১৫১ থেকে ১৮০
১৫১ থেকে ১৮০
১৫১ ▌ভাববাদ ও বস্তুবাদ :
বস্তুবাদ: পৃথিবী বস্তুগত, তার অস্তিত্ব আছে বিষয়গতভাবে, চৈতন্যের বাইরে ও চৈতন্য-নিরপেক্ষভাবে, বস্তুই মুখ্য, তা কারো দ্বারা সৃষ্টি হয়নি। চৈতন্য হল বস্তুরই একটি গুণধর্ম; পৃথিবী ও তার নিয়মগুলি জ্ঞেয়। ভাববাদ: জগতের সবকিছু পরমাত্মা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়, অর্থাৎ বস্তুজগতের সৃষ্টি ও ধ্বংসসহ সকল রকমের পরিবর্তন পরমাত্মা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ভাববাদীরা মনে করেন বস্তু ও শক্তি দুটো ভিন্ন জিনিস। বস্তু জড় বিশেষ, কিন্তু শক্তি একটি অবস্তুগত জিনিস। শক্তি যখন বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তখনি বস্তু সক্রিয় হয়ে ওঠে। অন্যদিকে বস্তুবাদ অনুসারে বস্তু ও শক্তি ভিন্ন কিছু নয়। যতটুকু পার্থক্য তা নিতান্তই অবস্থাগত এবং বাহ্যিক। এ জন্য এরা পর¯পর রূপান্তরযোগ্য। ভাববাদী তত্ত্ব অনুসারে মানুষের দেহের মধ্যে আত্মা নামক অবস্তুগত একটি অবিনাশী অস্থিত্ব আছে। মানুষের দেহের অবসানের পরেও আত্মা অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকে। অন্যদিকে বস্তুবাদী তত্ত্ব অনুসারে আত্মা বলে অবিনাশী ও চিরন্তন কিছু নেই। কাজেই আত্মা অমরত্বের কোন প্রশ্নই ওঠে না।
১৫২ ▌সংশয়বাদ: ও মুক্তমনা :
সংশয়বাদ: যে-কোন কিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মনোভাবকেই সংশয়বাদ বলা হয়। কোনকিছুর নিদর্শন পেলে তাকে বিনা বাক্যে মেনে না নিয়ে বরং সেই নিদর্শনটিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করাই সংশয়বাদ। প্রাচীন গ্রিসে কিছু দার্শনিক ছিলেন যারা "কোন কিছুকেই নিশ্চিত বলে ঘোষণা দিতেন না বরং সবকিছুতেই তাদের নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতেন"। দার্শনিকদের এই ধারাটিকে স্কেপ্টিসিজম বলা হয়। অভিজ্ঞতাবাদ: অভিজ্ঞতাবাদ বলতে এরূপ তত্ত্বকে বোঝায় যে, মানুষের ইন্দ্রিয়-অভিজ্ঞতাই হচ্ছে জ্ঞানের একমাত্র উৎস। অভিজ্ঞতাবাদের তত্ত্ব অনুযায়ী আমাদের চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহবা, ত্বক- অর্থাৎ ইন্দ্রিয়সমূহ হচ্ছে ভাবের বাহক এবং ভাবের উৎস কেন্দ্র। ইন্দ্রিয়জ অভিজ্ঞতাই হচ্ছে জ্ঞানের মূল। মুক্তচিন্তা: মুক্তচিন্তা হল এক প্রকার দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গী যা বলে যে বিজ্ঞান, যুক্তিবিদ্যা এবং যুক্তির আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত; মতামত গঠনের ক্ষেত্রে প্রথা, অন্ধ বিশ্বাস এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রভাবিত হওয়া বাঞ্চনীয় নয়। সচেতনভাবে মুক্তচিন্তার প্রয়োগকে বলে মুক্তচিন্তন এবং এর অনুশীলনকারীদের বলে মুক্তমনা।
১৫৩ ▌লোকায়ত দর্শন :
লোকায়ত বলতে বোঝায় সাধারণ লোকের দর্শন। যারা সাধারণ লোকের মতো বিচার আচরণ করে তাদেরই বলে লোকায়ত। লোকায়ত হলো ইহকাল-সংক্রান্ত দর্শন। যারা পরকাল মানে না, আত্মা মানে না, ধর্ম মানে না, মোক্ষ মানে না, তাদেরই বলে লোকায়তিক। তাহলে এই মানে অনুসারে লোকায়ত হলো দেহাত্মবাদ, বস্তুবাদ। ইংরেজি পরিভাষায় যাকে বলে মেটিরিয়ালিস্ম্। তার মানে, প্রত্যক্ষে যেটুকু ধরা পড়ে লোকায়তিকরা শুধুমাত্র সেইটুকুকেই সত্যি বলে স্বীকার করেন। আজো এমন অনেক সম্প্রদায় টিকে রয়েছে যার অনুগামীরা মনে করে দেহই হলো একমাত্র সত্য; তাদের ধর্মে স্ত্রী-পুরুষের মিলনই একমাত্র অনুষ্ঠান এবং তাদের মতে সিদ্ধি নির্ভর করছে এই মিলনের দীর্ঘস্থায়িত্বের উপর। তারা নিজেদের বৈষ্ণব বলে; কিন্তু বিষ্ণু বা কৃষ্ণ বা তাঁর কোনো অবতার তারা মানে না। তারা বিশ্বাস করে শুধু দেহতে। তাদের আর একটা নাম হলো সহজিয়া, ভারতবর্ষে শেষ চার শতাব্দী ধরে মহাযান বৌদ্ধদের যে-অস্তিত্ব ছিল তার থেকেই এ-নামের সম্প্রদায় দেখা দিয়েছিল।
১৫৪ ▌হিপ্পি বিপ্লব :
ষাট ও সত্তর দশকের বিদ্রোহী মার্কিন তরুণ প্রজম্মকেই হিপ্পি বলা হয়। এই তরুণ প্রজন্ম এক স্বপ্নাতুর আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিল এবং সে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল মার্কিন দেশ থেকে দেশান্তরে। সানফ্রানসিসকো ছিল হিপ্পি বিপ্লবের কেন্দ্র। ষাটের দশকের গোড়ায় সংগীত, সাইকো অ্যাকটিভ ড্রাগস, যৌনস্বাধীনতা, সৃজনশীলতা এবং প্রগতিশীল রাজনীতির কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল সানফ্রানসিসকোর হাইট-অ্যাশবারি। এখানেই ১৯৬৭ সালের গ্রীষ্মে মার্কিন সমাজের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে এক লাখ সংস্কৃতি কর্মী ও হিপ্পিদের এক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই মহাসমাবেশ দ্য সামার অব লাভ নামে পরিচিত। পরের দশকে এ আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। কফি হাউসগুলোয় আড্ডা চলে। এসব ছন্নছাড়াদের পরনে সর্বদা শীর্ণ পোশাক, মুখ ভরতি দাড়িগোঁফ, লম্বা চুল আর চোখে লালচে সানগ্লাস। হিপ্পি-দর্শনের মূলে রয়েছে প্রেম ও স্বাধীনতা ও সংঘবদ্ধ যৌনতা। হিপ্পি আন্দোলন ছিল প্রতিষ্ঠিত ক্ষমতা কাঠামোর বিরুদ্ধে বিপ্লব। এই আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন কবি অ্যালেন গিনসবার্গ।
১৫৫ ▌আর্মেনিয়া গণহত্যা :
বিংশ শতকের শুরুতে আর্মেনিয়ানরা অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে তুরস্ক রাষ্ট্রের অন্তর্গত ছিল। ১৯০৮ সালে “তরুণ তুর্কী” দল ক্ষমতায় এলে আর্মেনিয়ানদের অবিশ্বাসের চোখে দেখতো এই ভেবে যে, শত্রুভাবাপন্ন প্রতিবেশী দেশ রাশিয়ার সাথে একই ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আর্মেনিয়ানরা রুশদের পক্ষ হয়েই যুদ্ধ করবে। ১৯১৪ সালে শুরু হওয়া ১ম বিশ্বযুদ্ধে সকল খ্রীস্টানদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে তালাত পাশা। ককেশাসের যুদ্ধে তুর্কী বাহিনীর শোচনীয় পরাজয় হয়। তুর্কীরা এই ব্যর্থতার অজুহাত হিসাবে দেখায় আর্মেনিয়ান সেনাদের “বিশ্বাসঘাতকতা” কে। ফলে আর্মেনিয়ান গণহত্যা শুরু হয় ১৯১৫ সালের ২৪ এপ্রিল। সমগ্র তুরস্কব্যাপী অভিযানে নেতৃস্থানীয় আর্মেনিয়ানকে হত্যা করা হয়। তুর্কী পুলিশ, দলের নেতকর্মীরা যে অবস্থায় আর্মেনিয়ানদের পেয়েছে, লুটপাট অত্যচার করেছে। লক্ষ-লক্ষ আর্মেনিয়ানকে পায়ে হেঁটে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে সিরিয়া যায়। তাদের নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মেরে ফেলে তুর্কীরা। এখনো ঐ মরুভূমিতে প্রায়ই খুঁজে পাওয়া যায় আর্মেনিয়ানদের বধ্যভূমি। এভাবে ৫লক্ষ আর্মেনিয়ান জীবন হারান ।
১৫৬ ▌ডাইনী শিকার :
ডাইনী শিকারের যুগ ছিল ১৪৮০ সাল থেকে ১৭০০ সালের মধ্যে। পৃথিবীর অনেক সংস্কৃতিতেই এই ডাইনী শিকার হয়ে আসছে প্রাচীন এবং আধুনিককাল জুড়ে। ৭৮৫ সালে চার্চ অব প্যাডেরবর্ন ডাকিনীবিদ্যা নিষিদ্ধ করেন। তখন থেকে ইউরোপে ডাইনী বিচার শুরু হয়েছিল। দক্ষিণ পশ্চিম জার্মানীতে ডাইনী শিকারের সফল বছর ছিল ১৫৬১ থেকে ১৬৭০ সাল। তখনকার সময় ডাইনীদের ধরে পুড়িয়ে মারা হত। সারা ইউরোপে প্রায় ১২০০০ ডাইনী বিচারের ঘটনা ঘটেছিল। ১৮ শতকে এ ধরনের অভ্যাস কমে যায়। ইংল্যান্ডে শেষ ডাইনী শিকারের ঘটনা ঘটেছিল ১৬৮২ সালে। এখনও ডাইনী শিকার চলছে আফ্রিকাতে। কঙ্গোতে শিশুদের ডাইনী সন্দেহ করা হচ্ছে এবং তাঞ্জানিয়াতে ডাইনী সন্দেহে বয়স্ক মহিলাদের মারা হচ্ছে, যদি তাদের চোখ লাল হয়। ডাইনী শিকার করে আফ্রিকাতে মূলত করে ডাইনীর আতœীয় স্বজনরা তার স¤পত্তির লোভে। গবেষণা করে দেখা গেছে, যাদের কাছে স¤পত্তি আছে, কিন্তু উত্তরসুরি বলতে তেমন কেউ নাই, তারাই ডাইনী হিসাবে শিকারে পরিণত হয়।
১৫৭ ▌সংস্কৃত ভাষা :
সংস্কৃত ভাষা প্রায় পাঁচ হাজার বছর যাবৎ চর্চা হয়ে আসছে। ঋগে¦দে এ ভাষার প্রাচীন রূপটি দেখা হয়। খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দ ঋগে¦দের রচনাকাল বলে ধরা হয়। ঋগে¦দ থেকে উপনিষদের কাল পর্যন্ত এ ভাষা বৈদিক ভাষা নামে পরিচিত। সংস্কারের মাধ্যমে গৃহীত হওয়ায় এর নাম হয় ‘সংস্কৃত’। সংস্কৃত ভাষার দুটি স্তর: বৈদিক ও লৌকিক। এই লৌকিক ভাষাই ধ্রুপদী সংস্কৃত ভাষা নামে পরিচিত। এদুটি ভাষার প্রধান পার্থক্য স্বরবৈচির্ত্যে। সংস্কৃত ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত ইন্দো-ইরানীয় উপশাখার একটি ভাষা। গ্রিক ও ল্যাটিন ভাষার সঙ্গে এর বিস্ময়কর সাদৃশ্য রয়েছে। সংস্কৃত ভাষার নিজস্ব কোনো বর্ণমালা নেই। যে অঞ্চলে এর চর্চা হয়েছে সেই অঞ্চলে প্রচলিত বর্ণমালাই এতে গৃহীত হয়েছে। তবে নাগরী বা দেবনাগরী বর্ণমালা সংস্কৃতের জন্য ব্যাপকভাবে গৃহীত। সংস্কৃত ভাষা তিনটি স্তরে বিভাজিত: পালি, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ এবং নব্যভারতীয় আর্যভাষা- বাংলা, উড়িয়া, হিন্দি, মারাঠি ইত্যাদি। প্রথম দিকে সংস্কৃত ভাষা চর্চা হতো ভারতের উত্তরাংশ; পরে তা পশ্চিম ও পূর্বভারতে বিস্তার লাভ করে।
১৫৮ ▌কুমারী দেবী :
নেপালের রাষ্ট্রপতি কুমারী দেবী নিযুক্ত করেন মেয়েটির বয়স ৪ থেকে প্রথম রজঃস্রাব হওয়া পর্যন্ত। দেশটির বিভিন্ন শহরে এরকম আরো কয়েক জন দেবী আছে। নেপালের ৮০ শতাংশ মানুষই হিন্দু ধর্মাবলম্বী, ১১ শতাংশ বৌদ্ধ। কুমারী দেবী নির্বাচনের প্রথাটিও বৌদ্ধ ধর্ম থেকে হিন্দু ধর্মে এসেছে। কুমারী দেবীকে হতে হয় গৌতম বুদ্ধের নেওয়ারী সম্প্রদায়ের শাক্য বংশের মেয়ে। শ্রমণরা শাক্য বংশের মধ্য থেকে নতুন কুমারী খুঁজতে শুরু করে। নিখুঁত ত্বক, সুন্দর চুল, দীঘল চোখ, ঝকঝকে দাঁত। আর বিনয় ও সুভাষিণীও হতে হয়। এসব গুণ একত্রে থাকলে সে মেয়ের ভেতরেই দুর্গা দেবী অধিষ্ঠিতা বলে ধরে নেয়া হয়। কয়েকজন শিশুকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে কয়েকটি পরীক্ষা দিতে হয়: যেমন- আলো-আঁধারি ঘরে ভুতুড়ে ভয় ধরানো মুখোশ পরা ছায়ামূর্তিরাও থাকবে। কুমারী দেবী হওয়ার পর থেকে ১২ মাসে ১৩ বার ধর্মীয় শোভাযাত্রায় এবং সপ্তাহে ছয় দিন সকালে আশীর্বাদ নিতে আসে ধার্মিক মানুষ। কুমারীর জীবন শেষে তিনি সাধারণ জীবনে ফিরে আসেন।
১৫৯ ▌খাজা মইনুদ্দিন চিশতী :
খাজা মইনুদ্দিন চিশতী হলেন চিশতীয় ধারার ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক। তিনি ১১৪১ সালে পারস্যে জন্মগ্রহণ করেন। তার অনুসারীরা যেমন বখতিয়ার কাকী, বাবা ফরিদ, নেজামুদ্দিন আউলিয়াসহ আরো অনেকে ভারতের ইতিহাসে সুফি ধারাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। তিনি পিতার কাছ একটি ফলের বাগান উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করেন। কিংবদন্তী অনুসারে একদিন তিনি তার ফলবাগানে পানি দিচ্ছিলেন তখন তার ফলবাগানে আসেন বিখ্যাত সুফি শেখ ইব্রাহিম কুন্দুজী। যুবক মইনুদ্দিন তার কাছে মুরীদ হন। এইপর তিনি তার স¤পত্তি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র গরীবদের মাঝে বিতরণ করে বুখারার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানে চিশতীয়া তরীকার অপর প্রসিদ্ধ সুুফি সাধক খাজা উসমান হারুনীর নিকট শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তার সেবায় ২০ বছর থাকার পর তিনি বহু দেশ ভ্রমণ করেন। তিনি ইরাকের বাগদাদে আব্দুল কাদির জিলানীর সাহচর্যে ৫৭ দিন অবস্থান করেন। এ সময় আব্দুল কাদির জিলানী তাকে হিন্দুস্থানের দায়িত্ব দেন। তিনি দিল্লী হয়ে আজমিরে বসতি স্থাপন করেন।
১৬০ ▌হযরত শাহ জালাল :
হযরত শাহ জালাল ইয়েমেন থেকে বিভিন্ন দেশ পাড়ি দিয়ে অবশেষে স্বপ্ন রাজ্য ভারতের আজমীরে আসেন ১৩০০ খ্রিষ্টাব্দে। সেখানে পান পীর খাজা মঈন উদ্দীন হাসান চিস্তিকে। পরে যান দিল্লি সেখানে সংস্পর্শে আসেন ইসলাম প্রচারক নিজাম উদ্দীন আউলিয়ার সাথে। তাদের ইসলাম প্রচারের মহীমা, কলাকৌশল এবং তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি শাহ জালালকে বিশেষ প্রভাবিত করে। তখন সিলেট শাসন করতেন হিন্দু রাজা গোবিন্দ। গৌড়ের সুলতান শামসুদ্দীন ফিরোজ শাহ তার ভাগ্নে সিকান্দার খান গাজীর নেতৃতে একদল সৈন্য বাহিনী পাঠালেন সিলেটে মুসলমানের বিজয় পতাকা ওড়ানোর জন্য। যুদ্ধে সিকান্দার খান গোবিন্দের কাছে হেরে যায়। পরবর্তীতে যুদ্ধ জয়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে সুলতান ফিরোজ শাহ সহায়তা চাইলেন নিজাম উদ্দীন আউলিয়ার। নিজাম উদ্দীন অনুরোধ করলেন শাহ জালালকে। শাহ জালাল ৩৬০ জন যুবককে সঙ্গে নিয়ে ফিরোজ শাহ-র মুসলমান সৈন্য দলের সঙ্গে যোগ দিলেন। এই বাহিনীতে তার ভাগ্নে শাহ্ পরানও ছিলেন। সিলেট এলো মুসলমানদের দখলে।
হরমুজ প্রণালীর একেবারে কাছে অবস্থিত একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ হল আবু মুসা দ্বীপ। এ দীপ্তির কৌশলগত গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ এ দ্বীপ হচ্ছে ধনী উপসাগরীয় কয়েকটি দেশের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। দ্বীপটির মালিকানা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরানের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। ১৯৭১ সালে শারজাহতে অনুষ্ঠিত এক সমঝোতা বৈঠকে শারজাহ চুক্তির মাধ্যমে ইরান এর অধিকাংশ এলাকার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু পরবর্তীতে দ্বীপের পার্শ্ববর্তী 'লেসার টম্ব' এবং 'গ্রেটার টম্ব' অঞ্চল দুটি দখল করে। কয়েক বছর পূর্বে ইরান ঘোষণা দেয় যে, ইরানই হচ্ছে আবু মুসা দ্বীপ এর একমাত্র স্বত্বাধিকারী। ইরান এ দ্বীপকে একটি সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে এবং হরমুজ প্রণালীর উপর নজর রাখতে সক্ষম হচ্ছে। তবে ইরান একতরফা ভাবে এই দ্বীপের মালিকানা দাবি করে আসছে।
উত্তর আফগানিস্তানের একটি বিখ্যাত শহরের নাম মাজার ই শরীফ। রাজধানী কাবুল হতে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। সম্প্রতি এই শহরটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। পূর্বে শহরটি ছিল তালেবান বিরোধী আব্দুর রশিদ দোস্তাম ও আহমেদ শাহ মাসুদের শক্তঘাঁটি । ১৯৯৭ সালের মে মাসে এক আকস্মিক হামলা চালিয়ে তালেবান বাহিনী এ শহরটিকে দখল করে নেয়। এই সময় উভয়পক্ষের ব্যাপক সৈন্যের হতাহত হতে হয়। নভেম্বর ১৯৯৮ সালে তালেবানরা মাজার-ই-শরীফ এর ৯ জন ইরানি কূটনীতিককে হত্যা করে। এ নিয়ে দু'দেশ প্রায় যুদ্ধের মুখোমুখি হয়ে পড়েছিল। পরবর্তীতে জাতিসংঘের সহায়তায় তালেবান সরকার নতিস্বীকার করে এবং উত্তেজনা প্রশমিত হয়।
সাবেক পূর্ব নাইজেরিয়ার অবিচ্ছিন্ন অংশের নাম বায়াফ্রা। ১৯৬৭ সালে একে বায়াফা নাম দেয়া হয় এবং ১৯৬৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত একে কেন্দ্র করেই সমগ্র দেশে গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। এই অঞ্চলের সংখ্যাগুরু "ইবু উপজাতিভুক্ত" সামরিক গভর্নর লেফটেন্যান্ট কর্নেল অজুকো ১৯৬৭ সালের ৩১ শে মে এ অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। ১৯৮০ সালের অজুকো দেশ থেকে পলায়ন করলে বায়াফ্রা বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং নাইজেরিয়ার ফেডারেল বাহিনী বায়াফ্রা দখল করে নেয়। তবে গৃহযুদ্ধ চলাকালে তানজানিয়া ও গ্যাবন বায়াফ্রাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিভুক্ত হওয়াই দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত বিমান ঘাঁটি হল পার্ল হারবার। সামরিক কৌশলগত দিক দিয়ে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান এ অঞ্চলে আক্রমণ চালিয়ে তা দখল করে নেয়। এই আক্রমণের মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে জাপান আত্মসমর্পণে বাধ্য হয় এবং পার্ল হারবার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফিরিয়ে দেয়। বর্তমানে এটি যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীনে রয়েছে। পার্ল হারবার প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক দৃশ্য হলেও এর সামরিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশি। এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক ঘাঁটি করে প্রশান্ত মহাসাগরের উপর নজর রাখতে সক্ষম হচ্ছে।
আজারবাইন ও আর্মেনিয়ার মধ্যবর্তী একটি বিতর্কিত ছিটমহলের নাম নাগার্নো কারাবাখ। এই ছিটমহল টি আর্মেনিয়ার খ্রিস্টান অধ্যুষিত। এক সময় এটি আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। ১৯২৩ সালে এটি আজারবাহিনের অংশ হিসেবে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা লাভ করে। এ নিয়ে খ্রিস্টান ও আজারবাইনের মুসলমানদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। অতঃপর দীর্ঘদিন নীরব থাকার পর ১৯৮১ সালে ছিটমহলটি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আজারবাইন ও আর্মেনিয়ার মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ফলে সোভিয়েত ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টির উপর হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ১৯৯৫ সালে পুনরায় এই নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার লোক নিহত এবং প্রায় ৯০ হাজার লোক ইরানে উদ্বাস্ত হিসেবে জীবন যাপন করছে। এখনো এই ছিটমহল টি নিয়ে আজারবাইন ও আর্মেনিয়ায় তথা মধ্য এশিয়ায় এক অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সমস্যাটির এখনো কোন সূরাহা হয়নি।
মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপের নাম মিন্দানাও। দীর্ঘদিন এটি ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন ছিল। দ্বীপের অধিকাংশ অধিবাসী মরো মুসলিম। ১৯৭২ সালে ফিলিপাইনের স্বৈরশাসক ফার্ডিনান্ড মার্কস ক্ষমতায় এসেই এখানকার মুসলমানদের উপর ব্যাপক দমন নিপীড়ন চালাতে শুরু করে। সেই থেকে মিন্দানাও এর মুসলিম গেরিলা নেতা নুর মিসৌরির নেতৃত্বে মরো ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (MNLF) স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলা আন্দোলন শুরু করে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় ৫০ হাজার লোক হতাহত হয়েছে। অবশেষে দীর্ঘ ২৪ বছর পর কেন্দ্রীয় সরকার মিন্দানাওকে স্বায়ত্তশাসন দিতে রাজি হয় এবং গত ২ ডিসেম্বর ১৯৯৬ সালে MNLF এর সাথে একটি চুক্তি করে। চুক্তি মোতাবেক ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় সরকার সেখান থেকে সকল সৈন্য প্রত্যাহার করে এবং নূর মিসৌরিকে মিন্দানাওয়ের গভর্নর নিযুক্ত করে। বর্তমানে মিন্দানাও একটি স্বায়ত্তশাসিত উপদ্বীপ।
এশিয়া মহাদেশের একমাত্র উপনিবেশ হচ্ছে ম্যাকাও। চীনের দক্ষিনে অবস্থিত এ ক্ষুদ্র উপনিবেশটি প্রায় ৪৫০ বছর ধরে পর্তুগালের অধীনে থাকে। ১৯৮৭ সালের ১৩ এপ্রিল চীন এবং পর্তুগালের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক চুক্তি অনুযায়ী ১৯৯৯ সালের ২৩ জুন ম্যাকাও চীনের অধিভুক্ত হয় এবং এটি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে চলছে। হংকং থেকে ৬৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ম্যাকাও এর আয়তন ৬.৮৭ বর্গমাইল এবং জনসংখ্যা ৪ লাখ। দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থিত ম্যাকাও এর অধিবাসীদের প্রায় ৯৫ শতাংশই চীনা ও বাকি ৫℅ পর্তুগিজ। অফিশিয়াল ভাষা পর্তুগিজ ও চীনা। ম্যাকাও এর একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। ১৫৩০ সালে জর্জ আলভরিস নামক এক পর্তুগিজ নাবিক প্রথম এখানে অবতরণ করেন এবং ১৫৫৭ সালে সরকারিভাবে পর্তুগিজ শাসনাধীনে আসে। ১৮৪৬ সালে ম্যাকাও এর গভর্নর জুয়াও ফেরেরা দ্য আমারাল ম্যাকাওকে শুল্কমুক্ত বন্দর হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯৫১ সাল থেকে ম্যাকাও পর্তুগালের একটি প্রদেশ হিসেবে বিবেচিত হয়। পশ্চিমা গণতন্ত্রের দেশ পর্তুগাল ম্যাকাও উপনিবেশ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করেছে।
প্রায় ৫০ হাজার বাঙালি অধ্যুষিত লন্ডন শহরের টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের ব্রিকলেনকে সেখানকার সরকারি কাউন্সিল 'বাংলা টাউন' নামকরণের সম্মত হয়েছে। উক্ত কাউন্সিলের ১০০ জনের মধ্যে ৮০ জনই বাঙালি। স্থানীয় বাঙালি অধিবাসী ও কাউন্সিলদের এলাকার উন্নয়নে অবদান ও দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিকলেনের কর্তৃপক্ষ এ নামকরণের সম্মত হয়েছে। ১৯৯৯ সালে এটি বাস্তবিত হয়। বাংলা টাউনে একটা আদর্শ গ্রাম প্রতিষ্ঠা এবং টাওয়ার ব্রিজ থেকে ব্রিকলেন পর্যন্ত রিক্সা সার্ভিস চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ঐ এলাকায় সবগুলো রাস্তার নাম ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় লেখা হয়েছে। ঐ অঞ্চলে বাঙালি অধিবাসীদের অধিকাংশই বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের বংশদূত।
পারস্য উপসাগরের ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদীর তীরে শাত-ইল-আরবের অবস্থান। এটি একটি ব-দ্বীপ। এর দৈর্ঘ্য ২১৯ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ৪০ কিলোমিটার। বাণিজ্যিক দিক দিয়ে শাত-ইল-আরব গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ইরাক ইরানের যুদ্ধের সূচনা হয় এই শাত-ইল-আরবকে নিয়ে। বহুদিন যাবত এই অঞ্চলটি নিয়ে ইরাক ইরানের মধ্যে তিক্ততার সম্পর্ক বিরাজ করছে। ১৯১৩ সালে কনস্টান্টিনোপল চুক্তির মাধ্যমে শাত-ইল-আরব তুরস্কের এখতিয়ার ভুক্ত হয়। ১৯৩৭ সালে এই চুক্তি কিছুটা সংশোধন করা হয় এবং শাত-ইল-আরবে পৃথিবীর সকল দেশের বাণিজ্যিক নৌযান অবাধে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তী পর্যায়ে ইরান চুক্তিটি বাতিল করে এবং সাতইল আরব নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সাতইল আরব কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে তা নিয়ে ইরাক ও ইরান উভয় দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ইরান নদীর গভীর অংশকে ধরে সীমানা ভাগ করার পক্ষে। অপরদিকে ইরাক এর বিরোধিতা করছে। কারণ এর ফলে ইরাকের সমুদ্রে পৌঁছাবার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। সাত-ইল-আরবই হচ্ছে ইরাকের সমুদ্রে পৌঁছাবার একমাত্র জলপথ। এছাড়া এই পথ হাতছাড়া হয়ে গেলে ইরাক বিদেশি জাহাজের উপর তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে এবং কর ও শুল্ক থেকে বঞ্চিত হবে। এ কারণে ইরাক ও ইরান উভয় দেশের জন্য এ শাত-ইল-আরব গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭৫ সালে এ সমস্যা সমাধান করার জন্য আলজেরিয়ায় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে ১৯৮০ সালে ইরাক এ চুক্তি বাতিল করে এবং ইরানের সাথে যুদ্ধ করে যা ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।
১৭১ ▌ আত্মঘাতী জঙ্গিবাদ :
বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা নকশাল বাড়ি আন্দোলন অনুসরণে সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির এবং জাসদের গণবাহিনীর রাজনৈতিক সন্ত্রাস প্রত্যক্ষ করেছি। ধর্মনির্ভর রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসের নতুন রূপ দেখা যায় নব্বইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে। ১৯৭৮ সালে ঃযব ঝধঁৎ জবাড়ষঁঃরড়হ-এর মাধ্যমে আফগানিস্তানে যখন বামপন্থী পিপলস ডেমোক্রাটিক পার্টি ক্ষমতায় আসে তখন এ সরকারকে উৎখাতের জন্য মুজাহিদিন বাহিনী গড়ে উঠে। পাকিস্তান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশ তখন এ মুজাহিদিন বাহিনীকে নানাভাবে সাহায্য করতে থাকে। ফলে পাশ্চাত্যের সহায়তায় আফগানিস্থানে সারা বিশ্ব থেকে মুসলিমরা যুদ্ধে অংশ নিতে থাকে। নাজিবুল্লাহ সরকারের পতন ঘটার পর বাংলাদেশ থেকে যারা যুদ্ধে গিয়েছিল তারা দেশে এসে আলকসন্ত্রাসনির্ভর, আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলে। তবে শিয়া ও সুন্নি মতের যত মাজহাব আছে তার কোথাও আত্মঘাতী বোমা হামলার ধারণা পাওয়া যায় না। আত্মঘাতী বোমা হামলার ধারণা বিশ্বে প্রথম আনে শ্রীলঙ্কার এলটিটিই।
১৭১ ▌নবরাত্রি উৎসব :
শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব হলো ভারতীয় নবরাত্রির বঙ্গদেশীয় সংস্করণ। তবে কিছু চারিত্রিক তফাৎ আছে। ভারতের গুজরাট ও মুম্বাইয়ে নবরাত্রি সর্বাধিক জাঁকজমক ও গুরুত্বসহকারে পালন করা হয়। এই সময় গারবা (এধৎনধ) নামে ঐতিহ্যবাহী এক নৃত্য পরিবেশন করে হিন্দু ধর্মাম্বলীরা। আধুনিক যুগে গারবার সঙ্গে মিশ্রণ হয়েছে আরেক নৃত্য ঐতিহ্য 'ডান্ডিয়া রাস' (উধহফরুধ জধধং)। এই দুই মিলে এখন হয়েছে রাস গারবা (জধধং এধৎনধ)। এই রাস গারবা বা ডান্ডিয়া নৃত্য বা ডান্ডিয়া খেলায় ব্যবহৃত হয় প্রায় ১৮" লম্বা একজোড়া কাঠি হিন্দিতে ডান্ডিয়া। নারী-পুরুষ দুই দলে বিভক্ত হয়ে এই ডান্ডিয়া খেলা বা নৃত্য করে। দুই হাতে দুটি ডান্ডিয়া ধরে একে অন্যের ডান্ডিয়াতে ছন্দের তালে তালে আঘাত করে। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজে উদ্দাম মিউজিক। এতে চক্রাকারে ঘূর্ণায়নের সঙ্গে আছে হাত ও পায়ের বহুমুখী সঞ্চালন বা নৃত্য ভঙ্গিমা। কুমারীত্ব বিসর্জন দেয়ার জন্য অনেকে ঠিক করে রাখে নবরাত্রির নিশিকে। ওয়েস্টার্ন কালচারের চলমান সামাজিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে গত এক যুগে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ডান্ডিয়া সেক্স কালচার।
১৭২ ▌কীভাবে ধূমপান এলো :
৬ হাজার বছর আগে মধ্য আমেরিকাতে তামাকের চাষ শুরু হয়েছিলো। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দে প্রাচীন মিশরীয়রা “ক্যানাবিস” নামক এক ধরণের ধূমপানের প্রবর্তন করেছিল। “ক্যানাবিস” ধূমপানটা অনেকটা আমাদের দেশে হুক্কার যে ধরণ সেরকম ছিলো। খৃষ্টপূর্ব ১০০০ শতাব্দীর দিকে মায়ান সভ্যতার লোকজন ধূমপান এবং তামাক পাতা চিবানো শুরু করে। পরবর্তীতে মায়ানরা তামাক গাছকে ছড়িয়ে দেয় আমেরিকা জুড়ে। ¯েপনের নাগরিক রদ্রিগো ডি যেরেজ ইউরোপিয়ানদের মধ্যে প্রথম ধূমপান করেন। ১৪৪২ সালে রদ্রিগো ডি যেরেজ কিউবায় যান। পরবর্তীতে ¯েপনে ফিরে গিয়ে তিনি জনসম্মুখে ধূমপান করে মানুষকে চমকে দেন। ইউরোপিয়ানরা ১৫৩০ সালের দিকে ক্যরিবিয়ান অঞ্চলে বৃহৎ আকারে তামাক চাষ শুরু করে। ১৮৬৫ সালে ডিউক নামে এক আমেরিকান ব্যক্তি প্রথম হাতে তৈরি সিগারেট উদ্ভাবন করেন। উপমহাদেশে নবাবি ঘরানার প্রতীক হয়ে উঠেছিল হুক্কা ও ছিলিমের সাহায্যে তামাক সেবন। ১৯৫০ সালে প্রথম সিগারেটের ক্ষতিকর দিক স¤পর্কে প্রচারনা শুরু হয়।
১৭৩ ▌রবীন্দ্র-নজরুল সম্পর্ক :
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল একজন বিশ্বকবি, আরেকজন বিদ্রোহী কবি। তাদের মধ্যে ছিল গভীর সখ্য; গুরু-শিষ্য স¤পর্ক ছিল দৃঢ়। রবীন্দ্রনাথ যখন তাঁর গীতাঞ্জলি কবিতা প্রকাশ করছেন তখন নজরুল ১২ বছরের বালক, আর যখন নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন তখন নজরুলের বয়স মোটে ১৪! মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজী নজরুল যেমন পরম ভক্তি করে গেছেন রবীন্দ্রনাথকে, রবীন্দ্রনাথও সেভাবেই উজাড় করে ¯েœহ করে গেছেন ৩৮ বছরের ছোট নজরুলকে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে নজরুলের প্রথম দেখা হয়েছিল ১৯২১ এর অক্টোবর মাসে শান্তিনিকেতনে। তখন নজরুলের বয়স ২২ বছর। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁকে শান্তিনিকেতনে নিয়েছিলেন। এরপর নজরুল অনেকবারই শান্তিনিকেতনে যেতেন। হৈচৈ করে মাতিয়ে রাখতেন বলে তাকে “হৈহৈ কাজী” নামে ডাকতেন রবীন্দ্রনাথ। বিদ্রোহী কবিতা শুনে রবীন্দ্রনাথ নজরুলকে জড়িয়ে ধরে বলেন সত্যিই তুই আমাকে খুন করেছিস। “নজরুল ইসলাম বহু রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেন। নজরুলের স¤পাদনায় ধূমকেতু পত্রিকার জন্য বীন্দ্রনাথ ঠাকুর আশীর্বাদবাণী লিখে দেন।
১৭৪ ▌মরমী সাধনা হাসন রাজা :
দেওয়ান হাসন রাজা বাংলাদেশের একজন মরমী কবি এবং বাউল শিল্পী। মরমী এই সাধক বাংলাদেশে দর্শনচেতনার সাথে সঙ্গীতের এক অসামান্য সংযোগ ঘটিয়েছে। হাসন রাজার জন্ম ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী সুরমা নদীর তীরে লক্ষণছিরি -র তেঘরিয়া গ্রামে। তাঁর পিতা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। হাসন রাজা তাঁর তৃতীয় পুত্র। হাসন দেখতে সুদর্শন ছিলেন। হাসন রাজা দাপটের সঙ্গে জমিদারী চালাতে লাগলেন। কিন্তু এক আধ্যাত্মিক স্বপ্ন-দর্শন হাসন রাজার জীবন দর্শন আমূল পরিবর্তন করে দিল। বিলাসপ্রিয় জীবন ছেড়ে দিয়ে বিষয়-আশয়ের প্রতি তিনি নিরাসক্ত হয়ে উঠলেন। তাঁর মনের মধ্যে এলো বৈরাগ্য। সাধারণ মানুষের খোঁজ-খবর নেয়া হয়ে উঠলো তাঁর প্রতিদিনের কাজ। আর সকল কাজের উপর ছিল গান রচনা। তাঁর সকল ধ্যান ধারণা গান হয়ে প্রকাশ পেতে লাগলো। সেই গানে তিনি সুরারোপ করতেন। তিনি কতো গান রচনা করেছেন তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। 'হাছন উদাস' গ্রন্থে তার ২০৬ টি গান সংকলিত হয়েছে।
১৭৫ ▌ নেলসন ম্যান্ডেলা :
নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতি। ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার এমভেজোর এক অভিজাত পরিবারে ১৮ জুলাই, ১৯১৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশুনা করেন এবং জোহানেসবার্গে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি আফ্রিকান জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ১৯৪৩ সালে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৪৪ সালে ইয়ুথ লিগ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়। ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস করেন। কারামুক্ত হবার পর তিনি তাঁর দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সঙ্গে শান্তিআলোচনায় অংশ নেন। এর ফলশ্রুতিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। নোবেল জয়ী এ নেতা ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর মিারা যান।
১৭৬ ▌আইএমএফ আর বিশ্বব্যাংক :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধ শেষেই পৃথিবীজুড়ে স্বাধীন হতে থাকল ইউরোপীয় উপনিবেশগুলো। এই নতুন দেশগুলো ভীষণ গরীব। আবার ইউরোপও বিধ্বস্ত। এই দেশগুলোকে বাঁচাতে আমেরিকার নেতৃত্বে এগিয়ে আসলো আইএমএফ আর বিশ্বব্যাংক। এরা শুধু ঋণই দেয় না, ঋণের সাথে-সাথে দেয় একটা উন্নয়ণ পরিকল্পনাও। তার প্রতি ছত্রে লেখা থাকে দাতাগোষ্ঠীর অলঙ্ঘনীয় পরামর্শ। তাদের মূল কথা - সরকারের হাত যতটা পারো ছেঁটে দাও। সবকিছু প্রাইভেট করে দাও। সব উন্মুক্ত করে দাও। কিন্তু হতদরিদ্র দেশে প্রাইভেট কো¤পানি কই। তাতে অসুবিধা নেই, আছে মাল্টিন্যাশনাল কো¤পানি। তাঁরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাবে। লক্ষ লক্ষ লোকের চাকুরি হবে। সরকারের ট্যাক্স বেশি আদায় হবে। যেমন, গমের দাম যদি বেশি হয় আর অন্য দেশ কম দামে গম কিনবে। এভাবে সব চলে যাচ্ছে বিদেশী কো¤পানির হাতে। ছোট ছোট শিল্প ধ্বংস হয়ে বাজার ভরে গেছে বড় বড় কো¤পানির পণ্যে। ঋণ তো শোধ হয়ইনি, উল্টো বেড়েছে। এই দাতাগোষ্ঠী রয়েছে বিশ্বজুড়ে সিন্ডিকেট।
১৭৭ ▌জাপানি মেয়েদের ওজন :
২৫ বছর ধরে বিশ্ব রেকর্ডে দীর্ঘায়ু হওয়ার শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছে জাপানি মেয়েরা। তারা প্রায় ৮৭ বছর বা তার বেশি সময় বাঁচে। পাশাপাশি ¯ি¬ম ফিগারের অধিকারীও হয়। এর পেছনে গোপন রহস্য হলো যেসব খাবার জাপানিরা নিয়মিত খায় তার তালিকার শীর্ষে থাকে সামুদ্রিক মাছ, শৈবাল (সিওইড) , ফল, সয়া, ভাত, সবজি এবং গ্রিন টি। এসব খাদ্য বস্তুর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি এইজিং বা বয়সরোধক উপাদান। যা ওজনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বেশ উপকারী। ‘ছোটবেলা থেকেই জাপানে শিশুদের শেখানো হয় খাবার ধীরে ধীরে খেতে এবং প্রতি কামড়কে উপভোগ করতে। এখানে নিয়ম হলো বাটি ভরে খাবার না খাওয়া। জাপানিরা সকালের খাবারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়। জাপানি নারীরা প্রচুর হাটে এবং চকোলেট, কুকিস, আইসক্রিম এবং কেক খুব কম খায়। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, মোটা মেয়েদের চাকরি হয় না, স্বাস্থ্য বাড়লে চাকরি যায়, সবাই হেয় করে জাপনি সমাজে। পরিবার ও সমাজে মোটা মানুষের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্ঠিভঙ্গির কারণে তারা মোটা হয় না।
১৭৮ ▌শাড়ি ব্লাউজ তত্ত্ব :
একসময় নারী পুরুষ উভয়েই ধুতি পরতো। দক্ষিণ ভারতে পুরুষের মতো লুঙ্গিও পরতো নারীরা। প্রাচীন ভারতের নারীরা বুকের ওপর কিছুই পরতো না। কাপড়গুলোয় কোনো সেলাই ছিল না। হিন্দুদের মধ্যে সেলাইবিহীন কাপড় পরার চল ছিল। শাড়ির নাম তখন শাড়ি ছিল না, ছিল সাত্তিকা। সংস্কৃত শব্দ সাত্তিকা থেকে এলো সাতি, সাতি থেকে সাডি, সাড়ি থেকে শাড়ি। উড়িষ্যায় ‘মাছের লেজের স্টাইল’ এলো সতেরো শতকে। ‘দুটো পাকে ধুতি দিয়ে পেঁচিয়ে মাছের লেজের মতো কাঁধ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া, লেজটা আঁচল। মেয়েদের ধুতিটাই ধীরে ধীরে এভাবে শাড়িতে রূপান্তরিত হয়। ইংরেজ আমলে ব্লাউজ পেটিকোট পরা শুরু হয়েছে। মুসলমানরা ঘাগড়া নিয়ে এসেছিল। সেই ঘাগড়া দেখেই পেটিকোট তৈরি শুরু। বৌদ্ধ ও হিন্দুরা আমাদের পুর্বপুরুষ এবং পূর্বনারী। বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা একাত্তর সালে জন্ম নেইনি। বাঙালি হাজার বছরের পুরোনো জাতি। একসময় আমাদের পূর্বনারীদেরও পূর্বনারীরা ন্যাংটো থাকতো, জন্তুর চামড়া পরতো, তারপর শুরু করল কাপড় বোনা ও পরা।
১৭৯ ▌ বেগম রোকেয়া :
বেগম রোকেয়ার জন্ম ১৮৮০ সালে রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামে। তৎকালীন মুসলিম সমাজ ব্যবস্থা অনুসারে রোকেয়াকে ঘরে আরবি ও উর্দু শেখানো হয়। তবে বেগম রোকেয়ার বড় ভাই গোপনে রোকেয়াকে ঘরেই বাংলা ও ইংরেজি শেখান। ১৬ বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয় ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে। তাঁর স্বামী মুক্তমনা মানুষ ছিলেন। রোকেয়াকে তিনি একটি স্কুল তৈরির জন্য অর্থ দেন। রোকেয়া ১৯০২ সালে পিপাসা নামে প্রথম গল্প লিখেন। সামীর মৃত্যুর পর কলকাতায় এসে ১৯১১ সালের ১৫ই মার্চ তিনি সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল চালু করেন। প্রাথমিক অবস্থায় ছাত্রী ছিল ৮ জন। চার বছরের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪-তে। ১৯৩০ সালের মাঝে এটি হাই স্কুলে পরিণত হয়। ১৯১৬ সালে তিনি মুসলিম বাঙালি নারীদের সংগঠন আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনা ঝঁষঃধহধ’ং উৎবধস বা সুলতানার স্বপ্ন। তিনি বুঝেছিলেন, সমাজে নারীর উন্নয়নের জন্য প্রথমে দরকার কন্যাশিশুদের উন্নয়ন।
১৮০ ▌জার্মান সংস্কৃতি :
জার্মানিতে এফ.কে.কে মানে হলো ‘ফ্রি বডি কালচার’। কোনো স্থানে এই লেখাটি থাকার মানে আপনি সেখানে পুরো নগ্ন হয়ে ঘোরাফেরা করতে পারবেন। যেকোনো বয়সের বা লিঙ্গের সবার ক্ষেত্রেই একই নিয়ম প্রযোজ্য। # রোববার মানে জার্মানিতে শব্দহীন দিন। এ দিনে শব্দ তৈরি হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। # ধরুন, আপনি জার্মানিতে কোনো বার-এ গিয়ে বিয়ার পান করছেন। ওয়েটার এসে যদি জিজ্ঞেস করে আপনার আরও বিয়ার চাই কিনা - তখন আপনি যদি বলেন ‘ডাংকে’, মানে ধন্যবাদ, তাহলে ওয়েটার বুঝে নেবে যে আপনি আর বিয়ার চান না। কিন্তু আপনি যদি বলেন ‘বিটে’, মানে প্লিজ, তাহলে ওয়েটার বুঝবেন হ্যাঁ, আপনার আরও চাই। # বাঙালিদের যেমন সবসময় গরম খাবার চাই, জার্মানদের বেলায় তেমনটি নয়। জার্মানরা শুধু দুপুরের খাবারটা চান গরম। রাতে কিন্তু তারা ঠা-া ব্রেড বা রুটির সঙ্গে শূকরের মাংস, পনির, চিজ বা সবজি দিয়ে খেয়ে ফেলেন। অনেক সময় শেষ পাতে থাকে নানা রকম ফলও। জার্মনিরা আচরণে বেশ ভদ্র এবং মানবিকতা রক্ষায় খুবই দায়িত্বশীল।
পরবর্তী>>>