যখনই প্রস্রাবের বেগ আসবে সাথে সাথে প্রস্রাব করে ফেলুন, আটকিয়ে রাখবেন না। ▪ পানির পাশাপাশি তরল খাবার যেমন ফলের জুস, ডাবের পানি ইত্যাদি বেশি বেশি পান করুন। ▪ পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখবেন সেটি পরিষ্কার কিনা। ▪ একই কাপড় না ধুয়ে বেশিদিন পরিধান করা থেকে বিরত থাকুন। প্যান্টি নিয়মিত ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ▪ যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করার সময় সবসময় সামনে দিক থেকে পেছনে যাবেন, পেছন থেকে সামনে নয়।
০৮৯ ▌ কিভাবে কৃমি রোগ মানুষকে কে আক্রমন করে:
সাধারণত অপরিষ্কার শাকসবজি ফলমূল, নোংরা খাবার, দূষিত পানির মাধ্যমে কৃমির ডিম আমাদের মুখে প্রবেশ করে অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড় চোপর, হাত-পা ঠিকমতো না ধুলে নখের মধ্যে বা আঙুলের ভাঁজে লেগে থাকা ডিম খাদ্যের মাধ্যমে আমাদের পেটে চলে যায়। সেখান থেকে ক্ষুদ্রান্তের এনজাইম বা পাচকরসের মাধ্যমে ডিম থেকে লার্ভা বের হয়। লার্ভাগুলো পাকস্থলীর ক্ষুদ্রান্ত্রে এসে পূর্ণতা লাভ করে। প্রতিরোধ : # জন্মের পর প্রথম ৫ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। # খাবার তৈরি, পরিবেশন এবং খাওয়ার পূর্বে সাবান দিয়ে অবশ্যই হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। # পরিষ্কার জামা-কাপড় পড়া এবং নখ বড় হবার আগেই অবশ্যই কেটে ফেলা। বাড়ির একজনের কৃমি থাকলে সকলেরই সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
০৯০ ▌শিশু কৃমির ওষুধ কখন খাবে?:
নোংরা পরিবেশ, অনিরাপদ পানি পান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, খালি পায়ে হাঁটা কৃমি সংক্রমণের জন্য দায়ী। একটি কৃমি মানুষের অন্ত্র থেকে দিনে শূন্য দশমিক ২ মিলিলিটার রক্ত শুষে নেয়। ফলে শিশুরা অপুষ্টি ও রক্তশূন্যতায় ভোগে। বড়রাও কম ভোগেন না। এ ছাড়া কৃমির কারণে অ্যালার্জি, ত্বকে চুলকানি, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কখনো অন্ত্রের বা পিত্তথলির নালিতে কৃমি আটকে গিয়ে বড় ধরনের জটিলতা হয়। কৃমি সংক্রমণ তাই বড় ধরনের স্বাস্থ্যসমস্যা। ১. প্রতি তিন মাস পরপর পরিবারের সবাই একটি করে অ্যালবেনডাজল বড়ি সেবন করতে পারেন। মেবেনডাজল হলে খেতে হবে পরপর তিন দিন। সাত দিন পর আরেকটা ডোজ খাওয়া যায়। শিশুদেরও একইভাবে সিরাপ খাওয়াতে হবে। দুই বছরের নিচে কোনো শিশুকে খাওয়াতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। গরম, শীত, বর্ষা যেকোনো সময়ই কৃমিনাশক খাওয়া যাবে।
০৯১ ▌রাতে বার বার ঘুম ভাঙছে? পরিণাম কী হতে পারে?:
গবেষণা বলছে যে রাত ১১টা থেকে ১টার মধ্যে যদি ভেঙে যায় ঘুম, তাহলে বুঝতে হবে আপনার গলব্লাডারের কোনো সম্যস্যা হতে পারে। তবে আপনি যদি কোনো বিশেষ কিছু ঘটনা নিয়ে মানসিকভাবে চিন্তিত থাকেন তাহলে এভাবে ঘুম ভেঙে যাওয়াটা স্বাভাবিক। আবার মন মেজাজ খারাপ থাকলে বা মাথা গরম থাকলেও এমন হতে পারে। রাত ১টা থেকে ভোররাত ৩টের ,মধ্যে ঘুম ভেঙে গেলে বুঝবেন আপনার লিভারের কোনো বিশেষ অসুখ হতে পারে। এই ব্যাপারে আরো বলা হয় যে যারা বদমেজাজি ও অল্প কথায় নিজেদের রাগ কোনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না তাদের এই সময়ে ঘুম ভেঙে যায়। তাই বিছানায় ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক প্লাস ঠান্ডা পানি পান করুন। মন শান্ত হলে শুতে যান। রাত ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে হঠাৎ করে ঘুম ভাঙলে তা ভালো লক্ষণ নয়। বুঝতে হবে যে ফুসফুসের কোনো ক্ষতি হতে পারে।
০৯২ ▌সকাল না রাত, ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময় কখন?:
সুস্থ থাকতে শরীরচর্চার কোন বিকল্প নেই। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর যেমন ভালো থাকে তেমনি মন, মেজাজও ভালো থাকে। সেই সাথে কর্মোদ্যমী রাখে আপনাকে। তবে কোন সময় ব্যায়ামের জন্য ভালো হবে এই নিয়ে মানুষ অনেক সময় দোটানায় পড়ে যায়। চলুন দেখে নেওয়া যাক ব্যায়াম করার আদর্শ সময়। সকালে ব্যায়াম: সকালে ব্যায়াম করলে সারাদিনের কাজে শক্তি যোগাবে এবং সেই সাথে মন মেজাজও ফুরফুরে থাকবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করলে আপনি বাড়তি সময় পাবেন আপনার জন্য। রাত বা সন্ধ্যাকালীন ব্যায়াম: সারাদিন শরীর সচল থাকার কারণে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শরীর বিজ্ঞানীরা মনে করেন ক্লান্ত দেহই ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময়। এতে শরীর আবার শক্তি ফিরে পায়। মোট কথা দুই সময়ই ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময়।
০৯৩ ▌ রাত জাগা কাজ যেসব মারাত্মক ক্ষতি করছে আপনার স্বাস্থ্যের!:
যারা নাইট অথবা ইভিনিং শিফটে কাজ রেন, তাদের ঘুম হয় ছয় ঘণ্টা বা তারও কম। নাইট শিফটে কাজ করলে শরীরে সেরোটোনিনের মাত্রা কম হয়, যার ফলে ভালো ঘুম হয় না। একটি গবেষণায় দেখা যায়, ২২৬,৬৫২ জন ব্যক্তির মাঝে যারা নাইট শিফটে কাজ করছিলেন তাদের ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা থাকে অন্যদের তুলনায় ২ গুন। রাতে কাজ করলে ইনসুলিনের কাজ প্রভাবিত হয়। এ কারণে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি থাকে। আমাদের শরীর স্বাভাবিকভাবেই দিনে জেগে থাকা এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ায় অভ্যস্ত। এই ব্যাপারটাকে পাল্টে দিয়ে একজন মানুষ যখন দিনে ঘুমান। দেহঘড়ির এহেন বিরুদ্ধাচারের ফলে মুটিয়ে যাবার ঝুঁকি রয়ে যায় অনেক বেশি। মূলত ঘুমের অনিয়মের কারণেই এ সমস্যা দেখা যায়। অন্যদের তুলনায় শিফট কর্মীদের মাঝে বিষণèতায় ভোগার পরিমাণ বেশি হয়। দেখা দিতে পারে আচরণগত সমস্যা।
০৯৪ ▌অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া:
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমানোর মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, মন সতেজ থাকে আবার কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ইনসমনিয়ার কারণ-প্রথম দিকে বিভিন্ন কারণে যেমন- ফোনে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, পড়াশোনা করা ইত্যাদি কারণে ঘুমে দেরি হয় এবং পরবর্তীতে সঠিক সময়ে আর ঘুম আসে না। এ ছাড়াও আরও বেশ কিছু কারণ আছে যা আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। যেমন-▪ ডিপ্রেশন বা অবসাদগ্রস্ত, টেনশন, দুঃস্বপ্ন ইত্যাদি ঘুমের ব্যঘাত ঘটাতে পারে। অতিরিক্ত চা, কফি ইত্যাদি উত্তেজক পান ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। ▪ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় রুটিন করে বিছানায় যাওয়ার চেষ্টা করুন। ঘুমানোর কমপক্ষে ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। ▪ ঘুম না এলে বিছানায় না শুয়ে থেকে বরং বই পড়ুন বা হাঁটাহাঁটি করুন।
০৯৫ ▌সঠিক মাপের বালিশ দেবে প্রশান্তির ঘুম:
ঘুমের বালিশটি যেমন খুব নরম হলেও চলে না, তেমন আবার খুব শক্ত হলেও তা ¯পাইনাল কর্ডে নানা সমস্যা তৈরি করে। অনেকেই ফোমের বালিশ কেনেন। কিন্তু শরীরের জন্য তা একেবারে উপকারী নয়। বরং আস্থা রাখুন প্রাকৃতিক উপাদানের উপর। বালিশ কেনার সময় দেখে নিন যাতে কাঁধ বা ঘাড় না বেঁকিয়েই অর্থাৎ মোটামুটি সোজা ও সমান্তরাল রেখেই ঘুমিয়ে পড়া যায়। বিশেষ কোনও পাশ ফিরে শোওয়ার সময় কাঁধের সঙ্গে গলার যতটা ফারাক, বালিশের সঙ্গেও কাঁধের যেন ততটাই পাথর্ক্য হয়। অর্থাৎ ঘাড়ের উপরিভাগ ও বালিশের শেষ ভাগ যেন একে অপরকে ¯পর্শ করে থাকে। বালিশের উপর একটা কভার ব্যবহার করুন। কভার বাছাইয়ের সময় বরং বেছে নিন সুতি কাপড়কে। সুতিবস্ত্র ছাড়া অন্য কাপড়ের কভারে গরম লাগতে পারে, তা ত্বকের জন্যও খুব একটা ভাল নয়।
০৯৬ ▌যে কারণে ঘুমের মধ্যে শরীরে ঝাঁকুনি দেয়:
ঘুমের মধ্যে এমন ঝাঁকুনিকে ‘হিপনিক জার্কস’ বলা হয়। জেগে থাকা অবস্থা থেকে হঠাৎ ঘুমাতে যাওয়ার অবস্থার মধ্যে এই ‘হিপনিক জার্কস’ ঘটে থাকে। এই সময় মানুষ পুরোপুরি ঘুমের মধ্যে থাকে না। বরং বলা যায়, সে তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকে। এই অবস্থাতেই স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে জাগরণ ও স্বপ্নের সীমানাকে অনেক সময়েই মস্তিষ্ক বুঝে উঠতে পারে না। ফলে তার ধাক্কা এসে লাগে শরীরে। এ থেকেই তৈরি হয় ‘হিপনিক জার্কস’। আসলে শরীরে তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব নেমে এলে মাস্ল এবং পেশীগুলো আস্তে আস্তে অবশ হতে থাকে। কিন্তু মস্তিস্ক শরীরে পেশীর এই অবস্থান বুঝে উঠতে না পেরে সেই প্রক্রিয়া আটকানোর চেষ্টা করে, ফলে শারীরে ঝাঁকুনি হয়। এতে ভয় পাওয়ার মতো কিছু নেই। তবে অনেক সময়ে নাক ডাকা থেকেও ‘হিপনিক জার্কস’ ঘটে থাকে। ¯œায়ুতন্ত্রের উত্তেজনা প্রবাহ ঠিকমতো ঠাহর করতে না পারায় ঘুমের মধ্যে শরীরে ঝাঁকুনি হয়।
০৯৭ ▌স্লিপ টকিং (ঘুমের মধ্যে কথা বলা) কি করবেন?:
নিদ্রাবস্থায় অসচেতন হয়ে নিজের সাথে কথা বলাই হচ্ছে, স্লিপ টকিং। এরা ঘুমের মধ্যে কথা বলাসহ হাসে, গুণগুণ করে বা চিৎকার ও করে থাকে, অনেক সময় এমনও মনে হতে পারে যে অন্যের সঙ্গে কথা বলছে। স্লিপ টকিং এর বিষয়টি ৩০ সেকেন্ডের বেশি স্থায়ী হয় না এবং প্রতি রাতে একবারের বেশি হওয়াটাও বিরল। ১-১০ বছরের শিশুরা সপ্তাহে কয়েক রাত ঘুমের মধ্যে কথা বলে। যে কারণগুলো দায়ী তা হলো- স্ট্রেস, ডিপ্রেশন, জ্বর, ঘুম বঞ্চনা, দিনের তন্দ্রা, অ্যালকোহল সেবন, বংশগতি, দুঃস্বপ্ন, মানসিক রোগ, মানসিক বা শারীরিক অসুস্থতা, ঔষধের অপব্যবহার ইত্যাদি। পর্যাপ্ত ও নিয়মিত বিশ্রাম নিলে স্লিপ টকিং এর মাত্রা কমতে সাহায্য করে”। ২। স্ট্রেস স্লিপ টকিং এর তীব্রতা বাড়ায় ও পুনরাবৃত্তি ঘটায়। তাই চাপ কমানোর চেষ্টা করুন। ৩। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ৪ ঘন্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন।
০৯৮ ▌বালিশের পাশে মোবাইল রেখে ঘুমানোর ঝুঁকি :
মোবাইল ফোনেই ব্যবহৃত হয় লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। এই ব্যাটারি থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রায় একশো ধরনের গ্যাস নির্গত হয়, যেগুলি মানবশরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই সমস্ত গ্যাসের মধ্যে রয়েছে কার্বন মনোক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাসও। এই কার্বন মনোক্সাইড যদি অতিমাত্রায় শরীরে প্রবেশ করে তাহলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যারা রাত্রে ঘুমানোর সময়ে মোবাইল ফোনটিকে শোওয়ার ঘরেই রেখে দেন, সেইসঙ্গে ঘরের জানলা-দরজাও বন্ধ রাখেন, মোবাইলের প্রভাবে তাদের শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মোবাইলের ব্যাটারি-নির্গত গ্যাসের প্রভাবে মানুষের চোখ, নাক ও গলা জ্বালার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। যারা রাত্রে ঘুমানোর সময়ে মোবাইলটিকে চার্জে বসিয়ে রাখেন, তাদের শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। কাজেই রাত্রে ঘুমনোর সময়ে চেষ্টা করুন মোবাইলটিকে অন্য ঘরে রাখতে। চার্জ দিনের অন্য সময়ে দিন।
০৯৯ ▌ স্লিপ ওয়াকিং (ঘুমের মধ্যে হাঁটা) কি করবেন:
স্বাভাবিক নিয়মে বিছানায় ঘুমাতে যান। কিন্তু কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ঘুমের ঘোরেই তারা নানা ধরনের কাজকর্ম করা শুরু করে দেন। যেমন- আপন মনে কথা বলা, হাসা অথবা কাঁদা, ঘুম থেকে উঠে বসে পড়া, চোখ খুলে তাকিয়ে থাকা, হেঁটে ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে যাওয়া, এমনকি সকাল বেলা অফিসে যাওয়ার ব্যাগ পর্যন্ত গুছিয়ে রাখার মতো কাজ ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে করে থাকে। বস্তুত, তারা জেগে থাকলেও তাদের মস্তিষ্ক তখনও রয়ে যায় ঘুমের রাজ্যে। সতর্কতা : এ ধরনের কোনো দৃশ্য চোখে পড়লে সরাসরি ব্যক্তিকে ঘুম থেকে জাগানোর চেষ্টা না করাই ভালো। এতে ব্যক্তির মেজাজ খিটমিটে হয়ে যায়। করণীয় :* এ সময়ে ব্যক্তিকে ধরে পুনরায় বিছানায় নিয়ে শুইয়ে দিতে হবে। * ¯ি¬প ওয়াকিং-এ আক্রান্ত ব্যক্তিকে একা ঘরে থাকতে দেয়া ঠিক নয়। * প্রতিদিন ঠিক সময়ে ঘুমোতে যাওয়ার অভ্যাস করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে।
১০০ ▌কোমর ব্যথা সারাতে ৯টি পরামর্শ:
১) ভারী কোনো জিনিস নিচ থেকে ওপরে তোলার সময় সামনে না ঝুঁকে হাঁটু ভাঁজ করে বসে তুলুন। তবে কোনো ভারোত্তোলন না করাই শ্রেয়। ২) শরীরের ওজন বাড়াবেন না। অর্থাৎ এমন খাবার খাবেন না, যাতে শরীরের ওজন বাড়ে। ৩) নরম বিছানায় না শুয়ে শক্ত শয্যায় শোবেন। ফোম বা গদিযুক্ত বিছানা ছাড়–ন। ৪) নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করুন। হালকা ব্যায়াম করুন। ৫) সংসারের কাজÑ ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া, মশলা বাটা, ঝাড়– দেয়া ইত্যাদি কাজের সময় কোমর সোজা রাখুন। ৬) উপুড় হয়ে শোবেন না। ৭) আধা ঘণ্টার বেশি দাঁড়িয়ে থাকবেন না। উঁচু গোড়ালির স্যান্ডেল বা জুতো পরবেন না। ৮) ঘাড়ে বা পিঠে কোনো ভারী কিছু বহন করবেন না। ৯) কোমর ব্যথার জন্য ঘন ঘন ব্যথানাশক বড়ি খাবেন না। এটা এক প্রকার বিষ, যা আপনার কিডনি নষ্ট করে দিতে পারে।
১০১ ▌পায়ের গোড়ালি ব্যথায় কী করবেন?:
ঘুম থেকে উঠে শুরু হয় গাড়োলি ব্যথা। পা রাখা যায় না মাটিতে। খানিকক্ষণ চলাফেরা এ আবার কমতে শুরু করে। বসা থেকে উঠলেও একই ব্যাপার । অর্থাৎ চলাচলের মধ্যে হলে ব্যথা সহ্যসীমায় থাকে। বিশ্রামের পর শুরু করতে গেলেই মুশকিল। ব্যথার পা সহ্য হয় এমন গরম জলে ডুবিয়ে রাখুন। বিশেষ করে রাত্রে শোওয়ার আগে। দিনে দু’বার ৮ - ১০ মিনিট করে টিপ টো ব্যায়াম করুন । অর্থাৎ পায়ের আঙুলের উপর। ভর দিয়ে গাড়োলি উঁচু করে দাঁড়ান। আবার পা পেতে দিন। বারবার করুন। -হিলতালো জুতো পরা বারণ। নরম আরামদায়ক ফ্ল্যাট চটি বা জুতো পরুন । - ব্যথা না কমলে এক্সরে এবং দু - একটি রক্ত পরীক্ষা করতে হবে । অনেক সময় গাড়োলির হাড় বাড়ার দরুণ এরকম হয়। যাকে বলে ক্যালকেনিয়ান স্পার । ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ব্যথার ওষুধ খেয়ে এই ব্যথা তেমন কমে না । নিয়ম মেনে চললেই অবস্থা আয়ত্বে থাকে।
১০২ ▌ দন্ত বিষয়ে সবার জন্য সাধারণ কিছু তথ্য:
* ফ্লুরাইড দেয়া যে কোনো টুথপেস্ট দাঁতের জন্য উপকারী। দু-তিন মাস পর টুথপেস্ট ও ব্রান্ড বদলাবেন, কারণ বিভিন্ন পেস্টে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে। * যেসব জায়গা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করা সম্ভব নয় সেসব জায়গায় ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করবেন। * কয়লা, গুল, টুথ পাউডার, ছাই, মাটি, গাছের ডাল ইত্যাদি ব্যবহার নিষেধ। * অত্যধিক পান-সুপারি খাবেন না-এতে দাঁত ক্ষয় হয়ে যায় এবং ক্যান্সার হয়। * বিড়ি-সিগারেট খাবেন না- এতে মুখ ও দাঁতের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। * বিশেষ বিশেষ খাদ্য যেমন- পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, টফি লজেন্স, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়ার পর উত্তমরূপে দাঁত পরিষ্কার করবেন। * ঘুমানোর আগে ভালো করে দাঁত পরিষ্কার করে ফেলবেন। * আঁশালো ও শক্ত খাদ্য যেমন-গাজর, পেঁয়ারা, আমড়া, আখ, আনারস, নাশপাতি, আপেল, নারকেল ইত্যাদি দাঁত ও মাড়ি সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
১০৩ ▌আপনার টুথব্রাশে কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া:
আপনি কি জানেন, আপনার পুরনো টুথব্রাশটিতে ১ কোটিরও বেশি ব্যাকটেরিয়া স্বাধীনভাবে ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে ! আপনার ব্যবহৃত ব্রাশটি ব্যাকটেরিয়া টানার জন্য চুম্বকক্ষেত্রের মতোই কাজ করে। আর তার মধ্যে রয়েছে ই. কোলি ও স্ট্যাফ জাতীয় ভয়াবহ ব্যাকটেরিয়া। আমরা যখন বেসিনে হাত-মুখ ধুই, তখন ছিটে যাওয়া পানি কিংবা ফ্লাশ করা টয়লেটের ঢাকনা খোলা থাকলে, সেখান থেকে ব্যাকটেরিয়া আপনার দাঁতের ব্রাশটিতে গিয়ে সেটিকে দূষিত করে তোলে। বাতাসে ও মেঝেতে থাকা সব ব্যাকটেরিয়াকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে আপনার প্রিয় ব্রাশটি। তাই ব্রাশটি যথাসম্ভব পরিষ্কার ও ক্যাপ পরিয়ে রাখুন এবং ৩ বা ৪ মাস পর ব্রাশ পরিবর্তন করুন। প্রয়োজনে টুথব্রাশটি নিরাপদ স্থানে রাখুন। মুখ ধুয়ার সময় ব্রাশ যেখানে-সেখানে রাখবেন না। প্রয়োজনে টিস্যু পেচিয়ে রাখুন।
১০৪ ▌দাঁত ব্রাশের সঠিক নিয়ম জেনে নিন:
১: ভালো মানের টুথব্রাশ ব্যবহার করুন, যার শলাকাগুলো বেশি শক্ত বা বেশি নরম নয়। ছোটোদের জন্য ছোটো আকারের ব্রাশ দরকার, যা ওদের মুখে সহজে আঁটে। ২: পরিমিত মাত্রায় পেস্ট নিয়ে সকালে নাশতার পরে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করুন। সম্ভব হলে ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। শিশুদের জন্য কম ঝাঁঝাল টুথপেস্ট বেছে নিন। ৩: ব্রাশের শলাকাগুলো দাঁতের সঙ্গে ৪৫ ডিগ্রি কোণাকুণিভাবে ধরে ওপর পাটির দাঁত ওপর থেকে নিচে এবং নিচের পাটির দাঁত নিচ থেকে ওপরে ব্রাশ করুন। ৪: দাঁতের ভেতরে ও বাইরের অংশে সমান সময় নিয়ে ব্রাশ করুন। তাড়াহুড়া করবেন না। কমপক্ষে দুই মিনিট সময় নিয়ে ব্রাশ করুন। ৫: তিন মাস অন্তর টুথব্রাশ পরিবর্তন করা উচিত। ৬: দিনে কমপক্ষে একবার ব্রাশ করার পাশাপাশি অন্য সময় চকলেট কিংবা মিষ্টিজাতীয় আঠালো খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দাঁত ব্রাশ করুন।
১০৫ ▌'মাড়ি থেকে রক্ত পড়লে যা করবেন:
১) যে সমস্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে, সেই সমস্ত খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। লেবু জাতীয় ফল যেমন, কমলালেবু কিংবা মুসুম্বি লেবুতে ভিটামিন সি থাকে। মাড়ির কোষকে সুস্থ রাখতে এগুলি খুবই উপকারী। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া প্রতিরোধ করে। ২) প্রচুর পরিমাণে বেটা ক্যারোটিন থাকে অ্যাপ্রিকটে। যা আমাদের শরীরে ভিটামিন এ জোগায়। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া প্রতিরোধ করে ভিটামিন এ। এর জন্য পালংশাক এবং গাজর একদম উপযুক্ত খাবার। ৩) প্রত্যেকদিন যদি অন্তত ২ গ্লাস করে দুধ খান, তাহলে মাড়ি থেকে রক্ত পড়া প্রতিরোধ সম্ভব। দুধ আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম জোগায় এবং মাড়িকে আরও শক্তিশালী করে। ৪) ডায়েটের তালিকায় কাঁচা সবজি অবশ্যই রাখুন। কাঁচা সবজি রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। একই সঙ্গে মাড়ির স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।
১০৬ ▌ব্রণ হলে কী করবেন :
ব্রণ যে শুধু বয়ঃসন্ধিতে হয় তা কিন্তু নয়। একদম কচি বাচ্চাদেরও ব্রণ হতে পারে যাকে বলে নিওনেটাল একনি। বয়ঃসন্ধিতে শরীরে হরমোনের পরিমাণ এবং সেনসিটিভিটি বেড়ে যাওয়াই ব্রণ-এর মূল কারণ। যার ফলে সিবেসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে অতিরিক্ত তেল বেরোয়। তার উপর ব্যাকটেরিয়া পি.একনির সংক্রমণে দেখা দেয় ব্রণ। ২৫-৩০ বছর বয়সে বা তার পরেও ব্রণ দেখা দিতে পারে। হলে কী করবো? ▪ সাধারণ পরিচর্যা হিসেবে দিনে ৩-৪ বার পানি দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। গরমকালে বার দুয়েক, শীতে একবার, নন অয়েলি, নন কমেডোজেনিক লেখা আছে কি-না দেখে তবে প্রসাধনী কিনুন। রোদে বেরোবার সময় তৈলাক্ত সানব্লক ক্রিম লাগালে আবার বিপদে পড়বেন। অয়েল ফ্রি ক্যালামাইন বা সাধারণ পাউডার ব্যবহার করুন সানস্ক্রিন হিসেবে।
কী করবেন না? ▪ ব্রণ কিছুতেই খুঁটবেন না। টিপে ব্রণের পুঁজ বার করবেন না। করলে ব্রণের সংক্রমণ বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যেতে পারে। এমনকি সেপটিক হয়ে মুখে সেলুলাইটিস পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। গভীর কালো দাগ দেখা দিতে পারে মুখে। ▪ ব্রণ সারাতে কখনোই স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করবেন না। স্টেরয়েড ব্যবহার করলে ব্রণ মিলিয়ে যায় অনেক সময়। কিন্তু পরে প্রচুর ব্রণ ভয়ানক চেহারা নিয়ে একসঙ্গে ফিরে আসতে পারে। একে বলে স্টেরয়েড একনি। মুখে লোমও বেড়ে যায় ।
১০৭ ▌ ঘামাচি হলেকী করবেন:
ঘামাচি সাধারণত তখনই হয় যখন ঘর্মগ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ঘাম বের হয় না এবং ত্বকের নিচে ঘাম আটকে যায়। এর ফলে ত্বকের উপরিভাগে ফুসকুড়ি এবং লাল দানার মতো দেখা যায়। কিছু কিছু ঘামাচি খুব চুলকায়। ঘামাচি সাধারণত এমনিতেই সেরে যায়। তবে ঘামাচি সারানোর জন্য ত্বক সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে এবং ঘাম শুকাতে হবে। ▪ এড়ানোর উপায়- * অতিরিক্ত গরমে প্রচুর পানি পান করা উচিত।* প্রতিদিন কমপক্ষে দুবার গোসল করা প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত একবার গোসলের সময় সাবান মাখতে হবে। * ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে। ▪ ঘামাচি হলে কী করবেন- * পাউডার ব্যবহার করলে পরদিন অবশ্যই ভালোভাবে সাবান লাগাতে হবে। * ঘামাচি হলে ঠান্ডা জায়গায় থাকা আবশ্যক। আক্রান্ত ব্যক্তি অন্তত ২৪ ঘণ্টা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকলে ঘামাচি উপশম হবে। *কিছু বরফ টুকরা নিয়ে ঘামাচি আক্রান্ত এলাকায় ৫-১০ মিনিট ধরে লাগাতে পারেন।
১০৮ ▌ ফোঁড়া, ফুসকুড়ি, পাঁচড়া হলে কী করবেন:
অনেকে ফোঁড়া, ফুসকুড়ি, পাঁচড়ার জীবাণু বহন করেন এবং আশপাশের মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে দেন। এঁদের বলে কেরিয়ার। এঁদের নিজেদের কিন্তু রোগ হয় না। ▪ বাচ্চারা এই সমস্যায় খুব বেশি ভোগে। স্কুল, হোস্টেল বা খেলার মাঠে রোগী অথবা কেরিয়ারের সংস্পর্শে আসাই এর মূল কারণ। ▪ খুব বেশি ধুলোবালি বাা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকলে জীবাণু সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ▪ বাড়িতে একজনের হলে অন্যদের মধ্যে রোগ ছড়াতে পারে। ▪ ডায়াবেটিস রোগীদের এই জাতীয় সংক্রমণ বেশি হয়। ▪ ওজন বেশি হলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। হলে কী করবো?-▪ আক্রান্ত অংশে টপিকাল অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম দিনে দু-তিনবার করে লাগাতে হবে। ▪ আক্রান্ত জায়গা খুঁটবেন না। ফোঁড়া ফাটাবার চেষ্টা করবেন না। ▪ রোগটা ছোঁয়াচে। কাজেই যাঁর হয়েছে তিনি তাঁর জামাকাপড়, বিছানার চাদর, বালিশের ওয়াড়, তোয়ালে কদিন একটু আলাদা করে রাখবেন।
১০৯ ▌ দাদ হলে কী করবেন:
শরীরের যে-কোনো স্থান ফাংগাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একে দাদ বলে। এই আক্রমণ মাথার চামড়ায়, হাত-পায়ের আঙুলের ফাঁকে কিংবা কুঁচকিতে হতে পারে। এটা ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্ত স্থান চাকার মতো গোলাকার হয় এবং চুলকায়। মাথায় আক্রান্ত স্থানে চুল কমে যায়। প্রতিকার পেতে সাবান ও পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান প্রতিদিন ধুতে হবে। এছাড়া আক্রান্ত স্থান শুকনো রাখা জরুরি। অনেক সময় ব্যবহৃত সাবান থেকেও দাদ হতে পারে, সেক্ষেত্রে সাবান ব্যবহার কিছুদিন বন্ধ রাখতে হবে। প্রতিরোধ: ▪ ক্ষতস্থান শুকনো রাখার চেষ্টা করা, যতটা সম্ভব তেল সাবান না লাগানো ভাল। ▪ সংক্রমণের জায়গাটা যতটাসম্ভব খোলা রাখতে হবে এবং গেঞ্জি, মোজা, আন্ডারওয়্যার প্রতিদিন পরপর পরিষ্কার করতে হবে। ▪ উষ্ণ গরম পানি ও সাবান দিয়ে ভালভাবে ধৌত করে শুকিয়ে ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।
১১০ ▌একজিমা হলে কী করবেন:
একজিমা হলো ত্বকের এমন একটি অবস্থা যেখানে ত্বকে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। একেক ধরনের একজিমার লক্ষণ একেক রকম হয়। তবে সাধারণভাবে লালচে, প্রদাহযুক্ত ত্বক, শুষ্ক, খসখসে ত্বক; ত্বকে চুলকানি; হাত ও পায়ের ত্বকের মধ্যে ছোটো ছোটো পানির ফুসকুড়ি ইত্যাদি হলো একজিমার লক্ষণ। একজিমার কারণ-▪ সাধারণত শুষ্ক বা রুক্ষ ত্বক একজিমার জন্য দায়ী, কারণ- এ ধরনের ত্বক ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারে না। ▪ বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য, ডিটারজেন্ট, সাবান বা শ্যা¤পু থেকে এ রোগের সংক্রমণ হতে পারে। ▪ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘর্মগ্রন্থি বন্ধ হয়ে এটির সৃষ্টি হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক বা হরমোন জাতীয় ওষুধ সেবন এবং স্টেরয়েড জাতীয় ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। করণীয়- ▪ সবসময় নরম ও আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে। ▪ আক্রান্ত স্থান চুলকানো যাবে না। ▪ কাপড় পরিষ্কারের জন্য ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে।
১১১ ▌ ছৌদ বা ছুলি হলে কী করবেন:
এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। গরমকালে এ রোগে রোগী বেশি আক্রান্ত হয়, শীতকালে আবার এমনিতেই যেন মিলিয়ে যায়। আবার গরম এলে গায়ের চামড়া ভিজে থাকে, তখনই আবার দেখা দেয়। হালকা, বাদামি, সাদা গোলাকৃতি দাগ দেখা যায়। বুকে, গলার দুই পাশে, ঘাড়ের পেছনে, পিঠে, বগলের নিচে, এমনকি সারা শরীরেও হতে পারে। সাধারণত ৬-৩০ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে ছুলি দেখা যায়। ছুলির কারণ- ▪ পরিবারের কারো ছুলি থাকলে অন্যদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ▪ ত্বক শুষ্ক হলে এবং ত্বকে র্যাশের কারণেও ছুলি হতে পারে। ▪ অ্যাজমা এবং এলার্জি ছুলির অন্যতম আরেকটি কারণ। ছুলি সাধারণত কয়েক মাস থেকে বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং একাই সেরে যায়। এটি ক্ষতিকারক নয় এবং সংক্রামকও নয়, সুতরাং এ থেকে ভয়ের কিছু নেই। এটি ত্বকের রঞ্জকের অভাবের ফল। ছুলি দূর করার জন্য বিভিন্ন ক্রিম বাজারে দোকানে পাওয়া যায়। এগুলো বেশ কার্যকর।
১১২ ▌খুশকি কেন হয়? কী করবেন?:
খুশকি চুল পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। শীতে এ সমস্যা আরো ভয়াবহ হয়ে ওঠে। খুশকি একবার হলে তা একেবারে দূর করা মুশকিল হয়ে পড়ে। যেসব কারণে হয় : চুলে অতিরিক্ত ময়লা হয় বা নিয়মিত না ধোয়া হয়, তবে খুশকি হয়। তাই যাঁরা নিয়মিত বাইরে যান, তাঁদের খুশকি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। ▪ ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হলেও খুশকি হয়। বেশ কয়েক দিন চুল ধোয়া না হলে আর মাথার ত্বক ঘেমে থাকলে ফাঙ্গাস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ▪ অনেকের মাথার ত্বক তৈলাক্ত থাকে। আবার যাঁরা অনেক বেশি ঘামেন, তাঁদের মাথায় খুশকি হতে পারে। ▪ খুশকিযুক্ত জিনিসপত্র তোয়ালে বা চিরুনি অন্য কেউ ব্যবহার করলে খুশকি হতে পারে। খুশকি প্রতিরোধ- পুরনো তেঁতুল পানিতে গুলে নিন। গোলানো তেঁতুল চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগান। ১০-১২ মিনিট অপেক্ষা করে চুল শ্যা¤পু করে ধুয়ে ফেলুন। * নিয়মিত চুল আঁচড়ান। এতে খুশকি হবার সম্ভাবনা কমে যাবে।
১১৩ ▌আঁচিল হলে কী করবেন:
আঁচিল যা চামড়ার উপর অনেকটা গুটির মতো দেখা যায়, অথবা শক্ত ফোস্কার মতো দেখায়। সাধারণত হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস দ্বারা আঁচিল হয়ে থাকে। চিকিৎসা করা না হলে আঁচিল সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার অনেক সময় চিকিৎসা না নিলেও আঁচিল ভালো হয়ে যায়। তবে একবার ভালো হয়ে যাওয়ার পরও আবার হতে পারে এবং কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। আঁচিল আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস, নখের আঁচড়ে এ ভাইরাস ছড়ায়। এ ছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন রোগের কারণেও আঁচিল হতে পারে। দুই-এক মাসের মধ্যে আঁচিল ভালো না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। এর মধ্যে স্যালিসিলিক এসিড স¤পৃক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি অধিক কার্যকর। এছাড়া ক্যারাটোলাইসিস, ক্রায়োসার্জারি, ইলেকট্রোডেসিকেশান, লেজার চিকিৎসাও অধিক জনপ্রিয়।
১১৪ ▌চুলপড়া সমস্যা ও তার সমাধান:
অ্যান্ড্রোজেনের কারণে চুল পড়া: অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন যেমন টেস্টোস্টেরন, অ্যান্ড্রোস্ট্রেনডিয়ন, ডিএইচটি হরমোনগুলো সাধারণত পুরুষের বেশি ও মহিলাদের কম পরিমাণে থাকে। যাদের এসব হরমোনের প্রভাব বেশি তাদের বেশি করে চুল পড়ে। দীর্ঘদিন মানসিক দুশ্চিন্তায় থাকলে বা দুশ্চিন্তা কাটিয়ে উঠতে না পারলে অনেক বেশি চুল পড়ে যেতে পারে। দৈনিক ১০০টা পর্যন্ত চুল পড়া স্বাভাবিক। চুলের গোঁড়ায় হেয়ার ফলিকল থাকে। ভাইব্রেশনের মাধ্যমে যদি ফলিকল উদ্দীপিত করা যায় তবে নতুন চুল গজানো সম্ভব। বাজারে ভাইব্রেটিং ম্যাসেজার কিনতে পাওয়া যায়। খাদ্যাভ্যাস: ০১. প্রোটিন: নতুন চুল গজানোর নিয়মিত খেতে হবে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সয়াবিন, মটরশুঁটি, কলা, বাদাম ইত্যাদি ০২. আয়রন আর জিঙ্ক: মটরশুঁটি, বাদাম, কলিজা, মাংস, দুধে জিংক আর আয়রন। ০৩. ভিটামিন সি: পেয়ারা, লেবু, কমলা, আনারস, কামরাঙা, কাঁচা মরিচ।
১১৫ ▌কানে কিছু ঢুকলে কি করবেন?:
▪ কানে কিছু ঢুকলে, কান পরিষ্কার করতে গিয়ে তুলো বা পোকামাকড়, একটুও খোঁচাখুঁচি করবেন না। তুলো বা নির্জীব বস্তু হলে ঠেলার চোটে আরো ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। জ্যান্ত পোকা হলে তো কথাই নেই। কানের ডাক্তারের কাছে যান। তিনি তাঁর যন্ত্রপাতি দিয়ে জিনিসটি বার করে দেবেন। ▪ পোকা কানের মধ্যে ছটফট করতে থাকলে খুবই অস্বস্তি এবং যন্ত্রণা হতে থাকে। এর হাত থেকে মুক্তি পেতে কানে কয়েকফোঁটা সরষে বা নারকেল তেল ঢেলে দিন। পোকা তাতে ডুবে মরলে ভালো। সড়সড়ানির হাত থেকে মুক্তি পাবেন। এরপর ডাক্তারের কাছে যান। ▪ কানের পোকা কখনো মাথায় যায় না। এ থেকে মৃত্যু তো দূরস্থান কোনো বিপদ ঘটারও কারণ নেই।
১১৬ ▌গলায় কাঁটা বিঁধলে কী করবেন?
▪ আলু, ভাত বা কলা খান। নেমে যেতে পারে।
▪ গলায় আঙুল দিয়ে, চিমটে দিয়ে কাঁটা বার করার চেষ্টা করবেন না। কাঁটা আরো ভেতরে ঢুকে যেতে পারে।
▪ গলার মধ্যে ক্রমাগত খচখচ করতে থাকলে বেশি দেরি না করে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
▪ অনেক সময় কাঁটা বেরিয়ে যাওয়ার পরও খচখচানি কমে না। মনে হতে পারে কাঁটা রয়ে গেছে। কাঁটার আঘাতে ক্ষত সৃষ্টি হওয়ার জন্য এরকম হয়। চিন্তা করার কিছু নেই। দু-একদিনের মধ্যেই অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
১১৭ ▌গলা ভাঙলে কি করবেন:
ঠাণ্ডা লেগে গলা ভাঙে। আবার স্বরযন্ত্রের ক্যানসার থেকেও স্থায়ীভাবে গলার আওয়াজ বদলে যেতে পারে। তবে ▪ প্রধান কারণ কিছু ভাইরাসের সংক্রমণ। ▪ সামান্য কিছু ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দরুণ গলা ভাঙতে পারে। ▪ খুব জোরে জোরে প্রচুর কথা বললে। অনেক সময় এর ফলে গলায় মটরদানার মতো ছোটো মাংসপি- দেখা দেয়। ফলে ব্যবস্থা না নিলে স্থায়ীভাবে গলা ভাঙে। একে বলে সিঙ্গারস নডিউল। ▪ স্বরযন্ত্রে টিউমার হলে। গলায় সংক্রমণ বা গলায় পলিপ হয় অনেক সময়। স্থায়ী গলাভাঙার এও এক কারণ। কী করবেন? ▪ ঠা-া লেগে গলা ভাঙলে দিনে তিন-চারবার গরম পানির ভাপ টানতে পারেন। কথা বলা বন্ধ করুন যথাসম্ভব। সব ধরনের ঠা-া জিনিস এড়িয়ে চলুন। খাবার খান গরম গরম। শীতকালে গলায় মাফলার বেঁধে রাখুন। অন্য সময় জড়িয়ে রাখুন পাতলা কাপড়। ▪ চেঁচিয়ে গলা ভাঙলে বিশ্রাম দিতে হবে গলাকে। কথাবার্তা পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে।
১১৮ ▌গলাব্যথা, ঢোঁক গিলতে কষ্ট? কি করবেন:
খাবার বা কোনো কিছু গিলতে অসুবিধা বোধ করাকে ডিসপেজিয়া বলে। পরীক্ষা করে দেখতে হবে কোনো গ্ল্যান্ড বা টিউমার আছে কি-না বা থাইরয়েড ফুলে গেছে কি-না। ▪ গলবিল ও শ্বাসনালী পরীক্ষা করে ভোকাল কর্ড এ দুর্বলতা, জিহ্বার গোড়ায়, হাইপো-ফ্যারিংসে কোনো কিছু বড়ো হয়েছে কি-না তা দেখতে হবে। ▪ এপিগ্যাস্ট্রিক টেনডারনেস বড়ো হয়েছে কি-না তা পেটে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ▪ রোগীর পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন আছে কি-না দেখতে হবে। রোগীর ওজন দেখতে হবে। কি করবেন: প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। বারবার কুলি করতে হবে। সাধারণ স্যালাইন বা লবণ মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে বারবার কুলি করতে হবে। লেবু বা আদা চাও খেতে পারেন। গলায় ঠা-া লাগানো যাবে না। ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হতে পারে।
১১৯ ▌নাক ডাকা সমস্যায় কী করবেন:
নাকের নালি আংশিক সংকুচিত থাকা এবং জিহ্বার পেছনে বায়ুপথ সংকুচিত থাকা। মাঝ বয়সে নাকের পর্দা বাঁকা বা নাকে পলিপের কারণেও এ সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া ওজন বাড়লে বাতাস চলাচলের পথের পাশে চর্বি জমে। এতে করে পথটি নরম ও সরু হয়ে যায়। সহজ কিছু সমাধান: ওজন কমাতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, যেমন- হাঁটা, সাঁতার কাটা ইত্যাদি করতে হবে। সরু গলা, তালুতে ফাটল, বড়ো এডেনয়েড এধরনের কোনো সমস্যা থাকলে তার জন্য চিকিৎসা নিতে হবে। একদিকে কাত হয়ে ঘুমানো, প্রয়োজনে পিঠের নিচে কিছু দিয়ে নিতে হবে। বালিশ ৪ ইঞ্চি উঁচু করা। শুতে যাওয়ার ২ ঘন্টা আগে থেকে ক্যাফেইন, দুধ বা অন্য কোন ভারী খাবার না খাওয়া। অতিরিক্ত পরিমাণে মশলাযুক্ত খাবার কমিয়ে আনা। বিছানাপত্রে বেশি ধুলাবালি থাকলে, নাকের নালিতে ধুলা-ময়লা সংক্রমিত হয়ে নাকের পেশি ফুলে উঠতে পারে এবং নাক ডাকা শুরু হতে পারে।
১২০ ▌ কানব্যথা কেন হয়?:
▪ বহিঃকর্ণ অর্থাৎ কানের পর্দার বাইরের অংশে কোনো অসুবিধে দেখা দিলে কানে ব্যাথা হয়। যেমন, ▪ খোঁচানোর ফলে কানে সংক্রমণ হলে। ▪ কানে প্রচুর পরিমাণে খোল জমে গেলে। ▪ কানে পোকা, পিঁপড়ে বা অন্য কোনো কিছু প্রবেশ করলে। ▪ মধ্যকর্ণ অর্থাৎ পর্দা থেকে কানের ভেতরের অংশের কোনো সমস্যা হলে। ▪ কানের পুুঁজ দীর্ঘদিন থেকে গেলে,কানের পিছনে ম্যাসটয়েড হাড়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে মারাত্মক কানব্যথা শুরু হতে পারে। ▪ মাথা, মুখ, গলা ইত্যাদি অংশের কোনো অসুখেও কান ব্যথা হতে পারে। ব্যথা হলে কী করবো? ▪ কাপড় গরম করে শুকনো সেঁক দিতে পারেন কানে। ▪ কান পরিষ্কার করার বাতিক ত্যাগ করুন। প্রাকৃতিক নিয়মে নিজে থেকেই কান পরিষ্কার হয়ে যায়। খোঁচাখুঁচি করলে ময়লা ও সংক্রামক বেশি জমে। ▪ কানে যেন পানি না ঢোকে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। ▪ ঠা-া লেগে গলায় বা নাকে যাতে সংক্রমণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
১২১ ▌চোখ ওঠলে কী করবেন:
সারা বছরই চোখ ওঠার সমস্যা থাকে অনেকেরই। তবে শীতের শুরুতে বা গরমের শুরুতে অর্থাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে এর প্রকোপ বাড়ে। কীভাবে বুঝবেন- * চোখ লাল হওয়া * চোখ জ্বলা এবং চোখে অস্বস্তি হওয়া * চোখ থেকে পানি বা শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থ বের হওয়া * অতিরিক্ত পিচুটি বের হতে থাকা। কেন চোখ ওঠে-ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, কোনো রাসায়নিক পদার্থ বা অ্যালার্জির কারণে চোখ উঠতে পারে। ভাইরাসজনিত কারণে হলে অনেক সময় এক চোখ আক্রান্ত হয় এবং তার সঙ্গে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণও থাকতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে চোখ উঠলে কিছুটা হলদে রঙের পুঁজের মতো নিঃসরণ হবে চোখ থেকে। পরিষ্কার পানিতে তুলা বা কাপড় ডুবিয়ে চোখে আলতোভাবে চেপে ধরতে পারেন। আক্রান্ত ব্যক্তির তোয়ালে, কাপড়ও অন্যদের ব্যবহার করা উচিত নয়। এগুলোকে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পরিষ্কার করতে হবে। চোখে চোখ রাখলেই চোখ ওঠে না।
১২২ ▌'চোখের যত্নে প্রতিদিন কী করবেন:
১। পর্যাপ্ত আলোতে কাজ করুন: কম আলো বা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি আলো দুটোই চোখের জন্য খারাপ। তাই খেয়াল রাখুন আপনার কাজের পরিবেশের আলো পর্যাপ্ত কিনা। ২। ক¤িপউটার বা টেলিভিশনের স্ক্রিনের দিকে অপলক থাকিয়ে থাকবেন না: ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকেন মনিটর বা টেলিভিশনের স্ক্রিনের দিকে থাকাবেন না। কিছুক্ষণ কাজ করে চোখকেও বিশ্রাম দিন। ৩। সবুজ শাক-সবজি খান: মৌসুমী শাক-সবজি, ফলমূল রাখুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। প্রচুর মাছ খাবেন। ৪। সূর্য থেকে রক্ষা করুন চোখ: রোদে বাইরে গেলে ছাতা রাখুন সাথে আর ব্যবহার করুন সানগ্লাস। ৫। চোখের ব্যায়াম করুন: ঘুম থেকে উঠে চোখ ১০ বার ডামদিকে, ১০বার বামদিকে, এবং ২০ বার মিট মিট করে চোখ বন্ধ করুন এবং খুলুন। এবং দূরে সবুজ গাছ পালার দিকে একটানা কয়েক মিনিট তাকিয়ে থাকুন।
১২৩ ▌চোখে কিছু পড়লে কী করবেন:
*চোখে ধুলাবোলি, ধার টুকরো, উড়ন্ত পোকা ইত্যাদি পড়লে পরপর কয়েকটি জিনিস। * চোখ খোলা রেখে ভাল করে চোখে পানির ঝাপটা দিন। * চোখের পাতা উল্টে দেখে নিন জিনিসটি সেখানে গেঁথে আছে কি-না। থাকলে ওই অবস্থায় বারবার পানির ঝাপটা দিন।* নোংরা রুমাল বা ধারালো কিছু দিয়ে বার করার চেষ্টা করবেন না। * চোখ একেবারে রগড়াবেন না। জিনিসটি চোখের মধ্যে গেঁথে যেতে পারে। অথবা রগড়ানোরে চোটে মণি ছিঁড়ে যেতে পারে। * অসহ্য অবস্থা হলে চোখ রুমাল দিয়ে বেঁধে ডাক্তারের কাছে যান। কারণ চোখে ধারালো কিছু ঢুকলে সামান্য চোখের পাতার ওঠানামাতেই চোখের মধ্যে কেটে যেতে পারে। *চোখে অ্যাসিড, অ্যালকালি, ব্লিচিং পাউডার ইত্যাদি পড়লে রোগীকে চিত করে শুইয়ে। চোখের পাতা টেনে খুলে, মগ বা কেটলি দিয়ে প্রচুর পানি ঢালুন চোখে।
১২৪ ▌ চোখের চশমা কেন:
দুনিয়ার প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে কোনো না কোনো সময় চশমা লাগে - কেউ পরে আর কেউ পরে না, এই যা তফাৎ। ▪ চশমা নিলেই পাওয়ার বাড়বে, এ ধারণা ভুল। পাওয়ার যা বাড়ার তা বাড়বেই। ▪ চশমা পরলে চোখ ভাল হয় না। আর না পরলেও চোখ খারাপ হয় না। পরলে ভাল দেখবেন, এই যা। ▪ শতকরা দশজন স্কুলের বাচ্চার চশমা লাগে এবং দেরিতে চশমা নেওয়ার জন্য তার তিন জনের অলস চোখ হয়ে থাকে, যার কোনো চিকিৎসা নেই। ▪ খাদ্যের সঙ্গে চশমার পাওয়ারের কোনো স¤পর্ক নেই তবে ভিটামিন-এ যুক্ত খাবারের সঙ্গে বিশেষ একটা রাতকানা এবং অন্যকিছু চোখের রোগের স¤পর্ক আছে । বড়োরা চশমা না পরলে তার হয়তো কোন লেখা পড়তে অসুবিধা হবে। কিন্তু শিশুর ৫-৮ বছর বয়সে চোখের সমস্যা ছিলো। তখন তার একটি চশমা প্রয়োজন। কিন্তু সেটা যদি না দেওয়া হয় তবে তার সেই ঝাপসা দৃষ্টি সারাজীবনের জন্য ঝাপসাই থেকে যেতে পারে।
১২৫ ▌ সানগ্লাাস কি দরকার:
রোদেলা দিনের প্রতি মুহূর্তে সানগ্লাস চোখকে সুরক্ষা করে। উপকারিতাগুলো- ১. দীর্ঘসময় রোদে থাকলে বয়স বাড়ার সঙ্গে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া আশঙ্কাও বেড়ে যায়। তাই সানগ্লাস ব্যবহার জরুরি। ২. বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চলন্ত অবস্থায় বাতাসের ধুলাবালি এবং পোকা-মাকড় আমাদের চোখে এসে পড়তে পারে। আর এসব ধুলাবালি ও পোকামাকড় থেকে সানগ্লাস রক্ষা পেতে সহায়তা করে। ৩. সূর্যের ক্ষতিকর অতি-বেগুনি রশ্মি কর্নিয়া ও অক্ষিপটের ক্ষতি করে। সানগ্লাস চোখকে রশ্মি থেকে পুরোপুরি রক্ষা করে। ৪. চোখে প্রচুর আলো পড়লে আইরিস ছোটো হয়ে চোখ কুচকে যেতে পারে। এতে অক্ষিপটের ক্ষতি হয়। ভালো মানের সানগ্লাস ব্যবহার এই আলোর পরিমাণ ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। ৫. দীর্ঘ সময় রোদে থাকলে চোখের পাতা, চোখের চারপাশ, ত্বকে জ্বালাভাব, কালি পড়া, ভাঁজ পড়া সমস্যার দেখা দেয়। তাই সানগ্লাস ব্যবহার জরুরি।
১২৬ ▌ এলার্জি কি? কেন হয়, মুক্তির উপায়:
সাধারণত মানুষের শরীর ক্ষতিকর বস্তুকে (পরজীবী, ছত্রাক, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া) প্রতিরোধের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করে বা এই প্রচেষ্টাকে ইমিউন বলা হয় কিন্তু কখনো কখনো আমাদের শরীর সাধারণত ক্ষতিকর নয় এমন অনেক ধরনের বস্তুকেও ইমিউন সিস্টেম ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকে এলার্জি বলা হয়। ঘরের ধুলাবালি, ফুলের ঘ্রাণ, গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ, গরুর দুধ ইত্যাদি সাধারণ ব্যাপারে গা চুলকানি শুরু হলে অথবা চামড়ায় লাল লাল চাকা হয়ে ফুলে ওঠলে ধরে নিতে হবে আপনার এলার্জি আছে। কারও ফাঙ্গাল এলার্জি হয় আবার কারও হয় খাবারে। কোন খাবারে এলার্জিজনিত সমস্যা হলে, সেই খাবারটি দীর্ঘদিন বন্ধ রাখতে হবে। খাবারে এলার্জির কারণে বেশ কিছু সমস্যা যেমন- বমি, মাথাব্যথা, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। ▪ প্রতিদিন ঘর পরিষ্কার , বিছানার চাদর, বালিশের কভার, মশারি ইত্যাদি ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
১২৭ ▌কিশোর-কিশোরীর খাবার:
আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন খনিজের সুষম অনুপাতে না থাকলে শরীরের বৃদ্ধি সঠিক হবে না। ইদানীং অনেক কিশোরী ফিগার-সচেতন হওয়ায় খাওয়াদাওয়া করে না বললেই চলে। এ ছাড়া বেশিরভাগ কিশোর-কিশোরী আজকাল সারাদিন বাইরের খাবার খেয়েই ব্যস্ত। এতে তেল-চর্বি, ট্রান্সফ্যাট বেশি, কিন্তু প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নেই। ফলে কৈশোরে স্থূলতা বাড়ছে, কিন্তু শরীর ফিট হচ্ছে না। সকালের নাশতা দেহের বিপাকক্রিয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রুটি, ডিম বা দুধ, কর্নফ্লেক্স, একটু ফলের রস এগুলো হতে পারে চটজলদি নাশতা মেয়েদের বেলায় আয়রনের ঘাটতি প্রায়ই হয়ে থাকে। নিয়মিত ডিম, মাংস, কলিজা, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খেতে হবে। এ ছাড়া ছোট মাছ, দুধ, দই, দুধের তৈরি খাবার খেতে হবে নিয়মিত। নানা ধরনের ভিটামিনের জন্য কচুশাক, পুঁইশাক, লালশাক, ধনে পাতাসহ বিভিন্ন দেশি ফলÑআমড়া, কলা, পেয়ারা, আমলকী, লেবু, কমলা খেতে হবে।
১২৮ ▌ সারাদিন ক্লান্ত লাগে কেন:
সারাদিন খুব ক্লান্ত লাগে, অবসন্ন লাগে? কোনো কাজ করতে মন চায় না? মনে হয় কেবল বিশ্রাম নিই। শরীর ব্যথা করে, ম্যাজম্যাজ করে। ঘুম ঘুম ভাব হয়। এর অর্থ হচ্ছে আপনার স্ট্রেস হরমোন খরচ হচ্ছে না। স্ট্রেস হরমোন কমাতে সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট করে এমনভাবে হাঁটতে হবে, যাতে হৃৎ¯পন্দন বাড়ে, রক্ত চলাচল বাড়ে। যত কাজই থাকুক, রাতে নিয়মিত ঘুম চাই ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। থাইরয়েড হরমোন, ভিটামিন ডি কমে গেলেও ক্লান্তি ও অবসাদ দেখা দেয়। রক্তশূন্যতাও হতে পারে একটি কারণ। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে আপনার ক্লান্তি ভাব আসবেই।
ভাজাপোড়া খাওয়ার অভ্যাসে ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরেল, উচ্চ রক্ত চাপের মতো রোগ হতে পারে। মাঝে মধ্যে ভাজাপোড়া খাওয়া যেতেই পারে। আর সেজন্য মানতে হবে কিছু নিয়ম ও শর্ত।
বেশি ভাজাপোড়া খাওয়ার পর অস্বস্তি হতে পারে, এজন্য ৩০- ৪০ মিনিট পর হালকা গরম পানি খেয়ে নিন। ভাজাপোড়া খাওয়ার পর একদম ঘুমাতে যাবেন না; এতে অস্বস্তি বাড়ে। হজমেও সমস্যা শুরু হয়।
যেকোনো ভারী খাবার খাওয়ার পর সবচেয়ে ভালো উপকার হয় টক দই খেলে।
ভাজাপোড়া খাওয়ার সঙ্গে আইসক্রিম বা ঠাণ্ডা পানীয় খাবেন না। এই সব খাবার হজম প্রতিক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে, ফলে অস্বস্তি আরও বাড়ে।
পুষ্টিবিদদের মতে, কলাতে গ্লুকোজ ও ক্যালোরি থাকে। কলা অনেক সময় ধরে পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে দিনে কয়টা করে কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বিশেষজ্ঞদের কথায় কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম রয়েছে। তাই কলা বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মাঝারি সাইজের কলা প্রাপ্তবয়স্করা দিনে দুই থেকে তিনটি করে খেতে পারে। তবে শিশুদের দিনে একটি করে কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অন্যদিকে কলা অনেক সময় গাছপাকা হয় না। কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়। তাই অতিরিক্ত কলা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। প্রচুর পরিমাণে কলা খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। একটি মাঝারি সাইজের কলাতে ১০৫ ক্যালরি শক্তি থাকে। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে তাহলে তাদের দৈনিক একটা বেশি কলা খাওয়া ভালো নয়। কলায় টাইরামইন থাকে, যা মাইগ্রেনের কারণ।
কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে। রক্তে পটাসিয়াম বেড়ে গেলে ক্লান্ত অনুভূত হয়। হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। তাই প্রচুর পরিমাণে কলা খাওয়া ঠিক নয়। কলায় প্রচুর শর্করা থাকে। এটি দন্তক্ষয়ের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের কথায় চকোলেটের থেকেও বেশি শর্করা থাকে কলায়।
শরীরের অনেক জটিলতা থেকে মুক্তি দেয় পান্তা ভাত। পান্তা ভাতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়ামের পরিমাণ রান্না করা ভাতের তুলনায় বেশি থাকে। অন্যদিকে সোডিয়ামের পরিমান কম থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আমেরিকা নিউট্রিশন অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা বলছে, ভাত পানিতে ভিজিয়ে রাখলে পাকস্থলী প্যানক্রিয়াটিক অ্যামাইলেজসহ আরও কিছু এনজাইমের কার্যকারিতা বহুগুণ বেড়ে যায়। ফলে পান্তা ভাতের জটিল শর্করাগুলো খুব সহজেই হজম হয়ে যায়। * ফার্মেন্টেশনের ফলে পান্তা ভাতে ভিটামিন বি১২-এর মাত্রা বেড়ে যায়। এই পুষ্টি শরীরের ক্লান্তি ভাব কমাতে এবং দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি অনিদ্রার সমস্যা দূর করে। * এই খাবারে যেহেতু তরলের পরিমাণ বেশি থাকে, তাই শরীরকে হাইড্রেটেডও রাখে পান্তা ভাত। * ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রনের মতো পুষ্টি রয়েছে পান্তা ভাতে। তাই দিনে একবেলা পান্তা ভাত খেয়ে থাকলেও দেহে পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হবে না। এ ছাড়া এই খাবারে প্রোবায়োটিক রয়েছে, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে। * দেহের পিএইচ স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে পান্তা ভাত। গ্যাস-অম্বল, অ্যাসিডিটি, আলসারের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় এই খাবার। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে পান্তা ভাত।
* উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মতো লাইফস্টাইল ডিজিজে ভুগলেও আপনি পান্তা ভাত খেতে পারেন। এই খাবার খেলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং, পান্তাভাত দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কুসুম গরম পানি পান করলে পেট পরিষ্কারসহ শরীরের অতিরিক্ত চর্বি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ত্বক থাকে প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১-২ গ্লাস, দিনের যেকোনো সময় খাবারের ৩০ মিনিট আগে বা পরে এক গ্লাস হালকা গরম পানি পান করা উচিত।
তারা আরও বলেন, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো একাধিক সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব, শরীর দ্রুত ডিটক্স হয়ে যায়। নিয়মিত হালকা গরম পানি পান করলে তারুণ্যকে ধরে রাখা যায়। এছাড়াও ত্বকে জমাট বাধা তেল, ধুলোবালি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যেসব শারীরিক সমস্যায় গরম পানি খেলে উপকার পাওয়া যায় সেগুলো, মাইগ্রেন, উচ্চ রক্তচাপ, নিম্ন রক্তচাপ, হাঁটু, গোড়ালিতে ব্যথা, বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা, হুটহাট হৃৎস্পন্দন বাড়া-কমা, কাশি, পেটের সমস্যাসহ আরও অনেক জটিল রোগে গরম পানি বেশ কার্যকর। শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমে গেলে সবাই অস্বস্তি বোধ করে। মেদ ঝরাতে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হয়। এর পাশপাশি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস হালকা গরম পানি পান করবেন। পানিতে লেবুর রস ও মধু দিতে পারেন। এক সপ্তাহেই দেখবেন মেদ কমবে ঝটপট। অন্যদিকে গরম পানি পানে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার সুযোগই থাকে না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে হালকা গরম পানি পান করলে ব্রণ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া গরম পানি স্কিন সেলের ক্ষত সারিয়ে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে ত্বক টান টান হয়ে ওঠে এবং বলিরেখাও কমায়। ফলে বয়সের কোনো ছাপই ত্বকের ওপর পড়তে পারে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো, ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। আনুমানিক একটা কম্পিউটারের মাউস বা একটি তাসের বান্ডিলের সমান টুকরো এই পরিমাণ মাংস খেতে পারবেন।
সেইসঙ্গে চর্বি ছাড়া মাংস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন- গরুর শরীরের ২টি অংশ আছে যাতে পাবেন চর্বি ছাড়া মাংস এবং এই অংশগুলোতে চর্বির পরিমাণ চামড়া ছড়ানো মুরগির থানের মাংসের চেয়েও কম। এই ২টি অংশ হলো রাউন্ড এবং সিরলইন।
এই অংশগুলোর মাংসে চর্বির পরিমাণ থাকে সর্বনিম্ন ৪.২ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৮.২ গ্রাম। যেখানে মুরগির থানের মাংসে অভ্যন্তরীণ চর্বির পরিমাণ থাকে ৯.২ গ্রাম। তাই আপনি গরু, খাসি বা মুরগি যে মাংসই খান না কেন তার থেকে দৃশ্যমান চর্বি আলাদা করে সলিড মাংস খেতে হবে। তাহলে সুস্থ থাকবেন।
প্রতিদিন মাংস খাওযার পরামর্শ কখনোই দেন না বিশেষজ্ঞরা। পুষ্টিবিদদের মতে, সপ্তাহে একবার বা দুইবার লাল মাংস রাখুন। পাশাপাশি শরীরে প্রোটিনের অভাব পূরণ করতে মাসের বিকল্প হিসেবে ডায়েটে রাখুন- মসুর, ছোলা, কিডনি বিন, মটর, মাখন, মটরশুটি, বেকড বিনস ইত্যাদি। পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া বাদ দিন। তাহলে শরীর থাকবে সুস্থ।
১৬ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত হাড়ের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ২০ বছর বয়স পর্যন্ত হাড়ের ভেতরের গঠন ও ক্ষয় একই গতিতে চলতে থাকে। ৪০ বছর পার হলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ক্ষয়ের মাত্রা একটু একটু করে বাড়তে থাকে। মহিলাদের মেনোপজ বা ঋতুস্রাব বন্ধের পর শরীরে ইস্ট্রোপেন নামক হরমোন কমে যায়। ফলে হাড়ের ক্ষয়ের মাত্রা বেড়ে যায়। কী কী কারণে হাড় ক্ষয় বেশি হয়?- পর্যাপ্ত পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রম না করা। পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি গ্রহণ না করা। শরীরে ওজন (বিএমআই অনুযায়ী অতিরিক্ত কম হলে)। অতিরিক্ত ধূমপান বা এলকোহল পান করলে। লক্ষণ কী-সারা শরীরে ব্যথা অনুভূত হয়। বেশিক্ষণ হাঁটাহাঁটি বা চলাচল করতে কষ্ট হয়। প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা। যেমনÑ ননী তোলা দুধ, কম ¯েœহজাতীয় দই, ইত্যাদি। নিয়মিত শরীর চর্চা ও ব্যায়াম করা।
* কার্পেট ব্যবহার না করা। * ধূমপান পরিহার করা। * বাসায় কোনোপ্রকার পোষা প্রাণি না রাখা। * মশার কয়েল বা স্প্রে ও উচ্চ মাত্রার সুগন্ধি ব্যবহার না করা। * ধুলাবালি ও ঘর ঝাড়– দেওয়ার সময় নাকে মুখে মাস্ক বা গামছা ব্যবহার করা।* জমে থাকা ধুলাবালি সপ্তাহে অন্তত একবার অন্য কাউকে দিয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া। * শীতের সময় শীতবস্ত্র ধুয়ে ব্যবহার শুরু করা। * লেপ ভাল করে রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করা। যেকোনো স্যাঁতস্যাঁতে স্থান এড়িয়ে চলা। * হাঁটার সময় ঘাস পরিহার করা। * ছোটো বা বড়ো ফুল ধরা গাছের নিচে / পাশে না বসা। * খাবার ভালো করে গরম করে গ্রহণ করা। * ঠা-া পানি এবং খাবার পরিহার করা। যেসব খাবার পরিহার করা উচিত-* মাছ-ইলিশ, চিংড়ি * গরুর মাংস * দুধ * হাঁসের ডিম (সাদা অংশ) * সবজি-মিষ্টি কুমড়া, কচু, বেগুন * আপেল, কলা। পালনীয় * প্রতিদিন দশ মিনিট শ্বাসের ব্যায়াম করা।
১. গরুর দুধ-শিশুর প্রথম বছরের আগে গরুর দুধ না দেয়াই ভালো। কারণ গরুর দুধে থাকে বেশি প্রোটিন এবং সোডিয়াম যা শিশুর ছোট পেটে তা পরিপাক করতে ব্যাঘাত ঘটায়। এছাড়া গরুর দুধে ফর্মুলা দুধের থেকে কম আয়রন এবং অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড কম থাকে। ২. সামুদ্রিক মাছÑটুনা, স্যামন, কোরাল ইত্যাদি সামুদ্রিক মাছে উচ্চ পরিমাণে পারদ থাকে তাই এগুলো শিশুদের দেয়া ঠিক নয়। ৩. মধু-শিশুর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মধু তো দূরের কথা কোনও খাবার শিশুর মুখে দেয়া যাবে না। কারণ এক বছর পর্যন্ত শিশুর বটুলিজম হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়, আর মধু এই ছত্রাক বহন করে। ৪. চকলেট-কোকো বাচ্চাদের হজম শক্তি নষ্ট করে এবং দাঁতের ক্ষতি করে। এ থেকে অনেক শিশুর অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। ৫.লবণ-শিশুদের কিডনি লবণ ও সোডিয়াম সহ্য করতে পারে না। এক বছরের আগে শিশুরে লবণ ব্যবহার করা যাবে না।
কুমড়ার বীজ: জিঙ্ক-সমৃদ্ধ কুমড়ার বীজ ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। দই: প্রোবায়োটিকযুক্ত খাবার দই আমাদের হজমে সহায়তা করে, যা অন্ত্র ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। সবুজ শাক-সবজি: সবুজ শাক-সবজিতে ভিটামিন এ, সি, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর থাকে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো পরিষ্কার ত্বকের জন্য অপরিহার্য। গাজর: গাজরে প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন থাকে।এটি শরীরে ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়। ভিটামিন এ ত্বকের কোষ পুনর্গঠন করে।এটি সূর্যের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।ফলে ত্বক উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর দেখায়। পেঁপে: পেঁপেতে প্যাপাইন নামের একটি এনজাইম থাকে। পেঁপের ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের দীপ্তি বাড়ায়। আম: আম হলো ভিটামিন এ ও সি-এর চমৎকার উৎস। • ডিমের সাদা অংশ: এতে থাকা প্রোলিন ও গ্লাইসিন কোলাজেন গঠনে সাহায্য করে এবং ত্বক টানটান রাখে। যেসব খাবারকে ‘না’ বলতে হবে : যেমন- চিনি গ্রহণ করলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় এবং বলিরেখা দেখা দেয়। চিনি ত্বকে প্রদাহও বাড়ায়, যা ব্রণসহ অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি করে। আবার অতিরিক্ত তেল বা ডিপ ফ্রাই করা খাবার ত্বকের প্রদাহ বাড়াতে পারে। ফলে ত্বক নিস্তেজ বা অস্বাভাবিক হতে পারে।
সামুদ্রিক মাছ খেলে হার্ট, মস্তিষ্ক, চোখ, এবং হাড় সুস্থ থাকে, কারণ এতে উচ্চ-মানের প্রোটিন, ভিটামিন ডি, এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এছাড়াও, এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং থাইরয়েডের কার্যকারিতা উন্নত করে। সামুদ্রিক মাছ কম ক্যালোরি যুক্ত হওয়ায় ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। * সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। * কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। * মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। * দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে। * রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। * সহজে হজমযোগ্য আমিষ। * ডায়াবেটিসে উপকারী। * উচ্চমানের প্রোটিন সরবরাহ করে যা শরীরের জন্য অপরিহার্য। * ভিটামিন ডি এবং খনিজ পদার্থ হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।
* এই ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব ঠান্ডা জায়গা নিয়ে যেতে হবে। * শুইয়ে দিতে হবে এবং তার পা কিছুটা ওপরে তুলে দিতে হবে। * প্রচুর পানি বা পানীয় খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে, পানিশূন্যতা দূর করার পানীয় দেওয়া যেতে পারে। * আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করতে হবে, ভেজা কাপড় বা স্পঞ্জ দিয়ে শরীর মুছে দেওয়া যেতে পারে। বগলের নিচে ও ঘাড়ে গলায় ঠান্ডা পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। * যদি ত্রিশ মিনিটের মধ্যে সুস্থ না হয় তাহলে ওই ব্যক্তির হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেরি না করে তখনই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। হিট স্ট্রোক হলে রোগী ঘেমে যাওয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে তিনি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। * সাধারণত বৃদ্ধ এবং আগে থেকে অসুস্থ তাদের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা অন্যদের চেয়ে বেশি। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা খুব সহজে পানিশূন্য হয়ে পড়ে এবং জটিলতা বেশি দেখা দেয়। বাচ্চারাও এ সময় খুব বেশি কষ্ট পায়।
ডায়েট মানে না খেয়ে থাকা নয়। বরং ডায়েট মানে হলো সঠিক ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা, যাতে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি মেলে এবং সুস্থ থাকা যায়। অনেকে ভুলভাবে মনে করেন ডায়েট মানেই খাবার কম খাওয়া বা একেবারেই না খাওয়া, কিন্তু এটি স্বাস্থ্যকর নয় এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন না পেলে দুর্বলতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। কাজের শক্তি না থাকায় মাথা ঘোরা, ক্লান্তি দেখা দেয়। একেবারে না খেলে শরীর ক্যালোরি পোড়ানো কমিয়ে দেয়, ফলে ওজন কমার বদলে বেড়ে যায়। স্বাস্থ্যকর ডায়েটে সুষম খাদ্য থাকবে। যেমন প্রোটিন (মাছ, মাংস, ডাল), কার্বোহাইড্রেট (ভাত, রুটি), ফ্যাট (অলিভ অয়েল, বাদাম), ভিটামিন ও মিনারেল (ফল, সবজি)। নিয়ম করে পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে।
১. হৃদযন্ত্রের সুস্থতা রক্ষা
নিয়মিত হাঁটা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা
প্রতিদিন হাঁটার মাধ্যমে শরীর ক্যালোরি বার্ন করে, যা ওজন কমাতে এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৩. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
হাঁটার ফলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়, যা রক্তের গ্লুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৪. হাড় ও জয়েন্ট মজবুত করে
নিয়মিত হাঁটা হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় এবং জয়েন্টের নমনীয়তা বজায় রাখে।
৫. মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা দূর করে
হাঁটার সময় শরীরে এন্ডরফিন নামক ‘হ্যাপি হরমোন’ নিঃসৃত হয়, যা মানসিক চাপ কমায় এবং মন ভালো রাখতে সহায়তা করে।
৬. ঘুমের মান উন্নত করে
দিনের বেলায় হালকা শারীরিক পরিশ্রম যেমন হাঁটা, রাতে ঘুমের মান উন্নত করে।
৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
নিয়মিত হাঁটা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, যা সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদী রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
খা প্রচুর পানি পান করুন। পানি বিপাক প্রক্রিয়া ঠিক রাখে ও শরীর সুস্থ রাখে।
হজম প্রক্রিয়া ভালো রাখতে গাঁজন করা খাবার যেমন- দই, ইডলি, আচার এসব বেশ উপকারী।
বেশি খাওয়া হয়ে গেলে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এতে হজম যেমন দ্রুত হবে, তেমনি রক্তে শর্করার পরিমাণও কমবে। ।
অনেকে অতিরিক্ত খাওয়া শেষ করেই চুমুক দেন কোল্ড ড্রিংকের গ্লাসে। এটি করবেন না। কার্বনেটেড পানীয়ের মাধ্যমে আপনি গ্যাস গিলে ফেলেন যা আপনার পাচনতন্ত্রকে আরও পূর্ণ করে দেয়।
ভারী খাবার খাওয়া শেষ করে সঙ্গে সঙ্গে বিশ্রাম নেওয়া বা ঘুমিয়ে পড়া উচিত নয়। এতে শরীর ক্যালোরি বার্ন করার সুযোগ হারায়।
একবেলা ভারী খাবার খাওয়া হলে দিনের অন্যান্য সময়ে সবজি ও সালাদ জাতীয় খাবার রাখুন মেন্যুতে।
খাবার বেশি খাওয়ার পর লেবু পানি হতে পারে আদর্শ। খাবারের তেলজাতীয় উপাদানগুলোকে শরীর থেকে বের করে দিতে এর জুড়ি নেই।
অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে খাওয়ার ৩০-৩৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি পান করুন। গরম পানি খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে।
সাধারণ গ্রিন টিতে কোনো ক্যালরি থাকে না। অন্যদিকে চিনিতে আছে উচ্চমাত্রার ক্যালরি। গ্রিন টিতে চিনি মিশিয়ে খেলে সেটাও উচ্চমাত্রার ক্যালরিযুক্ত পানীয়তে পরিণত হয়। ফলে এই চায়ের গুণ নষ্ট হয়। ক্যামেলিয়া সিনেনসিস নামক বিশেষ একধরনের চা-গাছের কচি পাতা থেকে তৈরি হয় গ্রিন টি। এতে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সহায়ক, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমায়। নিয়মিত পান করলে ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবেও কাজ করে গ্রিন টি। ঝুঁকি কমায় নানা হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের। হজমে সাহায্য করে ওজন নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে এই চা। শুধু চিনিই নয়, গ্রিন টিতে মধু, সিরাপ বা যেকোনো কিছু যুক্ত করলে এতে বিদ্যমান ক্যালরি বেড়ে যায়। ফলে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা হ্রাস পায়। তাই গ্রিন টি পানের সময় অন্য কিছু না মেশানোই ভালো।গ্রিন টির নানাবিধ উপকারিতা পেতে হলে এটি সঠিক নিয়মে পান করতে হবে । বেশি উপকার পেতে রোজ অন্তত চার কাপ গ্রিন টি পান করতে হবে।
ট্রান্স ফ্যাট হলো ট্রান্স আইসোমার ফ্যাটি অ্যাসিড সহ এক ধরনের অসম্পৃক্ত চর্বি। শরীরের জন্য উপকারী চর্বির তুলনায় এই অসম্পৃক্ত চর্বি অনেক বেশি ক্ষতিকর। উদ্ভিজ্জ তেলের সাথে কৃত্রিম ভাবে হাইড্রোজেন যুক্ত করে বাণিজ্যিকভাবে এই ফ্যাট তৈরি করা হয়। তাই এর নাম ট্রান্সফর্মড ফ্যাট এর ভিতরে হাইড্রোকার্বনের বন্ড হজমের সময় সহজে ভাঙতে পারেনা। ফলে তা রক্তে রয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এই ফ্যাট যুক্ত খাবার দেহের অভ্যন্তরে ভালো কোলস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে খারাপ কোলস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। পাম অয়েল, ডালডা প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন বেকড কুকিজ, পপকর্ন, ফাস্ট ফুড চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, পিৎজা, বিস্কুট ইত্যাদি পরিবর্তে তাজা ফলমূল, শাকসবজি, শস্যজাতীয় খাবার, চর্বিহীন প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বিজাত খাবার ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বেশি পরিমাণে রাখা যেতে পারে, যা ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণ কমাতে পারে।
১) অনেকে পাশ ফিরে হাঁটু ও হাত বুকের কাছে জড়ো করে ঘুমিয়ে থাকেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এমন করে ঘুমালে বুকের উপর চাপ পড়ে এবং ঘুমের সময় শরীরে ঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালন হয় না। দিনের পর দিন এমন ভাবে ঘুমালে পিঠে, ঘাড়ে ব্যথাসহ শ্বাসের সমস্যাও হতে পারে। তাই এভাবে ঘুমানো এড়িয়ে চলুন।
২) অনেকের বুকের উপর ভর দিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস। এই ভঙ্গিতে ঘুমালে শরীরের পুরো ওজন পেটের উপর পড়ে। দীর্ঘদিন এমন ভঙ্গিতে ঘুমালে মেরুদণ্ডে ব্যথা হতে পারে। ঘাড়ের পেশিতেও টান পড়তে পারে। এছাড়া বিশ্রাম নিয়েও শরীরে আরাম পাওয়া যাবে না।
৩) চিৎ হয়ে শোয়ার অভ্যাসও ভালো নয়। এতে নাক ডাকা বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা বাড়ে। তাই এই ভঙ্গিতে ঘুমানো এড়িয়ে চলা উচিত।
ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড় ক্ষয় ইত্যাদি হয়ে থাকে। ভিটামিন ডি সূর্যের আলোক রশ্মির মাধ্যমে মানবদেহের চর্মে উৎপন্ন হয়। এ ছাড়া ভোজ্য তেল, দুগ্ধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাদ্য, বিভিন্ন মাছের তেল, ডিমের কুসুম, মাখন, ঘি, চর্বি ও মাংসে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি অস্থি ও দাঁতের কাঠামো গঠন করে, রক্ত প্রবাহে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। শিশুদের পাশাপাশি বড়দের সূর্যের আলোয় প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট থাকতে হবে এবং বোরকা পরা মেয়েদের যতটা সম্ভব জানালার পাশে সকাল ৯টা-১০টায় রোদ পোহাতে হবে।
ভিটামিন বি১২ আমাদের শরীরের রক্তকণিকা তৈরি, সুস্থ এবং স্বাস্থ্যবান রাখার জন্য প্রয়োজন। শরীরের ¯œায়ু যেন ঠিকভাবে কাজ করে সেক্ষেত্রে ভিটামিন বি১২ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্যামন ফিস, টুনা ফিস, মুরগি, ডিম, পনির, দই এবং দুধে ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়। কিন্তু সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় গরুর কলিজা থেকে। ডিমে মাছ বা মাংসের মতো ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায় না। ভেজিটেবল বা শাকসবজিতে ভিটামিন বি১২ থাকে না। ভিটামিন বি১২ অভাব হলে- ভিটামিন বি১২ এর পরিমাণ কমে গেলে মাংসপেশির শক্তি কম হতে পারে। আপনি দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন ভিটামিন বি১২ এর অভাবজনিত কারণে ডিপ্রেসন বা হতাশা, কনফিউশন, মেমোরি সমস্যা এবং ডিমেনসিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। মুখে ঘাঁ, মাড়ি অথবা জিহ্বায় ঘাঁ অথবা আলসার দেখা যেতে পারে খাবারে অরুচি, অতিরিক্ত ওজন হারানো, রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে।
১) পটাসিয়াম: কলা, আলু ইত্যাদির মধ্যে পটাশিয়াম পাওয়া যায়। ২) ম্যাগনেসিয়াম: কাঠবাদাম, শাক, শিমের বিচি ইত্যাদিতে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। ৩) ক্যালসিয়াম: দুধ, দই, মটরশুঁটি, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদিতে ক্যালসিয়াম রয়েছে। ৪) আঁশ: শাকসবজিতে আঁশ পাওয়া যায়। ৫) ভিটামিন-ই: পালংশাক, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম ইত্যাদিতে ভিটামিন-ই রয়েছে। ৬) ভিটামিন-সি: আমলকি, কমলা, মাল্টা, ব্রকলি, জলপাই ইত্যাদির মধ্যে ভিটামিন-সি রয়েছে। ৭) প্রোটিন: মাংস, ডাল, দইয়ের মধ্যে প্রোটিন থাকে। ৮)আয়রন: কাঁচা কলা, কলিজা, লতি, ডালিম ইত্যাদির মধ্যে আয়রন রয়েছে। ৯) ভিটামিন-ডি: ভিটামিন-ডি পাওয়া যায় সূর্যের আলোতে। এ ছাড়া সামুদিক মাছে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। ১০) ভিটামিন-এ: গাজর, লালশাক, আলু ইত্যাদির মধ্যে ভিটামিন-এ রয়েছে।
১) ভিটামিন বি৯, বি৬ এবং বি১২ এর অভাব দেহে হলে দেহের নানা অংশ অবশ হয়ে যাওয়ার লক্ষণটি দেখা দেয়। সামুদ্রিক মাছ, লাল চালের ভাত, বাদাম, ডিম, মুরগীর মাংস, কলা, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি এবং সবুজ শাক রাখুন খাদ্য তালিকায়। ২) মুখের ত্বকে লালচে ও আঁশ ওঠা ধরণের র্যাশ এবং অতিরিক্ত চুল পড়া ভিটামিন বি৭ (বায়োটিন), ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে এর অভাবজনিত লক্ষণ। মাছ, ডিম, মাশরুম, ফুলকপি, বাদাম ও কলা খাবেন। ৩) ঠোঁটের কিনার ফেটে যাওয়া ভিটামিন বি৩, বি২ ও বি১২ এবং আয়রন, জিংক ও গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিনের অভাবের লক্ষণ। সামুদ্রিক মাছ, ডিম,ডাল, দই, পনির, ঘি এবং ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাবেন। ৪) হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরা বি ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব। সবুজ শাক, চীনাবাদাম, ডাবের পানি, কিশমিশ, কাজু বাদাম ইত্যাদি খাবেন।
বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর পদার্থের কণা মানবদেহের ফুসফুস, এমনকি রক্তে মিশে যায়। এরপর ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড ও অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি করে। এ ক্ষেত্রে এয়ার পিউরিফায়ার, মাইক্রোপ্লাস্টিক থেকে রক্ষায় ফিল্টার করা খাওয়ার পানি এবং প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাচ বা স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া রান্নায় গ্যাসের চুলা ব্যবহার করলে রান্নাঘরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা জরুরি। ঘরে ও বাইরে গাছপালা লাগানো যেতে পারে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে, অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়ানো এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়া এবং দূষণের সময় মাস্ক পরা উচিত। একবার ব্যবহারযোগ্য পণ্যের পরিবর্তে টেকসই বা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য পণ্য ব্যবহার করতে হবে।